ইনসাইড থট

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কর্মী গড়ার আঁতুড় ঘর ছাত্রলীগের কর্মীদের মূল্যায়ন প্রয়োজন

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১২ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

আজ ১২ জানুয়ারি শওকত, ওয়ালী, মোহসিন তিন ছাত্রলীগ নেতার শাহাদাৎ বার্ষিকী। ১৯৮০ সালের এই দিনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে তৎকালীন বিএনপি সরকারের পেটোয়া বাহিনীর সহায়তায় বিএনপির সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে সারাশরীর চুরমার করে নির্মমভাবে এই তিনজন ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা করেছিল। সেই তিন মুজিব সৈনিকের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে আজকের লেখা শুরু করছি।

গত ৬ জানুয়ারি বাংলাইনসাইডার অনলাইনে ‘ছাত্রলীগ পরিচয় কি অযোগ্যতা?‘ শিরোনামে সৈয়দ বোরহান কবীরের লেখাটা পড়লাম। অন্যান্য অনেক পাঠকের মত আমিও প্রতি শুক্রবার দিবাগত রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে সৈয়দ বোরহান কবীরের সাপ্তাহিক লেখা পড়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকি এবং মনোযোগ সহকারে লেখাটি পড়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লেখককে ক্ষুদে বার্তা পাঠাই। সেদিনও লেখাটি পড়ার পর প্রতিক্রিয়া থেকে আজকের লেখা।
তিনি লিখেছেন, ’৭৫-এর পর এই প্রথম সরাসরি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি করা কোনো কর্মকর্তা সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দায়িত্ব পেলেন। কবির বিন আনোয়ার মন্ত্রিপরিষদ সচিব হয়েছেন।  মাত্র ১৯ দিনের মাথায় অবসরে পাঠানো হয়েছে। বিগত মন্ত্রিপরিষদ সচিব দুই দফা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলেও কবির বিন আনোয়ারের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি‘। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম উল্লেখ করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাওয়ার কি কোনো যোগ্যতাই এদের নেই। এভাবে আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে অবদান রাখার প্রত্যাশায় যারা আশায় বুক বেঁধেছিলেন, তারা এখন হতাশায় ডুকরে কাঁদেন। শুধু ছাত্রলীগ থেকে নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন, দুঃসময়ে কষ্ট করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের জন্য নিজের চাকরি ঝুঁকিতে ফেলেছেন-এমন কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের সুসময়ে কেন বঞ্চিত হবেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রাজনীতি থেকে সযত্নে দূরে থেকে যারা নিজেদের ক্যারিয়ার গড়েছেন। মাখন-রুটি খেয়ে বড় হয়েছেন। ছাত্ররাজনীতির চেয়ে নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়েই সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকছেন। তারা ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগ সরকারে এবং রাজনীতিতে। রাজনীতিতেও এখন ‘ছাত্রলীগ’ যেন এক অপরাধ। অযোগ্যতা‘।

আমরা যারা ছাত্র রাজনীতি করেছি, নিশ্চয়ই একমত পোষণ করবো যে, কর্মী সংগ্রহে সাধারণতঃ সৎ, চরিত্রবান, মেধাবী, ভাল বিতার্কিক, ভাল খেলোয়াড়, ইত্যাদি ভাল ভাল গুনাগুন সম্পন্ন ছাত্রদের প্রাধ্যন্য দেওয়া হয়েছে। তাদেরই মধ্যে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের নেতা মুজিবীয় সৈনিক কবির বিন আনোয়ার। কবির বিন আনোয়ারদের মত মেধাবী ছাত্রলীগ নেতারা শুধু সরকারি চাকরিতেই নয়, সর্বত্রই তাদের প্রতি এক ধরনের উপেক্ষা এবং নাক সিটকানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ছাত্রলীগের কোনো ছেলেমেয়ে যদি মেধার জোরে সরকারি চাকরি পায়, তাহলে বলা হয় তদবিরে চাকরি পেয়েছে। আওয়ামী লীগের মূল রাজনীতিতে ছাত্রলীগ ঠাঁই পেলেও সমালোচনা হয়।

আমাদের সকলের নিশ্চয়ই মনে আছে, বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্প ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিদেশি গুড়া দুধ কোম্পানির আর্থিক সহযোগিতায় একটি মিথ্যা গবেষণা রিপোর্ট প্রচার করা হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন দেশের বাইরে ছিলেন। একজন উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তা ঐ ষড়যন্ত্রকারী গবেষকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে বিজয়ী হয়েছিলেন। বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্প রক্ষা পেয়েছিল। ঐ কর্মকর্তা একজন দেশপ্রেমিক মুজিবীয় সৈনিক ছিলেন বিধায় সরকারী কর্মকর্তা হয়েও দেশের স্বার্থে  দুঃসাহস প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সচিব পদোন্নতি প্রাপ্তিতে ঐ কর্মকর্তাকে ‘আনস্মার্ট‘ অভিহিত করে পদোন্নতিতে বাঁধা সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু ঐ কর্মকর্তা পরবর্তিতে যোগ্যতা প্রমাণ করেই সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। মুজিবাদর্শের সৈনিকদের বঞ্চিত করার এমনি অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতাকামী প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী গড়ার আতুড়ঘর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এই সংগঠনটি আওয়ামী লীগের ‘লাইফলাইন’ হিসেবে বিবেচিত হয়। দেশের রাজনীতিতে অসংখ্য খ্যাতিমান রাজনীতিবিদদের রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছে এই ছাত্র সংগঠনে। এই দেশে যত বড় বড় রাজনৈতিক অর্জন তা ছাত্রলীগের হাত ধরেই এসেছে। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ পরবর্তি সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ১৯৯১-৯৬ ও  ২০০১-০৮ বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের মোকাবেলাসহ দেশের ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের  অবদান অনস্বীকার্য। 

কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একজন ছাত্রনেতার লক্ষ্য থাকে ছাত্রসংসদ নির্বাচন। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সমর্থন লাভের উদ্দেশ্যে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা, ব্যক্তিগত আচরনে ও চলাফেরায় সর্বদা সজাগ থাকে। নিজেকে একজন যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করে। অনেক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মনোনয়ন নিয়ে ভোটে নির্বাচিত ভিপি-জিএস হয়ে বা ঐ কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হয়ে পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ছাত্ররাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে। কেন্দ্রীয় ছাত্ররাজনীতি শেষে  নেতারা যোগ্যতা অনুযায়ী দায়িত্ব নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হবে, সেই লক্ষ্যে নিজেকে গড়ে তোলে। এছাড়া সকলেই জাতীয় নেতা হবে না। ছাত্রলীগের অসংখ্য মেধাবী নেতাকর্মী ছাত্ররাজনীতি চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নশেষে বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে সরকারের প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরীতে যোগদান করে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সচিব বা অন্য উচ্চ পদে পদোন্নতি হলে বলা হয়, সচিব পদের আর ইজ্জত রইলো না‘ অথবা বলা হয় প্রশাসন দলীয়করন করা হয়েছে। কবির বিন আনোয়াররা যেমনি সরকারী চাকুরীতে অবহেলিত, ঠিক একইভাবে রাজনীতিতেও ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারন সম্পাদকসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি-জিএসরা। 

বিএনপির শাসনামলে ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনে শুধুমাত্র বাকসু (৮৮-৮৯) নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত পুরো প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। সেই দুর্দিনের কাণ্ডারি নির্বাচিত ভিপি-জিএসরা বর্তমানে কোথায় কিভাবে পড়ে আছে? কে তাদের খোঁজ রাখে। অনুসন্ধান করে পাওয়া গেছে, কোন পদ-পদবী ছাড়াই তারা নিয়মিত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন। ’৯৪-৯৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি ছিলেন এনামুল হক শামীম। সেই কঠিন সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না ও ১৯৯২ সালে  বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি মেধাবী ছাত্রনেতা মঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বাহাদুর বেপারী, লিয়াকত সিকদার, নজরুল ইসলাম বাবু কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নিতে পারেননি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি-সাধারন সম্পাদক রিপন-রোটন, সোহাগ-জাকির, সোহাগ-নাজমুলসহ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারন সম্পাদকরা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান না পেলেও ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সাথে নির্বাচিত কাউন্সিলর বিএনপির একনিষ্ঠকর্মী ঠিকই স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতার পদবী পেয়ে স্থানীয় ত্যাগী পরীক্ষিত আওয়ামীলীগ নেতাদের অবজ্ঞা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেও দ্বিধাবোধ করেনা। ঢাকা মহানগরে থানা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনে মেধাবী, উচ্চশিক্ষিত, সাবেক তুখোড় সিনিয়র ছাত্রনেতা প্রার্থী হলেও আওয়ামীলীগ বিরোধী পরিবারের ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর নাম আলোচিত হচ্ছে সভাপতি পদের জন্য।

মুন্সীগঞ্জ, শ্রীনগর উপজেলার স্থানীয় কলেজের ছাত্রসংসদ নির্বাচনে (১৯৮০ ও ১৯৮১) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত ভিপি-জিএসরা খুবই আক্ষেপের সুরে বললেন, ‘তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সেই দুঃসময়ে শ্রীনগরে আওয়ামীলীগ এর রাজনীতি টিকিয়ে রেখেছিলাম। ভিপি-জিএস এর দায়িত্ব পালন শেষে শ্রীনগর উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সহসভাপতি পদবী নিয়ে সন্তুষ্টি ও সফলতার সাথে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি। মনঃকষ্টের বিষয় হলো সেই সময়ের নির্বাচনে পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপি দলীয় প্যানেলের একজন সম্পাদক প্রার্থী ঢাকায় গিয়ে বর্তমানে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা বনে গেছেন। ফলে, সামাজিকভাবে বিব্রত হই‘।

মাঠের খেলা যেমন একটি সমন্বিত টিমওয়ার্ক। যেখানে জেতার জন্য সবাইকে অবদান রাখতে হয়। খেলার মতো রাজনীতিতেও টিমওয়ার্ক লাগে। নেতার বিশ্বস্ত, পরীক্ষিত, যোগ্য সহযোগী লাগে। লাগে সমঝোতা, বোঝাপড়া এবং সমন্বয়। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে বর্তমান বিএনপির সিনিয়র নেতার বাবা কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। তখন কৃষি ও খাদ্য একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছিল। সেসময় ধানের পোকা মারার জন্য কীটনাশক আমদানির নির্দেশ থাকলেও সচিব মহোদয় ষড়যন্ত্র করে কীটনাশক আমদানিতে মন্থর গতি অবলম্বন করেছিলেন। যা হবার তাই হয়েছিল। সারাদেশে পোকায় আক্রান্ত হয়ে ধান উৎপাদন ব্যাহত হয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার জরুরিভিত্তিতে খাদ্য আমদানির পদক্ষেপ নিলেও সেই একই সচিব ষড়যন্ত্র করে আমদানীকৃত খাদ্যের জাহাজ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাদ্য সরবরাহ একমাস বিলম্বিত করেছিল। কৃত্রিম খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়, ৭৫ এর  মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। আমরা জাতির পিতা হারাই, দেশ ২১ বছর পিছিয়ে যায়। 

স্বাধীনতা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন কৌশলে বর্তমানে সৎ ও দলনিরপেক্ষতার লেবাসে বিএনপি-জামায়াত এর অসংখ্য লোক সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের পরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে। ওরা সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। দলনিরপেক্ষতার লেবাসে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন কালে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখছে। ওরা মনে মনে পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখে। ওরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল্যবোধ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে। সুতরাং মুজিব সৈনিকেরা, স্বাধীনতাকামী ছাত্রলীগের কর্মীরা, সাবধান হই। দোষেগুনেই মানুষ। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনকালে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় ছোটখাটো ভুলভ্রান্তি করলেও ১৯৭৪ সালের সেই সচিবের মত ষড়যন্ত্র করে দেশ ধ্বংস করবেনা। নিজ দলীয় সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করবেনা।

১৯৭৫ সালের পরবর্তিতে ছাত্ররাজনীতি কে কলুষিত করে ধংস করার যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় এবার ছাত্রলীগকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলমান রয়েছে। রাজনীতিতেও এখন ‘ছাত্রলীগ’ যেন এক অপরাধ। প্রশ্ন হলো ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে যদি সরকারে, রাজনীতিতে, ব্যবসা-বানিজ্যে, সকল ক্ষেত্রেই যদি অবজ্ঞা-অবহেলার সুর প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় তবে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী গড়ার আতুড়ঘর বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কর্মীগড়ার কাজে ভাটা পরবে। সাধারণ ছাত্রদের বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পতাকাভুক্ত করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী গড়ার কাজ ব্যহত হলে  রাজনীতিতে নতুন নেতৃত্বের রক্তপ্রবাহ বন্ধ হবে। তাহলেই ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর  রাজনীতিমুক্ত বাংলাদেশ তৈরি করার যে প্রকল্প চালু করা হয়েছিল, সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। 

বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ‘ বিনির্মাণে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী গড়ার আতুড়ঘর বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কর্মী গড়ার জন্য সরকার, রাজনীতি সহ সকল ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের পরীক্ষিত কর্মীদের পরিকল্পনা করে কাজে লাগানো প্রয়োজন, মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। ফলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হবে। সাধারণ ছাত্ররা শিক্ষা শান্তি প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আকৃষ্ট হবে। সদস্যপদ গ্রহণে উৎসাহিত হবে। আওয়ামীলীগ টিকে থাকবে, দেশ বাঁচবে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

কতিপয় সাংবাদিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর


Thumbnail

বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।

ভিন্ন চিত্র দেখলাম শনিবার সকালে বরিশাল সদর হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে যেয়ে দেখেন দুজন টিভি সাংবাদিক ওয়ার্ডে ভিডিও করছেন। ভিডিও শেষ হবার পর চিকিৎসক তাঁর রাউন্ড শুরু করলেন। রাউন্ড শুরু করতেই দুজন সাংবাদিক আবার ক্যামেরা ধরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা শুরু করলেন। চিকিৎসক তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বিনয়ের সাথে নিচু স্বরে একে একে ২০ বার (গুনে নিশ্চিত হয়েই বলছি) সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করলেন, পরিচয় জানতে চাইলেন। উক্ত সাংবাদিক নাম বলেননি, পরিচয় দেননি। বরং উচ্চস্বরে উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উর্ধতন কাউকে ফোন দেয়ার পর সাংবাদিক সাহেব তার নাম বলেছেন। এখানে দুটি প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।  প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক দুজন কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সাংবাদিক দুজনকে কেন নাম বলতে হবে ? নাম, পদবি, পরিচয় থাকবে তাদের বুকে বা কোমরে প্রদর্শিত আই ডি কার্ডে। এখন দেখার বিষয়,  প্রদর্শিত স্থানে আই ডি ছিল কিনা ? না থাকলে থাকবে না কেন?

সাংবাদিক ও চিকিৎসকবৃন্দ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমূহ পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। সব গুলো ভিডিও কয়েকবার দেখেছি, পর্যালোচনা করেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলেননি। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সাংবাদিক দুজন বারবার উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তাদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি মগের মুল্লুক। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড রাউন্ড শুরু করার আগে প্রতি রোগীর সাথে একজন এটেন্ডেন্ট ব্যাতিরেকে সবাইকে বের হবার কথা বলেছেন। সবাই বেরিয়ে না গেলে তিনি চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেটাই নিয়ম।  সারা দুনিয়ায় সেটাই হয়ে থাকে। সাংবাদিকদ্বয় সেটি শুনতে নারাজ। এখানে তারা স্পষ্টতই সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।  

দিন শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখলাম সাংবাদিকদের হেনস্থা করেছে ডাক্তার। অথচ ভিডিও গুলি পর্যালোচনা করলে যে কেউ বলবেন, ডাক্তারকে হেনস্থা করেছে সাংবাদিকরা। আসলেই মগের মুল্লুক। ঘটনা কি ? আর সংবাদ শিরোনাম কি? এসব মগের মুল্লুকের রাজত্ব  থেকে জাতিকে পরিত্রান দেয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমএ, এফডিএসএর, বিডিএফ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেয়া দরকার। কমিটি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে ও তাদের দায়িত্ব নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সে নীতিমালায় যাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান না করা হয়, রোগীর অনুমতি ব্যাতিরেকে তাদের ছবি, ভিডিও বা রোগ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রচার না করা হয়, সেসব বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। তা না হলে হাসপাতাল সমূহে এ ধরণের অরাজকতা হতেই থাকবে, বাড়তেই থাকবে।  

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

প্রথম আলোর পর কী ডেইলি স্টারও বিক্রি হবে?


Thumbnail

এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।

প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে অনেকেরই  ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী লোক।

এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।

আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম। সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায় যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।

তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।

তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।


প্রথম আলো   ডেইলি স্টার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন