ইনসাইড পলিটিক্স

গাজীপুরের পর বরিশাল আতঙ্কে আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৯:০৩ পিএম, ২৬ মে, ২০২৩


Thumbnail গাজীপুরের পর বরিশাল আতঙ্কে আওয়ামী লীগ।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেরে গেছে। আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের মায়ের কাছে ১৪ হাজারের বেশি ভোটে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা আজমত উল্লা পরাজিত হয়েছেন। এই পরাজয়ের পর আওয়ামী লীগ নানা রকম হিসেব-নিকেশ করছে। যদিও অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার কারণে আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা আত্মতুষ্টি রয়েছে এবং এটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা নিয়ে এই নির্বাচনের পর নতুন হিসেব-নিকেশ করছে। 

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরপরই বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ, আতঙ্ক এবং অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না। কিন্তু তারপরও আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারবেন কিনা- তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই সংশয় রয়েছে। আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচনে মূলত আওয়ামী লীগের প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাদের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসলামী আন্দোলনের মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম এই সংগঠনের অন্যতম নেতা। তিনি কাগজে-কলমে দ্বিতীয় প্রধান নেতা হলেও আসলে দল পরিচালিত হয় তার নেতৃত্বেই। 

সাম্প্রতিক সময়ে গত দুই বছরের নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইসলামী আন্দোলন একটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৪০ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছে এই দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলটি। সেখানে মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা- বরিশালের রাজনীতির হিসেব-নিকেশে নতুন মেরুকরণের সৃষ্টি করেছে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। 

গাজীপুরের মতো বরিশালেও আওয়ামী লীগ বিভক্ত। গাজীপুরের মতো বরিশালেও আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়রকে নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সাদিক আব্দুল্লাহ ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়েছিলেন। সাদিক আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ছেলে। গত নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে- এ কারণেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড তাকে এবার মনোনয়ন দেয়নি। তার বদলে আবুল হাসান আব্দুল্লাহর ছোট ভাই খোকন সেরনিয়াবাদকে এই নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। কিন্তু সংসদীয় বোর্ডের এই মনোনয়ন সিদ্ধান্তকে মেনে নেননি আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং তার ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ। শুরু থেকেই তারা খোকন আব্দুল্লাহর ব্যাপারে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে- এমন খবর জানা গেছে। সেখানে কিছু কিছু সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু এই সমস্ত সহিংসতা এবং বিভক্তির পরও আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই চেষ্টা কতটুকু সফল হবে- এ নিয়ে বিভিন্ন মহলের সংশয় রয়েছে।  

গাজীপুরের নির্বাচনে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ বিরোধী সবাই একাট্টা হয়েছিল জাহাঙ্গীরের মায়ের পক্ষে। বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গাজীপুরে আওয়ামী বিরোধী প্রার্থী হিসেবে জায়েদা খাতুনকে ভোট দিয়েছে। বরিশালে এমনটি ঘটতে পারে বলে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা আশঙ্কা করছেন। তারা বলছেন, বিএনপি এই নির্বাচনে নাই বটে- তবে তারা শেষ পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীকে গোপনে সমর্থন দিতে পারে এবং আওয়ামী বিরোধী ভোটগুলো মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের পক্ষে যেতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন। 

তাছাড়া এখানে আওয়ামী লীগের বিভক্তি থাকার কারণে আওয়ামী লীগের একটা অংশও গোপনে চাইবেন খোকন সেরনিয়াবাদকে হারাতে। আর সে কারণেই গাজীপুরের মত বরিশালের ফলাফলে যদি চমক সৃষ্টি হয়, তাহলে অবাক হবার কিছু নাই- এমনটি মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল যে তীব্র আকার ধারণ করেছে- গাজীপুরের নির্বাচন তার প্রমাণ এবং বরিশালেও যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগকে তার কোন্দল মেটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সবার আগে। কারণ আওয়ামী লীগ যতই জনপ্রিয় থাকুক এবং আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য যতই প্রস্তুতি নিক, অভ্যন্তরীণ কোন্দল আওয়ামী লীগের জন্য এক ধরনের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 


গাজীপুর   বরিশাল   আতঙ্ক   আওয়ামী লীগ   সিটি নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

প্রকাশ: ০৭:৪৯ পিএম, ০৮ জুন, ২০২৩


Thumbnail

ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুর সঙ্গে বৈঠকে করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরের দিকে গুলশানের দূতাবাসে বৈঠকে করেন তারা।

জানা গেছে, বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

এর আগে চলতি মাসেই দুই দফায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক করেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতারা। 

অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার   বিএনপি   শামা ওবায়েদ   আমীর খসরু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আ.লীগের সমাবেশে চেয়ার ছোড়াছুড়ি

প্রকাশ: ০৬:৫৬ পিএম, ০৮ জুন, ২০২৩


Thumbnail

ঐতিহাসিক ৬ দফা উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের করা সমাবেশে নেতাকর্মীদের দুই দফা চেয়ার ছোড়াছুড়ি করতে দেখা যায়। পরে কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিকাল পৌনে চারটায় প্রথম দফা এবং সোয়া চারটায় দ্বিতীয় দফায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে তিনটায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। সমাবেশে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেন। 

বিকেল পৌনে চারটার দিকে সমাবেশের চেয়ারে বসা নিয়ে নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলা শুরু করেন। মঞ্চ থেকে মাইকে বার বার বলার পরও শান্ত না হয়ে বেশ কয়েক দফায় চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান তারা।

এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য নেতাকর্মীদের মাঝে। তারা যে যার মতো ছোটাছুটি শুরু করেন। এতে সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

এছাড়া ব্যানার নিয়ে মঞ্চের একেবারে কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায় কয়েকশ নেতাকর্মীকে। মাইকে বারবার ব্যানার নামাতে বলা হলেও নেতাদের কথায় কর্ণপাত করতে দেখা যায়নি কর্মীদের। আবার মঞ্চের সামনে ত্রিপল বিছিয়ে কর্মীদের বসার জায়গা করা হলেও সেখানে বসতে দেখা যায়নি কোনো কর্মীকে।

মহানগর দক্ষিণ আ.লীগ   চেয়ার ছোড়াছুড়ি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে আবার ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৮ জুন, ২০২৩


Thumbnail

আওয়ামী লীগের ইতিহাস বলে আওয়ামী লীগ কখনো বাইরে শত্রুর কাছে পরাজিত হয় না। আওয়ামী লীগ যতবার বিপর্যস্ত হয়েছে, সংকটে পড়েছে ততোবারই দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং ষড়যন্ত্রের কারণে সেটি হচ্ছে। ১৯৭৫ সালের পনেরোই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পেছনে জাতীয় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল এটা যেমন সত্যি তেমনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল আওয়ামী লীগের একটি মহল। খুনি মোশতাক এর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি অংশ পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টের ঘটনার ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছিল। জাতির পিতার হত্যার পর তার লাশের উপর দিয়ে মন্ত্রিসভায় যোগ দেন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার প্রায় অধিকাংশ সদস্যই। আর পঁচাত্তরের পরে আওয়ামী লীগ ছিল ক্ষত-বিক্ষত, বহুধাবিভক্ত।

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি আসার পর তাকেও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়। ষড়যন্ত্রের কারণে আওয়ামী লীগ ভাগ হয়ে যায়। আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে একটি বড় অংশ বেরিয়ে বাকশাল গঠন করেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয় অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের সবচেয়ে বড় প্রামাণ্য দলিল হল এক-এগারো। এই সময় আওয়ামী লীগের মধ্যে মাইনাস ফর্মুলা প্রবর্তন করেন কেউ কেউ। তারা শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে চিরবিদায় করার জন্য ষড়যন্ত্র করেন এবং সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে সংস্কার প্রস্তাবও উপস্থাপন করেছিলেন। এরপর জনগণের ভালোবাসায় এবং তৃণমূলের কর্মীদের বিপুল সমর্থনে শেখ হাসিনা সমস্ত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ২০০৮ এর নির্বাচনে হবে বিজয়ী হন। দীর্ঘ ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি দেশ পরিচালনা করছেন। এখন নির্বাচনের আগে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অবশ্য এই ১৪ বছরে যে ষড়যন্ত্র হয়নি এমনকি নয়। 

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সে ব্যাপারে ইঙ্গিতও করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় রাষ্ট্রপতিকে অনেক আওয়ামী লীগের নেতা এসে ভুল পরামর্শ দিয়েছিল এবং অন্য কিছু করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হননি আবদুল হামিদ। এখন আবার নির্বাচনের আগে নতুন করে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে স্লিপ অব টাং বা বেফাঁস কথা বার্তা বলার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী আইনমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের কথা বলেছেন। তার পরই তিনি এটিকে স্লিপ অব টাং হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শুধুমাত্র স্লিপ অব টাং এরকম বড় ধরনের ভুল করতে পারেন? 

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের আরেক প্রভাবশালী নেতা আমির হোসেন আমু জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সংলাপের কথা বলেছেন। এটি নিয়েও আওয়ামী লীগের মধ্যে হইচই চলছে। আওয়ামী লীগের উঠতি কিছু নেতা নিয়মিত মার্কিন দূতাবাসে যান। আওয়ামী লীগের একজন আন্তর্জাতিক সম্পাদক আছে, বৈদেশিক বিষয় দেখার জন্য একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য আছেন। কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত ফারুক খান এবং শাম্মী আক্তারই বিদেশি কূটনীতিকদের সাথে সব রকমের যোগাযোগ করার কথা। কিন্তু হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বিভিন্ন দূতাবাসে সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন। বিভিন্ন দূতাবাসে তাকে দেখা যায়। কোন প্রটোকলে এবং কোন ক্ষমতা বলে তিনি সেখানে যাচ্ছেন এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। 

আওয়ামী লীগের এতো নেতা থাকতে মোহাম্মদ এ. আরাফাতকে কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিষয়ে বক্তব্য-বিবৃতি দিতে হবে সে নিয়েও আওয়ামী লীগের নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন। এরা হঠাৎ করে আওয়ামী লীগার হয়েছেন এবং আওয়ামী লীগার হয়েই বড় বড় পদ পদবী পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের ভেতর নানামুখী ভাবনা চিন্তা এবং ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। আর তাই তারা আতঙ্কিত। নির্বাচন এলেই আওয়ামী লীগে ষড়যন্ত্র হয়। এবারও তেমন কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন নানামুখী আলোচনা চলছে। 

আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জিয়া পরিবার মুক্ত বিএনপি: ফখরুলের 'হ্যাঁ', খসরুর 'না'

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৮ জুন, ২০২৩


Thumbnail

কূটনীতিকদের সঙ্গে এখন বিএনপির দারুণ সখ্যতা। প্রতিদিনই বিএনপির কোন না কোন নেতা কোন না কোন দূতাবাসে যাচ্ছেন। কোন না কোন রাষ্ট্রদূতের সাথে মধ্যাহ্নভোজ অথবা নৈশভোজ করছেন। বিএনপি এখন মূল আস্থার জায়গা হলো মার্কিন দূতাবাস সহ পশ্চিমা দেশের দূতাবাস গুলো। কিন্তু এই দূতাবাসগুলো কি বিএনপিকে ক্ষমতায় আনবে? প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন যে বিদেশীরা বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে পারবে না। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন এবং রাজনীতি সম্পর্কে নূন্যতম ওয়াকিবহল তারা জানেন যে একটি রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় আনতে পারে একমাত্র জনগণ, অন্য কেউ নয়। তারপরও বিএনপি সরকারের ওপর একটি চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্ঠা করছে। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও লবিস্ট নিয়োগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ বিরোধী একটি অবস্থানে দেয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির নিরন্তর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু এই সময় হঠাৎ করেই একটি একটি প্রস্তাব বিএনপির মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। 

উল্লেখ্য যে, মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকের কোন একপর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে যেহেতু বেগম খালেদা জিয়া এখন রাজনীতি করছেন না। এক রকম কারাগারে রয়েছেন। তারেক জিয়া বিদেশে রয়েছেন। কাজেই বিএনপির নেতা কে? এর উত্তরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে নেতা বলেছিলেন। বিএনপি নির্বাচনে জিতলে ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রী হবেন এমন বক্তব্য বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী প্রশ্ন ছিল তাহলে বিএনপি কি জিয়া পরিবার থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে পারবে? এর উত্তর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন 'হ্যাঁ' কিন্তু বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ বলেছেন 'না'। আর এ নিয়ে এখন বিএনপিতে তর্ক-বিতর্ক চলছে। 

