বিএনপি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। কিন্তু এই আন্দোলন করতে যেয়ে আইনী লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছে বিএনপি। বিএনপির দু’জন নেতাকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত দন্ডিত করেছে। নিম্ন আদালতে দেওয়া দন্ড বহাল রাখা হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু এবং কেন্দ্রীয় নেতা আমানউল্লাহ আমানের ক্ষেত্রে। নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছে। যদিও বিএনপির নেতারা এই আদেশকে ফরমায়েশি আদেশ বলেছেন। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্বাধীন এবং স্বাতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। এই বাস্তবতায় সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই ছাড়া বিএনপির সামনে আর কোনো পথ নাই।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আমানউল্লাহ আমান এবং ইকবাল মাহমুদ টুকুকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তবে এই দুই নেতাই শুধু নন, বিএনপির এরকম এক ডজন শীর্ষ নেতা রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো চলমান রয়েছে- হয় মামলার কার্যক্রম প্রায় শেষের পথে অথবা নিম্ন আদালতের দন্ড তারা হাইকোর্টে স্থগিত রখেছেন। হাইকোর্ট এখন এটি নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সরকার সাম্প্রতিক সময়ে এই মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যে সমস্ত মামলাগুলো নিম্ন আদালতে শেষ হয়ে গেছে, সেগুলো উচ্চ আদালতে সমাপ্ত করার ব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ জোরদার করা হয়েছে। আর এটি যদি শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, তাহলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ এক ডজন শীর্ষ নেতা আইনী জটিলতায় পড়তে পারেন, তারা দন্ডিত হতে পারেন এবং ডিসেম্বরের মধ্যে এরকম এক ডজন নেতার কারাগারে যাওয়ার আইনী সম্ভাবনা রয়েছে।
এদের মধ্যে রয়েছেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা এখন আইনী লড়াইয়ের শেষ ধাপে এসে উপনীত হয়েছে। এই মামলার রায়ে যদি তিনি দন্ডিত হন- তাহলে তাকে কারাগারে যেতে হতে পারে। একই অবস্থা বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধেও। দুর্নীতির মামলা তদন্ত শেষ পর্যাযে আছে। এই মামলাতেও তিনি যদি হেরে যান, তাহলেও তার কারান্তরীণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিএনপির আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মামলাও শেষ ধাপে এসে উপনীত হয়েছে। এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে- তারও কারান্তরীণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম খান, মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিনসহ এক ডজন নেতা আছেন- যারা আইনী লড়াইয়ে ব্যাকফুটে রয়েছেন এবং এই সমস্ত মামলা প্রায় শেষ পর্যায়ে।
তবে মজার ব্যাপার হলো, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও কোনো মামলাই এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত নিষ্পত্তির কাছে নেই। এই মামলাগুলো বেশিরভাগই হাইকোর্টে স্থগিত হয়ে আছে। কোনো কোনো মামলা তদন্ত পর্যায়েই থেমে আছে। কাজেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন নেতাই শুধুমাত্র আইনী লড়াই থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতে পেরেছেন। আর অন্যান্য নেতাদের যে মামলাগুলো, সেগুলো যদি শেষ পর্যন্ত ডিসেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়, তাহলে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একটি বড় অংশই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আযোগ্য হতে পারেন।
মন্তব্য করুন
নয়াপল্টন বিএনপি সমাবেশ ছাত্রদলের সংঘর্ষ
মন্তব্য করুন
ভিসা নিষেধাজ্ঞা আন্দোলন নির্বাচন বিএনপি
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন আওয়ামী লীগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের কয়েকজন নাগরিকদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের উল্লাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা জাতির জন্য লজ্জাজনক এবং এর জন্য শুধুমাত্র সরকার দায়ী। বিএনপির নেতাদের গতকালের কর্মসূচিতেই ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। তাদের মধ্যে একটা চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে বিএনপির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা এবং উৎকণ্ঠাও তৈরি হয়েছে।
মার্কিন ভিসানীতির পর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে নানামুখী আলাপ আলোচনা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব তাদের কাছে সুস্পষ্ট হচ্ছে। প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতারা যাই বলুক না কেন তারা প্রকারান্তে এটা স্বীকার করছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনকে নিয়ে একটি আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করবে এবং নির্বাচনের আগে নানা রকম চাপ প্রয়োগ করবে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বশক্তি নিয়োগ করতে পারে বলেও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।
দেশে সংসদ সদস্যসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে রয়েছে ১০ হাজারের বেশি লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র। লাইসেন্সধারী এসব ব্যক্তিদের তিন-চতুর্থাংশই বর্তমান সরকারি দলের সঙ্গে জড়িত। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার সংখ্যায় এর পরেই আছেন বিএনপির নেতারা। বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের হিসাব রাখা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ছাত্র-শ্রম বিভাগের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।