ইনসাইড পলিটিক্স

কী চায় জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি?

প্রকাশ: ০৮:১৫ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

অন্তর্বর্তীকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠন করে সেই সরকারকে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে নাগরিক অধিকার বিষয়ক একটি সংগঠন ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নৈশভোজ করায়। এই নৈশভোজে তাদের খরচ হয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। নাগরিক অধিকার বিষয়ক সংগঠনটির আহ্বায়ক কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার এবং সদস্য সচিব সাংবাদিক শওকত মাহমুদ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এই নৈশভোজে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্র জানায়, এতে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না), গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানসহ পুলিশের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা অংশ নেন।

সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবারের নৈশভোজে সংগঠনের সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ ইনসাফ কায়েম কমিটির পক্ষে বেশ কিছু প্রস্তাব বা ইশতেহার তুলে ধরেন। সেখানে সংগঠনটির পক্ষে নতুন অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার গঠন করে সেই সরকারকে নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে অভিমত দিয়েছেন তাঁরা। সংগঠনটির আহবায়ন এবং সদস্য সচিব দাবি করেছেন, ২০১৩ সাল থেকে তারা এই প্রক্রিয়াটির জন্য কাজ করছেন এবং সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছেন সেই সময়েই। পরবর্তীতে তারা এই সংগঠনটিকে নতুন করে আবার পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে এই নৈশভোজের আয়োজন করেছেন। 

এদিকে এই সংগঠনটির নৈশভোজ আয়োজনের পরপরই দেশের রাজনৈতিক মহলে এই নিয়ে শুরু হয়েছে নানমুখী আলোচনা। গজিয়েছে প্রশ্ন এবং সন্দেহের ডালপালাও। কেউ বলছেন, রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে এই আয়োজনের খরচ কোত্থেকে এসেছে এবং যারা এই আয়োজন করেছেন তারা কারা? তারা কী চায়? আবার কেউ কেউ সন্দেহ করছেন কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার এবং সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে সামনে রেখে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে নতুন করে রাজনীতিতে আসার ছক তৈরি করছে। দেশে বিদেশে জামায়াতের টাকার অভাব নেই। তাই এ ধরনের একটি অুনষ্ঠানের খরচ বহন করা জামায়াতের জন্য কোনো বিষয় নয়।

নৈশভোজে সংগঠনটির প্রস্তাবনায় বলা হয়, ইসলামকে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিপক্ষ তৈরি করে আজ অবধি যে গৃহদাহ জারি করা হয়েছে, তার ফলে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে বাংলাদেশের পরিগঠনকে সব সময়ই ব্যহত করা হয়েছে। শুধু ইসলাম নয়, সকল ধর্মেরই ধর্মপ্রাণ মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে যেমন অস্বীকার করা হয়েছে, তেমনই একইভাবে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশকেও ধর্মের বিপরীতে স্থাপন করে তাদের বিকাশ, পারস্পরিক সমঝোতা ও সৌহার্দ্যকে নষ্ট করে ধর্মকে স্রেফ পরিচয় সর্বস্ব সাম্প্রদায়িকতায় পর্যবসিত করা হয়েছে। এর ফলে মানুষের ইহলৌকিক বিকাশে ধর্মের ভূমিকা রুদ্ধ হয়েছে, তেমনি নৈতিক ও আত্মিক বিকাশের ক্ষেত্রগুলোকেও ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।  

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে চান। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হবে নতুন গঠনতন্ত্র বা শাষনতন্ত্র প্রণয়নের সভা আহবান করা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে নতুনভাবে একটি শাষনতন্ত্র উপহার দেওয়া। স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন এবং নির্বাচনের সময় সকল নির্বাহী ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়ে আসা। নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের পরপরই অন্তর্বর্তী নতুন সরকার এবং নতুন গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে নতুন জাতীয় নির্বাচন হবে। নতুনভাবে বাংলাদেশ গঠনের এটাই সঠিক পথ বলে তারা মনে করেন।  

প্রস্তাবনায় বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা না গেলে গত কয়েক দশকে গড়ে ওঠা সুবিধাবাদী, সন্ত্রাসী ও লুটেরা শক্তিকে পরাস্ত করা সম্ভব হবে না। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় নিশ্চিত না করে তথাকথিত জাতীয় বা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রেখে ক্ষমতা লাভের খায়েশমাত্র। তাই ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত করে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল ছোট-বড় সব দলকে নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।

প্রস্তাবে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হচ্ছে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন সভা আহ্বান করা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করা। নতুন গঠনতন্ত্রে স্বাধীন, নিরপেক্ষ, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনের সময় সব নির্বাহী ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের পরপরই অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার পদত্যাগ করবে এবং নতুন গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে নতুন জাতীয় নির্বাচন হবে। জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে নতুনভাবে বাংলাদেশ গঠনের এটাই সঠিক পথ।

যদিও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপি বলেছে, ওই নির্বাচনে জয়ী হলে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে তারা। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রস্তাবিত জাতীয় সরকারের ২৭ দফা রূপরেখা দিয়ে কয়েকটি দল ও জোটকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে বিএনপি। এর মধ্যেই ইনসাফ কায়েম কমিটি বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের অভিমত প্রকাশ করল।

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নৈশভোজে যারা অংশগ্রহণ করেছেন এবং যারা আয়োজন করেছেন, তাদের অনেকেই সরকার বিরোধী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত। এই আয়োজন এবং সংগঠনটিও সরকার বিরোধী আন্দোলনের একটি অংশ। সেখানে তারা যে ধরনের প্রস্তবনা তুলে ধরেছেন, সে ধরনের দাবি নিয়ে বিএনপি দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছে। এই সংগঠনটির সাথে বিএনপির সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। যদি সম্পৃক্ততা নাও থাকে- তথাপিও বিএনপির দশ দফা, সরকার গঠনের রূপরেখার ২৭ দফার সঙ্গে তাদের প্রস্তাবনার যথেষ্ট মিল রয়েছে। এছাড়াও তাদের প্রস্তবনায় ইসলামী ইস্যু এবং ধর্মকে প্রাধান্য দিয়ে যে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে- একটি সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ তৈরি করতেই চেষ্টা করছেন তারা। এখন দেখার বিষয় জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নামে জামায়াত নতুন কোনো পরিকল্পনা করছে কি না?

জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি   বিএনপি   জামায়াত   সরকার   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ইসির সংলাপে যাবে না বিএনপি

প্রকাশ: ১২:৩৪ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে বিএনপিকে এ চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু বিএনপি সংলাপের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। 

ইসির চিঠি পাওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান খুবই পরিষ্কার। আমরা নির্বাচন কমিশনে কোনো আলোচনায় যাব না। 

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে ইসির সঙ্গে আলোচনা অনর্থক বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এ সরকারের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

এর আগে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সঙ্গে বিভিন্ন দলের সংলাপের সময়ও বিএনপি অংশ নেয়নি। এমনকি নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সংলাপেও অংশ নেয়নি তারা।

গত ১০ ডিসেম্বর থেকে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে বিএনপি। 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজ, বিএনপির আপত্তি কোথায়?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজ, বিএনপির আপত্তি কোথায়?

গত বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এক সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজ অুনষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির আহ্বায়ক বিতর্কিত বিএনপিপন্থী সুশীল ফরহাদ মজহার এবং সদস্য সচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই বিএনপির সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং এ কারণেই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

তবে এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ছড়িয়েছে বিভিন্ন প্রশ্নের ডালপালা, চলছে নানা গুঞ্জন। প্রশ্ন ওঠেছে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি নৈশভোজের আয়োজন করেছে, তাতে বিএনপির আপত্তি কোথায়? রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সেখানে বিএনপির প্রায় ২৭ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অবশ্য তারা কেউ সেই নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু সেখানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি একটি ইশতেহারও পাঠ করেছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ইশতেহার বিএনপি এবং সমমনা দলগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিএনপি এবং সমমনা না দলগুলো যা আশা করে, তারাও তা ইশতেহারে উল্লেখ করেছেন। সেক্ষেত্রে বিএনপির কি আপত্তি? একটি নৈশভোজ ঘিরে বিএনপির এত সন্দেহ কেন? 

সূত্রমতে, ওই নৈশভোজে যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁদেরও অনেকের ব্যাপারে বিএনপি নেতৃত্বের এক ধরনের সন্দেহ রয়েছে বলে মনে হয়। গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানসহ পুলিশের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা অংশ নিয়েছিলেন ওই নৈশভোজে। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাও ওই নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি অবশ্য বলেছেন, তিনি আমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু নৈশভোজের কারণ বা আলোচনার বিষয় সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা ছিল না।

সূত্র জানায়, বিএনপি এই আয়োজনকে শুধু ভোজের আসর হিসেবে দেখতে রাজি নয়। দলটি এটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে এবং মনে করছে, এর পেছনে কোনো শক্তির হাত রয়েছে। তাঁদের এই আয়োজনের ব্যাপারে বিএনপিতে ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এ আয়োজন নৈশভোজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। আয়োজকেরা একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন। তাদের প্রস্তাবটি হচ্ছে, নির্বাচনের আগে দেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা। সেই সরকার নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে এবং তারপর জাতীয় নির্বাচন দেবে। এই রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়েই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে এমন রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে দুজন ব্যক্তির একটি সংগঠনের পাঁচতারা হোটেলে নৈশভোজ আয়োজনের অর্থের উৎস কী? -এই প্রশ্নও উঠেছে।  

বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নৈশভোজে উত্থাপিত রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়েই মূল আপত্তি বিএনপির। দলটি এখন সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। তারা নির্বাচনে জয়ী হলে তখন জাতীয় সরকার গঠন করবে। এ ঘোষণা বিএনপি দিয়েছে সমমনা বিভিন্ন দল ও জোটের সঙ্গে আন্দোলন শুরু করার আগে। কথা বলে আসছে। কিন্তু নির্বাচনের আগেই জাতীয় সরকার গঠনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজে, সেটাকে বিএনপি তাদের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করছে।

সন্দেহ-অবিশ্বাস থেকেই বিএনপি শওকত মাহমুদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ ছাড়া ওই নৈশভোজে রাজনীতিক যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁদের প্রায় সবাই বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছেন। তাঁদের ব্যাপারেও বিএনপি সতর্ক রয়েছে। দলটির আরও কেউ ইনসাফ কায়েম কমিটির সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত আছে কি না, সেটাও বিএনপি খতিয়ে দেখছে। দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।   

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের যে কোনো বিষয়ে মতামত দেওয়ার বা প্রস্তাব তোলার অধিকার দেশের সংবিধানে রয়েছে। তাহলে ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজের বক্তব্য নিয়ে বিএনপির আপত্তি কেন? - এই প্রশ্ন অনেকেই তুলতে পারেন। মূলত বিএনপির অভ্যন্তরে সন্দেহ আর অবিশ্বাস দানা বেঁধে ওঠেছে। সন্দেহ আর অবিশ্বাস নিয়ে কোনো দল বা গোষ্ঠী কোনোদিন টিকে থাকতে পারেনি। বিএনপিও এভাবে সন্দেহ আর অবিশ্বাসের দাবানলে দাহ হতে হতে একদিন নিঃশেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন দেখার বিষয়- এই সমস্যা সমাধানে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।


ইনসাফ কায়েম কমিটি   নৈশভোজ   বিএনপি   আপত্তি   শওকম মাহমুদ   ফরহাদ মজহার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মানুষের কথা কর্তৃত্ব করে, মানুষের কথা নেতৃত্ব দেয়: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ০৯:২২ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ভেজাল, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ফরিদপুরের শেখ জামাল স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ আটটি বিদেশি ভাষায় উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষের কথা কর্তৃত্ব করে, মানুষের কথা নেতৃত্ব দেয়। সবার কথা কর্তৃত্ব করে না, সবার কথা নেতৃত্ব দেয় না। আজ আমরা সেই মানুষটির কথা বলবো, যার কথায় সাড়ে সাত কোটি স্বাধীনতা পাগল বাঙালি সেদিন উজ্জীবিত হয়েছি স্বাধীনতার মন্ত্রে। এই মানুষটির বয়স কত ছিল, কত বছর তিনি বেঁচেছেন। ৫৪ বছর ৬ মাস ৭ দিন। এই হলো তার বয়সসীমা। এই মানুষটি এই ৫৪ বছরে জেল খেটেছেন ৪ হাজার ৬৮২ দিন।

তিনি বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষেরা রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন। কত মাতার অশ্রুধারা, কত বীরের রক্ত ধারায় এ বাংলার মাটি বারে বারে রঞ্জিত হয়েছে স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু স্বাধীনতা আসেনি।

হাজার বছর পর এই বৃহত্তর ফরিদপুরের টুঙ্গিপাড়ায় মধুমতি নদীর তীরে এক বীর প্রসূবীনী মা যাকে জন্ম দিয়ে আমাদের ধন্য করেছেন, যিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের পরাজয় অপমান রক্তের প্রতিশোধ নিয়ে ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে যুক্ত করেছিলেন বাংলা নামে এ দেশ। এজন্য আজ আমরা স্বাধীন। আমাদের দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালে বিশ্বাসঘাতকদের ষড়যন্ত্রে আমরা তাকে হারিয়েছি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ আমি এখানে বক্তৃতা করার জন্য নয়, বক্তৃতা শোনার জন্য এসেছি। বক্তৃতা শিশুরা করেছে। বিভিন্ন ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ শুনতে শুনতে আমি বিমোহিত হয়েছি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। জেলা প্রশাসকের স্বাগত বক্তব্য শেষে শুরু হয় আটটি বিদেশি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ উপস্থাপন। 

যারা আটটি বিদেশি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ উপস্থাপন করেন তারা হলেন, জাপানি ভাষায় দিলিপ মন্ডল, স্প্যানিশ ভাষায় তানভীন ইসলাম, ফারসি ভাষায় নাজমুল ইসলাম, আরবিতে সাইফুল ইসলাম, ফ্রেন্স ভাষায় কৌশিক মালো, ইংরেজিতে ফারহানা জানাম, চীনা ভাষায় মারুফ আহমেদ ও হিন্দিতে শ্রেয়া তুলশিয়ান।

স্বাগত বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ৭ই মার্চ বাঙালি জাতির একটি ঐতিহাসিক দিন। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে জাতির পিতার ঐতিহাসিক এ ভাষণটি ছড়িয়ে দিতেই এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতার এই ভাষণটি বিভিন্ন ভাষায় উপস্থাপন করার লক্ষ্যই হচ্ছে, বিভিন্ন দেশের মানুষ এ ভাষণটি শুনে উদ্বুদ্ধ হবে। আমরা চাই বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের এ ভাষণটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাক এবং এই দিনটি ‘আর্ন্তজাতিক ভাষণ দিবস’ হিসেবে পরিগণিত হবে। 


আওয়ামী লীগ   সাধারণ সম্পাদক   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানাতে চিঠি দিচ্ছে ইসি!

প্রকাশ: ০৮:১৯ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail বিএনপিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানাতে চিঠি দিচ্ছে ইসি!

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে মাঠের আন্দোলনে সক্রিয় বিএনপি। তবে রমজানের রোজা চলে আসায় এই আন্দোলন এখন কেবল ইফতার অনুষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে বলে জানিয়েছে সূত্র। সূত্রটি বলছে, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই বিএনপির এই চলমান আন্দোলন। বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার স্পষ্ট ঘোষণাও দিয়েছে দলটি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাদের সব ধরণের আমন্ত্রণও প্রত্যাখ্যান করে আসছে বিএনপি। তবুও আগামী নির্বাচন নিয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করার উদ্যোগ নিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য চিঠির খসড়াও তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

সূত্র জানায়, আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করতে চায় ইসি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংলাপের গুঞ্জনের মধ্যেই এই চিঠির তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী সপ্তাহের সোমবারের (২৭ মার্চ) মধ্যে বিএনপির কাছে এই চিঠি যেতে পারে বলে জানা গেছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। ইসির পক্ষ থেকে বরাবরই নির্বাচনে কারা অংশ নেবে তা রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য আসছিল। শুধু তাই নয়, কাউকে ভোটে আনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের নয় বলেও বক্তব্য এসেছে কমিশনের পক্ষ থেকে। 

সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কাউকে ভোটের মাঠে দাঁড় করিয়ে, মানে আনতেই হবে এটা কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাজ না। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাদের আহ্বান করে থাকি, করতে পারি। কিন্তু তারা আসবে কি, আসবে না, আইনতেই হবে; এই বিষয়টা কিন্তু আমাদের কাজও না। এটাই হলো আসল কথা।’

ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে চার কমিশনার চিঠির ড্রাফট প্রস্তুত করেছেন। যা চূড়ান্ত করার পর ইসি সচিবালয়ের মাধ্যমে চিঠি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে পৌঁছানো হবে। চিঠিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার লিখেছেন, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে।  

এছাড়াও খসড়া চিঠিতে বর্তমান ইসি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থানের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই।

চিঠিতে সিইসি বলেন, আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের নির্বাচন কমিশনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে দিনক্ষণ আলোচনা করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি।

এদিকে একই দিনে ইসি রাশেদা সুলতানার কাছে প্রশ্ন ছিল- নতুন করে কাউকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন কিনা? অবশ্য এমন প্রশ্নের জবাবে কিছুটা কৌশলী উত্তর দেন এই কমিশনার। তিনি বলেন, সংলাপ কাজের সুবিধার জন্য হয়। এটা করার জন্য আইনে কিছু বলা নেই। এইটুকু বলতে পারি প্রয়োজন হলে নিশ্চয় আবার আমরা বসব।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করে। যা প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি। ইভিএম নিয়ে আলাপে বিএনপির পাশাপাশি তাদের তখনকার জোটভুক্ত দলগুলো অংশ নেয়নি। দলটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটের কথা বলছে। বর্তমান কমিশন ভেঙে দেওয়ারও কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। 

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাতে আমন্ত্রণ জানাতেই পারে ইসি। যেহেতু বিএনপি ইসির নিবন্ধিত একটি রাজনৈতিক দল। সেহেতু বিএনপিকে সংলাপে বসতে চিঠি দিতেই পারে ইসি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিএনপি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে দাবি করছে, তা পূরণ করা ইসির পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়াও বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। সেক্ষেত্রে এই নির্বাচন কমিশনের সাথে বিএনপি সংলাপে বসবে কি না, সেটাও যেমন দেখার বিষয়, তেমনি ইসির আমন্ত্রণকে বিএনপি কতটুকু গুরুত্ব দেয় সেটাও এখন দেখার বিষয়।  


বিএনপি   সংলাপ   আমন্ত্রণ   চিঠি   সিইসি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

স্বাস্থ্যখাত হচ্ছে দুর্নীতির বড় আখড়া: জিএম কাদের

প্রকাশ: ০৭:৩৬ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যখাত হচ্ছে দুর্নীতির বড় আখড়া। দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্যখাতের সাথে সংশ্লিষ্ট আমলা ও ব্যবসায়ীরা লক্ষ-কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করছে। করোনা মোকাবেলায় সাফল্যের চেয়ে দুর্নীতি বেশি হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করেছে। কোভিড মোকাবেলায় আমরা নাকি প্রাইজ পেয়েছি। বিদেশ থেকে পুরুস্কার কীভাবে আসে আমরা তা জানি। দেশের মানুষ কী আপনাদের পুরুস্কার দিয়েছে? বিদেশি প্রাইজের কথা বলে দেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলো, কোভিডের কথা বলেও কিছু মানুষ হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সকল খাত থেকেই লুটপাটের টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে জড়িত ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ নয়, বটগাছ হয়েছে। দুর্নীতিরোধে কোন ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালে নির্ধারিত কোটা অনুযায়ী ডাক্তার নেই এই কথা সংসদে বললে ঐ হাসপাতালে ডাক্তারের সংখ্যা আরো কমে যায়। বাথরুমের সামনেও রোগী থাকে যেনো নারকীয় পরিবেশ।’   

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. জাহিদুল বারীর নেতৃত্বে শতাধিক চিকিৎসক জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের হাতে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এ সময় ‘জাতীয় চিকিৎসক পরিষদ’নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান দলে যোগ দেয়া চিকিৎসকদের স্বাগত জানিয়ে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা ও জাতীয় পার্টি রিচার্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট উইং এর আহবায়ক মনিরুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে যোগদান অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, ‘দেশের চিকিৎসা খাতে হ-য-ব-র-ল চলছে। দেশের মানুষ কখনোই চিকিৎসা সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। দেশের বেশির ভাগ মানুষের চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসা সরকারি হাসপাতাল। হাসপাতালে ডাক্তার নেই, সেবা নেই, যন্ত্রপাতি নেই। দেশের চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নেই। সংখ্যা কম থাকায় চিকিৎসকদের ওপর বাড়াবাড়ি রকমের দাবি থাকে সাধারণ মানুষের। যেটা অনেক সময় চিকিৎসকরা ম্যানেজ করতে পারে না। এ কারণেই অনেক সময় সংঘাত সৃষ্টি হয়। প্রয়োজনীয় ডাক্তার, নার্স এবং যন্ত্রপাতি থাকেনা হানপাতালে। যন্ত্রপাতি যা দেয়া হচ্ছে তা চলছে না।’

তিনি বলেন, ‘বড় বড় অবকাঠামো বা বিল্ডিং বানানো হচ্ছে। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় উন্নয়ন করা হচ্ছে। সকল উন্নয়নের পেছনে কিছু মানুষের ব্যক্তিগত স্বার্থ আছে। জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে কোন উন্নয়ন করা হচ্ছে না। ডাক্তার দেয়া হলে তাদের সাহ্যায্য করার লোক নেই। যারা দায়িত্বে আছেন তাদের একটাই লক্ষ্য কি করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়া যায়। যার কারণে বেশির ভাগ মানুষ চিকিৎসা সহায়তা পাচ্ছে না। চিকিৎসা খাতে কোন সাফল্য নেই।’ 

জিএম কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে কারো নিরাপত্তা নেই। বাবা তার ছেলেকে বা স্বামী তার স্ত্রীকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। মানুষের জীবনের, সম্পদের, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। পুরো সমাজই নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। এক শ্রেণীর মানুষ যা খুশি তাই করছে, কোন জবাবদিহিতা নেই।’ 

জাতীয় পার্টিতে যোগ দিতে আসা চিকিৎসকদের বিভিন্নভাবে বাঁধা দেয়া হয়েছে একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংবিধান রাজনীতির অধিকার দিয়েছে। স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের অধিকার হচ্ছে সাংবিধানিক অধিকার। এই সংবিধান অর্জনের জন্য জীবন দিয়ে মানুষ দেশ স্বাধীন করেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য সংবিধান ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্ষমতায় থেকে অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করে সেই টাকা বিদেশে পাচার করাই এখন কালচার হয়ে গেছে। আমরা এমন বাস্তবতা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে চাই।’ 

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে প্রতিটি উপজেলায় বিশেষায়িত হাসপাতাল জরুরি। বর্তমানে সরকার সংবিধানের প্রতি খুবই শ্রদ্ধাশীল। সংবিধানের বাইরে নির্বাচন তারা চায় না। একইভাবে বিএনপিও এক সময় সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধীতা করেছিলো। এখন বিএনপি তত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করছে। আসলে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কোন সমাধান নয়। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে। আনুপাতিক হারে নির্বাচন করতে পারলেই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।’ 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা , প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম সেন্টু, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, কেন্দ্রীয় নেতা লে কর্ণেল তসলিম উদ্দিন, ড. জাফর সিদ্দিকী, যোগদানকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. জাহিদুল বারী, ডা. মোস্তাকিমুল ইসলাম, ডা. খালেদ সুফিয়ান প্রমুখ।


জাতীয় পার্টি   চেয়ারম্যান   বিরোধীদল   উপনেতা   গোলাম মোহাম্মদ কাদের  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন