গত সপ্তাহে বাসার বিদ্যুৎবিল পরিশোধ বিষয়ক না দাবী সনদপত্র
খুঁজতে গিয়ে হঠাৎ পেয়ে
যাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের
এক স্মৃতি-স্মারক। আমার দু'চোখের
পাতা কেঁপে ওঠলো। যেন পলকে চার
দশক পেছনে ফিরে গেলাম। ধুলোয় মলিন নথিপত্রের সঙ্গে
লেপ্টে থাকা একখানা অসাধারণ
কাব্যগ্রন্হ। ধূসর বিবর্ণ সে
বইয়ের গা থেকে ময়লা
সরিয়ে হাতে নিয়ে দেখি
কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ'র বই 'আমার
সময়'।
আশির
দশকের মাঝামাঝি সময়ে বইটা আমার
হাতে
এসেছিল। ছেঁড়া মলাট উল্টিয়ে আরও
একবার চমকে যাই।
ভেতরে
নিজ হাতে লেখা --
এম.এ. মান্নান
৬৪৫,
মহসীন হল,
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়
তাং
০৭- ১০- ৮৭ইং।
ভাবছিলাম,
আমি কি এক সময়ে
নামটা এভাবে লিখতাম? আমার হাতের লেখাটা
এমন ছিল?
এখন
কি এভাবে লিখতে পারব? মনে হয় কত
যুগ-যুগান্তর ধরে স্বহস্তে কিছু
লিখি না। কলমের পরিবর্তে
আমরা সবাই এখন কিবোর্ডে
আঙুল ছুঁয়ে থাকি। সারাক্ষণ চোখে চোখে লেগে
আছি এক অবাক স্পর্শের
সাথে।
২) এটা এক দীর্ঘ
কবিতার বই। মোট ছয়টি
কবিতা নিয়ে তেতাল্লিশ পৃষ্ঠার
কাব্য । প্রথম প্রকাশিত
হয়েছিল ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ সালে।
বোঝা
যায়, তখনকার বই মেলার আয়োজনকে
সামনে
রেখেই বোধকরি বাজারে আসে। অনিন্দ্য প্রকাশন,
নবাবপুর রোড, ঢাকা থেকে
মুদ্রিত। প্রচ্ছদ ও মুদ্রন সে
সময়ের তুলনায় চমৎকার দৃষ্টিনন্দন। কবিতাগুলোর শিরোনামও ছিল বেশ চিত্তাকর্ষক
এবং চমকপ্রদ।
'আমার
সকল কথা'
'আমার
সময়'
'পরিচিত
পথঘাট'
'আমি
এখন যাবার জন্যে তৈরী'
'এখন
ভয় করে না'
'আমার
গোপন ব্যথা'
বইটি
কবি তাঁর মা'কে
উৎসর্গ করেছেন।
লিখেছেন,
"আমার মা কাকাতুয়া"কে
--
৩) প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর পরে পুনর্পাঠ করতে গিয়ে মনে পড়ছিল, ছাত্র জীবনে কবিতাগুলো যেন বাঁধ-ভাঙা আবেগের প্রগলভতা নিয়ে পড়েছিলাম। সে বয়সে রবীন্দ্র, নজরুলের বাইরে নাজিম হিকমত, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শামসুর রাহমান, আবুল হাসান, রফিক আজাদ, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, মোহন রায়হান এঁরা ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক ফ্যাশনে পরিণত হয়েছিল। বাঁশী বা কেউ কথা রাখেনি, কবির মৃত্যু, বা জেলখানার চিঠি ইত্যাদি কবিতা থেকে দু'চার ছত্র মুখস্থ থাকা চা'ই। তখনকার দিনে কবিতা আওড়ানোর মধ্যেও একপ্রকার আভিজাত্য ছিল। আজকাল ক্যাম্পাসে কি হয় খুব জানতে ইচ্ছে করে। তবু বলা যায়, মুখস্হ যুগের অবসান হয়েছে। তবে এ কবিকে না পড়লে বলা যাবেনা, কী বিস্ময়কর খেদ ও মনোবেদনা নিয়ে এ পৃথিবীর অশ্রুত গান তিনি গেয়ে গেছেন। কেমন নিপুণ কারিগরের হাত দিয়ে নিজের শৈশব, কৈশোর, যৌবন বা বার্ধক্যের জলছবি তিনি এঁকেছেন। প্রকৃতির রূপ-রূপান্তর, বৃক্ষ লতাপাতা, নদী-নালা, দিগন্ত উন্মোচিত নিসর্গের সংগীত ভেসে আসছে তাঁর নির্বাচিত বর্ণমালায়। ইংরেজি সাহিত্যের মেধাবী ছাত্র এবং তৎকালীন পাকিস্তান এলিট সার্ভিসের সদস্য হয়েও মাতৃভাষা বাংলার প্রতি তাঁর অপরিমেয় ভালবাসার এক আশ্চর্য চিত্র ফুটে ওঠেছে কবিতার প্রতিটি শব্দের গভীরে, অনুপ্রাসের গহীনে বা অন্ত্যমিলের বৃত্তাংশে। কবিরা নাকি কল্পলোকের বাসিন্দা হয় কিন্তু এই কবির দৃষ্টিতে যেন আষ্টেপৃষ্টে ধরা পড়েছিল আবহমান বাংলা, মা, মৃত্তিকা ও মানুষের ক্ষুদ্র জীবনকালের বিমূর্ত রূপের নিগূঢ় ভাষাচিত্র। বিশেষ করে তাঁর 'আমার সময়' কবিতাটি তখনও আমি বারবার পাঠ করেছি এবং মুগ্ধতা ভরে কল্পনা করেছি। দেখেছি চোখের আলোয় উদ্ভাসিত গাঢ় শ্যামল এক মনোজ্ঞ ক্যানভাস।
তিনি লিখেছেন--
আমার
মা'র চুল
লম্বা
এবং কাল ছিল
কবর
কি চুলের মত কালো?
বা
--
এবং
ইদানীং
আমি
আমার বন্ধুদের
অনায়াসে
এড়িয়ে চলি।
আমি
কখনো
মেষ
পালক ছিলাম না
অথচ
গোধূলি এবং সন্ধ্যার
অন্তর্বতী
বিষাদ
রাখালের
বাঁশির মত
আমার
সঙ্গে বাস করে।
অথবা
--
আমার
সময়ে যুবকেরা
হয় আত্মগোপন করতো
অথবা
ধরা পড়তো
অথবা
মরে যেতো।
আরও
--
বৃক্ষ
যেমন পাখির জন্য
ছায়া
ধরে রাখে
নদী
যেমন মাছের জন্য
কোল
পেতে থাকে
কালো
মেঘ যেমন ফুলের জন্য
বর্ষিত
হয়
ফুল
যেমন মৌমাছির জন্য
মধুময়
হয়
আমি
কিছু দিতে পারি না।
আমি
কবিতার কিছু বুঝি না।
লিখতে সাহসও করি না। যদিও
কখনও কখনও কবিতা আমাকে
মোহাচ্ছন্ন করে রাখে। তবে
মনে হয়, কবিতা কেবল
শোনার বিষয়, ভাব ও ভঙ্গির
বিষয়। ছন্দের টানেই রচিত হয় কবিতা,
কবিতায় ব্যবহৃত শব্দের সমন্বিত মিছিলের প্রতিধ্বনি পাঠকের কর্ণ থেকে হৃদয়ে
দোলা দিতে পারে। কবিতা
পড়ে এর যথাযথ অর্থ
খোঁজা পাঠকের কাজ নয়। কবিতার
জন্য প্রয়োজন একটি সংবেদনশীল কান
এবং মন , যা আবু
জাফর ওবায়দুল্লাহ'র শব্দে ও
উপমায় প্রস্ফুটিত হয়ে চারদিকে ধ্বনিত হয়েছে।
৪) বইটির এক প্রান্তের ফ্ল্যাপে
লেখা মন্তব্যও পাঠযোগ্য-
'আবহমান
বাংলা ও বাঙালীর ইতিহাসের
রক্তাক্ত পথ ধরে দেশ
কাল ও সময়ের পটভূমিতে
স্বদেশের প্রতি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ'র প্রগাঢ় কন্ঠের
দূরাগত ঝর্ণাধ্বনির মত মন্ত্রোচ্চারণ 'আমার
সময়'কে বাংলাদেশের জাতীয়
মহাকাব্য বললে অত্যুক্তি করা
হয় না।
সেই
সঙ্গে খালিদ আহসানের সাবলীল রঙ ও রেখার
টানে রচিত হয়েছে এক
আশ্চর্য ধাতব সঙ্গীত নির্ঝর'।
৫) সত্তুরের দশকের শেষ দিকেই কবি
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ্ 'র
মৌলিক কবিতাগুলো জনপ্রিয়তার বিচারে উচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছিল।
বিশেষ
করে তাঁর 'আমি কিংবদন্তির কথা
বলছি' এবং 'বৃষ্টি ও
সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা' নতুন
প্রজন্মকে দারুণ ভাবে আকৃষ্ট করেছিল।
আবৃত্তি শিল্পী বা বাচিকগন তাঁর
কবিতাকে স্বকন্ঠে লালন করে নিজেরাও
আলোচিত হয়েছেন। বলা যায়, আমি
কিংবদন্তির কথা বলছি, আমি
আমার পূর্ব পুরুষের কথা বলছি এই
কবিতাটি স্বাধীনতােত্তর কালের সর্বাধিক জনপ্রিয় কবিতার অন্যতম প্রধান একটি।
এই কবিই বলেছেন,
"আমি
কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি
আমার পূর্ব পুরুষের কথা বলছি,
বা
জিহবায়
উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা।
যে কবিতা শুনতে জানেনা সে আজন্ম
কৃতদাস
থেকে যাবে"।
জয়তু
কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
ও তাঁর
কাব্যগ্রন্হ 'আমার সময়'।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।