নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৩ পিএম, ২২ জুলাই, ২০১৮
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য একরকম মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর গত শুক্রবার এবং শনিবার দুই দফায় তারা ভারতীয় দূতাবাসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকও করেছে। বিএনপিকে হঠাৎ করেই নির্বাচনে আনতে এত তৎপর কেন পশ্চিমা দেশগুলো?
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দেশগুলো মনে করে বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে বাংলাদেশে দ্বিতীয় বা তৃতীয় শক্তি হিসেবে ইসলামী বা মৌলবাদী শক্তির উত্থান হবে। তারা বাংলাদেশে ২০১৪ এর পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছে যে, এসব নির্বাচনে ইসলামী ধারা বা দক্ষিণপন্থী দলগুলো ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানেই দেখা গেছে দলগুলোকে।
পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকদের মতে, উদারনৈতিক এবং প্রগতিশীল দলগুলোর জনভিত্তি খুবই দুর্বল। তারা কোনোভাবেই নির্বাচনে শক্ত অবস্থানে যেতে পারছে না। যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে তাহলে বিএনপির যে ভোটগুলো আছে, সেই ভোটগুলোর একটা বড় অংশ ইসলামী শক্তির দলগুলোর কাছে যাবে। তখন বাংলাদেশে আবার মৌলবাদী এবং দক্ষিণপন্থী রাজনীতির বিকাশ ঘটবে। পশ্চিমা দেশগুলো এটা চায় না। তারা মনে করে যে, ইসলামী শক্তির উত্থান এবং বাংলাদেশে যেন আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো ধর্মান্ধ শক্তির উত্থান না ঘটে সেজন্য বিএনপির মতো কিছুটা হলেও মর্ডারেট, উদারনৈতিক, উদার গণতান্ত্রিক দলকে নির্বাচনে আনা উচিৎ। মূলত এ কারণেই পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে তোড়জোড় শুরু করেছে।
দেশগুলোর মতে, নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় না আসতে পারলেও, শুধু সংসদে বিরোধীদলে থাকলেই ইসলামী দলগুলোর উত্থান ঘটবে না। বিএনপি যত দুর্বল হয়ে যাবে, বাংলাদেশে ইসলামী দলগুলো তত বেশি শক্তিশালী হবে। বিএনপি দুর্বল বা ডিলিট হয়ে গেলে সেই জায়গাটা কখনো যুক্তফ্রন্ট, ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম বা বামদলগুলো নিতে পারবে না বলেই মনে করে পশ্চিমা দেশগুলো। এক্ষেত্রে তারা উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছে, বাংলাদেশে গত ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং উপনির্বাচনগুলোতে ইসলামী দলগুলোর অনেক উত্থান ঘটেছে।
আরও একটি কারণে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চায় পশ্চিমারা। আর সেটি হলো, এবারও যদি বিএনপি ২০১৪ সালের মতো নির্বাচনে না আসে তাহলে রাজনীতিতে ‘ব্যালেন্স অব পাওয়ার’ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যখনই একটা দেশে ‘ব্যালান্স অব পাওয়ার’ নষ্ট হয়ে যায়, সে দেশে তখন স্বৈরতন্ত্র তৈরির আশঙ্কা দেখা যায়। আর সেই আশঙ্কা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। এজন্য তারা বিএনপিকে যেকোনোভাবে নির্বাচনে নিয়ে আসতে চাচ্ছে। এছাড়া ২০১৪ সালে পার্লামেন্টে যে বিরোধী দল হয়েছে, সেই দল জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারেনি। সত্যিকার বিরোধীদল হিসেবে দায়িত্বপালন করতে পারেনি। আর সেজন্য জবাবদিহিতা এবং সুশাসন অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জবাবদিহিতা এবং সুশাসন না থাকলে বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বিকশিত হয়না। সে কারণে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল জাতীয় সংসদে প্রয়োজন। যাতে করে জবাবদিহিতা এবং সুশাসন নিশ্চিত হয়। সেজন্য তারা মনে করছে, বাংলাদেশে নতুন করে হঠাৎ একটি তৃতীয় শক্তির উত্থান অসম্ভব। তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিএনপির জায়গা দখল করা অসম্ভব। সেজন্য বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তারা অত্যন্ত আগ্রহী।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, তবে ভারত বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগী হবে কি না, সে বিষয়ে এখনা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। ভারত পশ্চিমা কূটনীতিকদের বক্তব্যগুলো শুনেছে, বিএনপির সঙ্গে কথা বলে তারা তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। এখন ভারতের প্রচেষ্টায় বিএনপি কোন পথে গেল তা জানা যাবে কিছুদিনের মধ্যেই, দলটির কর্মকাণ্ডে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক
পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের
মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয়
নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে
আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির যারা মন্ত্রী-এমপি
এমন পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তাদের সন্তান ও স্বজনরা যেন উপজেলা নির্বাচনে
না আসে। প্রথম পর্যায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় চলে গেছে। কেউ কেউ বলেছেন আমরা
বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরেও কেউ কেউ প্রত্যাহার
করেছেন, কেউ কেউ করেননি। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের যে সময়সীমা তারপরেও ইচ্ছা
করলে করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন,
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আছে। দল যার যার
কর্মকাণ্ড বিচার করবে। চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না সময়মতো দল ব্যবস্থা
নেবে’।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একতরফা কোনো
সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি এসে যায়। আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশের
ডাক দেয়। তবে এটা পাল্টাপাল্টি নয়।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক
কার্যালয়ে হওয়া উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি
এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত
রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক
আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি প্রার্থিতা প্রত্যাহার ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।