‘আমি মনে করি পাট এখনও সোনালি আঁশ হিসেবে পরিচিত। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস। পাট উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ২য় হলেও পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ ১ম স্থান দখল করে আছে। উন্নত দেশগুলোতে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবেশ বিপর্যয়কারী কৃত্রিম তন্তুর ব্যবহার ক্রমেই হ্রাস পেতে থাকে এবং বৃদ্ধি পায় প্রাকৃতিক তন্তুর চাহিদা। পাটকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ বা বর্ষপণ্য এবং পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে গণ্য করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ – বলছিলেন বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল আউয়াল।
গত ৬ মার্চ ছিল জাতীয় পাট দিবস। পাট দিবসকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি কথা হয় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল আউয়াল- এর সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশের ‘সোনালী আঁশ’ পাটের ইতিহাস-ঐতিহ্য, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। পাঠকদের জন্য প্রশ্নোত্তর পর্বে কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল আউয়াল- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।
বাংলা ইনসাইডারঃ জাতীয় পাট দিবসের তাৎপর্য কি? কবে থেকে জাতীয় পাট দিবস পালিত হয়?
মহাপরিচালকঃ পাটের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ঐতিহাসিক ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবি ছিল সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মুক্তির সনদ, যাহা মুলত ছিল পাটভিত্তিক অর্থনৈতিক বঞ্চনা থেকে উত্তরণের পথ। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে ১৯৮০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত পাট ও পাট জাতীয় পণ্যের রপ্তানি আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল। এ সময় পাট রপ্তানি করে দেশ বৈদেশিক মুদ্রার প্রায় ৭৫% আয় করত। পরবর্তীতে সিনথেটিক পণ্যের প্রসারের ফলে ১৯৮০ সাল থেকে পাটজাত পণ্যের জনপ্রয়িতা ও বাণিজ্য কমতে থাকে। বর্তমানে দেশে প্রায় ৭-৮ লক্ষ হেক্টর জমি থেকে প্রায় ৮০-৮৫ লক্ষ বেল পাট উৎপাদিত হয়। প্রতি বছর প্রায় ১.০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের পাট ও পাট জাতীয় পণ্য রপ্তানি হয়, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের শতকরা ৩-৪ ভাগ। তারপরও পাটখাত কোথাও যেন আটকে আছে। এ বিষয়টি বুঝতে পেরে কৃষিবান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশবান্ধব তন্তু হিসেবে পাটের গুরুত্ব বিবেচনায় পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি, দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে সোনালি আঁশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা তুলে ধরার লক্ষ্যে জাতীয় পাট দিবস পালন করার ঘোষণা দেন। পাটের সঙ্গে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি বিবেচনায় ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর ৬ মার্চ জাতীয়ভাবে পাট দিবস পালনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
বাংলা ইনসাইডারঃ পাটকে দেশের সোনালি আঁশ বলা হয়। আপনি কি মনে করেন পাট এখনও সোনালি আঁশ?
মহাপরিচালকঃ আমি মনে করি পাট এখনও সোনালি আঁশ হিসেবে পরিচিত। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস। পাট উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ২য় হলেও পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ ১ম স্থান দখল করে আছে। উন্নত দেশগুলোতে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবেশ বিপর্যয়কারী কৃত্রিম তন্তুর ব্যবহার ক্রমেই হ্রাস পেতে থাকে এবং বৃদ্ধি পায় প্রাকৃতিক তন্তুর চাহিদা। পাটকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ বা বর্ষপণ্য এবং পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে গণ্য করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সার, চিনি, ধান, চালসহ ১৭টি পণ্য বিক্রয়, বিতরণ ও সরবরাহে বাধ্যতামূলক পাটজাত মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত কল্পে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ ঘোষণার ফলে পাটখাতের সোনালি ঐতিহ্যের সোনালি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সম্প্রতি পাটকাঠি থেকে উচ্চ মূল্যের চারকোল তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে যা থেকে তৈরি হচ্ছে অতি মূল্যবান কম্পিউটার, প্রিন্টার, ফটোকপি মেশিন ইত্যাদির কালি ও আরো রকমারী দ্রব্যাদি। তাছাড়া পাট থেকে তৈরি সিনথেটিক পলিথিনের বিকল্প পলিথিন (সোনালী ব্যাগ) এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিবে।
বাংলা ইনসাইডারঃ পাটের উৎপাদন কমেছে। পাটের উৎপাদন বাড়াতে আপনার ইনস্টিটিউট কি কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে?
মহাপরিচালকঃ পাটের উৎপাদন কমেছে কথাটি সঠিক নয়। কারণ বাংলাদেশে ১৯৭০-৭১ অর্থবছরে ৯.১০ লক্ষ হেক্টর জমিতে পাটের উৎপাদন ছিল ৬৮.০১ লক্ষ বেল। আর বর্তমানে অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭.৪৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদিত হয়েছে ৮২.৭৬ লক্ষ বেল।
বিজেআরআই প্রতিষ্ঠার পর থেকে মোট ৫৪টি পাট ও পাট জাতীয় আঁশ ফসলের জাত উদ্ভাবন ও অবমুক্ত করা হয়েছে। বিজেআরআই বিজ্ঞানীগন সম্প্রতিকালে আরোও দুইটি দেশি ও তোষা পাটের জাত অবমুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করেছে যার প্রথমটি হলো বিজেআরআই দেশী পাট ১০ লবনাক্ত সহনশীল (১২ ডিএস/মিটার)। অন্যটি হলো জিনোম সিকুয়েন্সের মাধ্যমে উদ্ভাবিত বিজেআরআই তোষা পাট ৮। তোষা পাট যেখানে পানি সহ্য করতে পারে না সেখানে এ জাতটি প্রায় ১৫-২০ দিন পানি সহ্য করতে পারে। তাছাড়া প্রচলিত জাত থেকে প্রায় ১৫-২০% ফলন বেশি হয়। নতুন চরাঞ্চলে বিজেআরআই উদ্ভাবিত কেনাফ জাত, এইচসি-৯৫ দিনে দিনে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। এছাড়া ট্রান্সজেনিক লাইন যথা- বিটি জুট, দ্রুত বর্ধনশীল, কম লিগনিনযুক্ত, রোগ প্রতিরোধী এবং স্বল্প জীবনকাল (৮০ দিন) জাত উদ্ভাবনের গবেষণা কাজ চলমান আছে। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) গবেষণার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি লাভজনক টেকসই পাটভিক্তিক শস্য বিন্যাস উদ্ভাবন করেছে। কাঁচা অবস্থায় পাট গাছ থেকে ছাল পৃথকীকরণের জন্য মেকানিক্যাল রিবনার উদ্ভাবন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিজেআরআই পাট কাটা ও বীজ মাড়াই করার মেশিন উদ্ভাবন করেছে। এছাড়াও ব্যাকটেরিয়াল কন্সরসিয়া প্রয়োগে দ্রুত পাট পচন পদ্ধতির গবেষণা কাজ চলমান আছে। সম্প্রতি বিজেআরআই পাট বীজে স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জনে রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে। পাটের জীবন রহস্য আবিস্কার এবং পাটের কান্ড পঁচা রোগপ্রতিরোধী পাটজাত উদ্ভাবনের নিমিত্ত পাটসহ বিশ্বের পাঁচশতাধিক উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকারক ছত্রাক Macrophomina phaseolina এর জীবনরহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। এছাড়াও পাট পাতার চা, কেনাফ বীজ থেকে ভোজ্য তেল এবং মেস্তার মাংসল বৃতি থেকে জ্যাম, জেলি, জুস ইত্যাদি প্রস্তুত নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
বাংলা ইনসাইডারঃ জাতীয় পাট দিবসের মূল প্রতিবাদ্য কি? পাটের সোনালি ভবিষ্যৎ ফিরিয়ে আনতে কি কি পদক্ষেপ নেয়া হবে?
মহাপরিচালকঃ এ বছর জাতীয় পাট দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘পাট শিল্পের অবদান, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’।
পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি, দেশিয়-আন্তর্জাতিক বাজারে পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি ও বিশ্বব্যাপী সোনালি আঁশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার পাটপণ্যকে বর্ষপণ্য ২০২৩ এবং পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে পণ্যে পাটজাতমোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০; পাট আইন, ২০১৭; জাতীয় পাটনীতি, ২০১৮ এবং চারকোল নীতিমালা, ২০২২ প্রণয়ন পাটখাতের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ নীতি সহায়তা হিসেবে কাজ করছে। পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করছে। বিশ্বে বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ বিলিয়ন পাটের ব্যাগ ও ৩২ মিলিয়ন ফুড গ্রেড পাটের ব্যাগের চাহিদা রয়েছে। এর ১০ শতাংশ বাজার দখল করতে পারলে বছরে আয় করা সম্ভব ৫০ হাজার কোটি টাকা। পাটকাঠি থেকে উচ্চ মূল্যের চারকোল তৈরি এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। একদিকে সোনালি আঁশ অপরদিকে রূপালি কাঠি পাটের সোনালি অতীত অচিরেই ফিরে আসবে বলে আমার ধারণা। যে দেশের বিজ্ঞানীরা পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কার করতে পারেন, যে দেশ বহির্বিশ্বে সোনালি আঁশের দেশ হিসেবে পরিচিত, সেই দেশের পাটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা কঠিন নয়। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, গ্রিন ইকোনমি ও সবুজ পৃথিবীর বাস্তবতায় বিশ্ববাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায়, সোনালি আঁশের হারানো সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বাংলা ইনসাইডারঃ পাটের বহুবিধ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কি কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?
মহাপরিচালকঃ বাজার চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে বহুমুখী পাটপণ্য ব্যবহারের নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ, বর্তমানে প্রচলিত পণ্যের অধিকতর উন্নয়ন সাধন এবং নতুন ডিজাইন উদ্ভাবনের লক্ষ্যে ডিজাইন ইনস্টিটিউট এবং ডিজাইন সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। দেশের শিল্প/কারখানায় বোতল/প্যাকেট প্যাকেজিং ও পরিবহণের জন্য প্লাস্টিক ব্যাগের স্থলে উপযুক্ত পাটের ব্যাগের প্রচলন এবং দেশের নার্সারিগুলোতে গাছের চারা সংরক্ষণে পাটের ব্যাগ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাট থেকে কাগজের মন্ড, কম্বল ও অন্যান্য গৃহস্থালি পণ্য তৈরির মতো সম্ভাবনাময় খাত প্রসারসহ সরকারি অফিস সমূহে কর্মরত সকল কর্মকর্তাদের পাটের কাগজের ভিজিটিং কার্ড এবং পাটভিত্তিক স্টেশনারি ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। বাংলাদেশে বহুমুখী পাটপণ্যের একটি ব্রান্ড সৃষ্টি করতে হবে। প্রতিযোগিতা সক্ষম পাটপণ্য উৎপাদনের উপযোগী করে সরকারি ও বেসরকারি পাটকলসমূহের আধুনিকায়নের পাশাপাশি পাটকলসমূহে নিয়োজিত শ্রমিক, টেকনিশিয়ান ও প্রকৌশলীদের দক্ষতা ও কারিগরী যোগ্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যথাযথ প্রক্ষিণের কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে যাতে করে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে যৌক্তিক ও লাভজনকভাবে পাটপণ্য উৎপাদন করা যায়। পরিশেষে বলা যায় পাটের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, পাট ক্রয়-বিক্রয় সহজীকরণ, কাঁচাপাট ও বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ, পাটজাত পণ্য রপ্তানি ও অভ্যন্তরীন ব্যবহার বৃদ্ধিকরণ ও পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন বর্জন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় প্রতিষ্ঠা করতে পাট অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল আউয়াল
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
‘শেরাটন হোটেলের লিফটের ১৪ তলায় ওপেন টু দ্য স্কাই একটি জায়গা, ছাদের ওপর। সেখানে দেখলাম একটি মঞ্চ সংস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি- লেখা আছে। মঞ্চের ওপরে দাঁড়িয়ে আছেন কমরেড ফরহাদ মজহার, উন্নয়ন বিকল্প নীতিনির্ধারনী গবেষণার কর্ণধার এবং আমাদের সতীর্ত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের কৃতি ছাত্র শওকত মাহমুদ। স্বাগত বক্তব্য রেখেছেন কমরেড ফরহাদ মজহার। সেখানে শওকত মাহমুদ একটি ইশতেহার পাঠ করেন- অর্থাৎ একটি প্রস্তাবনা জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির প্রস্তাবনা। সেখানে ড. ফারহাদ নামের একজন নারী সেখানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেছেন। তারপর সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়েছে।’ - বলছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এবং জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ।
গত ১৬ই মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর বনানীতে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে লেখক ও কবি ফরহাদ মজহার ও সাংবাদিক শওকত মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির (ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস) নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন বিরোধী দলের একাধিক রাজনৈতিক নেতা। সেখানে অতিথি হয়ে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এবং জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ)- এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। সেখানে কি হলো? - এ নিয়ে কথা হয়েছে প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ- এর সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি জানিয়েছেন ওই নৈশভোজে ‘আলোচনার বিষয়বস্তু ’ কি ছিল। পাঠকদের জন্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।
প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, ‘সেখানে ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের ড. রেজা কিবরিয়া, মাহমুদুর রহমান মান্না, লে. জেনারেল (অব.) সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ। আমি দ্বিতীয় সাড়িতে বসেছি। প্রায় শ’ খানেক লোক ছিলেন। পেছনে কিছু চেয়ার খালিও ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন বাঙালি নারী নাগরিক- তিনিও উপস্থিত ছিলেন, নাম সীমা। আমাদের এনবিআর- এর সাবেক চেয়ারম্যান মজিদ মহোদয় সেখানে ছিলেন। সেখানে ইশতেহারে যে বিষয়টি লক্ষণীয় সেটি হচ্ছে, তারা উপসংহারে বলেছেন যে, যথাসম্ভব একটি বৃহত্তর ঐক্যের ভিত্তিতে যৌথ কিংবা একটি যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ব্যাপক জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চান তারা।’
তিনি বলেন, তারা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে চান। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হবে নতুন গঠনতন্ত্র বা শাষনতন্ত্র প্রণয়নের সভা আহবান করা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাংলাদেশেকে নতুনভাবে একটি শাষনতন্ত্র উপহার দেওয়া। স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন এবং নির্বাচনের সময় সকল নির্বাহী ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়ে আসা। নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের পরপরই অন্তর্বর্তী নতুন সরকার এবং নতুন গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে নতুন জাতীয় নির্বাচন হবে। নতুনভাবে বাংলাদেশ গঠনের এটাই সঠিক পথ বলে তারা মনে করেন।
প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, ওখানে আমি অনেককেই দেখেছি- যারা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত, যারা আয়োজক তাদের মতে, ১৯১৩ সালে তারা এই কমিটি গঠন করেছেন। নতুন করে তারা পুনরুজ্জীবিত করলেন এই কমিটি। এছাড়া ল্যাংলে-তে কাজ করেন বলে একজন পরিচয় দেন, অর্থাৎ আমেরিকাতে সিআইএ হেডকোয়ার্টারে তিনি কাজ করেন, নাম মাসুদ করিম। অনেক দিন থেকেই এই অঞ্চলে তাকে দেখা যায়, কখনও ব্যাংককে কখনও কাডমান্ডুতে, কখনও কলোম্বতে এবং দুবাইয়ে এসব জায়গায়- তিনি বাংলাদেশি আমেরিকান, তার এলাকা সিলেটে। আমাদের দেশের প্রথিতযশা অ্যাক্টিভিস্ট যারা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় তিনি বৈঠকে মিলিত হন। যাদের সঙ্গে তিনি (মাসুদ করিম) বৈঠকে মিলিত হয়েছেন, তাদের অনেকেই ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একাধিক ব্যক্তি, যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় উপস্থাপক- তারা তাকে বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করেছেন।
তিনি বলেন, ফলে তাকে জড়িয়ে একটা রহস্য, একটা ধোঁয়াশা ওয়াকিবহাল মহলের মধ্যে আছে। এই আয়োজনটার টাকা কোত্থেকে এসেছে- এটা নিয়েও অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা করেছেন। প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এই টাকা কোত্থেকে এসেছে সেটাতো কেউ বলেন নাই। তবে এইটা বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা হয়তো সহায়তা করেছেন।
তিনি বলেন, তারা একটি অন্তর্বর্তী সরকার চাচ্ছে- যে নতুন সরকার আসবে এবং একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে। একটা লম্বা সময় ধরে এই সরকার শাষনতন্ত্র প্রণয়ন অ্যাসেম্বলি করবে, এই প্রক্রিয়াটা তারা করবে। তারা দাবি করেছেন, ২০১৩ সাল থেকে তারা কাজ করছেন- এটা নিয়ে। তবে আমি মনে করি এটা বিএনপির উদ্যোগের কোনো আয়োজন না। কারণ সেখানে বিএনপির কোনো লোককে দেখা যায়নি। বিএনপির অনেকেই আমন্ত্রিত হয়ে সেখানে আসেননি।
প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ সাক্ষাৎকার জানিপপ শেরাটন হোটেল
মন্তব্য করুন
হুমায়ুন ফরীদি নিশো সুড়ঙ্গ তমা মির্জা সিনেমা রাফি হুমায়ুন ফরীদি
মন্তব্য করুন
‘১৯৯২ সাল থেকে এই সংগঠনের মাধ্যমে আমি জাতিসংঘের সাথে প্রতিবন্ধী বিষয়ক কাজ করেছি, অংশগ্রহণ করেছি। ইউএনস্কেপ- এর অ্যাওয়ার্ডটা এক বারই হয়েছে। এইটা হয়েছে ২০১২ সালে। এই অ্যাওয়ার্ডটা আমাকে দিয়েছে এই কারণে যে, ওনাদের বিবেচনায় আমার কাজের প্রতি তারা সন্তুষ্ট হয়েছে, এটা একটা ভিন্ন রকম কাজ ছিল এবং এই সেক্টরে যারা কাজ করেছেন- তাদের মধ্য থেকে আমার কর্মকাণ্ডটা প্রতিবন্ধী মানুষদের অধিকার প্রতিষ্ঠায়- তাদের উন্নয়নে অবদান রেখেছে এবং প্রতিবন্ধী বিষয়ক তাদের যে মানবাধিকার আছে- সেই কারণেই মূলত আমাকে এই অ্যাওয়ার্ডটি দেওয়া হয়। তাছাড়া ইউনাইটেড ন্যাশন কনভেনশন অন রাইটস অব পার্সোনাল ডিসাবিলিটি (ইউএনসিআরপিডি)- এটিও একটি আন্তর্জাতিক সনদ- এই সনদটি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেশ স্বাক্ষর করেছে। এই সনদটি স্বাক্ষর করার ক্ষেত্রেও ১৯৯৬ সালের পরের দিকে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম। এটিও একটি মানবাধিকার কনভেনশন- এটির মূল কথা হচ্ছে- আপনি যাই করেন প্রতিবন্ধী মানুষদের বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না।’- বলছিলেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার কর্মী আবদুস সাত্তার দুলাল।
২০১২ সালে ইউএনস্কেপ ডিসাবিলিটি রাইটস চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার কর্মী আবদুস সাত্তার দুলাল। সম্প্রতি কথা হয় বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার কর্মী আবদুস সাত্তার দুলাল- এর সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি জানিয়েছেন একজন প্রতিবন্ধী মানুষ হিসেবে তার এই অর্জন, প্রতিবন্ধীদের জন্য করণীয় এবং প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ- এর কথা। পাঠকদের জন্য আবদুস সাত্তার দুলাল- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।
আবদুস সাত্তার দুলাল বলেন, ইউএনসিআরপিডি-তে যেসব রাষ্ট্রসমূহ স্বাক্ষর করেছে, তারা তাদের রাষ্ট্রগুলোতে প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এখন আমরা এসডিজির কথা শুনছি- কেউ পিছনে পড়ে থাকবে না। এটাও কিন্তু আমরা প্রমোট করেছি। এমডিজি-তে প্রতিবন্ধী মানুষদের কথা ছিল না। এসডিজি-তে এই বিষয়টি তৈরি হয়েছে আমাদের প্রভাবের কারণে। সেখানে ‘নাথিং ইউথ আউট আস-অ্যাবাউট আস’- এইটা আমাদের একটা শ্লোগান। ‘নো ওয়ান লেফট বিহাইন্ড’- কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না- এইটা কিন্তু এসডিজিতে যুক্ত হয়েছে। সতরাং সকলকে নিয়ে আপনাকে এগুতে হবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে- এই সমাজ এই রাষ্ট্রে প্রতিবন্ধী মানুষদের অবদান আছে। আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ, আমি প্রতিদিন খাচ্ছি, বাজার করছি, একটি জামা কিনছি- এতে সরকার পরোক্ষভাবে ট্যাক্স পাচ্ছে। এই ট্যাক্সতো আমি দিচ্ছি। বাংলাদেশে যদি এক কোটি প্রতিবন্ধী মানুষ থাকে- ১৫% ট্যাক্স যদি মানুষের কাছ থেকে সরকার পায়, তাহলে প্রতিবছর সরকার প্রতিবন্ধী মানুষের কাছ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স পায়। এর প্রতিদান সরূপ সরকার যেন এতোটুকু বুঝতে পারে- তারা যেন প্রতিবন্ধী মানুষদের দায়িত্ব নেয়, ভূমিকা নেয়। বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য অনেকগুলো কাজ করেছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছু কাজ করেছেন। আমরা ২০১০ সালে উনার সঙ্গে দেখা করেছি। বিশেষ করে একটি আইন- ‘প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন- ২০১৩’ তিনি অনুমোদন করেছেন। ভাতাটাকে তিনি অনুমোদন করেছেন।
আবদুস সাত্তার দুলাল বলেন, আরও অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের বৃত্তি দিচ্ছে। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের চাকরির ব্যবস্থাও করছে সরকার। আজকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে, তিনি এই প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছেন। মানুষের ভেতরে এই পরিবর্তনগুলো কিভাবে এসেছে, কারণ আমাদের কাজ, আমরা কাজ করেছি। এইটাকে এক সময় দয়ার কাজ মনে করা হতো, করুণা করা হতো। প্রতিবন্ধীদের বাদ রাখা হতো। অনেক ধনী পরিবারে তাদেরকে আলাদা করে রাখা হতো, বেঁধে রাখা হতো। এখন আর সেই জায়গা নেই। এখন পরিবর্তন হয়ে গেছে। অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। প্রতিবন্ধী মানষরা সাড়া বিশ্বে আজকে তারা একত্রিত হয়েছে। প্রতি ৬ জনে একজন প্রতিবন্ধী বলা হয়, এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গত বছরের বিশ্ব প্রতিবেদন অনুযায়ী। এটা সারা পৃথিবীতে এখন সার্বজনীনভাবে বলা হচ্ছে ১৫% মানুষ প্রতিবন্ধী মানুষ।
আবদুস সাত্তার দুলাল প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি ইউএনস্কেপ ডিসাবিলিটি রাইটস চ্যাম্পিয়ন
মন্তব্য করুন
রেহানা আক্তার একসময় শোবিজ অঙ্গনে সাড়া জাগানো 'লাইলী খ্যাত' অভিনেত্রী। যিনি বাংলাদেশের প্রথম সারির অভিনেতা মাফুজ আহমেদ, জাহিদ হাসান থেকে শুরু করে মোশারফ করিম পর্যন্ত সবার সাথে নাটকে অভিনয় করেছেন।পেয়েছিলেন জনপ্রিয়তা ও সেই মেয়েটি এখন ফ্রান্স প্রবাসী, প্রবাসে জনপ্রিয়তায় শীর্ষস্থানীয় একজন ব্লগার। তার ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউবে বর্তমানে ফলোয়ারের সংখ্যা লক্ষাধিক। সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে এই অভিনেত্রীর সাথে কথা হলো বাংলা ইনসাইডারের।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, কোনো দেশ অন্য আরেকটি দেশের শাসন ব্যবস্থা বা সাংবিধানিক ক্ষমতা নিয়ে কথা বলতে পারে না, অধিকার নেই। সে হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলা আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপের সামিল।
শেরাটন হোটেলের লিফটের ১৪ তলায় ওপেন টু দ্য স্কাই একটি জায়গা, ছাদের ওপর। সেখানে দেখলাম একটি মঞ্চ সংস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি- লেখা আছে। মঞ্চের ওপরে দাঁড়িয়ে আছেন কমরেড ফরহাদ মজহার, উন্নয়ন বিকল্প নীতিনির্ধারিনী গবেষণার কর্ণধার এবং আমাদের সতীর্ত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের কৃতি ছাত্র শওকত মাহমুদ। স্বাগত বক্তব্য রেখেছেন কমরেড ফরহাদ মজহার। সেখানে শওকত মাহমুদ একটি ইশতেহার পাঠ করেন- অর্থাৎ একাটি প্রস্তাবনা জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির প্রস্তাবনা। সেখানে ড. ফারহাদ নামের একজন নারী সেখানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেছেন। তারপর সবাইকে নৈশভোজে আ্যপায়িত করা হয়েছে।
‘১৯৯২ সাল থেকে এই সংগঠনের মাধ্যমে আমি জাতিসংঘের সাথে প্রতিবন্ধী বিষয়ক কাজ করেছি, অংশগ্রহণ করেছি। ইউএনস্কেপ- এর অ্যাওয়ার্ডটা এক বারই হয়েছে। এইটা হয়েছে ২০১২ সালে। এই অ্যাওয়ার্ডটা আমাকে দিয়েছে এই কারণে যে, ওনাদের বিবেচনায় আমার কাজের প্রতি তারা সন্তুষ্ট হয়েছে, এটা একটা ভিন্ন রকম কাজ ছিল এবং এই সেক্টরে যারা কাজ করেছেন- তাদের মধ্য থেকে আমার কর্মকাণ্ডটা প্রতিবন্ধী মানুষদের অধিকার প্রতিষ্ঠায়- তাদের উন্নয়নে অবদান রেখেছে এবং প্রতিবন্ধী বিষয়ক তাদের যে মানবাধিকার আছে- সেই কারণেই মূলত আমাকে এই অ্যাওয়ার্ডটি দেওয়া হয়। তাছাড়া ইউনাইটেড ন্যাশন কনভেনশন অন রাইটস অব পার্সোনাল ডিসাবিলিটি (ইউএনসিআরপিডি)- এটিও একটি আন্তর্জাতিক সনদ- এই সনদটি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেশ স্বাক্ষর করেছে। এই সনদটি স্বাক্ষর করার ক্ষেত্রেও ১৯৯৬ সালের পরের দিকে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম। এটিও একটি মানবাধিকার কনভেনশন- এটির মূল কথা হচ্ছে- আপনি যাই করেন প্রতিবন্ধী মানুষদের বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না।’- বলছিলেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার কর্মী আবদুস সাত্তার দুলাল।