নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৬ অক্টোবর, ২০২১
গত একমাস ধরে রাজনীতিতে কথার যুদ্ধ চলছে। কিন্তু কথার যুদ্ধে শেষ করে এখন রাজনীতি মাঠে গড়াচ্ছে বলেই বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। বিভিন্ন ইস্যুতে কথায় উত্তপ্ত রাজনীতি এখন রাজপথে নামার অপেক্ষায় রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পাঁচটি ইস্যু নিয়ে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এ চলতি মাসেই। যে ইস্যুগুলো নিয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে-
১. কুমিল্লা ইস্যু: ইতিমধ্যে কুমিল্লার ইস্যু নিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তদন্ত করছে এবং এই তদন্তে এর পেছনে যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে সেটা বেরিয়ে আসছে। ফলে যারা এর সঙ্গে জড়িত বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের যে চক্র এই অপকর্ম করে সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের আইনের আওতায় আনলে এর প্রতিবাদে বিএনপি-জামায়াত রাজপথে আন্দোলন বা অশান্তি সৃষ্টি করার একটা চেষ্টা করতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
২. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: সাম্প্রতিক সময়ে জনজীবনের সবচেয়ে অস্বস্তি এবং বিরক্তির নাম হলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি মানুষকে এক অসহনীয় অবস্থায় নিয়ে গেছে এবং এই পরিস্থিতি থেকে যদি উত্তরণ না ঘটাতে পারে তাহলে দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে নামবে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে বাম রাজনৈতিক দলগুলো দ্রব্যমূল্য ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
৩. নির্বাচন কমিশন: সরকার নতুন সার্চ কমিটির ঘোষণা দিতে পারে চলতি সপ্তাহেই। এই সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। সার্চ কমিটি এবং নির্বাচন কমিশন গঠন, এই নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হতে পারে। বিশেষ করে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা এ সার্চ কমিটি মানে না। সুশীল সমাজও এই সার্চ কমিটির বদলে আইন করে নির্বাচন কমিশন করার কথা বলছে। নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি রাজপথে কর্মসূচি দিতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন।
৪. ই-কমার্স: ই-কমার্স প্রতারিত মানুষের সংখ্যা কয়েক লাখ। তারা বিক্ষিপ্তভাবে এখন মিছিল মিটিং করছেন, কোথাও কোথাও মানববন্ধন করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ই-কমার্সের দ্বারা প্রতারিতদেরকে এক করার চেষ্টা করছে এবং তাদেরকে নিয়ে একটি রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকার মত প্রতিষ্ঠানগুলো যে হাজার হাজার মানুষকে প্রতারিত করেছে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করলে একটা রাজপথে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মনে করছে। আর এ ক্ষেত্রেও বাম রাজনৈতিক দলগুলো প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৫. বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি: বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ইস্যুতে একদিক দিয়ে যেমন বিএনপি সরকার সঙ্গে দেনদরবার এবং তদবির করছে, অন্যদিকে তারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগের পরিকল্পনাও নিয়েছে। আর এ জন্য বিএনপি কিছু কিছু আন্দোলন করবে।
তবে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের মূল লক্ষ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধাপে ধাপে একটি বড় ধরনের আন্দোলন তৈরি করা। সেক্ষেত্রে বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো চাইছে প্রথমে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত ইস্যুগুলোকে সামনে আনতে। আর এ কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ই-কমার্সের মত ইস্যুগুলো নিয়ে তারা প্রথমে কর্মসূচি শুরু করবে যে কর্মসূচিগুলোতে মানুষকে সম্পৃক্ত করার পর আস্তে আস্তে তারা অন্যান্য ইস্যুগুলো নিয়েও আন্দোলন করবে। তবে গত ১২ বছরের বিএনপি বহুবার আন্দোলনের চেষ্টা করেছে, সফল হয়নি। এবারও আন্দোলনের চেষ্টায় বিরোধী দল কতটুকু সফল হবে সেটি দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা অত্যন্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। শুধু কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেই তিনি ক্ষান্ত
হননি। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
গ্রহণ করারও শাস্তিমূলক হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। আর এ কারণে আওয়ামী
লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একের পর এক বৈঠক করছেন এবং মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা
যাতে উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেন সে জন্য সতর্ক বার্তা ঘোষণা করছেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন, ওবায়দুল কাদের যা বলছেন
তা হলো শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতির বক্তব্যের অনুরণন। আওয়ামী লীগ সভাপতি যেভাবে তাকে নির্দেশনা দিচ্ছেন সে বক্তব্যই
তিনি প্রচার করছেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তারা যেন সারা দেশে আওয়ামী লীগের কোন কোন এমপি-মন্ত্রী এবং নেতাদের স্বজনরা প্রার্থী
আছেন তার তালিকা তৈরি করেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৩ টি বিষয়ের প্রতি সুনির্দিষ্ট
নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রথমত, কোন মন্ত্রী-এমপি কিংবা প্রভাবশালী নেতা তার নিকট আত্মীয় বা স্বজনকে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করাতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রী কোন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করতে পারবে না। তৃতীয়ত, কোন মন্ত্রী এমপি উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রশাসন বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হাত মেলাতে পারবেন না। এই ৩ টির কোন একটির যদি ব্যত্যয় হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলা নির্বাচনের ৩ ধাপে যে তফসিল নির্বাচন
কমিশন ঘোষনা করেছে। তার মধ্যে প্রথম ধাপে ২৭ জন মন্ত্রী এমপির স্বজনরা উপজেলায় প্রার্থী
হয়েছেন। ২য় ধাপে প্রার্থীতার সংখ্যা আরো বেশি হওয়ার কথা। এখানে ১৫২ টি উপজেলার মধ্যে
৮৭ জন মন্ত্রী-এমপির সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করার আগ্রহ জানিয়েছে, যারা মন্ত্রী-এমপিদের
নিকট আত্মীয়। আর ৩য় ধাপে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০-২৫০ জন মন্ত্রী-এমপির
আত্মীয় স্বজন উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছেন। এখন
যদি তারা নির্বাচন থেকে সরে না দাড়ান, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ
করা হবে?
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, আগামী ৩০ এপ্রিল দলের কেন্দ্রীয়
কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, এই বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন আওয়ামী
লীগ সভাপতি। তবে সিদ্ধান্ত হবে ধাপে ধাপে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে প্রার্থী
দিবেন তাদেরকে প্রথমত, দলের পদ হারাতে হবে। দ্বিতীয়ত, আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে
তাদেরকে কালো তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে। তৃতীয়ত, যারা মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী আছেন,
তারা মন্ত্রীত্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, শেষ পর্যন্ত
কেউ যদি দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হটকারী অবস্থান গ্রহন করে, তাহলে দল থেকে বহিষ্কারের
মতো আওয়ামী লীগ গ্রহণ করতে পারে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মনে করছে।
তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে অত্যন্ত
কঠোর অবস্থানে আছেন। এ ব্যাপারে তিনি কোন ছাড় দেবেন না। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
কালো তালিকায় যদি থাকেন, তাহলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ মন্ত্রী-এমপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তারা আসন্ন উপজেলা
নির্বাচনে অংশ নিবে না। আর যদি দলটির কোনো নেতাকর্মী স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়
তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি বহিষ্কারও করা হতে পারে
বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
তবে দলের এমন কঠোর হুঁশিয়ারি থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন
তৃণমূল বিএনপি’র নেতারা। তারা মনে করছেন, যেহেতু উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয়
প্রতীক ব্যবহার করছে না, সে কারণে উপজেলা নির্বাচন বর্জন করা উচিত হয়নি দলের। বরং এই
নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থীরা দাঁড়ালে তাদের শক্তি সামর্থ্য হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির কেন্দ্র ও তৃণমূলের মধ্যে
চলছে তোলপাড়। বাড়ছে দ্বন্দ্ব এবং দূরত্ব। বর্তমানে যেসকল নেতাকর্মীরা নির্বাচনের মাঠে
রয়েছে তাদের নির্বাচন থেকে ফেরানো নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন বিএনপি’র নীতিনির্ধারকেরা।
তারা মনে করছেন, প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রার্থীদের ফেরানো না গেলে পরের ধাপগুলোতে
প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে, আর তাতে দলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
আগামী ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ
হবে। এই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ। এরই মধ্যে এই নির্বাচনে বিএনপির ৪৫
নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিএনপির তৃণমূলের একাধিক নেতা
বলছেন, জাতীয় আর স্থানীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে
তাদের জনপ্রিয়তা তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী
থাকবেন। এতে বিএনপির অনেক নেতার সম্ভাবনা আছে জেতার।
অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা আশা করে বসে আছেন যে, মনোনয়ন
প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ এপ্রিলের আগেই সবাই ভোট থেকে সরে দাঁড়াবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের
উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক জানান, কেউ যদি দলের নির্দেশনা অমান্য করেন তাহলে কঠোর
সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা
নির্বাচনে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের
প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপি এক সংবাদ
বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না। তাদের দাবি এ নির্বাচন হচ্ছে
‘প্রহসনমূলক নির্বাচন’।
কিন্তু কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া
হলেও সারা দেশের নেতাকর্মীদের অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
যারা বিগত সময়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার তারা
নির্দলীয় ব্যানারে প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। আর যেহেতু তারা স্বতন্ত্রভাবেই নির্বাচন
করার প্রস্তুতি নিয়েছেন সেজন্য লন্ডন বা দলের কেন্দ্রীয় মহলের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায়
থাকছেন না।
নির্বাচনে আগ্রহী ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ যুবদলের সহসভাপতি মাজহারুল
ইসলাম জুয়েল বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে এবং তাদের সংঘবদ্ধ করতেই উপজেলা
পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন
অংশ নিলে বহিষ্কারও করতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে ত্রিশাল উপজেলার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে
গণসংযোগ করছি, তাদের সঙ্গে কথা বলছি। তবে জনগণ চায় আমি নির্বাচনে অংশ নিয়ে তাদের
প্রতিনিধি হই।
এছাড়াও ত্রিশাল উপজেলা বিএনপি নেতা আনোয়ার শাদাত বলেন, আমার বাবা
বিএনপি থেকে ত্রিশালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। আমার বাবার
ইচ্ছা ছিল আমিও জনপ্রতিনিধি হই। তার ইচ্ছাতেই বিএনপির সঙ্গে আছি। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে
অংশ নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে গণসংযোগ শুরু করেছি। এ ব্যাপারে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
দলীয় সিদ্ধান্তে বহিষ্কার করলেও নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করে জনগণের সেবা করতে
চাই। যেহেতু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় কোনও প্রতীক থাকবে না, সেই বিবেচনা থেকে
আমি নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদল সাধারণ
সম্পাদক আল মামুন বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে দলের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখার জন্য এবার
তিনি চেয়ারম্যান পদে ভোট করছেন।
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার দুবারের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি
নেতা দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া দুলাল বলেন, তৃণমূলের অনেক নেতাই নির্বাচন করতে আগ্রহী।
বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন
বর্জনের পরপরই উপজেলা নির্বাচন বিএনপিকে অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। নির্বাচনে
অংশ না নিলে মাঠপর্যায়ে জনপ্রতিনিধিত্বশীল নেতাদের ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক মাসুদুল আলম
চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে তিনি জানান, আমরা
দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি অনুগত। তার পরও অনেক সময় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্থানীয়
মতামতে ভিন্নতাও আসে। আমরা স্থানীয়ভাবে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার
নির্বাচন শুরু হয়। বিএনপি ২০২১ সালের মার্চের পর থেকে সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। বরং দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে
অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের অনেক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। এর আগেও সিটি করপোরেশন বা ২০১৯
সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। তা সত্ত্বেও দলটির তৃণমূলের
অনেক নেতা অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে দেড় শতাধিক প্রার্থী বিজয়ীও হয়েছেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে’।
মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, নিকটজনদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায় তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকেই এখনো নির্বাচনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।
ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচন সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। শুধু কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করারও শাস্তিমূলক হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। আর এ কারণে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একের পর এক বৈঠক করছেন এবং মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা যাতে উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেন সে জন্য সতর্ক বার্তা ঘোষণা করছেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তারা আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিবে না। আর যদি দলটির কোনো নেতাকর্মী স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি বহিষ্কারও করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে দলের এমন কঠোর হুঁশিয়ারি থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন তৃণমূল বিএনপি’র নেতারা। তারা মনে করছেন, যেহেতু উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না, সে কারণে উপজেলা নির্বাচন বর্জন করা উচিত হয়নি দলের। বরং এই নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থীরা দাঁড়ালে তাদের শক্তি সামর্থ্য হতে পারে।
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।