ইনসাইড টক

‘সরকার জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় না নিয়ে বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিচ্ছে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১০ অগাস্ট, ২০২২


Thumbnail

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেছেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে সরকার যেসমস্ত দাবি সামনে আনছে, এই দাবিগুলোর মধ্যে কোনো যুক্তি নেই। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বেড়েছে বলে সরকারও দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু সরকার যখন এ কথা বলছে তখন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমছে। এর আগে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম যখন কম ছিল তখনও সরকার তেলের দাম কমায়নি। বরং সরকার জনগণের কাছ থেকে বেশি বেশি টাকা নিয়েছে এবং বেশি বেশি টাকা নিয়ে সরকার মুনাফাও অর্জন করেছে। সেই মুনাফার টাকা তো সরকারের হাতে আছে। যখন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়লো তখন তার সাথে সমন্বয় করলেও অনেক বেশি টাকা সরকারের হাতে ছিলো। 

সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, দেশের জ্বালানি নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য আনু মুহাম্মদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

আনু মুহাম্মদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রীর মুখে আমরা শুনি যে, সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে অনেক বেশি, সরকার আর কত ভর্তুকি দিবে? এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। এত ভর্তুকির টাকা কোথা থেকে আসবে? অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সর্বশেষ জুনে প্রকাশিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষায় দেখা যায় যে, ২০১৪-১৫ সাল থেকে ২০২১-২০২২ অর্থাৎ এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকার তেল আমদানিতে কোনো ভর্তুকি দেয়নি। বরং ২০১৪-২০১৫ থেকে এ বছর ২৩ মে পর্যন্ত সরকার মুনাফা করেছে ৪৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। এটা সরকার যে শুল্ক নেয়, কর নেয় তার অতিরিক্ত। সুতরাং এই জ্বালানি খাত থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ মুনাফা করেছে। 

তিনি বলেন, সরকার জ্বালানি খাত থেকে মুনাফা অর্জন করার পরও নানা রকম ভুল যুক্তি দিয়ে যেভাবে তেলের দাম বাড়িয়েছে এটা অযৌক্তিক। জণগণের পকেট কাটার অবস্থাও দেশের জনগণের এখন নেই। এ সময় জনগণের পকেটে টাকা- পয়সাও নাই। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনগণের উপর এক ধরনের ভয়ংকর আক্রমণ। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে যেভাবে জিনিসের দাম বাড়বে সেটা খুব ভয়াবহ হবে। 

সরকারের দাবিগুলোকে অবিশ্বাস্য উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার বলছে ভর্তুকি কথা সেটা ভুল, বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে গেছে, সেটাও ভুল, বলছে লোকসানের ভাড় বহন করতে পারছে না সেটাও ভুল। অন্যদিকে সরকারের এক মন্ত্রী বলেছেন যে, অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে জ্বালানি তেলের দাম এখনও অনেক কম, সেটাও ভুল। এখন বাংলাদেশে তেল যে দামে বিক্রি হচ্ছে, সে তুলনায় ভারত ও পাকিস্তানে অনেক কম। 

তিনি আরও বলেন, গত আট বছরে সরকার জ্বালানি খাতে ৪৮ হাজার কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে। সরকার বলছে এই টাকা দিয়ে তারা উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। কিন্তু মুনাফার সে টাকা তো যেখানে সেখানে কাজে লাগালে হবে না। সরকার জ্বালানি খাত থেকে মুনাফা অর্জন করেছে, যখন বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাচ্ছে তখন সে টাকা দিয়ে সেখানেই কাজে লাগানো সরকারের উচিত ছিলো। পৃথিবী এমন বহু দেশ আছে, বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানির দাম বাড়ে, ওই দেশগুলোতেও বাড়ে আবার যখন কমে তখন সেই দেশগুলোতেও দাম কমে। জ্বালানি তেল থেকে সরকারের মুনাফা করার কথা নয়, কিন্তু যখন করছে সেই মুনাফার টাকা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, তার কোনো হদিস নেই। সরকার ন্যূনতম দায়িত্ব ছিলো জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করার। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলে এর পরিণতি কি হবে সেটা সরকার বিবেচনা করেনি। এমনিতে গত কিছুদিন যাবৎ জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে, মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে, খাওয়া দাওয়া কমিয়ে দিচ্ছে, পুষ্টির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শতকরা ৫০ শতাংশ উচ্চ হারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি পৃথিবীর কোথাও এমন উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে না।

আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার সব সময় বলে আসছে যে, জ্বালানি খাতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে আসছে। কিন্তু যখন এটা বেরিয়ে আসলো যে, সরকার এই খাতে মুনাফা অর্জন করেছে। এই নিয়ে জনগণ যখন প্রশ্ন তুলেছে, তখন সরকার বলছে আমরা উন্নয়ন করেছি। কিন্তু এতো দিন সরকার কেন এই উন্নয়নের কথা বললো না। সরকার উন্নয়নের কথা বলছে কিন্তু বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় নিয়েও তো নানা প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে কেন বেশি ব্যয় হচ্ছে সেটা একটা প্রশ্ন। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যে কাজটি ২০ টাকা হয়, সেটা আমাদের দেশে সে কাজ করতে ৪০ টাকা ব্যয় হয় কেন? অন্যান্য দেশের তুলনায় কেন বাংলাদেশে সেতু করতে, ভবন নির্মাণ করতে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে ৩ গুণ, ৪ গুণ ব্যয় করতে হয়। উন্নয়নের নামে জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে।

বিশ্ববাজারের তেলের দাম কমলেও আমরা কেন এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় দুর্নীতি হচ্ছে এবং সরকারের ঘনিষ্টজনেরা এই দুর্নীতি, অনিয়ম, অপব্যয়গুলো করছে, এগুলোর মাধ্যমে অনেক টাকা নিজেদের পকেটে ভড়ছে, আবার অনেকে বিদেশে টাকা পাচার করছে। সেকারণ বিভিন্ন জায়গায় ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। যারা ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় বিদেশে টাকা পাচার করছে সরকার তো তাদের কাছ থেকে করও আদায় করতে পারে না। পাচার হওয়া টাকা ফেরতও আনতে পারে না। কারণ তারা সবাই সরকারের আশেপাশের লোক। ফলে এসমস্ত ঘাটতি সামাল দিতে সরকার জনগণের ওপর চাপ তৈরি করছে। 

জ্বালানি নীতি অনুসারে আমরা এখনও কেন স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারিনি তার কারণ উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার জনগণের স্বার্থ বা জাতীয় স্বার্থকে বিবেচনায় না নিয়ে দেশি-বিদেশি বিশেষ কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। যে কারণে জ্বালানি খাত নিয়ে ২০১০ সালে সরকার যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, সেটা এখনও আলোর মুখ দেখেনি। তাছাড়া সে মহাপরিকল্পনা বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ দিয়ে করা হয়নি। বাংলাদেশের জনগণকে জানানোও হয়নি। সেই মহাপরিকল্পনা করা হয়েছে জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে। সে মহাপরিকল্পনার ফলাফল হচ্ছে ঋণ নির্ভর, আমদানি নির্ভর, কয়লা এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যেটা বাংলাদেশের জন্য সহজ হতো , নিরাপদ হতো সেটা কিন্তু আমরা বিভিন্ন সময় বলে আসছি। যেমন জাতীয় সংস্থার সক্ষমতা বাড়ানো, জাতীয় জ্বালানির সার্বভৌমত্ব, শতভাগ মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে রাখা। সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধান এবং উত্তোলন বাড়ানো। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা।

তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারকে একটি মহাপরিকল্পনা দিয়েছি। যেখানে জাতীয় জ্বালানির সার্বভৌমত্ব, জাতীয় সক্ষমতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমরা দেখিয়েছি যে, বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ নির্ভর বা বিদেশি আমদানি নির্ভর জ্বালানি দেশের জন্য কতটা বিপদজনক এবং সেটা দেশের জন্য দরকারও নাই। বাংলাদেশে নিজস্ব গ্যাস ক্ষেত্র উত্তোলন নিশ্চিত করতে পারলে, পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য যে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দরকার সেটা করতে পারলে বাংলাদেশ খুবই নিরাপদ হবে। যার কারণে কোনো বন, নদী বা পরিবেশ ধ্বংস হবে না। এগুলো নিরাপদ এবং সুলভ মূল্যে পাওয়া সম্ভব হবে এবং টেকসই হবে। নিরবিচ্ছিন্নভাবেও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু সরকার সে পথে যাননি। বরং সরকার চীনকে ব্যবসা করতে দিচ্ছে, ভারতকে ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে। আমেরিকাকে ব্যবসা দিবে, রাশিয়াকে ব্যবসা দিবে। দেশের বড় বড় কিছু গোষ্ঠীকে ব্যবসা করতে দিবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ বিপদজনক। অন্যদিকে এগুলোর জন্য বিশাল ঋণের বোঝা তৈরি হচ্ছে। অন্যান্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও ঋণ নির্ভর এবং আমদারি নির্ভর। যে কারণে বাংলাদেশ আর্থিকভাবে এবং পরিবেশগতভাবে ভয়াবহ বিপদের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশে বিদ্যুতের এতো উৎস থাকার পরও দেশে লোডশেডিং দেওয়া আমাদের জন্য দুঃখজনক।

সরকার   জাতীয় স্বার্থ   জ্বালানি   দুর্নীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘আপনি দেখান, কোন জায়গায় ডিম ১৫ টাকা রাখা হচ্ছে?’

প্রকাশ: ০৪:০২ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান।

‘আমাদের বর্তমান কার্যক্রম প্রতিদিনই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। আমি মুন্সীগঞ্জে গিয়েছিলাম শনিবার, এখন আমি বগুড়ায় যাচ্ছি, তারপর যাব নীলফামারী। আমাদের আলুর যে নির্ধারিত মূল্য রয়েছে, কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে ২৭ টাকা, সেটা নিশ্চিত করা হলে, তখন ৩৫/৩৬ টাকায় আলু পাওয়া যাবে। এর জন্যতো সময়টা দিতে হবে। মন্ত্রী মহোদয় ঘোষণা করেছেন বৃহস্পতিবারে। আলুটাতো পাইপলাইনে, কোল্ডস্টোরেজে থাকে, সেখান থেকে বের হয়। আমাদের একটু কাজ করতে দিন, তারপর দেখেন।’  - বলছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান।

সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা পর্যায়ে ডিম, পেঁয়াজ এবং আলুর মূল্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই নির্ধারিত মূল্য মানছেন না পাইকারী এবং খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতারা এর কারণ হিসেবে পাইকারী বিক্রেতাদের দায়ী করছেন। যে কারণে সরকার নির্ধারিত মূল্যে এসব পণ্য বিক্রয়ের উপর মনিটরিং করছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সম্প্রতি ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের আলু ব্যবসায়ী, কোল্ডস্টোরেজ মালিকসহ পাইকারী এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের জরিমানা এবং পুলিশে দেওয়ার সংবাদও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সরকার নির্ধারিত পণ্য মূল্য নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকারের নানামুখী কার্যক্রম এবং বর্তমান অবস্থা- ইত্যাদি বিষয়ে কথা হয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান-এর সঙ্গে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন তার অধিদপ্তরের কার্যক্রম এবং বর্তমান পরিস্থিতির কথা। পাঠকদের জন্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।                  

আশা করা যাচ্ছে কি মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে? বা সরকার নির্ধারিত মূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে?- এমন প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান  বলেন, ‘ডিমটাতো হয়ে যাচ্ছে। ডিমের মূল্য ইতিমধ্যে নিরয়ন্ত্রণ হয়ে গেছে। আর পেঁয়াজ, সেটা আমি আগামী সপ্তাহে ফরিদপুর, পাবনায় যাবো। দেখা যাক কি করা যায়।’

সরকার ভারত থেকে ডিম আমদানির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে কি ডিমের মূল্য নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আপনি মনে করেন? - এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডিম আমদানির অনুমতি ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। সরকার নির্ধারিত প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা। ডিম আমদানি হলে ডিমের দাম আরও কমবে।’ 

খুচরা দোকানগুলোতে এখনও প্রতিটি ডিম ১৫ টাকা করে রাখা হচ্ছে? -এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আপনি যে এই কথাটা বললেন, এটা আপনি নিজেই প্রমাণ করতে পারবেন না। আপনি দেখান, কোন জায়গায় ডিম ১৫ টাকা রাখা হচ্ছে’- উল্টো প্রশ্ন রাখেন তিনি। এরপর এই প্রতিবেদকের লোকালিটি বা অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান। 

প্রতিবেদকের উত্তর, আমি ঢাকায়, মিরপুরের দিকে আমার বাসা। মিরপুরের অনেক দোকানে প্রতিটি ডিমের দাম এখনও ১৫ টাকা নিচ্ছে দোকানিরা। 

এরপর প্রতিবেদককে আর কথা বলার সুযোগ দেননি তিনি। থামিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি পথে আছি। আমি বগুড়ায় যাচ্ছি। পরে আপনি আমার সঙ্গে কথা বলুন। আপনাকে ধন্যবাদ।’ 

কিন্তু প্রতিবেদকের শেষ কথাটি শুনেননি তিনি। প্রতিবেদকের শেষ কথাটি ছিল, ‘হয়তো দোকানে দোকানে গিয়ে মনিটরিং করাটা সম্ভব হয়ে উঠছে না। সেক্ষেত্রে করণীয় কি বলে মনে করছেন?’ জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের অবগতির জন্য প্রতিবেদকের অব্যক্ত শেষ কথাটি মোবাইল ফোনে গ্রহণ করা সাক্ষাৎকারটির সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো।             


ডিম   পেঁয়াজ   আলু   সরকার   নির্ধারিত মূল্য   ব্যবসায়ী   ভোক্তা অধিকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি, বাংলাদেশে মানবাধিকার ধ্বংস হয়ে গেছে’

প্রকাশ: ০৪:১২ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail ‘এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি, বাংলাদেশে মানবাধিকার ধ্বংস হয়ে গেছে’

‘মানবাধিকার পরিস্থিতির ব্যত্যয় কিছু কিছু আছে- এটাতো অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। কিন্তু তাই বলে মাস স্কেলে (সাধারণ জনগণের মধ্যে) মানবাধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে- এ ধরনের কথা বলার কোনো অবকাশ নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বলতে হবে যে, এই ক্ষেত্রে (ক্ষেত্র চিহ্নিত করে) বা এই বিষয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মানবাধিকার একেবারে চরম লঙ্ঘন হয়েছে বা একটা আশঙ্কাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে- এটা বলতে হবে। আর বাংলাদেশে এমন কোনো ঘটনা ঘটে নাই বা বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি যে, বাংলাদেশে মানবাধিকার ধ্বংস হয়ে গেছে, খারাপ হয়ে গেছে- এটা বলার কোনো অবকাশ আছে। এ ধরনের কোনো ব্যাপার নাই।’ -বলছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।  

তিনি বলেন, ‘আপনি অদিলুর রহমান সাহেবের কথা বললেন, তিনি মানবাধিকার কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন, তিনি কতটুকু মানবাধিকারের জন্য কাজ করেছেন, সেটাইতো প্রথমে দেখা দরকার। আর ওনার বিরুদ্ধে যদি শাস্তির কোনো ব্যবস্থা হয়ে থাকে, তাহলে শাস্তিটার জন্য তিনি যদি মনে করেন যে, এটি ঠিক হয়নি, তাহলে-তো অপিলে যেতে পারেন। আইনের সুনির্দিষ্ট ধারায় তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন, তিনি আপিল করতে পারেন। তিনি যদি মনে করেন, ঠিক হয়নি, তাহলে অপ্রমাণিত করার জন্য প্রচেষ্টা নিতে পারেন। আমি যেটা দেখি যে, উনার বিরুদ্ধে যে সমস্ত কথাগুলো বলা হয়েছে, উনিতো সেটা মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেন নাই। কারণ তিনি-তো কিছু কিছু তথ্য দিয়েছেন, সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই এবং সেগুলো আমাদের দেশ সম্পর্কে যেমন একটা খারাপ চিত্র তুলে ধরে, একই সাথে আমাদের ধর্মীয় ক্ষেত্রে একটা উস্কানিমূলক ব্যবস্থার সৃষ্টি করে, যা কখনোই উচিত নয়। কারণ আমরা শান্তিপূর্ণ একটি ধর্মীয় ব্যবস্থায় এই দেশে আছি। এখানে যদি কেউ, সব সময় ধর্মীয় বা ইত্যাদি পার্টি করে থাকে, তাদেরকে যদি এ ধরনের কথা বলা হয় তাদের জানার জন্য, তাহলে-তো এটা অনেকটা উস্কানিমূলক হয় এবং দেশে ধর্ম ব্যবস্থায় একটা অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। এটা আমরা কখনোই কামনা করি না এবং বাইরের দেশুগুলোও সে ধরনের ইম্প্রেশন দিতে পারে- এটাও সঠিক নয়। এতে করে আমাদের সম্মানহানি হয়।’        

সম্প্রতি ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ‘অধিকার’ নামক একটি মানবাধিকার বিষয়ক এনজিও সংস্থার সম্পাদক আদিলুর রহমানের বিরুদ্ধে দুই বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। ২০১৩ সালের ৫ই মে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ও তাণ্ডব নিয়ে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে পরিচিত ‘অধিকার’র সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও সংস্থাটির পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর পরই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এছাড়াও বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের দায়ের করা মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসব বিষয় নিয়েই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এসব বিষয় নিয়েই কথা হয় বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ-এর সাথে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রকৃত মানবাধিকার পরিস্থিতির কথা। পাঠকদের জন্য বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন আহমেদ- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।  

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন,‘আমরা নিজেদের মধ্যে আমদের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে বলতে পারি। কিন্তু বাইরের মানুষের কাছে এমন ধরনের কোনো ধারণা দেওয়া উচিৎ নয় যে, যেটা সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করার মতো কোনো অবস্থান নেই। সেজন্য আমি বলব, এ ধরনের কোনো কথা দাঁড়ায় না। উনার (আদিলুর রহমান) যদি কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে তিনি উচ্চ আদালতে যেতেই পারেন। উচ্চ আদালতে তার সঠিক বিচার চাইতেই পারেন।’

‘আদিলুর রহমানের বিচারের রায় এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার- এই দুই বিষয়ের উপরই কি বাংলাদেশের মানবাধিকারের সকল বিষয় নির্ভর করে?’ -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একদমই না। এগুলোর উপর কেন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নির্ভর করবে। এগুলো হলো, কতগুলোর ব্যক্তির উপর, কতগুলো ঘটনা, যেখানে তারা কেউ কেউ এমন কিছু কথা বলেছেন, যেটা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং সেগুলো মামলা হিসেবে গিয়েছে এবং সেগুলো তাদেরকে প্রমাণ করার জন্য বলা হয়েছে, তারা-তো সেটা প্রমাণ করতে পারেননি। আরেকটা কথা যেটা বললেন, যিনি বিশ্বে বিভিন্ন স্থানে পরিচিতি লাভ করেছেন, তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, সম্মানিত অবস্থানে গিয়েছেন। কিন্তু যে কোনো কেউ, তিনি যাই করুন না কেন, কেউই আইনের উপরে নয়। সুতরাং আইনের সেই সুনির্দিষ্ট অবস্থানে গিয়ে তিনি প্রমাণ করুন যে, তিনি অন্যায় করেননি। আর যদি অন্যায় না করে থাকেন, তাহলে উনার কোনো ক্ষতি হবে না, উনার অপরাধ হওয়ার কোনো কারণ নেই। সেটা প্রমাণ করার সুস্পষ্ট অবস্থান আছে, সুবিধা আছে। আর যদি প্রমাণ না করেন, তাহলে কেউই-তো বিচারিক অবস্থার বাইরে নয়। আজকে আমি যদি অন্যায় করি, আমার যেমন বিচার হবে, আমার চেয়ে উপরে যিনি আছেন, অনেক উপরে, তারও তাইই হবে। কেউ যদি অন্যায় করে থাকেন, তাহলে-তো তিনি বলতে পারেন না, আমি বিখ্যাত ভালো মানুষ, আমাকে কেন ধরা হলো?- এগুলোর উপরে আমাদের দেশের মানবাধিকার শেষ হয়ে গেছে, খারাপ হয়ে গেছে- এগুলো বলার কোনো অবকাশই নেই।’

‘আপনি কি মনে করেন, সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির অপরাধের দায়, সেটা আসলে মানবাধিকারের আওতায় পড়ে না?’- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকারটা আসলে কি? মানবাধিকার হলো মানুষের অধিকার। মানষের অধিকার হলো ন্যায়ানুগ অধিকার। ইউনিভার্সেল ডিক্লিয়ারেশন অব হিউম্যান রাইটস-এ সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আমাদের সংবিধানেও ২৭ থেকে ৪৪ নম্বর অনুচ্ছেদ পর্যন্ত স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কোনগুলো মানবাধিকার এবং এগুলো প্রত্যেকটি আপনি দেখুন। এগুলো হলো ন্যায়ানুগ প্রাপ্তির অধিকার। মানুষের যেটা চাহিদা যেটা ন্যায়ানুগ, সেটা অধিকার। কারো অন্যায় বিষয়টাতো অধিকার নয়। বিষয়টি অনেক স্পষ্ট, আপনি সংবিধানের অনুচ্ছেদের সাথে মিলিয়ে দেখুন, এগুলো সংবিধানের সাথে যাচ্ছে না। যদি না যায়, তাহলে উনারা চাইলেই সেগুলোকে অধিকার হিসেবে বলতে পারেন না। বরং একটা অন্যায় করে সেগুলো চাপিয়ে দেওয়ার মতো একটা প্রচেষ্টা, সেটাতো সঠিক নয়।’


ধর্মীয় ক্ষেত্র   উস্কানিমূলক   ব্যবস্থা   সৃষ্টি   আদিলুর রহমান   ড. মুহাম্মদ ইউনূস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘সহজেই বোঝা যাচ্ছে আগামী নির্বাচনে তাদের কি ভূমিকা হবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

‘প্রথমত পরিষ্কার ভাষায় বলা যায়, এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এ ধরনের ঘটনা কেন হলো, এটা খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরী। জরুরী কি কারণে? যদি আমরা প্রকৃতপক্ষে তাদের পদ অনুযায়ী, তাদের দায়িত্ব পালন করবে বিবেচনা করি, তাহলে এটা কেন ঘটছে- এটা খুঁজে বের করতে হবে এবং এগুলো বন্ধ করতে হবে। খুব সহজে বললে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে যারা এখন ক্ষমতায় আছে এবং অতীতেও ছিল, কিন্তু অতীত থেকে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে, এই কারণে তারা দীর্ঘ দিন ধরে দলীয় স্বার্থে তাদেরকে ব্যবহার করেছে। এইখানে অনেক সময় যোগ্যতার থেকে ব্যক্তিগত যোগাযোগ, দলীয় যোগাযোগ, পছন্দ-অপছন্দ এগুলো গুরুত্ব পেয়েছে এবং এখনও আমরা দেখতে পাই, যদি দলীয় যোগাযোগ ভালো না থাকে, ব্যক্তি যোগাযোগ ভালো না থাকলে যোগ্যতা থাকলেও অনেকের প্রমোশন হয় না।’- বলছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।  

‘যোগ্যতা থাকলেও, এই যে বললাম, দলীয় স্বার্থ বা গোষ্ঠী স্বার্থ বা ব্যক্তি স্বার্থ অথবা যদি যোগাযোগ রক্ষা না করে, তাহলে অনেকে তাদের চাকরি জীবনে তার যে আগ্রগতি বা উন্নতিও তারা ঘটাতে পারে না। আজকে তারা ওই কারণেও এমন হয়েছে, আবার অনেকে মনে করেন, আমি যদি আজকে এ ধরনের দলীয় তাবেদারিটা দেখাই, তাহলে আমার ভবিষ্যৎ আরও উন্নতির দিকে যাবে, আরও উজ্জল হবে। অর্থাৎ আমরা এ ধরনের আমলা, যেহেতু আমাদের কাঠামোতে আছে, তা-তো আমরা অস্বীকার করতে পারবো না। তারা সকল দল-মতের উর্ধ্বে থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে এবং তাদের প্রমোশন, ডিমোশন সবকিছুই হবে নিয়ম-নীতির উপর ভিত্তি করে। সে রকম নিয়ম-নীতি অবশ্যই আমরা তৈরি করব, রাজনৈতিক অঙ্গন এবং তারা তৈরি করবে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনাগুলো না ঘটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যা হচ্ছে, তার জন্যই আজকে তার অনীবার্য পরিণতি এটা। সমাজে যদি এটি বেড়ে যায়, তাহলে কোনো নীতি-নৈতিকতার বালাই থাকে না, আইনের শাসনতো দূরে কথা, বরঞ্চ দুঃশাসনের হাতিয়ারেই তারা পরিণত হয়। এগুলো দ্রুত বন্ধ করতে গেলে, একটা দুইটা ব্যক্তি কি করছে- সেটা চিন্তা করলেও চলবে না, পুরো সিস্টেমের পরিবর্তনের জন্যই ভূমিকা নিতে হবে। ক্ষমতাসীনদের অবশ্যই এদেরকে দলীয় কাজে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।’- যোগ করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স।             

‘সরকারি আমলাদের রাজনৈতিক দলের জন্য ভোট চাওয়া কতটুকু গ্রহণযোগ্য বলে আপনি মনে করেন?’- এমন প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। 

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সরকারের বিভিন্ন আমলা, বিশেষ করে একজন সচিব, একজন ডিসি এবং একজন ওসি বিভিন্ন সভায় সরাসরি প্রকাশ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে নৌকার জন্য ভোট চেয়েছেন, এ ঘটনা বিভিন্ন গগণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত/সমালোচিত হয়েছে। সরকারি এসব আমলাদের বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, ট্রলও হয়েছে। এসব বিষয় নিয়েই কথা হয় বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স- এর সাথে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন এ ধরনের বিষয়গুলো কেন ঘটছে, সরকারের প্রসাশনে দলীকরণ, রাজনীতিকরণ এবং এই অবস্থা থেকে উত্তরণ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়। পাঠকদের জন্য বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।

জনসম্মুখে সরকারি আমলাদের এ ধরনের বক্তব্যে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে বলে আপনি মনে করেন? -এমন প্রশ্নে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘অবশ্যই। এখানে আমি প্রথমত দুইটা বিষয় দেখি। একজন আমলা এটা বলা মানেই, সহজেই বোঝা যাচ্ছে আগামী নির্বাচনে তাদের কি ভূমিকা হবে। কোনো নিরপেক্ষ ভূমিকা তাদের থাকবে না। তার মানে আমরা যে লড়াই, সংগ্রাম করছি এবং যে কথাগুলো বলছি যে, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে ভালো নির্বাচন হতে পারে না, এই আমলাদের কথা দিয়ে সেটা আবারও প্রমাণিত হচ্ছে এবং একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হওয়া দরকার, আমাদের এই কথা যে সঠিক; সেটা প্রমাণ করছে। তার থেকে সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই রকম এক/দুই জন আমলা, এটা বলার মধ্য দিয়ে আরও অনেক আমলাকে যে সিগন্যালগুলো দিচ্ছে, ক্ষমতায় যে আছে তার পক্ষ তোমাদের অবলম্বন করতে হবে; যেটা আমাদের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে খুবই ক্ষতিকর হবে বলেই আমি মনে করি।’

‘এই সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কী বলে আপনি মনে করেন?’- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যারা শাসকগোষ্ঠী আছে। তারাই এটি তৈরি করেছে এবং তারা এইগুলোকে এইভাবেই তৈরি করে রাখবে। কারণ তারা জনগণের কল্যাণটাকে প্রধান দেখে না, তারা মনে করে ক্ষমতার খুঁটি যারা, এই সামরকি, বেসামরিক আমলা- তারাই হচ্ছে ক্ষমতার খুঁটি। বিদেশের আধিপত্য, শক্তি হলো ক্ষমতার খুঁটি। সতুরাং এটা তারা ভাঙবে না। ভাঙতে গেলে একটি নীতি নিষ্ঠ রাজনৈতিক শক্তির বিকল্প হতে হবে, যে বিকল্প শক্তি ক্ষমতায় এসে পুরো ব্যবস্থাটাকে বদল করবে। এ ছাড়া আমি এর থেকে পরিত্রাণের আর কোনো পথ দেখি না।’


বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি   সাধারণ সম্পাদক   রুহিন হোসেন প্রিন্স  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘এডিসি হারুনের ঘটনাটি তার ব্যক্তিগত বিচ্যুতি, পুলিশের নয়’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

গত শনিবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠেছে রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ এর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে রমনা বিভাগ থেকে বদলি হওয়া অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ ঝাড়ছেন সংগঠনটির বর্তমান ও সাবেক নেতারা। পাশাপাশি কোন কোন মহল বলছে যে, পুলিশের ওপর সরকারের অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতার জন্যই এডিসি হারুন এমন দুঃসাহস দেখিয়েছেন। এ নিয়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদার সাথে একান্ত কথা হয় বাংলা ইনসাইডারের। পাঠকদের জন্য চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেছেন, ‘এডিসি হারুন যেটি করেছে সেটি তার নিজের দোষ। এর সাথে পুলিশ বাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্ট নেই। পুলিশ এডিসি হারুনের বিষয়টি নিয়ে কোনো ভাবে দায়বদ্ধ নয়। সে তিনি যেটি করেছেন সেটি তার ব্যক্তির বিচ্যুতি। এটার সাথে আমি সরকারের কোনো সম্পর্ক দেখি না। পুলিশের ওপর সরকারের নির্ভরশীলতার প্রসঙ্গটি এখানে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক এবং অযৌক্তিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘এডিসি হারুন যেটি করেছেন সেটি একটি ফৌজদারি অপরাধের মতোই দেখায়। এখন বিষয়টি নির্ভর করছে ভিকটিম এর ওপর। এ ব্যাপারে ভিকটিমকে অ্যাকশন নিতে হবে।’


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বাইডেনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্ক কখনোই খারাপ ছিল না’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন বলেছেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া থেকে এক মাত্র যে জি-২০ শীর্ষ সন্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে। সুতরাং অবশ্যই ভূরাজনীতিতে এটি একটা আলাদা গুরুত্ব বহন করে। যদিও জি-২০ সন্মেলনে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো বেশি করে আলোচনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ তো এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করেছে। এছাড়া জি-২০ সন্মেলনে সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ছিল, অন্যান্য দেশগুলোও ছিল সেটা তো অবশ্যই আমাদের কূটনীতির জন্য একটা বড় সুযোগ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ পশ্চিমা যে দেশগুলো আছে সেখানে আমাদের একটা বড় মার্কেট রয়েছে। সুতরাং জি-২০ সন্মেলনে বাংলাদেশের উপস্থিতি একটা বড় সুযোগ। কারণ সেখানে রাষ্ট্রপ্রধান বা বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বাংলাদেশ সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আলাদা একটি গুরুত্ব পেয়েছে। 

সদ্য সমাপ্ত জি-২০ শীর্ষ সন্মেলন শেষে ঢাকায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জি-২০ শীর্ষ সন্মেলনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ। 

তিনি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেলফি নিয়ে অনেক ধরনের কথা হচ্ছে। কিন্তু রাস্তবতা হলো পররাষ্ট্র নীতি একটা সেলফির ওপর নির্ভর করে হয় না। বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেলফি একটা সৌজন্যের ব্যাপার মাত্র। এটা খুব ভালো বিষয়। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো বাইডেনের সাথে তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্ক কখনো খারাপ ছিল না। জো বাইডেন এবং প্রধানমন্ত্রী উনারা দু’দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, সেখানে এক ফাঁকে তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। 

ড. আমেনা মহসিন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু ইস্যুতে টানাপোড়েন আছে এটা ঠিক। কিন্তু তাই বলে একটা ছবি দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নির্ধারণের মাপ কাঠি হতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। দু’একটা ইস্যুতে টানাপোড়েন মানে দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ সেটা কখনোই সঠিক নয়। বাইডেনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেলফি এটা নিসন্দেহে ভালো ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে একটি ছবি দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক কিছু গড়ে দেবে তেমনটিও নয়।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এর ঢাকা সফর প্রসঙ্গে অধ্যাপক মহসিন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের একটা বড় বাজার রয়েছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস মার্কেট। সুতরাং ম্যাক্রোঁর সফর আমার মনে হয় একটা বড় সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে। বাংলাদেশ যে ভিজিবিলিটি পাচ্ছে সেটা তো অনেক বড় ব্যাপার। ভিজিবিলিটি না পেলে তারাই বা আসবেন কেন কিংবা জি-২০ শীর্ষ সন্মেলনে আমন্ত্রণ জানাবে কেন। বাংলাদেশ তাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে বলেই তো তারা বাংলাদেশে আসছে এবং বাংলাদেশ জি-২০ শীর্ষ সন্মেলনে আমন্ত্রণ পাচ্ছে। এটা একটা বড় অর্জন।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন