সদ্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠানের (চিত্রনায়ক ফারুক) আসনে আগামী ১৭ জুলাই উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ নির্বাচন কমিশন ভবনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। গুলশান অঞ্চলের এই ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের তফসিলে আগামী ১৫ই জুন মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ আগামী সপ্তাহেই নির্বাচনের মনোনয়ন বাছাই করার প্রক্রিয়া শুরু করবে। কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন- এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জল্পনা-কল্পনা। কারণ বিএনপি অন্যান্য নির্বাচনগুলোর মতো এ নির্বাচনও যে বর্জন করবে- তা মোটামুটি নিশ্চিত।
গুলশান থেকে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন বিজেপি নেতা আন্দালিব রহমান পার্থ। তার এখানে নির্বাচন করার কথা শোনা গেলেও তিনি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৬ মাস আগে এই নির্বাচন রাজনীতিক মাঠে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও আওয়ামী লীগের অনেকেই এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কে প্রার্থী হবে- সে সম্পর্কে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং ব্যক্তি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সুত্র থেকে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আরাফাত এই আসনে নির্বাচনে আগ্রহী। তিনি ইতিমধ্যেই একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দল যদি তাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে তিনি এখানে না বলতে পারবেন না। এর ফলে তার এখানে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করেন। মোহাম্মদ আরাফাত আওয়ামী লীগে এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি মার্কিন ইস্যুতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়েও তিনি আওয়ামী লীগের কর্ম-কৌশলের অন্যতম নীতি নির্ধারক বলে বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে। কিন্তু মোহাম্মদ আরাফাত শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাবেন কি না- সেটি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
আওয়ামী লীগ ঘরানার অভিনয় শিল্পী ফেরদৌসও এই আসনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। ফেরদৌসের সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত গুলশান এলাকায় কেন মনোনয়ন পাবেন- এই নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা রকম প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৬ মাস আগে এরকম একটি জায়গায় বাইরের কাউকে মনোনয়ন দিলে দলের মধ্যে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে সেটিও বিবেচনায় নিবে আওয়ামী লীগ। এছাড়াও, গুলশান এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াকিল উদ্দিন এ নির্বাচনের জন্য আগ্রহী এবং তিনি মনোনয়ন চাবেন বলে জানা গেছে। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এবং দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধাও বটে।
রাজধানীর গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট ও ভাষানটেক থানার ১৫, ১৮, ১৯, ২০ ও ৯৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং ক্যান্টনমেন্ট ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসন। এখন দেখার বিষয় এখানে স্থানীয় কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, নাকি আওয়ামী লীগ মনোনয়নের ক্ষেত্রে নতুন কোনো চমক দেখায়।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।