আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিএনপি সরকারকে আর সময় দিতে রাজি নয়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে কোণঠাসা করতে চায়। এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
আজ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে
ওঠার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায়
বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ
আমানের ১৩ বছর এবং তার
স্ত্রীর সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড
বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। একই সাথে অন্য
এক মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদের ৯ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। তাদেরকে
দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার জন্য বলা
হয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, রাজনীতিবিদরা
রক্ষক তারা কখনও ভক্ষক
হতে পারেন না। অর্থাৎ এই
দুইটি মামলায় হাইকোর্টের দণ্ডপ্রাপ্ত হবার কারণে এ
দু'জনকে এখন জেলে
যেতে হবে। ফলে রাজনীতির
মাঠে উত্তাপ-উত্তেজনা আরো বেড়ে যেতে
পারে বলে ধারণা করা
হচ্ছে। কারণ, এই দুজন নেতা
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বড় ভূমিকা রাখছে।
বিএনপির
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ রায়কে ফরমায়েশি
রায় হিসেবে উল্লেখ
করেছেন। ফলে বিএনপি ওই রায়ের পর রাজনীতিতে সহিংসতা
এবং বড় ধরনের গোলযোগের
শঙ্কা তৈরী হল বলেও কোন
কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন। কেউ কেউ
অবশ্য বলছেন যে, বেগম খালেদা
জিয়াকেও যখন দুর্নীতির মামলায়
দণ্ডিত করা হয়েছিল, তখনও
অনেকে মনে করেছিল যে
রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে। কিন্তু বেগম
খালেদা জিয়ার দীর্ঘ ২ বছরের বেশি সময় কারান্তরীণ
থাকা অবস্থায় বিএনপি কোনো আন্দোলন গড়ে
তুলতে পারেনি। তাছাড়া দুর্নীতি দমনের মামলার রায় দেশের সর্বোচ্চ
আদালত বহাল রেখেছে। এরকম
বাস্তবতায় এই রায় নিয়ে
বিএনপির যদি কোনো বিশৃঙ্খলা
সৃষ্টি করার চেষ্টা করে,
তবে সেটি সাধারণ মানুষ
গ্রহণ করবে না বলে
মনে করা হচ্ছে।
তবে
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা
হচ্ছে গত কিছুদিন ধরেই
সরকার নতুন করে বিএনপি
নেতাদের ধরপাকড় গ্রেপ্তার শুরু করেছে। বিশেষ
করে পুরনো মামলাগুলোয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে নানা রকম হয়রানি
করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ
করেছে। যদিও সরকারের পক্ষ
থেকে এ ধরনের অভিযোগ
সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। তারা
বলেছে যে, কোনভাবেই বিরোধী
দলের উপর কোনরকম দমননীতি
বা নিপীড়ন করা হচ্ছে না।
আইন সকলের জন্য সমান। যারা
আইনের দৃষ্টিতে অন্যায় করেছে বা বিভিন্ন অপরাধের
সঙ্গে যুক্ত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বিচারিক
প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
কিন্তু
দুই পক্ষ যে বক্তব্যই দিকনা
কেন, নির্বাচনের আগে যখন বিরোধী
দল বিএনপি বড় ধরনের আন্দোলনের
প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন এই মামলা
এবং দন্ড আন্দোলনকে প্রভাবিত
করবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
মনে করছেন। একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি
তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছেন
তারা। বিএনপি'র পক্ষ থেকে
তাদের জোট গুলোকে নিয়ে
চূড়ান্ত আন্দোলনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে
সরকারও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সারা দেশে শান্তি
সমাবেশ এবং গণসংযোগের মাধ্যমে
রাজনীতির মাঠে নিজেদের কর্তৃত্ব
অব্যাহত রাখতে চাইছে। ফলে নির্বাচনের আগেই
একটি উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।