ইনসাইড টক

‘বায়ু দূষণে প্রথম হয়েছি, এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়’

প্রকাশ: ০৪:০৩ পিএম, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

“ঢাকা তো প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় অবস্থানেই থাকে। বায়ু দূষণে আমরা প্রথম হয়েছি, এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এর ফলে আমরা তো শেষ হয়ে যাচ্ছিই, পরবর্তী প্রজন্ম, বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধরা একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ হিসেবে এটি ঠিক আছে। এর ফলে মানুষের গড় আয়ু কমে যাচ্ছে, পাশাপাশি একটা বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, আমাদের অর্থ ব্যয় বাড়ছে। রাস্তায় বের হলে যে পরিমাণ কাপড়-চোপড় ধুতে হয়, ঘর-বাড়ি পরিষ্কার করতে হয়, টেবিলের ওপর আজকে পরিষ্কার করলে, কালকেই দেখবেন আবার ধুলো জমে আছে। এর ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বেশি শ্রম দিতে হয়। ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক ব্যয় বৃদ্ধি হয়। এটি আমরা গবেষণা করে দেখেছি, গড়ে মাসিক ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা ব্যয় বেড়ে যায় এই সময়ে, যখন বায়ু দূষণ বেড়ে যায়।“ - বলছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান।

বর্তমান সময়ে রাজধানী ঢাকা বায়ু দূষণে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে এবং বিগত কয়েকদিন থেকেই বায়ু দূষণে শীর্ষ অবস্থানে ঢাকা। বায়ু দূষণে রাজধানী ঢাকার সমসাময়িক অবস্থান, এর কারণ এবং প্রতিকার- এসব বিষয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান। পাঠকদের জন্য প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক আল মাসুদ নয়ন।

প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও আর্থিক ব্যয় বৃদ্ধি হয়। গড় আয়ু কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগও বেড়ে যায়। ফলে স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও আর্থিক ব্যয় বেড়ে যায়। এছাড়াও আমাদের স্থাপনাগুলো নষ্ট হচ্ছে। পথচারী পারাপারের জন্য যে ফুটওভার ব্রিজগুলো রয়েছে, সেখানে ধুলা পড়ে জং ধরে যায়। যেখানে ধূলা পড়ে থাকে, ওরাতো ঠিকমতো পরিষ্কার করে না। এর ফরে বিল্ডিং থেকে শুরু করে সমস্ত স্থাপনার আয়ুষ্কাল কমে যায়। এটাও একটা বিরাট অর্থনৈতিক প্রভাব।    

বায়ু দূষণের কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, প্রথমত ভ্রান্ত রিপোর্ট, যেটা পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, দ্বিতীয়ত আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম, তৃতীয়ত সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসার বিভিন্ন কার্যক্রম। এই যে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি সমীক্ষা, এটি হয়েছে আজ থেকে সাত-আট বছর আগে। সে সময়ে সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বায়ু দূষণের এক নম্বর কারণ হচ্ছে ইটভাটা, দুই নম্বর হচ্ছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং তিন নম্বর হচ্ছে যানবাহনের দূষণ। ওই সমীক্ষা দিয়েই অনেকে চালিয়ে দিতে চান, কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বর্তমানে গত পাঁচ বছরে ঢাকা শহরে যে সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হচ্ছে, তা হলো এক, দুই নম্বর হলো ইটভাটা, কারণ অনেকগুলো ইটভাটা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে অথবা তারা উন্নত প্রযুক্তিতে গিয়েছে। ঢাকা শহরের আশে-পাশে এখন আর তেমন ইটভাটা নেই। তার মানে হচ্ছে, ইটভাটা দুই নম্বরে চলে এসেছে, এখন আর এক নম্বরে নাই।

তিনি বলেন, এখন এক নম্বরে চলে এসেছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। গত পাঁচ বছরে সিটি করপোরেশন, ওয়াসার অনেকগুলো প্রকল্প হয়েছে। ওরা পুরো শহর কেটেকুটে তছনছ করে রাখছে। এখনও তাই চলছে। দুই নম্বরে চলে এসেছে যানবাহন, আমাদের যানবাহন, বিশেষ করে কাভার্ড ভ্যান প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে। শুধু যে ব্যক্তিগত গাড়ি বাড়ছে তা নয়, কাভার্ড ভ্যানও প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে। এখন ঢাকা শহরে দিন রাতে সব সময় যানবাহন চলছে। এসব যানবাহনগুলো ডিজেল চালিত। এসব ডিজেলের ধুয়ার কারণেও বায়ু দূষণ বাড়ছে। এখন শোনা যাচ্ছে আরও নিম্নমানের ডিজেল ব্যবহারের জন্য আমদানি করা হবে। এছাড়াও যানবাহনগুলো পুরাতন হচ্ছে। এরপর আমরা দেখছি ওয়াসা এবং সিটি করপোরেশন, মাসের পর মাস রাস্তা কেটে রাখে, সেখানে প্রচুর ধুলা উৎপাদন হয়। এর পর হচ্ছে কন্সট্রাকশন, নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন। সিটি করপোরেশন-ওয়াসাসহ অন্যান্য সেবা সংস্থাসমূহ প্রচুর খোড়াখুড়ি করে। এছাড়াও শীতকালে আমরা বিভিন্ন জিনিস পুরাই, যেমন খর-কুটো, লতা-পাতা- এগুলো থেকেও বায়ু দূষণ হচ্ছে। তবে সারা বাংলাদেশের বায়ু দূষণের জন্য ইটভাটা এক নম্বর কারণ। 

বায়ু দূষণ থেকে প্রতিকারে জন্য কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে? -এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, আমরা প্রত্যেকে যদি নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করি। আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো যারা চালাচ্ছেন, তারা যদি বিদেশে এ কাজগুলো করতেন, তাহলে পরিবেশ বাদ দিয়ে কাজ করতে পারতেন না। অথচ এখানে কিন্তু তারা কিছু করছেন না। মূল বিষয় হচ্ছে লাভ, কত লাভ উঠিয়ে নেয়া যাবে? যত আমি লাভ উঠিয়ে নিতে পারবো, ততো কর্তৃপক্ষ আমার ওপর খুশি হবে। এদের প্রত্যেকের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে। বলা আছে, এ ধরনের প্রকল্প করতে হলে তাদের পরিবেশ রক্ষায় কি কি ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই ব্যবস্থাগুলো তারা নিচ্ছেন না। প্রকল্প পরিচালকও নিচ্ছেন না, আবার যারা মনিটর করবেন, পরিবেশ অদিদপ্তর, তারাও মনিটর করছেন না। আইন আছে কিন্তু আইনের কঠোর প্রয়োগ নেই। সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনেরও কঠোর প্রয়োগ থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ওয়াসা এবং সিটি করপোরেশনকে যেটুকু কাজ তারা করবেন, সেটুকু আগে করতে হবে। তা না করে পুরো এলাকা কেটে ৬ মাস ফেলে রাখবে। অথচ যদি সেগমেন্ট ওয়াইজ কাজ করা হয়, একটা একটা করে রাস্তা করেন, তাহলে আর পুরো এলাকাটা দূষিত হয় না। অংশবিশেষ এলাকা দূষিত হবে। কর্তা ব্যক্তিরা, তারা সবাই এ বিষয়গুলো জানেন, বুঝেন কিন্তু কেন করেন না? এদেরকে এটা করতে বাধ্য করতে হবে। আমাদের যেমন আইনের প্রয়োগ নেই এবং আমাদের নাগরিকরাও অনেক দুর্বল। আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে। যানবাহনের ক্ষেত্রে উন্নতমানের জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে। এসব বিষয়ে সচেতনতা যেমন বৃদ্ধি করা দরকার, সেভাবে  আইনও প্রয়োগ করা দরকার।

তিনি বলেন, মূল কথা হচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে, ওয়াসা, সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের যে আইনসিদ্ধ বিষয় রয়েছে সংগত কারণে সেগুলো পালন করা এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ করা। পাশাপাশি জনগনকে সচেতন করা এবং যারা এসব প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদেরকেও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা দরকার। 


বায়ু দূষণ   বাংলাদেশ   ঢাকা   পরিবেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘আমাদের সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতা ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর একই ক্ষমতা’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ২২ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, কোনো দেশ অন্য আরেকটি দেশের শাসন ব্যবস্থা বা সাংবিধানিক ক্ষমতা নিয়ে কথা বলতে পারে না, অধিকার নেই। সে হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলা আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপের সামিল।

সদ্য প্রকাশিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ এসব কথা বলেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের সরকার ব্যবস্থা আছে। যেমন যুক্তরাজ্যে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থা। আমাদের হল সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা। এভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিজস্ব ইতিহাস, ঐহিত্য, ভাষা ইত্যাদির আলোকে একটা শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠে। সে জায়গায় আমাদের সংসদীয় ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে এবং আমাদের সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতা ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর একই ক্ষমতা। আমাদের এখানে অতিরিক্ত কিছুই নেই। 

তিনি বলেন, আমরা যেহেতু ব্রিটিশ সংসদীয় ব্যবস্থা অনুসরণ করি সেহেতু আমাদের সংসদীয় ব্যবস্থায় তো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা থাকবেই। ব্রিটেনে এটাকে 'প্রাইম মিনিস্ট্রি সিস্টেম' বলা হয়। অর্থাৎ প্রাইম সিনিস্টারকে কেন্দ্র করে সরকার আবর্তিত হয়। বিট্রিশ কলোনীর শাসন ব্যবস্থার ধারাবাহিক হিসেবে বা ঐতিহ্য হিসেবে আমরা সেটাই অনুসরণ করি। সুতরাং আপনি এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ বা নৈতিক অধিকার নেই। 

বিশিষ্ট এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, কূটনীতির সম্পর্কের জায়গায় অন্য একটি দেশ আমাদের কোনো ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের মতামত দিতে পারে কিন্তু আমাদের শাসনতন্ত্র নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখে না। শাসনতন্ত্র কি ভাবে চলবে সেটি ঠিক করবে এদেশের জনগণ। আমাদের শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, লাখো শহীদের রক্তে। কাজেই এই শাসন ব্যবস্থা নিয়ে কারো কথা বলার অধিকার নেই। এটা নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখে এদেশের জনগণ। তারাই সিদ্ধান্ত নিবে দেশে কি ধরনের শাসনতন্ত্র কায়েম হবে। কার ক্ষমতা কি হবে ইত্যাদি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ব্যাপক জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চান তারা’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ।

‘শেরাটন হোটেলের লিফটের ১৪ তলায় ওপেন টু দ্য স্কাই একটি জায়গা, ছাদের ওপর। সেখানে দেখলাম একটি মঞ্চ সংস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি- লেখা আছে। মঞ্চের ওপরে দাঁড়িয়ে আছেন কমরেড ফরহাদ মজহার, উন্নয়ন বিকল্প নীতিনির্ধারনী গবেষণার কর্ণধার এবং আমাদের সতীর্ত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের কৃতি ছাত্র শওকত মাহমুদ। স্বাগত বক্তব্য রেখেছেন কমরেড ফরহাদ মজহার। সেখানে শওকত মাহমুদ একটি ইশতেহার পাঠ করেন- অর্থাৎ একটি প্রস্তাবনা জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির প্রস্তাবনা। সেখানে ড. ফারহাদ নামের একজন নারী সেখানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেছেন। তারপর সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়েছে।’  - বলছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এবং জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ।        

গত ১৬ই মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর বনানীতে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে লেখক ও কবি ফরহাদ মজহার ও সাংবাদিক শওকত মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির (ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস) নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন বিরোধী দলের একাধিক রাজনৈতিক নেতা। সেখানে অতিথি হয়ে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এবং জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ)- এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। সেখানে কি হলো? -  এ নিয়ে কথা হয়েছে প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ- এর সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি জানিয়েছেন ওই নৈশভোজে  ‘আলোচনার বিষয়বস্তু ’ কি ছিল। পাঠকদের জন্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।

প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, ‘সেখানে ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের ড. রেজা কিবরিয়া, মাহমুদুর রহমান মান্না, লে. জেনারেল (অব.) সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ। আমি দ্বিতীয় সাড়িতে বসেছি। প্রায়  শ’ খানেক লোক ছিলেন। পেছনে কিছু চেয়ার খালিও ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন বাঙালি নারী নাগরিক- তিনিও উপস্থিত ছিলেন, নাম সীমা। আমাদের এনবিআর- এর সাবেক চেয়ারম্যান মজিদ মহোদয় সেখানে ছিলেন। সেখানে ইশতেহারে যে বিষয়টি লক্ষণীয় সেটি হচ্ছে, তারা উপসংহারে বলেছেন যে, যথাসম্ভব একটি বৃহত্তর ঐক্যের ভিত্তিতে যৌথ কিংবা একটি যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ব্যাপক জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চান তারা।’

তিনি বলেন, তারা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে চান। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হবে নতুন গঠনতন্ত্র বা শাষনতন্ত্র প্রণয়নের সভা আহবান করা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাংলাদেশেকে নতুনভাবে একটি শাষনতন্ত্র উপহার দেওয়া। স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন এবং নির্বাচনের সময় সকল নির্বাহী ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়ে আসা। নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের পরপরই অন্তর্বর্তী নতুন সরকার এবং নতুন গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে নতুন জাতীয় নির্বাচন হবে। নতুনভাবে বাংলাদেশ গঠনের এটাই সঠিক পথ বলে তারা মনে করেন। 

প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, ওখানে আমি অনেককেই দেখেছি- যারা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত, যারা আয়োজক তাদের মতে, ১৯১৩ সালে তারা এই কমিটি গঠন করেছেন। নতুন করে তারা পুনরুজ্জীবিত করলেন এই কমিটি। এছাড়া ল্যাংলে-তে কাজ করেন বলে একজন পরিচয় দেন, অর্থাৎ আমেরিকাতে সিআইএ হেডকোয়ার্টারে তিনি কাজ করেন, নাম মাসুদ করিম। অনেক দিন থেকেই এই অঞ্চলে তাকে দেখা যায়, কখনও ব্যাংককে কখনও কাডমান্ডুতে, কখনও কলোম্বতে এবং দুবাইয়ে এসব জায়গায়- তিনি বাংলাদেশি আমেরিকান, তার এলাকা সিলেটে। আমাদের দেশের প্রথিতযশা অ্যাক্টিভিস্ট যারা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় তিনি বৈঠকে মিলিত হন। যাদের সঙ্গে তিনি (মাসুদ করিম) বৈঠকে মিলিত হয়েছেন, তাদের অনেকেই ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একাধিক ব্যক্তি, যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় উপস্থাপক- তারা তাকে বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করেছেন। 

তিনি বলেন, ফলে তাকে জড়িয়ে একটা রহস্য, একটা ধোঁয়াশা ওয়াকিবহাল মহলের মধ্যে আছে। এই আয়োজনটার টাকা কোত্থেকে এসেছে- এটা নিয়েও অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা করেছেন। প্রায় ১২ লক্ষ্য টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এই টাকা কোত্থেকে এসেছে সেটাতো কেউ বলেন নাই। তবে এইটা বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা হয়তো সহায়তা করেছেন।

তিনি বলেন, তারা একটি অন্তর্বর্তী সরকার চাচ্ছে- যে নতুন সরকার আসবে এবং একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে। একটা লম্বা সময় ধরে এই সরকার শাষনতন্ত্র প্রণয়ন অ্যাসেম্বলি করবে, এই প্রক্রিয়াটা তারা করবে। তারা দাবি করেছেন, ২০১৩ সাল থেকে তারা কাজ করছেন- এটা নিয়ে। তবে আমি মনে করি এটা বিএনপির উদ্যোগের কোনো আয়োজন না। কারণ সেখানে বিএনপির কোনো লোককে দেখা যায়নি। বিএনপির  অনেকেই আমন্ত্রিত হয়ে সেখানে আসেননি।          


প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ   সাক্ষাৎকার   জানিপপ   শেরাটন হোটেল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘হুমায়ুন ফরীদি বড় অভিনেতা হওয়ার পরেও তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে কম’

প্রকাশ: ০৩:৫৯ পিএম, ১৭ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

ভার্সেটাইল অভিনেতা আফরান নিশো। বিভিন্ন সময় তাকে দর্শক বিচিত্র সব চরিত্রে দেখেছেন। ছোটপর্দায় ব্যাপক জনপ্রিয় এই অভিনেতা। তার নাটক মানেই ইউটিউবে মিলিয়ন মিলয়ন ভিউ।নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতেও বেশ সরব হয়েছেন এই অভিনেতা। তাঁর ভক্তদের দীর্ঘদিনের দাবি, তাকে বড়পর্দায় দেখা। অবশেষে সিনেমায় নাম লিখালেন তিনি। সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের  সাথে কথা হয় হালের আলোচিত এই অভিনেতার।

বাংলা ইনসাইডার: আপনার ওজন দেখেই মনে বেশ কমিয়েছেন। ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার জন্যই কি ওজন কমানো? 

নিশো: এই সিনেমার জন্য ওজন কমিয়েছি ব্যাপারটা তা না। আমার নিজের জন্যই আমি ওজন কমিয়েছি। আসলে ওজন বাড়ানো সহজ কমানো কঠিন। আমার ৯১ কেজি থেকে এখন ৭৮ কেজিতে নিয়ে এসেছি। মোটামুটি ১৩ কেজির মত ওজন কমিয়েছিল। যেটা নিজের জন্য দরকার ছিল,পাশাপাশি  সিনেমার ক্যারেক্টারের সঙ্গে অনেকটা সেটা যায়। 

বাংলা ইনসাইডার: লম্বা ক্যারিয়ারে এতোদিন পর কেন মনে হল ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমাটাই করি?

নিশো: প্রত্যেক গল্পে নিজস্ব বিউটি থাকে। এই গল্পে নিশ্চয়ই ভালো লাগা আছে বলে আমাকে কানেক্ট করেছে। টিমে যারা আছে সবার কাছে প্রশ্ন ছিল গল্পটা কী ভাবিয়েছে নাকি কাজ করতে হয় তাই করছো? প্রত্যেকে সন্তোষজনকভাবে উত্তর দিয়েছে। তাই মনে হচ্ছে দর্শকরাও কানেক্ট করবেন। আমি সবসময় কাজে সততা রেখেছি। প্রতিটি কাজের আগে নার্ভাস হই, চ্যালেঞ্জ লাগে। যেহেতু এটা সিনেমা তাই যেমন বেশি অ্যাফোর্ড থাকবে তেমনভাবে রিল্যাক্স পাবো। সিনেমার জায়গাটা এখন চেঞ্জ হয়েছে। আমার পূর্বে যারা কাজ করেছেন তাদের সারাবছর ফিল্মে ব্যস্ততা দেখিনি। আমি আগে ফিল্মে আসার সৎ সাহসটা পাইনি। কিন্তু এখন ফিল্মে অনেক কিছু দেখে ‘জাস্ট ওয়াও ফ্যাক্ট’ কাজ করে। মনে হয়েছে এখন সিনেমা করা যায়। কেন ২০ বছর সিনেমা করিনি এটা আমার জন্য কোনো প্রেসার না। একটি সিনেমা করে দেখি কেমন লাগে এমন ভাবনা আমার কোনোদিনই ছিল না। পেশাদারভাবে এই সেক্টরে কাজ করতে পারবো কিনা সেটা সবসময় দেখেছি। এখন মনে হয়েছে একেবারে সঠিক সময়। একজন অভিনেতাকে পেশাদারিত্ব রাখতে গেলে বছরে কমপক্ষে দুই তিনটি সিনেমা করা লাগে। কারণ এটাই রুটি রুজি। আগে আমি পেশাদারভাবে আসতে পারছিলাম না বলে নাটকে ছিলাম। এখন সবকিছু বিবেচনা করে দেখলাম দিন বদলাচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার: আপনি ওয়েবে কাজ শুরুর পরে নাটক কমিয়ে দিয়েছেন, এবার সিনেমায় ব্যস্ত হলে কীভাবে নাটকে ফিরবেন?

নিশো: আমি নাটক থেকে বেড়ে ওঠা মানুষ। কিন্তু বারবারই বলি, যখন প্ল্যাটফর্ম সুইচ করি, তখন সেই প্ল্যাটফর্মের ব্যস্ততা আমাকে অন্য প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে দেয় না। এখন সিনেমা যদি ওয়ার্ক করে, ফিল্মে যদি একটি জায়গা তৈরি হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই ফিল্ম নিয়ে থাকতে হবে। কারণ, সবাই সিনেমার জন্য ডাকবেন।

বাংলা ইনসাইডার: ‘সুড়ঙ্গ’ নিয়ে কতটা আশাবাদী? 

নিশো: প্রথম কাজে একটু রিস্ক থাকে। যেহেতু সবাই আমরা হার্ড ওয়ার্কিং সবাই ডেডিকেটেড। আমাদের ডিওপি এক মাসের বেশি সময় ধরে এটার সাথে কাজ করছে। পুরো টিম এক সঙ্গে আছে। ভালো কিছু হবে আশা করি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

বাংলা ইনসাইডার: আপনার অর্জিত সব পুস্কারই আপনি হুমা হুমায়ুন ফরীদিকে দিয়ে থাকেন। আসলে এর কারণটা কি? 

নিশো:  আমি সর্বপ্রথম ব্যক্তি হুমায়ুন ফরীদির প্রেমে মশগুল হয়েছি, পরে তার পারফর্মেন্সে মুগ্ধ হয়েছি। আমি তাকে অনুসরণ করিনা, অনুকরণ করি কিছু কিছু ক্ষেত্রে। তার এটিটিউড ভাইব আমার সাথে মিলে যায়। তার সাথে আমার কনভারসেশন মিলতো, মেন্টাল কানেকশন ছিল। তিনি বড় অভিনেতা হওয়ার পরেও তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে কম। তাই আমার নিজস্ব ইচ্ছা আমার সকল পুরস্কার তাকে দেই। এটা আমার একধরনের প্রতিবাদ। উনি যে মাপের অভিনেতা তাকে সেই উঁচুমানের চরিত্রগুলো আমরা তাকে দিতে পারিনি।

হুমায়ুন ফরীদি   নিশো   সুড়ঙ্গ   তমা মির্জা   সিনেমা   রাফি   হুমায়ুন ফরীদি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘আপনি যাই করেন, প্রতিবন্ধী মানুষদের বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৬ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

‘১৯৯২ সাল থেকে এই সংগঠনের মাধ্যমে আমি জাতিসংঘের সাথে প্রতিবন্ধী বিষয়ক কাজ করেছি, অংশগ্রহণ করেছি। ইউএনস্কেপ- এর অ্যাওয়ার্ডটা এক বারই হয়েছে। এইটা হয়েছে ২০১২ সালে। এই অ্যাওয়ার্ডটা আমাকে দিয়েছে এই কারণে যে, ওনাদের বিবেচনায় আমার কাজের প্রতি তারা সন্তুষ্ট হয়েছে, এটা একটা ভিন্ন রকম কাজ ছিল এবং এই সেক্টরে যারা কাজ করেছেন- তাদের মধ্য থেকে আমার কর্মকাণ্ডটা প্রতিবন্ধী মানুষদের অধিকার প্রতিষ্ঠায়- তাদের উন্নয়নে অবদান রেখেছে এবং প্রতিবন্ধী বিষয়ক তাদের যে মানবাধিকার আছে- সেই কারণেই মূলত আমাকে এই অ্যাওয়ার্ডটি দেওয়া হয়। তাছাড়া ইউনাইটেড ন্যাশন কনভেনশন অন রাইটস অব পার্সোনাল ডিসাবিলিটি (ইউএনসিআরপিডি)- এটিও একটি আন্তর্জাতিক সনদ- এই সনদটি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেশ স্বাক্ষর করেছে। এই সনদটি স্বাক্ষর করার ক্ষেত্রেও ১৯৯৬ সালের পরের দিকে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম। এটিও একটি মানবাধিকার কনভেনশন- এটির মূল কথা হচ্ছে- আপনি যাই করেন প্রতিবন্ধী মানুষদের বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না।’- বলছিলেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার কর্মী আবদুস সাত্তার দুলাল

২০১২ সালে ইউএনস্কেপ ডিসাবিলিটি রাইটস চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার কর্মী আবদুস সাত্তার দুলাল। সম্প্রতি কথা হয় বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার কর্মী আবদুস সাত্তার দুলাল- এর সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি জানিয়েছেন একজন প্রতিবন্ধী মানুষ হিসেবে তার এই অর্জন, প্রতিবন্ধীদের জন্য করণীয় এবং প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ- এর কথা। পাঠকদের জন্য আবদুস সাত্তার দুলাল- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন। 

আবদুস সাত্তার দুলাল বলেন, ইউএনসিআরপিডি-তে যেসব রাষ্ট্রসমূহ স্বাক্ষর করেছে, তারা তাদের রাষ্ট্রগুলোতে প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এখন আমরা এসডিজির কথা শুনছি- কেউ পিছনে পড়ে থাকবে না। এটাও কিন্তু আমরা প্রমোট করেছি। এমডিজি-তে প্রতিবন্ধী মানুষদের কথা ছিল না। এসডিজি-তে এই বিষয়টি তৈরি হয়েছে আমাদের প্রভাবের কারণে। সেখানে ‘নাথিং ইউথ আউট আস-অ্যাবাউট আস’- এইটা আমাদের একটা শ্লোগান।  ‘নো ওয়ান লেফট বিহাইন্ড’- কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না- এইটা কিন্তু এসডিজিতে যুক্ত হয়েছে। সতরাং সকলকে নিয়ে আপনাকে এগুতে হবে। 

তিনি বলেন, পৃথিবীতে- এই সমাজ এই রাষ্ট্রে প্রতিবন্ধী মানুষদের অবদান আছে। আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ, আমি প্রতিদিন খাচ্ছি, বাজার করছি, একটি জামা কিনছি- এতে সরকার পরোক্ষভাবে ট্যাক্স পাচ্ছে। এই ট্যাক্সতো আমি দিচ্ছি। বাংলাদেশে যদি এক কোটি প্রতিবন্ধী মানুষ থাকে- ১৫% ট্যাক্স যদি মানুষের কাছ থেকে সরকার পায়, তাহলে প্রতিবছর সরকার প্রতিবন্ধী মানুষের কাছ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স পায়। এর প্রতিদান সরূপ সরকার যেন এতোটুকু বুঝতে পারে- তারা যেন প্রতিবন্ধী মানুষদের দায়িত্ব নেয়, ভূমিকা নেয়। বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য অনেকগুলো কাজ করেছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছু কাজ করেছেন। আমরা ২০১০ সালে উনার সঙ্গে দেখা করেছি। বিশেষ করে একটি আইন- ‘প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন- ২০১৩’ তিনি অনুমোদন করেছেন। ভাতাটাকে তিনি অনুমোদন করেছেন।

আবদুস সাত্তার দুলাল বলেন, আরও অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের বৃত্তি দিচ্ছে। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের চাকরির ব্যবস্থাও করছে সরকার। আজকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে, তিনি এই প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছেন। মানুষের ভেতরে এই পরিবর্তনগুলো কিভাবে এসেছে, কারণ আমাদের কাজ, আমরা কাজ করেছি। এইটাকে এক সময় দয়ার কাজ মনে করা হতো, করুণা করা হতো। প্রতিবন্ধীদের বাদ রাখা হতো। অনেক ধনী পরিবারে তাদেরকে আলাদা করে রাখা হতো, বেঁধে রাখা হতো। এখন আর সেই জায়গা নেই। এখন পরিবর্তন হয়ে গেছে। অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। প্রতিবন্ধী মানষরা সাড়া বিশ্বে আজকে তারা একত্রিত হয়েছে। প্রতি ৬ জনে একজন প্রতিবন্ধী বলা হয়, এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গত বছরের বিশ্ব প্রতিবেদন অনুযায়ী। এটা সারা পৃথিবীতে এখন সার্বজনীনভাবে বলা হচ্ছে ১৫% মানুষ প্রতিবন্ধী মানুষ।     


আবদুস সাত্তার দুলাল   প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি   ইউএনস্কেপ ডিসাবিলিটি রাইটস চ্যাম্পিয়ন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘স্কুলগুলোর বাণিজ্যিক মানসিকতা দূর করবে নতুন শিক্ষাক্রম’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৪ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, বিভিন্ন স্কুলে মডেল টেস্ট নেয়ার প্রচলন রয়েছে। এ ধরনের প্রচলন থাকার কারণে আবার ওই স্কুলগুলো বিভিন্ন ধরনের কোচিংও চালায় এবং এগুলো এখন বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। স্কুলগুলোতে এ ধরনের বাণিজ্যিক মানসিকতা দূর করবে ২০২৩ সালে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম।

চলতি বছর চালু হওয়া ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে কোনো ধরনের মডেল টেস্ট বা পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। যদি কেউ এর ব্যতয় ঘটায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর বেলাল হোসাইন সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। 

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা নির্ভরতা কমিয়ে শ্রেণিভিত্তিক মূল্যায়নের ওপর জোর দিতে চলতি বছর থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়েছে। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এ দুটি শ্রেণিতে পাঠদান করাতে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আসছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অন্যান্য শ্রেণির মতো এখানেও মডেল টেস্ট বা পরীক্ষা নেওয়া প্রস্তুতি চলছে। এসব অভিযোগ সামনে আসার পর সারাদেশে মাঠ পর্যায়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কঠোর বার্তা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

তিনি বলেন, সাধারণত নিয়ম হলো স্কুলগুলো অর্ধ বার্ষিক এবং বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা। অথবা তিন মাস পর একটা এরপর ছয় মাস পর আরেকটা টার্মিনাল পরীক্ষা এবং বছর শেষে বার্ষিক পরীক্ষা। এটাই প্রচলিত নিয়ম ছিল। কিন্তু কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের নাম দিয়ে মডেল টেস্ট নেয়া শুরু করেছে। এটি বন্ধ করতে গতকাল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর নির্দেশনা দিয়েছে যে, শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রচলিত কোনো পরীক্ষা/মডেল টেস্ট নেওয়া যাবে না। এই নির্দেশনা আরও আগেই দেয়া দরকার ছিল।

তিনি আরও বলেন, সরকার নিশ্চিয় এটা ফলোআপ করবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নিশ্চিয় নির্দেশনা দেয়া হবে বছরে কয়টা, কিভাবে পরীক্ষা হবে। শিক্ষকগণ শ্রেণি কক্ষে না পড়িয়ে যদি সারা বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের মডেল টেস্ট আর পরীক্ষাই নেয় সেটা প্রকৃত শিক্ষা নয়। এতে করে বরং ছাত্রদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন