আগামী জাতীয়
সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে একটি রাজনৈতিক টানাপোড়ন চলছে। বিএনপি বলেছে, নির্দলীয়
নিপপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন
আওয়ামী লীগ সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, নির্দলীয় নিপপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার এখন
একটি মৃত ইস্যু। তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা কোনভাবেই সম্ভব নয়। বরং সংবিধান
অনুযায়ী নির্বাচন হতে হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন
অংশগ্রহণমূলক হয়, সব দল যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সে জন্য আলাপ আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
এসব আলাপ আলোচনায় সংবিধানের আওতায় একটি নির্বাচনকালীন সরকার কিভাবে গঠন করা যায় তা
বিবেচনা করা হচ্ছে। এ বিবেচনায় বিএনপি’র প্রধান আপত্তি প্রধানমন্ত্রী নিয়ে।
আন্তর্জাতিক
মহল বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনকালীন সরকারের একটি খসরা রূপরেখা তৈরি করেছে।
সেই রূপরেখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব
করা হয়েছে, যে নির্বাচনকালীন সরকারের ছোট একটি মন্ত্রীসভা থাকবে, মন্ত্রীসভায় বিএনপি’র
সদস্যও থাকবে। এছাড়া নির্বাচনকালীন সরকারের একটি শক্তিশালী ১০ সদস্যের উপদেষ্টা মণ্ডলী
গঠন করা হবে এবং এই উপদেষ্টা মণ্ডলীই নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে
মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকারের এই রূপরেখার একটি ব্যপারেই বিএনপি’র
আপত্তি। বিএনপি বলছে, অন্য যেকেও প্রধানমন্ত্রী হোক না কেন, নির্বাচনকালীন সরকারে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা থাকতে পারবে না। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান
এবং আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রগুলো
বলছে, বিএনপি’র এখন প্রধান মাথাব্যথা হল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা মনে করছেন
যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে, সেই সরকারে
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাইস্না থাকতে পারবে না। কিন্তু সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং আইনজ্ঞরা
বলছেন, এটি অবাস্তব, অসম্ভব। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সংসদে আস্থাভাজন নেতাই প্রধানমন্ত্রী
হবেন। এর কোন বিকল্প নেই। আর তাই নির্বাচনকালীন সরকারে শেখ হাসিনার বিকল্প কোন প্রধানমন্ত্রী
করা সাংবিধানিকভাবেই সম্ভব নয়। এটি করতে গেলে সাংবিধানিক কাঠামো লঙ্ঘিত হবে। কূটনৈতিক
মহল বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাস করা যেতে পারে, প্রধানমন্ত্রীকে রুটিন দায়িত্বের
মধ্যে সীমিত করা যেতে পারে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে অন্যকোন প্রধানমন্ত্রী করা
কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর এটি বিএনপি’র আপত্তির কারণ।
বিএনপি’র একজন
নেতা বলেছেন যে, শেখ হাসিনা একক নেতৃত্বেই দল এবং দেশ পরিচালনা করছেন। সব সিদ্ধান্ত
তার মাধ্যমেই হচ্ছে। সবকিছুর উপর তার নিয়ন্ত্রন রয়েছে। কাজেই তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকলে
নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
বিএনপি’র আরেকজন
নেতা বলেছেন যে, বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিরঙ্কুশ। কাজেই প্রধানমন্ত্রী
যদি আওয়ামী লীগের থাকেন তাহলে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ করা খুব সহজ হবে।
কিন্তু পশ্চিমা
দেশগুলোর কূটনৈতিকরা মনে করছেন যে, তারা এমন কিছু বিধি ব্যবস্থা, নিয়ম নীতি তৈরি করতে
চান যে সমস্ত বিধি ব্যবস্থা নিয়ন নীতিতে কোনভাবেই নির্বাচনে কারচুপি করার সুযোগ থাকবে
না এবং প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথভাবে তাদের
দায়িত্ব পালন করবে। আর এরকম অবস্থা তৈরি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনের প্রয়োজন
নেই। কিন্তু বিএনপি এখন পর্যন্ত এটি নিয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে। তবে কূটনৈতিক মহল আশাবাদী
যে, শেষ পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হবেই এবং এই রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমেই আগামী
নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে’।
মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, নিকটজনদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায় তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকেই এখনো নির্বাচনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।
ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচন সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।