কোভিড ১৯ মহামারী বাংলাদেশের তরুণদের সামনে নতুন ও কঠিন চ্যালেঞ্জর মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। কোভিড ১৯ মহামাররির সময় দেখা দেয় জনজীবনে এক চরম অনিচয়তা। মানুষ তখন নতুন করে ধর্মমুখী হয়ে যায়। বিশেষ করে তরুণদের স্বপ্নভরা দুনয়নে নেমে আসে অন্ধকার।
তরুণরা উন্নত প্রযুক্তির যুগের মানুষ।করোনার আগে তাদের ভাবনা সনাতনী ভাবনা থেকে ভিন্নতর ছিল।কিন্তু মহামারীর প্রকোপে তাদের চিন্তা চেতনায় রেখাপাত ঘটে। তারা অনেকেই মানবতার খাতিরে হয়েছিল মানবপ্রেমিক নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করে।করোনাকালে তাদের লেখাপড়া শিক্ষা কার্যক্রম হয়েছে চরমভাবে বিঘ্নিত।এক অজানা ভয় ও অনিচয়তা থেকে তারা মুক্তির পথ খুঁজেছে।অনেকেই তখন ধর্মকে বেছে নিয়েছে বাঁচার অবলম্বন হিসেবে।এসময় আমাদের তরুণদের অনেকেই ধর্মকে আলিঙ্গন করে জীবন যাপনের পথ নির্বাচন করেছেন। এরকম একটি পরিবর্তন আমাদের সমাজকে এমন ভাবে প্রভাবিত করেছে যে ধর্মব্যবসায়ীরা অতিমাত্রায় সক্রিয় ও সঙ্গবদ্ধ হয়েছেন।
সম্প্রতি ওই ধর্মীয় আনুগত্যর একটি নির্মম বহি:র্প্রকাশ আমরা দেখেছি।এক তরুণী তার ড্রেসের জন্য হেস্তনেস্ত হয়েছেন নরসিংদীতে । ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুড়োদের সঙ্গে আদালত নারীদের ড্রেস নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে ।তারই পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন - আমাদের উচিত কৃত্রিম মেধা অথবা রোবোটিক্স নিয়ে ভাবা।তিনি আরও বলেছেন, ড্রেস, টিপ মীমাংসিত বিষয় যদিও সম্প্রতিকালে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব নিয়েও কথা হয়েছে।সেগুলো নিয়ে বিতর্ক করা অনুচিত।পাল্টা বিবৃতিও দিয়েছেন মৌলানারাদের কেউ কেউ।
মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর কথা থেকে আমি একটু আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। তার কথা থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রী হিসেবে তিনি আমাদের তরুণদের নিয়ে গভীরভাবে ভাবছেন। একথা সত্য কোরোনা উত্তরকালে আমাদের তরুণরা অত্যন্ত মানসিক চাপে আছে।সেগুলো থেকে বাঁচার জন্য আমরা অভিভাবকরা অনেকেই নামাজ পড়তে বলি। আল্লাহর কাছে মুক্তির পথ বাতলে দিতে হাত তুলতে বলি।আর এসবের সুযোগ নিচ্ছে চিরায়ত ধর্মব্যাবসায়ীরা।তাদেরই প্ররোচণায় তরুণদের কেউ কেউ নারীদের পোশাক নিয়ে বিতর্কে জড়াচ্ছে। রোবোটিক্স ও কৃত্রিম মেধা নিয়ে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য দিকনির্দেশনা মূলক।তরুণদের হতাশার মাঝে আশা সঞ্চারক।
সারা পৃথিবীতে যে অর্থনৈতিক ধস নেমেছে করোনা ও ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে তা দিন দিন গভীরতর হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করছেন।তাদের বক্তব্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও প্রকাশ পাচ্ছে।ইতিমধ্যে তিনি কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আর্থসামাজিক পরিবেশে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে বলে অনেকেই শংকা প্রকাশ করছেন। এরকম একটি সময়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য তরুণদের অনুপ্রাণিত করেছে বলে আমার বিশ্বাস।
পৃথিবীর এমন একটি সংকটকালে আমাদের শিক্ষকদের দায়িত্ব সবচে বেশি।আমাদের তরুণসমাজ যাতে সঠিক পথ খুঁজে পায় সেদিকেই আমাদের মনোযোগ দেয়া উচিত।শিক্ষকের এই দায়টি সর্বজনবিদিত। আমাদের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী রোবোটিক্স বা কৃত্রিম মেধা নিয়ে আলোচনার কথা বলেছেন তা খুবই যৌক্তিক।এবং আমাদের শিক্ষকদের উচিত তরুণদেরকে অনুপ্রাণিত করা যাতে তারা এসব নিয়ে ভাবতে আনন্দ পায়।
তবে সেজন্য সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারকে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে যাতে বিজ্ঞান মেলা আয়োজন করে তরুণদেরকে উদ্ভাবনী কাজে আকৃষ্ট করা যায়।এবং যখন তারা বিজ্ঞানের চর্চায় উৎসাহ পাবে তখন ড্রেস কিংবা টিপ্ নিয়ে আলোচনায় সময় নষ্ট করবে না।মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী যেভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, সেভাবে আমাদের অন্যান্য মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদরা যাতে কথা বলেন তার নির্দেশনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও দেবেন বলে আশা করতে পারি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের তরুণদের মাঝে একটি সংকট দেখা দিয়েছিলো। তারা দলে দলে নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল।এবং সেটা দেশের ও তরুণদের যে সর্বনাশ করেছিল তা বর্ণনাতীত। আমাদের আজকের সংকটকালীন অবস্থায় তরুণদেরকে পথভ্রষ্ট করবার চেষ্টা চলছে।আশা করি সরকার সেটা বুঝতে পারছে এবং সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে তরুণদের মনে আশার সঞ্চার করতে সক্ষম হবে যেভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ তরুণদের মনে আশার সঞ্চার করেছিল সেই একইভাবে আমাদের তরুণদেরকে স্বপ্ন দিতে হবে।অনুপ্রেরণা যোগাতে হবে কৃত্রিম মেধা বা রোবোটিক্স নিয়ে যাতে ভাবে।
আমরা ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ স্বপ্নের কথা জেনেছি।কিন্তু সেটা তরুণদের কাছে এখনো পরিষ্কার না।সেটাকে যদি বিশদভাবে সরকারিভাবে আলোচনা করা হয় তবে তরুণদের মাঝে আশার আলো দেখা যাবে। আমার বিশ্বাস রোবোটিক্স ও কৃত্রিম মেধা নিয়ে ভাবনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ ভাবনার অংশবিশেষ।
এবার বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেস হাইওয়ে এবং পদ্মা সেতু দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম গ্রামের বাড়ি।গ্রামের তরুণরা এখন স্বপ্ন দেখছে সম্ভাবনাময় এক বাংলাদেশের।মেট্রো রেল ও টানেল তাদের স্বপ্নকে আরও প্রসারিত করবে বলে আমার বিশ্বাস। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকলে চলবে না।নেতাদেরকে বলতে হবে কেমন বাংলাদেশ আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে চাই।মানুষ স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে বাঁচে - তরুণদের স্বপ্ন কি তা সরকারকে জানতে হবে এবং সেগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনায় স্থান দিতে হবে।
আমাদের তরুণদেরকে সঠিক পথে যাতে চলতে পারে সেজন্য সরকারের উচিত বিশেষ তহবিল গঠন করা।সেখান থেকে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা। তরুণদের জন্য খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে, তাদের বিভিন্ন সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা।তরুণদের জন্য বিশেষ স্কিল অর্জনের জন্য বিশেষ বিশেষ টেকনিক্যাল কোর্স স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চালু করা জরুরি।পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যাতে আকৃষ্ট হয় সেদিকে নজর দেয়া।
বিগত বছরগুলোতে মেগা প্রকল্প নিয়ে সরকারকে নিমগ্ন থাকতে দেখেছি। এখন প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে এমন কিছু করতে হবে যাতে দেশের সকল অঞ্চলে উন্নয়নের কর্মকান্ড তরুণরা দেখতে পায়।সরকার যদি তরুণদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ না করে তবে সেই শুন্যতার সুযোগে অশুভ শক্তির উত্থান হতে পারে।
আমরা লক্ষ্য করেছি সুলভে নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। এসময়ে বাজার মূল্য এতটা বেশি যে সকলকেই কষ্ট দিচ্ছে। সরকার এসময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডাইনিংএ ভর্তুকি দিয়ে মানসম্মত খাবার সরবরাহ করতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তির পরিধি ও পরিমান বাড়াতে পারে।
দেশের তরুণসমাজ আগামীদিনের নাগরিক- তাদের যত্নে সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে।তাদেরকে মাদক, অপসংস্কৃতি ও ধর্মিয়মাদকতায় আসক্ত করে ফায়দা লুটার চেষ্টা যাদের মাঝে তাদেরকে নিষ্ক্রিয় রাখা প্রয়োজন।আমাদের মিডিয়া এখন অনেক বেশি উন্মুক্ত । ইউ টিউব ফেসবুক ব্যবহার কঠোর নজরদারীতে রাখতে হবে যাতে ওই অশুভ শক্তি আমাদের তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত না করতে পারে।
আমাদের ব্যবসায়ী মহলে আছে লোভী লোকজন।তাঁরাও তরুণদেরকে ব্যবহার করে থাকে সরকারকে চাপে রাখার জন্য। সেগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।আমরা প্রায় দেখি বাস ভাড়া নিয়ে আমাদের তরুণ সমাজ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উন্নত দেশগুলোতে তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য যানবাহনে বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়। এ বিষয়ে সরকার যেন যথাযথ পদক্ষেপ নেয়। উন্নত দেশে তরুণদের জন্য আছে বিভিন্ন ধরণের সরকারি ভাতা। আমরা দাবি করছি আমাদের উন্নয়ন হয়েছে। তাহলে তরুণদের জন্য বেকার ভাতা চালু করা যায়।
তরুণরা উদ্যোক্তা হতে চায়। সেখানে সরকার মনযোগ দিতে পারে। তাতে করে অনাস্থার কালোমেঘ কেটে যাবে।বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তর করতে তরুণদের ভাবনাকে গুরুত্ব দেয়া অপরিহার্য।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আমেরিকা আমার 'খুউব' পছন্দের দেশ। পছন্দের অন্যতম কারণ হলো, সে দেশের পররাষ্ট্র অনুষদের কর্মকান্ড। দেশটি তাদের নাগরিকদের খুব ভালোবাসে। তাদের নিরাপত্তায় সর্বদা উদ্বিগ্ন। নাগরিক বিদেশে গেলে সে দেশে কোথায় যাবে না যাবে, কোথায় নিরাপদ, কোথায় ঝুঁকিপূর্ণ, কেমন সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, তার একটি দিক নির্দেশনা সময়ে সময়ে দিয়ে থাকে। এমন নির্দেশনা সরকার তাদের নাগরিকদের দিলে সে নাগরিকের গর্ববোধ করা উচিত। সে জন্যই দেশটিকে 'খুউব' পছন্দ করি।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস গত ২১ মে সে দেশের নাগরিকদের জন্য একটি ভ্রমণ সতর্কবার্তা জারি করেছে। সতর্কবার্তার নাম দিয়েছে ‘ডেমোনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’। বার্তায় বলা হয়েছে বাংলাদেশে নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। রাজনৈতিক সভা সমাবেশ বাড়তে পারে। বিক্ষোভ হতে পারে। বিক্ষোভের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে। সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। সে দেশের নাগরিকদের বড় সমাবেশ ও বিক্ষোভের স্থানগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করার উপদেশ দেয়া হয়েছে।
‘ডেমোনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’টি যখন দেয়া হয়, তখন দেশের রাজনীতির আকাশে সংঘাত, সহিংসতা বা বিক্ষোভের কোন ঘনঘটা ছিল না। কিন্তু তার দুদিন পর রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে যে তুলকালাম ঘটে গেল তাতে অনুমেয় যে দূতাবাস একেবারে মোক্ষম সময়ে সতর্ক বার্তা জারি করেছে। তাদের গোয়েন্দা সক্ষমতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ক্ষমতার তারিফ করতে হয়। দেশটির জনগণের প্রতি তাদের সরকার যে মায়া মমতা ও উদ্বিগ্নতা, সঠিক সময়ে সঠিক বার্তা, সেটি আজকের বিষয়বস্তু নয়। কোন দেশে এ ধরণের বা এর চেয়ে বেশি খারাপ পরিস্থিতি হলে আমাদের দূতাবাসগুলোর ভূমিকা বা নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে আলোকপাত করতে চাই। প্রায় সোয়া কোটি দেশি রেমিটেন্স যোদ্ধা রয়েছে বিদেশে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী যাচ্ছে বিদেশ ভ্রমণে। প্রতিনিয়ত সংঘাত, সহিংসতা, বিক্ষোভ চলছে দেশে দেশে। কখনো শুনি না যে দেশি দূতাবাস গুলো এ ধরনের সতর্কবার্তা দিয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো এ ব্যাপারে সর্বদাই নিষ্ক্রিয়।
ফিরে যাই মার্কিন মুলুকে। সেখানে বন্দুক সহিংসতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত ৩২ বছরে দেশটিতে বন্দুক সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১ লাখের বেশি মানুষ। ২০২১ সালে বন্দুকের গুলিতে মারা গেছে প্রায় ৪৯ হাজার, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সার্বোচ্চ। আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে ৫২টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় ৯৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে, আহত ২০৫। গত ফেব্রুয়ারিতে সেদেশে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৪০টি, নিহত ৪৬, আহত ১৫০। গত মার্চে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৩৯টি, নিহত ৫৬, আহত ১৩৬। গত এপ্রিলে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৫৬টি। এসব ঘটনায় নিহত ৬২, আহত ২৪৪। এপ্রিলের শেষ দিনে ১১টি ঘটনা ঘটেছে। ‘গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ’ নামের একটি গবেষণা সংস্থার ওয়েবসাইটে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত 'গান পলিসি' নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে বাংলাদেশে বন্দুক হামলায় মারা যায় দেড় হাজার জন। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রে মারা যায় সাড়ে ২৮ হাজার জন। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা বাংলাদেশের দ্বিগুন। জনসংখ্যা অনুপাতে সেদেশে বন্দুক হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে দশগুণ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে এসব বন্দুক হামলার সংঘাতের ঘটনাস্থল সর্বত্র। শপিংমল, পার্ক, স্কুল, হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার, রেল স্টেশন, ব্যাংক থেকে শুরু করে জন্মদিনের অনুষ্ঠান, মেমোরিয়াল ডে’র অনুষ্ঠানস্থল, স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান যেখানে প্রতিনিয়ত বন্দুক হামলা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বাংলাদেশী বাস করে, বেড়াতে যায়, কাজে যায়, সভা-সেমিনারে যায়। আমেরিকার ভিসা দপ্তরের তথ্যমতে, এ বছরের প্রথম তিন মাসে প্রায় ১২ হাজার বাংলাদেশী নন ইমিগ্রান্ট ভিসা পেয়েছে। তার মানে, গড়ে প্রতিমাসে প্রায় ৪ হাজার বাংলাদেশী যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে যায়। প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বাংলাদেশি ছাত্র ছাত্রী সেখানে পড়াশুনা করে । এসব প্রবাসী বাংলাদেশী ছাত্র বা টুরিস্টদের প্রতি বাংলাদেশী দূতাবাসের কি কোন দয়া মায়া নেই ? উদ্বিগ্নতা নেই ? তারাও তো পারে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান বন্দুক হামলার প্রেক্ষিতে সময়ে সময়ে আমাদেরকে সতর্কবার্তা দিতে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশী দূতাবাস যুগ যুগ ধরে এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়ে যাচ্ছে। নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক সংকেত দিচ্ছে না। শপিংমল, রেল স্টেশন, ব্যাংক, হাসপাতাল, স্কুল, পার্ক ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলার বা সাবধানে চলার পরামর্শ দিচ্ছে না। কিন্তু কেন ? দেশের নাগরিকদের প্রতি তাদের কি কোন দায়িত্ববোধ নেই?
এ বি এম কামরুল হাসান
প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:৩০ পিএম, ২৭ মে, ২০২৩
যে বিষয়টির সাথে আমি নিজে জড়িত, সে বিষয়টি নিয়ে একটু অবতারণা করছি। বেশ কিছু
দিন আগে- প্রায় ছয় থেকে আট মাস আগে বাংলাদেশ প্রতিদিন কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে একটি প্রতিবেদন
করে এবং তাতে বলা হয়, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক এমন জরাজীর্ণ অবস্থায়, যে কোনো সময় ভেঙ্গে
পড়ে যাবে। যারা সেবা গ্রহীতা, তারা আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে বা মৃত্যুবরণ করতে পারে- এ
ধরনের একটি সংবাদ তারা প্রকাশ করে।
তখন স্বাভাবিক নিয়মে আমার কমিউনিটি ক্লিনিকে যারা কাজ করেন, তারা বললেন, ‘স্যার
একটা প্রতিবাদ দিতে হয়।’
তখন আমি বললাম, আমিতো পড়েছি। আমি ভোরবেলাতে যে পত্রিকাগিুলো পড়ি, তার মধ্যে নঈম
নিজাম এবং এখনকার যে বুদ্ধিভিত্তিক কলামিস্ট আমার অনুজপ্রতীম সৈয়দ বোরহান কবিরের লেখাগুলো
পড়ি। তারা একটা রৈখনি নিয়ে এসেছে। একটা প্রতিবাদ, সরকারিভাবে যা লেখা হয়, এটা না, ওটা।
আমি বললাম, ‘তোমরা ওই কমিউনিটি ক্লিনিকটা শেষ কে কবে পরিদর্শন করেছ?
তারা কেউই সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারে না। আমি বললাম, নঈম নিজাম এবং সৈয়দ বোরাহান
কবির- এরা কখনো ব্যক্তিগত সম্পর্কের সাথে তাদের যে পেশাগত সম্পর্ক সেটা জড়িয়ে ফেলে
না। উদাহরণসরূপ বলছি, আমি তখন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের পরিচালক। তখন ‘পরিপ্রেক্ষিত’ অনুষ্ঠানটি
পরিচালনা করে সৈয়দ বোরহান কবির। আমার সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিপক্ষে বেশ কিছু
বক্তব্য প্রচার করে। কিন্তু আমার সাথে তার যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, সে সেটা বিবেচনা না
করে পেশাগত দায়িত্ব থেকে সে এটা করেছে। সেটা নিয়ে তার সাথে আমার কোনোদিন আলাপ হয়নি।
কারণ হচ্ছে, সে তার পেশায় ঠিক আছে, আমি আমার পেশায় ঠিক আছি।
আমার কোনো ভুলভ্রান্তি হলে সেটা উল্লেখ করা তার দায়িত্ব। নঈম নিজামের পত্রিকায়
যেহেতু সংবাদ ছাপা হয়েছে। সুতরাং নঈম নিজামকে আমি আলাদা চোখে দেখি।
তারা বললো, ‘স্যার সিভিল সার্জনের সাথে কথা হয়েছে।’
আমি বললাম, সিভিল সার্জন নয়, একজন বিশ্বস্ত লোককে পাঠাও। তারপর প্রতিবাদ ছাপাতে
হয়, আর্টিকেল লিখতে হয়, আমি দেখবো।
তারপর একজনকে পাঠানো হলো। তিন দিনে রিপোর্ট দিলো। তারপর দেখা গেলো, বাংলাদেশ
প্রতিদিনে যা ছাপা হয়েছে। সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে সত্য। তখন আমি এইটার ব্যবস্থা গ্রহণ
করলাম, যেন ওটা ঠিকমতো চলে এবং সমস্যাটির সমাধান করলাম। বাংলাদেশ প্রতিদিনে কোনো লেখা
বা নঈম নিজামকে ফোন করার আর কোনো প্রয়োজন পড়লো না। আমি দেখেছি, আমার ভুল-ভ্রান্তি হচ্ছে।
সুতরাং এর দায়-দায়িত্বও আমার। যেহেতু এটা আমার দায়-দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, সুতরাং আমি
মনে করেছি, সে আমাকে সহায়তা করেছে। এখন আমার পক্ষে না বিপক্ষে গেলো, সেটা কোনো বিষয়
নয়।
সম্প্রতিককালে দেখলাম, আমাদের একটি মন্ত্রণালয়ের একজন মন্ত্রী এবং তাদের যে কাজের
গাফিলতি সম্পর্কে লিখেছে বলে তারা তার প্রতিবাদ পাঠিয়েছে। প্রতিবাদটি আমি পড়লাম। প্রতিবাদটি
বাংলাদেশ প্রতিদিনে ছাপা হয়েছে। আমার কাছে মনে হলো, অনেক আমলারা কাঁচা হাতের কাজ করে
সেরকম। এই প্রতিবাদটি ছাপানোর আগে, যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে, সে বিষয়গুলোর সমাধান
করাতো বেশি দরকার। এরা দেশের ভালো করতেছে না খারাপ করতেছে, সেটা বিচার করার সময় এসেছে।
আমারতো কোনো পত্রিকার সাথে কোনো জমি নিয়ে বা কোনো বিরোধ বা কোনো গন্ডগোল নেই, সে আমার
বিরুদ্ধে কেন লিখবে? লিখলে আমিসহ সকলে যে যেখানে দায়িত্বে আছে, সকলের প্রধান দায়িত্ব
হচ্ছে জিনিসটা সঠিক কি না, সেটার চুলচেরা বিচার করা।
দ্বিতীয়ত, যে বিষয়টি নিয়ে লিখেছে, সেটাকে অবশ্যই দেখাশোনা করা, যাতে ওই ভুলটটা
ভবিষ্যতে আর না হয়। নঈম নিজাম কেন, দুনিয়ার কেউই ভুলের উর্ধ্বে নয়। কিন্তু ভুলটা বুঝতে
পারা এবং ভুলটা সঠিক করা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুর্ভাগ্যবশত অনেকেই আমরা
এটা করতে পারি না। সেজন্য সবাইকে বলবো, যে কোনো মিডিয়াতে কোনো কিছু আসলে প্রতিবাদ পাঠানোর
আগে কি লিখেছে, বরং সেটার সমাধান আগে করে তারপর প্রতিবাদ পাঠান।
মন্তব্য করুন
আমি আন্তর্জাতিক বিষয়ে অধ্যায়ন করিনি। তবে আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো আমাকে আকৃষ্ট করে। একজন নাগরিক হিসেবে আমি খুবই শংকিত! কারণ, বিশ্বে শান্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চললেও দীর্ঘদিন পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে যুদ্ধ, মানুষ হত্যা , নিপীড়ন , নারী ও শিশু নির্যাতন, মানব পাচার, অভিবাসন করতে গিয়ে প্রাণহানি আমাদেরকে শংকিত করে তুলছে। উন্নত দেশগুলো রাষ্ট্রীয় সীমারেখার দেয়াল তুলে শান্ত হয়নি, বিভিন্ন রকম আন্তর্জাতিক কৌশল অবলম্বন করে তারা দরিদ্র ও নিপীড়িত মানুষদেরকে আরও সুশীল বানাতে চাইছে। গণতন্রের পূজারী উন্নত বিশ্ব তাদের স্বার্থে সুশীল বানানো প্রক্রিয়ায় ধনী দেশগুলোতে সেভাবে চাপ প্ৰয়োগ করে না, যেভাবে দরিদ্র দেশগুলোতে শক্ত অবস্থান নিয়ে থাকে। বাংলাদেশের বেলায় যেভাবে কূটনীতিবিদরা সক্রিয় তাতে আমাদের স্বাধীনতা কি ক্ষুন্ন হচ্ছে না ? এ দায় কি কেবল নিপীড়িত মানুষের ?
বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে নানা আন্তর্জাতিক চাপের মুখোমুখি হয়েছে। কিছুদিন সেই চাপ কমেছিল। কিন্তু আবার নতুন করে চাপে ফেলা হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কি হতে পারে? বিরোধী জোটে যারা আছেন তারা বলবেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে একটি নির্বাচন করুন , সমস্যা প্রায় শুন্যের কোঠায় নেমে আসবে। কিন্তু আমার ভিন্ন রকম উপলব্ধি।
বাংলাদেশের সরকার নির্বাচিত নাকি অনির্বাচিত তাতে কারও কিছু যায় আসে না। যদি নির্বাচন মুখ্য বিষয় হতো তবে আরব রাষ্ট্রে বিরাজমান রাজতন্ত্র অবসানে তারা মনোযোগী হতো। সেখানে কেন গণতন্রের জন্য মনোযোগ দেয়া হয়না তার অনুসন্ধানে যারা লিখেছেন তাদের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। এখানে কার্ল মার্কস এর দর্শনের সাফল্য। অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ তত্ত্ব এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সেটাতে উন্নত দেশগুলোর অবদান অনস্বীকার্য। তার পরেও আমাদের উপর একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ গভীর ভাবনার বিষয়। এটি দেশের বিরোধী দলের দেনদরবার বা তদবিরের ফলে হচ্ছে মনে করলে হয়তো ভুল হবে। সুষ্ঠু অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কি এক মাত্র ভাবনা ওই সব বিধিনিষেধ আরোপের কারণ ? একটি অবাধ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কি বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট ? আমাদের সমাজে যারা বুদ্ধিজীবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত তাদের মনোযোগ এখানে একান্তভাবে কাম্য যাতে সরকার চাপের মুখে কোনো বড়োরকম ভুল না করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের বাতিঘর। গতকাল একটি বিবৃতিতে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বলেছে - তারা একটি অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন তিনিও সুষ্ঠু নির্বাচন চান এবং আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সারা বিশ্বে যেভাবে নির্বাচন হয়ে থাকে সেইভাবে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে। সম্প্রতি একটি পোস্টার আমার নজরে এসেছে। সেখানে লেখা আছে "আমার ভোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে চাই। " ওই পোস্টার নিয়ে দলের লোকদেরসঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা বিদেশী দূতাবাসের আশীর্বাদ পেয়েছেন। এবং আরেকটি মহল মনে করেন - যুক্তরাষ্ট্র যে সব বিধিনিষেধ দিচ্ছে তার লক্ষ্য হলো পর্যাক্রমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার কৌশল। এটাকে বিস্তৃত করলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংসদের বক্তব্যর অর্থ খুঁজে পাওয়া যায়।
পত্রিকাতে দেখেছি সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করবে , এবং এখন আগের তুলনায় সরকার বিরোধী রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে না। অন্ততঃ গত মঙ্গলবার গাবতলীতে সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক ডাকসুর ভিপি অমানুল্লার জনসভা দেখে আমার ধারণা হয়েছে। ঐদিন ধানমন্ডিতে সভা হয়েছে বটে কিন্তু কিছু মানুষ বাস পোড়ানোর মতো বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের সাবেক রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার করছে। তিনি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। আমাদের কাছে অনেকেই বলেন আগামী নির্বাচন যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয় সেজন্য আন্দোলন করবেন। সেই আন্দোলন যে শান্তিপূর্ণ হবে সেটা ভাবা যায় কি ? আমার মনে হয় যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষই অবলম্বন করবে না যদি তারা কোনোভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ থেকে বিচ্যুত হয়। আমাদের মনে পড়ে অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যে আন্দোলন হয়েছে তাতে আমাদের সামাজিক শান্তি ও অর্থনীতি হুমকিতে পড়েছে।আরেকটি ১/১১ সৃষ্টির যে পায়তারা চলছে তা কোনোভাবেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবে বলে মনে হয় না।কারণ যেই হারবে সেই দাবি করবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।
জনগণের কষ্ট সৃষ্টি করে কেউই ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে আমার কাছে প্রতীয়মান হয়। ভোট ও ভাতের স্বাধীনতা অর্জনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি অর্জন করতে হয় তবে তা জনগণের কষ্টে পাশে দাঁড়ানোর মধ্যদিয়েই সম্ভব। বাংলাদেশ আশা করে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু হয়েই থাকবে। তাদের আরোপিত বিধিনিষেধ কেন সেটা অনুসন্ধানে সময় না দিয়ে আমার সমস্যা নিয়ে আমি ভাবতে ও সমাধানের চেষ্টা করতে চাই। রাজনীতির লক্ষ্য হোক জনগনমুখী - কূটনীতিবিদমুখী নয়।আমাদের আরও সহনশীল হতে হবে এবং সৎ মানুষগুলোর মধ্যে একটি ঐক্য থাকতে হবে। আমি মনে করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবার সুযোগ আছে রাজনীতিবিদেরকে আলোর পথের সন্ধান দিতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির বক্তব্য তারই প্রতিফলন।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে সে স্বপ্ন আমাদের সকলের। বিদেশী কূটনীতিবিদরা যেভাবে যুক্ত হচ্ছে তা থেকে বের হয়ে আসার দায়িত্ব সরকারের উপর বর্তায়। আমরা বঙ্গবন্ধুর শান্তি পুরস্কার বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি পালন করছি। বঙ্গবন্ধুর শান্তি ভাবনা যেন আমাদের রাজনীতিতে সুবাতাস বয়ে আনে সেই কামনা করছি। তাহলেই কূটনৈতিক বিজয় অর্জন সম্ভব হবে।
মন্তব্য করুন
" মনোযোগ বলতে নির্দিষ্ট একটা বিষয়কে ফোকাস করাকে বুঝায় না, একই সাথে এটা অসংখ্য প্রতিযোগী তথ্য এবং উদ্দীপককে অগ্রাহ্য করাকেও বুঝায়। যা এ মুহূর্তে প্রাসঙ্গিক নয় সেটাকে এড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের প্রতি আকর্ষিত হওয়াই মনোযোগ ( Kendra Cherry, 2022)। কোন পণ্যকে ভোক্তা কিভাবে মূল্যায়ন করবে সেটা অনেকাংশেই তাঁর প্রত্যক্ষণের উপর নির্ভর করে। মনোযোগ হচ্ছে প্রত্যক্ষনের একটি পূর্বশর্ত। কোন নির্দিষ্ট উদ্দীপকের প্রতি ইন্দ্রিয় বা ইন্দ্রীয় সমূহকে নিবদ্ধ করার নামই হলো মনোযোগ। যে মানসিক ক্রিয়ার মাধ্যমে একাধিক বিষয় থেকে চেতনাকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নিয়ে একটি বিশেষ বিষয়ে চেতনাকে কেন্দ্রীভূত করা হয় তাকে মনোযোগ বলে।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস গত ২১ মে সে দেশের নাগরিকদের জন্য একটি ভ্রমণ সতর্কবার্তা জারি করেছে। সতর্কবার্তার নাম দিয়েছে ‘ডেমোনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’। বার্তায় বলা হয়েছে বাংলাদেশে নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। রাজনৈতিক সভা সমাবেশ বাড়তে পারে। বিক্ষোভ হতে পারে। বিক্ষোভের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে। সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। সে দেশের নাগরিকদের বড় সমাবেশ ও বিক্ষোভের স্থানগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করার উপদেশ দেয়া হয়েছে।
আমেরিকার South Asia Perspectives পত্রিকায় ২৮ মে(২০২৩) প্রকাশিত মিথ্যাচারে পূর্ণ Jon Danilowicz এর U.S. Visa Policy: What Next? শিরোনামে লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়লে দেখা যাবে এক সময়ে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের এই সাবেক কর্মকর্তা কী কৌশলে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মনগড়া তথ্য দিয়ে বিরোধী শিবিরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।তিনি যেভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিগুলো তুলে ধরেছেন এবং বিএনপি-জামায়াতের অপতৎপরতাকে এড়িয়ে গেছেন তা সৎ লেখকের কাজ নয়। তিনি যেন কোনো লবিস্ট কর্তৃক নিযুক্ত লেখক। যার নুন খান তার গুণগান করেন। এ ধারার জন ড্যানিলভিচ মার্কা লেখক ও বক্তারা পৃথিবীর অনেক জায়গায় বসে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চিত্রের কথা ব্যক্ত করার পরিবর্তে মিথ্যাভাষণে সরকার বিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত। এদের বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।
যে বিষয়টির সাথে আমি নিজে জড়িত, সে বিষয়টি নিয়ে একটু অবতারণা করছি। বেশ কিছু দিন আগে- প্রায় ছয় থেকে আট মাস আগে বাংলাদেশ প্রতিদিন কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে একটি প্রতিবেদন করে এবং তাতে বলা হয়, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক এমন জরাজীর্ণ অবস্থায়, যে কোনো সময় ভেঙ্গে পড়ে যাবে। যারা সেবা গ্রহীতা, তারা আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে বা মৃত্যুবরণ করতে পারে- এ ধরনের একটি সংবাদ তারা প্রকাশ করে।
আমি আন্তর্জাতিক বিষয়ে অধ্যায়ন করিনি। তবে আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো আমাকে আকৃষ্ট করে। একজন নাগরিক হিসেবে আমি খুবই শংকিত! কারণ, বিশ্বে শান্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চললেও দীর্ঘদিন পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে যুদ্ধ, মানুষ হত্যা , নিপীড়ন , নারী ও শিশু নির্যাতন, মানব পাচার, অভিবাসন করতে গিয়ে প্রাণহানি আমাদেরকে শংকিত করে তুলছে।