ইনসাইড থট

হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও-‘না‘: শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সাধারণ মানুষের আস্থা

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ৩১ মার্চ, ২০২২


Thumbnail হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও-‘না‘: শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সাধারণ মানুষের আস্থা

দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত সোমবার (২৮ মার্চ, ২০২২) বাম গণতান্ত্রিক জোট সারাদেশে অর্ধবেলা হরতাল আহ্বান করেছিল। গত মঙ্গলবার (২৯ মার্চ, ২০২২) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও অন্যান্য আরও দাবিতে ৩১ মার্চ সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। হরতাল, সমাবেশ বা আন্দোলনে ডাক দেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। এখানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে হরতাল ডাকা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য একটি আপেক্ষিক বিষয়। গ্রামে একটি গল্প প্রচলন রয়েছে। জনৈক ভদ্রলোকের ইলিশ মাছ খাওয়ার ইচ্ছা হয়েছে। বাজারে উনার পছন্দের ইলিশ মাছও খুব সস্তা। কিন্তু ভদ্রলোকের উপার্জন কম। ইলিশ সস্তা হলেও ক্রয় করার মত প্রয়োজনীয় টাকা পকেটে নাই। এক্ষেত্রে ঐ ভদ্রলোকের নিকট ইলিশ মাছের মূল্য অনেক বেশি। কিন্তু যখন বাজারে ইলিশ মাছের মূল্য অনেক বেশি, কিন্তু ক্রেতার উপার্জন বেশি, ইলিশ মাছের দামের তুলনায় পকেটের টাকার পরিমাণ বেশি। সেইক্ষেত্রে ঐ ভদ্রলোকের নিকট ইলিশ মাছ সস্তা। সুতরাং দ্রব্যমূল্য বিবেচনা করতে হবে সাধারণ মানুষের আয়-উপার্জনের উপর ভিত্তি করে। 

‘আন্তর্জাতিক লেবার আইন‘ অনুযায়ী একজন দিনমজুরের আয় হবে ঐ এলাকায় সাড়ে চার কেজি চাল বা আটার মূল্যমানের সমান। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পূর্বে একজন দিনমজুরের দৈনিক আয় ছিল ১০০-১৫০ টাকা। তখন প্রতি কেজি চাউলের মূল্য ছিল ৪০ টাকা, অর্থ্যাৎ দিনের মোট আয় দিয়ে ২.৫৪ কেজি চাউল ক্রয় করা যেত। এক্ষেত্রে ঐ দিনমজুরের নিকট দ্রব্যমূল্য বেশি, প্রয়োজনের তুলনায় উপার্জন কম, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ক্ষমতার ঊর্ধ্বে। বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে একজন রিকশাচালকের দৈনিক আয় কমবেশি ৮০০ টাকা। বর্তমান বাজারে চাউলের সর্বোচ্চ মূল্য যদি প্রতি কেজি ৮০ টাকা ধরা হয়, একজন রিকশাচালক দৈনন্দিন আয়ের টাকা দিয়ে ১০ কেজি চাউল ক্রয় করতে পারে। একজন সাধারণ দিনমজুরের আয় ৬০০-৭০০ টাকা। ঐ দিনমজুরের দৈনিক আয়ের টাকা দিয়ে ৭.৫৮.৫ কেজি চাউল পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে চাউলের দাম প্রতি কেজি ৮০ টাকা হইলেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি বলা যায় না। চাউল বা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য যাই হোক না কেন, তা ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে দিনমজুরেরা দৈনন্দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের পর তাঁদের বৃদ্ধ মা-বাবা, স্নেহের সন্তানের জন্য দেশী-বিদেশী নানাপ্রকার সুস্বাদু ফলসহ নানা বিলাসী দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করছে, অর্থ্যাৎ ক্রয়ের সক্ষমতা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারী চাকুরীজীবীসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই রিক্সাওয়ালা, দিনমজুরসহ সকল স্তরের  মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে। সাধারণ মানুষ ক্রয় ক্ষমতা রয়েছে বিধায়ই দেশী-বিদেশী ফলসমূহ শহরের অভিজাত এলাকার সীমানা পেরিয়ে  রাজধানীর অলিগলিতে, গ্রামের হাট-বাজারে রিক্সা-ভ্যানে বিক্রয় হচ্ছে, যা চোখে পরার মত। 

পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী পূর্ব ঘোষিত হরতাল পালনে সকাল ৬টার দিকে হরতালের সমর্থনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দল সমূহ এবং বামপন্থী ছাত্রদের সংগঠনের জোট প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিলেও, অপেক্ষমান যানবাহনের ভীড়ে লোকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো ছিল না। কারণ এই হরতালে জনগণের কোন সমর্থন ছিল না। আন্দোলনে সাড়া দেওয়া বা না দেওয়া জনগনের অধিকার। রাস্তার মোড়ে মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ রিক্সা চালকদের হাসির খোরাক জুগিয়েছিল বিষয়টি। হরতালের পরেরদিন (২৯ মার্চ ২০২২) একটি দৈনিক পত্রিকায় শিরোনাম ছিল ‘বাম জোটের ডাকা হরতালে রাজধানীতে যানজট’। অর্থ্যাৎ জনগণ হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে। সাধারণ মানুষ নিজ নিজ গাড়ী নিয়ে বা বিভিন্ন ধরনের বাহন নিয়ে নিজ নিজ কাজে যাওয়ার জন্য রাস্তায় নেমেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী হরতাল পালন করতে গিয়ে পল্টন মোড়ে রাস্তার এক পাশে জড়ো হয়ে জোট নেতারা বক্তব্য দিতে শুরু করলে, ট্রাফিক পুলিশ  জনসাধারণের স্বার্থে রাস্তার যানজট নিরসনে উনাদের সরে যেতে বললে ‘প্রায় মিনিট আটেক‘ পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ বলেছে, সরে যেতে বললে হরতালকারীরা কয়েকটি ইটের টুকরা নিক্ষেপ করলে পুলিশ ধাওয়া দেয়‘। আমি মনে করি, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জন্য এই ইটের টুকরা নিক্ষেপ ও পুলিশের ধাওয়ার দৃশ্য সৃষ্টি হয়েছিল। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা সারাদেশে লাগাতার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের নামে জালাও-পোড়াও সহ নানা ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছিল। পেট্রোল বোমা মেরে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় সন্ত্রাসীরা হঠাৎ চলন্ত গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের পর পালিয়ে যেত, কিন্তু পরক্ষনেই সেই দৃশ্য ভিডিও রেকর্ডিং ও স্থিরচিত্র ধারন করার জন্য ক্যামেরাম্যান চলে আসতো এবং মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত হতো। এটা অবশ্যই ফটোসাংবাদিকতার দক্ষতার পরিচয় দেয় সত্য, কিন্তু ঐ রাতে ঐ স্থানে হঠাৎ করে পেট্রোলবোমা ছুড়ে মারা হবে ক্যামেরাম্যানরা কিভাবে জানতে পারলেন? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙ্গালী জাতি আন্দোলনের মাধ্যমেই পাকিস্তানকে বিতারিত করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরাচার ও পাকিস্তানের দোসর বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমেই আওয়ামীলীগ বিজয় অর্জন করেছে। জনগনের ভোটে সরকার গঠন করে দেশসেবা করার দায়িত্ব নিয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত বামজোট আহুত হরতালের চিত্র দেখে মনে হয়, ওরা ২০১৪ এর মত সন্ত্রাসী কায়দায় সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করার পরিকল্পনা করেছিল। ব্যর্থ হয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কয়েক মিনিটের জন্য আন্দোলনের নাটক মঞ্চস্থ করে বিএনপি জামাতের কায়দায় ছবি তোলার আয়োজন  করে দিয়েছে।

সাধারণ মানুষ হরতালে ‘না‘ বলেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষের আয় বেড়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। মানুষ খেয়ে-পরে সুখে আছে। সকল স্তরের মানুষ অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসার নিশ্চয়তা পাচ্ছে। সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। রাজপথে ট্রাফিক সিগন্যালে কিছু ভিক্ষুক দেখা যায়। কিন্তু বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধী ছাড়া ওদের বেশিরভাগেরই ভিক্ষাবৃত্তি অভাবের তাড়নায় নয়,  অনেকেই পেশাদার ভিক্ষুক। ওদের কারও গায়ে ছেড়া কাপড় নেই। চেহারায় মলিনতা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখলে পাওয়া যাবে ওদের স্বচ্ছলতার চিত্র।

‘আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্প‘এর মাধ্যমে গ্রামের চেহারা পরিবর্তন করে দিয়েছে শেখ হাসিনা। গৃহহীন মানুষের জন্য পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। গ্রামেগঞ্জে কোথাও এখন আর কুঁড়েঘর দেখা যায় না। গ্রামেগঞ্জে কোথাও একজন মানুষও পাওয়া যাবে না, যার পায়ে জুতা নেই। পরনে ছেঁড়া কাপড় রয়েছে এমন একজন মানুষও খুজে পাওয়া যায় না। দেশের শতভাগ (৯৯.৮৫) মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। গ্রামবাংলার সকল বাড়ীতেই পাকা সেনিটারী শৌচাগার রয়েছে। বেশিরভাগ বাড়ীতেই যোগাযোগের জন্য মটরবাইক বা মটরসাইকেলসহ শহরের সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে হরতাল ডাকা হলেও, এই কর্মসূচি জনদুর্ভোগে পরিনত হয়েছে। রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ, যেমন আমদানি শুল্ক হ্রাস, টিসিবির পক্ষ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে তিন হাজার ডিলারের মাধ্যমে নায্যমূল্যে ট্রাক সেল চলমান রয়েছে। রমজান উপলক্ষে সারা দেশের এক কোটি নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে রমজান শুরুর আগে ২০ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত নায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি,  দুই হাজার ১৩টি কেন্দ্রে ওএমএসের মাধ্যমে খাদ্যশস্য বিক্রি করাসহ বাজারে  নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বাড়ায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলসহ পেঁয়াজ এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দাম কমেছে। হরতালের আগেই বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমেছে। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, রোজার মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রনে রাখা হবে।

কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী আসন্ন রমজানে অতিরিক্ত মুনাফা করার হীন উদ্দেশ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি বা মজুদদারী করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ষড়যন্ত্র করছে। পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজিও সাময়িকভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ বিধায় সরকার এই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, মজুদদারী ও চাঁদাবাজি  রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়িয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ২৮টি মনিটরিং টিম বাজারে পণ্যের দাম পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

তারপরেও ধন্যবাদ না দিয়ে হরতাল ডাকা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন আর হরতাল করে ‘কর্মঘণ্টা‘ অপচয় করতে রাজি না। দেশে এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি, সামাজিক সমর্থন, স্বাস্থ্যকর জীবন ব্যবস্থা, সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা, উদারতা, দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশন নেটওয়ার্ক কর্তৃক তৈরী ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস‘ রিপোর্টে বাংলাদেশ সুখী দেশ হিসেবে গত বছরের তুলনায় সাত ধাপ এগিয়ে ৯৪তম অবস্থানে পৌঁছেছে। ঐ রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থান ১৩৬তম। মানুষের খুশির পরিমাণ মূল্যায়নের সাথে সাথে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করেই তৈরি হয় এই সূচক।

বাংলাদেশের মানুষ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের পক্ষে। সাধারণ মানুষ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে কাজ করছে। সাধারণ মানুষ জ্বালাও-পোড়াও এর হরতাল বা আন্দোলনকে প্রত্যাখান করেছে। শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতিকে স্বাগত জানিয়েছে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

কতিপয় সাংবাদিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর


Thumbnail

বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।

ভিন্ন চিত্র দেখলাম শনিবার সকালে বরিশাল সদর হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে যেয়ে দেখেন দুজন টিভি সাংবাদিক ওয়ার্ডে ভিডিও করছেন। ভিডিও শেষ হবার পর চিকিৎসক তাঁর রাউন্ড শুরু করলেন। রাউন্ড শুরু করতেই দুজন সাংবাদিক আবার ক্যামেরা ধরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা শুরু করলেন। চিকিৎসক তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বিনয়ের সাথে নিচু স্বরে একে একে ২০ বার (গুনে নিশ্চিত হয়েই বলছি) সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করলেন, পরিচয় জানতে চাইলেন। উক্ত সাংবাদিক নাম বলেননি, পরিচয় দেননি। বরং উচ্চস্বরে উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উর্ধতন কাউকে ফোন দেয়ার পর সাংবাদিক সাহেব তার নাম বলেছেন। এখানে দুটি প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।  প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক দুজন কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সাংবাদিক দুজনকে কেন নাম বলতে হবে ? নাম, পদবি, পরিচয় থাকবে তাদের বুকে বা কোমরে প্রদর্শিত আই ডি কার্ডে। এখন দেখার বিষয়,  প্রদর্শিত স্থানে আই ডি ছিল কিনা ? না থাকলে থাকবে না কেন?

সাংবাদিক ও চিকিৎসকবৃন্দ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমূহ পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। সব গুলো ভিডিও কয়েকবার দেখেছি, পর্যালোচনা করেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলেননি। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সাংবাদিক দুজন বারবার উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তাদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি মগের মুল্লুক। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড রাউন্ড শুরু করার আগে প্রতি রোগীর সাথে একজন এটেন্ডেন্ট ব্যাতিরেকে সবাইকে বের হবার কথা বলেছেন। সবাই বেরিয়ে না গেলে তিনি চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেটাই নিয়ম।  সারা দুনিয়ায় সেটাই হয়ে থাকে। সাংবাদিকদ্বয় সেটি শুনতে নারাজ। এখানে তারা স্পষ্টতই সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।  

দিন শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখলাম সাংবাদিকদের হেনস্থা করেছে ডাক্তার। অথচ ভিডিও গুলি পর্যালোচনা করলে যে কেউ বলবেন, ডাক্তারকে হেনস্থা করেছে সাংবাদিকরা। আসলেই মগের মুল্লুক। ঘটনা কি ? আর সংবাদ শিরোনাম কি? এসব মগের মুল্লুকের রাজত্ব  থেকে জাতিকে পরিত্রান দেয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমএ, এফডিএসএর, বিডিএফ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেয়া দরকার। কমিটি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে ও তাদের দায়িত্ব নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সে নীতিমালায় যাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান না করা হয়, রোগীর অনুমতি ব্যাতিরেকে তাদের ছবি, ভিডিও বা রোগ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রচার না করা হয়, সেসব বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। তা না হলে হাসপাতাল সমূহে এ ধরণের অরাজকতা হতেই থাকবে, বাড়তেই থাকবে।  

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

প্রথম আলোর পর কী ডেইলি স্টারও বিক্রি হবে?


Thumbnail

এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।

প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে অনেকেরই  ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী লোক।

এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।

আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম। সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায় যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।

তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।

তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।


প্রথম আলো   ডেইলি স্টার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে বিএনপির রাজনীতি


Thumbnail

বিএনপির রাজনীতি এখন ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে। রাজনীতিতে একের পর এক ভুল করার কারণে তারা এখন হতাশায় নিমজ্জিত। কোন কী বলতে হবে সেটার খেই হারিয়ে ফেলেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। 

বিএনপি এখন দাবি করছে যে, তাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মী জেলে আছেন। এখানে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি হল যদি ৬০ লাখ কর্মী তাদের থাকত তাহলে এতদিনে তারা কেন আন্দোলনে ব্যর্থ হল? যদি এত সংখ্যক নেতাকর্মী থাকত তাহলে তো অনেক আগেই সরকারের পতন ঘটে যেত। কারণ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য এক লাখ নেতাকর্মী হলেই যথেষ্ট। কিন্তু এত সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়েও তারা ব্যর্থ কেন! এত বড় সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে তারা তাদের নেত্রীকে জেল থেকে মুক্ত করতে পারেনি। কোন আন্দোলনই তারা করতে পারল না! বরং তাদের নেত্রীকে সরকারের অনুকম্পায় ফিরোজায় থাকতে হচ্ছে। ফলে স্বভাবতই বিএনপির নেতাকর্মীর সংখ্যা কত সেটা একটা বড় প্রশ্ন। আর এত নেতাকর্মী থাকা সত্বেও তাদের নেতাকে লন্ডনে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে! 

দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় হল বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মী যদি জেলে থাকেন তাহলে দেশের জেলখানা গুলোর ধারণ ক্ষমতা কত। এবং সেখানে যদি বিএনপির নেতাকর্মীর সংখ্যাই হয় ৬০ লাখ তাহলে এর মধ্যে সাধারণ কয়েদি কোথায় আছেন। তাদেরকেই বা কোথায় রাখা হয়েছে।

কথায় আছে, পথের মাঝে পথ হারালে আর কি পথ ফিরে পাওয়া যায়! বিএনপির অবস্থায় এখন তাই। তারা রাজনীতির পথের মাঝে রাজনীতির পথ হারিয়ে ফেলেছেন। কোনটা রাজনীতি আর কোনটা রাজনীতি নয় সেটাও বিএনপির নেতাকর্মীরা বোধহয় ভুলে গেছেন কিংবা বুঝতে পারছেন না। অন্য আরেকটি কথায় আছে যে, স্বপ্নে যখন কেউ কিছু খাবে তখন পান্তা খাবে কেন? পোলাও কোরমা খাওয়াই ভালো। বিরিয়ানিও খাওয়া যেতে পারে। সুতরাং ৬০ লাখ না বলে তাদের বলা উচিত ছিল বাংলাদেশে তো প্রায় ১৮ কোটি লোক আছে এর মধ্যে ৬ কোটি লোকই বিএনপির নেতাকর্মী। তাহলে অত্যন্ত লোকে আরও ভালো ভাবে বুঝত যে, বিএনপি আসলেই অনেক বড় একটি শক্তিশালী দল এবং তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বিরা বুঝতে পারত যে, বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অত্যন্ত ভালো। 

তবে বাস্তবতা হল বিএনপি ৬০ লাখ নেতাকর্মী দাবি করলেও আসলে তাদের কোন জনসমর্থনই নাই। যদি তাই থাকত তাহলে তারা নির্বাচন বিষয়টিকে এত ভয় পেত না। নির্বাচন বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নিত না। শুধু তাই নয়, বিদেশিও তাদের কোন বন্ধু নাই। যারা আছে সেই বন্ধুদের কথায় দলটি বরং এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। দেশিয় বিএনপির যে সমস্ত বন্ধুরা ছিলেন, বিভিন্ন সময় বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে কিছু লেখালেখি করতেন, তাদেরকে রাষ্ট্রক্ষমতার স্বপ্ন দেখাতেন তারাও এখন হারিয়ে গেছেন। সব কিছু মিলিয়ে দলটি এখন অনেকেটা এতিম হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়ত সামনে দলটির নাম নিশানাও থাকবে না। যারা নিজের দলের নেতাকর্মীর সঠিক সংখ্যা জানেন না তাহলে বুঝতে হবে সেই দলটি এখন কোন পর্যায় গেছে। কতটা দেউলিয়া হলে একটি দলের নেতাকর্মীর সংখ্যা নিয়ে তারা নিজেরাই বিভ্রান্ত হন। সুতরাং দলটি যে অচিরেই হারিয়ে যেতে বসছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন