ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা এবং আমাদের অক্ষমতা


Thumbnail শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা এবং আমাদের অক্ষমতা

দুই বছর পরে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এখন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। শেখ হাসিনা যেভাবে চান অথবা জনগণ যেভাবে চায় সেভাবে হয়তো সম্পূর্ণ হয়নি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে কোনো গণতান্ত্রিক দেশের দিকে তাকালেই দেখা যাবে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিতে, গণতন্ত্র সুসংহত করতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঠিকভাবেই কাজ করার জন্য সম্পূর্ণ তৈরি হতে সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে আমাদের নির্বাচন কমিশনও অন্যতম প্রতিষ্ঠান যেটি সাধারণ নির্বাচন থেকে শুরু করে যে কোনো নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নির্বাচন কমিশন সব সময় তাদের সঠিক দায়িত্ব যে ঠিকমতো পালন করেছে তা বলা বুকে হাত রেখে সম্ভব হবে না। তাদেরও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এর মধ্যেই কেউ অল্প অল্প প্রকাশ্যে করছেন কিন্তু ভিতরে-ভিতরে সবাই আলোচনা শুরু করেছেন। সেটি হচ্ছে, আমাদের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন কেমন হবে। নির্দ্বিধায় বলা চলে, পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে যার ভোট যাকে তিনি দিতে চান তাকেই দেবেন এবং এ সুযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচন হয়ে গেলে কিছু আলাপ-আলোচনা বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশেই হয়। আমাদের দেশে পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, নির্বাচনে জনগণের আকাঙ্খিত প্রার্থী শেষ পর্যন্ত নির্বাচিত হবেন। অর্থাৎ যিনি নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য নন তিনি কোনো একটি ওহি পেয়ে নির্বাচিত হবেন তা সম্ভব হবে না। এর মানে এই নয় যে একশ ভাগ নির্বাচনই সঠিক হবে, তা কোথাও সম্ভব নয়। তবে মোটামুটিভাবে নির্বাচন সঠিকভাবে পরিচালিত হবে। অনেকে এও বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এ নির্বাচন যেটা আমাদের দুই বছর পরে হবে তাতে তিনি কী ভূমিকা পালন করবেন। এটা নির্দ্বিধায় বলা চলে যে শেখ হাসিনা নির্বাচন যাতে নির্বাচনের মতো হয় গণতান্ত্রিক পথে হয় তার জন্য আন্তরিক। তিনি যখন দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে, তখন তাঁর আকাঙ্খা ছিল যার ভোট তিনি দেবেন, যাকে খুশি তাকে দেবেন। তিনি তা প্রতিষ্ঠা করে চলেছেন।

অনেকেই বলেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতার উৎস কী? এক কথায় এর উত্তর- জনগণ। আমরা তাঁর বিগত দিনের যেসব কাজকর্ম দেখেছি এবং তিনি যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, যেভাবে যে কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হতে দিচ্ছেন তাতে এটা স্পষ্ট জনগণই তাঁর ক্ষমতার উৎস। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, চারজন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একজন সম্পর্কেও সামান্যতম কোনো নেতিবাচক আলাপ-আলোচনা কোথাও হয়নি। অর্থাৎ সবচেয়ে যোগ্যদেরই রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন। দেশে যেটাই হোক না কেন, সরাসরি শেখ হাসিনার সেখানে কোনো হাত থাকুক বা না থাকুক, দায়দায়িত্ব কিন্তু তাঁর ওপরে পড়ে। আমি যদি ঘুরিয়ে বলি যে ভালো কাজটির কৃতিত্ব আমরা সবাই নিতে চাই কিন্তু যে কাজটি সঠিকভাবে হয় না তার সব দায়িত্ব সঠিকভাবে না হওয়ার জন্য আমরা দায়ী করি প্রধানমন্ত্রীকে। এটা একটা উদাহরণ যে আমাদের জুডিশিয়ারি, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং পার্লামেন্ট- এ তিনটি অঙ্গকেই তিনি সমানভাবে শক্তিশালী ও প্রতিষ্ঠিত করে চলেছেন। এই কারণের জন্যই নির্বাচন সঠিকভাবে হবে। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যতটুকু সম্ভব ততটুকু তিনি করবেন এবং সফল হবেন। শেখ হাসিনা সম্পর্কে অনেকে অনেকভাবে মূল্যায়ন করেন। কিন্তু একটি মূল্যায়ন অনেকেই সঠিকভাবে করেন তিনি কাজটি করার পরে। তিনি যখন যে কাজটি সঠিকভাবে করেন, কাজটি করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত অনেকেই বুঝতে সক্ষম হন না যে তিনি শেষ পর্যন্ত কাজটি সঠিকভাবেই সম্পন্ন করতে সক্ষম হবেন। মোটামুটিভাবে এর ব্যতিক্রম প্রায় কোনো ক্ষেত্রেই নেই। এজন্যই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে অনেকে বলছেন এবং আলাপ-আলোচনা করছেন যে আওয়ামী লীগ সংগঠন হিসেবে এখন দুর্বল হয়ে গেছে। আমি নিজেও বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগের যে রকম শক্তিশালীভাবে চলা প্রয়োজন সেখানে কিছু ঘাটতি আছে। কিন্তু আমরা অচিরেই দেখতে পাব যে, সে ঘাটতিও ঠিক করে ফেলেছেন। অর্থাৎ শক্তিশালী আওয়ামী লীগকেই আমরা দেখব আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে এবং সেখানে আওয়ামী লীগ সংগঠন হিসেবে কোনো উল্লেখ করার মতো দুর্বলতা আমরা দেখতে পাব না।

অনেকে লেখালেখি করেন প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন করবেন কি না। আমাদের পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে, গণতন্ত্র শক্তিশালী এবং দেশের উন্নতি ঠিকমতো করতে হলে কোন মন্ত্রীকে দিয়ে কীভাবে কাজ করাবেন তা প্রধানমন্ত্রী ভালো করেই বোঝেন। আমাদের যে বিচার সে বিচার অনেক সময় একপেশে হয়। যেমন আমি যখন ঢাকার কোনো রাস্তা দিয়ে গাড়িতে যাই তখন আমি ওই রাস্তার অবস্থাই শুধু বুঝতে পারি। কিন্তু নেত্রী যদি ওই শহরের ওপর হেলিকপ্টার দিয়ে ঘোরেন তাহলে কিন্তু তিনি সব রাস্তার অবস্থা বোঝেন। সুতরাং আমার বিচার হবে একটি রাস্তার অবস্থা দেখে আর শেখ হাসিনার বিচার হবে সব রাস্তার অবস্থা দেখে, পর্যালোচনা করে। সুতরাং সার্বিকভাবে যেহেতু আমরা গণতন্ত্রে আছি সেহেতু যে কোনো জায়গায় যে কোনো মন্ত্রণালয়ে কোনো দুর্বলতা বা যেটাই থাকুক সেটা দেখা তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সুতরাং আমার মনে হয় সে দায়িত্বটা আমরা তাঁর ওপরই ছেড়ে দিই এবং তা ছেড়ে দেওয়া হবে যুক্তিপূর্ণ। কেননা তিনি বুঝবেন যে কোন মন্ত্রীকে দিয়ে কখন কোন অবস্থায় কীভাবে মন্ত্রণালয় চালাতে হবে। আগত দিনে আপনারা দেখবেন যখন যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে সঠিকভাবে সেভাবেই প্রধানমন্ত্রী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। অনেক মন্ত্রীর নামও কিন্তু একেবারে সাধারণ মানুষ না-ও জানতে পারে, এও ঠিক। কিন্তু এ কথাও সত্য, সেই মন্ত্রণালয়ের কাজ কি আপনারা কখনো পর্যালোচনা করে দেখেছেন সে কাজে কোনো গাফিলতি হচ্ছে কি না? আমি তো দেখি রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি অঙ্গ সঠিকভাবে চলছে। তা না হলে আমরা কী করে আজ মধ্য আয়ের দেশ হলাম? আমরা কী করে সামনের দিকে উন্নত দেশে পরিণত হচ্ছি? মানবাধিকার থেকে শুরু করে প্রতিটি জায়গায় আমাদের উন্নতি হচ্ছে। হ্যাঁ, কিছু কিছু জায়গায় হয়তো কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে, যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের দায়িত্ব যেভাবে পালন করা প্রয়োজন, অর্থাৎ কী দায়িত্ব পালন করলেন তা কি জনগণকে দেশে এবং বিদেশে জানানোর প্রয়োজন সেটা সঠিকভাবে অনেক ক্ষেত্রে জানতে সক্ষম হচ্ছেন না। উদাহরণ হিসেবে মানবাধিকার কমিশনের কথাই বলি। মানবাধিকার কমিশনকে আরও সোচ্চার হতে হবে। যেমন এর আগে মিজানুর রহমান ছিলেন। তিনি কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় অন্ততপক্ষে এর থেকে বেশি ভোকাল ছিলেন। সুতরাং এসব প্রতিষ্ঠানে যারা দায়িত্ব গ্রহণ করেন তাদের মিউ মিউ করে চললে হবে না। এটা কোনো আমলার কাজ নয়। এ কাজটি এমন লোকদের দিতে হবে যারা এ সম্পর্কে জানেন, বোঝেন। আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, এখন মানবাধিকার কমিশনে প্রয়োজনে সময় শেষ না হলেও একজন বিচারককে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককেও দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। অথবা যারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন কিন্তু সরাসরি দলের সঙ্গে যুক্ত নন তাদেরও দেওয়া যায়। কারণ তাহলে আমি মনে করি তারা এ দায়িত্বটি আরও ভালোভাবে পালন করতে পারবেন।
শেখ হাসিনার কিন্তু সব দিকেই দৃষ্টি আছে। কেউ যদি মনে করেন তাঁর দৃষ্টি কোনো দিকে ঠিকমতো নেই তাহলে ভুল করবেন। কারণ একটি পলিসি নিয়ে তিনি কাজ করেন। তিনি হইচই না করে বড় কিছু না করে বরং একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে এখন বর্তমান যুগে বুদ্ধিভিত্তিকভাবে রাজনীতি করেন। দেশ চালানো থেকে শুরু করে প্রত্যেক জায়গায় বুদ্ধিভিত্তিক সিদ্ধান্তই জয়ী হয়। তিনি বুদ্ধিভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেই প্রতিটি কাজ করেন। যার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেমন আমি আপনাদের আমার ব্যক্তিগত উদাহরণ হয়তো হয়ে যাচ্ছে তবু দিচ্ছি, কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্ব আমার ওপর দিয়ে এখনো এই বয়সে এসে তিনি আস্থা রেখেছেন। কেননা কমিউনিটি ক্লিনিক শুধু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য। যাতে তারা কমিউনিটি ক্লিনিক চালায় সেজন্য না। তার সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে যাতে করে তারা বুঝতে পারে যে শেখ হাসিনা সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য স্বাস্থ্যব্যবস্থা শুরু করে আরও দেশের কী কী উন্নতি করছেন যেমন পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, রাস্তাঘাট চার লেনের জায়গায় ছয় লেন, আজকে ইলেকট্রিসিটি ফেইলর বলতে নেই এ রকম আরও অনেক উদাহরণ আছে আমি দিতে চাই না। যতগুলো স্পেশালাইজড হাসপাতাল হয়েছে যেমন ক্যান্সার ইনস্টিটিউট, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিটি কিন্তু শেখ হাসিনার অবদান। সুতরাং তিনি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এজন্যই সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে যে শেখ হাসিনা থাকলেই সব ঠিক আছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন কি থাকবেন না তা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু যেহেতু অতীত কাজ এবং বর্তমান কাজ প্রমাণ করে শেখ হাসিনার সমকক্ষ কোনো রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে তো নেই, বিশ্বে খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। আমাদের দেশের রাজনীতি অনেক উন্নত দেশের চেয়ে কঠিন। যেমন একটি উদাহরণ দিই। আমেরিকার মতো জায়গায় যখন পুলিশের গুলিতে কেউ মারা যায় তখন তারা টার্ম ইউজ করে পুলিশ এমন একটা পরিস্থিতিতে পড়েছিল যে নিজেকে রক্ষা বা জনগণকে রক্ষার জন্য গুলি করতে বাধ্য হয়েছে। আর আমাদের দেশে হলে সেটাই মিডিয়ায় লেখা হয় যে বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে। দেখেন একইভাবে ভাষার পার্থক্যের কারণে আমাদের এখানে হয়ে যায় যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একই জিনিস করা হয় আইন রক্ষার জন্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও অনেক লোক নিখোঁজ হয় তখন তাদের ব্যাপারে গুম শব্দ ব্যবহার করা হয় না। তাদের ব্যাপারে আলাদা শব্দ ব্যবহার করা হয়। আমি উদাহরণ হিসেবে বলছি, এ বিষয়গুলো আমাদের কিন্তু লক্ষ্য করতে হবে। র‌্যাব আজ একটি সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠান এবং এ প্রতিষ্ঠান সুসংগঠিত হওয়ার ফলে আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে এটা তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। হারিয়ে যাওয়া মানেই গুম নয়, এটা মনে রাখতে হবে। সবারই মনে থাকার কথা ফরহাদ মজহার খুব নামকরা লেখক। তিনিও হারিয়ে গেলেন। তারপর দেখা গেল কি তিনি এক বান্ধবীর সঙ্গে খুলনায় গেছেন। এ রকম অনেক ঘটনাও ঘটে। সুতরাং আমাদের এসব বিষয় পুরোটা না জেনেই আমরা যখন মন্তব্য করি তখন তা দেশের বিরুদ্ধে যায়।

এভাবে সব ক্ষেত্রে যে উন্নতি হচ্ছে তার বিরুদ্ধে যেন ষড়যন্ত্র না হয় সেজন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে আমাদের যে ডেমোক্র্যাটিক প্রসেস তাতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। এখন কোনো দল যদি মনে করে তাদের নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা নেই তাহলে তারা অসাংবিধানিক পথে জেতার বা ক্ষমতা গ্রহণের চেষ্টা করলে তা হবে অনুচিত। বোঝা উচিত যারা দলীয় রাজনীতি করেন অসাংবিধানিক পথে ক্ষমতা আসাকে সমর্থন করা তাদের পক্ষে উচিত হবে না। কারণ অসাংবিধানিক পথে যারা ক্ষমতায় আসে তারা কোনো দিন রাজনৈতিক দলের  কাছে ক্ষমতা প্রদান করে না। এতে মানুষেরও কোনো উপকার হয় না।

লেখক : প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা।


জাতীয় নির্বাচন   প্রধানমন্ত্রী   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   মানবাধিকার কমিশন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন


Thumbnail

১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার।  জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?

১৯৯৫ সালে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেই, ১৭তম বিসিএস। জীবনে একবারই এই পরীক্ষা দেই। উত্তীর্ণ হই। সাড়ে আট বছর চাকুরী করেছি, ছেড়েও দিয়েছি । সে অন্য প্রসঙ্গ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ল্যাপটপ কি ? অপশন ছিল- ছোট কুকুর, পর্বতারোহন সামগ্রী, বাদ্যযন্ত্র ও ছোট কম্পিউটার। উত্তর কি দিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে যে, আমি উত্তরের জায়গায় ছোট কম্পিউটারে টিক দেইনি। জীবনে যে জিনিসের নামই শুনিনি তাতে টিক দেই কেমনে ? সেকালের কোন গাইড বইতে এ ধরণের কোন প্রশ্ন বা তার উত্তর নেই বলে শুনেছি। পরীক্ষার্থীদের প্রায় ৯৯ ভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। গাইড পড়ে এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যারা আধুনিক প্রযুক্তি বা অনাগত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যান ধারণা রাখে তারা সঠিক উত্তর দিয়েছিল।

ঘটনাটি মাথায় এলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখে। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী হুড়োহুড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঢুকছে। শুনলাম তারা আসন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিবে। ভিডিওটি আবার দেখার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করলাম- 'ঢাবি লাইব্রেরিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়'। সেখানে দেখি শত শত খবর। প্রতি বছর নাকি এমনটি হয়। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুড়োহুড়ি। পরীক্ষার আগে নাকি সেখানে এমন যুদ্ধ চলে। বিসিএস কি দু এক মাস বা দু এক বছরের প্রস্তুতির ব্যাপার ? একবার পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার মতে, এর জন্য সমগ্র শিক্ষা জীবন ধরে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। আমার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।

ছোট কাল থেকে নিয়মিত অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া প্রয়োজন। জগৎ সংসার, দেশ বিদেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, খেলাধুলা বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা দরকার। কোন একটি দেশি বা বিশ্ব ইভেন্ট চলছে। সেটি চলাকালে দৈনন্দিন খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি ওই ইভেন্টের অতীত জেনে নিলেন। কবে থেকে ইভেন্টটি চলছে, কোথায় সেটি শুরু হয়েছিল, সেটি জেনে নিলেন। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লে বা টিভি সংবাদ দেখলে সেগুলি আপনা আপনি জেনে যাবেন।

তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমি নিয়েছি এক সপ্তাহের। তাও ইন্টার্নি চলাকালে ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। আপনি এর জন্য সর্বোচ্চ এক মাস বরাদ্ধ রাখতে পারেন। বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস অংশে কিছু সাল মনের মধ্যে গেঁথে নেয়ার জন্য গাইড বইটি একটু চোখ বুলাতে পারেন। যে সব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো একটু দেখতে পারেন। অংকের ফর্মুলা গুলো একটু ঝালাই করে নিতে পারেন। সমসাময়িক বিশ্ব বিষয়ে অনেকের দুর্বলতা থাকে। সংবাদপত্রের এ অংশটুকু প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ অধ্যায়টিও দেখে নিতে পারেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে যদি এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার দুর্বলতা অনেক। বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকে আপনার প্রস্তুতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মতিউর রহমানই প্রথম আলো বিক্রির প্রধান বাঁধা?


Thumbnail

দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

শুধু কর্ণফুলী গ্রুপই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করতে স্কয়ার গ্রুপের সাথেও বেশ অগ্রসর হয়েছিলেন মতিউর রহমান। এর মধ্যে বসুন্ধারাসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমার জানা মতে সর্বশেষ এস আলম গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য বেশ অগ্রসর হয়েছে এবং তারাই এখন সবচেয়ে অগ্রগামী। কিন্তু এস আলম গ্রুপ কেনার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। কারণ উনি দেখছেন যে, একমাত্র কর্ণফুলী ছাড়া অন্য যে কোন গ্রুপে গেলে তার সম্পাদক পদের নিশ্চয়তা নেই।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, যারাই ‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করুক না কেন, তারা মতিউর রহমানকে প্রথম দিকে রাখলেও পরবর্তীতে তারা পরিবর্তন করবে। যদি প্রথম আলোতে কেউ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন, আমার ধারণা আনিসুল হক আসতে পারেন। কারণ আনিসুল হক সবার কাছে যেমন সম্মানিত তেমনি জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি যদি এস আলম গ্রুপ কিনে নেয় তাহলে প্রধান বাঁধা হবে মতিউর রহমান। কিন্তু তার বাঁধা টিকবে না। কারণ কোন প্রতিষ্ঠানের যদি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ‘প্রথম আলো’ নিজেদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। সাধারণত যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা দেখবে। সরাসরি না হলেও প্রথম আলোর মতিউর রহমান এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন। যদিও মতিউর রহমান বিভিন্নিভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে, এতে উনার কোন আগ্রহ নেই। 

তবে এর আগে থেকেই কিছু গণমাধ্যমে এসেছিল যে, মতিউর রহমন ও ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম এই দ্বন্দ্বে জড়িত রয়েছেন। যদিও বিষয়টি তাদের মধ্যকার বিষয়। কিন্তু এখন প্রথম আলো বিক্রিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মতিউর রহমান। অচিরেই এই বাঁধা অতিক্রম করে ‘প্রথম আলো’ বিক্রি হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি কিনবে এস আলম। কারণ এস আলম একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসাতেই যুক্ত হচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন না। বরং সফল হচ্ছেন।

‘প্রথম আলোর’ কেনার জন্য দেশে যেসব কর্পোরেট হাউজগুলো আছে তাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে এক একজনের আগ্রহ একেক কারণে। কেউ চান প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞ জনবলের কারণে, আবার কিছু কর্পোরেট হাউজের ইচ্ছে হলো ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে আনা। এসব বিভিন্ন কারণে আগ্রহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে আমার বিশ্বাস প্রথম আলো বিক্রিতে যে প্রধান বাঁধা মতিউর রহমান। তার বাঁধা টিকবে না। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি একটা কর্পোরেট হাউজের হাতেই যাবে। আমার ধারণা মতে, এস আলম গ্রুপই প্রথম আলোকে কিনতে সক্ষম হবে। আমরা হয়ত কয়েক মাসের মধ্যেই দেখব যে, প্রথম আলোর নতুন মালিক হিসেবে আরেকটি কর্পোরেট হাউজ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোতে বর্তমানে যারা অভিজ্ঞ সাংবাদিক আছেন যারা শিক্ষিত তাদেরকে ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ লোকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

আমার ধারণা, এ পর্যায়ে প্রথম আলো বিক্রি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এমনকি মতিউর রহমানের চেষ্টাও সফল হবে না। তবে আমার সবসময়ের আকাঙ্খা, সংবাদপত্রের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরি যেন অবশ্যই নিশ্চয়তা থাকে। কারণ এরা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিজেদেরকে একটা পর্যায়ে এনেছেন আর এদের চাকরি অবশ্যই থাকতে হবে এবং তাদের যে মেধা, সেই মেধা থেকে জাতি যেন বঞ্চিত না হয়।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন