বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার ধরণ, প্রকৃতি নিয়ে চরম মিথ্যাচার এবং প্রতারণা ও জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দল এক সংবাদ সম্মেলন করেন। উল্লেখ্য যে, এই সংবাদ সম্মেলনে এভারকেয়ার হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না। সংবাদ সম্মেলনে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এবং চিকিৎসা নিয়ে কথা বলেন বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এফএম সিদ্দিকী, ডা. এ কিউ এম মহসিন, ডা. শামসুল আরেফিন, ডা. মো.নূর উদ্দিন, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. আল মামুন। উল্লেখ্য যে, এরা কেউই এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক নন। সাধারণ নিয়ম হলো যে, একটি হাসপাতালের যেই চিকিৎসকরা একজন রোগীকে চিকিৎসা দেন, সেই চিকিৎসকদেরই বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য এবং সেই চিকিৎসকরাই বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্বন্ধে সঠিকভাবে বলতে পারেন। ডা. এফএম সিদ্দিকী চিকিৎসা দেন ল্যাবএইড হাসপাতালে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালের কেউ নন তিনি কিভাবে বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিয়ে কথা বললেন? এমনকি এই চিকিৎসা নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে সেগুলো বিজ্ঞানসম্মত এবং মেডিকেল রীতিনীতির পরিপন্থী বলে একাধিক চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন। লিভার সিরোসিসের চিকিৎসার তিনটি ধাপ রয়েছে বলে চিকিৎসকরা মন্তব্য করেছেন। প্রথম ধাপ হলো ওষুধ। দ্বিতীয় ধাপ হলো তার লিভার প্রতিস্থাপন অথবা তৃতীয় ধাপ হলো স্টেম সেল। চিকিৎসকরা বলছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার যে মাত্রা, সে মাত্রায় তাকে ওষুধ দিয়েই এখন পর্যন্ত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট বা স্টেমসেল দেওয়ার মতো বাস্তব অবস্থা নাই। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য যে ‘ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (Transjugular Intrahepatic Portosystemic Shunt-TIPS)’ পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, সেই ‘TIPS’ পদ্ধতি কোনোভাবেই লিভার সিরোসিসের চিকিৎসা নয় বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। তারা বলছেন এটি হলো লিভারের রক্ত বন্ধের জন্য একটি ব্যবস্থা মাত্র। তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার এই চিকিৎসা নিয়ে এ ধরণের নাটক করা কেন হচ্ছে? এভারকেয়ার হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসকরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে এক ধরনের প্রতারণা এবং জালিয়াতি করা হচ্ছে। এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যা বলছেন, তাকে অন্য ব্যাখ্যা দিচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা, যারা মূলত রাজনীতিবিদ। এদের কারোই আধুনিক উন্নত লিভার চিকিৎসা সম্বন্ধে ন্যূনতম জ্ঞান নেই। বরং বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করে যেকোনো মূল্যে তাকে বিদেশে পাঠানোর একটি পরিকল্পনাই আস্তে আস্তে ফাঁস হয়ে যাচ্ছে।
একাধিক সূত্র বলছেন যে, লিভারের রক্তক্ষরণ ঠেকানোর জন্য যে ‘TIPS’ পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে সেই টিপস পদ্ধতিতে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কখনোই সঙ্গত নয়। কারণ এর ফলে উচ্চমাত্রার হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। অর্থাৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, পৃথিবীতে লিভার সিরোসিস আক্রান্ত রোগীদের শতকরা ৬৫ ভাগ ওষুধে সেড়ে যান। ১০ ভাগ অন্য চিকিৎসা নেন। লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত একজন মৃত্যুবরণ করবেন এমন কোন বিজ্ঞানীভিত্তিক প্রমাণও নেই। বরং দেখা যাচ্ছে যে, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। যেকোনো মুহূর্তে তিনি মারা যেতে পারেন। এরকম তথ্য দিয়ে সরকারকে একটা চাপে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে দ্রুত সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন। বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, মূল লক্ষ্য বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নয়। মূল লক্ষ্য হলো তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য একটি মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করা এবং রাজনৈতিক আবহ তৈরি করা। আর সেটি করার কাজে চিকিৎসকরা ব্যবহৃত হচ্ছেন। এটা মেডিকেল ইথিক্সের পরিপন্থী এবং সম্পূর্ণভাবে প্রতারণা। রোগী সম্বন্ধে ভুল তথ্য দেওয়া একজন চিকিৎসকের জন্য ঘৃণ্যতম অপরাধ। সেই অপরাধের কাজ করেছেন বলেও মনে করছেন অনেক চিকিৎসক।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।