প্রকাশ: ১০:৫৪ এএম, ২০ অক্টোবর, ২০২২
বর্তমানে
বিএনপি বিরোধী দল হিসেবে
তাদের যে দায়িত্ব তারা
সেটা ঠিক মতো দায়িত্ব
পালন করছে বলে আমি
ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
তারা এখন বিভিন্ন জায়গায়
সভা-সমাবেশ করছেন এবং
তাদের কর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছে। এতে
আমাদের বিরাট লাভ হবে। সেটি হলো
দেশে বিরোধী মতবাদের চর্চা
হচ্ছে। অন্যদিকে জাতীয়
পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের,
তাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি,
তিনিও বিভিন্নভাবে সরকারের সমালোচনা করেছেন এবং তার
দল গাইবান্ধার
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এগুলোকে
রাজনীতিতে ইতিবাচক বলে আমি মনে
করি। সাম্প্রতিক সময়ে
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের
একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন যে,
বিরোধী দলের দায়িত্ব বিরোধিতা
করা। তারা তাদের
কাজটা যদি সঠিকভাবে আগের
থেকে আরও বেশি করে
করতে পারে তাহলে তো
আমাদের দেশ আরও বেশী
উন্নত। আমাদের গণতন্ত্র
আরও ম্যাচিউর হবে। আমি
সব সময় একটি কথা
বলি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা দর্শন দিয়ে দেশ
চালান। দেশ চালাতে
গিয়ে তিনি কখনো ব্যক্তিগত
লাভ-লোকসানের কথা ভেবে দেশ
চালান না। পচাঁত্তরে
তিনি তার বাবা-মা,
ভাই এবং নিকটাত্মীয়দের হারিয়েছেন। এখন আপনজন
বলতে দেশের মানুষই তার
আপনজন। সেটি তিনি
একাধিকবার তার বিভিন্ন ব্ক্তব্যে
বলেছেন। তার যত
স্বপ্ন সব কিছু দেশকে
নিয়ে, দেশের মানুষকে নিয়ে,
দেশের উন্নতি নিয়ে।
১৯৮১ সালে তিনি দেশে
ফিরে এসে দলকে সংগঠিত
করলেন এবং পরে ক্ষমতায়
এসে দেশের উন্নতিতে নিজেকে
মনোনিবেশ করলেন এবং এখনো
তার সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে
যাচ্ছেন।
অনেকেই বলে থাকেন যে, সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে কেন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলেন। যদি তিনি দায়িত্ব না নিতেন তাহলে ওই সাড়ে তিন বছরে তাকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হতো না। বয়সের বিবেচনায় বেশ কম বয়সেই একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক মহাযজ্ঞে হাত দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যখন ছয় দফা দিলেন তখন আওয়ামী লীগে অনেক বড় বড় নেতা ছিলেন। তারা অনেকেই বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। অথচ বঙ্গবন্ধু গ্রামে গ্রামে ঘুরে দলকে সংগঠিত করেছিলেন এবং এই দলের মাধ্যমেই তিনি দেশ স্বাধীন করলেন। সে সময় যারা, বিশেষ করে একটা তরুণ গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে সহায়তা করেছিলেন পরবর্তীতে তারা জাসদ নামে আলাদা হয়ে গেলেন। দুভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুর বিরোধীতাকারীরা সবাই নিয়ে এই জাসদে যোগদান করেছিলো এবং বঙ্গবন্ধুর লোকজনকে হত্যা করা শুরু করলো। সব রিঅ্যাকশনেরই একটা কাউন্টার রিঅ্যাকশন হয়। সুতরাং দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে অনেক লোক মারা গেলেন। সে সময় কর্নেল তাহের আর্মির ভেতর থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা সব ক্ষেত্রে তার তৎপরতা ছিলো। খুনি মোস্তাক তো ছিলেন শুধুমাত্র অন দ্যা স্পট নেতা। তার ইচ্ছা ছিল তিনি বঙ্গবন্ধুকে যেকোনোভাবে পৃথিবীর থেকে সরিয়ে দিয়ে একসময় রাষ্ট্রপতি হবেন এটা তার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু তার তো বাকি বুদ্ধি ছিল না। বাকি সমস্ত কিছু করেছেন এই জাসদের প্রতিভাবান সমস্ত লোকজন। যাদেরকে বঙ্গবন্ধু তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত স্নেহ করেছেন। যে আওয়ামী লীগকে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশ স্বাধীন করলেন সেই আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নীরব ছিলো। এটা আওয়ামী লীগের ইতিহাসে ব্যর্থতার সাক্ষ্য বহন করছে। জেনারেল শফিউল্লাহ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনরূপ প্রতিবাদ করেননি। সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই ছিলেন যারা ডাক দিলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী রাস্তায় নেমে যেতো প্রতিবাদে। কিন্তু সাহসের অভাব থাকার জন্য কেউ সেদিন ডাক দেয়নি।
কোনো এক সময় আমি শিখেছি যে, সঠিক মানুষ হতে হবে, সঠিক সময় হতে হবে এবং সঠিক জায়গায় হতে হবে। বঙ্গবন্ধু সঠিক মানুষ হয়েছিলেন। কিন্তু আমরা সঠিক মানুষ হতে পারিনি। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করতে পারিনি। সঠিক মানুষ হতে পারলে সেদিন প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসতাম। বঙ্গবন্ধু যাদেরকে সঠিকভাবে নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন তারা আসলে সঠিক নেতা হতে পারেন নাই। তারা আর সঠিক সময়ে তাদের নেতৃত্ব দেখাতে পারেন নাই। তারা যদি শুধুমাত্র জনগণকে ডাক দিয়ে পালিয়ে যেতেন তাহলে এদেশের ইতিহাস অন্যরকম লেখা হতো। তারপর পচাঁত্তরের পর কোনো রকম দল টিকে ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগকে টিকে রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে আনা হলো।
দার্শনিক
শেখ হাসিনার কথা বলতে গেলে
অবশ্যই তার ছাত্র জীবনের
রাজনীতি থেকে শুরু করে
সবই বলা প্রয়োজন।
উনাকে যারা আনলেন তারা
ভেবেছিলেন তিনি হাতের পুতুল
হবেন। কিন্তু যখন
দেখলেন যে না, তার
নিজস্ব দর্শন নিয়ে তিনি
দল চালাতে চান তখন
আওয়ামী লীগের যে আসল
ক্ষমতা, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা সেটির
পুনরাবৃত্তি হলো। তখন
আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে ছেড়ে
দিয়ে কেউ কেউ আব্দুর
রাজ্জাকের সাথে চলে গিয়েছিলো। ফলে দার্শনিক
শেখ হাসিনাকে আবার শুরু থেকে
আরম্ভ করতে হলো।
আমার মতে, তখন যারা
‘বি’ টিম
টাইপের নেতা ছিলেন তাদেরকে
রাষ্ট্রনায়ক ‘এ’ টিম টাইপের নেতা বানালেন এবং ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসলেন। অর্থাৎ দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ‘বি’ এবং ‘সি’ টিম টাইপের নেতাদের নিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করলেন। এর মধ্যে যখন ওয়ান ইলেভেন আসলো তখন দেখা গেল এই সব নেতারা বলতেন যে, কি কাজ করবো? নেত্রী তো আমাদের কাজ দেয় না। তারা তখন নিজেরাই দায়িত্ব ছিলেন এবং সংস্কারপন্থী হলেন। এখনো যারা নেত্রী আশেপাশে ঘোরাফেরা করেন, তাদের ভিতর কেউ কেউ খন্দকার মোশতাক আছে কিনা বা কোনো রকম সুবিধাবাদী আছে কিনা অথবা ভয়বাদী আছে কিনা আমার সন্দেহ হয়। সঠিক সময় যদি আপনি ঠিক মতো কাজে লাগাতে না পারেন তাহলে তো একই কথা। একজন দার্শনিকের আশেপাশে যারা বসে থাকেন, যারা দর্শনের কথা শুনেন তাদের দায়িত্ব কি? দায়িত্ব হলো দার্শনিকের দর্শন বুঝে কাজগুলো করা। এমনকি তার দর্শনকে ধারন করা যেন ভবিষ্যতে তার দার্শনিকের দর্শনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটা আমাদের দেশে হয়নি। না হওয়ার ফলে সবাই দার্শনিক শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে থাকেন। উনি তো প্রতিটি বক্তব্যে একেকটি করে দর্শনের কথা বলেন।প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা তো কমন। যেমন, কমিউনিটি ক্লিনিকের কথা সব বক্তৃতায় বলেন। কি জন্যে বলেন কারণ কমিউনিটি ক্লিনিক হচ্ছে অন্য কথায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। সুতরাং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর কমিউনিটি ক্লিনিক এক সমার্থক নাম। আমাকে যখন দায়িত্ব দেয়া হয় আমি এটা ভালোভাবে বুঝে নিয়েছি যে, দুটির মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই।
দার্শনিক শেখ হাসিনার বক্তব্য যদি আওয়ামী লীগের নেতারা সঠিকভাবে বুঝে থাকেন তাহলে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে যখন পাকিস্তানের জয়গান করলেন, এর আগে বিএনপি মহাসচিব যখন পাকিস্তানের পক্ষে কথা বললেন তখন নেত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। কেন বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে প্রত্যেক জায়গায় কোনো আওয়াজ উঠলো না। আমার মতে, এরা এখনো দার্শনিকের দর্শন বুঝেন না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। দার্শনিকের দর্শন সবাইকে বুঝতে হবে। দার্শনিকের ৮০ ভাগ সমর্থক যারা আমি তাদের মধ্যে কাজ করি। সেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যারা ডলারের দাম বুঝে না, যারা অর্থনীতির কোনো সমীকরণ বুঝে না কিন্তু তারা এটা স্বীকার করছে যে, মুজিরের মেয়ে তাদের খাওয়াচ্ছে। তারা শুধু ওই দার্শনিক শেখ হাসিনাকেই বুঝে।
নির্বাচন
কমিশনের দায়িত্ব অবশ্যই সঠিকভাবে নির্বাচন
করা। ইতোমধ্যে নির্বাচন
কমিশন দেখিয়েছে যে, তারা ঠিকমতো
তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবে। আমি নিজেও
ব্যক্তিগতখাবে মনে করি, কেউ
নামে, কেউ বেনামে সবাই
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং এই
নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও এই দার্শনিক
রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর
দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
শুধু সামনের নির্বাচন নয়,
পরবর্তী নির্বাচনেও দার্শনিক শেখ হাসিনাই দেশ
পরিচালনা করবেন। বর্তমান
বৈশ্বিক সংকটে যদি দার্শনিক
শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের দায়িত্বে
না থাকতেন তাহলে এ
দেশে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে যেত। ইতোমধ্যে কয়েক
লাখ লোক মারা যেত। কিন্তু সেটা
হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে
না। এ দেশে
দুর্ভিক্ষ হবে না।
দেশও ঠিকমতো চলবে এবং
এই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাই আমাদের
দেশকে আরও সামনের দিকে
এগিয়ে নেবেন। বাংলাদেশ
সামনে এগিয়ে যাবে।
সুবিধাবাদী দর্শন দার্শনিক বিএনপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সোনালী যুগ পার করছেন। ইতিমধ্যে টানা চার মেয়াদে তুমুল ম্যান্ডেটের সাথে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী মহিলা সরকার প্রধানের লরেল ধরে রেখেছেন। জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি পঞ্চম্বারের মত ক্ষমতা নিশ্চিত করে এই অঞ্চলের প্রায় সব মহল থেকে প্রশংসার কুড়িয়েছেন। বিশ্বে এমন ঘটনা বিরল যেখানে কারও নেতৃত্বে থাকার ব্যাপারে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন এবং ভারত উভয়ই একমত। শেখ হাসিনা সেই বিরল একটি দৃষ্টান্ত। মত কিংবা রাজনৈতিক আদর্শ, নির্বিশেষে সকল আঞ্চলিক শক্তিগুলো তার আসন্ন প্রশাসনকে অভিনন্দন জানায়। তবে জানুয়ারির নির্বাচনের পরে বেশিরভাগেরই দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে স্থির ছিল। কারণ বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকেই বেশ সরব ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি বললেও মার্কিন কর্মকর্তারা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং একসঙ্গে কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করে। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের উপর যে মার্কিন চাপ দৃশ্যমান ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যে শেখ হাসিনা সরকারের উপর সেই মার্কিন চাপ অনেকটাই কমছে এবং তার আগামী পথচলাকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে।
তবুও, অনেকেই বলছেন বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যাপকভাবে বয়কট করা হয়েছে। এর মূল কাওন হিসেবে তারা বলছেন, বিরোধী দলে নির্বাচন বয়কট এবং বিরোধীদের বয়কটের আহ্বানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সাধারণ জনগণের ভোট বর্জন।
অংশগ্রহণ নাকি বয়কট?
দেশটির প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং তার মিত্ররা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও সব বিরোধী দল অবশ্য তাদের অনুসরণ করেনি। নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সাতাশটি দল প্রার্থী দিয়েছিল। এছাড়া প্রায় ৩০০ আসনের বিপরীতে প্রায় ১৯০০ স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তাই নির্বাচনে বিএনপির অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও, একাধিক নির্বাচনী এলাকার ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয়েছে এবং ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছে।
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪১.৮ শতাংশ। গত নির্বাচনের তুলনায় এই সংখ্যা কম হলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সংখ্যাকে কম বলার সুযোগ নেই। অনেকে এটিকে বিরোধী দলের নির্বাচন বয়কট জনমনে প্রতিফলিত হয়েছে বলে দেখছে। বিরোধীদের বয়কট নিঃসন্দেহে ভোটার উপস্থিতিতে প্রভাব ফেলেলেও, কম ভোটার উপস্থিতি মানেই জনগণ ভোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে এওনটি ভাবার কোন সুযোগ নেই। মূলত বিএনপির বিভিন্ন নির্বাচন বিরোধী কর্মসূচী, বিক্ষোভ, সমাবেশ, গাড়িতে ট্রেনে বাসে অগ্নিসংযোগ, ভোটের আগের দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতাল-অবরোধের ডাক দেশের পরিস্থিতিকে অস্থির করে তোলে। যার ফলে নিজদের নিরাপত্তার জন্যই অনেক ভোটার নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে বাড়িতে থাকতে বাধ্য হয়েছে।
তবে যে সব নির্বাচনী এলাকায় একাধিক জনপ্রিয় প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন সেসব এলাকায় ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬০ শতাংশের বেশি। আবার যেস এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম ছিল সেসব এলাকায় ভোটার উপস্থতি ছিল কম। অর্থাৎ ভোটাররা বিএনপির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে নির্বাচন বর্জন করেনি; প্রতিদ্বন্দ্বিতাই মূলত ভোটার উপস্থিতিকে প্রভাবিত করেছে।
তবে নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট করা ভোটারদের পরিসংখ্যান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। দুপুরে নির্বাচন কমিশনের করা প্রেস ব্রিফিংয়ে ভোটার উপস্থিতি মাত্র ২৭ শতাংশ ঘোষণা করা হলেও, শেষে ৪১.৮ শতাংশ চূড়ান্ত ভোটার উপস্থিত ঘোষণা করা হয়। এর কারণ হিসেবে নির্বাচন কমিশন জানায়, দুপুরের সংখ্যাটি প্রকৃত সময়ে ছিল না। যেহেতু বাংলাদেশে ম্যানুয়াল পেপার ব্যালট সিস্টেম ব্যবহার করা হয় যেখানে ভোটগুলি হাতে গণনা করা হয় এবং গ্রামীণ এলাকা থেকে ফলাফল প্রেরণে কয়েক ঘন্টা পিছিয়ে ছিল। যা দুপুরের ভোটার উপস্থতি এবং সর্বশেষ ভোটার উপস্থিতির মধ্যে ব্যবধান ব্যাখ্যা করে। সেক্ষেত্রে মোট ভোটের ১৪ শতাংশ শুধু শেষ সময়ে দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ সত্য নয়।
নির্বাচন কমিশন হয়ত সঠিক। কিন্তু যেহেতু সন্দেহের তীর ছোড়া হয়েছে সেহেতু, নির্বাচন কমিশন সমস্ত ভোটকেন্দ্রের প্রতি ঘণ্টায় ভোট গণনার বিস্তারিত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে সন্দেহের সমাধান করতে পারে। এ ধরনের স্বচ্ছতা ভোটদানের প্রশ্নে স্পষ্টতা প্রদান করবে এবং যেকারো বিভ্রান্তি দূর করতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশ কি একদলীয় রাষ্ট্র?
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আরেকটি নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর অনেকেই বাংলাদেশ একটি একদলীয় রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন। ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে এবং আওয়ামী লীগের অনুগত স্বতন্ত্ররা আরও ৬২টি আসনে জয়লাভ করে। যার ফলে সংসদে ৯৫ শতাংশ নির্বাচিত সংসদ সদস্যই আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং সংসদে কোন অর্থবহ বিরোধী দলের অস্তিত্ব নেই।
তবে বিষয়টি এত সরল নয়। প্রথমত, সংসদের স্বতন্ত্র সদস্যদের আওয়ামী লীগের ল্যাপডগ বলে উপেক্ষা করা বাংলাদেশের রাজ্নৈতিক প্রেক্ষাপটে কতটা যৌক্তিক সে প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ প্রত্যেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লী প্রার্থীর সাথে তীব্র নির্বাচনী লড়াইয়ের পরই বিজয়ী হয়েছেন। তারা সংসদে তাদের ভোট এবং তাদের বক্তৃতায়র পুরো স্বাধীনতা ভোগ করবেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের তাদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী কোন দলের অধীনে না থাকায় তারা এই বিধিনিষেধের বাইরে। এই প্রেক্ষাপটে, শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকা সত্ত্বেও, নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আ.লীগ প্রশংসার যোগ্য। আ.লীগ দলের সিনিয়র ব্যক্তিদের স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিয়ে, অবশ্যই সম্ভাব্য অন্তর্দলীয় বিরোধের ঝুঁকিতে পড়েছে। তবুও, এটি ভোটারদের প্রকৃত নির্বাচনী বিকল্প প্রদান এবং সংসদে মত বৈচিত্র্যকে প্রসারিত করেছে।
উপরন্তু, একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি অপ্রতিরোধ্য সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা একটি দল একদলীয় রাষ্ট্রের সমতুল্য নয়। বাংলাদেশকে একদলীয় রাষ্ট্র না বানিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একই রকমের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। একইভাবে ভারত ও জাপান বহুদলীয় গণতন্ত্র না হারিয়ে একদলীয় আধিপত্য অর্জন করেছে। মূল প্রশ্ন হল আওয়ামী লীগ নিজে এই অতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদের আয়োজন করেছিল নাকি বিএনপির নির্বাচন বয়কটের কারণে এটি অনেকটা অনিবার্য ছিল।
বিএনপি যদিও যুক্তি দেবে—যে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কখনোই ছিল না এবং ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের পর বিএনপি নেতাদের দমন-পীড়ন ও গণগ্রেপ্তার সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ এবং তাদের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তবে, ২৮ অক্টোবরের আগেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রত্যাখ্যান করে ইতিমধ্যেই নির্বাচনে নিজেদের অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছিল। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন কমিশনের ডাকা একটি নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্যই ২৮ অক্টোবরের বিক্ষোভ করেছিল দলটি। ফলে সেই সময়ে কমিশনের কর্তৃত্বের অধীনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, অরাজকতা দমনে এবং নির্বাচনের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে শক্তি প্রয়োগ করেছিল। এটি কোনভাবে নির্বাচন বর্জনের কারণ হতে পারে। বলপ্রয়োগের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহার আলাদা মূল্যায়নের প্রয়োজন, তবে এটি নির্বাচনী নয় বরং আইন-শৃঙ্খলার চোখে দেখাই উত্তম।
দায়বদ্ধতা
এমন উদ্বেগজনক দাবি করার পরিবর্তে, পর্যবেক্ষকদের জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল যে প্রাথমিক বিরোধী দল বিএনপি কেন মাঠ হারাল। সরকার যেমন শক্তিপ্রয়োগের জন্য যাচাই-বাছাইয়ের পরোয়ানা দেয়, তেমনি বিএনপিকে তার গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালনের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
১৭ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব ছিল সংসদে ভোটারদের আওয়াজ দেওয়া। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এমন অনুমানের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন বর্জন করে, তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং জনগণের অধিকারকে উপেক্ষা করেছে। তর্কের খাতিরে আ. লীগের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না ধরে নিলেও, বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত মে ২০১১ সালে এটিকে অসাংবিধানিক রায় দিয়েছিল। তাছাড়া, পূর্ববর্তী তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা তার ম্যান্ডেটকে অতিক্রম করেছিল, জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছিল এবং দলীয় নেতাদের বন্দী করেছিল রাজনীতিকে বাধাগ্রস্থ করেছিল।
নির্বাচন বয়কট শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সুফল এনে দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে জনসাধারণের ম্যান্ডেট অনুসরণ করার চেয়ে তত্ত্বাবধায়ক শাসনের মধ্যে একটি সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরির উচ্চাকাঙ্ক্ষা করেছিল। গণতন্ত্রের প্রতি ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও মূলত বিএনপি’র এই আত্ম বিধ্বংসী এবং অপরিপক্ক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার পথ সুগম করেছে।
বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যাপক বয়কট সর্বজন গৃহীত
মন্তব্য করুন
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।/তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি/ অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক/ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ অর্থাৎ ১৪৩১ বঙ্গাব্দে পুরাতন স্মৃতি মুছে যাক, দূরে চলে যাক ভুলে যাওয়া স্মৃতি, অশ্রুঝরার দিনও সুদূরে মিলাক। আমাদের জীবন থেকে বিগত বছরের ব্যর্থতার গ্লানি ও জরা মুছে যাক, ঘুচে যাক; নববর্ষে পুরাতন বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক। রমজান ও ঈদের পর দেশের মানুষের জীবনে আরো একটি উৎসবের ব্যস্ততা নতুন বছরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় উদ্ভাসিত।ফিলিস্তিনবাসীর উপর হামলা আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে এর মধ্যে মারা গেছেন অসংখ্য মানুষ।তবু মৃত্যুর মিছিলে জীবনের গান ফুল হয়ে ফুটেছে। যুদ্ধের সংকট আমাদের পরাস্ত করতে পারেনি কারণ পৃথিবীর মৃত্যু উপত্যকা পেরিয়ে এদেশে বৈশাখ এসেছে নতুন সাজে।
সমাজ, রাষ্ট্রে নেতার ছড়াছড়ি। নেতাদের পোস্টার, ফেস্টুনে ভরে গেছে শহর, গ্রাম। তবে এদের বেশিরভাগই সুবিধাভোগী, অর্থলোভী। এদের মধ্যে আদর্শের লেশমাত্র নেই। সততা, দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি ন্যুনতম দায়বদ্ধতা নেই। এদের কোনো পেশা নেই। রাজনীতি কে এরা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। নেতা নয়, বরং এদেরকে নির্দ্বিধায় চাঁদাবাজ, দখলদার, মাদক ব্যাবসায়ী বলা যায়। রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে এরা হেন অপকর্ম নেই যা করে না। এদের অনেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে দখল এবং মাদক ব্যাবসার মত জঘন্য কাজের সাথে সম্পৃক্ত। এসব আদর্শহীন, অসৎ, সুবিধাভোগী, অর্থলোভী নেতাদের ভীড়ে সৎ, দেশপ্রেমিক, আদর্শিক নেতাদের দেখা পাওয়া দুষ্কর। সমাজ, রাষ্ট্রে এমন নেতাও আছেন যারা দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য তাদের সর্বস্ব উজাড় করে দেন। ষাট, সত্তর, আশি এবং নব্বইয়ের দশকে এমন নেতার সংখ্যা ছিল বেশি। বর্তমানে হাজারো অসৎ নেতার মধ্যে এমন সৎ, আদর্শিক, দেশপ্রেমিক নেতা খুঁজে পেতে মাইক্রোস্কোপের প্রয়োজন হয়। দিন দিন যেভাবে রাজনীতিতে অসৎ নেতাদের দাপট বাড়ছে, আগামিতে প্রকৃত নেতাদের খুঁজতে হয়ত ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সোনালী যুগ পার করছেন। ইতিমধ্যে টানা চার মেয়াদে তুমুল ম্যান্ডেটের সাথে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী মহিলা সরকার প্রধানের লরেল ধরে রেখেছেন। জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি পঞ্চম্বারের মত ক্ষমতা নিশ্চিত করে এই অঞ্চলের প্রায় সব মহল থেকে প্রশংসার কুড়িয়েছেন। বিশ্বে এমন ঘটনা বিরল যেখানে কারও নেতৃত্বে থাকার ব্যাপারে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন এবং ভারত উভয়ই একমত। শেখ হাসিনা সেই বিরল একটি দৃষ্টান্ত। মত কিংবা রাজনৈতিক আদর্শ, নির্বিশেষে সকল আঞ্চলিক শক্তিগুলো তার আসন্ন প্রশাসনকে অভিনন্দন জানায়। তবে জানুয়ারির নির্বাচনের পরে বেশিরভাগেরই দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে স্থির ছিল। কারণ বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকেই বেশ সরব ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি বললেও মার্কিন কর্মকর্তারা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং একসঙ্গে কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করে। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের উপর যে মার্কিন চাপ দৃশ্যমান ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যে শেখ হাসিনা সরকারের উপর সেই মার্কিন চাপ অনেকটাই কমছে এবং তার আগামী পথচলাকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে।