ইনসাইড পলিটিক্স

অক্টোবরেই পরিষ্কার হবে রাজনীতির আকাশ

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভয়ঙ্কর অক্টোবর আসছে। অক্টোবর মাসেই রাজনীতিতে প্রধান দুই দলের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চূড়ান্ত রূপ ধারণা করতে পারে। সহিংস হয়ে উঠতে পারে রাজনীতির মাঠ। এছাড়া অক্টোবরেই আওয়ামী লীগ-বিএনপি শক্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত ফয়সালাও করতে চায়। আর এ কারণেই অক্টোবর মাসে রাজনীতিতে এটা টানটান উত্তেজনা এবং সংকট ঘনীভূত হবে। তবে আশাবাদীরা মনে করছেন, অক্টোবরেই রাজনীতির আকাশ স্বচ্ছ হয়ে যাবে। এখন যে গুমোট মেঘ রয়েছে এবং যে অশনি সংকেত, দুর্যোগের ঘনঘটা তা কেটে পরিষ্কার হবে অক্টোবরেই।

একাধিক কারণে এরকম মনে করছেন রাজনীতিবিদরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে লন্ডনে আসবেন। সেখানে কিছুদিন অবস্থানের পর ৩ অক্টোবর তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডন থেকে রওনা দিবেন। ৪ অক্টোবর তিনি দেশে ফিরে আসবেন। দেশে ফিরেই তিনি নির্বাচন এবং সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গুরুত্ব দেবেন। আওয়ামী লীগের গোটা অক্টোবর জুড়েই বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। অক্টোবর মাসে একাধিক  মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমে একটি নির্বাচনী আবহাওয়া তৈরি করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। উন্নয়নের বিকল্প নেই এই স্লোগান তুলে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আরেকবার আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাঠ দখল করতে চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, অক্টোবরে উন্নয়নের উৎসব যেমন হবে তেমনি এই সময়ে জনসংযোগ এবং ভোটের বার্তা নিয়ে আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।  

বিএনপির পরিকল্পনা ভিন্ন। বিএনপি এখন রাজপথে রয়েছে। তারা টানা কর্মসূচি দিয়েছে। বিএনপির নেতারা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আরও বড় ধরনের কর্মসূচি নিয়ে তারা উপস্থিত হবেন এবং যা কিছু করার ফয়সালা তারা অক্টোবরের মধ্যে করতে চান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমাদের হাতে আর সময় নেই। যা কিছু করার আমাদেরকে অক্টোবরের মধ্যেই করতে হবে। কারণ এরপর যদি আমরা কোনো কর্মসূচি করতে চাই তাহলে সরকার একতরফা নির্বাচন করে ফেলবে।

ধারণা করা হচ্ছে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন তাদের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবে। আর যদি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই যদি বিএনপি আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ অবস্থা দেশে তৈরি করতে না পারে তাহলে পরে সরকার কোনো চাপ অনুভব করবে না। বরং নির্বাচন আয়োজনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলবে। এ কারণেই বিএনপির জন্য অক্টোবরই হলো তাদের শেষ সুযোগ। 

এই দুই দলের পারস্পরিক অবস্থানের মধ্যে আবার কিছু তৃতীয় বিষয় রয়েছে। যেগুলো রাজনৈতিক গতি প্রকৃতির প্রবাহ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে আসছেন এবং তারা বাংলাদেশ সফরের পরে কি বার্তা দিবেন সেটাও দেখার বিষয়।

ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা শুরু দেওয়া শুরু করেছে। এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার ফলাফল এবং প্রতিক্রিয়া মাঠে কি হয় সেটাও বোঝা যাবে অক্টোবরে। নতুন কারো ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় কিনা সেটির ওপর নির্ভর করবে রাজনীতির গতি প্রকৃতির অনেকখানি। এছাড়াও যদি সরকার এবং বিরোধী দলের রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা হয়, খালেদা জিয়ার যদি অন্য কোনো ঘটনা ঘটে তাহলে রাজনীতিতে সব হিসাব নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অক্টোবরই বোঝা যাবে যে বাংলাদেশের রাজনীতি কোন গন্তব্যে যাচ্ছে।

অক্টোবর   রাজনীতি   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সালমান না আরাফাত: কাকে ছাড়বে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে আসন সমঝোতা নিয়ে আলাপ আলোচনা অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি এবার নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। জাতীয় পার্টি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না থাকে তাহলে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার সংকটে পড়বে। এটা ভাল মতোই বুঝতে পেরেছে জাতীয় পার্টি। আর তাই তাদের আবদারের শেষ নেই। প্রকাশ্যে তারা বলছে যে, তারা সাবালক সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা বা আসন ভাগাভাগির মধ্যে তারা নেই। নিজেদের শক্তিতে তারা নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু গোপন আলাপ আলোচনায় তারা অন্তত ৩০টি আসনে ছাড় চাইছে আওয়ামী লীগের কাছে। জাতীয় পার্টির শর্ত হল, যে সমস্ত আসনগুলোতে জাতীয় পার্টিকে ছাড়তে হবে সে সব আসনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। শুধু তাই নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে যারা শক্তিশালী তাদেরকেও বসিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসানোর ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি৷ তাছাড়া আওয়ামী লীগ এ রকম ২০ আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে রাজি। কিন্তু জাতীয় পার্টি চায় আরও বেশি। 

যে সমস্ত আসন নিয়ে জাতীয় পার্টি সবচেয়ে বেশি আগ্রহ তার মধ্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমা ইসলামের দুটি আসন অন্যতম। সালমা ইসলাম জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং নারী কোটা এমপি। তিনি সাবেক মন্ত্রীও ছিলেন। তিনি ঢাকা-১ এবং ঢাকা-১৭ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে তিনি মনোনয়নও জমা দিয়েছেন। 

জাতীয় পার্টির সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই সালমা ইসলাম দুটি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে কোনো একটি আসন তাদেরকে দেবে। কে কীভাবে এই আশ্বাস দিয়েছিল সে সম্পর্কে জাতীয় পার্টির নেতারা মুখ খুলছেন না। তবে জাতীয় পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একজন ব্যক্তি তাদেরকে এই প্রস্তাব দিয়েছিল। এখন আলোচনার টেবিলে সালমা ইসলামকে কোনো আসন ছেড়ে দেওয়া হবে এটি মুখ্য হয়ে উঠেছে। 

আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে দুটি আসন ছেড়ে দিতে চায়। ঢাকা-৪ এবং ঢাকা-৬। এই দুটি আসনের একটিতে অর্থাৎ ঢাকা-৪ এ আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানজিদা খানম যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা হয় তাহলে তিনি বসে যাবেন। আর ঢাকা-৬ সাঈদ খোকন জাতীয় পার্টির সাথে সমঝোতা হলে তারও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবে আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাদ সেধেছে অন্য জায়গায়। জাতীয় পার্টি ঢাকা-১ অথবা ঢাকা-১৭ যে কোনো একটি আসন আওয়ামী লীগের কাছ থেকে চায়। যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বসে যেতে হবে। ঢাকা-১ এ আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং নীতিনির্ধারকও বটে। 

অন্যদিকে ঢাকা-১৭ আসনে মোহাম্মদ আলী আরাফাত আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তিনি চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে চমক দেখিয়েছিলেন। মাত্র কয়েক মাসের জন্য তিনি এমপি দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কাজেই এই সময় যদি আওয়ামী লীগ এই আসন ছেড়ে দেয়, তাহলে তার প্রতি অবিচার হবে। তাছাড়া  আরাফাত আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহলে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং সাম্প্রতিক সময়ে যারা টকশোতে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আওয়ামী লীগের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন তাদের মধ্যে আরাফাত একজন। এই দুইজনই আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ দুজনের একজনকে ছাড়তে চায় না। কিন্তু জাতীয় পার্টি এখন অনড় অবস্থানে রয়েছে। তাদের বক্তব্য ঢাকা-১ অথবা ঢাকা-১৭ যে কোনো একটি আসন ছেড়ে দিতে হবে। 

সালমা ইসলাম জাতীয় পার্টির একজন প্রভাবশালী নেতা। আর একারণেই এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের বিরক্তি এবং উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কী করবে, কাকে ছাড়বে, নাকি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সাথে এই দুটি আসন বাদে অন্য আসন সমঝোতা করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।


সালমান এফ রহমান   জাতীয় পার্টি   আওয়ামী লীগ   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নৌকা পেয়েও হারানোর ভয়ে আওয়ামী লীগের বহু প্রার্থী

প্রকাশ: ১২:১৩ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেয়েও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থী। ‘নৌকা’ প্রতীক পেয়েও তা হারানোর ভয়ে দিন কাটছে তাদের। ভোটের আগে আপাতত নৌকা প্রতীক ধরে রাখাই এসব প্রার্থীর জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেজন্য নানাভাবে জোর লবিং ও তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব প্রার্থী।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, বিরোধীদল বিএনপি ও সমমনা অন্য দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের মুখে এবারের নির্বাচনে ২৯৮ আসনে ৩০৪ জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ৫টি আসনে দুজন করে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো আপাতত আলাদা প্রার্থী দিলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শরিক ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতা করেই নির্বাচন হতে পারে। এমনকি সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আসন ভাগাভাগি করে হতে পারে নির্বাচন। এমনটাই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

ইতোমধ্যে ১৪ দলের শরিক নেতারা জোটপ্রধান, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাদের মধ্যে আসন ভাগাভাগির জন্য জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে ৩০৪ জনকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হলেও আসন ছাড়ের কারণে কপাল পুড়তে পারে আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থীর। এর মধ্যে দলের গুরুত্বপূর্ণ ও হেভিওয়েট প্রার্থীও থাকতে পারেন। সেই আশঙ্কায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের। অনেকেই পাওয়া ‘নৌকা’ ধরে রাখার লড়াইয়ে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের বাসা ও অফিসে কাছে ধরনা দিচ্ছেন তারা। যে কোনো উপায়েই হোক না কেন, শরিকদের ঠেকাতে মরিয়া এসব প্রার্থী। অবশ্য শেষ পর্যন্ত জাপা বা শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন না হলে নৌকার এসব প্রার্থী দুশ্চিন্তামুক্ত হবেন না।

সূত্র জানায়, বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ সরকারের শরিক দলগুলোর ৩২ জন সদস্য রয়েছেন। এসব আসনে সবাইকে বহাল রেখেই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আরও বেশি আসন দাবি করছে দলগুলো। এর মধ্যে দলীয় বিরোধের কারণে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ, তার ছেলে সাদ এরশাদ, মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ বর্তমান ৫ এমপি দলের মনোনয়ন তোলেননি। তবে জাতীয় পার্টির আসন হিসেবে এই ৫টি আসনসহ বর্তমান সবকটি আসনই চায় দলটি।

বর্তমান সংসদে সরকারের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি মঞ্জু ও তরীকত ফেডারেশনেরও প্রতিনিধি রয়েছেন। তার সবকটির সঙ্গে নতুন করে আরও কিছু আসন চায় দলগুলো। এর পাশাপাশি আলোচিত রাজনৈতিক দল তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফও সরকারের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির নির্বাচন চায়। এর মধ্যে তৃণমূল বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা ছাড়াও প্রার্থী হিসেবে ৫ জন এবং বিএনএমের প্রার্থী হিসেবে ৬ জন সাবেক সংসদ সদস্যও রয়েছেন। ফলে জোটের ও নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর নানা সমীকরণে অন্তত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া চল্লিশেরও বেশি প্রার্থী দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন।

ইতোমধ্যে ঝালকাঠি-১ আসনে দলের সাবেক সদস্য বিএইচ হারুনকে বাদ দিয়ে নতুন করে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা শাহজাহান ওমরকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন গতবার ঢাকা-৮ আসনের এমপি থাকলেও এবার সেখানে আওয়ামী লগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিমকে মনোনয়ন দেওয়ায় মেনন সেখানে আর প্রার্থী হননি। তিনি ঢাকা থেকে সরে গিয়ে বরিশালের দুটি আসনে মনোনয়ন জমা দেন। ফলে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া সরদার মো. খালেদ হোসেন ও বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার মো. ইউনুস আতঙ্কে রয়েছেন। দলের আরেক নেতা ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহী-২ আসনে এবারও প্রার্থী। ফলে এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া মোহাম্মদ আলী রয়েছেন ঝুঁকিতে। সাতক্ষীরা-১ আসনে বর্তমান এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহের আসনে মনোনয়ন পাওয়া ফিরোজ আহমেদ স্বপন রয়েছেন চূড়ান্ত মনোনয়ন হারানোর ঝুঁকিতে।

এদিকে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর আসনে কাউকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তারের ফেনী-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আলাউদ্দীন আহমেদ নাসিমকে। বগুড়া-৪ আসনে জাসদের রেজাউল করিম তানসেনের আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন হেলাল উদ্দিন কবিরাজ।

১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন খাদিজাতুল আনোয়ার। এ ছাড়া এ আসনে নতুন নিবন্ধন পাওয়া বিএসপির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদও একই আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তিনি আবার ঢাকা-১৪ আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। ফলে শরিকদের ও সমমনাদের ছাড়লে তাদের দুজনই চূড়ান্ত মনোনয়ন হারাতে পারেন।

সরকারের শরিক জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু) এবারও পিরোজপুর-৩ আসনে প্রার্থী। ফলে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আশরাফুর রহমান ঝুঁকিতে আছেন।

এদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী আলোচিত রাজনৈতিক দল তৃণমূল বিএনপি সরকারবিরোধী দল হিসেবে ভূমিকার কথা বললেও সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় নির্বাচনে যাচ্ছে বলে আলোচনা রয়েছে। এ দলটির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সিলেট-৬ আসনে প্রার্থী হয়েছেন।

এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং দলের মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী হওয়ায় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর চূড়ান্ত মনোনয়ন নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। আর দলের নির্বাহী চেয়ারম্যান অন্তরা হুদা মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনে বর্তমান এমপি বিকল্পধারার মাহী বি. চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল হলেও তিনি আপিল করেছেন। ফলে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মনোনীত মহিউদ্দীন আহমেদ শেষ পর্যন্ত প্রার্থী থাকছেন না বলে অনেকের ধারণা।

এ ছাড়া দলের আরও পাঁচ প্রার্থী রয়েছেন যারা অতীতে বিভিন্ন সময় সংসদ সদস্য ছিলেন। এবারও তাদরে সবাইকে চায় দলটি। এর মধ্যে সমঝোতা হলে লক্ষ্মীপুর-১ আসনে এম এ আউয়ালের (মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় আপিল করেছেন) জায়গায় আনোয়ার হোসেন খান, নীলফামারী-১ আসনে এমকে আলম চৌধুরীর জায়গায় আফতাবউদ্দীন সরকার, মেহেরপুর-২ আসনে আব্দুল গনির জায়গায় আবু সালেহ নাজমুল হক, মৌলভীবাজার-২ আসনে এম এম শাহীনের জায়গায় শফিউল আলম চৌধুরী (এ আসনে বর্তমান এমপি গণফোরামের মোকাব্বির খান) ঝুঁকিতে থাকতে পাারেন।

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম কক্সবাজার-১ ও চট্টগ্রাম-৫ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে কক্সবাজার-১ আসনে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সালাউদ্দিন আহমদ হাইকোর্টের রায়ে মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন। আর চট্টগ্রাম-৫ আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী। ফলে মোহাম্মদ আব্দুস সালাম ঝুঁকিতে রয়েছেন।

এ ছাড়া আলোচিত আরেক দল বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহ আবু জাফর ফরিদপুর-১, মহাসচিব মো. শাহজাহান চাঁদপুর-৪ আসনে, দলের নেতা ও সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বরগুনা-২ আসনে, কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী পাবনা-২ আসনে, সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াহহাব ঝিনাইদহ-১ আসনে, দেওয়ান শানমসুল আবেদীন সুনামগঞ্জ-৪ আসনে, মামুনুর রশিদ জামালপুর-৪ আসনে, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী নীলফামারী-১ আসনে এবং এইচ এম গোলাম রেজা সাতক্ষীরা-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ায় এসব আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা খানিকটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আর জাতীয় পার্টির বর্তমান আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া নেতারাও রয়েছেন বিপাকে।

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, অন্যান্য দলের মতো ১৪ দল আসন ভাগাভাগির জোট নয়। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেই আসন চূড়ান্ত করা হবে। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। ১৭ তারিখের আগে জোট শরিকদের আসন ছাড়ের বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আর আসন চূড়ান্ত হলে দলের সিদ্ধান্তও মানতে হবে সব প্রার্থীকে। না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আওয়ামী লীগ   দ্বাদশ   জাতীয় সংসদ নির্বাচন   নৌকা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ১০:০৭ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির (বাঘা-চারঘাট আসন) চেয়ারম্যান ও রাজশাহীর সদর সিনিয়র সহকারী জজ মো. সেফাতুল্লাহ তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান।

নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির পাঠানো নোটিশে বলা হয়, গত ২ ডিসেম্বর শনিবার রাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রতীক বরাদ্দের আগেই চারঘাটের ফরহাদ আলাউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জনসভা করেন এমপি শাহরিয়ার আলম। জনসভায় শাহরিয়ার আলম রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পাকুড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান এবং রাজশাহী-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা রাহেনুল হকের কর্মী ও সমর্থক মেরাজুল ইসলামকে জনসমক্ষে অপবাদ ও বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এ ছাড়া ১৭ ডিসেম্বরের পর তাকে দেখে নেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন। এসব অভিযোগে ভুক্তভোগী নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির পাঠানো শোকজ নোটিশে আরও বলা হয়, আচরণের মাধ্যমে শাহরিয়ার আলম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৬ (গ) ও বিধি ১১(ক) এবং বিধি ১২ লঙ্ঘন করেছেন। এ অবস্থায় ‘সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৬ (গ) ও বিধি ১১ (ক) এবং বিধি ১২ লঙ্ঘনের দায়ে শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে কেন নির্বাচন কমিশনে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না মর্মে আগামী ১০ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১০টায় স্ব-শরীরে হাজির হয়ে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে হুমকি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে মুঠোফোনে ফোন করা তিনি কল রিসিভ করেননি।


রাজশাহী   শাহরিয়ার আলম   আচরণবিধি লঙ্ঘন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় বিএনপি

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বিএনপি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে আগামী রোববারের জন্য। রোববারে (১০ ডিসেম্বর) নাটকীয় কিছু ঘটতে যাচ্ছে এমন ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিএনপির অনেক নেতাই। বিএনপির অন্তত একজন নেতা এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপচারিতায় বলেছেন, রোববার সন্ধ্যায় খবর নিয়েন, দেখেন কি হয়। 

বিএনপির মধ্যে কেউ কেউ স্বপ্নবিলাসী। তারা মনে করছেন, এখনও অনেক ঘটনার বাকি আছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কি না, তা নিয়েও বিএনপির কারও কারও মধ্যে নানা রকম সন্দেহ রয়েছে। অধীর আগ্রহে বিএনপি অপেক্ষা করছে, কিছু একটা ঘটবে। কে ঘটাবে, কি ঘটাবে? এ ব্যাপারে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলাপ করতে চাইলে তারা অবশ্য প্রকাশ্যে কিছু বলেন না। কিন্তু গোপনে তারা বলছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। বাংলাদেশের উপর আসছে বড় ধরনের খড়গ। 

আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। এই মানবাধিকার দিবসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে যে মানবাধিকার রিপোর্ট প্রকাশ করবে তার ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকম্প হবে, এমন আভাস দিচ্ছেন বিএনপির কোন কোন নেতারা। কোথায় থেকে, কিভাবে তারা এই তথ্য পেয়েছেন, সে সম্পর্কে তারা কিছু জানাননি। 

তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বিএনপির এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। তারা বলছেন যে, বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে গত এক বছরে ঘটনাবলী যদি বিশ্লেষণ করা যায়, তাহলে দেখা যাবে যে, সরকার মানবাধিকার পরিস্থিতির বরং উন্নতি করেছে। বিগত দিনগুলোতে যেখানে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা ছিল, সেখান থেকে পরিস্থিতির অনেকখানি উন্নতি হয়েছে।

জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সম্মেলনে আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের অবস্থানকে যেভাবে দৃঢ়তার সঙ্গে তুলে ধরেছেন, তা ইতিবাচক এবং এর ফলে বাংলাদেশ নিয়ে, বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে তারা মনে করেন না। আর যদি এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি হবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশকে নিয়ে একটি রূপকল্প রয়েছে। সেই রূপকল্প নিয়েই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশের নির্বাচন এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলির দিকে নজর রাখছিল এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে বারবার কথাও বলছিল। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদিও বলেছিল যে, তারা বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনও পক্ষকে সমর্থন করে না, একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়। কিন্তু, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আচার-আচরণ বা পদক্ষেপগুলো থেকে একটা সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া গিয়েছিল। তাহলো- মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে চাপে রাখতে চায়, যেন তারা অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে বাধ্য হয়। সরকারও এই চাপের কথা অস্বীকার করেনি বরং এই চাপ সামাল দিয়ে সরকার নির্বাচনের পথে হেঁটেছে।

বিএনপি গত ২৮ অক্টোবরের ঘটনার মাধ্যমে নিজের ফাঁদে নিজেই পড়েছে। যার ফলে তারা যে আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং সহযোগিতা পাবে সে সুযোগ আর নেই। এরকম একটি পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের নীরবতা পালন করছেন। কিন্তু, মানবাধিকার ইস্যু এবং শ্রম ইস্যু নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক তৎপরতাগুলো উদ্বেগজনক বলেও মনে করছেন কোনও কোনও মহল৷ 

তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা কোনো কিছু দেবে না। অন্যদিকে, বিএনপি মনে করছে যে, ১০ ডিসেম্বরই কিছু একটা ঘটনা ঘটবে। আর সে কারণেই তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।


বিএনপি   নিষেধাজ্ঞা   ভোট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কষ্ট ছাড়া এমপি হতে চান তারা?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে আছে ১৪ দল। ১৪ দলের আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো গুরুত্বহীন, দলের চেয়ে নেতারা। ১৪ দলের যে শরিকগুলো আছে সেই শরিকগুলোর সবগুলোর নাম ঠিকঠাকমতো জনগণ বলতে পারে না। এই সমস্ত দলের কোনও কাউন্সিল হয় কিনা? নেতা নির্বাচন কীভাবে হয়? সে সম্পর্কেও সাধারণ মানুষের কাছে কোন তথ্য নেই। এই সমস্ত দলের নেতারা জন্ম-জন্মান্তরের জন্য দলের নেতৃত্বে আছেন এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন জাতি-গোষ্ঠীকে নিয়ে তারা দল গড়েছেন। আর এই দলগুলোর সাংগঠনিক শক্তি এমন দুর্বল যে, সারা দেশে তাদের কমিটি আছে কি না, তা তারা নিজেরাও বলতে পারবেন না।

একটি সমাবেশ বা যেকোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে এই সমস্ত দলগুলো গড়ে ১০০ জন কর্মী জোগাড় করতে পারবে কি না, সে নিয়েও কারও কারও সংশয়-সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু ভোট এলেই দলগুলোর আবদার বারে, বারে দরবার।

এবার ১৪ দলের শরিকরা বিশটি আসন চেয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদে ১৪ দলের শরিকদের দশটি আসন ছিল। ওই দশটি আসনে তারা কীভাবে জয় পেয়েছিলেন সেটা তারা নিজেরাও জানেন। 

একটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব আদর্শ থাকে, নিজস্ব দলীয় প্রতীক থাকে। তারা নির্বাচন কমিশনে যখন নিবন্ধিত হন তখন তারা দলীয় প্রতীক নির্ধারণ করে দেন এবং সেই প্রতীক নিয়ে তাদের নির্বাচন করার কথা। কিন্তু, ১৪ দলের শরিকরা কেউই নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী নন। কারণ তারা জানেন যে, নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করলে তাদের কি হাল হবে। তারা চান আওয়ালী লীগের প্রতীক নৌকা।

আওয়ামী লীগ দেশের বড় একটি রাজনৈতিক দল, বৃহত্তম রাজনৈতিক দলও বটে। এই দলটির তৃণমূল পর্যন্ত কমিটি রয়েছে, রয়েছে কর্মীবাহিনী। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের সংখ্যাও বাড়-বাড়ন্ত। লোভেই হোক আর অন্য কোনো প্রাপ্তির আশাই হোক, দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের সংখ্যা অনেক। কাজেই একটি আসনে যখন আওয়ামী লীগের একজন প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়া হয় বা জাসদ কিংবা ওয়ার্কার্স পার্টির কাউকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়, তখন সেই এলাকায় সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, নেতারা মনোক্ষুণ্ণ হন এবং পরবর্তীতে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাই সবসময় চান যে, যারা শরিক আছেন তারা নিজ নিজ প্রতীকে নির্বাচন করবেন তাদের অবস্থান থেকে।

যেমন ধরা যাক, ১৪ দলের শরিক জাসদ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল)। হাসানুল হক ইনু যদি কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে নির্বাচন করেন, তাহলে কেন তিনি মশাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন না? কেন তাকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে হবে? এবার নির্বাচনে যেহেতু বিএনপি-জামায়াত অংশগ্রহণ করছেন না, কাজেই এই নির্বাচন যদি আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য শরিকরা স্ব স্ব অবস্থান থেকে করতো তাহলে নির্বাচন আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হত, ভোটারদের অংশগ্রহণ হত। কিন্তু, শরিকরা সেই ঝুঁকি নিতে রাজি নন, কারণ কী?

কারণ একটাই যে, তারা জানেন এরকম নির্বাচন করলে তাদের কারও-ই জয়ী হওয়া নিঃসংশয় নয় বরং তারা জয়ী হতে পারবেন কি না; এ নিয়ে তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা রয়েছে। আর এই কারণেই তারা এই অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে চান না। তাদেরকে সব প্রতীকে নির্বাচন করতে গেলে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হবে, কষ্ট করতে হবে, জনগণের কাছে যেতে হবে। কিন্তু, এই কষ্ট করতে তারা রাজি নন। তারা চান কষ্ট ছাড়া এমপি হতে।

কষ্ট ছাড়া এমপি হওয়ার জন্য তাদের বাহানার ফর্দ দীর্ঘ হচ্ছে। তারা নৌকা প্রতীকে যেমন প্রার্থীকে বসিয়ে দিতে চান, ঠিক তেমনই ওই আসনে যেন আওয়ামী লীগের কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকে সেটিরও নিশ্চয়তা চান। এমনকি নির্বাচনে যেন তাদেরকে প্রশাসন এবং অন্য মহল সহায়তা করে সেটিও চান।

অর্থাৎ এমন একটি পরিস্থিতি তারা চান, যেখানে তারা বাধাহীনভাবে এমপি হতে পারবেন। একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে কি এমন ভাবনা থাকা উচিত?


১৪ দল   আওয়ামী লীগ   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন