তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির মধ্যেই সংকট, দেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই।’
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তথ্য অধিদফতর থেকে প্রকাশিত ‘বিজয়ের কথা বলবো’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া ও অতিরিক্ত প্রধান তথ্য অফিসার মুন্সী জালাল উদ্দীন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্য ‘দেশ ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে’ নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব যদি কথাটা এভাবে বলতেন যে, বিএনপির মধ্যে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট চলছে -সেটি বাস্তব এবং ঠিক হতো। কারণ দেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই এবং বিএনপির অভ্যন্তরেই ভয়াবহ সংকট চলছে। বিএনপির চেয়ারপার্সন সাজাপ্রাপ্ত আসামী এবং তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন পলাতক। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ভারপ্রাপ্তকে চেয়ারম্যান হিসেবে মানতে নারাজ, আবার অনেকেই মির্জা ফখরুল সাহেবের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। তাদের মধ্যে ভয়াবহ সংকট।’
‘বিএনপির সব অর্জন আওয়ামী লীগ ধ্বংস করছে’ এমন অভিযোগের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘বিএনপির অর্জন হচ্ছে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, পাঁচশ জায়গায় একযোগে বোমা হামলা। বিএনপির সৃষ্টি হচ্ছে শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, সেগুলো এখন এ দেশে নাই। আমরা সেই সমস্ত অর্জন ধ্বংস করেছি। আর এ সবের বিপরীতে গত ১৪ বছরে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের ঈর্ষণীয় অগ্রগতি হয়েছে। এটি আজকে সমগ্র বিশ্ব স্বীকার করছে।’
মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পাকিস্তানের পার্লামেন্টে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বক্তব্য দেওয়া হয়। পাকিস্তানের টেলিভিশনে তাদের নিজেদের সমালোচনা আর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, জাতিসংঘের মহাসচিব সবাই আজকে বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। পারছেনা শুধু বিএনপি আর বিএনপির মহাসচিবসহ নেতৃবৃন্দ।’
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে আমরা বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনের নমুনা দেখেছি। বিএনপি যখন আন্দোলনের কথা বলে, তখন মানুষের পেট্রোলবোমা, মানুষ পুড়িয়ে মহৌৎসবের কথা মনে পড়ে। বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে সেই কাজ আবার করতে দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কখনো ফিরে আসবে না।’
উল্লেখ্য, পত্রপত্রিকা ও অনলাইনে প্রকাশিত তথ্য অধিদফতরের নিবন্ধের সংকলন ২৫০ পৃষ্ঠার ‘বিজয়ের কথা বলবো’ বইটিতে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, দেশ গঠন ও উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে বিশিষ্ট রাজনীতিক, গবেষক ও ইতিহাসবিদদের ৫৩টি নিবন্ধ সংকলিত রয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বাংলাদেশের নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মেজর হাফিজ সাকিব আল হাসান কিংস পার্টি ড. মঈন খান বিএনপি
মন্তব্য করুন
মো. সিদ্দিকুর রহমান আওয়ামী লীগ বিপ্লব বড়ুয়া সুজিত রায় নন্দী
মন্তব্য করুন
আবদুল আউয়াল মিন্টু তারেক জিয়া বিএনপি ২৮ অক্টোবর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার জন্য নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের করা এই আবেদন এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন যে, সচিব তাকে ফাইলটি পাঠিয়েছেন। এটি তিনি দেখছেন। আগামীকাল তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আইনমন্ত্রী এও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি খুব একটা সরে আসবেন না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে কি ধোঁকা দিয়েছে—এরকম একটি প্রশ্ন এখন বিএনপির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিএনপি নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনায় এই প্রসঙ্গটি বারবার আনছেন। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করে, বিএনপি যে আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছিল, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপি কর্মীদের মধ্যে যে তেজি ভাব এসেছিল, তার প্রধান কারণ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব এবং আগ্রহ। তাছাড়া বিভিন্ন সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কূটনীতিকরা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যে ভাষায় যে ভাবে কথা বলেছেন তাতে বিএনপির নেতাদের মধ্যে স্থির বিশ্বাস জন্মগ্রহণ করেছিল যে, তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চায় না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এজেন্ডা। আর এ কারণেই বিএনপি নেতারা এই বক্তব্যটিকে তাদের কর্মীদের কাছে সঞ্চারিত করেছিল এবং কর্মীরা উৎসাহিত হয়েছিল।
টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। ১৬ বছরে পা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ। টানা ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে একটা ভারসাম্য লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদেরকে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন করে একেক মেয়াদে একেক জনকে মন্ত্রী করেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন করে নেতাদের যেমন যোগ্যতা পরিমাপ করেন, ঠিক তেমনি তাদেরকে ক্ষমতাবান করেন।
নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে একশ কোটি টাকার বেশি উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করছেন। কাকে কাকে আটক করতে হবে এবং কারা কারা বিএনপিতে বড় ধরনের আন্দোলন করতে চায়, সরকারের জন্য বিপজ্জনক সেই নামের তালিকা সরবরাহ করেছেন। কাদেরকে বাইরে রাখলে কোন সমস্যা নেই সে নামও জানিয়েছেন সরকারি দলের লোকজনকে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেন বিএনপি কোনো বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে পারে সেজন্য আশ্বাসও দিয়েছেন। তার এই আশ্বাসের কারণেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেকটা নির্ভর অবস্থায় নির্বাচন করেছে এবং বিএনপি যথারীতি নির্বাচন প্রতিরোধে কোন বড় ধরনের সহিংসতা বা নাশকতা করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।