বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, ‘আমার সামাজিক অবস্থান কি আমাকে ফেরত দিতে পারবেন?’ তিনি বলেছেন, ‘আমি যা তার জন্য ঘৃণিত হতে আমার আপত্তি নেই। আমি যা নই তার জন্য শ্রদ্ধা চাই না।’ বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
২০ সেপ্টেম্বর থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এর মধ্যে তিনি কোন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে সাক্ষাতকারই হলো গণমাধ্যমের সঙ্গে তার প্রথম কথোপকথন।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যে, আমি যখন আনন্দিত তখন আমার বন্ধুরা হয় উদ্বিগ্ন। আবার আমি যখন উদ্বিগ্ন তখন আমার বন্ধুরা হয় আনন্দিত। এটাই নিয়ম। এজন্য আমি যা হচ্ছে তা নিয়ে মোটেও বিচলিত নই। আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মিথ্যের ভিতরে থাকা সত্যি হলো ফিকশন। যদি সত্যিটা বলি সেটা হবে ফিকশন। এজন্য আমি বেশি কথা বলছি না।’
তিনি বলেছেন, সমালোচনা ছাড়া কেউ সফল হতে পারেন না। অকর্মণ্যদের সমালোচনা হয় না।
সম্প্রতি ক্যাসিনো বাণিজ্য এবং টেন্ডার বাণিজ্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টুইন টাওয়ারে যখন হামলা হয়েছিল তার আগে কি কেউ পূর্ভাবাস পেয়েছিল? ঢাকায় যখন হলি আর্টিজনের ঘটনা ঘটলো তার আগে কি কেউ জানতো? কাজেই এরকম যে ঘটনা ঘটছে সেটা অভিযোগ না পেলে আমার জানার বিষয় নয়।
তিনি বলেন যে, শেখ হাসিনার কাছ থেকে অন্তত আমি একটি উপহার পেয়েছি সেটা হলো ‘উৎসাহ’। জীবনে একটি স্বীকৃতির মূল্য অনেক কিছুর চেয়ে অনেক মূল্যবান।
বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চাই না। অভিযোগ করে সহানুভূতি পাওয়ার নাম করুণা। আমি কারো করুণার পাত্র হতে চাই না। তিরি আরও বলেন যে, আওয়ামী লীগের অনেক নেতারাই বলছে যে ছাত্রলীগের ৫-৬ জন ছাত্রলীগকে নষ্ট করেছে। কিন্তু পুরো ছাত্রলীগ খারাপ নয়। তাহলে যুবলীগের ৫-৬ জন যুবলীগকে নষ্ট করেছে, এই কথাটা কেউ বলছে না কেন? মানুষের অনুকম্পা আমার দরকার নেই।’
তিনি বলেন যে, ‘প্রথমে আমাকে জয় করতে হবে। আমার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। আমার ধারণা এই ব্যাংক হিসাব তলব করার পরে তারা দেখবে। দেখে হয়ত তারা দুদক, নয়তো আয়কর বিভাগকে বলবেন। এটাই হলো বিচারিক প্রক্রিয়া। কাজেই যদি এই প্রক্রিয়ায় দেখা যায় যে আমার কোনো দোষ নেই, আমার কোনো অবৈধ অর্থ নেই- তখনই আমি বিজয়ী হবো। শুধু বিজয়ী হলেই চলবে না, জয়ের সঙ্গে ক্ষমাও করতে হবে। ক্ষমার পরে ভালোবাসতে হবে। তাহলেই আমি আনন্দ করতে পারবো।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, একটা পত্রিকায় দেখলাম যে র্যাব প্রধান বলেছেন, আতঙ্ক গুজব ছড়ানোর দরকার নেই, তদন্ত চলছে। যখন তদন্ত চলছে তখন কারো চরিত্রহনন করছে, সামাজিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে যখন দেখা যাবে তিনি নির্দোষ তখন কি তার এই সম্মান ফেরত দিতে পারবেন? এই কথা শুনে আমি মুগ্ধ হয়েছি।
ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন যে, আমি তো জানি আমার কর্ম ভালো। সত্য একদিন বেরিয়ে আসবেই। তবে তিনি বলেন যে সবাই একসঙ্গে সব বিষয়ে পারঙ্গম হতে পারেন না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে আমি দেখেছি যে তাঁদেরকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সেই দায়িত্ব তারা পালন করতে পারেন কিনা। পলিটিক্স ইজ আর্ট অফ কম্প্রোমাইজ। কম্প্রোমাইজ মানে আপস নয়, মানে সমঝোতা। আমি দেখেছি যাকে এই কাজটা দেয়া হয়েছে সে কি কাজটা ভালোভাবে করছে, সমঝোতা করে করছে?
তাঁর বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্যের অভিযোগ সম্বন্ধে তিনি বলেন, এমপিদেরকে বলেছি কমিটি দিতে এবং প্রত্যেকটা এলাকায় নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে নির্বাচনের মাধ্যমে। সেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে স্থানীয় এমপি, মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন এবং যারা যারা প্রার্থী ছিল তারা নিজেদেরকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আমি তাঁদেরকে সময় দিয়েছি যে তারা সমঝোতা করতে পারেন কিনা নিজেদের মধ্যে। দুই তিনজন হয়তো বসে গেছে। আমি নির্দেশ দিয়েছি যে, ভোটের পরে মিছিল করা যাবে না। অনেক মন্ত্রীদের এলাকাতেই এরকম ভোটের মাধ্যমে কমিটি হয়েছে।
একটি পত্রিকায় প্রকাশিত ‘ভাগ্যগুণে ওমর ফারুক চেয়ারম্যান’ রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, একশ এগারো বার পড়েছি, ৭/৮দিন ধরে পড়েছি। পড়ার পর অভিভূত হয়েছি। ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, আমি কিন্তু পজিটিভ চিন্তাভাবনার লোক। এই পত্রিকাটি লিখেছে আমি ৭০ সালে টেন্ডু বিড়ির ব্যবসায়ী। তারমানে আমি ৭০ সাল থেকে ব্যবসায়ী। আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম আমি বিড়ি শ্রমিক লীগ করেছিলাম। এই পত্রিকার রিপোর্ট দেখে আমার মনে হলো ইউসুফ সাহেব আমাকে বঙ্গবন্ধুর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু তখন আমাকে বিড়ি শ্রমিক করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
এই বিড়ি শ্রমিকটা এমন একটা জিনিস যেখানে ৭ বছরের শিশুরা করে কিংবা অসুস্থ দাদু সেও একজন বিড়ি শ্রমিক। এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এসএম ইউসুফ সাহেবের হাত ধরে আমি বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়েছিলাম। আমিতো নিজেকে ধন্য করছি যে, বঙ্গবন্ধু আমাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছিল।
আবার দেখুন ওই প্রতিবেদনে আমি যে ৬৭ থেকে ছাত্রলীগ করছি ওই কথাটি বলেনি। ওই পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে যে আমি ৪৬ কোটি টাকার ঋণখেলাপি। আমি যদি ক্যাসিনোর টাকাই খেতাম তাহলে ৪৬ কোটি টাকার ঋণখেলাপি হলাম কি করে?
তিনি বলেন, খ্যাতি দুপ্রকার; সুখ্যাতি অথবা কুখ্যাতি। যারা খ্যাতির শিখরে উঠেছে তাদের পদের দরকার নেই। দরকার নেই মন্ত্রীত্বের বা চেয়ারম্যান হওয়ার।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।