ফেইসবুকে একটি ভিডিওক্লিপ দেখছিলাম। একটি লম্বা শূয়া জাতীয় হেঁটে যাচ্ছে। একটি পাখির ছানা পোকাটিকে অনুসরণ করছে। দেখে মনে হচ্ছিল পাখির ছানাটি খুব ক্ষুধার্ত, খাবারের খোঁজে বের হয়েছে। পাখির ছানাটি পোকাটির সামনে গিয়ে মুখ হা করে দাড়ায়,
পোকাটি এগিয়ে যায়, পাখির ছানাটিও এগিয়ে গিয়ে আবারও মুখ হা করে দাড়ায়।
কিন্তু ক্ষুধা নিবারণ হচ্ছে না। কারণ খাবারতো মুখের মধ্যে প্রবেশ করছে না। ভিডিওটির ধারা বর্ণনায় বলা হয়েছে, পাখির ছানাটি মা হারা হয়েছে।
মা থাকতে ছানাটি বাসায়ই থাকতো, মা বিভিন্ন ধরনের
পোকা শিকার করে মুখে করে নিয়ে বাচ্চাদের কাছে ফিরে আসলে ছানাটি হা করতো, অমনি
মা ছানার মুখে পোকাগুলো প্রবেশ করিয়ে দিলে সে খেয়ে নিত।
কিন্তু এখানেতো মা নেই। এছাড়া
সে তো এখনও পোকা
শিকার করা শিখে নাই। তাই ভাবছে হয়তো হা করলেই খাবার
মুখে প্রবেশ করবে। কিন্তু বাস্তবতা এত সোজা নয়।
বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল বিএনপির অবস্থা হয়েছে পাখির ছানাটির মতো। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে, ক্যান্টনমেন্টের মত সুরক্ষিত জায়গায় অবস্থান করে গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় বিভিন্ন দল থেকে নীতিভ্রষ্ট, অর্থ ও ক্ষমতালোভী দলছুট নেতাদের নিয়ে দলটি গঠিত হয় । অবৈধভাবে দখল করা ক্ষমতা বৈধ করতে হ্যাঁ/না ভোটের নাটক মঞ্চস্থ করে। তারা মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ব্যক্তি -সকলকে প্রশাসন থেকে বিদায় করে স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের শাসন কায়েম করেছিল। চিহ্নিত রাজাকারের গাড়িতে শহীদের রক্তে বিনিময়ে অর্জিত লাল-সবুজের পতাকা উড়ানোর সুযোগ দিয়েছিল। ‘বিশেষ ভবন’ এর মাধ্যমে লুটপাট করে দেশকে পরপর পাঁচবার শীর্ষ দুর্নীতিবাজ হিসেবে বিশ্বে পরিচিত করেছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। শেষ পর্যন্ত দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে জনসমর্থনহীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সর্বশান্ত হয়ে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও তার দুই পুত্র দুর্নীতির অপরাধে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক গ্রেফতার ও সাজাপ্রাপ্ত হয়ে মা‘সহ একপুত্র কারাগারে, অপরজন রাজনীতি করবেনা বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এসবই নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা ও অনঅভিজ্ঞতার ফসল। দেশপ্রেমহীন নেতাদের এই পরিনামই প্রাপ্য।
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ থেকে ব্রিটিশরা বিতাড়িত হলেও পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ, বঞ্চনার কষাঘাতে এ দেশের জনগণের দারিদ্রতা আরো প্রকট হতে থাকে। এ দুর্বিষহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য বাঙ্গালি জাতি তৎকালীন ছাত্রনেতা, পরবর্তিতে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়। তিনি ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ এবং ১৯৪৯ সালের ২৩ জুলাই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধিকারের দাবিতে দীর্ঘ ২৩ বছর গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভ করে।
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট কালরাতে কতিপয় পথভ্রষ্ট সামরিক কর্মকর্তা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলংকময় অধ্যায় যশোর সূচনা করে। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও তাদের দোসররা স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার পক্ষের মানুষের উপর নির্যাতন শুরু করে। বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে তাঁর জেষ্ঠ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ ২১ বছর বাংলার মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে হাজার হাজার নেতাকর্মী আত্মাহুতির মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ্য কন্যা শেখ হাসিনা আত্মনিয়োগ করেন, যে কারণে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও তাদের দোসর বিএনপি-জামায়াত সম্প্রতি সরকার উৎখাত আন্দোলনে রাজপথে বিভিন্ন ধরনের সরকার বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে, নানা কর্মসূচি পালন করছে। জনগণের ন্যায্য দাবী নিয়ে বিরোধীদল সরকার বিরোধী আন্দোলনে করবে এটাই স্বাভাবিক, এটাই গণতন্ত্রের চর্চা ও গণতান্ত্রিক অধিকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলের আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি গণতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনকারীদের গণভবনে (মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন) ‘চা পান’ করার জন্য দাওয়াত দিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা যেন নির্বিঘ্নে সমাবেশসহ সকল কর্মসূচি পালন করতে পারে সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। তিনি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের অনুরোধ করেছেন কোনরকম ধর্মঘট বা এ জাতীয় কর্মসূচি বর্জন করার জন্য। সরকারীদল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন কোন প্রকার বাঁধা না দেওয়ার জন্য। এর ফলে তারা বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করেছে, সরকারের সমালোচনা করেছেন, সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রদান করেছেন, হুমকি দিয়েছেন। বিএনপি ও জামায়াত কর্তৃক সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনাসমূহ বিবেচনায় নিয়ে সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করে জনসমর্থন বৃদ্ধি করে।
অথচ বিরোধীদলের অদূরদর্শী নেতারা নিজেদের জনপ্রিয়তার মাত্রা না বুঝে, স্বাধীনতা বিরোধীদের যোগসাজশে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর ২০২২ ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গণতান্ত্রিক দেশে ক্ষমতা বদলের একমাত্র উপায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা না করে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে এবং তা প্রতিহত করার নামে সারাদেশে জ্বালাও-পোড়াও করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা পেট্রোলবোমা মেরে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে বিধায় বিএনপি-জামায়াত জোট জনগণের আস্থা হারিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উপরোক্ত কর্মকান্ডের ফলে ২০১৮ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা মাত্র ৭ আসনে জয়ী হয়ে সারাদেশে পরাজিত হয়েছে।
নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির ঘোষণা দিলে আসন্ন নির্বাচনে ভরাডুবির আশংকায় বিএনপি ও তাদের দোসররা আন্দোলনের নামে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিভাগে নির্বিঘ্নে সমাবেশ করে। কিন্তু তারা ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে সামনে রেখে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করে। নগরবাসীর নিত্য চলাচলের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বিবেচনায় রেখে বিরোধীদলের সমাবেশ নির্বিঘ্ন করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয় এবং অনুরোধ করে। কিন্তু অদূরদর্শী ও অনভিজ্ঞ আন্দোলনকারী সংগঠনটি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রতিপক্ষ মনে করে তাদের পরামর্শ ও অনুরোধ উপেক্ষা করে রাজপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সমাবেশ করার গো ধরে থাকে। নগরবাসী সকলেই নিশ্চয়ই একমত পোষণ করবে যে, ঢাকা মহানগরের রাজপথগুলোর যে কোন একটিতে কয়েকঘন্টা গাড়ী চলাচল বন্ধ করলে পুরো শহরে রাত পর্যন্ত যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হয়। অথচ বিএনপি সাধারণ মানুষের অসুবিধা বিবেচনায় না নিয়ে ১০ ডিসেম্বর ঘোষিত সমাবেশ করার জন্য ৭ ডিসেম্বর থেকে শহরের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করে গরু জবাই করে রান্নাবান্নার আয়োজন করে। শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পদক্ষেপ নিলে তারা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সেই সংঘর্ষে একজন মানুষ নিহত হন। পুলিশ আন্দোলনকারী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তল্লাশী করে তাজা বোমাসহ ১৬০ বস্তা চাউল, ১৬ টি গরু উদ্ধার করে। আন্দোলন করার অভিজ্ঞতা না থাকায় তারা এহেন অরাজনৈতিক হটকারী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছিল। নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই ভেবে তারা আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। পরবর্তিতে পুলিশের নির্দেশ মোতাবেক গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের আয়োজন করলেও আন্দোলনকারীদের এহেন কর্মকাণ্ড ও দাবি-দাওয়ায় সাধারণ মানুষের কথা না থাকায় ঢাকাবাসী বিরক্ত হয়ে আন্দোলনকারীদের প্রত্যাখ্যান করে।
যে কোন আন্দোলনে কর্মসূচি প্রনয়নে দুরদর্শীতা ও অভিজ্ঞতা খুবই জরুরি। আন্দোলনে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততার জন্য তাদের সুবিধা-অসুবিধা, দাবি দাওয়ার কথা থাকা জরুরি। একটি সফল আন্দোলন পরিচালনার জন্য প্রয়োজন একজন দক্ষ, দূরদর্শী, দেশপ্রেমিক নেতা ও গনতান্ত্রিকভাবে গঠিত একটি সংগঠন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ২৬ মার্চ, ২০২৪
যার গন্তব্য স্থান কোথায় সেটা ঠিক নাই, তিনি রাস্তায় গাড়ি বা রিক্সা যেভাবেই যান না কেন সে শুধু উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াবেন। কারণ তার তো গন্তব্য ঠিক নাই। সে গুলশান যাবে, না নিউ মার্কেট যাবে কোথায় যাবে জানে না। বিএনপির অবস্থা এখন ঠিক তাই। তারা জানেই না তাদের আন্দোলনের গন্তব্য কোথায়। জানে না বলেই তারা একের পর এক ভুল করে রাজনীতির কানাগলিতে ঢুকে যাচ্ছে। এর একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ হলো হঠাৎ করে তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে যে, ভারতীয় পণ্য বর্জন সম্ভব কিনা? এখানে একটা কথা উল্লেখ্য করতে চাই যে, এদেশের জনগণ কার কথায় বিশ্বাস করেন? জনগণ বিশ্বাস করেন একমাত্র দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কথা। কারণ তিনি যেটা বলেন সেটা করেন। তিনি যদি কোন প্রশ্নবোধক ডাকও দেন তাহলেও বহু লোক সেটাকে গ্রহণ করবে। কারণ তার প্রতি তাদের বিশ্বাস আছে। আর যে দলের নেতারা প্রায় সবাই হয় সাজাপ্রাপ্ত অথবা জামিনে আছে তাদের কথায় কোন লোক কানে দিবে না।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে যারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলছেন তারা তো ভোরে উঠেই আগে ভারতীয় টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন। দৈনন্দিন জীবনে যা ব্যবহার করি সবই তো ভারতীয় পণ্য। আমাদের বাজারে কোন জিনিস কিনতে গেলে তো ভারতীয় পণ্যটিই বেশি খুঁজি। তাহলে এখন কি আপনারা পেস্ট দিয়ে ব্রাশ না করে কয়লা ব্যবহার করতে চান? সেটা আপনারা করতে পারেন। কয়লার আজকাল দামও অনেক। আবার ঝামেলা হলো সহজে যাওয়া যায় না। সুতরাং সেটাও আপনাদের জন্য অসুবিধা।
কথায় আছে পাগলে কি না বলে ছাগলে কিনা খায়। সে ধরনের একটা রাজনৈতিক কর্মসূচি আপনারা দিয়ে দিলেন কোন কিছু না ভেবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এর মধ্য দিয়ে আপনারা আরও রাজনৈতিক গহ্বরে ঢুকে গেলেন। এখন ভাবে ঢুকছেন সেখান থেকে আর কোন দিন বের হতে পারবেন কিনা সেটা একটা প্রশ্ন।
আমরা এখন বিশ্বায়নের যুগে বাস করি। এখন বিশ্বের কোন দেশেরই নিজস্ব পণ্য বলে কিছু নেই। আমাদের সবাইকে সবার ওপর নির্ভর করতে হয়। সেখানে আপনারা ভারতকে বর্জন করবেন কি করে। ভারত তো সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশি দেশ। তার আগে আমাদের মনে রাখতে হবে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করেছি। সে সময় আমাদের ৩০ লাখ সহযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। এর সাথে আরও ১০ থেকে ১৫ হাজজার ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশের জন্য বাংলাদেশের মাটিতে তাদের রক্ত ঝড়িয়েছেন। আামরা না হয় আমাদের দেশের জন্য রক্ত দিয়েছি। কিন্তু ভারতীয়রা তো জীবন দিয়েছে প্রতিবেশির জন্য। সুতরাং ভারতের সাথে আমাদের কন্ধনটা হলো রক্তের। রক্ত দিয়ে ভারতের জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্ব আপনি পণ্য বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ করবেন কি করে? বাসায় আপনার বউ থেকে শুরু করে বাসার কাজের মেয়ে সবাই ভারতের শাড়ি ব্যবহার করেন। তাহলে আগে তাকে বলবেন যে, আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন।
রিজভী সাহেব বঙ্গবাজার থেকে একটি চাদর কিনে এনে আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে একটা নাটক করেছেন মাত্র। বঙ্গবাজারে আরও অনেক কিছু পাওয়া যায় যেগুলো ভারতের নামে চলে। এটা আমরা জানি। রমজান মাসে ইফতারে আপনি পিয়াজু রাখছেন। এটা বাঙালিদের ইফতারের একটা ঐতিহ্য বলতে পারেন। এটা আমরা খাবই। কিন্তু পেঁয়াজ তো আসে ভারত থেকে। তাহলে এখন তো আপনাকে ইফতারে পিয়াজুও বাদ দিতে হবে। এভাবে আপনি কত বাদ দিবেন। অনেক সময় ভারত থেকে ঝড় আসে। সে সময় তাহলে বাতাসও আপনি নিবেন না। এটা বর্জন করবেন। এটা কি সম্ভব? যদি সম্ভবই না হয় তাহলে পাগলের প্রলাপ বলে কি আর আন্দোলন হয়। পাগল তো তার নিজের ভালোটা বুঝে। আপনাদের ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান দিন শেষে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকেই লাভবান করবে। কারণ আপনাদের আন্দোলনের কোন গন্তব্যই নেই। কোন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আন্দোলন করলে জনগণের কাছে যেতে পারবেন সেটাও আপনারা বুঝেন না। আপনারা পড়ে আছেন ভারতরে পণ্য বর্জনের ডাক নিয়ে। ফলে জনগণের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এদিকে চাপা পড়ে যাবে। আর সরকারও মহা আরাশ আয়েশে চলবে। আমি জানি না, কোন উৎস থেকে টাকা পয়সা পেয়ে আপনারা নতুন করে এই স্লোগান শুরু করেছেন। কিন্তু আপনাদের এই ডাকে বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগই। কারণ আপনারা এবার বিএনপিকে দলগতভাবে কবরে নামানোর জন্য প্রচেষ্টায় নেমেছেন।
মন্তব্য করুন
একাত্তরের ২৫ মার্চের ভয়ালরাত্রি মর্মদাহিক চেতনা প্রবাহের কালখণ্ড।
২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর
বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের এবং আন্তর্জাতিকভাবে
এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত
হয়েছে। এর আগে ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের দাবি ওঠে বাংলাদেশের
সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে।
এ কথা সকলের কাছে পরিষ্কার যে, নয়মাসে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হওয়া নিয়ে
কোনো বিতর্ক চলতে পারে না। কারণ রবার্ট পেইন তার Massacre, The Tragedy of
Bangladesh গ্রন্থে ইয়াহিয়া খানের উদ্ধৃতি দিয়েছেন এভাবে- Kill three million of
them and the rest will eat out of our hands. পাকিস্তানি শাসকদের এই সিদ্ধান্তের কারণে
দৈনিক গড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ খুন হয় সারা বাংলাদেশে। এজন্য ১৯৭১ সালে মার্কিন সিনেটর
এডওয়ার্ড কেনেডি ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে
সরাসরি গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন। ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এ বাংলাদেশের
হত্যাযজ্ঞকে বিশ শতকের ৫টি ভয়ঙ্কর গণহত্যার অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০২ সালে
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিরাপত্তা বিষয়ক আর্কাইভ’ তাদের অবমুক্তকৃত
দলিল প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশের নারকীয় হত্যালীলাকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে চিহ্নিত
করা হয়। ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন কূটনৈতিকরা সেসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্যাপক গণহত্যার
বর্ণনা দিয়ে ওয়াশিংটনে বার্তা প্রেরণ করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা
একাধিক লেখায় এবং বিশ্বখ্যাত পত্রিকা টাইম, নিউইয়র্ক টাইমস প্রভৃতির সম্পাদকীয়তে পাকিস্তানিদের
গণহত্যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। উপরন্তু ১৯৭২ সালে পাকিস্তানে গঠিত
‘হামাদুর রহমান কমিশন’ তাদের পরাজয় অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রমাণ পায় বাংলাদেশে পাকিস্তানি
সেনাদের ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও নারী নির্যাতনে ঘটনার। আর এই ভয়ঙ্কর গণহত্যায় কেঁপে উঠেছিল
বিশ্ববিবেক। জর্জ হ্যারিসন ও পণ্ডিত রবিশংকর ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজন করেন। দার্শনিক
আঁদ্রে মালরোর নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘আন্তর্জাতিক ব্রিগেড’। প্যারিস ও লন্ডনে সরব হয়ে ওঠেন
মানবতাবাদী নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা ব্যাপক এবং নিষ্ঠুরতার
দলিল হিসেবে আজও বিশ্বকে নাড়া দেয়।
আসলে বিংশ শতাব্দীতেই ঘটেছে কোটি মানুষের প্রাণসংহার। বিশ্বযুদ্ধ
ও জাতিনিধনের সেই পরিকল্পিত ও ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ‘জেনোসাইড’ অভিধা পেয়েছে। হিটলারের কনসেনট্রেশন
ক্যাম্প থেকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের বন্দিশিবির সেই জেনোসাইডের নির্মম ইতিহাসের কথা
বলে। অ্যান্থনী মাসকারেনহাস তাঁর ‘দ্যা রেপ অব বাংলাদেশ’ গ্রন্থের ‘গণহত্যা’ অধ্যায়ে
লিখেছেন ‘সারা প্রদেশ জুড়ে হত্যাকাণ্ডের সুব্যবস্থার নমুনার সঙ্গে জেনোসাইড বা গণহত্যা
শব্দটির আভিধানিক সংজ্ঞার হুবহু মিল রয়েছে।’ তিনি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা এবং পাকিস্তানি
সেনা কর্মকর্তার মুখ থেকে জেনেছিলেন গণহত্যার লক্ষবস্তু ছিল- ক) বাঙালি সৈনিক, পুলিশ,
আনসার প্রভৃতি খ) হিন্দু সম্প্রদায় গ) আওয়ামী লীগের লোক ঘ) কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ঙ) অধ্যাপক ও শিক্ষক যাঁরা বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তবে তিনি এটাও লক্ষ
করেছিলেন যে সেনাবাহিনীর নৃশংসতা ছিল নির্বিচার। নিরপরাধ, সাধারণ মানুষকেও শত্রু হিসেবে
গণ্য করেছিল তারা। তাছাড়া তাদের গণহত্যা ছিল ‘শোধন প্রক্রিয়া’ যাকে শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক
সমস্যার সমাধান বলে মনে করত। সেই সঙ্গে এই বর্বরোচিত উপায়ে প্রদেশটিকে উপনিবেশে পরিণত
করাও ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। পাকিস্তানিদের ভাষ্য ছিল- ‘বিচ্ছিন্নতার হুমকি থেকে রক্ষা
করার উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তানকে চিরদিনের জন্য পবিত্র করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সেজন্য
যদি বিশ লাখ লোককে হত্যা করতে হয় এবং প্রদেশটিকে তিরিশ বছরের জন্য উপনিবেশ হিসেবে শাসন
করতে হয়, তবুও।’ শাসকদের এ ধরনের মানসিকতার সঙ্গে পশ্চিমাংশের মানুষের ঐক্য ছিল। আর
এজন্যই ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানের
জনগণ হলেন গণহত্যার নীরব দর্শক।’
বাংলাদেশে ১৯৭১-এ পাকিস্তানি শাসক ও তাদের দোসর আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে হত্যাযজ্ঞ, ব্যাপক ধ্বংসলীলা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, হিন্দু জনগোষ্ঠী নিধন ও বিতাড়ন, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্যাতন, মুক্তিযোদ্ধাদের নির্বিচারে হত্যা করেছিল। বাঙালি জাতির প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণা থেকে তাদের ২৫ মার্চের ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু হয়েছিল। সুপরিকল্পিত গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ জেনোসাইড হিসেবে গণ্য হয়েছে। হিটলারের নাজি বাহিনী ইহুদি ও রাশিয়ার যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে যে বর্বরতা দেখিয়েছিল ঠিক একইরকম আচরণ ছিল পাকিস্তানিদের। নিষ্ঠুরতা, পাশবিকতা এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টি ছিল ঠিক ইহুদিদের প্রতি নাজিদের মতো। নাজিরা ইহুদিদের নিচুজাতের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করত এবং তাদের নিধনযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ইউরোপের সমস্যা সমাধান করতে চেয়েছিল। অনুরূপভাবে পাকিস্তানি সেনা অফিসারদের মনোভাব ছিল Bengalees have been cleansed and selected properly for at least one generation. নাজিরা প্রথমে তরুণ, যুবক এবং সমর্থ পুরুষদের হত্যা দিয়ে নিধনযজ্ঞ শুরু করলেও শিশু, বৃদ্ধ, নারীদের নির্বিচারে নিধন করতে থাকে ১৯৪১ সালে বলকান অঞ্চল থেকে। যুদ্ধবন্দি হত্যাসহ অন্যান্য নিষ্ঠুরতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছায় তারা। তাদের অত্যাচারের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাদের আরো মিল রয়েছে হিন্দু নিধনের ঘটনায়। একাত্তরে হিন্দুদের প্রতি শাসকদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সুচিন্তিত ও নির্মম।
কারণ তারা ধর্মভিত্তিক হত্যাকাণ্ডকে বৈধ করে তুলেছিল। তারা মনে করত পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে এই উপমহাদেশের হিন্দু আধিপত্যের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র আবাসভূমির জন্য মুসলমানদের বিদ্রোহের কারণে। এই হিন্দু বিদ্বেষ মনোভাব বছরের পর বছর লালিত হয়ে এসেছে। এজন্য জেনোসাইডে হিন্দু নিশ্চিহ্ন অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। জনৈক গবেষকের ভাষায়- ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণের পর গোটা দেশে কেবল একটি উদীয়মান ও অস্তগামী রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ হয়নি একাধিক জাতিগত দ্বন্দ্বও শুরু হয়ে যায়। এতে উভয়পক্ষের নির্যাতন শুরু হয় তবে এর সূত্রপাত ঘটে ২৫শে মার্চের আক্রমণের পর। পাকিস্তানি সরকারের পরিকল্পনার শিকার হয় দুই জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি। এর প্রথম শিকার হয় হিন্দু সম্প্রদায়, যাদের কেবল নির্যাতন করা হয়নি বরং তাকে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত এমনকি ধ্বংসও করা হয়। হিন্দুরা তাদের হৃত অবস্থান কোনদিন উদ্ধার করতে পারেনি বাংলাদেশেও। সম্প্রদায়গতভাবে তারাই ১৯৭১ সালের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী।’ এমনকি ধর্ষণকেও তারা বৈধ বলে মনে করত। চীনের নানকিং-এ জাপানি সেনা কর্তৃক ধর্ষণ, রাশিয়াতে নাৎসিদের বলাৎকার এবং আর্মেনিয়া ও বসনিয়ার নারী নির্যাতনের সাযুজ্য রয়েছে বাঙালি নারী ধর্ষণের ঘটনায়। পাকিস্তানিদের বাঙালি নারী ধর্ষণের লক্ষ ছিল পরিবার, সম্প্রদায় ও জাতিকে মানসিকভাবে আহত ও পঙ্গু করা। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে গেরিলা যুদ্ধে পরাজিত ও বাঙালি জাতিকে বশীভূত করতে না পারার যাতনা তারা মিটাত নারী ধর্ষণ করে। এটা ছিল ভয়ঙ্কর মনোবিকারজাত। সার্বরা মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করেছিল ইথনিক ক্লিনজিং-এর উপায় হিসেবে। দেশ-বিদেশী গবেষক ও সাংবাদিকদের রচনায় যুদ্ধকালীন এসব নির্মম বাস্তবতাই উন্মোচিত হয়েছে।
বিশ শতকের জেনোসাইডের তালিকায় পাকিস্তান একটি অপরাধী রাষ্ট্রের
নাম। কারণ লাখো বাঙালির প্রাণের বিনিময়ে তারা সেদিন তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে
চেয়েছিল। অথচ বাঙালি জাতিগোষ্ঠী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর
কোনোরূপ অন্যায় পীড়ন করেনি। তবু বাঙালির প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের বর্বর ও
নৃশংস আচরণ বিশ্বের কাছে তাদের ঘৃণ্য মানসিকতাকে প্রকাশ করে দিয়েছিল। পাকিস্তানিদের
আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ড ছিল ফ্যাসিস্টদের মতো। তাই তারা পোষণ করেছিল জাতি বা ধর্ম সম্প্রদায়
বিদ্বেষ; হত্যা করেছিল নিরীহ নিরপরাধ জনসাধারণকে। সেই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আমাদের
২৫ মার্চের দাবিকে আরো বেশি তাৎপর্যবহ করে তুলেছে। ২৫ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’
হবে পৃথিবীর মানব জনগোষ্ঠীকে নির্মম নিধনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য উচ্চকণ্ঠ এবং
হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের একমাত্র ভরসার দিন। আশা করা যায় এই
দিবসের চেতনা গণহত্যার বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যার গন্তব্য স্থান কোথায় সেটা ঠিক নাই, তিনি রাস্তায় গাড়ি বা রিক্সা যেভাবেই যান না কেন সে শুধু উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াবেন। কারণ তার তো গন্তব্য ঠিক নাই। সে গুলশান যাবে, না নিউ মার্কেট যাবে কোথায় যাবে জানে না। বিএনপির অবস্থা এখন ঠিক তাই। তারা জানেই না তাদের আন্দোলনের গন্তব্য কোথায়। জানে না বলেই তারা একের পর এক ভুল করে রাজনীতির কানাগলিতে ঢুকে যাচ্ছে। এর একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ হলো হঠাৎ করে তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে যে, ভারতীয় পণ্য বর্জন সম্ভব কিনা? এখানে একটা কথা উল্লেখ্য করতে চাই যে, এদেশের জনগণ কার কথায় বিশ্বাস করেন? জনগণ বিশ্বাস করেন একমাত্র দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কথা। কারণ তিনি যেটা বলেন সেটা করেন। তিনি যদি কোন প্রশ্নবোধক ডাকও দেন তাহলেও বহু লোক সেটাকে গ্রহণ করবে। কারণ তার প্রতি তাদের বিশ্বাস আছে। আর যে দলের নেতারা প্রায় সবাই হয় সাজাপ্রাপ্ত অথবা জামিনে আছে তাদের কথায় কোন লোক কানে দিবে না।
একাত্তরের ২৫ মার্চের ভয়ালরাত্রি মর্মদাহিক চেতনা প্রবাহের কালখণ্ড। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের এবং আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এর আগে ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের দাবি ওঠে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে।
বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন যে, দেশের উন্নয়নের জন্য চিকিৎসা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি সবচেয়ে জরুরি। চিকিৎসার যদি উন্নতি না হয়, চিকিৎসা ব্যবস্থার যদি উন্নতি না হয়, মানুষ যদি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হন তাহলে দেশ গড়া সম্ভব নয়। সেজন্য বঙ্গবন্ধু একটা সুন্দর নীতিমালা পরিকল্পনা গড়ে তোলেন। ওই সময়ই সেটা ছিল আধুনিক যুগোপযোগী এবং বিজ্ঞানসম্মত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল বঙ্গবন্ধু যে নীতিমালা তখন চালু করে গিয়েছেন সেই পদ্ধতিতে আজকের দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা একে এক করে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। যার মূল ভিত্তি বঙ্গবন্ধু স্থাপন করেছেন।
সাম্প্রতি ‘স্বাধীনতা সুফল পেতে চাই চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা জাতির পিতার হাতে সূচনা, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দিলেন দিক নির্দেশনা’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠকে আলোচক হিসেবে অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন যে আলোচনা করেছেন তার চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।