ইনসাইড থট

সুভাষ সিংহ রায়ের ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ও বাকশাল’

প্রকাশ: ১০:২১ এএম, ১৬ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

বঙ্গবন্ধু গবেষক হিসেবে ২০২৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক, গবেষক ও রাজনীতিবিদ সুভাষ সিংহ রায় (জন্ম ১৯৬৬-)লিখেছেন বহুল আলোচিত বিষয় ‘বাকশাল’ নিয়ে ‘‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ও বাকশাল’’ শিরোনামে ২৪০ পৃষ্ঠার একটি নতুন বই।আমরা যারা বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শেখ হাসিনা সম্পর্কে তাঁর গবেষণা কাজের সঙ্গে পরিচিত তারা এক কথায় বলতে পারি তিনি যথার্থভাবেই একজন একাডেমিশিয়ান।সুভাষ সিংহ রায় যখন কথা বলেন তখন যুক্তি ও তথ্য-উপাত্ত যথাস্থানে, যথা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন।তাঁর ব্যক্তিগত বিশাল গ্রন্থাগারে অসংখ্য বই রয়েছে।জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যে কোনো বিষয়ে রেফারেন্স দিয়ে কথা বলতে শুনবেন শ্রোতৃমণ্ডলী কিংবা পাঠকসমাজ তাঁর লেখায় ব্যবহার করতে দেখবেন নতুন প্রকাশিত বিখ্যাত বইয়ের উদ্ধৃতি নির্দ্বিধায়, অবলীলায়। স্মৃতিশক্তির প্রখরতায় তিনি মেধা ও মননের অনন্য পরিব্রাজক।লেখাবাহুল্য, তিনি আপদমস্তক প্রগতিশীল, মুক্তবুদ্ধি, মুক্তচিন্তার অধিকারী একজন লেখক।সমাজ ও মানুষকে তিনি বিশ্লেষণ করেন পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধানী দৃষ্টি দিয়ে।

ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী কর্মী ও নেতা সুভাষ সিংহ রায় সমকাল সচেতন এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব ইতিহাসের গতিমুখ সম্পর্কে  সত্যান্বেষী। এজন্য বঙ্গবন্ধুর লেখক সত্তা, তাঁর সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবন ও শাসনকাল এবং দেশ-জাতি নিয়ে তাঁর ভাবনা-বিশ্বাস সম্পর্কিত রচনা, বক্তব্য-ভাষণ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গ্রন্থসমূহ নিবিড়ভাবে পাঠ করে সাধারণ পাঠকের জন্য নিজের লেখনি দাঁড় করিয়েছেন তিনি। ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ও বাকশাল’গ্রন্থটি পাঠ করলে সুভাষ সিংহের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানার পরিধি মাপা সম্ভব। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কেবল এ গ্রন্থটি নয় তাঁর  প্রকাশিত ২৫টি গ্রন্থের মধ্যে আরো রয়েছে- ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু পরিবার’, ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনা’, ‘বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িকতা’, ‘পাঠক বঙ্গবন্ধু লেখক বঙ্গবন্ধু’ প্রভৃতি। এছাড়া তিনি শেখ হাসিনাকে নিয়ে সর্বাধিক গ্রন্থের রচয়িতাও।‘‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ও বাকশাল’’-এর ফ্ল্যাপে বইটির পরিচয় রয়েছে এভাবে-‘স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই বঙ্গবন্ধুর এই উপলব্ধি হয়েছিল, ‘‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যায়, যদি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না আসে।” যার ফলে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বহু লালিত স্বপ্নের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ কর্মসূচির মাধ্যমে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত কার্যকরী মাধ্যম ছিল জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত একটি মাত্র রাজনৈতিক দল ‘বাকশাল’। জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে তখনকার বিশ্ব বাস্তবতায় একটি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক কর্মসূচিকে ঈপ্সিত লক্ষাভিমুখী দক্ষভাবে পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধু ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ‘‘উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩ আসনে বিজয়ী আওয়ামী লীগকে পর্যন্ত বিলুপ্ত করে সব দলের সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক লীগ’ বা ‘বাকশাল’ গঠন করেন বঙ্গবন্ধু।’’ বাকশালের মূল লক্ষ্য ছিল একটি শোষণহীন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও শোষিতের গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা; যা ছিল জনগণের যুগ যুগের লালিত স্বপ্নের মহত্তম আকাঙ্ক্ষার গৌরবময় বহিঃপ্রকাশ। বাকশাল কর্মসূচিকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। এক. রাজনৈতিক, দুই. আর্থ-সামাজিক, তিন. প্রশাসনিক ও বিচার ব্যবস্থা- এই বইটিতে যার বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাকশাল গঠনের পূর্বে ও পরে পার্লামেন্ট, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা এবং গণভবনে জেলা গভর্নর ও বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় বঙ্গবন্ধু বক্তৃতা দিয়েছিলেন। এই ভাষণগুলোর সূক্ষ্ণ বিশ্লেষণ এবং এতে নিহিত বাকশাল কর্মসূচির লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে বইটিতে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি এবং দেশি-বিদেশি কায়েমী স্বার্থবাদীরা পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, যাতে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পথে দেশ অগ্রসর হতে না পারে। এই বইটিতে ইতিহাসের সেই অধ্যায়কেই পাঠকের নিকট তুলে ধরা হয়েছে, যা পনেরোই আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনার ভেতর দিয়ে পরিসমাপ্ত হয়েছে।’

আলোচ্য গ্রন্থের প্রতিপাদ্য অনুধাবনের জন্য গ্রন্থ-পরিচিতির এই অংশটি পাঠকদের জন্য সহায়ক। প্রকৃতপক্ষে সুভাষ সিংহ রায় বাকশাল কি এই পরিচয় দিয়ে শুরু করে বাকশাল গঠনের উদ্দেশ্য, বাকশালের ধারাসমূহ, সংবিধানের ধারা, কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ পরিচয় প্রভৃতির অনুপুঙ্খ বিবরণ উপস্থাপন করেছেন।লেখকের ভাষ্য-‘তারিখটা ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫। বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা-কল্পনা চলছিল, দেশে একটা পরিবর্তন আসন্ন। আওয়ামী লীগ সংসদীয় দল ও কার্যনির্বাহী পরিষদের যৌথসভায় জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজনীয় যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব সার্বিকভাবে বঙ্গবন্ধুর ওপর অর্পণ করা হয়। নয়া ব্যবস্থার রূপকাঠামো কী হবে তা পরিষ্কার উল্লেখ না করেও আওয়ামী লীগ নেতারা ব্যাপক পরিবর্তনের আভাস দিয়ে আসছিলেন। সন্দেহবাদীদের সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সত্যিই এলো প্রতীক্ষিত সেই দিন। ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশোধনী গৃহীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পার্লামেন্ট ঘোষণা করলেন বঙ্গবন্ধু তাঁর ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’-এর প্রাতিষ্ঠানিক রূপরেখা। তিনি বললেন, জনাব স্পীকার, আজ আমাদের শাসনতন্ত্রের কিছু অংশ সংশোধন করতে হলো। আপনার মনে আছে, যখন শাসনতন্ত্র পাস করা হয়, তখন আমি এ হাউজের পক্ষ থেকে বলেছিলাম, এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য যদি দরকার হয়, তবে এই সংবিধানেরও পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হবে।’ (পৃ ৫৭)

অন্যত্র- ‘সংসদের চৌহদ্দির মধ্যেই নয়, নেতা এলেন এবার জনতার মাঝে, সরাসরি কথা বলতে। ১৯৭৫, ২৬ মার্চ, স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সেখানে সেদিন মানুষের ঢল নেমেছিল। জীবনের শেষ জনসভায় ভাষণ দিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অগ্নিঝড়া সেই কণ্ঠস্বর শেষবারের মতো মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন জাগ্রত করেছিল। তিনি বললেন। মানুষ শুনলেন।’ (পৃ ৭৪)

অন্যদিকে ‘‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ও বাকশাল’’ গ্রন্থে পর্যায়ক্রমে আছে, পার্লামেন্টে ভাষণ : বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক, দ্বিতীয় অধ্যায় হলো-সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভাষণ, তৃতীয় অধ্যায়ে দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছেন। ‘বঙ্গভবনে বাকশাল প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক চতুর্থ অধ্যায়ে রয়েছে বিশদ আলোচনা। একদলীয় ব্যবস্থায় বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ ও দেশ-বিদেশে অভিনন্দিত করার বিবরণের ঘটনাপঞ্জি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বিস্তৃত পরিসরে।

বঙ্গবন্ধু গবেষক সুভাষ সিংহ রায়ের লেখনির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সহজ গদ্যে সংহত কথন। ‘কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বঙ্গবন্ধু’ অংশে তিনি দেখিয়েছেন ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব বাকশাল কেন্দ্রীয় কমিটির ওপর।তাই সেই কমিটির সদস্যদের নিয়ে বসেছিলেন চেয়ারম্যান শেখ মুজিব। কর্মসূচি ব্যাখ্যা করার সঙ্গে সঙ্গে সচেতন করে দিয়েছিলেন তাদের দায়িত্ব সম্পর্কেও।বঙ্গবন্ধুর সেদিনকার ভাষণের মাঝে ছিল দ্বিতীয় বিপ্লব পরিচালনার কর্মসূচি, যার চুম্বক অংশ নিম্নরূপ- ‘১. নতুন পদ্ধতি। ৬০ জেলার প্রত্যেকক জেলায় একজন করে গভর্নর থাকবে; ২. স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি। এখানে বঙ্গবন্ধু বলেন যে, ‘‘সকল রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুভাবে বসবাস করা আমাদের কর্তব্য। কোনো যুদ্ধজোটে আমাদের যোগদান করার কথা চিন্তা করাও জঘন্য পাপ। কারণ আমাদের বিশ্বশান্তি রক্ষার জন্য সাহায্য করা দরকার।”৩. একতা মঙ্গলের পথ; ৪.  আত্মসমালোচনা চাই- আত্মসমালোচনা না থাকলে আত্মশুদ্ধি করা যায় না; ৫. ডেডিকেটেট ওয়ার্কার চাই; ৬. নতুন করে গড়তে হবে- সমবায় পদ্ধতি চালু; ৭. ১০০ বিঘার বেশি জমি থাকবে না; ৮. অর্থনৈতিক অগ্রগতি- সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চাই; ৯. শোষণহীন সমাজ গঠনের পথ; ১০. দুর্নীতিমুক্ত দেশ।’(পৃ ১০৬)

লেখক জানিয়েছেন, একটা গণতান্ত্রিক প্রশাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা ছিল দ্বিতীয় বিপ্লবের অন্যতম লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে সারাদেশকে ৬১টি জেলায় বিভক্ত করা হয়। নিযুক্ত হন ৬১ জন গভর্নর।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

কতিপয় সাংবাদিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর


Thumbnail

বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।

ভিন্ন চিত্র দেখলাম শনিবার সকালে বরিশাল সদর হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে যেয়ে দেখেন দুজন টিভি সাংবাদিক ওয়ার্ডে ভিডিও করছেন। ভিডিও শেষ হবার পর চিকিৎসক তাঁর রাউন্ড শুরু করলেন। রাউন্ড শুরু করতেই দুজন সাংবাদিক আবার ক্যামেরা ধরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা শুরু করলেন। চিকিৎসক তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বিনয়ের সাথে নিচু স্বরে একে একে ২০ বার (গুনে নিশ্চিত হয়েই বলছি) সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করলেন, পরিচয় জানতে চাইলেন। উক্ত সাংবাদিক নাম বলেননি, পরিচয় দেননি। বরং উচ্চস্বরে উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উর্ধতন কাউকে ফোন দেয়ার পর সাংবাদিক সাহেব তার নাম বলেছেন। এখানে দুটি প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।  প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক দুজন কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সাংবাদিক দুজনকে কেন নাম বলতে হবে ? নাম, পদবি, পরিচয় থাকবে তাদের বুকে বা কোমরে প্রদর্শিত আই ডি কার্ডে। এখন দেখার বিষয়,  প্রদর্শিত স্থানে আই ডি ছিল কিনা ? না থাকলে থাকবে না কেন?

সাংবাদিক ও চিকিৎসকবৃন্দ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমূহ পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। সব গুলো ভিডিও কয়েকবার দেখেছি, পর্যালোচনা করেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলেননি। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সাংবাদিক দুজন বারবার উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তাদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি মগের মুল্লুক। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড রাউন্ড শুরু করার আগে প্রতি রোগীর সাথে একজন এটেন্ডেন্ট ব্যাতিরেকে সবাইকে বের হবার কথা বলেছেন। সবাই বেরিয়ে না গেলে তিনি চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেটাই নিয়ম।  সারা দুনিয়ায় সেটাই হয়ে থাকে। সাংবাদিকদ্বয় সেটি শুনতে নারাজ। এখানে তারা স্পষ্টতই সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।  

দিন শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখলাম সাংবাদিকদের হেনস্থা করেছে ডাক্তার। অথচ ভিডিও গুলি পর্যালোচনা করলে যে কেউ বলবেন, ডাক্তারকে হেনস্থা করেছে সাংবাদিকরা। আসলেই মগের মুল্লুক। ঘটনা কি ? আর সংবাদ শিরোনাম কি? এসব মগের মুল্লুকের রাজত্ব  থেকে জাতিকে পরিত্রান দেয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমএ, এফডিএসএর, বিডিএফ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেয়া দরকার। কমিটি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে ও তাদের দায়িত্ব নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সে নীতিমালায় যাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান না করা হয়, রোগীর অনুমতি ব্যাতিরেকে তাদের ছবি, ভিডিও বা রোগ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রচার না করা হয়, সেসব বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। তা না হলে হাসপাতাল সমূহে এ ধরণের অরাজকতা হতেই থাকবে, বাড়তেই থাকবে।  

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

প্রথম আলোর পর কী ডেইলি স্টারও বিক্রি হবে?


Thumbnail

এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।

প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে অনেকেরই  ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী লোক।

এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।

আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম। সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায় যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।

তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।

তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।


প্রথম আলো   ডেইলি স্টার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে বিএনপির রাজনীতি


Thumbnail

বিএনপির রাজনীতি এখন ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে। রাজনীতিতে একের পর এক ভুল করার কারণে তারা এখন হতাশায় নিমজ্জিত। কোন কী বলতে হবে সেটার খেই হারিয়ে ফেলেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। 

বিএনপি এখন দাবি করছে যে, তাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মী জেলে আছেন। এখানে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি হল যদি ৬০ লাখ কর্মী তাদের থাকত তাহলে এতদিনে তারা কেন আন্দোলনে ব্যর্থ হল? যদি এত সংখ্যক নেতাকর্মী থাকত তাহলে তো অনেক আগেই সরকারের পতন ঘটে যেত। কারণ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য এক লাখ নেতাকর্মী হলেই যথেষ্ট। কিন্তু এত সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়েও তারা ব্যর্থ কেন! এত বড় সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে তারা তাদের নেত্রীকে জেল থেকে মুক্ত করতে পারেনি। কোন আন্দোলনই তারা করতে পারল না! বরং তাদের নেত্রীকে সরকারের অনুকম্পায় ফিরোজায় থাকতে হচ্ছে। ফলে স্বভাবতই বিএনপির নেতাকর্মীর সংখ্যা কত সেটা একটা বড় প্রশ্ন। আর এত নেতাকর্মী থাকা সত্বেও তাদের নেতাকে লন্ডনে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে! 

দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় হল বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মী যদি জেলে থাকেন তাহলে দেশের জেলখানা গুলোর ধারণ ক্ষমতা কত। এবং সেখানে যদি বিএনপির নেতাকর্মীর সংখ্যাই হয় ৬০ লাখ তাহলে এর মধ্যে সাধারণ কয়েদি কোথায় আছেন। তাদেরকেই বা কোথায় রাখা হয়েছে।

কথায় আছে, পথের মাঝে পথ হারালে আর কি পথ ফিরে পাওয়া যায়! বিএনপির অবস্থায় এখন তাই। তারা রাজনীতির পথের মাঝে রাজনীতির পথ হারিয়ে ফেলেছেন। কোনটা রাজনীতি আর কোনটা রাজনীতি নয় সেটাও বিএনপির নেতাকর্মীরা বোধহয় ভুলে গেছেন কিংবা বুঝতে পারছেন না। অন্য আরেকটি কথায় আছে যে, স্বপ্নে যখন কেউ কিছু খাবে তখন পান্তা খাবে কেন? পোলাও কোরমা খাওয়াই ভালো। বিরিয়ানিও খাওয়া যেতে পারে। সুতরাং ৬০ লাখ না বলে তাদের বলা উচিত ছিল বাংলাদেশে তো প্রায় ১৮ কোটি লোক আছে এর মধ্যে ৬ কোটি লোকই বিএনপির নেতাকর্মী। তাহলে অত্যন্ত লোকে আরও ভালো ভাবে বুঝত যে, বিএনপি আসলেই অনেক বড় একটি শক্তিশালী দল এবং তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বিরা বুঝতে পারত যে, বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অত্যন্ত ভালো। 

তবে বাস্তবতা হল বিএনপি ৬০ লাখ নেতাকর্মী দাবি করলেও আসলে তাদের কোন জনসমর্থনই নাই। যদি তাই থাকত তাহলে তারা নির্বাচন বিষয়টিকে এত ভয় পেত না। নির্বাচন বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নিত না। শুধু তাই নয়, বিদেশিও তাদের কোন বন্ধু নাই। যারা আছে সেই বন্ধুদের কথায় দলটি বরং এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। দেশিয় বিএনপির যে সমস্ত বন্ধুরা ছিলেন, বিভিন্ন সময় বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে কিছু লেখালেখি করতেন, তাদেরকে রাষ্ট্রক্ষমতার স্বপ্ন দেখাতেন তারাও এখন হারিয়ে গেছেন। সব কিছু মিলিয়ে দলটি এখন অনেকেটা এতিম হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়ত সামনে দলটির নাম নিশানাও থাকবে না। যারা নিজের দলের নেতাকর্মীর সঠিক সংখ্যা জানেন না তাহলে বুঝতে হবে সেই দলটি এখন কোন পর্যায় গেছে। কতটা দেউলিয়া হলে একটি দলের নেতাকর্মীর সংখ্যা নিয়ে তারা নিজেরাই বিভ্রান্ত হন। সুতরাং দলটি যে অচিরেই হারিয়ে যেতে বসছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন