ইনসাইড পলিটিক্স

পাঁচ সিটি নির্বাচন: বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও তৃণমূলের মতপার্থক্য!


Thumbnail

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে বিএনপি। তাদের সাথে যোগ হয়েছে সরকার বিরোধী সমমনা দলগুলোও। দীর্ঘদিন এ আন্দোলন চলমান থাকলেও আন্দোলনকে ঘিরে তেমন কোনো চমক সৃষ্টি করতে পারেনি বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো। এর অন্যতম প্রধান কারণ কারণ হচ্ছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে তৃণমূলের মতের অমিল বলে জানিয়েছেন দলটির তৃণমূলের নেতারা। বিএনপির তৃণমূলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় নেতারা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আসছে সিটি নির্বাচনসহ সব ধরনের নির্বাচন বর্জনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার সাথে একাত্ব হতে পারছেন না তারা। কেননা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সে দলটির আশা-ভরসার কোনো জায়গা থাকে না। ফলে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে জনগণ এবং কোনো আশার জায়গা না থাকলে জনগণকে দলেও টানা যায় না।

এদিকে গত ১০ দিনে মাঠপর্যায়ের প্রায় আড়াই হাজার সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিকে ঢাকায় এনে মতবিনিময় করেছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ১০ দিনের এ মতবিনিময় কর্মসূচি শেষ করেছে। দলটির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, কার্যত এ মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয় তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ ও জনসম্পৃক্ত নেতাদের সরকার বিরোধী আন্দোলনে আরও সক্রিয় করতে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি যে বৃহত্তর আন্দোলন গড়তে চাইছে, তাতে সাধারণ জনগণসহ সব পক্ষের ব্যাপক অংশগ্রহণ আশা করছে দলটি। সম্প্রতি ইউনিয়ন থেকে থানা, জেলা ও মহানগরে পর্যায়ক্রমে যে পদযাত্রা কর্মসূচিগুলো করা হয়েছে, এর উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে কাছে টানা। এ কর্মসূচির পরপরই একই লক্ষ্যে সারা দেশের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দলীয় সমর্থক সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানদের ঢাকায় এনে মতবিনিময় করা হয়েছে। গতকাল ময়মনসিংহ বিভাগের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে ১০ দিনের এ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। 

কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এসব সিটির ভোটে অংশ না নিলে বিএনপি আনেক পিছিয়ে পড়বে। এই পাঁচ সিটির ভোটে সরকার বিএনপি থেকে দলছুট উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াদের মতো প্রার্থীদের টার্গেট করে বেছে নিবে। বিশেষ করে যারা এসব সিটির বিএনপির সাবেক মেয়র এবং যারা মেয়র প্রার্থী- তাদেরকে বেছে নিতে চেষ্টা করবে সরকার। এতে করে বিএনপি আরও পিছিয়ে পড়বে বলেও মনে করছেন তৃণমূলেরে এসব নেতা-কর্মীরা। 

বিএনপির তৃণমূলের নেতারা বলছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ২ আসনের উপনির্বাচনে সরকার যেভাবে ফাঁদে ও লোভে ফেলে উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়াকে প্রার্থী করে জয়ী করে এনেছেন, একই ফাঁদে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সিটি ভোটেও বিষয়টি কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে সরকার। এখানে সরকারের প্রথম টার্গেট থাকবে খুলনা সিটি নির্বাচনের বিএনপির সাবেক প্রার্থী ও দল থেকে অব্যাহতি পাওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও রাজশাহীর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু।

অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর জানিয়েছে, আড়াই হাজার জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি এ মতবিনিময় কর্মসূচিতে স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া যেদিন যে বিভাগের মতবিনিময় হয়, সেদিন সংশ্লিষ্ট বিভাগের দলের ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা (রাজনৈতিক), যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা সভাপতি অথবা আহ্বায়ক, ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবেরা উপস্থিত ছিলেন। এ মতবিনিময় সভায় বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ের সাবেক চেয়ারম্যানদেরকেও ডাকা হয়। 

বিএনপি সূত্রগুলো জানায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরকারবিরোধী একটি বৃহত্তর আন্দোলন গড়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠপর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এ মতবিনিময় করেন। তিনি লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলেন। ১০ দিনের রুদ্ধদ্বার এক মতবিনিময় কর্মসূচিতে সাবেক ও বর্তমান মিলে ২ হাজার ৩৬৭ জন চেয়ারম্যান এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এর মধ্যে ৩৫৭ জন বক্তব্য দিয়েছেন। ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচিত বিএনপির সমর্থক চেয়ারম্যানদের মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ মতবিনিময় শুরু হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) শেষ হয়।  

বিএনপির নেতারা বলছেন, নানা কারণে বিএনপি থেকে বিভিন্ন সময় সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে জনপ্রিয় নেতাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আবার কাউকে-কাউকে পদাবনতি করা হয়েছে। এছাড়া কাঙ্ক্ষিত পদ-পদবি না পেয়েও বিএনপির অনেক নেতা দলের ওপর মনঃক্ষুণ্ন। আগামী নির্বাচনে বিএনপি তার সিদ্ধান্তে অটল থেকে এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে না গেলে নানা কারণে দলের ওপর মনঃক্ষুণ্ন নেতাদের লোভে ও ফাঁদে ফেলে উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া বানাতে পারে সরকার।

এ প্রসঙ্গে দল থেকে অব্যাহতি পাওয়া বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা জেলা দলের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু  গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা তো দলের বাইরে না। তাছাড়া দলের বাইরে গিয়ে তো নির্বাচন করতে পারি না। তবে, আমি মনে করি বিএনপি যে নির্বাচনে না যাওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা রিভিউ করা দরকার। না যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত। নির্বাচন ও আন্দোলন- দুইটাতে থাকা দরকার। ২০১৯ সালে সর্বশেষ বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। এখন নির্বাচনে গেলে- এটা তো আমরা বলতে পারব যে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়। আমাদের প্রতি বিএনপির কোনো করুণা চাই না। তবে, এটা আশা করি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের স্বার্থে আগামীতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। এখানে (খুলনা) যে সব কুচক্রীর হাতে দল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তারা এখন পর্যন্ত একটা কমিটিও করতে পারে নাই।’

সিটি নির্বাচন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন