ইনসাইড থট

আদমজী কোর্ট: পিছনে দেখা

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০২ নভেম্বর, ২০২২


Thumbnail আদমজী কোর্ট : পিছনে দেখা

চাকরি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মাত্র কয়েক মাসের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের সচিব নিযুক্ত হয়েছিলাম। একথা অনস্বীকার্য যে, সৃষ্টিশীল কর্মের কথা বিবেচনায় আনলে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রনালয়। যদিও

বাহ্যিক জনমতে তার প্রতিফলন সীমিত।  মূলত: দুটো মন্ত্রনালয়কে একীভূত করে বর্তমানে এর দাপ্তরিক কাজ পরিচালিত হচ্ছে।  কয়েক বছর আগেও বস্ত্র এবং পাট পৃথক মন্ত্রনালয় হিসেবে চালু ছিল। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের নিরিখে দেখলে এই উভয় খাত সন্দেহাতীতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বলা যায়, বস্ত্র ও পাট বাঙালির চিরকালীন জীবন-ইতিহাসেরও অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ধারক বাহক।  

জানা যায়, জনস্বার্থ এবং দৈনন্দিন কাজের সুবিধার্থে ২০০৪ সালে সরকার দুটো মন্ত্রনালয়কে একত্রিত করে দেয়। বর্তমানে বেশ কতগুলো ছোট বড়ো দপ্তর, সংস্থার সমন্বয়ে মন্ত্রনালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। অপরাপর মন্ত্রনালয়/বিভাগের মতন এখানেও পাট এবং বস্ত্র বিষয়ক সংযুক্ত ডিপার্টমেন্টসমূহ থেকে মাঠ পর্যায়ে সরকারি নীতি ও সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন করে চলেছে। 

২) প্রজাতন্ত্রের সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমি একান্ত ব্যক্তিগত আগ্রহে তথা কৌতূহলবশতঃ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীর কয়েকটি পাটকল স্হাপনা পরিদর্শন করেছিলাম। তখন গভীর অভিনিবেশ নিয়ে লক্ষ করেছি এর বৃহদাকার অবয়বের নিস্প্রাণ পরিত্যক্ততা, অনেকদিন মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি এমন বিশাল উন্মুক্ত মাঠ, সুরম্য আবাসিক এলাকা, সুদীর্ঘ আয়তনের ভবন ও ভেতরের মূল্যবান যন্ত্রাংশের নীরব কান্না এবং নিঃশব্দ আহাজারি। বিশেষ করে চল্লিশ-পঞ্চাশের দশকে গড়ে ওঠা পাটশিল্প সংশ্লিষ্ঠ কারখানাগুলো আমাকে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাক ও বেদনার্ত করেছিল। প্রজাতন্ত্রের একজন নিরঙ্কুশ স্বদেশজীবি কর্মচারি হিসেবে প্রথম দর্শনেই অশ্রুসজল হওয়া ব্যতীত আমার কোনো উপায় ছিলনা। এটা সকলই অবহিত, আমাদের দেশের প্রায় সব ক'টা পাটকল কোনো না কোনো নদীর তীর ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে। যদ্দুর জানি আজ অবধি খুলনার ভৈরব নদী ছাড়া অন্য নদীগুলো যেন স্রোতহারা, দুষনাক্রান্ত এবং জীবম্মৃত। বলাবাহুল্য, এদেশে রেলওয়ে এবং পাট মন্ত্রনালয়ের স্থাবর সম্পত্তি সবচেয়ে বেশি। আজকের পাটকলের বিমর্ষ চেহারার সঙ্গে একাকার হয়ে আছে তীরবর্তী  নদীর চেহারা। কালের মৌন সাক্ষী হয়ে আছে নদীগুলো। এমনকি এক সময়ের রমরমা জৌলুশ-ঝরা পাটের আঁশ থেকেও যেন সরে গেছে সোনালী বাহার। মিলের কর্মহীন ছদ্ম-বেকার কর্মচারিদের দু'চোখের পাতার নিচে অনিশ্চিত বিষন্নতার কালো ছায়া। মনে হয়, নদীর ঘোলাটে জলের ওপর প্রতিদিন নিভৃতে ঝরে পড়ছে এদের চোখের জল। ভাবছিলাম, আমরা কি পরিবেশবান্ধব প্রকৃতিপ্রদত্ত দেশীয় জাতের পাটের আঁশ থেকে শুধু ব্যাগ বা ছালাও প্রস্তুত করতে পারিনা? যেখানে খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রনালয় পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যাগ ক্রয় করছে বা আমদানি করছে। 

এখানে প্রাসঙ্গিক যে, বর্তমানে বিজেএমসি'র আওতায় ২৫ টি জুটমিল রয়েছে। তাছাড়াও ৬টি বৃহৎ আকারের মিল আছে, যেমন--  করিম, লতিফ বাওয়ানী, ইউ,এম,সি, আমিন, প্লাটিনাম জুবিলী ও ক্রিসেন্ট জুট মিল। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে প্রায় ৭৫,০০০ শ্রমিককে সরকার তাঁদের ন্যায্য দাবী ও পাওনা পরিশোধ সাপেক্ষে মিল থেকে তাদের চাকরি কালের অবসান ঘটায়। তবে এখনো ৯৫৪ জন কর্মকর্তা এবং ১,৫৭৩ জন কর্মচারী স্ব স্ব পদে বহাল আছেন। অথচ ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে মিলগুলোর উৎপাদন কাজ সম্পূর্ণরপে বন্ধ রয়েছে। জানা যায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে  অন্ততঃ ২,৫২৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির তেমন কোনো কাজ নেই। যদিও যথানিয়মে তাঁদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করা হচ্ছে। কাজের বিনিময়েই জীবিকা হতে হয়। এর উল্টোটা হলে ফল কখনো ভালো হয় না, শুভ হয় না। 

মিলগুলোর ভেতরের বিরাজমান মহাকালের এমন স্তব্ধতার অবসান কবে? এর ভবিষ্যৎ কোথায়? অপেক্ষার প্রহর শেষ কবে? এমন সীমাহীন অপচয় ও বন্ধাত্বের জন্য দায়ী কারা?

ইতিহাস বলে, পৃথিবীতে শ্রমিক শ্রেনীর শ্রমে এবং নেতৃত্বেই সভ্যতার ভীত রচিত হয়েছে। কিন্তু আমরা কতিপয় প্রাইভেট সেক্টর ছাড়া পাবলিক এন্টারপ্রাইজগুলোতে শ্রমিকের শ্রম গ্রহন করতে পারছিনা কেন? এসব পাহাড় সমান প্রশ্নের সরল কোনো উত্তর নেই। গবেষণা পর গবেষণা চলছে। এবং অনাগত কাল চলবে। তবু বলবো, কেবল সময় সবকিছু অবলীলায় হজম করতে পারে। সময়ই প্রকৃত নীলকন্ঠ। 

৩) আদমজী জুট মিলস লিঃ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। বলা যায়, একসময় নারায়ণগন্জ এবং আদমজী মিল প্রায় সমার্থক নামে পরিণত হয়েছিল। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে প্রায় ৩০০ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছিল এই বিশ্ববিখ্যাত জুটমিল। এদেশের পাট শিল্পের জয়জয়ন্তী ঘটে এর হাত ধরেই। রাস্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের জন্ম নেয়ার অব্যবহিত পরেই ১৯৫০ সালে এ পাটকলের যাত্রা শুরু হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা আবদুল ওয়াহিদ আদমজী। তাঁর পূর্ব পুরুষ মূলতঃ গুজরাটের অধিবাসী ছিলেন। আদমজীকে একসময় স্কটল্যান্ডের ডান্ডির সঙ্গে তুলনা করে বলা হতো প্রাচ্যের ডান্ডি। আদমজী গ্রুপ অব কোম্পানি ছিল এর স্বত্তাধিকারী। যারা ১৯৭১ সাল অবধি এর মালিকানা ধরে রেখেছিলেন। ষাটের দশকে তারা ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি পূর্ব পাকিস্তানে বেশ কিছু জনহিতকর উদ্যোগও হাতে নিয়েছিল। তারা ১৯৬০ সালে ঢাকায় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ প্রতিষ্টা করেন। গুল মোহাম্মদ আদমজী এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। মতিঝিল শিল্পাঞ্চলে তারা আদমজী সন্স লিমিটেড নামে এক বিশাল পারিবারিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এর দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্ত আদমজী কোর্ট স্হাপন করেন। উল্লেখ্য, আদমজীরা তৎকালীন  পাকিস্তানের বিখ্যাত ২২ পরিবারের অন্যতম একজন ছিলেন। বলা হয়, তারা ছিলেন জাত ব্যবসায়ী।  

৪) আদমজী সন্স লিমিটেডের অধীনে 

মতিঝিলে ৪৮.৬ কাঠা জমির ওপর নির্মিত তিনটি বহুতল ভবন রয়েছে। এতে প্রায় ২ লক্ষ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। এখানে সরকারি বেসরকারি ব্যাংক, বীমাসহ ৩৮ টা অফিস বিদ্যমান আছে। এতে ভাড়া বাবদ মাসিক আয় হয় প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পদাধিকারবলে এর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন বিজেএমসি'র চেয়ারম্যান। ১৯৯১ সাল থেকে পাট সচিব স্বয়ং প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তৎকালীন সচিব এম. আসফ্উদ্দৌলা প্রথম প্রশাসক হন। সরকারি ব্যবস্হাপনায় চলছে বিধায় এখনো এমন মূল্যবান সম্পতি বেহাত হয়নি। তবে এমন আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ বিদ্যমান আছে। ভাড়াটিয়া কর্তৃক স্হায়ী ভাবে দখল করার লক্ষে আদমজী সন্স লিমিটেড পক্ষে বিপক্ষে অন্তত ১৬টা মামলা নিম্ন এবং উচ্চ আদালতে চলমান আছে। একাধিক রীট মামলাও রয়েছে । অনেকে ভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রীট দায়ের করে কালক্ষেপন করে চলেছে। মনে হয়, বিশাল এই সম্পতি ও রাজধানীর কেন্দ্রস্হলে অবস্থিত ঐতিহাসিক এ কার্যালয়ের প্রতি সরকারের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের এখনো বাস্তবভিত্তিক কোনো পরিকল্পনা নেই। 

৫) এই মন্ত্রনালয়ের অধীন অনেকগুলো দপ্তর/ সংস্থা কাজ করছে। অফিসগুলো রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত এবং এদিক ওদিক অবস্থিত। বিশেষ বিশেষ দপ্তরসমূহের মধ্যে  বিজেএমসি, বিটিএমসি, বস্ত্র অধিদপ্তর, পাট অধিদপ্তর, তাঁতবোর্ড, রেশম উন্নয়ন বোর্ড, বিজেসি, জেডিপিসি ইত্যাদি। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সঙ্গে সঙ্গে  ১৯৭২ সাল থেকেই সরকারি সিদ্ধান্তে আদমজী সন্স লিঃ একটা পরিত্যক্ত সম্পত্তি। রাজধানীর মতিঝিলে আদমজী কোর্টের বিস্তীর্ণ স্হানে একটা আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বহুতল ভবন নির্মানের মাধ্যমে এসব দপ্তর সংস্থার বেশ কয়েকটিকে স্থানান্তরিত করা যায় ; একই সাথে অন্যান্য

প্রাইভেট অফিসের বিপরীতে ভাড়া বাবদ বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। তাছাড়া সরকারের একচ্ছত্র মালিকানা ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে সৃষ্টি করা যায় 'পাট-বস্ত্র ভবন' অথবা 'সোনালী আঁশ ভবন'। তৈরি করা যায় আকর্ষণীয় ঝলমলে দৃষ্টিনন্দন আকাশস্পর্শী অট্টালিকা। এবিষয়ে বর্তমান সরকারের সক্ষমতার কোনো ঘাটতি নেই। ইতোমধ্যে সরকার অসংখ্য মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তা প্রমান করেছে। সরকারকে সবসময় সাশ্রয়ী এবং অপচয়রোধ কল্পে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে সার্বিক সহযোগিতা করার দায়িত্ব আমলাতন্ত্রের ওপরই বর্তায়। সুদীর্ঘ তিনদশক পেরিয়ে মনে হয়, আমরা এ জায়গায় পৌঁছাতে এখনো যথেষ্ট পিছিয়ে আছি । আমরা সৎ সাহসী ও দেশপ্রেমিক গণ কর্মচারী চাই। আমাদের মাতৃভূমি ও মানুষ হোক প্রথম পাঠ, প্রথম শ্লোগান। 

১৪ কার্তিক ১৪২৯ বঙ্গাব্দ 
লেখক: প্রাবন্ধিক ও গল্পকার।


আদমজী কোর্ট   হোসেন আব্দুল মান্নান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

কতিপয় সাংবাদিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর


Thumbnail

বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।

ভিন্ন চিত্র দেখলাম শনিবার সকালে বরিশাল সদর হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে যেয়ে দেখেন দুজন টিভি সাংবাদিক ওয়ার্ডে ভিডিও করছেন। ভিডিও শেষ হবার পর চিকিৎসক তাঁর রাউন্ড শুরু করলেন। রাউন্ড শুরু করতেই দুজন সাংবাদিক আবার ক্যামেরা ধরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা শুরু করলেন। চিকিৎসক তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বিনয়ের সাথে নিচু স্বরে একে একে ২০ বার (গুনে নিশ্চিত হয়েই বলছি) সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করলেন, পরিচয় জানতে চাইলেন। উক্ত সাংবাদিক নাম বলেননি, পরিচয় দেননি। বরং উচ্চস্বরে উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উর্ধতন কাউকে ফোন দেয়ার পর সাংবাদিক সাহেব তার নাম বলেছেন। এখানে দুটি প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।  প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক দুজন কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সাংবাদিক দুজনকে কেন নাম বলতে হবে ? নাম, পদবি, পরিচয় থাকবে তাদের বুকে বা কোমরে প্রদর্শিত আই ডি কার্ডে। এখন দেখার বিষয়,  প্রদর্শিত স্থানে আই ডি ছিল কিনা ? না থাকলে থাকবে না কেন?

সাংবাদিক ও চিকিৎসকবৃন্দ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমূহ পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। সব গুলো ভিডিও কয়েকবার দেখেছি, পর্যালোচনা করেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলেননি। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সাংবাদিক দুজন বারবার উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তাদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি মগের মুল্লুক। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড রাউন্ড শুরু করার আগে প্রতি রোগীর সাথে একজন এটেন্ডেন্ট ব্যাতিরেকে সবাইকে বের হবার কথা বলেছেন। সবাই বেরিয়ে না গেলে তিনি চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেটাই নিয়ম।  সারা দুনিয়ায় সেটাই হয়ে থাকে। সাংবাদিকদ্বয় সেটি শুনতে নারাজ। এখানে তারা স্পষ্টতই সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।  

দিন শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখলাম সাংবাদিকদের হেনস্থা করেছে ডাক্তার। অথচ ভিডিও গুলি পর্যালোচনা করলে যে কেউ বলবেন, ডাক্তারকে হেনস্থা করেছে সাংবাদিকরা। আসলেই মগের মুল্লুক। ঘটনা কি ? আর সংবাদ শিরোনাম কি? এসব মগের মুল্লুকের রাজত্ব  থেকে জাতিকে পরিত্রান দেয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমএ, এফডিএসএর, বিডিএফ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেয়া দরকার। কমিটি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে ও তাদের দায়িত্ব নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সে নীতিমালায় যাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান না করা হয়, রোগীর অনুমতি ব্যাতিরেকে তাদের ছবি, ভিডিও বা রোগ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রচার না করা হয়, সেসব বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। তা না হলে হাসপাতাল সমূহে এ ধরণের অরাজকতা হতেই থাকবে, বাড়তেই থাকবে।  

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

প্রথম আলোর পর কী ডেইলি স্টারও বিক্রি হবে?


Thumbnail

এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।

প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে অনেকেরই  ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী লোক।

এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।

আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম। সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায় যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।

তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।

তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।


প্রথম আলো   ডেইলি স্টার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে বিএনপির রাজনীতি


Thumbnail

বিএনপির রাজনীতি এখন ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে। রাজনীতিতে একের পর এক ভুল করার কারণে তারা এখন হতাশায় নিমজ্জিত। কোন কী বলতে হবে সেটার খেই হারিয়ে ফেলেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। 

বিএনপি এখন দাবি করছে যে, তাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মী জেলে আছেন। এখানে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি হল যদি ৬০ লাখ কর্মী তাদের থাকত তাহলে এতদিনে তারা কেন আন্দোলনে ব্যর্থ হল? যদি এত সংখ্যক নেতাকর্মী থাকত তাহলে তো অনেক আগেই সরকারের পতন ঘটে যেত। কারণ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য এক লাখ নেতাকর্মী হলেই যথেষ্ট। কিন্তু এত সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়েও তারা ব্যর্থ কেন! এত বড় সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে তারা তাদের নেত্রীকে জেল থেকে মুক্ত করতে পারেনি। কোন আন্দোলনই তারা করতে পারল না! বরং তাদের নেত্রীকে সরকারের অনুকম্পায় ফিরোজায় থাকতে হচ্ছে। ফলে স্বভাবতই বিএনপির নেতাকর্মীর সংখ্যা কত সেটা একটা বড় প্রশ্ন। আর এত নেতাকর্মী থাকা সত্বেও তাদের নেতাকে লন্ডনে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে! 

দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় হল বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মী যদি জেলে থাকেন তাহলে দেশের জেলখানা গুলোর ধারণ ক্ষমতা কত। এবং সেখানে যদি বিএনপির নেতাকর্মীর সংখ্যাই হয় ৬০ লাখ তাহলে এর মধ্যে সাধারণ কয়েদি কোথায় আছেন। তাদেরকেই বা কোথায় রাখা হয়েছে।

কথায় আছে, পথের মাঝে পথ হারালে আর কি পথ ফিরে পাওয়া যায়! বিএনপির অবস্থায় এখন তাই। তারা রাজনীতির পথের মাঝে রাজনীতির পথ হারিয়ে ফেলেছেন। কোনটা রাজনীতি আর কোনটা রাজনীতি নয় সেটাও বিএনপির নেতাকর্মীরা বোধহয় ভুলে গেছেন কিংবা বুঝতে পারছেন না। অন্য আরেকটি কথায় আছে যে, স্বপ্নে যখন কেউ কিছু খাবে তখন পান্তা খাবে কেন? পোলাও কোরমা খাওয়াই ভালো। বিরিয়ানিও খাওয়া যেতে পারে। সুতরাং ৬০ লাখ না বলে তাদের বলা উচিত ছিল বাংলাদেশে তো প্রায় ১৮ কোটি লোক আছে এর মধ্যে ৬ কোটি লোকই বিএনপির নেতাকর্মী। তাহলে অত্যন্ত লোকে আরও ভালো ভাবে বুঝত যে, বিএনপি আসলেই অনেক বড় একটি শক্তিশালী দল এবং তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বিরা বুঝতে পারত যে, বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অত্যন্ত ভালো। 

তবে বাস্তবতা হল বিএনপি ৬০ লাখ নেতাকর্মী দাবি করলেও আসলে তাদের কোন জনসমর্থনই নাই। যদি তাই থাকত তাহলে তারা নির্বাচন বিষয়টিকে এত ভয় পেত না। নির্বাচন বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নিত না। শুধু তাই নয়, বিদেশিও তাদের কোন বন্ধু নাই। যারা আছে সেই বন্ধুদের কথায় দলটি বরং এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। দেশিয় বিএনপির যে সমস্ত বন্ধুরা ছিলেন, বিভিন্ন সময় বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে কিছু লেখালেখি করতেন, তাদেরকে রাষ্ট্রক্ষমতার স্বপ্ন দেখাতেন তারাও এখন হারিয়ে গেছেন। সব কিছু মিলিয়ে দলটি এখন অনেকেটা এতিম হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়ত সামনে দলটির নাম নিশানাও থাকবে না। যারা নিজের দলের নেতাকর্মীর সঠিক সংখ্যা জানেন না তাহলে বুঝতে হবে সেই দলটি এখন কোন পর্যায় গেছে। কতটা দেউলিয়া হলে একটি দলের নেতাকর্মীর সংখ্যা নিয়ে তারা নিজেরাই বিভ্রান্ত হন। সুতরাং দলটি যে অচিরেই হারিয়ে যেতে বসছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন