ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে মির্জা ফখরুলদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ০৩:৩৯ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল আলমগীরের মর্মবেদনা আমরা বুঝি। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মির্জা ফখরুলদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সুদূর লন্ডন থেকে যে ওহি নাযিল হয় কিংবা যে সিদ্ধান্ত আসে, তা মুখ বুজে মেনে নিতে বাধ্য হন ফখরুল সাহেবরা।’

শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামির প্রেসক্রিপশনে পরিচালিত হয় বিএনপি; অগণতান্ত্রিক ও অগঠনতান্ত্রিকভাবে কমিটি ভাঙে-গড়ে, বহিষ্কার-পুরস্কার নির্ধারিত হয় এবং কমিটি ও মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য চলে। আয়নার সামনে নিজের অসহায়, নিরুপায় ও পরাধীন চেহারা দেখতে দেখতে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল সাহেব জনগণের বাক-স্বাধীনতাকে ওই একই ফ্রেমে বন্দী করে ফেলেছেন। তাই মির্জা ফখরুল সাহেব তোতা পাখির মতো সরকারের বিরুদ্ধে বিষাদ্গারে লিপ্ত থাকেন।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেছেন। মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য ভূতের মুখে রাম রাম ছাড়া কিছু নয়। কারণ বিএনপি কখনোই জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও জনমতকে ধারণ করেনি। বিএনপির জন্মই হয়েছিল বন্দুকের নলের মুখে জনগণকে জিম্মি করে অবৈধ ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অবাধ সুযোগ প্রতিষ্ঠায় অবিরাম আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।’

‘শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষের বাক, ব্যক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুসংহত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে মত প্রকাশের অনিরুদ্ধ দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অর্ধ-শতাধিক বেসরকারি টেলিভিশন, এফএম রেডিও,কমিউনিটি রেডিও ও সহস্রাধিক সংবাদপত্রের নিবন্ধন দিয়ে সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্প্রসারিত করেছে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে। বরং এই সুযোগের অপব্যবহার করে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত চিরায়ত ভঙ্গিতে সরকারের বিরুদ্ধে নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। শুধু বাক-স্বাধীনতা ভোগ করাই নয়, নিজেদের ইচ্ছেমতো মনগড়া অপপ্রচার চালাতেও তারা কুণ্ঠাবোধ করে না।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জনগণের কল্যাণে, গণ-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাকে ধারণ করেই সরকার পরিচালনা করে আসছেন। মানুষকে নির্বাক করে রাখতে নয়, গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনিকে প্রতিষ্ঠা করতেই পরিচালিত হয় সরকারের সব উদ্যোগ। অথচ বিএনপি আমলে জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও ন্যূনতম নাগরিক অধিকারও ছিল না। বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।’

‘বিএনপির শাসনামলে বিদ্যুতের দাবি করায় নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা, সারের দাবিতে আন্দোলন করায় কৃষককে গুলি করে হত্যা,বেতন-বোনাস দাবি করায় পবিত্র রমজান মাসে মিছিলে গুলি চালিয়ে শ্রমিক হত্যাসহ জনগণের ওপর স্টিম রোলার চালানোর মধ্য দিয়ে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার মতো ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত করেছিল বিএনপি।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থা যে গণমুখী ও কল্যাণকর হতে পারে তার স্বরূপ প্রতিষ্ঠিত করেছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের নীতি হলো ক্ষমতাকে সেবার সুযোগ হিসেবে দেখা। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের অর্থনীতি মজবুত ভীতের ওপর দাঁড়িয়েছে ও সার্বিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত-সমৃদ্ধ মানবিক-কল্যাণকর স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। জয় আমাদের হবেই।’

বিএনপি   মির্জা ফখরুল   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ জানতে চায় ব্রিটিশ দূতাবাস

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গতকাল ঢাকাস্থ ব্রিটিশ দূতাবাসে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল ব্রিটিশ দূতাবাসে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক এক ঘণ্টার বেশি সময় তাদের সাথে বৈঠক করেন। এসময় ব্রিটিশ দূতাবাসে অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এই বৈঠকটি নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কারণ ২০০৮ সাল থেকেই লন্ডনে অবস্থান করছেন বিএনপির এখনকার শীর্ষ নেতা তারেক জিয়া। লন্ডনে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থেকে তিনি সাম্প্রতিক সময়ে দল পরিচালনা করছেন, বিভিন্ন রকম কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন। এটি নিয়ে ব্রিটিশ সরকার এক ধরনের অস্বস্তিতে রয়েছে বলেও জানা গেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে বিভিন্ন মামলায় দণ্ডিত এবং অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত তারেক জিয়াকে যেন বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়- এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেনদরবার করা হচ্ছে। 

আর এই কারণেই ব্রিটিশ সরকার এখন তারেক জিয়াকে রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। কারণ ব্রিটেন তার নিজের দেশের ভূখণ্ড অন্যদেশে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস বা নাশকতার সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করতে দেয় না। এটি ব্রিটেনের ঐতিহ্যগত রীতি।

সাম্প্রতিক সময়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো এসেছে তাতে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে তিনি ব্রিটেনে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানারকম ষড়যন্ত্র এবং অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। 

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপির তিন নেতাকে ডেকে সারা কুক কিছু সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন এবং তারেকের ভাবনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। অবশ্য বিএনপির তিন নেতা তারেকের ভাবনা সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি। তারা বিষয়টি নিয়ে তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলে আবার সারা কুককে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। 

উল্লেখ্য যে, ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো মনে করে যে, বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন দরকার। যারা দেশে থেকে রাজনীতি করছেন, দলে সার্বক্ষণিক সময় দিচ্ছেন, তাদেরকেই নেতৃত্বে রাখা উচিত। 

পশ্চিমা দেশগুলো এই মুহূর্তে তারেক জিয়াকে বিএনপির কার্যকর নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়ে আসছে বেশ কিছুদিন ধরে। বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এই মনোভাবটি পশ্চিমা কূটনীতিকদের মধ্যে আরও প্রবলভাবে দেখা যাচ্ছে। যেহেতু তারেক জিয়া এখন ব্রিটেনেই অবস্থান করছেন, কাজেই সারা কুক এই বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন।   

তারেক জিয়ার ব্রিটেনে অবস্থান এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ফলে বাংলাদেশ ব্রিটিশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একধরনের অস্বস্তি এবং ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে বলেও যুক্তরাজ্য মনে করেন। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে আলাপকালেও তারেককে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। 

আর একারণেই ব্রিটেন মনে করে যে, তারেক জিয়া যদি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে তার জীবন রক্ষার জন্য রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাহলে উদার গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ব্রিটেন সেটা বিবেচনা করতেই পারে। কিন্তু ব্রিটেনে বসে যদি তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন, তবে সেটি অনভিপ্রেত।

তবে বিএনপির তিন নেতা বলেছেন যে, বিএনপি কাছে সারা কুক জানতে চেয়েছেন যে, তাদের রাজনৈতিক পরিকল্পনা কি? তাদের উপজেলা নির্বাচন বর্জন করার পর তারা কি করলো ইত্যাদি। 

তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, তারেক জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েই ব্রিটিশ দূতাবাসে প্রধান আলোচনা হয়েছে।

তারেক জিয়া   বিএনপি   ব্রিটিশ দূতাবাস   সারা কুক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

পদ হারানোর ঝুঁকিতে আওয়ামী লীগের দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে শেষ পর্যন্ত যদি স্বজনদেরকে প্রার্থী করেন তাহলে দলের পদ হারাতে পারেন আওয়ামী লীগের দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এ রকম বার্তা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে দলে বিশৃঙ্খলা এবং ভাই, ভাতিজা, শ্যালক, মামাদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করার তীব্র সমালোচনা করেন। এ ব্যাপারে তিনি কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেন। 

আওয়ামী লীগের সভাপতির সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদকের টেলিআলাপের পরপরই ওবায়দুল কাদের ধানমন্ডির ৩ নম্বর কার্যালয়ে যান এবং সেখানে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে তিনি যারা যারা নিকট আত্মীয় স্বজনকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছে, তাদের তালিকা তৈরি করার জন্য সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশ দেন। 

একই সাথে তিনি এটাও জানান যে, যদি কেউ দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে নিজের নিকট আত্মীয় স্বজনকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করে তাহলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরকম একটি বক্তব্যের পরপরই আওয়ামী লীগের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। 

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমে শুধু বিষয়টি অবহিত করেননি, তিনি দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকের পর অন্তত তিনজন আওয়ামী লীগের নেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং কথা বলে তাদের নিকট আত্মীয় স্বজনের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, ড. আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই  হারুন অর রশীদ হীরা টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা থেকে এবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তার এই প্রার্থীতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক। তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথেও টেলিফোনে কথা হয়েছে বলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান খান এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান মাদারীপুর সদর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। তার সাথেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কথা বলেন এবং তাকেও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য পরামর্শ দেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গেও আলাপ করেছেন বলে জানা গেছে। তার ছেলে আতাহার ইসরাক শাবাব চৌধুরী সুবর্ণচরে প্রার্থী হয়েছেন। 

এই সমস্ত স্বজনরা যদি শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করে সে ক্ষেত্রে কী করা হবে? এ রকম প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছেন এবং এদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানা গেছে।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক সংস্থা প্রেসিডিয়াম এবং এই প্রেসিডিয়ামের দুজন সদস্য যখন দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাদের নিজেদের আত্মীয় স্বজনকে প্রার্থী করেছেন তখন অন্যরা সেটা মানবে কীভাবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছেন। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে একটি দৃষ্টান্তমূলক অবস্থান গ্রহণ করতে চায় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেক হাসিনা বলেছেন, যারাই এ সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, এর আগেও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদেরকে দল থেকে পদ হারানো বা বহিষ্কারের নজির রয়েছে। আওয়ামী লীগের এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী যখন দল থেকে বহিষ্কৃত হন তখন তিনি প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। কাজেই শেষ পর্যন্ত যদি এই উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের অবস্থান নিয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না নেয়া হয় তাহলে এই দুই নেতা বড় ঝুঁকিতে পড়তে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন।

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   ড. আব্দুর রাজ্জাক   শাহজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘স্বজন’ প্রশ্নে বাগে আসছে না মন্ত্রী-এমপিরা

প্রকাশ: ১১:০৯ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের তরফ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মন্ত্রী ও দলীয় এমপির কোনো স্বজন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জরুরি ভিত্তিতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর দুই প্রভাবশালী সদস্যের সঙ্গে কথা বলে স্বজনদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।

এদিকে, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলের নির্দেশ কার্যকরে কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি ও নেতার অনীহার কারণে আওয়ামী লীগের ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের তৃণমূল নেতাদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক স্থগিত হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, ‘স্বজন’ প্রশ্নে দলের সিদ্ধান্ত না মানলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও দলীয় এমপির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কেড়ে নেওয়া হতে পারে তাদের দলীয় পদ-পদবি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের মনোনয়নও অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। সব মিলিয়ে এ ইস্যুতে দলীয়ভাবে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে স্বজনকে প্রার্থী করা নিয়ে দলের মন্ত্রী ও এমপিদের এরই মধ্যে কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও দলীয় এমপির কোনো নিকটাত্মীয় অংশ নিতে পারবেন না। এ বিষয়ে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদেরও তাগিদ দেন।

এরপর সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠক থেকেই নিকটাত্মীয়দের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ও শাজাহান খানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির খালাতো ভাই হারুনার রশীদ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে এবং শাজাহান খান এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান মাদারীপুর সদর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন।

এ ছাড়া নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গেও কথা বলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী সুবর্ণচরে প্রার্থী হয়েছেন। 

এ ব্যাপারে নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, উপজেলা নির্বাচন থেকে তার ছেলেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কথা বলেছেন। তিনি তাকে ঢাকায় ডেকেছেন।

তবে তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়ার পরও প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করেছিলেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। এ বিষয়টি কেন্দ্রে জানানো হলেও তিনি সুবিচার পাননি। এ জন্যই তার ছেলে প্রার্থী হয়েছেন।

গতকাল দলের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে চার বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, এস এম কামাল হোসেন এমপি, মির্জা আজম এমপি, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন এবং দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকজন মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনকে প্রার্থী করানোর বিষয় নিয়ে অল্পবিস্তর আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী করানোর বিষয় নিয়ে নেতারা বিস্ময় প্রকাশ করেন। বিভিন্ন উপজেলায় সাংগঠনিকভাবে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেন নেতারা।

বৈঠকে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে রংপুর, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের তৃণমূল নেতাদের বৈঠকে সাংগঠনিক বিরোধ নিষ্পত্তির তাগিদ দেওয়া হলেও কার্যত তা হয়নি। উল্টো উপজেলা নির্বাচন নিয়ে গৃহদাহ পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মী দ্বন্দ্ব-বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। এ জন্য কিছুটা হতাশা ব্যক্ত করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ওই সময়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের পূর্বনির্ধারিত সাংগঠনিক বৈঠক স্থগিত করার তথ্য জানান। সিলেট ও বরিশাল বিভাগের বৈঠকের দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ হয়নি। 

দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানিয়েছেন, ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হওয়ার কথা। এ জন্য ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার রাজশাহী এবং ২২ এপ্রিল ময়মনসিংহ বিভাগের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ঢাকা বিভাগের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল দুই দিনে। প্রথম দিন ২৭ এপ্রিল এবং শেষ দিন ৪ মে। 

এদিকে গতকালের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেওয়া তিন সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচন থেকে আত্মীয়স্বজনকে সরিয়ে নিতে মন্ত্রী ও দলের এমপিদের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা তাদের জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক। এর পর থেকে তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও এমপির সঙ্গে কথা বলছেন। যেসব উপজেলায় মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে দেওয়া হবে।

আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম পর্বের ১৫০ উপজেলা নির্বাচনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মন্ত্রী ও দলীয় এমপির আত্মীয়স্বজন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নিয়ে দলের ভেতরে নতুন করে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। নাটোরের সিংড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রথমে মারধর ও পরে অপহরণের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় সন্দেহ করা হচ্ছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেলকে।

এদিকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, এসব অপ্রত্যাশিত ঘটনায় খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, আগামী ২ মে সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। ওই অধিবেশন চলাকালে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক থেকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এমপিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে নেতারা জানিয়েছেন।

তারা বলেছেন, নির্বাচনী এলাকায় প্রভাব বাড়াতে কয়েকজন মন্ত্রী ও দলের এমপি নিকটাত্মীয় ছাড়াও নিজস্ব লোক তৈরির জন্য পছন্দের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তাই শুধু সন্তান, পরিবার কিংবা আত্মীয়স্বজন নয়; মন্ত্রী এবং দলের এমপিদের প্রকাশ্যে বা গোপনে উপজেলা নির্বাচনে সম্পৃক্ত না হওয়ার কড়া নির্দেশনা দেওয়া হবে। 

তবে দলীয়ভাবে কঠোর নির্দেশনা থাকলেও মন্ত্রী ও দলীয় এমপির অনেকে তা মানবেন না বলে আভাস মিলেছে। এরই মধ্যে অনেক উপজেলায় মন্ত্রী ও দলের এমপির নিকটাত্মীয়রা প্রার্থী হয়েছেন।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে লড়ছেন মাজহারুল ইসলাম সুজন এমপির দুই চাচা মোহাম্মদ আলী ও সফিকুল ইসলাম

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাহাদারা মান্নান এমপির ছেলে শাখাওয়াত হোসেন সজল। একই জেলায় সোনাতলায় এমপির ভাই মিনহাদুজ্জামান লিটন

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় নির্বাচন করছেন আলী আজগার টগর এমপির ভাই আলী মুনসুর

নরসিংদীর পলাশে লড়ছেন ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ এমপির শ্যালক শরীফুল হক

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রার্থী হয়েছেন শাহাব উদ্দিন এমপির ভাগনে সোয়েব আহমদ

নোয়াখালীর হাতিয়ায় লড়ছেন মোহাম্মদ আলী এমপির স্ত্রী ও দুইবারের সাবেক এমপি আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলী।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির খালাতো ভাই হারুনার রশীদ

মাদারীপুর সদর উপজেলায় শাজাহান খান এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান প্রার্থী হয়েছেন

এ ছাড়া ধাপে ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে অনেক মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


মন্ত্রী   এমপি   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ০৮:৪৮ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামীকাল আজ শুক্রবার।

১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল আজকের এদিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষক লীগের ৫২ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু কৃষক নেতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে কৃষক লীগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায় ব্যারিস্টার বাদল রশিদকে সভাপতি ও আব্দুর রউফকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে কৃষিবিদ সমীর চন্দকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ দলের নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান।

এসময় তিনি বলেছেন, দেশের কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে কৃষক লীগ কৃষকদের সংগঠিত করা, তাদের দাবি আদায় এবং দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছে।

আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টায় সংগঠনটির ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন। এছাড়াও সকাল ৭টায় মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে ধানমন্ডির ৩২ পর্যন্ত শোভাযাত্রা। সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। এছাড়াও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর কর্মসূচি রয়েছে। 

এদিন বিকাল ৩টায় কৃষি ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করবেন কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।


কৃষক লীগ   প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের ভাই, ভাতিজা, মামা, শ্যালকদের কী হবে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। 

উল্লেখ্য, এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক মন্ত্রী-এমপি তাদের স্ত্রী, সন্তান, ভাই, ভাতিজা, শ্যালক, মামা, ভাগ্নে এবং অন্য আত্মীয়স্বজনকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। যারা এরকম পরিবারতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন তার মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক। তিনি তার খালাতো ভাইকে উপজেলা নির্বাচনে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। শাজাহান খান তার ছেলেকে মাদারীপুরের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান তার ছেলেকে, বগুড়ার সাহাদারা মান্নানের ছেলে এবং ভাই দুইজনই বগুড়ার দুটি উপজেলায় প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। 

এ রকম দীর্ঘ তালিকা তালিকায় দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক মন্ত্রী-এমপি তাদের নিকট আত্মীয় স্বজনকে প্রার্থী করেছে। এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অবস্থান গ্রহণ করেছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে কেউ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না এবং দলগতভাবে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না মর্মেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতারা তার নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তি বা মাইম্যানদেরকে জয়ী করাতে মাঠে নেমে পড়ে এবং এর ফলে তৈরি হয় নতুন সংকট। 

একদিকে আওয়ামী লীগের প্রতিটি উপজেলাতেই তিন বা ততোধিক প্রার্থী রয়েছে, তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে- এটিকে আওয়ামী লীগ স্বাগত জানিয়েছে পরোক্ষভাবে। কারণ আওয়ামী লীগ মনে করে, যেহেতু বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না, কাজেই আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হলে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, একটা নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির কঠোর নির্দেশনা ছিল যে, মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। কিন্তু মন্ত্রী-এমপিদের পক্ষ থেকে এই বাণীকে কর্ণপাত করা হয়নি। বরং তারা তাদের নিকট আত্মীয় স্বজনকে নির্বাচনের মাঠে নামিয়েছে তাদের এলাকায় পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আর এর ফলে আওয়ামী লীগ সভাপতি একটি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

প্রশ্ন হল, শেষ পর্যন্ত যদি দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মন্ত্রী-এমপি এবং প্রভাবশালী নেতাদের আত্মীয় স্বজনরা প্রার্থী হন, সে ক্ষেত্রে কী হবে? আওয়ামী লীগ কী কঠোর হতে পারবে?

অতীতে দেখা গেছে, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের কঠোর অবস্থান গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু সেই কঠোর অবস্থান শেষ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচন করে এবং পরবর্তীতে তাদেরকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এবার জাতীয় নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য প্রবেশ দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। ফলে ৫৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

এবার উপজেলায় আওয়ামী লীগের এই আত্মীয় স্বজনকে প্রার্থী করা যাবে না- এই নির্দেশনা কয়জন মানবেন এটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ ব্যাপারে যদি আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানে না যায় তাহলে আওয়ামী লীগের ভেতর এক ধরনের গুমোট পরিবেশ তৈরি হবে। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় জমিদারি প্রথা চালু হবে এবং মাইম্যানদের দাপটে সাধারণ জনগণ এবং অন্যান্য কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়বেন। এটা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন