সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ ১৪টি পদেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলে অর্থাৎ সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ৩৭২৫ ভোট ও সম্পাদক পদে আব্দুন নুর দুলাল ৩৭৪১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন পেয়েছেন ২৯৩ ভোট ও সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল পেয়েছেন ৩০৯ ভোট। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১ টার পর সমিতির মনোনীত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান খান এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
তবে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এই নির্বাচনকে অবৈধ অ্যাখ্যায়িত করে ভোট প্রদান থেকে বিরত ছিলেন। সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৩- ২৪ সালের নির্বাচন ছিল ১৫ ও ১৬ মার্চ। পূর্ব নির্ধারিত তারিখ হিসেবে এ দুই দিন ভোট গ্রহণ অনষ্ঠিত হয়েছে। ঘোষণামতে, এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি ও জামায়তপন্থী আইনজীবীরা। উপরন্তু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য তারা ভাঙচুর, হট্টগোল এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, নারী পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ (এপিবিএন) পাঁচ শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
কিন্তু রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন ওঠেছে বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা যদি ভোট বর্জন করেই থাকে, তবে এতো ভোট কোত্থোকে এলো? তাছাড়া, বিএনপি এবং জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা নির্বাচন বানচালের জন্য জামায়াতপন্থীদের সংশ্লিষ্ট করে যে ধরনের নাশকতামূলক, বেআইনী কর্মকাণ্ড- নির্বাচনের আগের দিন থেকে শুরু করে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে- দুই দিনে ঘটালো, এ থেকে কি লাভ হলো বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের?
দিনভর হট্টগোল, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পুলিশের লাঠিচার্জ, ভাংচুর, পাল্টাপাল্টি মিছিল আর শ্লোগানের মধ্য দিয়ে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ মনোনীত নির্বাচন উপ-কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে এই ভোটগ্রহণ অনষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা ভোট প্রদান করলেও ভোট প্রদান থেকে বিরত থেকেছেন বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা। এর আগে বিএনপি এবং জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা নির্বাচনকে বানচাল করার লক্ষ্যে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটিয়েছিল। এসব ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়।
নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হট্টগোলের সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে। হট্টগোলের কারণে নির্ধারিত সময় সকাল ১০টায় প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ শুরু করা যায়নি। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পর ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল পৌনে ১০টা থেকে ভোটকেন্দ্রে অবস্থান নেন বিএনপি ও জামায়তপন্থী আইনজীবীরা। তারা নতুন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এসময় হট্টগোল সৃষ্টিকারী বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের মিলনায়তনের ভেতর থেকে বের করে দেয় পুলিশ। পুলিশের লাঠিচার্জে আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ প্রায় ৩০ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দুপুর ১২টার দিকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। পরে একাধিকবার বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা সংগঠিত হয়ে ভোটকেন্দ্রের দিকে বিক্ষোভ নিয়ে এগিয়ে আসেন। পুলিশ ধাওয়া ও লাঠিচার্জ করে বারবার তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
নির্বাচনের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের আশেপাশে ৫ শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল ৯টার পর বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা আপিল বিভাগে গিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ উত্থাপন করে বিচার প্রার্থনা করেন। তারপর সকাল ১০টা ১০ মিনিট থেকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বেলা ১১টার দিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রধান বিচারপতির দপ্তরে যান। এসময় সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে বসে সুপ্রীম কোর্ট বারে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি।
এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের প্রবেশমুখে মুখোমুখি অবস্থান নেয় বিএনপি ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। এসময় পাল্টাপাল্টি মিছিল-স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয় এবং ধস্তাধস্তি চলতে থাকে। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে হট্টগোল ও হইচই চলে। এ সময় চার পাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আবারও মুখোমুখি অবস্থান নেয় বিএনপি ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে পাল্টাপাল্টি মিছিল ও স্লোগান। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থানের কারণে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অবশেষে বিকেল ৫টায় শেষ হয় ভোটগ্রহণ।
এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি যদি সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন বর্জনই করে থাকে, তবে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী নীল প্যানেল এতো ভোট পাওয়ার কথা নয়। এছাড়া তারা নির্বাচনে হেরে যাবে জেনেই ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। বিভিন্নভাবে এই নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করেছে তারা। এছাড়া গোয়েন্দা তথ্যে খবর ছিল, এই নির্বাচনকে বিতর্কিত এবং বানচাল করতে তারা ভাঙচুর এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাবে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের আগেরি দিন রাত থেকে নির্বাচনের দুই দিনে তারা তাই করেছে। কিন্তু নির্বাচনকে বানচাল করার লক্ষ্যে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে নাশকতামূলক ভাঙচুর ও সন্ত্রাস চালিয়ে তারা কী পেলো?- এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত তারা সরকার এবং সরকারের নির্বাচনের ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আসছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা কতটুকু হিংস্র হয়ে ওঠে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বার কাউন্সিল নির্বাচন হট্টগোল ভাঙচুর বিএনপি জামায়াত
মন্তব্য করুন
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘আমেরিকার ভিসা নীতি আমরা ইতিবাচক ভাবেই দেখছি। কারণ, তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চান। যারা নির্বাচনের সাথে জড়িত থাকেন অথবা নির্বাচন ব্যবস্থা প্রভাবিত করতে পারেন ইউরোপ ও আমেরিকায় তাদের স্বার্থ থাকে। তাদের কারো সন্তান লেখাপড়া করে আবার কেউ অবসরে ঐসব দেশে বসবাস করতে চান। তাই কেউই চাইবেন না তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে কালো তালিকাভুক্ত হন। একারণেই, নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্থ করতে বা অনিয়ম করতে তারা দ্বিধাগ্রস্থ হবেন। আমেরিকার ভিসা নীতি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে। মনে হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমেরিকা যথেষ্ট আন্তরিক। আমেরিকার ভিসা নীতি কতটা বাস্তবায়ন হয় বা কার্যকর হয় তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।’
মঙ্গলবার (৩০ মেস) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর প্রেস সচিব-২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল মনে করে সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা কুক্ষিগত করেছে। সবাই বিশ্বাস করে, নিয়ন্ত্রণে রেখে সরকার নির্বাচন করছেন। এতে অন্য কোনো দলের কিছু করার ক্ষমতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। যারা বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে তারা নির্বাচনে না এলেও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে না। তাই সরকারের উচিত হবে নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের রাজনীতিতে বিদেশীদের প্রভাব অনেক বেশি। আমরা বিভিন্ন দেশের ওপর নির্ভরশীল। তাই বিদেশীদের প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ আছে। আবার, আমরা নিজেরা অনেক বিষয়ে সমাধানে আসতে পারি না। এমন অবস্থায়, আমাদের দেশে যাদের বিনিয়োগ আছে তারা তাদের স্বার্থেই প্রভাব বিস্তার করতে চেষ্টা করে। সেই সুযোগটা আমরাই তৈরী করে দিচ্ছি। আমরা নিজেরা মিমাংসা করতে পারলে কেউই মাথা ঘামানো প্রয়োজন মনে করবে না।’
তিনি বলেন, ‘জবাবদিহিতা মূলক সরকার হলে সবাই নিশ্চিত মনে কাজ করতে পারেন। জবাবদিহিতা থাকলে একটা আইন, শৃংখল ও নীতি থাকে। কে কী করতে পারবেন আর কী পারবে না তা নিশ্চিত করা থাকে। যখন জবাবদিহিতাহীন সরকার তৈরী হয় তখন কোন গাইডলাইন থাকে না। আমরা সবাই একমত হলে বিদেশীরা কখনোই নাক গলাতে চেষ্টা করতো না, আবার চেষ্টা করলেও কিছুই করতে পারতো না।’
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের
মন্তব্য করুন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিএনপি সরকারকে আর সময় দিতে রাজি নয়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে কোণঠাসা করতে চায়। এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
আজ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে
ওঠার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায়
বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ
আমানের ১৩ বছর এবং তার
স্ত্রীর সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড
বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। একই সাথে অন্য
এক মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদের ৯ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। তাদেরকে
দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার জন্য বলা
হয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, রাজনীতিবিদরা
রক্ষক তারা কখনও ভক্ষক
হতে পারেন না। অর্থাৎ এই
দুইটি মামলায় হাইকোর্টের দণ্ডপ্রাপ্ত হবার কারণে এ
দু'জনকে এখন জেলে
যেতে হবে। ফলে রাজনীতির
মাঠে উত্তাপ-উত্তেজনা আরো বেড়ে যেতে
পারে বলে ধারণা করা
হচ্ছে। কারণ, এই দুজন নেতা
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বড় ভূমিকা রাখছে।
বিএনপির
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ রায়কে ফরমায়েশি
রায় হিসেবে উল্লেখ
করেছেন। ফলে বিএনপি ওই রায়ের পর রাজনীতিতে সহিংসতা
এবং বড় ধরনের গোলযোগের
শঙ্কা তৈরী হল বলেও কোন
কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন। কেউ কেউ
অবশ্য বলছেন যে, বেগম খালেদা
জিয়াকেও যখন দুর্নীতির মামলায়
দণ্ডিত করা হয়েছিল, তখনও
অনেকে মনে করেছিল যে
রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে। কিন্তু বেগম
খালেদা জিয়ার দীর্ঘ ২ বছরের বেশি সময় কারান্তরীণ
থাকা অবস্থায় বিএনপি কোনো আন্দোলন গড়ে
তুলতে পারেনি। তাছাড়া দুর্নীতি দমনের মামলার রায় দেশের সর্বোচ্চ
আদালত বহাল রেখেছে। এরকম
বাস্তবতায় এই রায় নিয়ে
বিএনপির যদি কোনো বিশৃঙ্খলা
সৃষ্টি করার চেষ্টা করে,
তবে সেটি সাধারণ মানুষ
গ্রহণ করবে না বলে
মনে করা হচ্ছে।
তবে
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা
হচ্ছে গত কিছুদিন ধরেই
সরকার নতুন করে বিএনপি
নেতাদের ধরপাকড় গ্রেপ্তার শুরু করেছে। বিশেষ
করে পুরনো মামলাগুলোয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে নানা রকম হয়রানি
করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ
করেছে। যদিও সরকারের পক্ষ
থেকে এ ধরনের অভিযোগ
সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। তারা
বলেছে যে, কোনভাবেই বিরোধী
দলের উপর কোনরকম দমননীতি
বা নিপীড়ন করা হচ্ছে না।
আইন সকলের জন্য সমান। যারা
আইনের দৃষ্টিতে অন্যায় করেছে বা বিভিন্ন অপরাধের
সঙ্গে যুক্ত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বিচারিক
প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
কিন্তু
দুই পক্ষ যে বক্তব্যই দিকনা
কেন, নির্বাচনের আগে যখন বিরোধী
দল বিএনপি বড় ধরনের আন্দোলনের
প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন এই মামলা
এবং দন্ড আন্দোলনকে প্রভাবিত
করবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
মনে করছেন। একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি
তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছেন
তারা। বিএনপি'র পক্ষ থেকে
তাদের জোট গুলোকে নিয়ে
চূড়ান্ত আন্দোলনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে
সরকারও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সারা দেশে শান্তি
সমাবেশ এবং গণসংযোগের মাধ্যমে
রাজনীতির মাঠে নিজেদের কর্তৃত্ব
অব্যাহত রাখতে চাইছে। ফলে নির্বাচনের আগেই
একটি উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মন্তব্য করুন
বিএনপি রেমিট্যান্স ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
গাজীপুর নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
আজমত উল্লা গাজীপুর সিটি নির্বাচন আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘আমেরিকার ভিসা নীতি আমরা ইতিবাচক ভাবেই দেখছি। কারণ, তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চান। যারা নির্বাচনের সাথে জড়িত থাকেন অথবা নির্বাচন ব্যবস্থা প্রভাবিত করতে পারেন ইউরোপ ও আমেরিকায় তাদের স্বার্থ থাকে। তাদের কারো সন্তান লেখাপড়া করে আবার কেউ অবসরে ঐসব দেশে বসবাস করতে চান। তাই কেউই চাইবেন না তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে কালো তালিকাভুক্ত হন। একারণেই, নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্থ করতে বা অনিয়ম করতে তারা দ্বিধাগ্রস্থ হবেন। আমেরিকার ভিসা নীতি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে। মনে হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমেরিকা যথেষ্ট আন্তরিক। আমেরিকার ভিসা নীতি কতটা বাস্তবায়ন হয় বা কার্যকর হয় তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।’
সম্প্রতি শেষ হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন জয়ী হয়েছেন। গাজীপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতা এবং গাজীপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান। কিন্তু তিনি পরাজিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারাও দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লা’র পক্ষে নিবাচনী প্রচারণা, নির্বাচন পরিচালনা, এমনকি সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেছেন। কিন্তু গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থীর নাটকীয় পরাজয় ঘটে। কিন্তু এই পরাজয়ের কারণ কি?- এই নিয়ে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠেছে।
সম্প্রতি শেষ হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান ১৬ হাজারেরও বেশি ভোটে প্রতীকী প্রার্থী জায়েদা খাতুনের কাছে পরাজিত হয়েছেন। জায়েদা খাতুন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মা। প্রথমবার বহিস্কৃত হওয়ার আগে জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদকের দায়িত্বে ছিলেন। সে সময়ে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করে বক্তব্য দেওয়ার কারণে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। পরে সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকেও বহিষ্কৃত হন। সেই থেকেই গাজীপুর আওয়ামী লীগ দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়ে গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বিধা-বিভক্তিকেই মূল কারণ হিসেবে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।