ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলন নিয়ে বিএনপিতে পাঁচ শঙ্কা

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail আন্দোলন নিয়ে বিএনপিতে পাঁচ শঙ্কা।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে একদফা আন্দোলন করছে বিএনপি। আজ এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট মহাসড়কে রোডমার্চ করেছে দলটি। কিন্তু এক দফা আন্দোলনের যে গতি থাকা উচিত, একদফা আন্দোলনে যে জাগরণ হওয়া উচিত সেটি এখন পর্যন্ত বিএনপি অর্জন করতে পারেনি।

বিএনপির নেতারা বলছেন যে, টানা কর্মসূচির পরও আন্দোলনটা শুধুমাত্র কর্মী সমাবেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে। দলের একান্ত অনুগত নেতাকর্মীরা ছাড়া সাধারণ জনগণ এই সমস্ত কর্মসূচিকে এখন পর্যন্ত আমলে নিচ্ছে না। এই সমস্ত কর্মসূচি সাধারণ জনগণের জীবনযাপনেও কোন প্রভাব ফেলছে না। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত এই আন্দোলন কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে বিএনপিতে শঙ্কা রয়েছে।

তবে আন্দোলনের সাফল্য ব্যর্থতার সংখ্যার চেয়েও, এই আন্দোলন এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে পাঁচটি বড় বাধার মুখোমুখি হচ্ছে বিএনপি। আর এই সমস্ত বাধাগুলো পেরিয়ে একদফা আন্দোলনকে নির্বাচন পর্যন্ত কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, সেটি বিএনপির জন্য এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।

যে পাঁচটি শঙ্কা বিএনপিতে ঘনীভূত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে:

১। নেতাকর্মীদের জেল মামলা: বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী মামলা ভারে ভরাক্রান্ত। একেকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একশো থেকে সাড়ে চারশো পর্যন্ত মামলা রয়েছে। এই মামলাগুলো মোকাবিলা করার জন্য তাদের প্রতিদিনই কোর্ট কাছারিতে যেতে হচ্ছে। যখনই আন্দোলনের গতিবেগ বাড়ানো হচ্ছে তখন এই মামলাগুলো নতুন করে সচল করা হচ্ছে। এই সমস্ত মামলাগুলো বিএনপির জন্য বড় শঙ্কার কারণ।

ইতিমধ্যে বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। আন্দোলনের গতি বাড়লে সামনের দিনগুলোতে আরো নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হতে পারেন। ফলে আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়া বিএনপির জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেই বিএনপির নেতারা মনে করছেন।

২। নেতাদের অসুস্থতা: অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়েছেন বিএনপির নেতারা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শরীরের অবস্থা ভালো না। সেটি তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠদেরকে বলেছেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠতম স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন অসুস্থ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন। বিএনপির আরেক নেতা ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার কোনো রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন না।

বাকি যে সমস্ত নেতাকর্মীরা আছেন তারাও অসুস্থ এবং নানা রোগে আক্রান্ত। দীর্ঘ মেয়াদি আন্দোলন এবং রাজপথের আন্দোলন করা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য এবং প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এমনিতেই বিএনপির প্রধান দুই নেতা নেতৃত্বে নেই। বাকি নেতারা কিভাবে বিএনপির এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেবে এটাই এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

৩। জনসম্পৃক্ততা: বিএনপির আন্দোলনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, জনগণ এই আন্দোলনের সঙ্গে এখন পর্যন্ত সম্পৃক্ত হতে পারছেন না। জনগণের জনগণের মধ্যে এই আন্দোলন নিয়ে কোন ইতিবাচক বিষয়তো নেই বরং কোনো ক্ষেত্রে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যাচ্ছে। জনসম্পৃক্ততা না থাকলে গণ আন্দোলন গড়ে তোলা যায় না এটা বিএনপির নেতারা ভালো মতোই অনুধাবন করেন।

৪। সরকারের প্রলোভন: ইতিমধ্যে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রলোভন দেওয়া শুরু হয়েছে। বিশেষ করে নেতারা যারা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছেন তাদেরকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে কি দেওয়া হবে না দেওয়া হবে সে ব্যাপারে নানা রকম কথাবার্তা বলা হচ্ছে। আর এই সমস্ত প্রলোভন এড়িয়ে শেষ পর্যন্ত কতজন নেতা নীতির প্রশ্নে অটুট থাকবেন সেটাই একটা দেখার বিষয়।

৫। তারেকের দুর্ব্যবহার: বিএনপির জন্য এখন সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তারেক জিয়া। তারেক জিয়া প্রতিদিনই দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং ন্যূনতম সম্মান কাউকে করেন না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল এভাবে চলতে পারেনা। এটি কোন লিমিটেড কোম্পানি না এবং তারেক জিয়াও তার এমডি নন। আর এ কারণেই বিএনপির মত অনেক নেতাকর্মী এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন।

বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন, আবদুল্লাহ আল নোমান ইতিমধ্যেই তারেক জিয়ার অশালীন এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণের কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন।

এই অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সামনের দিনগুলোতে বিএনপির আরো নেতারা হতাশ হয়ে নিষ্ক্রিয় হতে পারেন। শঙ্কা কাটিয়ে একদফা আন্দোলনকে বিএনপি কতটুকু এগিয়ে নিতে পারে সেটাই দেখার বিষয়।


বিএনপি   আন্দোলন   পাঁচ শঙ্কা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এতিম ১৪ দলের নেতারা

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

১৪ দল হল আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনৈতিক জোট। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো আছে, তাদেরকে নিয়ে এই জোট গঠন করেছিল। এই জোটের তত্ত্বাবধানেই আওয়ামী লীগ বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। প্রতিটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ ১৪ দল এবং মহাজোট করেছিল। 

মহাজোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি তাদের নিজস্ব প্রতীক অংশগ্রহণ করেছে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো সবাই গত তিনটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশা, শিরিন আখতার এমপি হয়েছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে। কিন্তু এবার নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্যায়ে আওয়ামী লীগের শরিকদের সাথে কোন আলোচনা করেনি। ১৪ দলের জন্য আলাদা কোন আসনও ছেড়ে দেয়নি। একমাত্র কুষ্টিয়াতে জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনুর আসনটি তারা খালি রেখেছে। বাকি সবগুলো আসনে ১৪ দলের নেতাদের জায়গায় আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, যখন আসন বণ্টন চূড়ান্ত হবে তখন ১৪ দলের নেতাদের জন্য আসন ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কটা আসন ছেড়ে দেওয়া হবে বা শরিকদেরকে কতগুলো আসন আওয়ামী লীগ দেবে এ সম্পর্কে কোনো ঐক্যমত এখনও পর্যন্ত হয়নি। এ নিয়ে শরিকদের সাথে আওয়ামী লীগের চাওয়া পাওয়ার বিস্তর ফারাক রয়েছে। 

আওয়ামী লীগ যেমন শুধুমাত্র যারা জনপ্রিয় এবং নিজ যোগ্যতায় ভোটে জিততে পারবেন, তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে। অন্যদিকে শরিকদের যে হিসেব তাতে তারা ৫০ থেকে ৭০ টি আসন চায় আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। কিন্তু সেটি আওয়ামী লীগের দেবে না তা স্পষ্ট৷ তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে যে, এবারে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ১৪ দলের বেশ কয়েকজন বড় বড় নেতাকে রীতিমতো এতিম করে দিয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেননের আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা এবং দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমকে। ফলে এই আসনটি রাশেদ খান মেননকে যে ছেড়ে দেওয়া হবে না তা মোটামুটি নিশ্চিত। রাশেদ খান মেননকে বরিশালে নির্বাচন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বরিশালে যে আসনটিতে তাকে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেখানে সাদিক আবদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন এবং এটি রাশেদ খান মেননের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। 

ওয়ার্কার্স পার্টির আরেক নেতা ফজলে হোসেন বাদশার জন্য রাজশাহীর আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়নি। তবে এই আসনে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি অত্যন্ত দুর্বল। শেষ মুহূর্তে সমঝোতা হলে ফজলে হোসেন বাদশার আসনটি ছেড়ে দেওয়া হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে হাসানুল হক ইনুর জন্য আওয়ামী লীগ জায়গা ছেড়ে দিলেও ওই দলের অন্য কোন নেতার জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম হয়ে গেছে। কারণ শিরীন আখতার যে আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সেই আসনটিতে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের আরেক জনপ্রিয় নেতা আলাউদ্দিন নাসিম চৌধুরী, যিনি প্রধানমন্ত্রীও ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। কাজেই কোনো অবস্থাতেই তার আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন হবে না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। শিরীন আখতার হয়তো নারী কোটায় নির্বাচন করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এরকম অনেকগুলো আসনেই ১৪ দলের নেতাদেরকে এতিম করে দেওয়া হয়েছে। এখন এতিম ১৪ দলের নেতারা শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রতি কতটুকু অনুগত থাকবেন নাকি তারা এবার বিদ্রোহ করবেন, সেটি এখন রাজনীতিতে বড় প্রশ্ন। এমনি যখন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নানামুখী চাপে, তখন ১৪ দল থেকে যদি কোন বিদ্রোহ হয় সেটা আওয়ামী লীগের জন্য হবে আরও বাড়তি চাপ।

১৪ দল   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রওশনের পাশে কেন দাঁড়াল না আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় তৎকালীন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। অবাধ, সুষ্ঠু হচ্ছে না। এই অর্থহীন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যাবে না। এই ঘোষণা দেওয়ার পরপরই জাতীয় পার্টির একটি বড় অংশ তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়।এরপর শুরু হয় নাটক। সেই সময় আওয়ামী লীগের পাশে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন তার নাম রওশন এরশাদ। রওশন এরশাদ এরশাদের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দেন এবং রওশন এরশাদের অনুসারীরা এরশাদের নির্দেশ অমান্য করে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। ফলে শেষপর্যন্ত জাতীয় পার্টির আংশিক হলেও নির্বাচনে থেকেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর রওশন এরশাদ হয়েছিলেন বিরোধী দলের নেতা। 

এরশাদ ওই নির্বাচনকে পরে মেনে নিয়েছিলেন। তিনি নিজেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার সত্ত্বেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন রংপুর-৩ আসন থেকে। এবার নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং মতদ্বৈততা ছিল। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছিলেন তারা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাদের মধ্যে নির্বাচনে না যাওয়ার একটা প্রবণতাও লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় আবার আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়ান রওশন এরশাদ। তিনি নির্বাচনে তফসিলকে স্বাগত জানান এবং এরপর মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রপতিকেও তিনি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশ গ্রহণের কথা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন। এরপর দল ভাঙার আতঙ্ক থেকে রক্ষা পাওয়ার কারণেই মূলত জিএম কাদের পন্থীরা নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন এবং মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু এই মনোনয়ন ফরম বিক্রিতে রওশন এরশাদ এবং তার অনুসারীরা কেউই অংশগ্রহণ করেননি। তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগও করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত রওশন এরশাদ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তাই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেননি। এমনকি তার অনুসারীরাও এবার নির্বাচনে অন্তত জাতীয় পার্টি থেকে অংশগ্রহণ করছেন না। এরকম বাস্তবতায় রওশন এরশাদের রাজনৈতিক অধ্যায়ের যবনিকা দেখছেন অনেকে। 

কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, রওশন এরশাদকে মনোনয়ন দেওয়া এবং তার লোকজনকে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো মনে করছে যে, শেষ মুহূর্তে জিএম কাদেরের সঙ্গে সরকারের একটি সমঝোতা হয়ে যায় এবং সেই সমঝোতার একটি বড় শর্ত ছিল রওশন এরশাদকে কোনোরকম সমর্থন এবং সহানুভূতি না দেওয়া। জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে কণ্টকমুক্ত করার জন্যই সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে ছিলেন, যাতে রওশন এরশাদের প্রতি তাদের সহানুভূতি এবং সমর্থন প্রত্যাহার করা হয়। সরকার জিএম কাদেরকে সেই সুযোগটা দিয়েছেন। এই নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত জিএম কাদের পন্থীরা জাতীয় পার্টিতে নিরঙ্কুশ হল। কিন্তু জিএম কাদের শেষ পর্যন্ত কি করবেন সেটি এখনও একটি বড় প্রশ্ন। কারণ ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়। এই সময়ের মধ্যে যদি জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত পাল্টে দেয় কিংবা ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো ঘটনা ঘটায় তখন সরকার কি করবে? 

রওশন এরশাদকে পাশে রাখলে হয়তো সরকার এই ঝুঁকির মধ্যে পড়ত না। তবে সরকারি মহলরা আশাবাদী যে, জিএম কাদের নির্বাচনে যাবেন। বিভিন্ন সরকারি সূত্রগুলো বলছে, জিএম কাদেরের সঙ্গে যারা আছেন তাদের অনেকেই সরকারের ঘনিষ্ঠ এবং তারা আশ্বাস দিয়েছেন যে, রওশন এরশাদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের কারণে জিএম কাদের অন্য রকম আচরণ করছেন। কাজেই রওশন এরশাদকে যদি সমর্থন না দেয় আওয়ামী লীগ সেক্ষেত্রে জিএম কাদের নির্বাচনে থাকবেন। এ রকম একটি আপসরফার মাধ্যমেই রওশন এরশাদের পাশে আর দাঁড়াননি সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিএম কাদের নির্বাচনে থাকবেন তো?


রওশন এরশাদ   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচিত হলে ঢাকা-৮ আসনকে স্মার্ট এলাকায় পরিণত করব: নাছিম

প্রকাশ: ০৭:৪৯ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

নির্বাচিত হলে ঢাকা-৮ আসন এলাকাকে স্মার্ট এলাকায় পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

তিনি বলেন, ঢাকা-৮ আসনের সকল থানা, ওয়ার্ডে ইতোমধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। মানুষের ভিতরে প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তারা জাতির পিতার আদর্শের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পেয়েছে এবং আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার জন্য তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। আমরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই ১৮ তারিখ থেকে নৌকার ভোটের জন্য মানুষের কাছে যাব ও দোয়া চাইব এবং ভোট প্রার্থনা করব। 

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ আদায় শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন নাছিম।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আজ বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের কাছে আমি দোয়া চেয়েছি, যাতে সকলেই আমার জন্য দোয়া করে। আমি যেন সকলের সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হতে পারি। আমি নির্বাচনি আচরণবিধি মেনেই আমার কার্যক্রম পরিচালনা করব এবং আমাদের নেতাকর্মীরাও আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনে উৎসবমুখর করে তুলবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায়। ইতোমধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা শুরু করেছে। এ উৎসবকে নষ্ট করতে যারা হরতাল ও অবরোধ ডেকেছে তাদের হরতাল অবরোধ ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের কোন সমর্থন তাদের প্রতি নেই। তাই তারা চাইলেও নির্বাচনে  বানচাল করতে পারবে না। 

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না চাইলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা কাউকে নির্বাচন করতে বাধা সৃষ্টি করিনি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে চাইলে যে কেউ নির্বাচন করতে পারে। বিএনপি জনগণের সমর্থন পাবে না জেনেই নির্বাচন করছে না। তাদের অপকর্ম দেশের মানুষ জানে। দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সুশৃংখল রাজনৈতিক দল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এটি পরিচালনা করেন। নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু কন্যার দিকে সব বিষয়ে তাকিয়ে থাকে। তিনি যা নির্দেশ দেন সবাই তাই পালন করে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১৭ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে। সুনির্দিষ্ট  জায়গা ছাড়া যে কোন জায়গায় ইচ্ছে মতো কেউ প্রার্থী হতে পারবে না। সময় আসলে এটি আরো সুন্দরভাবে পরিষ্কার হবে। 

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করে তিনি সেখানকার মুসল্লিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অতঃপর পায়ে হেঁটে হাইকোর্ট মাজারে যান এবং মাজার জিয়ারত করেন। মাজার জিয়ারত শেষে তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াহিদ উল্লাহর জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শ্রী বিপ্লবী রানীর স্মরণ সভায় যোগদান করেন এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময় করেন।

ঢাকা-৮ আসন   আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে ছাড় দেবে বিএনপি?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

তাহলে কি আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হয়েই গেল! নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি এরকম ঢিমেতালে আন্দোলন করবে এবং এই আন্দোলনের ফাঁক দিয়ে সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবে। নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সমঝোতা এবং রাজনৈতিক ঐক্যের ডাক দিতে পারে আওয়ামী লীগ এবং তখন বিএনপির নেতাদের সঙ্গেও আলাপ আলোচনা এবং বৈঠক হতে পারে। বৈঠকের ভিত্তিতেই শেষ পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় উপনীত হতে পারে দেশ। এমন একটি সমঝোতার কথা এখন আকাশে বাতাসে শোনা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে বিএনপির নেতা শাহজাহান ওমরের নৌকার প্রার্থী হওয়ার পর এই গুঞ্জন আরও পল্লবিত হয়েছে। যদিও বিএনপি নেতারা এ ধরনের সমঝোতার কথা অস্বীকার করেছেন। 

তারা বলছেন যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তাদের আন্দোলন অব্যাহত আছে এবং এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে এরকম নির্বাচনে যেন ভোটার উপস্থিতি উপস্থিত না থাকে সেজন্য ভোটারদের ঘরে ঘরে তারা যাবেন। কিন্তু বিএনপি যে থেমে থেমে অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করছে বা হরতাল দিচ্ছে সেটি ইতোমধ্যেই অকার্যকর হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার হরতাল শেষে আজ এবং আগামীকাল দু দিনের বিরতি। রোববার থেকে আবার দেশে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধে ডেকেছে বিএনপি। কিন্তু সাধারণ মানুষ এই ধরনের অবরোধ মানছে না। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ছাড়া এই ধরনের অবরোধের কোন কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। 

বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রথম দিকে অবরোধে দেখা গেলেও আস্তে আস্তে বিএনপির নেতাদেরকে আর দেখা যাচ্ছে না। বরং তারা ঘরেই চুপচাপ বসে আছে। আগে একটা কথা বলা হত যে, বিএনপি নেতারা আত্মগোপনে আছেন, পলাতক আছেন। এই জন্য তারা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। কিন্তু এখন সেই ভয় কেটে গেছে। বিএনপি নেতাদেরকে এখন প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তারপরও তারা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন না। নামকাওয়াস্তে একটি কর্মসূচি দিয়ে তারা চুপচাপ ঘরে বসে আছেন। তার অর্থ কি এই যে, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে ফেলুক তারপর দেখা যাবে নাকি সরকারের সঙ্গে বিএনপির একটি সমঝোতায় এলো।

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, তারা এখনও বিশ্বাস করে যে সরকার শেষ পর্যন্ত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু সরকার ইতোমধ্যে আশাবাদী উল্লসিত এবং তারা নির্বাচনে যে কৌশল তৈরি করেছে সেই কৌশলে এবার ২০১৪ বা ২০১৮ এর মতো নির্বাচন হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বরং এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একটা বড় ফ্যাক্টর হিসাবে দাঁড়াতে পারে। কারণ আওয়ামী লীগের শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রতিপক্ষ প্রায় সব আসনেই থাকছে। এর ফলে এই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। কোথাও কোথাও সহিংস হয়ে উঠতে পারে। তাই এই নির্বাচনে ভোটারদেরকে দূরে সরিয়ে রাখার কৌশল পুরোপুরি ভাবে অকার্যকর হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, আন্তর্জাতিক মহল বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচনে কি হয় তারপর সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছে। বিএনপিও একই রকম কৌশল নিতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপি আসলে আগে নির্বাচন দেখতে চায় এবং তারা মনে করছে যে, নির্বাচনের পরে পরিস্থিতি এমন হবে যে সরকার বিরোধী আন্দোলন তীব্র করার একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হবে। বিএনপি সেই সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে।

নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   বিএনপি   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নিবন্ধিত হলেও নির্বাচনে যাচ্ছে না তারা

প্রকাশ: ০৩:২০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে অংশ নিতে যাচ্ছে ৩০টি রাজনৈতিক দল। যদিও নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪৪টি। 

নিবন্ধিত যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না :

বিএনপি, এলডিপি, খেলাফত মজলিস, সিপিবি, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ, ইনসানিয়াত বিপ্লব, জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন বা এনডিএম, বাংলাদেশের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ, জেএসডি (রব), বাসদ, বিজেপি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন), গণফোরাম এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- বাংলাদেশ ন্যাপ (গাভী)।

উল্লেখ্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সাত জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে।

রাজনীতি   নির্বাচন   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন