ইনসাইড পলিটিক্স

ইনসাফ কায়েম কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশা, কারা এরা?

প্রকাশ: ১০:১২ পিএম, ২২ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজ।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিক এ নেতা বলেছেন, দু-একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে তিনি তার বক্তব্য তুলে ধরবেন। বহিষ্কারের কারণ হিসেবে জানা যায়, শওকত মাহমুদকে নিয়ে বহুদিন ধরেই বিএনপির উচ্চ পর্যায়ে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করছিল। তার কার্যক্রম মনিটরিং করা হচ্ছিল। এর আগে তাকে দু’দফা শোকজ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে সূত্র। সূত্রটি বলছে, সবশেষ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাজধানী বনানীর এক হোটেলে ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এক সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিএনপির সন্দেহের সৃষ্টি হয়। সংগঠনটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার এবং সদস্য সচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ কারণেই শওকত মাহমুদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন- বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো সরকার বিরোধী আন্দোলন করছে। জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটিও সরকারের পতন চায়। সেক্ষেত্রে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি নিশ্চয়ই বিএনপি বা সমমনা দলগুলোর একটি অংশ। তবে শওকত মাহমুদকে কেন বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলো? তবে কি এটি বিএনপির নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের কৌশল? আবার কেউ বলছেন, ইনসাফ কায়েম কমিটি যদি বিএনপি বা সমমনা দলগুলোর অংশ না হয়, তবে কারা এরা?          

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নেপথ্যে থেকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা নিজেদেরকে আমেরিকান সিআইএ-তে কর্মরত বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। যারা আয়োজক তাদের মতে, ১৯১৩ সালে তারা এই কমিটি গঠন করেছেন। নৈশভোজ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন করে তারা এই কমিটি পুনরুজ্জীবিত করলেন। ল্যাংলে-তে কাজ করেন বলে যিনি পরিচয় দেন, অর্থাৎ আমেরিকাতে সিআইএ হেডকোয়ার্টারে তিনি কাজ করেন, নাম মাসুদ করিম। অনেক দিন থেকেই এই অঞ্চলে তাকে দেখা যায়, কখনও ব্যাংককে কখনও কাডমান্ডুতে, কখনও কলোম্বতে এবং দুবাইয়ে এসব জায়গায়- তিনি বাংলাদেশি আমেরিকান, তার এলাকা সিলেটে। আমাদের দেশের প্রথিতযশা অ্যাক্টিভিস্ট যারা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় তিনি বৈঠকে মিলিত হন। যাদের সঙ্গে তিনি (মাসুদ করিম) বৈঠকে মিলিত হয়েছেন, তাদের অনেকেই ওই নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন। তাকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একাধিক ব্যক্তি, যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় উপস্থাপক- তারা তাকে বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করেছেন। ফলে তাকে জড়িয়ে একটা রহস্য, একটা ধোঁয়াশা ওয়াকিবহাল মহলের মধ্যে আছে।

সূত্র জানায়, তাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখিও হয়েছে। তারা বিভিন্ন বিরোধী নেতা-নেত্রীদের কাছে ‘সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) কাজ করেন’- এই বলে গল্প দেয় যে, তাদেরকে নাকি মার্কিন সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি কাজ দিয়েছে বাংলাদেশের সরকার হটানোর। যা পুরোপুরি বানোয়াট ও কল্পনা প্রসূত। আশ্চর্য হলেও সত্য এই যে, সিআইএ’র নাম বিক্রি করে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা- আমলাদের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। 

সূত্র আরও জানায়, নৈশভোজ আয়োজনের বিষয়টি বিএনপির হাইকমান্ড বা সিনিয়র পর্যায়ের কোনো নেতাকে জানানো হয়নি। যে কারণে এই অনুষ্ঠানের ওপর দলটির বিভিন্ন পর্যায় থেকে তীক্ষ্ণ নজর ছিল। শওকত মাহমুদের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকে দলের পক্ষ থেকে ফোন করে অনুষ্ঠানে না যেতে বলা হয়। যারা নৈশভোজে আমন্ত্রিত ছিলেন, পরে তারা অংশ নেননি। এলডিপির কর্নেল অলি আহমেদ অনুষ্ঠানে গিয়েও অংশগ্রহণ না করে ফিরে আসেন। এমনকি আমন্ত্রিত অতিথিদের নজরদারি করতে সেখানে দুই সাবেক ছাত্রনেতাকে পাঠানো হয়, যাদের মধ্যে একজন অনুষ্ঠানের ভিডিও ধারণ করেন। আর অন্যজন সরাসরি লাইভে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানকে দেখান।

বিএনপির সূত্রমতে, সোমবার (২০ মার্চ) বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ অনুষ্ঠান নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেখানে নেতারা বলেন, গত বছরের এপ্রিলে পেশাজীবী সমাজের ব্যানারে একটি সমাবেশ ডেকে সরকার পতনের ডাক দিয়েছিলেন শওকত মাহমুদ। সেই পটভূমিতে তখন ওই সমাবেশের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক ছিল না। এর আগে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বরও হাইকমান্ডকে না জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে একটি মিছিল বের করে মুক্তাঙ্গনে গিয়ে অবস্থান নেন। দুই কর্মসূচির নেতৃত্বেই ছিলেন শওকত মাহমুদ। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে ‘সরকার পরিবর্তন আন্দোলন’-এর সঙ্গে যুক্ত থাকা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তাকে দুবার শোকজ করা হলেও এসব থেকে তিনি বের হতে পারেননি। ফলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে বহিষ্কার করা হয়।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, যেখানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচনে বিজয়ী হলে রাজপথে আন্দোলনে থাকা দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন, সেখানে ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে শওকত মাহমুদ তার প্রস্তাবনায় অন্তর্বর্তীকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবনায় জাতীয় সরকার গঠনের পর সেই সরকারকে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়। দলের পদে থেকে ভিন্ন ব্যানারে শীর্ষ নেতার সিদ্ধান্তকে অমান্য করেছেন তিনি। জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে যে অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে একাধিক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, যাদের শওকত মাহমুদের আগের দুই বিতর্কিত কর্মসূচিতেও দেখা গেছে। আগে ক্ষমা করা হলেও এখন ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দলে ভিন্ন মেসেজ যেতে পারে। পরে স্থায়ী কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

এ বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হলেও কেউ নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান ও দুজন যুগ্ম মহাসচিব জানান, বনানীর হোটেলে সুধী সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ২৬ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও অঙ্গ সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতাকে ফোকাস করা। কিন্তু তারা দলের হাইকমান্ডকে বিষয়টি আগেই জানিয়ে দেন এবং সেখানে অংশ নেবেন না বলেও নিশ্চিত করেন।

সূত্র জানায়, জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এই আয়োজনটার টাকা কোত্থেকে এসেছে?- এটা নিয়েও অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা করেছেন। প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এই টাকা কোত্থেকে এসেছে সেটাতো কেউ বলেন নাই। তবে এইটা বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা হয়তো সহায়তা করেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির ওই নেতারা জানান, তাদের অনুষ্ঠানে অর্থের উৎস নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপির কাছে তথ্য রয়েছে, এর পেছনে একটি শক্তি কাজ করছে। এর আগেও নানা তৎপরতায় তাদের নাম এসেছে। এখন আবারও নতুন করে কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। বিএনপির নেতৃত্ব ও আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করাই হলো তাদের মূল উদ্দেশ্য। এর সঙ্গে বিএনপির কিছু নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও কিছু পেশাজীবী নেতা জড়িত আছেন। যারা ফেব্রুয়ারিতেও থাইল্যান্ডে গোপন বৈঠক করেছেন বলেও তথ্য আছে। 

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কার্যত বিএনপি অস্বীকার করলেও বিএনপিকে কেন্দ্র করেই জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি ফোকাস হতে চেয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে। যদিও বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এ ঘটনাও সন্দেহের উর্ধ্বে নয়। হতে পারে এটি বিএনপির নতুন কোনো ষড়যন্ত্র। আবার এ-ও হতে পারে, যেহেতু জামায়াতের সাথে বিএনপির একটা সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে, তাই বিএনপির নেতাদের সামনে রেখে নতুন একটা পরিকল্পনা করছে জামায়াত। তবে ইনসাফ কায়েম কিমিটির পেছনে বিএনপি না জামায়াত ইন্দন দিচ্ছে- সেটাই দেখার বিষয়।


জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি   নৈশভোজ   শওকত মাহমুদ   বিএনপি   জামায়াত   সিআইএ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আমাদের অজান্তেই দেশে বাকশাল গঠন করা হয়েছে: জি এম কাদের

প্রকাশ: ০৭:৩৮ পিএম, ০৩ জুন, ২০২৩


Thumbnail জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘দেশে একটি দল আছে। সেই দল স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ শাসন করছে। সেই দলের মধ্যে প্রশাসন, আর্মি এবং আইনশৃংখলা বাহিনী সবাই সদস্য। সংসদ ও সংসদের স্পিকার সেই দলের হয়েই কথা বলছেন। সবাইকে সেই দলই রক্ষা করছে। বিচার বিভাগ নিয়ে আমরা গর্ব করতাম। কিছু দিন আগে সরকারি দলের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি বলেছেন, প্রধান বিচারপতিকে আমরা নামিয়ে দিয়েছি। কে নামিয়ে দিয়েছে? আওয়ামী লীগ নামিয়ে দিয়েছে। তার মানে বিচার বিভাগকেও ঐ দলের সদস্য হতে হবে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশন সবাই ঐ দলের সদস্য হয়েছে। তারা সবাই আওয়ামী লীগের এবং তাদের নেতা একজন। সেই নেতা যা বলেন, সবাই তাই করেন। তাই নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠু হবে? সেখানে দুর্নীতিবাজরা কিভাবে শাস্তি পাবে? কীভাবে মেধাবিরা চাকরি পাবে? সবাই দলীয় আস্তরনের মধ্যে আছে। যে নির্দেশ আসে সবাই সে নির্দেশ মেনে চলে। যেভাবে বাকশাল গঠন করা হয়েছিলো, সেভাবেই বাকশালের মত সরকার গঠন করা হয়েছে। আমাদের অজান্তেই দেশে বাকশাল গঠন করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শাসন ব্যবস্থার সকল প্রতিষ্ঠান একটি দলের সদস্য হয়ে গেছে। দেশের বাকি মানুষ যেনো মানুষ নয়। সাধারণ মানুষ খেলো কি খেলো না, তা দেখার কেউ নেই। বাকশালের মত একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে স্থায়ীত্ব দেয়া হয়েছে। সামনের নির্বাচনে বাকশালের মত সরকারকে চির স্থায়ীত্ব দেয়ার পরিকল্পনা চলছে। দেশে বাকশালের মত দল হয়েছে, এখানে সাধারণ মানুষের কোন স্থান নেই। সাধারণ মানুষ বিচার পায় না, সাধারণ মানুষের কথা গ্রাহ্য করা হয়না, সাধারণ মানুষ নির্বাচন করতে পারে না। সাধারণ মানুষ নির্বাচন করে জিততে পারবে না, এটাই বাস্তবতা।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করছি, আমরা নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসিনি। সরকারের কথা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। এক দলের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। তাহলেই দেশের মানুষ বেঁচে থাকার অবলম্বন পাবে। দেশকে মুক্ত করা না গেলে হাজার হাজার কোটি টাকা আবারো বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। সরকারের বিপক্ষে সত্য কথা বললে- কোনো গণমাধ্যম প্রকাশ করতে পারে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে গণমাধ্যমের গলা টিপে রাখার জন্য। শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে, আগামীতে ফাঁসির ব্যবস্থা করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আইন করে, নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে দেশে লুটপাটের ব্যবস্থা হচ্ছে। দেশকে বাঁচাতেই আমাদের রাজনীতি। বাজেটের কারণে সামনের দিনগুলো আরও কঠিন হয়ে উঠবে। সেজন্য সরকারের কোন প্রস্তুতি নেই। সরকার জান বাঁচাতে নির্বাচন পার করতে চাচ্ছে। তারপর তারা দেখিয়ে দেবে তারা কোথায় আর জনগণ কোথায়।’   

শনিবার (৩ জুন) দুপুরে নরসিংদী শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ কাদের এসব কথা বলেন।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মানুষ ভালো নেই। দেশের মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। সামনের দিনগুলো কেমন করে চলবে- তা নিয়ে চিন্তিত সবাই। দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির কারণে আয় দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না। মধ্যবিত্তরা এখন নিন্মবিত্ত নয়, দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেট কখনোই জনবান্ধব হতে পারে না। যে ট্যাক্স বিদ্যমান আছে তাই দেশের মানুষ দিতে পারছে না। কিন্তু আরো ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। মূল্যস্ফিতি আরো বাড়বে, জিনিস পত্রের দাম আরো বাড়বে। মানুষের আয় বাড়েনি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যারা চাকরি করে তারা চাকরি হারাচ্ছে। সরকার করোনা আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দোহাই দিয়ে জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়েছে। এখন আইএমএফ এর পরামর্শে আরেক দফা বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে। সব কিছুর দাম বাড়াচ্ছে। সারাদেশে অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজ করছে, এ দায় সরকারের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজ করছে কিন্তু আমাদের দেশের মতো কোনো দেশের মানুষ এত অসহায় নেই। মুল্যস্ফীতির কারণে মানুষ নিস্পেষিত হচ্ছে, সামনের দিকে হয়তো অনেকেই না খেয়ে মারা যাবে।’ 

জি এম কাদের বলেন, ‘কল-কারখানা বন্ধ হচ্ছে বিদ্যুতের অভাবে। শতভাগ বিদ্যুত দেয়ার কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে লক্ষ-কোটি টাকা তসরুপ করেছে। সরকার ঘোষণা দিয়েছিলো দু’শো ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বিদ্যুৎ দেয়া নয়। সরকারের তেল, গ্যাস ও কয়লা কেনার পয়সা নেই। এখন হাতে পায়ে ধরে বাকিতে গ্যাস, তেল ও কয়লা কিনতে হচ্ছে। গোঁজামিল দিয়ে দেশ চলছে। সরকারের হাতে বৈদেশিক মূদ্রা নেই। বকেয়া ঋণ পরিশোধ করলে সরকারের হাতে আর টাকা থাকবে না। এ কারণে, বিদেশ থেকে মাল আনতে পারছে না সরকার। দেশের মানুষ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখেননি। কিন্তু সরকার কয়লার বিল বকেয়া রেখেছেন কেন? মানুষের দুর্দশার জন্য বর্তমান সরকার দায়ী। 

তিনি বলেন, ‘সরকার মানুষকে বিভ্রান্ত করে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের নামে লাখ-কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। এ কারণেই বিদ্যুৎ দিতে পারছে না সরকার। কিছু কিছু কোম্পানীর সাথে সরকার চুক্তি করেছে বিদ্যুত উৎপাদন হোক বা না হোক ডলারে তাদের পেমেণ্ট করতে হবে। এলএনজি খালাস হোক বা না হোক প্রতিদিন খালাস করার জায়গার জন্য একলাখ ডলারের বেশি দিতে হচ্ছে। এসব কোম্পানী হচ্ছে সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু পরিবারের। আমরা পাকিস্তান আমলে ২২ পরিবার দেখেছি এখন ২২ হাজার পরিবার সৃষ্টি হয়েছে যারা সরকারের সহায়তায় লুটপাটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে।’ 

সম্মেলনে জাতীয় পার্টি মহাসিচব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘দেশের মানুষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীন বা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন চায় না। দেশের মানুষ চায় ভোটাধিকার। দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে চায়। গ্রামের মানুষ দিনে ৩ ঘন্টাও বিদ্যুৎ পায় না। দেশের মানুষ মুক্তি চায়। বিদ্যুতের নামে সরকার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে কিন্তু বিদ্যুৎ দিতে পারেনি। আবার বিএনপি বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরত মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছিলো। এই দুটি দলকে দেশের মানুষ আর চায় না।’ 

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব  ফখরুল ইমাম এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তার এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন। নরসিংদী জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম শফিকের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মো. ওমর ফারুক মিয়ার সঞ্চালনায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শামীম রানা ভূঁইয়া, হাজী মো. নূরুল ইসলাম, আব্দুল কাদির কিবরিয়া, মো. দেলোয়ার হোসেন, এডভোকেট সারোয়ার মোল্লা, শফিকুল ইসলাম সুমন, এডভোকেট কামাল উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার মো. শহিদুল ইসলাম, আক্কাস আলী, মো. দেওয়ান আলী গাজী, মো. হাবিবুর রহমান, হারুন অর রশিদ হিরা, এডভোকেট আবুল হাসনাত মাসুম, মো. নেওয়াজ আলী ভূঁইয়া, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, জাকির হোসেন মৃধা। 

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, হেনা খান পন্নী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মমতাজ উদ্দিন, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, যুগ্ম মহাসচিব শামসুল হক, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মাখন সরকার, মাসুদুর রহমান মাসুম, এম এ রাজ্জাক খান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট রেজাউল করিম বাছেদ প্রমুখ। 


জাতীয় পার্টি   গোলাম মোহাম্মদ কাদের   সম্মেলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগকে কেউ ধ্বংস করতে পারেনি, পারবেও না: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৭:০৪ পিএম, ০৩ জুন, ২০২৩


Thumbnail প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের ওপর বারবার আঘাত, হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। ইয়াহিয়া খান চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ-খালেদা জিয়াও চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগকে কীভাবে ধ্বংস করা যায়? আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের সংগঠন হিসেবে গড়ে উঠেছে। তাই এই সংগঠনকে কেউ ধ্বংস করতে পারেনি, পারবেও না।’

শনিবার (৩ জুন) বিকেলে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু একটি দল নয়, আওয়ামী লীগ ইনস্টিটিউটের মতো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এদেশের উন্নতি হয়, এটাই বাস্তব। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়েই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলেন। আওয়ামী লীগ নামক সংগঠন এদেশের মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রামে সব সময় ভূমিকা পালন করেছে।’ 

সরকার প্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের কল্যাণ হয়। মানুষের কল্যাণে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা যেসব কাজ করি, আওয়ামী লীগ যেসব পরিকল্পনা নেয়, প্রকল্প নেয়, তা সুপরিকল্পিতভাবেই করা হয়। আমাদের মাটি, মানুষ, পরিবেশ, আমাদের দেশের ভৌগলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক অবস্থা, সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা প্রকল্প গ্রহণ করি। তার ফলে আমাদের প্রতিটি প্রকল্পই সাফল্য অর্জন করে। মানুষ তার সুফল পায়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ এর বাংলাদেশ কী ছিল, এখন বাংলাদেশ কী অবস্থায় আছে, কেউ তুলনাটা বিবেচনা করলেই পরিবর্তনটা দেখতে পারবেন। একই দিনে ১০০ সড়ক উদ্বোধন করা, এটা কী কোনো সরকার আগে করেছে, পারেনি। কে পেরেছে? আওয়ামী লীগ। আজকে আমরা বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি, এখন আমাদের বেকারত্ব মাত্র ৩ শতাংশ। সেটাও থাকবে না। যদি কেউ উদ্যোগ নেয় সেও কাজ করতে পারবে। আমরা সেই ব্যবস্থাটাও করে দিয়েছি। আমাদের গ্রামের অর্থনীতি অনেক মজবুত। গ্রামের দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কৃষকদের আমরা সব ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছি, দুই কোটি ১০ লাখ কৃষককে কার্ড দিয়েছি। ভর্তুকির টাকাটা তার ব্যাংকে চলে যায়। ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। এক কোটি ২ লাখ ৭০ হাজার ১৪৩ জন কৃষক পুরো বাংলাদেশে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। এখন তারা সেখানে বসে টাকা পেয়ে যায়। ধান কাটার মৌসুমে মানুষ পাওয়া যায় না, মজুরের দাম বেড়ে গেছে। আমি আহ্বান করেছি আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী মাঠে চলে গেছে, কৃষকের ধান কেটে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে।’  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ শতভাগ দিতে পেরেছি, এখন যেহেতু তেলের দাম বেড়ে গেছে, গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে, কয়লার দাম বেড়ে গেছে, কয়লাও পাওয়া যাচ্ছে না। আগে এক সময় যারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা করেছিল, তারাই এখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করছে। তার কারণে কয়লা কিনে আনতে সমস্যা হচ্ছে। আমি জানি মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে, আমরা তো লোডশেডিং একেবারে দূর করে দিয়েছিলাম, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ যদি না হতো আর করোনাভাইরাস যদি না দেখা দিতো, আজকে যদি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা না দেখা দিতো, মুদ্রাস্ফীতি না দেখা দিতো, তাহলে মানুষের কষ্ট হতো না। আজকে আমরা ভেতরে যতই চেষ্টা করি, যে জিনিসটা বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে, সেটা কষ্ট করে আমাদেরকে জোগাড় করতে হচ্ছে।’ 

জ্বালানির সুখবর জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়ে গেছে। আমরা আরো কয়েকটা দেশের সঙ্গে করছি যাতে গ্যাস কিনতে পারি। এই কষ্ট দূর করতে পারি। একবার অভ্যাস হয়ে গেলে মানুষের কষ্ট বাড়ে, বিএনপি-জামায়াতের আমলে তো বিদ্যুৎ ছিলই না। তখন মানুষ হাহাকার করত। বিদ্যুৎ চাওয়ার কারণে কানসার্টে খালেদা জিয়া গুলি করে মানুষ হত্যা করেছিল। সারের দাবি করেছিল বলে ১৮জন কৃষক হত্যা করছিল। শ্রমিকের মজুরি দাবি করেছিল বলে ২৭ জন শ্রমিককে রোজার সময় তাদের হত্যা করেছিল।’


প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পাঁচ ‘না’

প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ০৩ জুন, ২০২৩


Thumbnail

বিএনপি যতই আন্দোলন জোরদার করতে চাইছে, সরকারের বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলন শুরু করতে চাইছে ততই আওয়ামী লীগ অনড় অবস্থানে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক সূত্রগুলো বলছে, বিএনপিকে কোথাও কোনো ছাড় দেয়া হবে না। বিএনপির ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এখন পাঁচ ‘না’ এর নীতি গ্রহণ করেছে। এগুলো হলো:- 

১. বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়: নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগ কোনরকম আলোচনা করবে না। বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকার বা নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, শুধুমাত্র যদি বিএনপি নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেয় তখনই বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো রকম আলাপ আলোচনা করতে পারে। কিন্তু নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন বা নির্বাচন ঘোষণা বা নির্বাচনে আনার জন্য বিএনপির সাথে কোন রাজনৈতিক সমঝোতায় আওয়ামী লীগ যাবে না। 

২. আইনের ব্যত্যয় ঘটাবে না: বিএনপির পক্ষ থেকে এখন জেল-জুলুম ইত্যাদি নিয়ে কথাবার্তা বলা হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার, হয়রানির অভিযোগ উঠছে। তাদের বিরুদ্ধে নানারকম হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারেও আওয়ামী লীগের অবস্থান ‘না’। আওয়ামী লীগ বলে দিয়েছে যে আইন তার নিজস্ব গতি চলবে। অপরাধীদের জন্য রাজনৈতিক সমঝোতার স্বার্থে আইনের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তার ব্যাপারে আইনের বিধি বিধানকে মেনে চলতে হবে। কারণ বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীন। এখানে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ সরকার করবে না।

৩. নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তনের না: বিএনপির পক্ষ থেকে বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে সকলের সাথে আলোচনা করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনের দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। এই দাবিকেও আওয়ামী লীগ নাকচ করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলা হচ্ছে যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে বর্তমান সংবিধানের অধীনে। কাজেই এই নির্বাচন কমিশনকে এখন পরিবর্তন করা বা বিএনপির দাবি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের মতো একটি সাংবিধানিক পদে কোনো সুযোগ নেই। 

৪. তারেক জিয়ার ব্যাপারে না: বিএনপির পক্ষ থেকে একটি বড় দাবি হল যে তারেক জিয়ার মামলা প্রত্যাহার এবং তাকে দেশে আসার সুযোগ দেওয়া এবং তার সঙ্গে একটি সমঝোতা করা। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। সরকার বলে দিয়েছে যে সরকার আর যাই করুক তারেক জিয়ার সাথে কোন রকম সমঝোতা করবে না। তারেক জিয়া যদি দেশে আসতে চায় তাহলে তাকে আইনি বাধ্যবাধকতা গুলো মেনে চলতে হবে। তারেক জিয়াকে দেশে আসার পথে কোন বাধা নেই। বরং সরকারই চায় তারেক জিয়া দেশে আসুক এবং  আইনের আওতায় যেন তারেক আত্মসমর্পণ করে এবং আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান প্রমান করার চেষ্টা করে।

৫. জামায়াতের সাথে না: বিএনপির সঙ্গে যেমন আওয়ামী লীগ কোনো সমঝোতা করবে না তেমনি জামায়াতকে কোন আশ্রয় প্রশ্রয় দেবে না। মূলত জামায়াত এখন বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় ভিন্নরূপে আন্দোলন সংগ্রাম এবং নির্বাচন করতে চাইছে। সরকারের সাথে একটি সমঝোতায়ও আসতে চাচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে জামায়াতের সঙ্গে কোনো রকম সমঝোতায় সরকার যাবে না। 

এই পাঁচ ‘না’ এর অবস্থানে থেকে আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন এটাই তাদের জন্য প্রধান এবং সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 

বিএনপি   নির্বাচনকালীন সরকার   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনকালীন সরকার: শেখ হাসিনাই বিএনপি’র প্রধান মাথাব্যথা

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৩ জুন, ২০২৩


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে একটি রাজনৈতিক টানাপোড়ন চলছে। বিএনপি বলেছে, নির্দলীয় নিপপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, নির্দলীয় নিপপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার এখন একটি মৃত ইস্যু। তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা কোনভাবেই সম্ভব নয়। বরং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হতে হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, সব দল যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সে জন্য আলাপ আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। এসব আলাপ আলোচনায় সংবিধানের আওতায় একটি নির্বাচনকালীন সরকার কিভাবে গঠন করা যায় তা বিবেচনা করা হচ্ছে। এ বিবেচনায় বিএনপি’র প্রধান আপত্তি প্রধানমন্ত্রী নিয়ে।

আন্তর্জাতিক মহল বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনকালীন সরকারের একটি খসরা রূপরেখা তৈরি করেছে। সেই রূপরেখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব করা হয়েছে, যে নির্বাচনকালীন সরকারের ছোট একটি মন্ত্রীসভা থাকবে, মন্ত্রীসভায় বিএনপি’র সদস্যও থাকবে। এছাড়া নির্বাচনকালীন সরকারের একটি শক্তিশালী ১০ সদস্যের উপদেষ্টা মণ্ডলী গঠন করা হবে এবং এই উপদেষ্টা মণ্ডলীই নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকারের এই রূপরেখার একটি ব্যপারেই বিএনপি’র আপত্তি। বিএনপি বলছে, অন্য যেকেও প্রধানমন্ত্রী হোক না কেন, নির্বাচনকালীন সরকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে পারবে না। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান এবং আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি’র এখন প্রধান মাথাব্যথা হল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা মনে করছেন যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে, সেই সরকারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাইস্না থাকতে পারবে না। কিন্তু সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং আইনজ্ঞরা বলছেন, এটি অবাস্তব, অসম্ভব। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সংসদে আস্থাভাজন নেতাই প্রধানমন্ত্রী হবেন। এর কোন বিকল্প নেই। আর তাই নির্বাচনকালীন সরকারে শেখ হাসিনার বিকল্প কোন প্রধানমন্ত্রী করা সাংবিধানিকভাবেই সম্ভব নয়। এটি করতে গেলে সাংবিধানিক কাঠামো লঙ্ঘিত হবে। কূটনৈতিক মহল বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাস করা যেতে পারে, প্রধানমন্ত্রীকে রুটিন দায়িত্বের মধ্যে সীমিত করা যেতে পারে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে অন্যকোন প্রধানমন্ত্রী করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর এটি বিএনপি’র আপত্তির কারণ।

বিএনপি’র একজন নেতা বলেছেন যে, শেখ হাসিনা একক নেতৃত্বেই দল এবং দেশ পরিচালনা করছেন। সব সিদ্ধান্ত তার মাধ্যমেই হচ্ছে। সবকিছুর উপর তার নিয়ন্ত্রন রয়েছে। কাজেই তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

বিএনপি’র আরেকজন নেতা বলেছেন যে, বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিরঙ্কুশ। কাজেই প্রধানমন্ত্রী যদি আওয়ামী লীগের থাকেন তাহলে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ করা খুব সহজ হবে।

কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনৈতিকরা মনে করছেন যে, তারা এমন কিছু বিধি ব্যবস্থা, নিয়ম নীতি তৈরি করতে চান যে সমস্ত বিধি ব্যবস্থা নিয়ন নীতিতে কোনভাবেই নির্বাচনে কারচুপি করার সুযোগ থাকবে না এবং প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবে। আর এরকম অবস্থা তৈরি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু বিএনপি এখন পর্যন্ত এটি নিয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে। তবে কূটনৈতিক মহল আশাবাদী যে, শেষ পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হবেই এবং এই রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমেই আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ঢাকা জেলা আ. লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৪:৫৩ পিএম, ০৩ জুন, ২০২৩


Thumbnail

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নিজস্ব রাজনৈতিক কার্যালয় উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৩ জুন) রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিকেল ৪টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে এ কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে গত বুধবার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ বলেন, আগামী শনিবার (৩ জুন) আমাদের দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করা হবে। আমাদের সভানেত্রী, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অফিস উদ্বোধন করবেন।

ওইদিন দুুপুরে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। এসময় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন