প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৭ মে, ২০২২
আমি আমার লেখায় প্রথমেই রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে উল্লেখ করলাম। এর কারণ হচ্ছে এই যে, নেত্রীকে যখন আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়, তিনি তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং কিছু লোক তাকে আসতে বললেও অনেক বিজ্ঞ লোক তাঁকে খুব গভীর চিন্তা করে নিষেধ করেছিলেন এই কারণে যে, দেশে আসলে তাঁকে জীবন দিতে হবে। তাহলে বলা চলে যে, তিনি জীবনের মায়া ত্যাগ করে বাংলাদেশে আসলেন। কী জন্য আসলেন? আসলে একটি দার্শনিক চিন্তা নিয়ে; একটি দর্শনকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার জন্য। সেই দর্শন হচ্ছে দেশপ্রেম। সেদিন কী ঘটেছিল সেই ঘটনা সবাই জানেন। তিনি যেদিন আসেন সে দিনকার ব্যাপারে আমি আলাদা কিছু বলতে চাই না। কারণ অনেক পত্র-পত্রিকায়ই লিখবেন এবং অনেকেই লিখবেন। সুতরাং ওই বিষয়ে আমি যাব না। আমি শুধু তার দর্শনের মধ্যেই আমার আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখতে চাই। এই যে দেশপ্রেম, এটা কিন্তু শুধু মুখে বললে হবে না। তার একটি উদাহরণ দেই। ওয়ান-ইলেভেনের সময় যখন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশের বাইরে গিয়েছিলেন, তখন তাকে আসতে নিষেধ করা হলো। আবার তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করা হলো। যে কোনো সাধারণ লোকেরা দেশে মামলা-মোকদ্দমায় ভোগেন তারা বাইরে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে যান। কিন্তু নেত্রী উল্টো হলেন। তিনি দেশে আসার জন্য পাগল হয়ে গেলেন। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের মতো বিমান তাকে টিকিট দেয়নি। সরকার বলল, যে প্লেন তাকে আনবে সেই প্লেনের ল্যান্ডিং পারমিশন বাতিল হয়ে যাবে। অন্যভাবে বলা হলো, আসার পরে অজ্ঞাতভাবে তাকে হত্যা করা হবে। তিনি কোনো কিছুর তোয়াক্কা করলেন না। তিনি ওখানে অনেক আন্দোলন হওয়ার পরে দেশে এলেন। তার জোরটা কোথায়? কী জন্য তিনি তা পেরেছেন? পেরেছেন এ কারণে যে, একজন দার্শনিকের যে মূল দর্শন থাকে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দর্শন হচ্ছে দেশপ্রেম। দেশপ্রেমের জন্যই তিনি এসেছেন। সুতরাং জীবন এখানে তাঁর কাছে কোনো ব্যাপারই নয়। এখন নেত্রী অনেক কিছু করে চলেছেন এবং সবকিছুর ভিতর দেখা যায়, তাঁর আসল ব্যাপার হচ্ছে দেশপ্রেম। একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক যার বিদেশে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। তিনি সততার একটি প্রতীক।
আমি শুধু আমার নিজের স্বরভক্তির মতো বলছি যে, টুঙ্গিপাড়ার খোকা, তারপর মুজিবভাই, তারপর বঙ্গবন্ধু, তারপরে তিনি হলেন জাতির পিতা। এই যে পর্যায়ক্রমে হলেন। আর আমাদের দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা, তিনি প্রথম ছিলেন ছাত্রনেত্রী হিসেবে সেই স্কুল জীবন থেকে শুরু। তারপরে তাঁর বিবাহ হলো। তিনি স্বামীর সঙ্গে জার্মানি গেলেন। সেই অবস্থায় তাঁরা দুই বোন বাইরে থাকায় তাঁরা বেঁচে গেলেও সবাইকে মেরে ফেলা হলো। তারপর তিনি এলেন। তখন তিনি হলেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান। আওয়ামী লীগের প্রধান থেকে তারপর অনেক সংগ্রাম করে তিনি তাঁর আসল অবস্থায় এলেন। প্রতিটি স্তরে তাঁকে সংগ্রাম করতে হয়েছে। সংগ্রাম করে তিনি সরকারপ্রধান হলেন বাংলাদেশের। তারপরও তাঁর সংগ্রাম চলল। তারপরে তিনি রাষ্ট্রনায়ক হলেন। এখন আমরা তাঁর বিভিন্ন কাজ, বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে এনালাইসিস করতে গিয়ে দেখেছি, তাঁর দর্শনটা কী? তাঁর দর্শন হলো দেশপ্রেম থেকে। একটি বিষয় বলতে হয়, আমাদের দেশের যারা নিজেদের সিভিল সোসাইটির গুরু মনে করেন, যারা নিজেদের সততার প্রতীক মনে করেন তারা অনেকেই অনেক উপদেশ দেন এবং আমি মোটামুটি বেশ কয়েকজনকে চিনি, যারা আসলেই সৎ বলেই আমার বিশ্বাস। এখন দেশপ্রেমের বিষয়টি আমি আনতে চাই।
এই যে করোনাকালীন কঠিন সময়ে নেত্রী এ দেশের জীবন এবং জীবিকা দুটোই বাঁচালেন। বাঁচালেন কী জন্য? মূলত দেশপ্রেমের জন্য। এখন দেশপ্রেমের আসল বিষয়টি সম্বন্ধে একটু বলতে চাই। পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে অনেকেই ঘুষ খেত, অনেকেই টাকা বিভিন্নভাবে অনৈতিক পথে আয় করত। কিন্তু তারা দেশের ভিতরে খরচ করত। কিন্তু এখনকার যারা টাকা-পয়সা আয় করতে পারে, তারা বিদেশে নিয়ে যায়। ধনী-দরিদ্র সম্পর্কে এই সিভিল সোসাইটি থেকে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক লেখা পাই। পত্রিকা খুললেই বড় বড় লেখা পাই। কিন্তু যে জিনিসটা খুবই কম নজরে পড়ে সেটি হচ্ছে, এই যে শুধু টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে এতে ধনী-দরিদ্রের শূন্যস্থান বাড়ছে। এগুলো সবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রাষ্ট্রনায়ক। শেখ হাসিনার দর্শন, দেশপ্রেম। এতে একটা জিনিস আমাদের সবার লক্ষ্য করতে হবে, যারা বিদেশে টাকা নিচ্ছে তাদের কোনো দেশপ্রেম নেই। আসল গোড়ায় হাত দিতে হবে। এই জন্যই তো তিনি দার্শনিক। তিনি গোড়ায় হাত দিয়েছেন। যাতে করে যারা দেশপ্রেমিক তারা টাকা-পয়সার কিছুতেই বিদেশে নিতে পারে না এবং এগুলোতে রাজনীতিবিদের যেগুলো সেগুলো নিয়ে অনেক হইচই হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, দেখা গেল যে আমলারাই বিদেশে বেশি টাকা পাচার করেছেন। কিন্তু একজন আমলার বিষয়েও তো ঠিকমতো ইনভেস্টিগেশন হলো না। যারা ইনভেস্টিগেশন করবে এবং এগুলো দেখবে তারা (আমি জেনে বলছি) এতে আগ্রহী নয়।
আমার জানামতে যারা এটা করতে পারে তাদেরও কিন্তু বিদেশে টাকা পয়সা নেওয়ার মতো সে রকম কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু তারা তাদের কলিগদের বিষয়ে হাত দিতে চায় না (শকুনের মাংস শকুন খায় না)। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে অনেককে বসিয়েছেন। আমি শুরু করতে চাই একটা লোকের উদাহরণ হিসেবে বলে, সেটা হচ্ছে আমাদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব। উনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনোদিন আলাপও হয় নাই এবং আমি দেখিও নাই। যখন মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন অনেকে দাড়ি দেখে বলেছিলেন উনি তো জামায়াত-বিএনপি। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল যে, তিনি নিজেও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করেন এবং তার পরিবার মুক্তিযোদ্ধা এবং সম্ভবত মুক্তিযুদ্ধে একজন আত্মাহুতিও দিয়েছেন। অর্থাৎ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যে দার্শনিক তার প্রমাণ হলো, তিনি কে দেশপ্রেমিক সেটা কিন্তু বের করতে ভুল করেননি। তার কোনো ভুলভ্রান্তি নেই। এ রকম অনেক উদাহরণ আছে যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে দর্শন দেপ্রেম, তার থেকে বাইরে যান না। এখনো প্রধানমন্ত্রীর ওপরে যাদের ছায়া পড়ে, তাদের কার কার বিদেশে বাড়ি আছে সেটাও তো আমাদের দেখা দরকার। কারণ না হলে এদের দেশপ্রেম যদি না থাকে তাহলে নেত্রী যেহেতু রাজনীতিতে আছেন, তিনি তার জীবনের কোনো মায়া করেন না এবং তিনি যাকে দিয়ে যে কাজ করান তিনি সেটিই করেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে তার কাজ তো বেড়ে যায়। তার তো দার্শনিক চিন্তা-ভাবনা নিয়ে আরও অনেক কিছু করার সুযোগ ছিল সেই সময়টাতো নষ্ট হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সীতাকুণ্ড ট্রাজেডির পরদিন সন্ধ্যায় ফেসবুকে আমি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। '২৫ জুন পর্যন্ত হরতাল বা নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না!' দেশের সমসাময়িক রাজনীতির ধারা হিসাব করলে এমন সম্ভাবনা আসলেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। তারপর কি হলো? ৫ জুন পাবনার বেড়ার কিউলিন ইন্ডাস্ট্রি। ৬ জুন রাজধানীর বছিলার জুতার কারখানা। ১০ জুন রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায়...
অনেকেই বলেছিলেন- সম্ভব না। ভাঙা শব্দ দুটি জোড়া লাগিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন- সম্ভাবনা। সেই সম্ভাবনা আজ জাতির সামনে উপস্থিত। এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। যার জন্যে অধীর আকুল আগ্রহে গোটা জাতি। বহুল প্রতীক্ষা, কাঙ্ক্ষিত, অনেক সাধনার পরে- ঠিক কোন বিশেষণে জাতির এই মাহেন্দ্রক্ষণটিকে উপস্থাপন করা সম্ভব বুঝতে পারছি না। নিজস্ব অর্থায়নে...
পদ্মা যেন প্রায় সমুদ্র। একেবারে ছোটবেলায় তো আর সমুদ্র দেখিনি। গোপালগঞ্জে দাদার বাড়ি যাওয়ার সময় পাড়ি দিতে হতো পদ্মা নদী। পাড়ি দিয়ে চলে যেতাম, কিন্তু মনের মধ্যে প্রবল হয়ে জেগে থাকত তার অক্ষয় রূপ। কারণ গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পথে পদ্মা পার হওয়াটাই যেন আসল ঘটনা। স্মৃতি থেকে অন্য সবকিছু মুছে গেলেও পদ্মাকে মুছে দেয় সাধ্য কার! তার সে কী বিশালতা...