নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে মাঠের আন্দোলনে সক্রিয় বিএনপি। তবে রমজানের রোজা চলে আসায় এই আন্দোলন এখন কেবল ইফতার অনুষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে বলে জানিয়েছে সূত্র। সূত্রটি বলছে, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই বিএনপির এই চলমান আন্দোলন। বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার স্পষ্ট ঘোষণাও দিয়েছে দলটি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাদের সব ধরণের আমন্ত্রণও প্রত্যাখ্যান করে আসছে বিএনপি। তবুও আগামী নির্বাচন নিয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করার উদ্যোগ নিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য চিঠির খসড়াও তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
সূত্র জানায়, আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করতে চায় ইসি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংলাপের গুঞ্জনের মধ্যেই এই চিঠির তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী সপ্তাহের সোমবারের (২৭ মার্চ) মধ্যে বিএনপির কাছে এই চিঠি যেতে পারে বলে জানা গেছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। ইসির পক্ষ থেকে বরাবরই নির্বাচনে কারা অংশ নেবে তা রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য আসছিল। শুধু তাই নয়, কাউকে ভোটে আনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের নয় বলেও বক্তব্য এসেছে কমিশনের পক্ষ থেকে।
সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কাউকে ভোটের মাঠে দাঁড় করিয়ে, মানে আনতেই হবে এটা কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাজ না। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাদের আহ্বান করে থাকি, করতে পারি। কিন্তু তারা আসবে কি, আসবে না, আইনতেই হবে; এই বিষয়টা কিন্তু আমাদের কাজও না। এটাই হলো আসল কথা।’
ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে চার কমিশনার চিঠির ড্রাফট প্রস্তুত করেছেন। যা চূড়ান্ত করার পর ইসি সচিবালয়ের মাধ্যমে চিঠি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে পৌঁছানো হবে। চিঠিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার লিখেছেন, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে।
এছাড়াও খসড়া চিঠিতে বর্তমান ইসি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থানের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই।
চিঠিতে সিইসি বলেন, আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের নির্বাচন কমিশনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে দিনক্ষণ আলোচনা করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি।
এদিকে একই দিনে ইসি রাশেদা সুলতানার কাছে প্রশ্ন ছিল- নতুন করে কাউকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন কিনা? অবশ্য এমন প্রশ্নের জবাবে কিছুটা কৌশলী উত্তর দেন এই কমিশনার। তিনি বলেন, সংলাপ কাজের সুবিধার জন্য হয়। এটা করার জন্য আইনে কিছু বলা নেই। এইটুকু বলতে পারি প্রয়োজন হলে নিশ্চয় আবার আমরা বসব।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করে। যা প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি। ইভিএম নিয়ে আলাপে বিএনপির পাশাপাশি তাদের তখনকার জোটভুক্ত দলগুলো অংশ নেয়নি। দলটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটের কথা বলছে। বর্তমান কমিশন ভেঙে দেওয়ারও কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা।
এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাতে আমন্ত্রণ জানাতেই পারে ইসি। যেহেতু বিএনপি ইসির নিবন্ধিত একটি রাজনৈতিক দল। সেহেতু বিএনপিকে সংলাপে বসতে চিঠি দিতেই পারে ইসি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিএনপি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে দাবি করছে, তা পূরণ করা ইসির পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়াও বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। সেক্ষেত্রে এই নির্বাচন কমিশনের সাথে বিএনপি সংলাপে বসবে কি না, সেটাও যেমন দেখার বিষয়, তেমনি ইসির আমন্ত্রণকে বিএনপি কতটুকু গুরুত্ব দেয় সেটাও এখন দেখার বিষয়।
বিএনপি সংলাপ আমন্ত্রণ চিঠি সিইসি
মন্তব্য করুন
বিএনপি কিংস পার্টি মেজর হাফিজ সাকিব আল হাসান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
সংযমের এই রমজান মাসে ইফতার পার্টির নামে বিএনপি গিবত পার্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শ্রমিক লীগ এবং কৃষক লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে বিএনপির নেতারা ক্লান্ত, কর্মীরা হতাশ। এ অবস্থায় গালিগালাজ করা ছাড়া তাদের করার কিছু নেই। দলটি এখন ইফতার পার্টির নামে সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ইফতার পার্টি করে, এটাকে ইফতার পার্টি বলবো নাকি গিবত পার্টি বলবো। আওয়ামী লীগের গিবত করার জন্যই ইফতার পার্টি। স্রষ্টার প্রশংসার জন্য নয়, ইফতার পার্টির নামে ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের রাজনীতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
বিএনএম সাকিব আল হাসান মেজর হাফিজ
মন্তব্য করুন
সদ্যই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের রত্ন সাকিব আল হাসান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে হয়েছেন মাগুরা-১ আসনের এমপি। তবে এরই মাঝে ভিন্ন এক সমালোচনার জন্ম নিয়েছে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে।
গুঞ্জন উঠেছে, দ্বাদশ নির্বাচনের পূর্বে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে এমন একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। সাবিকের এমন কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছে। এর আগে সে কোনো দল করেছে কি না সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়।
কাদের আরও বলেন, নমিনেশন চাওয়ার আগে সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তাকে প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে।
তিনি বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ঠিক আছে। আমাদের নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন ছাড়া সরকারে কেউ ক্ষমতা বসাতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা এবং দণ্ড স্থগিতের বিষয়ে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। সোমবার (১৮ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
চলতি বছরের ৬ মার্চ খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে ও তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। পরে সেই আবেদনের বিষয়ে মতামত নিতে সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
জানা যাই, ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না- এ দুই শর্তে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ ইতোপূর্বে আটবার বাড়ানো হয়েছে। এবার বাড়ানো হলে নয়বারের মত খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়বে।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে খালেদা জিয়ার দণ্ড ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়। যার মেয়াদ আগামী ২৪ মার্চ শেষ হবে।
গত বুধবার (১৩ মার্চ) রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় বেগম খালেদা জিয়াকে। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাকে বাসায় নেওয়া হয়।
বিএনপি খালেদা জিয়া মুক্তিবিষয়ে সিদ্ধান্ত
মন্তব্য করুন
মেজর হাফিজ এবং সাকিব আল হাসানের ভাইরাল ছবির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচনের আগে বিএনপির অনেকেই নির্বাচনে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিল। তারা বিএনএম বা কিংস পার্টি গঠনেও তৎপর ছিলেন। মেজর হাফিজ সুবিধা করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বিএনএমে যোগ দেননি। এখন তিনি আবার সাচ্চা বিএনপির সাজার একটি নাটক করছেন। তবে সুযোগ সুবিধা পেলে কে কি করতে পারে তার একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিনের ছবিতে।