একাধিক সূত্র বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা মনে করছেন যে আওয়ামী লীগের বিকল্প হতে পারে বিএনপি। যদি বিএনপি জিয়া পরিবার মুক্ত হয়। জিয়া পরিবারের কেউ বিএনপির নেতৃত্বে থাকবেন না, মন্ত্রিসভার সদস্য থাকবেন না এমন একটি শর্তে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে আনার বন্দোবস্ত করার আশ্বাস দিচ্ছেন কোন কোন দেশের কূটনীতিকরা। তারা মনে করছেন যে জিয়া পরিবার তন্ত্র বিএনপিতে আছে তা যদি বহাল থাকে তাহলে বিএনপি যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে পর পরিস্থিতি এখনকার চেয়েও খারাপ হবে। ২০০১ থেকে ২০০৬ অভিজ্ঞতার আলোকে কোন কোন দেশের কূটনীতিকরা বিএনপির কাছ থেকে আগে মুচলেকা চাইছে যে তারা যদি নির্বাচনে জয়ী হয় বা ক্ষমতায় আসে তাহলে কোন অবস্থাতেই জিয়া পরিবারকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা হবে না। বিএনপিকে তারা একটি বিজেপি আদলে রাজনৈতিক দল হিসেবে দেখতে চায়। যে রাজনৈতিক দলে উত্তরাধিকারসূত্রে কোন নেতা তৈরি হবেন না। বরং যারা সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেদেরকে ব্যস্ত রেখেছেন তাদের মধ্যে থেকে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর যে সুশাসন এবং গণতন্ত্রের ভাবনা সেই ভাবনার মধ্যে একটি বড় ভাবনা হলে দলগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা। আর এ কারণে তারা একান্ত অনুগত হিসেবে যেহেতু বিএনপিকে এখন পেয়েছে তাই বিএনপির ওপরই এই নিরীক্ষাটা করতে চায়। বিএনপির মধ্যে এ নিয়ে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া আছে। যেমনটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তিনি এখন তারেক জিয়া, খালেদা জিয়া মুক্ত অর্থাৎ জিয়া পরিবার মুক্ত বিএনপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি সুশীল সমাজের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখছেন এবং তার পক্ষের লোকেরা মনে করছেন যে এই কৌশলটি অবলম্বন না করলে পশ্চিমা দেশের আস্থা পাওয়া যাবে না। অন্যদিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সহ বিএনপির একটি বড় অংশই মনে করছেন যে, জিয়াউর রহমানের পরিবারের কাউকে না কাউকে বিএনপিতে থাকতে হবে। যদি তারা না থাকেন তাহলে বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যে বিএনপি এখন আন্দোলন করবে না জিয়া পরিবার মুক্ত বিএনপি গঠন করবে? এটি বিএনপিকে নতুন করে আরেকটি ভাঙনের দিকে নিয়ে যাবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। 

মির্জা ফখরুল   আমীর খসরু   পিটার হাস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আমুর জাতিসংঘ ভাবনা কি নিছকই বিভ্রান্তি?

প্রকাশ: ০৫:০৩ পিএম, ০৮ জুন, ২০২৩


Thumbnail

আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগের রাজনীতির এক হেভিওয়েট। কিন্তু এক-এগোরোর পর তার রাজনৈতিক বিভ্রান্তি রাজনীতির মূল ধারা থেকে তাকে ছিটকে দেয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ হারান। ২০০৯ সালের মন্ত্রীসভায় তিনি অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। ২০১৪ সালের মন্ত্রিসভায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু একসময় আওয়ামী লীগ সভাপতির সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্যক্তিটি এখন রাজনীতিতে অনেকটা অপাংক্তেয়। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ১৪ দলের সমন্বয়কারী হয়েছেন আমির হোসেন আমু। কিন্তু সমন্বয়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেও তিনি তেমন সাফল্যের পরিচয় দেয়নি। ১৪ দল তার নেতৃত্বে অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি যেন জেগে উঠলেন। 

সম্প্রতি তার একটি বক্তব্য নিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে হুলস্থুল চলছে। গত ৬ জুন তিনি ১৪ দলের এক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কথা বলেন এবং আলোচনার জন্য জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কথা উল্লেখ করেন। তার এই বক্তব্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। অনেকে মনে করেছিল যেহেতু আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা শেখ হাসিনার সঙ্গে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এ কারণে হয়তো আওয়ামী লীগ সভাপতির অভিপ্রায় তিনি প্রকাশ করেছেন। কিন্তু পরদিন ৭ জুন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় দেখা গেল সম্পূর্ণ ইউটার্ন নিলেন আমির হোসেন আমু। তিনি জানিয়ে দিলেন যে, কোন ধরনের আলোচনা হবে না। বাসায় দাওয়াত দিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে কিনা এমন প্রশ্ন তিনি উত্থাপন করেছিলেন। হঠাৎ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন উল্টো পথে হাঁটলেন আমির হোসেন আমু। 

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, আমির হোসেন আমুর এ বক্তব্যের পর রাজনীতির অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি এটিকে ভালোভাবে নেননি। তিনি সরাসরি আমির হোসেন আমুর সঙ্গে এ নিয়ে কথাও বলেছেন। এই কথার পরই আমির হোসেন আমু সুর পাল্টেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে। কিন্তু প্রশ্ন সে জায়গায় নয়। প্রশ্ন হলো হঠাৎ করে এত দিন পর আমির হোসেন আমু কেন রাজনীতির পাদ্যপ্রদীপে এলেন। আর কেনইবা এরকম একটি বক্তব্য দিলেন। এটি কি নিছকই ভ্রান্তি? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে তিনটি কারণে তিনি এটা দিতে পারেন। 

প্রথমত, একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার নিজস্ব ভাবনা থাকতেই পারে। যেমনটি হাছান মাহমুদ বলেছেন যে, এটা আমির হোসেন আমুর ব্যক্তিগত ভাবনা। ব্যক্তিগত অভিপ্রায় থেকে তিনি এটা বলতে পারেন। এটি তার চিন্তা। বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কটের একটি সমাধান দরকার। এ সমাধান হতে পারে সংলাপের মাধ্যমে এবং বিএনপি যেহেতু সংলাপে আগ্রহী নয় সেজন্য এই সংলাপ করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হতে পারে। একজন রাজনৈতিক নেতার নিজস্ব ব্যক্তিগত মত থাকতেই পারে এবং সেই মত সবসময় যে দলের মতের সাথে অভিন্ন হবে বা একই রকম হবে এমনটি ভাবার কোন কারন নাই। 

দ্বিতীয়ত, আমির হোসেন আমু নিছকই ভ্রান্তির ছলে এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু আমির হোসেন আমুর মতো এত বড় মাপের একজন রাজনৈতিক নেতা নিছকই ভ্রান্তির কারণে বা ভুলে এ ধরনের বক্তব্য দিবেন এমন ভাবার কোন কারন নাই। এটা মতামতকে কেউ সমর্থনও করে না।

তৃতীয়ত, কোন বিশেষ মহলের ইঙ্গিতে আমির হোসেন আমুর এ বক্তব্য দিয়েছেন বলে অনেকে মনে করেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন পশ্চিমা কূটনীতিকদের নানারকম তৎপরতা চলছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে বিভিন্ন কূটনীতিক বক্তব্য আমরা দেখতে পাচ্ছি। আওয়ামী লীগ-বিএনপি এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে। আমির হোসেন আমু কি তাহলে কারো মুখপাত্র হয়ে এই বিষয়টি উত্থাপন করলেন? 

আমরা এক-এগোরোর সময় দেখেছি যে, আমির হোসেন আমু তার অসুস্থ স্ত্রীকে সিঙ্গাপুরে রেখে ঢাকায় এসে সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে জানা গিয়েছিল যে এই সংস্কার আসলে তার ছিল না। এটি তৎকালীন এক-এগারোর কুশীলবদের প্রস্তুতকৃত একটি প্রস্তাব তিনি পাঠ করেছিলেন। সেরকম কোন মহলের ইঙ্গিতে কি আমির হোসেন আমুর হঠাৎ করে এই প্রস্তাব উত্থাপন করলেন? এ নিয়ে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলাপ-আলোচনা চলছে।

আমির হোসেন আমু   জাতিসংঘ মধ্যস্থতা প্রস্তাব  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন