গত দুই পর্বের আলোচনায় আমরা
লক্ষ্য করেছি বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কুশীলবগণ শুধুমাত্র ’৭৫ সালেই তৎপর হয়েছিলেন
এমন নয়, এদের পরিকল্পনা তৈরি হয়েছিল অনেক আগে থেকেই। এ যাবতকালে প্রাপ্ত সকল তথ্য
সাজিয়ে নিলে দেখা যায় কয়েকটি মোটা দাগে এসব পরিকল্পনার ছক আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়
যার উদ্দেশ্যমূলে আছে- ১। প্রকৃতই হত্যাকান্ডের দায় থেকে অপরাধীদের মুক্ত রাখা,
চাকুরী দিয়ে পুরস্কৃত করা ও ২। কুশীলবদের অপর একটি অংশ সরকারের দায়িত্বভার নেয়া।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যারা এই কাজে এই দুই অংশকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জগতে নিজেদের
অবস্থান সুসংহত করতে সহায়তা করেছে ও যে সহায়তা ছাড়া এদের পক্ষে এই জঘন্য
হত্যাকান্ড সংঘটনের কাজ কখনও সম্ভব ছিল না ও হত্যাকান্ডোত্তর রাষ্ট্রকে স্বাধীনতার
মৌলিক নীতি থেকে সরিয়ে নিয়ে উল্টোমুখী নীতি স্থাপন করে পরিচালনা করা কখনওই সম্ভব
হতো না তারা কারা? ইতিহাসের তথ্য প্রমাণে দেখা যায়, বাংলাদেশের এই তথাকথিত
‘ক্রান্তিলগ্ন’ তৈরি করে তাকে ভিন্ন ভাবধারায় পরিচালনার জন্যে স্বাধীনতার পর পরই
এদেশে যেসব অবাস্তব রাজনৈতিক তত্ত্ব উপস্থাপন করা হয়েছিল সেসব অর্বাচীন দার্শনিকেরা
ইতিহাসের এই রূপান্তর পটের জন্যে কম দায়ী নয়। এসব তত্বভূতের নায়কেরা বঙ্গবন্ধু
সরকারকে অশান্ত করে রাখতে কোন একটি শক্তির কাছে দায়বদ্ধ ছিল যার প্রমাণ ৩-৭
নভেম্বরের অস্থির সময়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা কিন্তু আর একটি অক্ষ শক্তির ক্রীড়নক
হয়ে তারা পরাস্ত হয়েছিল কারণ সে পরাশক্তির কৌশল বুঝবার ক্ষমতা তাদের ছিল না।
দ্বিতীয়তঃ আমাদের মিলিয়ে দেখতে হবে বঙ্গবন্ধু হত্যা সংঘটনের পর কারা বেশি সুবিধা ভোগ করেছে? খন্দকার মোশতাক, নাকি হত্যাকান্ড ঘটিয়ে দেবার ওই ১২ জন অপরাধী নাকি পরেরকালের সরকার প্রধান জিয়াউর রহমান ও এরশাদ? আমাদের প্রশ্ন মোশতাকের আমলের আপত্তিকর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বহাল রাখলো কেন? এরশাদ শুধু তা বহালই রাখেনি হত্যাকারীদের রাজনীতিও করতে সুযোগ দিয়েছে এমনকি সংসদেও যাবার পথ করে দিয়েছে। এমনকি সাংসদীয় ব্যবস্থায় ফিরে এসে খালেদা জিয়াও সে দায়মুক্তির আদেশ বহাল রেখেছে! পাঠক একবার ভাবুন, প্রকাশ্য স্বীকারোক্তি দেয়া হত্যাকারী যারা জাতির পিতাকে, একটি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা নেতাকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করেছে আর তাদের সে হত্যাকে আইন করে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে, তারা দেশে বুক ফুলিয়ে রাজনীতি করেছে এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের আইন সভার নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে এসেছে- এসব তথ্য জেনে একটি গর্বিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বিবেকের কাছে কী উত্তর আপনার দেবার আছে?
আমাদের তথ্য অনুসন্ধান ও গবেষণায় দেখা যাচ্ছে মোশতাক সরকারের সাথে পরাশক্তির সম্পর্ক গঠনে যেসব আমলা ও কূটনীতিক ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করা যা গুটিকয় দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা ছাড়া বেশিরভাগই করেননি কারণ তাদের চাকুরী ও জীবন রক্ষার অজুহাত ছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করায় বা মেনে না নেবার ফলে কেউ কেউ নানারকম ঝামেলায় পড়েছিলেন ঠিকই কিন্তু বেসামরিক কাউকে মেরে ফেলা হয়েছে এমন দৃষ্টান্ত নেই। চাকুরী বজায় রেখেও সে প্রতিবাদ করা যেতো যদি বিবেকের দংশন তাদের থাকতো। তারা ভুলে গিয়েছিলেন যে বঙ্গবন্ধুর আপোষহীন সংগ্রামের ফলে যদি বাংলাদেশ নামের এই ভূখন্ডের জন্ম না হতো তাঁরা কোনদিন রাষ্ট্রদূত বা সচিব হওয়া তো দূরের কথা পাকিস্তানীদের গোলামী করেই নিম্নস্তরে থেকে চাকুরির বেতন পেতে হতো, তাও কোন স্বাধীন দেশের কর্তব্যপরায়ণ নাগরিকের অধিকারে নয়। কিন্তু যে সৌভাগ্যের দরোজা বঙ্গবন্ধু তাদের খুলে দিয়েছিলেন প্রকৃতপক্ষে দেখা যায় তারা সে আনুগত্যের বদলে বিশ্বাসঘাতকতাই করেছেন। সে ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তা, যাদের জিয়াউর রহমান ও এরশাদ বেঁছে বেঁছে ফাসী দিয়েছে, যদিও সেসব হত্যাকাণ্ডের ন্যায্য বিচার আজও হয়নি।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালের ৭ নভেম্বর রিয়াল এডমিরাল এম এইচ খান-কে নৌ বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করেন যিনি দেখা গেলো ৭৫-এর পট পরিবর্তনের পরে জিয়াউর রহমানের অধীনে উপ-সামরিক আইন প্রশাসক হলেন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি নথিপত্রে ১ জুলাই ১৯৭৬ সালে কিসিঞ্জারের লেখা একটি প্রতিবেদনে পাওয়া গেলো এই এডমিরাল খানের দূতিয়ালী, ওয়াশিংটনে তখনকার রাষ্ট্রদূত এম আর সিদ্দিকী (বঙ্গবন্ধুর প্রথম সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী)-কে নিয়ে ইউএস এইডের প্রশাসক ড্যানিয়েল পার্কারের সাথে দেখা করতে যান ও জিয়াউর রহমা্নের সামরিক সরকারের জন্যে কৃষি, খাদ্য, রেলওয়ে ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সহায়তা প্রার্থনা করেন যেগুলোর অধিকাংশই মঞ্জুর হয়। এছাড়া এডমিরাল খান ছ’টি হেলিকপ্টার সহায়তা চাইলে পার্কার তা প্রত্যাখ্যান করেন এই বলে যে সাহায্য সহায়তায় এরকম সুযোগ নেই। কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য এই প্রতিবেদনে আছে যা হলো, বঙ্গবন্ধুর আমলে কিউবায় পাট বিক্রয়ের অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র যে খাদ্য সহায়তা বন্ধ করেছিল এডমিরাল খান তা তুলে নিতে অনুরোধ করেন। উপস্থিত মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব গার্ডিনের ঠাকার নিশ্চিত করেন যে তা মঞ্জুর করা হয়েছে (The Admiral asked that we consider a waiver to permit Bangladesh to sell Jute to Cuba. Gardiner confirmed that waiver has been granted) । এখন যদি আমরা প্রশ্ন করি কিউবার সাথে পাট বিক্রয় নিয়ে কিসিঞ্জার যে হুলস্থূল করে বঙ্গবন্ধু সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করলো, এক আলোচনায় তা প্রত্যাহার হল কেমন করে? তাহলে পরের সরকারগুলো টিকিয়ে রাখতে যে মার্কিন চেষ্টা তার সাথে এই বিবেকহীন সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের আর দায়মুক্তি পাওয়া খুনীদের পার্থক্য থাকলো কোথায়!
এই দায়মুক্তির সুবিধা নিয়েছে মার্কিন ও চীন সরকারও। পরের সরকারগুলোর আমলে এই দুই পরাশক্তি যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তারা তাদের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ ছাড়াও বাংলাদেশকে আদর্শচ্যুত করতে যেসব পদক্ষেপ জিয়াউর রহমান নিচ্ছিলেন সেসব কর্মকান্ডকে প্রকারান্তরে বৈধতা ও সমর্থন দিচ্ছিল। এরকম অমানবিক নৈরাজ্যে পরাশক্তির পুতুল হয়ে বা দাসত্ব মেনে স্বাধীন বাংলাদেশে পরাজিত রাজনৈতিক অপশক্তি ও আমলাতন্ত্রও মিলেমিশে একাকার হয়েছিল যার মূল্য বাংলাদেশকেই দিতে হয়েছে। আর এ সুযোগে এদেশে জন্ম নিয়েছে একটি লুটেরা মধ্যবিত্ত শ্রেণী, যে শ্রেণী পরবর্তীকালে আদর্শহীন রাজনীতি ও অপসংস্কৃতি চর্চার মধ্যে বিকশিত হয়ে বাংলাদেশকে তার বাঙালী জাতীয়তাবাদের মূলমন্ত্র থেকে সরিয়ে নিতে প্রয়াস পেয়েছে।
বাংলাদেশের সাথে ভারতের যে ঐতিহাসিক বন্ধন তা সাংস্কৃতিক। ১৯৭১ সালের মার্কিন নীতিতে তাকেও তুচ্ছ করে দেখা হয়েছিল যার প্রমাণ দেয় হোয়াইট হাউসের নিক্সন ট্যাপ ও সেসময়ের নথিপত্রে। ২০১৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অনুরাগী মার্কিন গবেষক অধ্যাপক গ্যারি বাস লিখেছিলেন, “নিক্সন এবং কিসিঞ্জার কেবল চৈতন্য বা ভারতের সোভিয়েতপন্থী ঝোঁকের গোপন কারণে পাকিস্তানের প্রতি সহায়তার বৈষম্যমূলক রিয়েলপলিটিক দ্বারা অনুপ্রাণিত হননি। হোয়াইট হাউস টেপগুলি নিক্সনের অভ্যাসগত অশ্লীলতার চেয়ে অনেক বেশি দূরে গিয়ে তাদের মানসিক ক্রোধকে ক্যাপচার করে। ওভাল অফিসে নিক্সন কিসিঞ্জারকে বলেছিলেন যে ভারতীয়দের ‘একটি বিশাল দুর্ভিক্ষের দরকার’ ছিল। কিসিঞ্জারও এমনই কটাক্ষ করেছিলেন যারা মৃত্যুমুখী বাঙালিদের জন্য রক্তপাত করেছিলেন” (Nixon and Kissinger were not just motivated by dispassionate realpolitik, weighing Pakistan’s help with the secret opening to China or India’s pro-Soviet leanings. The White House tapes capture their emotional rage, going far beyond Nixon’s habitual vulgarity. In the Oval Office, Nixon told Kissinger that the Indians needed “a mass famine.” Kissinger sneered at people who “bleed” for “the dying Bengalis.”)। এমন বিকৃত মার্কিন নীতির সুবিধা কিসিঞ্জারের শেষদিন পর্যন্ত অব্যাহতই ছিল আর সে সুবাদে জিয়াউর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত প্রতিশোধপরায়ণ মৌলবাদী শক্তি, চীনাপন্থী বাম ঘরাণার অপরাজনৈতিক শক্তি মিলেমিশে যে ক্ষমতাভোগী চক্রের জন্ম হয়েছিল ভারত বিরোধিতা ছাড়া আর কোন অস্ত্র তাদের হাতে ছিল না। আর আমরা জেনেশুনে পরবর্তীকালে ভারতের প্রতি অকৃতজ্ঞ রাজনৈতিক দাসে পরিণত হয়েছি কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যার দায়মুক্তি সে পথ সহজ করে দিয়েছিল।
ফলে এখন এ কথা বলতে কোনই দ্বিধা নেই যারা বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তীকালের সুবিধাভোগী তারা দায়মুক্তির সুবিধা নিয়েই নিজেদের ভোগ চূড়ান্ত করেছে। সুতরাং দায়মুক্তি আইনের বিলোপ হলেও, বা হত্যাকারীদের বিচার হলেও এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করার কাজ আর সুবিধাভোগীদের বিচারের কাজ। পরিকল্পনাকারীদের চক্র তাদের কাজ সমাধা করে দিয়েছে বটে কিন্তু এর সুবিধা নিয়ে যারা কষ্টার্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের দর্শন, চিন্তা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে একটি অপসমাজ গড়ে তুলেছে তার দায়ীদেরও বিচারের সন্মুখীন করা দরকার। এমন হতে পারে না যে কেউ এসে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিয়ে তার জন্মের ইতিহাস মুছে দেবে, বিকৃত করবে ও মিথ্যা ইতিহাস গড়তে সচেষ্ট থাকবে আর সেসবের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে না। যদি এদের বিচার না করা হয় তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল ত্যাগের তাৎপর্য-মূল্য হারাবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্র দায়মুক্তি
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর