চাকরি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মাত্র কয়েক মাসের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের সচিব নিযুক্ত হয়েছিলাম। একথা অনস্বীকার্য যে, সৃষ্টিশীল কর্মের কথা বিবেচনায় আনলে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রনালয়। যদিও
বাহ্যিক জনমতে তার প্রতিফলন সীমিত। মূলত: দুটো মন্ত্রনালয়কে একীভূত করে বর্তমানে এর দাপ্তরিক কাজ পরিচালিত হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও বস্ত্র এবং পাট পৃথক মন্ত্রনালয় হিসেবে চালু ছিল। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের নিরিখে দেখলে এই উভয় খাত সন্দেহাতীতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বলা যায়, বস্ত্র ও পাট বাঙালির চিরকালীন জীবন-ইতিহাসেরও অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ধারক বাহক।
জানা যায়, জনস্বার্থ এবং দৈনন্দিন কাজের সুবিধার্থে ২০০৪ সালে সরকার দুটো মন্ত্রনালয়কে একত্রিত করে দেয়। বর্তমানে বেশ কতগুলো ছোট বড়ো দপ্তর, সংস্থার সমন্বয়ে মন্ত্রনালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। অপরাপর মন্ত্রনালয়/বিভাগের মতন এখানেও পাট এবং বস্ত্র বিষয়ক সংযুক্ত ডিপার্টমেন্টসমূহ থেকে মাঠ পর্যায়ে সরকারি নীতি ও সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন করে চলেছে।
২) প্রজাতন্ত্রের সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমি একান্ত ব্যক্তিগত আগ্রহে তথা কৌতূহলবশতঃ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীর কয়েকটি পাটকল স্হাপনা পরিদর্শন করেছিলাম। তখন গভীর অভিনিবেশ নিয়ে লক্ষ করেছি এর বৃহদাকার অবয়বের নিস্প্রাণ পরিত্যক্ততা, অনেকদিন মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি এমন বিশাল উন্মুক্ত মাঠ, সুরম্য আবাসিক এলাকা, সুদীর্ঘ আয়তনের ভবন ও ভেতরের মূল্যবান যন্ত্রাংশের নীরব কান্না এবং নিঃশব্দ আহাজারি। বিশেষ করে চল্লিশ-পঞ্চাশের দশকে গড়ে ওঠা পাটশিল্প সংশ্লিষ্ঠ কারখানাগুলো আমাকে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাক ও বেদনার্ত করেছিল। প্রজাতন্ত্রের একজন নিরঙ্কুশ স্বদেশজীবি কর্মচারি হিসেবে প্রথম দর্শনেই অশ্রুসজল হওয়া ব্যতীত আমার কোনো উপায় ছিলনা। এটা সকলই অবহিত, আমাদের দেশের প্রায় সব ক'টা পাটকল কোনো না কোনো নদীর তীর ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে। যদ্দুর জানি আজ অবধি খুলনার ভৈরব নদী ছাড়া অন্য নদীগুলো যেন স্রোতহারা, দুষনাক্রান্ত এবং জীবম্মৃত। বলাবাহুল্য, এদেশে রেলওয়ে এবং পাট মন্ত্রনালয়ের স্থাবর সম্পত্তি সবচেয়ে বেশি। আজকের পাটকলের বিমর্ষ চেহারার সঙ্গে একাকার হয়ে আছে তীরবর্তী নদীর চেহারা। কালের মৌন সাক্ষী হয়ে আছে নদীগুলো। এমনকি এক সময়ের রমরমা জৌলুশ-ঝরা পাটের আঁশ থেকেও যেন সরে গেছে সোনালী বাহার। মিলের কর্মহীন ছদ্ম-বেকার কর্মচারিদের দু'চোখের পাতার নিচে অনিশ্চিত বিষন্নতার কালো ছায়া। মনে হয়, নদীর ঘোলাটে জলের ওপর প্রতিদিন নিভৃতে ঝরে পড়ছে এদের চোখের জল। ভাবছিলাম, আমরা কি পরিবেশবান্ধব প্রকৃতিপ্রদত্ত দেশীয় জাতের পাটের আঁশ থেকে শুধু ব্যাগ বা ছালাও প্রস্তুত করতে পারিনা? যেখানে খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রনালয় পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যাগ ক্রয় করছে বা আমদানি করছে।
এখানে প্রাসঙ্গিক যে, বর্তমানে বিজেএমসি'র আওতায় ২৫ টি জুটমিল রয়েছে। তাছাড়াও ৬টি বৃহৎ আকারের মিল আছে, যেমন-- করিম, লতিফ বাওয়ানী, ইউ,এম,সি, আমিন, প্লাটিনাম জুবিলী ও ক্রিসেন্ট জুট মিল। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে প্রায় ৭৫,০০০ শ্রমিককে সরকার তাঁদের ন্যায্য দাবী ও পাওনা পরিশোধ সাপেক্ষে মিল থেকে তাদের চাকরি কালের অবসান ঘটায়। তবে এখনো ৯৫৪ জন কর্মকর্তা এবং ১,৫৭৩ জন কর্মচারী স্ব স্ব পদে বহাল আছেন। অথচ ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে মিলগুলোর উৎপাদন কাজ সম্পূর্ণরপে বন্ধ রয়েছে। জানা যায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অন্ততঃ ২,৫২৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির তেমন কোনো কাজ নেই। যদিও যথানিয়মে তাঁদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করা হচ্ছে। কাজের বিনিময়েই জীবিকা হতে হয়। এর উল্টোটা হলে ফল কখনো ভালো হয় না, শুভ হয় না।
মিলগুলোর ভেতরের বিরাজমান মহাকালের এমন স্তব্ধতার অবসান কবে? এর ভবিষ্যৎ কোথায়? অপেক্ষার প্রহর শেষ কবে? এমন সীমাহীন অপচয় ও বন্ধাত্বের জন্য দায়ী কারা?
ইতিহাস বলে, পৃথিবীতে শ্রমিক শ্রেনীর শ্রমে এবং নেতৃত্বেই সভ্যতার ভীত রচিত হয়েছে। কিন্তু আমরা কতিপয় প্রাইভেট সেক্টর ছাড়া পাবলিক এন্টারপ্রাইজগুলোতে শ্রমিকের শ্রম গ্রহন করতে পারছিনা কেন? এসব পাহাড় সমান প্রশ্নের সরল কোনো উত্তর নেই। গবেষণা পর গবেষণা চলছে। এবং অনাগত কাল চলবে। তবু বলবো, কেবল সময় সবকিছু অবলীলায় হজম করতে পারে। সময়ই প্রকৃত নীলকন্ঠ।
৩) আদমজী জুট মিলস লিঃ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। বলা যায়, একসময় নারায়ণগন্জ এবং আদমজী মিল প্রায় সমার্থক নামে পরিণত হয়েছিল। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে প্রায় ৩০০ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছিল এই বিশ্ববিখ্যাত জুটমিল। এদেশের পাট শিল্পের জয়জয়ন্তী ঘটে এর হাত ধরেই। রাস্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের জন্ম নেয়ার অব্যবহিত পরেই ১৯৫০ সালে এ পাটকলের যাত্রা শুরু হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা আবদুল ওয়াহিদ আদমজী। তাঁর পূর্ব পুরুষ মূলতঃ গুজরাটের অধিবাসী ছিলেন। আদমজীকে একসময় স্কটল্যান্ডের ডান্ডির সঙ্গে তুলনা করে বলা হতো প্রাচ্যের ডান্ডি। আদমজী গ্রুপ অব কোম্পানি ছিল এর স্বত্তাধিকারী। যারা ১৯৭১ সাল অবধি এর মালিকানা ধরে রেখেছিলেন। ষাটের দশকে তারা ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি পূর্ব পাকিস্তানে বেশ কিছু জনহিতকর উদ্যোগও হাতে নিয়েছিল। তারা ১৯৬০ সালে ঢাকায় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ প্রতিষ্টা করেন। গুল মোহাম্মদ আদমজী এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। মতিঝিল শিল্পাঞ্চলে তারা আদমজী সন্স লিমিটেড নামে এক বিশাল পারিবারিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এর দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্ত আদমজী কোর্ট স্হাপন করেন। উল্লেখ্য, আদমজীরা তৎকালীন পাকিস্তানের বিখ্যাত ২২ পরিবারের অন্যতম একজন ছিলেন। বলা হয়, তারা ছিলেন জাত ব্যবসায়ী।
৪) আদমজী সন্স লিমিটেডের অধীনে
মতিঝিলে ৪৮.৬ কাঠা জমির ওপর নির্মিত তিনটি বহুতল ভবন রয়েছে। এতে প্রায় ২ লক্ষ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। এখানে সরকারি বেসরকারি ব্যাংক, বীমাসহ ৩৮ টা অফিস বিদ্যমান আছে। এতে ভাড়া বাবদ মাসিক আয় হয় প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পদাধিকারবলে এর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন বিজেএমসি'র চেয়ারম্যান। ১৯৯১ সাল থেকে পাট সচিব স্বয়ং প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তৎকালীন সচিব এম. আসফ্উদ্দৌলা প্রথম প্রশাসক হন। সরকারি ব্যবস্হাপনায় চলছে বিধায় এখনো এমন মূল্যবান সম্পতি বেহাত হয়নি। তবে এমন আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ বিদ্যমান আছে। ভাড়াটিয়া কর্তৃক স্হায়ী ভাবে দখল করার লক্ষে আদমজী সন্স লিমিটেড পক্ষে বিপক্ষে অন্তত ১৬টা মামলা নিম্ন এবং উচ্চ আদালতে চলমান আছে। একাধিক রীট মামলাও রয়েছে । অনেকে ভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রীট দায়ের করে কালক্ষেপন করে চলেছে। মনে হয়, বিশাল এই সম্পতি ও রাজধানীর কেন্দ্রস্হলে অবস্থিত ঐতিহাসিক এ কার্যালয়ের প্রতি সরকারের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের এখনো বাস্তবভিত্তিক কোনো পরিকল্পনা নেই।
৫) এই মন্ত্রনালয়ের অধীন অনেকগুলো দপ্তর/ সংস্থা কাজ করছে। অফিসগুলো রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত এবং এদিক ওদিক অবস্থিত। বিশেষ বিশেষ দপ্তরসমূহের মধ্যে বিজেএমসি, বিটিএমসি, বস্ত্র অধিদপ্তর, পাট অধিদপ্তর, তাঁতবোর্ড, রেশম উন্নয়ন বোর্ড, বিজেসি, জেডিপিসি ইত্যাদি। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ১৯৭২ সাল থেকেই সরকারি সিদ্ধান্তে আদমজী সন্স লিঃ একটা পরিত্যক্ত সম্পত্তি। রাজধানীর মতিঝিলে আদমজী কোর্টের বিস্তীর্ণ স্হানে একটা আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বহুতল ভবন নির্মানের মাধ্যমে এসব দপ্তর সংস্থার বেশ কয়েকটিকে স্থানান্তরিত করা যায় ; একই সাথে অন্যান্য
প্রাইভেট অফিসের বিপরীতে ভাড়া বাবদ বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। তাছাড়া সরকারের একচ্ছত্র মালিকানা ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে সৃষ্টি করা যায় 'পাট-বস্ত্র ভবন' অথবা 'সোনালী আঁশ ভবন'। তৈরি করা যায় আকর্ষণীয় ঝলমলে দৃষ্টিনন্দন আকাশস্পর্শী অট্টালিকা। এবিষয়ে বর্তমান সরকারের সক্ষমতার কোনো ঘাটতি নেই। ইতোমধ্যে সরকার অসংখ্য মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তা প্রমান করেছে। সরকারকে সবসময় সাশ্রয়ী এবং অপচয়রোধ কল্পে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে সার্বিক সহযোগিতা করার দায়িত্ব আমলাতন্ত্রের ওপরই বর্তায়। সুদীর্ঘ তিনদশক পেরিয়ে মনে হয়, আমরা এ জায়গায় পৌঁছাতে এখনো যথেষ্ট পিছিয়ে আছি । আমরা সৎ সাহসী ও দেশপ্রেমিক গণ কর্মচারী চাই। আমাদের মাতৃভূমি ও মানুষ হোক প্রথম পাঠ, প্রথম শ্লোগান।
আদমজী কোর্ট হোসেন আব্দুল মান্নান
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর