“ঢাকা তো প্রথম,
দ্বিতীয়, তৃতীয় অবস্থানেই থাকে। বায়ু দূষণে আমরা প্রথম হয়েছি, এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
এর ফলে আমরা তো শেষ হয়ে যাচ্ছিই, পরবর্তী প্রজন্ম, বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধরা একেবারে
শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ হিসেবে এটি ঠিক আছে। এর ফলে মানুষের গড় আয়ু কমে যাচ্ছে, পাশাপাশি
একটা বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, আমাদের অর্থ ব্যয় বাড়ছে। রাস্তায় বের হলে যে পরিমাণ কাপড়-চোপড়
ধুতে হয়, ঘর-বাড়ি পরিষ্কার করতে হয়, টেবিলের ওপর আজকে পরিষ্কার করলে, কালকেই দেখবেন
আবার ধুলো জমে আছে। এর ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বেশি শ্রম দিতে হয়। ব্যক্তিগত এবং
পারিবারিক ব্যয় বৃদ্ধি হয়। এটি আমরা গবেষণা করে দেখেছি, গড়ে মাসিক ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা
ব্যয় বেড়ে যায় এই সময়ে, যখন বায়ু দূষণ বেড়ে যায়।“ - বলছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক
অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো.
আবদুস সোবহান।
বর্তমান সময়ে
রাজধানী ঢাকা বায়ু দূষণে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে এবং বিগত কয়েকদিন থেকেই বায়ু দূষণে শীর্ষ
অবস্থানে ঢাকা। বায়ু দূষণে রাজধানী ঢাকার সমসাময়িক অবস্থান, এর কারণ এবং প্রতিকার-
এসব বিষয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন প্রকৌশলী মো.
আবদুস সোবহান। পাঠকদের জন্য প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা
ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক আল মাসুদ নয়ন।
প্রকৌশলী মো.
আবদুস সোবহান বলেন, স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও আর্থিক ব্যয় বৃদ্ধি হয়। গড় আয়ু কমে যাওয়ার সঙ্গে
সঙ্গে বিভিন্ন রোগও বেড়ে যায়। ফলে স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও আর্থিক ব্যয় বেড়ে যায়। এছাড়াও
আমাদের স্থাপনাগুলো নষ্ট হচ্ছে। পথচারী পারাপারের জন্য যে ফুটওভার ব্রিজগুলো রয়েছে,
সেখানে ধুলা পড়ে জং ধরে যায়। যেখানে ধূলা পড়ে থাকে, ওরাতো ঠিকমতো পরিষ্কার করে না।
এর ফরে বিল্ডিং থেকে শুরু করে সমস্ত স্থাপনার আয়ুষ্কাল কমে যায়। এটাও একটা বিরাট অর্থনৈতিক
প্রভাব।
বায়ু দূষণের
কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, প্রথমত ভ্রান্ত রিপোর্ট,
যেটা পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, দ্বিতীয়ত আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম, তৃতীয়ত সিটি করপোরেশন
এবং ওয়াসার বিভিন্ন কার্যক্রম। এই যে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি সমীক্ষা, এটি হয়েছে আজ
থেকে সাত-আট বছর আগে। সে সময়ে সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বায়ু দূষণের এক নম্বর কারণ হচ্ছে
ইটভাটা, দুই নম্বর হচ্ছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং তিন নম্বর হচ্ছে যানবাহনের দূষণ। ওই
সমীক্ষা দিয়েই অনেকে চালিয়ে দিতে চান, কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বর্তমানে গত
পাঁচ বছরে ঢাকা শহরে যে সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হচ্ছে, তা হলো এক, দুই নম্বর হলো ইটভাটা,
কারণ অনেকগুলো ইটভাটা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে অথবা তারা উন্নত প্রযুক্তিতে গিয়েছে।
ঢাকা শহরের আশে-পাশে এখন আর তেমন ইটভাটা নেই। তার মানে হচ্ছে, ইটভাটা দুই নম্বরে চলে
এসেছে, এখন আর এক নম্বরে নাই।
তিনি বলেন,
এখন এক নম্বরে চলে এসেছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। গত পাঁচ বছরে সিটি করপোরেশন, ওয়াসার অনেকগুলো
প্রকল্প হয়েছে। ওরা পুরো শহর কেটেকুটে তছনছ করে রাখছে। এখনও তাই চলছে। দুই নম্বরে চলে
এসেছে যানবাহন, আমাদের যানবাহন, বিশেষ করে কাভার্ড ভ্যান প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে। শুধু
যে ব্যক্তিগত গাড়ি বাড়ছে তা নয়, কাভার্ড ভ্যানও প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে। এখন ঢাকা শহরে
দিন রাতে সব সময় যানবাহন চলছে। এসব যানবাহনগুলো ডিজেল চালিত। এসব ডিজেলের ধুয়ার কারণেও
বায়ু দূষণ বাড়ছে। এখন শোনা যাচ্ছে আরও নিম্নমানের ডিজেল ব্যবহারের জন্য আমদানি করা
হবে। এছাড়াও যানবাহনগুলো পুরাতন হচ্ছে। এরপর আমরা দেখছি ওয়াসা এবং সিটি করপোরেশন, মাসের
পর মাস রাস্তা কেটে রাখে, সেখানে প্রচুর ধুলা উৎপাদন হয়। এর পর হচ্ছে কন্সট্রাকশন,
নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন। সিটি করপোরেশন-ওয়াসাসহ অন্যান্য সেবা সংস্থাসমূহ প্রচুর খোড়াখুড়ি
করে। এছাড়াও শীতকালে আমরা বিভিন্ন জিনিস পুরাই, যেমন খর-কুটো, লতা-পাতা- এগুলো থেকেও
বায়ু দূষণ হচ্ছে। তবে সারা বাংলাদেশের বায়ু দূষণের জন্য ইটভাটা এক নম্বর কারণ।
বায়ু দূষণ থেকে
প্রতিকারে জন্য কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে? -এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রকৌশলী মো.
আবদুস সোবহান বলেন, আমরা প্রত্যেকে যদি নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করি। আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো
যারা চালাচ্ছেন, তারা যদি বিদেশে এ কাজগুলো করতেন, তাহলে পরিবেশ বাদ দিয়ে কাজ করতে
পারতেন না। অথচ এখানে কিন্তু তারা কিছু করছেন না। মূল বিষয় হচ্ছে লাভ, কত লাভ উঠিয়ে
নেয়া যাবে? যত আমি লাভ উঠিয়ে নিতে পারবো, ততো কর্তৃপক্ষ আমার ওপর খুশি হবে। এদের প্রত্যেকের
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে। বলা আছে, এ ধরনের প্রকল্প করতে হলে তাদের পরিবেশ
রক্ষায় কি কি ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই ব্যবস্থাগুলো তারা নিচ্ছেন না। প্রকল্প পরিচালকও
নিচ্ছেন না, আবার যারা মনিটর করবেন, পরিবেশ অদিদপ্তর, তারাও মনিটর করছেন না। আইন আছে
কিন্তু আইনের কঠোর প্রয়োগ নেই। সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনেরও কঠোর প্রয়োগ থাকতে
হবে।
তিনি বলেন,
ওয়াসা এবং সিটি করপোরেশনকে যেটুকু কাজ তারা করবেন, সেটুকু আগে করতে হবে। তা না করে
পুরো এলাকা কেটে ৬ মাস ফেলে রাখবে। অথচ যদি সেগমেন্ট ওয়াইজ কাজ করা হয়, একটা একটা করে
রাস্তা করেন, তাহলে আর পুরো এলাকাটা দূষিত হয় না। অংশবিশেষ এলাকা দূষিত হবে। কর্তা
ব্যক্তিরা, তারা সবাই এ বিষয়গুলো জানেন, বুঝেন কিন্তু কেন করেন না? এদেরকে এটা করতে
বাধ্য করতে হবে। আমাদের যেমন আইনের প্রয়োগ নেই এবং আমাদের নাগরিকরাও অনেক দুর্বল। আমাদেরকে
সোচ্চার হতে হবে। যানবাহনের ক্ষেত্রে উন্নতমানের জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে। ফিটনেসবিহীন
গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে। এসব বিষয়ে সচেতনতা যেমন বৃদ্ধি করা দরকার, সেভাবে আইনও প্রয়োগ করা দরকার।
তিনি বলেন,
মূল কথা হচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে, ওয়াসা, সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, রাজউকসহ
সংশ্লিষ্ট যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের যে আইনসিদ্ধ বিষয় রয়েছে সংগত কারণে সেগুলো পালন
করা এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ করা। পাশাপাশি জনগনকে সচেতন করা এবং যারা এসব প্রকল্পের
সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদেরকেও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা দরকার।
বায়ু দূষণ বাংলাদেশ ঢাকা পরিবেশ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘরের দরজা ভেঙে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা চলছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় কী অথবা আত্মহত্যা করতে চাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটির প্রতি পরিবার, সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটুকু—এসব নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদক খাদিজা ভৌমী।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বা আছে—বিএনপির এধরনের কথাবার্তা স্রেফ তাদের হঠকারিতা। ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে আপনি কি সেটা অস্বীকার করতে পারবেন কিংবা তাদের অবদানকে কোন ভাবে অবমূল্যায়ন করতে পারবেন? এটা কোন ভাবেই সম্ভব না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ভারতের অবদানের জন্যই তারা আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্বাস্থ্য খাতের দায়িত্ব পেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। গতকাল তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেছেন। এর আগে বাংলাদেশের কেউই এই দায়িত্বে ছিলেন না। আমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে, আমরা সায়মা ওয়াজেদকে আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে পাচ্ছি। এটা বাংলাদেশ তথা এদেশের জনগণের জন্য একটি বিরাট প্রাপ্তি। সায়মা ওয়াজেদ স্বাস্থ্য খাতে খুব অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিত্ব। আমরা জানি সে অনেক দিন ধরে সারা বিশ্বে অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলেরও সদস্য। তাছাড়া ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ‘অটিজম-বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, টিআইবি এখন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভূমিকা পালন করছে। টিআইবি এবং সিপিডি যারা করে এরা একই ঘরানার। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু জনগণের অর্থায়নে করার ঘোষণা করেন সে সময় এরা বলেছিল বাংলাদেশে এটা অসম্ভব। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করলে অর্থনীতির একটা ধস নামবে, অর্থের অপচয় হবে। টিআইবি তো কোন সময় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভালো চোখে দেখে না। টিআইবি’র এখানে (বাংলাদেশ) যারা নেতৃত্ব দেন তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে মনগড়া বিবৃতি দেয়। তারা জনগণের চোখের ভাষা বুঝে না বরং তারা পিছনের দরজা দিয়ে কোনো রকম নিজের গাড়িতে একটি পতাকা লাগানো যায় কিনা সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে এবং এই স্বপ্নে বিভোর থাকে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে টিআইবি মনগড়া তথ্য-উপাত্ত জাতির সামনে হাজির করে জাতিকে বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।