ইনসাইড টক

‘প্রথম আলোকে আইনের আওতায় আনা দরকার’

প্রকাশ: ০৪:০২ পিএম, ০৯ এপ্রিল, ২০২৩


Thumbnail বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অভিনয় শিল্পী আহসানুল হক মিনু।

‘যে দৈনিকটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে পারে না। স্বাধীন দেশে থেকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে কটাক্ষ করে কথা বলে, এ ধরনের কোনো গণমাধ্যম এই দেশে থাকার দরকার নেই। এই সরকারের আমলেই প্রথম আলো পত্রিকাটির নিবন্ধন প্রকাশ পায়। তখন থেকেই পত্রিকাটি এই সরকারের বিরুদ্ধেই কাজ করা শুরু করেছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করা মানেই ধরে নিতে হবে, এই সরকারের পক্ষে না। আবার বিএনপিকেও সে মাইনাস করার চেষ্টা করেছে। প্রথম আলোর গতিবিধি প্রকাশ পাওয়াটা খুবই দুষ্কর ব্যাপার। আবার হযরত মুহাম্মদ (সা:)-কে নিয়ে কুটক্তি করেছে, সেটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটার জন্য আবার সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার জন্য সরকারের কাছেও মাফ চায়নি, রাষ্ট্রের কাছেও মাফ চায়নি প্রথম আলো। এটা একটা দূরভিসন্ধি। তাদের হাত কতদূর লম্বা- তা সরকারকেই বের করতে হবে। আমরা চাই এরকম যেন না হয়। এরকম পত্রিকা আমরা চাই না।’- বলছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অভিনয় শিল্পী আহসানুল হক মিনু।     

গত বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম আলো পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল ও চক্রান্তকারীদের শাস্তি চেয়ে মানব-বন্ধন করেছে স্বাধীনতা-সচেতন নাগিরক সমাজ। এই মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রেখেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অভিনয় শিল্পী আহসানুল হক মিনু। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে কটাক্ষ করে একজন শিশুর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রথম আলো যে সংবাদ পরিবেশন করেছিল, তারই প্রতিবাদে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এই মানববন্ধন নিয়েই কথা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অভিনয় শিল্পী আহসানুল হক মিনুর সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন দৈনিকটির স্বাধীনতা ও সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড এবং দৈনিকটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কথা। পাঠকদের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অভিনয় শিল্পী আহসানুল হক মিনুর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল হক মিনু বলেন, যে দেশে থেকে দেশকে অমর্যাদা করবে, এটা আমরা চাই না। এরকম পত্রিকা আমরা চাই না, এরকম পত্রিকা আমাদের রাষ্ট্র যেন দ্রুত বাতিল করে- এটাই চাইব আমরা। কিছুদিন আগে একজন জঙ্গিকে এই পত্রিকা বীর বানিয়েছে। যে ব্যক্তিটি জঙ্গি ছিল, তাকে তারা বীর বানালো। এখন এদের ভাবমূর্তি বোঝা বড় মুশকিল। এরা কোন পথে চলছে, আমার ধারণা হয়, এদের হাতের সংখ্যা কতটুকু আছে, তা জানার দরকার নেই। কিন্তু সরকারকে সচেতন হতে হবে। সরকার যাতে এর হাতটাকে গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সরকার যেন দেশের স্বার্থে এই সংবাদপত্র থাকবে কি না, তার নিশ্চয়তা সরকারকেই দিতে হবে। এই পত্রিকা আমরা চাই না। 

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশটা স্বাধীন করেছি। আমরা চাই সংবাদপত্র দেশের কথা বলবে, দেশের দুঃখ-কষ্টের কথা বলবে। দেশে কোনো অন্যায় হলে, সে কথা বলবে। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে দেশবিরোধী কোনো কথা বলা যাবে না।        

আহসানুল হক মিনু বলেন, এই পত্রিকাটির উৎপত্তি কোথা থেকে? পাকিস্তানের একটি পত্রিকার সাথে যুক্ত হয়ে এই পত্রিকাটির উৎপত্তি। পাকিস্তানের ডন পত্রিকার অর্থ হচ্ছে ভোরের আলো। ডন অর্থ হচ্ছে ভোর, সুবহে সাদিক অর্থাৎ আধার কেটে যে আলোটা হয়, সেটা হচ্ছে ভোর। তার সাথে মিল রেখেই কিন্তু এই পত্রিকা প্রথম আলো। এদের সাথেও যুক্ত আছে এরা। আমার সোজাসুজি কথা, দেশের স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস- এসব জাতীয় দিবসগুলোকে বিকৃত করা চলবে না।

তিনি বলেন, শিশু আইনে একটা নিয়ম আছে, শিশুকে নিয়ে যা-তা কিছু করা যায় না। শিশু আইন আছে, শিশুকে নিয়ে কাজ করতে হলে শিশু আইন মেনেই সেটা করতে হবে। একজন শিশুকে দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে কথা বলানোর চেষ্টা করা- এটা খুবই অন্যায়। সেই কাজটিই করেছে এই পত্রিকা। সেই ক্ষেত্রে আমি বলবো, এই পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল করা উচিৎ। যারা এ ধরনের কাজ করে, এই কাজের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবে সরকার। কারণ এই পত্রিকার নিবন্ধন দিয়েছে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই যদি কাজ করে, তবে রাষ্ট্র সে বিষয়ে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ নিবে। যে কারণে এর প্রকাশনাকে বাতিল করতে পারে। জার্মানিতে যেরকম একটি পত্রিকা জার্মানির বিরুদ্ধে কথা বলেছিল, সে পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল করেছিল জার্মান সরকার। এরকম পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।                  

অভিনয় শিল্পী আহসানুল হক মিনু বলেন, প্রথম আলো বাইরে থেকে শিল্পীদের বিভিন্ন উন্নয়ন করছে দেখা গেলেও তারা শিল্পীদের অকল্যাণে কাজ করে। কল্যাণ কোরাইয়া নামের একজন অভিনয় শিল্পীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানোর মূলে প্রথম আলো। এ কারণে কল্যাণ কোরাইয়ার বাবাও দুঃখে-কষ্টে, অপমানে মারা গেছেন।     

তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে নয়, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে এই সংবাদপত্রটিকে আইনের আওতায় আনা দরকার বলেই আমি মনে করি এবং এ দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।


বীর মুক্তিযোদ্ধা   অভিনয় শিল্পী   আহসানুল হক মিনু   প্রথম আলো  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বঙ্গবন্ধু যেখানে বলেছেন ৪ শতাংশ দিতে, আমরা তার অর্ধেকও পারিনি’

প্রকাশ: ০৪:১৬ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলো থেকে পাস করার তিন বছর পরও ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার থাকছেন। গত রোববার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএসের) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা করেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ভালো শিক্ষার জন্য সব কলেজগুলোতে ভালো এবং দক্ষ শিক্ষক দরকার। পাশাপাশি ভালো পরিবেশ সহ সুযোগ সুবিধা দরকার। কিন্তু আমাদের মেট্রোপলিটন শহরের বাইরে বেশির ভাগ কলেজগুলোর অবস্থা ভালো নয়। ভালো শিক্ষক পাওয়া যায় না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো শিক্ষকতায় কেউ আসতে চায় না। এ সমস্ত কলেজগুলোর লাইব্রেরির অবস্থা করুণ। অনেক কলেজে লাইব্রেরিই হয়তো নেই।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন যে সমস্ত কলেজগুলোতে বিজ্ঞান আছে সেগুলোর সব কলেজগুলো ল্যাবরেটরি সুবিধা নেই। একটা ভালো ল্যাবরেটরি জন্য প্রচুর বিনিয়োগ দরকার। সেটা আমাদের যথেষ্ট নাই। শিক্ষার উন্নয়ন মানে শুধু অবকাঠোমাগত উন্নয়ন নয়। শিক্ষা মান মানে অনেক কিছু। বিশেষ করে লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি এবং সবচেয়ে বড় কথা হলো ভালো শিক্ষক দরকার। কিন্তু বাংলাদেশের যে হারে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে সে হারে আমাদের শিক্ষকের সংখ্যা বাড়েনি। পাহাড়ি দুর্গম এলাকা থেকে শুরু করে চরাঞ্চল সব এলাকাতে এখন কলেজ হয়েছে কিন্তু প্রতিটি কলেজে আমরা দক্ষ শিক্ষক নিশ্চিত করতে পারিনি। প্রয়োজনীয় ল্যাব, লাইব্রেরি নেই। অনেক কলেজ আছে যেগুলো আগপাছ কোন কিছু বিবেচনা না করেই মাস্টার্স চালু করেছে। কিন্তু এগুলো করতে হলে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ব্যাপার। আমরা শুধু সংখ্যার দিকে নজর দিয়েছি। গুণগত মানকে উপেক্ষা করেছি। যার ফলে আজকে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে আমাদের অগ্রাধিকারগুলো কি কি জানতে চাইলে প্রখ্যাত এই শিক্ষাবিদ বলেন, গুণগত মান বাড়ানোর জন্য কোন শর্টকাট পদ্ধতি অনুসরণ করলে হবে না। গুণগত মান বাড়াবে হলে শিক্ষকদের গুণগত মান বাড়াতে হবে আগে। শিক্ষকদের সুযোগ সুবিধা বাড়তে হবে, পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। আমাদের দেশের মেধাবীরা সবাই সরকারি চাকরি দিকে ঝুঁকছে। সবাই আমলা হতে চায়। কিন্তু আমাদের আমলারও দরকার আছে শিক্ষকও দরকার আছে। আবার ভালো সাংবাদিক বা ভালো গবেষকও দরকার আছে। এজন্য শিক্ষা খাতে আমাদের বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বঙ্গবন্ধু সত্তরের নির্বাচনের বক্তৃতায় বলেছিলেন শিক্ষা খাতে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। আমরা সেখানে এখনও ২ শতাংশ দিতে পারিনি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘প্রতিটি মৃত্যু–ইচ্ছা আত্মহত্যার ইঙ্গিত’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘরের দরজা ভেঙে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা চলছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় কী অথবা আত্মহত্যা করতে চাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটির প্রতি পরিবার, সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটুকু—এসব নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদক খাদিজা ভৌমী।

বাংলা ইনসাইডার: মানুষ কেন আত্মহত্যা করে?

অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন: মানসিক বিপর্যয়ের কারণেই বেশির ভাগ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। বিষণ্নতা, ব্যক্তিত্বের সমস্যা, সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, মাদকাসক্তি ইত্যাদি মানসিক রোগের যথাযথ চিকিৎসা না করলে এবং সম্পর্কজনিত জটিলতা, ব্যর্থতা ইত্যাদি মেনে নিতে না পেরে কেউ কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। রেগে গিয়ে বা হঠাৎ আবেগপ্রবণ হয়ে কেউ আত্মহত্যা করলে তাকে আবেগতাড়িত আত্মহত্যা (ইমপালসিভ) বলা হয়। এ ছাড়া সংকল্পিত ও পরিকল্পিত (ডিসাইসিভ অ্যান্ড প্ল্যানড) আত্মহত্যার ক্ষেত্রে যিনি আত্মহত্যা করতে চান, দীর্ঘ সময় ধরে তিনি আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০১৮-১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের করা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একটি জাতীয় জরিপের তথ্য বলছে, দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের গড়ে ১০০ জনের মধ্যে ৭ জনই বিষণ্নতায় ভুগছেন। করোনার পর মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে।

বাংলা ইনসাইডার: কেউ আত্মহত্যা করতে পারেন এটা বোঝার পর পাশে থাকা মানুষের করণীয় কি?

অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন: এমন কোনো টিকা নেই যা দিয়ে বলা যাবে যে কেউ আত্মহত্যা করবে না। সফল মানুষও আত্মহত্যা করতে পারেন। কেউ আত্মহত্যা করার কথা চিন্তা করছেন এটা বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তির জন্য উপযুক্ত ও বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসার উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিই ঠিক করবেন কাউন্সেলিং, ওষুধ কোনটা লাগবে। দৈনন্দিন জীবনের আটপৌরে কথা বললে হবে না। এমন পরিস্থিতিতে ওই মানুষটির আশপাশে যারা থাকবেন, তারা কোনোভাবেই নিজেরা এ সমস্যার সমাধান বা পরামর্শ দেবেন না। সমবেদনা, করুণা দেখাতে গেলে হিতে বিপরীত হবে। ওই ব্যক্তির প্রতি সমানুভূতি প্রকাশ করতে হবে। তাকে বলতে হবে, যে কারও এমন সমস্যা হতে পারে, এর পেছনে তোমার কোনো দুর্বলতা বা দোষ নেই, এই সমস্যা থেকে উত্তরণে যথাযথ চিকিৎসা আছে। প্রথমেই মনে রাখতে হবে, বিষণ্নতা একটি রোগ। ক্যানসার, করোনাসহ অন্য রোগে আমরা যেমন নিজেরা চিকিৎসা না করে যথাযথ চিকিৎসকের কাছে রোগীকে নিয়ে যাই, এ ক্ষেত্রেও তাই করতে হবে। সাদি মহম্মদের মৃত্যুর পর তার ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদসহ অনেকেই বলেছেন, মা ও বোনের মৃত্যুর পর থেকে সাদি মহম্মদ ভেঙে পড়েছিলেন। কর্মময় জীবনে স্বীকৃতি না পাওয়াসহ অন্যান্য আক্ষেপও ছিল। সাদি মহম্মদ বিষণ্নতায় ডুবে গিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে তার স্বজনেরা তাকে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির কাছে নিয়েছিলেন কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। 

বাংলা ইনসাইডার: কেউ আত্মহত্যা করতে চাই, তা অন্যরা বুঝবেন কীভাবে?

অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন: কেউ আত্মহত্যার কথা চিন্তা করলে তার আচরণে সেটা প্রকাশ পায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মৃত্যু আর আত্মহত্যা নিয়ে নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করতে পারে কেউ। নিজের ক্ষতি করা, সব কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা, নিজেকে গুটিয়ে রাখা, নিজেকে দোষী ভাবা, নিজেকে অপাঙ্ক্তেয় ভাবা, সারা রাত জেগে থাকা আর সারা দিন ঘুমানো, সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়া, শখের বিষয় থেকে দূরে থাকা, কোনো কাজে মনোযোগ দিতে না পারাসহ বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। কোনো ব্যক্তির মধ্যে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ ধরে এসব লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকলে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

বাংলা ইনসাইডার: বলা হচ্ছে আত্মহত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য বিষয়। সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে অনেকাংশেই আত্মহত্যা ঠেকানো যায়। এ বিষয়ে কিছু বলেন। 

অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন: আত্মহত্যা প্রতিরোধে যার যার ক্ষেত্র থেকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। শিশুদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা ব্যর্থতাকে মেনে নিতে পারে। শিক্ষার্থীদের সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। সংস্কৃতিচর্চায় উৎসাহিত করতে হবে। সব ধরনের মানসিক রোগ দ্রুত শনাক্ত করে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। পারিবারিক বন্ধনগুলো দৃঢ় করতে হবে। আত্মহত্যার উপকরণ, যেমন ঘুমের ওষুধ, কীটনাশকের সহজপ্রাপ্যতা কমানোর পাশাপাশি প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) ছাড়া ঘুমের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে। সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারলে আত্মহত্যার ঘটনা আর ঘটবেই না, তা বলা না গেলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আত্মহত্যার ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। মূল কথা, এসব লক্ষণ দেখা দিলে ওই ব্যক্তির প্রতি সবাইকে মনোযোগী হতে হবে। মনে রাখতে হবে, পরিবারে যদি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকে, তবে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও আত্মহত্যার ঝুঁকি থেকে যায়, তাই সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহত্যার পর প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা নড়েচড়ে বসেছেন। আত্মহত্যা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। অবন্তিকার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কোনোভাবেই বিচার কাম্য নয়। ভুক্তভোগীকে বেঁচে থেকেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। কোনো জায়গায় প্রতিকার চেয়ে ব্যর্থ হলে অন্য জায়গায় যেতে হবে। একইভাবে সমাজে অন্যায়ের প্রতিকার ও বিচার পাওয়ার সুব্যবস্থাও থাকতে হবে।

বাংলা ইনসাইডার: আত্মহত্যার সংবাদ পরিবেশনে গণমাধ্যমের ভূমিকা কেমন হবে?

অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন: গণমাধ্যমে আত্মহত্যার সংবাদের অতি প্রচার, অপপ্রচার বা অদায়িত্বশীল সংবাদ পরিবেশনে কখনো কখনো আত্মহত্যার ঘটনা বাড়তে পারে। দেশে পরপর দুটো আত্মহত্যার ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, সাদি মহম্মদের ঘটনায় গণমাধ্যমগুলো সংবাদ পরিবেশনে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। তবে অবন্তিকার ক্ষেত্রে তা সেভাবে হয়নি। অবন্তিকার ব্যক্তিগত জীবন বা তাকে গ্লোরিফাই (মহিমান্বিত) করে এমন অনেক কিছু প্রকাশ বা প্রচার করা হচ্ছে। এতে করে এমন বার্তা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে যে অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছিলেন বলেই অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে। অবন্তিকার মতো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আরও অনেকে থাকতে পারেন, তারা এতে করে আত্মহত্যা করতে উৎসাহিত হতে পারেন। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আত্মহত্যার খবর পরিবেশনে গাইডলাইন দিয়েছে। তা মেনে চলতে হবে। আত্মহত্যার খবর নির্মোহভাবে পরিবেশন করতে হবে। তবে গত ১০ বছরে বলা যায়, দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলো এ বিষয়ে অনেক সংবেদনশীল আচরণ করছে।

বাংলা ইনসাইডার: আত্মহত্যা প্রতিরোধে আপনার পরামর্শগুলো জানতে চাই?

অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন: কারও মধ্যে মৃত্যু–ইচ্ছা দেখা দিলে বিদ্রূপ হাসাহাসি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করা যাবে না। প্রতিটি মৃত্যু–ইচ্ছাকে আত্মহত্যার ইঙ্গিত হিসেবে ধরে নিতে হবে। এ সময় বন্ধু হয়ে তাদের পাশে থাকতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে হবে। মনের যত্ন নেওয়াটা যে গুরুত্বপূর্ণ, পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সেটা বোঝাতে হবে। আত্মহত্যার প্রসঙ্গ উঠলে তা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। আত্মহত্যা যে কোনো সমাধান নয়, সেটাও বোঝাতে হবে। সব থেকে বড় কথা, মানসিক সমস্যাকে লোকলজ্জার ভয়ে লুকিয়ে রাখা যাবে না। মনোচিকিৎসকের সাহায্য নিয়ে প্রয়োজন হলে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বিশ্বায়নের যুগে কোন দেশের পণ্য বর্জনের ডাক ভেলকিবাজি’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বা আছে—বিএনপির এধরনের কথাবার্তা স্রেফ তাদের হঠকারিতা। ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে আপনি কি সেটা অস্বীকার করতে পারবেন কিংবা তাদের অবদানকে কোন ভাবে অবমূল্যায়ন করতে পারবেন? এটা কোন ভাবেই সম্ভব না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ভারতের অবদানের জন্যই তারা আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র।

বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান এবং আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের আশঙ্কা নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত কথা বলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়িাম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। পাঠকদের জন্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও কোন বিশেষ শক্তি বা গোষ্ঠীর সমর্থনে বা সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে এদেশের জনগণের ভোটের মাধ্যমে। জনগণের মন জয় করে। সুতরাং বিএনপির যেভাবে কথা বলছে এসমস্ত কথাবার্তা অবান্তর। তারা আন্দোলন করতে যেয়ে খেই হারিয়ে ফেলে এখন আবোল তাবোল কথাবার্তা বলছে। আওয়ামী লীগ এগুলোকে আমলে নিচ্ছে না।

তিনি বলেন, বিএনপির পণ্য বর্জনের আহ্বান ভেলকিবাজি ছাড়া আর কিছু নয়। এখন এই বিশ্বায়নের যুগে কোন দেশের পণ্য বর্জনের ডাক বিএনপির ভেলকিবাজি। প্রতিটি দেশের সাথে প্রতিটি দেশের বাণিজ্য থাকে। আমরা আমদানি করি আবার রপ্তানিও করি। পুরো বিশ্বই এভাবে চলছে পরস্পর পরস্পরের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে দেশের স্বার্থেই। সেখানে যদি বিএনপি এধরনের কথাবার্তা বলে তাহলে তাদের চিন্তা ভাবনা কতটা সংকীর্ণ, দেশ নিয়ে তাদের ভাবনা কি, তারা আসলে দেশের উন্নয়ন চায় কিনা ইত্যাদি বিষয়গুলো চলে আসে। বিশ্বায়নের এই যুগে যেখানে সব দেশই সব দেশের সাথে কানেক্টিভিটি বাড়াচ্ছে সেখানে আপনি একটি দেশের পণ্য বর্জনের আহ্বান করছেন! আপনি কতটা আহমক আপনি বুঝতে পারছেন? এখন মহাত্মা গান্ধীর যুগ নয়। এই সময়ে এসে যদি আপনি মহাত্মা গান্ধীর স্লোগান দেন সেটা সম্ভব নয়। এখন এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সম্পর্কের মূল বিষয়ই হলো বাণিজ্য। আপনি গায়ের চাদর খুলে আগুনে পুড়িয়ে দিলেন আর পণ্য বর্জনের ডাক দিলেই কি লোকে আপনার কথা শুনবে নাকি।

উপজেলা নির্বাচনে সংসদ নির্বাচনের মতো দলীয় কোন সহিংস ঘটনা আশঙ্কা রয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি আবার করছি না উভয়ই। আমরা চেষ্টা করব আমাদের নেতাকর্মীদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখার। তবে যেহেতু নির্বাচন উন্মুক্ত  থাকছে সেজন্য কিছুটা সহিংসতা হয়তো হতে পারে। তবে এটা কোন বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের ওপর সায়মার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্বাস্থ্য খাতের দায়িত্ব পেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। গতকাল তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেছেন। এর আগে বাংলাদেশের কেউই এই দায়িত্বে ছিলেন না। আমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে, আমরা সায়মা ওয়াজেদকে আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে পাচ্ছি। এটা বাংলাদেশ তথা এদেশের জনগণের জন্য একটি বিরাট প্রাপ্তি। সায়মা ওয়াজেদ স্বাস্থ্য খাতে খুব অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিত্ব। আমরা জানি সে অনেক দিন ধরে সারা বিশ্বে অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলেরও সদস্য। তাছাড়া ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ‘অটিজম-বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।

গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তরে সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যার সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তার এই দায়িত্ব গ্রহণ বাংলাদেশের তথা এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য খাতকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে তা নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক এসব কথা বলেছেন।  

অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেন, কমিউনিটি লেভেলে কাজ করার একটা বড় অভিজ্ঞতা সায়মার রয়েছে। তিনি কমিউনিটি লেভেলে স্বাস্থ্যের যে বিভিন্ন সমস্যা এগুলোর ব্যাপারে তার স্বচ্ছ এবং যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমাদের দেশের জনগণের স্বাস্থ্যের যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে তিনি অবহিত আছেন। তিনি নারী ও শিশু নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন এবং এখনো করে যাচ্ছেন। আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে তিনি তার মেধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে একটি লক্ষণীয় পরিবর্তন আনবেন এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তিনি বলেন, সায়মার অধীনে এই অঞ্চলে ১১ টি দেশ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। প্রত্যেক আঞ্চলিক পরিচালকেরই নিজস্ব কিছু অগ্রাধিকার ভিত্তিক কর্মপন্থা থাকে। তিনি প্রত্যেক দেশের সাথে কথা বলে আলাদা আলাদা চাহিদা অনুসারে একটি কর্মপন্থা তৈরি করবেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের সমস্যাগুলো সম্পর্কে যেহেতু তিনি অবহিত আছেন সেজন্য তিনি হয়তো বাংলাদেশের জন্য অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিবেন। বাংলাদেশে মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার শুধু বাংলাদেশেই নয়, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। এটাকে যে ম্যানজে করা যায়, এটি যে ভয়ের কোনো বিষয় নয়, এই বাচ্চারাও যে সমাজে অবদান রাখতে পারে সেটি সায়মা ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছেন এবং মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন। এছাড়া নন কমিউনিকেবল ডিজিজ নিয়েও কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। আমাদের দেশে স্বাস্থ্য খাতে প্রশাসনিক দিকটা এখনো অনেক দুর্বল সেখানে ডব্লিউএইচওর মাধ্যমে সায়মা বাংলাদেশে বড় অবদান রাখতে পারেন। কমিউনিটি ক্লিনিক মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এটাকে এখন মানুষের কাছে স্থায়ী রূপ দেওয়ার দাবিদার রাখে। এটিকে আরও বেশি জনবান্ধব করা, সেবার মানকে উন্নত করার ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক অফিস অবদান রাখতে পারে।

ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, ডব্লিউএইচও প্রত্যেকটা সদস্য রাষ্ট্রের টেকনিক্যাল পার্টনার হিসেবে কাজ করে। তাদের নিজস্ব কিছু কর্মসূচি থাকে আর কিছু কর্মসূচি থাকে সরকারের লাইন ডিরেক্টরের মাধ্যমে করে থাকে। তারা দ্বি-বার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে। ডব্লিউএইচওর কাছে সরকার যেকোনো টেকনিক্যাল সাহায্য চাইতে পারে। এক্ষেত্রে ডব্লিউএইচও তখন সরকারকে সাহায্য করে। ডব্লিউএইচও অফিস বাংলাদেশে আছে, যেটি আঞ্চলিক অফিসের অধীনে। আঞ্চলিক অফিসের আলাদা বাজেট থাকে। আঞ্চলিক পরিচালকের কিছু এখতিয়ারভুক্ত থাকে। আঞ্চলিক পরিচালক চাইলে একটি দেশের সমস্যাগুলো দূর করতে পারে। আমি মনে করি এ ব্যাপারে আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশের ওপর সায়মার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ করার ক্ষেত্রেও স্বস্থ্যের যে একটা বড় বূমিকা রয়েছে সেখানে সায়মা ওয়াজেদ বেশি দৃষ্টি দিবে।


 


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘টিআইবি এখন রিজভীর ভূমিকা পালন করছে’

প্রকাশ: ০৪:৩৪ পিএম, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, টিআইবি এখন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভূমিকা পালন করছে। টিআইবি এবং সিপিডি যারা করে এরা একই ঘরানার। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু জনগণের অর্থায়নে করার ঘোষণা করেন সে সময় এরা বলেছিল বাংলাদেশে এটা অসম্ভব। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করলে অর্থনীতির একটা ধস নামবে, অর্থের অপচয় হবে। টিআইবি তো কোন সময় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভালো চোখে দেখে না। টিআইবি’র এখানে (বাংলাদেশ) যারা নেতৃত্ব দেন তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে মনগড়া বিবৃতি দেয়। তারা জনগণের চোখের ভাষা বুঝে না বরং তারা পিছনের দরজা দিয়ে কোনো রকম নিজের গাড়িতে একটি পতাকা লাগানো যায় কিনা সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে এবং এই স্বপ্নে বিভোর থাকে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে টিআইবি মনগড়া তথ্য-উপাত্ত জাতির সামনে হাজির করে জাতিকে বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে টিআইবি’র ব্যাখ্যা, নির্বাচন পরবর্তী ষড়যন্ত্র এবং দলের সাংগঠনিক অবস্থান ইত্যাদি নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে আলাপচারিতায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এসব কথা বলেছেন। 
নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে এস এম কামাল হোসেন বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা সবসময় ষড়যন্ত্র করতে থাকে। দেশ স্বাধীন হওয়ার বঙ্গবন্ধু যখন দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানালেন তখন একটা অংশ ১০ টাকার কাগজ খুলে ২০০ টাকার জাল পরিয়ে বাসন্তীর নাটক সাজিয়েছিল। তাদের আন্তর্জাতিক মোড়লরা তখন বিদ্রুপ করে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিল। এখন আবার সেই শক্তি এবং দেশের সেই এজেন্ডরাই আজকে নতুন করে যখন বঙ্গববন্ধু তনয়া ২০৪১ সালে স্মার্ট, উন্নত এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন সেই মুহুর্তে আবার এই শক্তি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখবে। এবং তারই অংশ হচ্ছে টিআইবির এই বক্তব্য।

নির্বাচনের পরবর্তীতে বেশ কিছু পরাজিত প্রার্থী টিআইবি’র মতোই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে যারা হারে বা পরাজিত হন তারা সবসময় কোন না কোন মন্তব্য করেন। আমি মনে করি আমাদের দলের ভেতর থেকে যারা নির্বাচন করেছে তারা যখন এই মন্তব্য করে তখন আসলে তারা তাদের বিবেকের সাথে প্রতারণা করে আবেগ তাড়িত হয়ে এ ধরনের মন্তব্য করে। আমি মনে করি এখন তারা এই বক্তব্যের সাথে একমত হবে না।

নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার বিরুদ্ধে জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের বক্তব্য কি জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, এটা জনগণ নির্ধারণ করবে যে বাংলাদেশে এবার কেমন নির্বাচন হয়েছে। সুশীল সমাজ বা টিআইবি এদের কথায় জনগণ রাস্তায় নামে না। বিএনপির কথাও জনগণ বিশ্বাস করে না। অতীতের সকল নির্বাচনই কোন না কোন ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল, ত্রুটিপূর্ণ ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সব নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। কিন্তু এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। হয়তো কোন কোন ক্ষেত্রে ত্রুটি থাকতে পারে কিন্তু তুলনামূলক ভাবে অতীতের সকল নির্বাচনের চেয়ে এই নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছে এবং সংঘাতের ঘটনা কম হয়েছে, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন