বাঙালি ও বাংলাদেশের মানুষের
কাছে বছরে কয়েকটি দিন আসে যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ,
স্মরণীয় আর শ্রদ্ধার দিন।
১৯৫২ সালে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করতে অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছিল। সেইদিনই বলা যায় শুধু আমাদের পরিচয়, আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করা নয় সাথে সাথে
স্বাধীনতার সংগ্রামের বীজ রোপণ করা হয়েছিল। বাঙালি বিভিন্ন নিপীড়ন, প্রতিবন্ধকতা এবং ধ্বংসযজ্ঞ অতিক্রম করে, ভাষার জন্য যারা তাদের জীবন দিয়েছিলেন তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে, তাদের শ্রদ্ধা জানাতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ শহীদ মিনার তৈরি করেছিল। সেই থেকে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারী আমরা সবাই শহীদ মিনারে একত্রিত হই, যারা নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল, জীবন দিয়েছিল তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি
আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস। আজ মাতৃভাষার অধিকার
রক্ষার লড়ায়ে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জন্য ২১শে ফেব্রুয়ারি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজ এই লড়াইয়ে
যারা প্রাণ দিয়েছেন সেই বাঙালিদের বিশ্ববাসী জানে এবং শ্রদ্ধা করে। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশে এলে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে তারা যাবে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি বর্বর সেনাবাহিনী গণহত্যা চালায়। স্বাধীনতার অর্জনের ঠিক কয়েকদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১
তারা আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে বধ্য ভূমিতে ফেলে দিয়েছিল। তাদের শ্রদ্ধা এবং তাদের স্মরণ করার জন্য, আমাদের মুক্তির পরের প্রজন্মের সন্তানরা যাতে স্বাধীনতার মুল্য বুঝতে পারে আর স্বাধীনতার জন্য
যারা জীবন উৎসর্গ করেছিল তাদের জীবন কথা না ভুলে যায়
তার জন্য জয়লাভের পর ঢাকায় একটি
অপুর্ব বিস্ময়কর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি ঐতিহাসিক স্থান। বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বরকে শহীদ
বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে স্মরণ করা হয়। সেইদিন অনেক নেতা, দল আর মানুষ
সেখানে যায়। আমি বিশ্বাস করি যদি জায়গাটি উপযুক্ত করা হয়, তাহলে সেখানে প্রতিদিন দেশী, বিদেশী দর্শনার্থীসহ সব বর্ণের মানুষ
যেতে চাইবে।।
পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল সাভারে আমাদের
জাতীয় শহীদ সমৃতিস্তম্ভ। স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার জন্য আমাদের আত্মত্যাগের গল্প বলার তীর্থস্থান। বাংলাদেশের মানুষ ও বিশ্বনেতারা বাংলাদেশ
সফরে আসলে সেখানে যান তাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। ২৬শে মার্চ এই জায়গাটি হাজার
হাজার মানুষের সাথে পূর্ণ হয়ে ওঠে।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা ও তার পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দুঃখজনকভাবে তার মৃতদেহ তার প্রাপ্য সম্মান পায়নি। ঘাতক ও সামরিক শক্তি বিদ্রোহের ভয়ে তাকে ঢাকা থেকে অনেক দূরে টঙ্গী পাড়ায় সমাহিত করে। সামরিক স্বৈরশাসক ক্ষমতায় থাকাকালে কবরটি অবহেলিত ছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ও কবরটি অবহেলিত থাকে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতার প্রতি সঠিকভাবে অনেক মনোযোগী হয়।মানুষ যাতে আমাদের দেশ, আমাদের স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতার অবদান, স্বাধীনতা পরবর্তী উন্নয়ন এবং তার আত্মত্যাগ প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং স্মরণ করতে পারে তার জন্য একটি সম্মানজনক সহজ কিন্তু মহিমান্বিত জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ নির্মাণ করে। জাতীর পিতার জন্মদিন ছাড়া অন্য দিনে আমার মত দেশের প্রতিটি কোণ থেকে জাতির পিতার সমাধিতে হাতে গনা কিছু লোক প্রতিদিন সেখানে যান।
আমি এখানে কেবল উদাহরণ স্বরূপ আমাদের ইতিহাস, আমাদের সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানের আলোকপাত করছি। আমি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে বিদেশে যাই। তখন থেকে আজ পর্যন্ত আমি
ছয়টি মহাদেশের ১১৫টি দেশে কাজ করার এবং দেখার অনন্য সুযোগ পেয়েছি। প্রতিটি দেশে আমি ইতিহাসের স্থান এবং স্মৃতিস্তম্ভ, তাৎপর্যপূর্ণ সমাধি দেখার চেষ্টা করি। যা দেখে নাগরিক
এবং দর্শনার্থীরা ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। আমি দেখেছি সেসব দেশের সরকার সেই জায়গাগুলির উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য
যতাযত বিনিয়োগ করেছে এবং ব্যবস্থা নিয়েছে। এই জায়গাগুলি সপ্তাহ
এবং বছরের প্রতিটি দিন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। আমার মতো হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন সেই জায়গাগুলোতে যান। সব সময় কিছু
না কিছু উৎসবের আয়োজন করা হয় সেসব জায়গায়। সেই জায়গাগুলো অনেক স্বেচ্ছাসেবক সহ সশস্ত্র বাহিনী
পাহারা দেয়। স্কুলের বাচ্চাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় যাতে তারা তাদের ইতিহাস এবং সংগ্রাম দেখতে, বুঝতে, শিখতে পারে এবং সম্মান দেখাতে পারে। বিদেশী দর্শনার্থীরাও সেসব স্থান পরিদর্শন করে এবং সেই দেশ, এর মানুষ এবং
ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। প্রতিটি পর্যটন বইয়ে সেই স্থানগুলিকে অবশ্যই দর্শনীয় স্থান হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ থেকে যাবার পর ২০১৭ সাল
পর্যন্ত আমি প্রতি দুই বছরে অন্তত একবার এবং ২০১৭ সাল থেকে আমি বছরে অন্তত একবার বাংলাদেশ সফর করি (যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাজের জন্য আমি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে গিয়েছি)। আমি যখন
বাংলাদেশে যাই, আমি সবসময় চেষ্টা করি ওই চারটি এলাকা
ঘুরে দেখার জন্য। গত কয়েক দশকে
অসাধারণ উন্নয়ন দেখতে আর জানতে আমি
প্রতিবার ঢাকার বাইরে আমাদের গ্রামীণ এলাকাতেও যাই। ওই চারটি এলাকা
পরিদর্শন করে, অবহেলা দেখে আমার দারুন মন খারাপ হয়।
হ্যাঁ, জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে বিপুল সংখ্যক মানুষ সেখানে যান, বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও নেতাদের শ্রদ্ধা
জানাতে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই কারণেই সেই জায়গাটি সারা বছর ধরে কোনো না কোনোভাবে যুক্তিসঙ্গত
রাখা হয়। তবুও আমি এর চেয়ে অনেক
বেশি আশা করি।
২১শে ফেব্রুয়ারি, শহীদ মিনার রং করা হবে,
পরিষ্কার করা হবে, আল্পনা আঁকা হয় এবং সেইদিন
বিভিন্ন দলের নেতা আর হাজার হাজার
মানুষের মধ্যে লড়াই হয় কে প্রথমে
তাদের শ্রদ্ধা জানাতে পারে তাই নিয়ে। ২১শে ফেব্রুয়ারির পরের দিন, জায়গাটি অবহেলিত এলাকা বলে মনে হয়। আমি দেখেছি সেই জায়গাটা ময়লা-আবর্জনায় ভরা, কোন পাহারাদার নেই, রক্ষণাবেক্ষণের কোন পরিকল্পনা নেই। কিন্তু আমি নিজেকে প্রশ্ন করি কেন এমন হবে?
বধ্য ভূমি স্মৃতিসৌধ (শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ), একটি চমৎকার জায়গা কিন্তু এটিও একদিনের স্মরণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে - শুধুমাত্র একদিনের সহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের এটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। আমি সেখানে গরু-ছাগল ঘুরে বেড়াতে দেখেছি। জায়গাটা পরিষ্কার করা হয় না। দেখেছি কিছু তরুণ দম্পতি এখানে-সেখানে বসে রোমান্টিক সময় পার করছে। এক কোণায় অলসভাবে
বসে আছেন কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী। কিন্তু আমি নিজেকে প্রশ্ন করি কেন এমন হবে?
সৌভাগ্যবশত সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ একটি ভাল দর্শনীয় স্থান, তবুও শুধুমাত্র ২৬মার্চ নয় জায়গাটি সারা বছর আরো ভালো রক্ষণাবেক্ষণ করা যেতে পারে। আমি সেখানে এমন কোনো ট্যুরিস্ট গাইড দেখিনি যিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বা স্থাপত্যের অর্থ
বর্ণনা করতে পারেন।
বাংলাদেশের স্থপতি এবং জাতির পিতা তার জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়ে সংগ্রাম করেছেন যাতে আমরা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ গর্বিত জাতি হতে পারি। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ফিরে এসে তিনি দেশ পুনর্গঠন শুরু করেন। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের আহ্বানে তিনি অভূতপূর্ব সাড়া পান। অর্থনীতি দ্রুত গতিতে উঠতে শুরু করে। উৎপাদন বাড়াতে শুরু হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমতে থাকে। আশায় উদ্বুদ্ধ, লোকেরা স্বাধীনতার সুবিধাগুলিকে প্রতিটি দরজায় ধাপে প্রসারিত করতে সহায়তা করে। ঠিক তখন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের
সাথে মিলে মিথ্যা ও নোংরা প্রচারণা
ছড়ানো আর কিছু বিশ্বাসঘাতক
সামরিক কর্মকর্তা, কিছু বিদেশী শক্তি এবং বাংলাদেশের কিছু মিরজাফরদের সহায়তায় জাতির পিতাকে সপরিবারের নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। ঘোষণা করা হয় সামরিক আইন। গণতন্ত্র হরণ করে মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। শুরু হয় হত্যা, অভ্যুত্থান
ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। জনগণের খাদ্য ও ভোটের অধিকার
কেড়ে নেওয়া হয়। সামরিক স্বৈরশাসকরা ক্ষমতা গ্রহণ করে এবং কয়েক দশক ধরে দেশ শাসন করে। স্বাধীনতা আর মুক্তির সব
নিদর্শন কেড়ে নেওয়া হয, জাতির পিতার কথা বলা নিষিদ্ধ করা হয়, যারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে তাদের ক্ষমতায় বসানো হয়। আমাদের অতীত বা জাতির পিতাকে
স্মরণ করার মতো কোনো প্রতীক বা স্থান আমাদের
কাছে ছিল না। তাই আজ জাতির পিতা
শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ একটি চমৎকার স্থান, একটি দুঃখ, শান্তি, শ্রদ্ধা ও প্রশান্তির এলাকা।
এটা আমাদের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার জায়গা,
আমাদের ভবিষ্যতের জায়গা। সেখানের জাদুঘরটি আমাদের জাতির পিতা এবং সংগ্রামের গল্প বলার চেষ্টা করে। তবুও আমি অনুভব করি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ আরো অনেক বেশি সম্মানের যোগ্য। এটি শুধুমাত্র তার জন্মদিনে দেখার জায়গা হতে পারে না। জাতির পিতার সমাধি হল ইতিহাস, ত্যাগ
ও সংগ্রামের স্থান, শুধুমাত্র জন্মদিনে এটি দর্শন হতে পারে না। এটা বাঙালি ও বাংলাদেশের জন্য
প্রতিদিন মনে রাখার জায়গা। আমার জন্য এটি একটি তীর্থস্থান। বেড়াতে যেতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে দেশের প্রতিটি কোণ থেকে আসার জন্য কেন ডেডিকেটেড পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস নেই। তাহলে মানুষ সেখানে যাবে কিভাবে? দুর থেকে আশা মানুষের রাত কাটার জায়গা সেখানে নই। সামরিক খুনি ও স্বৈরশাসকরা এটাই
চেয়েছিলেন, যাতে মানুষ সেখানে না যেতে পারে
এবং দুঃখজনকভাবে আমরা এখনও কোন মনোযোগ দিচ্ছি না। ভবিষ্যত প্রজন্মের সেখানে যাওয়া সহজ করার উপায় খুঁজে পাচ্ছি না! আমরা ভর্তুকি প্রদান করছি, এমনকি লোকসানকারী প্রতিষ্ঠানকেও কিন্তু কেন এই প্রচেষ্টায় বরাদ্দ
করতে পারছি না!
আমি একজন গর্বিত বাঙালি এবং বাংলাদেশী হতে চাই, আমি আমাদের গর্বিত ইতিহাস, আমাদের সংগ্রাম এবং আমাদের আত্মত্যাগের কথা প্রতিটি দিন স্মরণ করতে এবং বলতে চাই। জাতির পিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সুযোগ দেওয়া হলে, সক্রিয়ভাবে দেশব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং উদ্যোগ নেওয়া হলে বাংলাদেশের জনগণ, বৃদ্ধ এবং যুবক, নারী বা পুরুষ তাদের
শ্রদ্ধা জানাতে সেই স্থানগুলিকে স্মরণের জায়গা হিসাবে পরিদর্শন করতে যাবে। তারা ইতিহাসকে আলিঙ্গন করে প্রতিশ্রুতি করবে কখনই কউকে আমাদের দমন করতে, আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে দেব না। বিদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীরা সে জায়গা দেখার
জন্য কৌতুহলী হবে এবং সেখানের যাবার ইচ্ছা করবে এবং আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে জানবে। যা আমি অন্য
অনেক দেশে দেখেছি, তাই ভাবি কেন আমাদের সেনাবাহিনী, নৌ, বিমান বাহিনী এবং বিডিআর বাহিনী তাদের সেনানিবাসের মতো তেমন সুন্দর রক্ষণাবেক্ষণের ধারাতে এই চারটি জায়গায়
স্থায়ীভাবে তাদের স্টেশন স্থাপন করে, সরকারী সহায়তায় এই স্থানগুলি পরিচালনার
সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করে না? আমাদের সংগ্রাম ও মুক্তি এবং
আমাদের সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখতে তাদের বিশাল অবদান রয়েছে। কথার কথা তারা সেখানে সবচেয়ে অর্থবহ এবং আকর্ষণীয় প্রহরী পরিবর্তনের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে পারে, লোকেরা তাদের দেখতে যাবে এবং একই সাথে তাদের শ্রদ্ধা জানাবে। কেন আমি বিমান বন্দরে এই চার সৌধের
ছবি দেখি না? কেন রাজনৈতিক দল, ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠন এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয় পর্যায়ক্রমে ছাত্রদের এই জায়গায় যাওয়ার
আয়োজন করে না? আমরা কেন ইতিহাসের জন্য এবং যারা আমাদের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কিছু অর্থ ব্যয় করতে পারি না? কেন যুব ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো
সেখানে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে না? মনে রাখতে হবে, এই জায়গাগুলো আমাদের
বারবার মনে করিয়ে দেয় আমরা কোথায় ছিলাম এবং আজ কোথায় আছি।
আমাদের মনে রাখতে সাহায্য করবে কেন আমাদের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের জন্য
লড়াই করতে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে। বার বার সতর্ক করবে যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কেন আমাদের দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। সাহস দেবে কেন আমাদের জাতি, আমাদের ভাষা এবং আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে গর্ব করা উচিত।
আমি যখন দেখি বাংলাদেশের মানুষের বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরের স্থান পরিদর্শন করার সচেতনতা এবং ইচ্ছা, তখন আমি খুব বিস্মিত এবং গর্ব বোধ করি। সামাজিক মিডিয়াগুলো তাদের দুঃসাহসিক গল্পে পূর্ণ। তারা তাদের বাড়ির চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না, তারা এখন আরও মোবাইল, তাদের সামাজিক ও আর্থিক উপায় বাড়ছে, তারা বিভিন্ন জায়গা দেখতে চায়, আমাদের ইতিহাস জানতে চায়। এখন অন্তত সেই চারটি জায়গাগুলিকে দেখার জন্য, সময় কাটানোর জন্য আরও আকর্ষণীয় করার দায়িত্ব আমাদের, সরকারের, সবার।আমি বিশ্বাস করতে চাই শহীদ মিনার, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ শুধুমাত্র একটি দিনের জায়গা নয় বরং প্রতিটি দিনের শ্রদ্ধা ও স্মরণের জায়গা হক। আমরা যদি আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের মাতৃভাষা, যারা আমাদের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং আমাদের জাতির পিতাকে বিশ্বাস করি তবে আমাদের সকলকে একত্রিত হতে হবে, আপনি যে রাজনৈতিক দলেরই হোন না কেন, সেই বিশ্বাসে আমাদের অবশ্যই একসাথে থাকতে হবে। আমরা একদিনের জন্য বাঙালি/বাংলাদেশী হতে চাই না। আমরা বাঁচতে চাই এবং সমৃদ্ধ হতে চাই, আমাদের ইতিহাস এবং আমাদের অতীত, বর্তমান নিয়ে গর্বিত হতে চাই এবং আমরা আমাদের আরো উন্নত ভবিষ্যতে বিশ্বাস করতে চাই। চিরদিন আমরা সবাই মনে প্রানে বাঙ্গালী, বাংলাদেশী হয়েই বাঁচতে চাই।
Prof
Monir Islam, MBBS, FRCOG, MPH
Senior
Specialist
International
Centre for Migration, Health and Development
Former
Senior Specialist, Maternal and Newborn Health
Liverpool
School of Tropical Medicine, Liverpool, UK
Former
WHO Director and Country Representative to Thailand and Namibia
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৩:৩৫ পিএম, ০৩ জুন, ২০২৩
মন্তব্য করুন
তখন ছিল স্বৈরাচারী জিয়ার শাসন আমল। আমি তখন মেডিকেল কলেজের ছাত্র। আমরা কলেজের অধ্যক্ষের অনৈতিক আচরণের কারনে তার অপসারণের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলাম। এক কলেজ ছাত্রের পরিবারের একজন সদস্য কলেজের অধ্যক্ষের বাসায় ফোন করে (যেহেতু হোস্টেলে কোনো টেলিফোনের সুবিধা ছিল না) তাকে অনুরোধ করে ছাত্রটিকে তার বাবার মৃত্যুর খবর জানাতে এবং তাকে অবিলম্বে বাড়িতে আসতে বলার অনুরোধ করার জন্য। অধ্যক্ষ গভীর রাতে তাকে ফোন করে বিরক্ত করার জন্য সেই পরিবারের লোকটির সাথে খুব খারাপ আচরণ করেন এবং তিনি ছাত্রকে কিছু জানাননি। ছাত্রটি কয়েকদিন পরে তার বাবার মৃত্যুর খবরের তথ্য পায় এবং তার বাবাকে শেষ বারের মত বিদায় জানাতে সময় মত বাড়ি যেতে পারেনি। ধর্মঘট চলতে থাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী আমাদের তার সাথ আলোচনা করার জন্য ঢাকায় আসতে বলেন। আমি প্রতিনিধিদলের একজন ছিলাম। ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরী তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ডাঃ মতিন উপমন্ত্রী ছিলেন। সচিবালয়ে আমরা মন্ত্রীর সাথে আলোচনা করার সময় আমাদের দাবি সম্পর্কে মন্ত্রীকে অবহিত করি। মন্ত্রী আমাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং আমাদের দাবিতে প্রায় একমত হন এবং আমাদের বললেন স্বাস্থ্য সচিবের সাথে দেখা করতে। এরপর আমরা স্বাস্থ্য সচিবের দপ্তরে যাই। অফিসের বাইরে আনেক সময় অপেক্ষা করার পর সচিব আমাদের ভিতরে ডাকলেন। তিনি আমাদের বসতে বললেন এবং ইংরেজিতে বললেন, "হ্যাঁ, তরুণরা, আমি তোমাদের জন্য কি করতে পারি (Young men what can I do for you all)"? আমরা তাকে মন্ত্রীর সাথে আমাদের আলোচনার বিষয়ে অবহিত করি এবং আমাদের চাহিদার তালিকা তাকে দেই। সচিব তখন জিজ্ঞাসা করলেন, “মন্ত্রী কি এ বিষয়ে তার মতামতের কোনো কাগজে স্বাক্ষর করেছেন?”। আমাদের কাছে এমন কোনো কাগজ ছিল না। তারপর সেক্রেটারি শান্তভাবে আমাদের মুখে উপর তার বুড়ো আঙুল নাড়তে নাড়তে বললেন: “তরুণরা, তোমরা তোমাদের কলেজে ফিরে যাও, লেখা পড়া করো, কারণ আমি কোনো স্বাক্ষরিত কাগজ ছাড়া কোনো ব্যবস্থা নেব না”। ওখানেই আমাদের আলোচনার সমাপ্তি এবং তিনি আমাদেরকে তার অফিস ছেড়ে যেতে বললেন। আমরা বুঝতে পারলাম রাজনীতিবিদ বা মন্ত্রীরা অনেক কিছু বলতে পারেন বা একমত হতে পারেন তবে কেবল প্রশাসনই তা বাস্তবে কার্যকর করতে পরেন। হাড়ে হাড়ে বুঝলাম, রাজনীতিবিদ বা মন্ত্রীদের কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই। আমি এখন তাই লক্ষ্য করছি, প্রধানমন্ত্রী দেশ বা জনগণের স্বার্থে অনেক ভালো কিছু করার নির্দেশ দেন, কিন্তু প্রশাসন বা আমলারা হয় প্রক্রিয়াটি নানাভাবে বিলম্বিত করে বা অনুসরণ করে না। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে একা সময়মতো তার নির্দেশাবলীর তত্ত্বাবধান বা পর্যবেক্ষণ করা মানবিকভাবে সম্ভব নয়। বিশ্বের প্রতিটি দেশে তাই হচ্ছে। অন্য কথায় সহজ ভাবে বলা যায় সত্যিকার অর্থে আমলারাই দেশ চালান। আমরা স্বাধীনতার পর আরো দেখেছি তিন তিনবার বন্দুকের নলের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে।
আমার নিবন্ধের আসল বিষয়ে ফিরে আসা যাক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, নিরাপত্তা আর প্রশাসনিক ক্যাডার, ব্যবসায়ী মালিক (বা তাদের পরিবারের সদস্যদের) যারা আগামী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার সাহস করবে বা করবে তাদের ভিসা প্রদান বা অস্বীকার করার জন্য কিছু ধারা আরোপ করেছে বা হুমকি দিয়েছে। বিশ্বের একটি সার্বভৌম ক্ষমতাধর দেশ হিসেবে আমেরিকার অধিকার আছে তারা কাকে ভিসা দিতে চায় বা না দিতে চায়। এতে কারো কোনো আপত্তি নেই বরং আমেরিকার এই শুভ ইচ্ছাকে স্বাগত জানানো উচিত। কিন্তু তবুও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে কূটনৈতিক রীতিনীতির বিরুদ্ধে তারা ক্রমাগত উচ্চস্বরে কথা বলে আসছে। তারা নির্বাচন কমিশনেও গেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে তার সফরের সময় বারবার বলেছেন যে তিনি নিশ্চিত করবেন ২০২৩/২৪ সালের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এবং তিনি ভোটের মাধ্যমে জনগণ যেন তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে তা নিশ্চিত করবেন। তাহলে নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো? কেন হঠাৎ করে বাংলাদেশ? বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য কেন এটি প্রযোজ্য করা নয়? মিশরের সামরিক শাসক দ্বারা নির্বাচনের সময়ের আগে তো আমরা সেই হুমকি দেখিনি? ১৯৭৫ সালের “হা” “না” নির্বাচন বা পরবর্তী নির্বাচনের আগে কেন তা আরোপ করা হলো না? কেউ কেউ হয়তো বলবেন, আমেরিকা বিশ্বাস করে যে গত দুটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, সেজন্য তারা এই হুমকি দিয়ে আমাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে? সত্যিই কি তাই??!! এর মানে কি বাংলাদেশের নাগরিকদের নিজেদের নির্বাচন পরিচালনার জন্য অন্যদের নির্দেশ বা হুমকির প্রয়োজন? নির্বাচনের সুষ্ঠুতা পর্যবেক্ষণে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে কোন বাঁধা নেই, তবে কেন ভিসাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে একটি সার্বভৌম দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে? আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং এখনও অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল তাই আমরা কি আজ এই হুমকির সম্মুখীন? আমরা একবার ঔপনিবেশিক ক্ষমতার অধীনে ছিলাম প্রতিবারই কি আমাদের তা স্মরণ করিয়ে দিতে হবে?
বাংলাদেশের কত শতাংশ এবং কাদের আমেরিকার ভিসা প্রয়োজন? সর্বোচ্চ ১-২% বাংলাদেশিদের? তাদের মধ্যে কত শতাংশ রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের কর্মকর্তা বা ব্যবসার মালিক? আমরা জানি অনেক উচ্চ বর্তমান বা অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জাতীয় বিভিন্ন নিরাপত্তার কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়িক ব্যক্তিদের বাড়ি, গ্রিন কার্ড, বিশাল ব্যাংক আমানত আমেরিকায় আছে এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা সেখানে শিক্ষার জন্য যান বা সেখানে বসবাস করছেন। বা যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করেন কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে বার বার যান বা থাকেন এবং সেখানে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করেন। ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক দলগুলোকে বিপুল পরিমাণ অর্থ অনুদান প্রদান করে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাদের ভবিষ্যতের জন্য আরও প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে যেতে চান। আমেরিকান ভিসা এই লোকদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, যারা আসলে দেশ চালান বা জাতীয় অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তা বজায় রাখেন। বা রাজনৈতিক এজেন্ডায় প্রভাব বিস্তার করেন। অনেক শাসক বা প্রাক্তন রাজনীতিবিদদেরও একই কারণে আমেরিকান ভিসা প্রয়োজন। ভিসা বিধিনিষেধের এই অস্ত্রের কারণে এই দলগুলো সবচেয়ে বেশি হুমকির সম্মুখীন। অন্যান্য অনেক বাংলাদেশিরা সেখানে উন্নত জীবন ও আয়ের জন্য আছেন। তারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত নন এবং তাদের এই হুমকির ভয় পাওয়ার কারণ নেই। অন্যদিকে ৯৬-৯৪% বাংলাদেশি মানুষ আমেরিকান ভিসা নিয়ে চিন্তা করেন না বা তাদের ভিসার অনুরোধ করার কোনো কারণ নেই (অনেকে এখনও উন্নত জীবন, শিক্ষা বা অর্থনৈতিক কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান এবং তাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো ক্ষমতা নেই)। তাই আমরা বলতে পারি ভিসার হুমকির কারণে ওই গুটি কিছু স্বার্থান্বেষী লোক আমেরিকার হুকুম মানতে এমনকি বাংলাদেশের স্বার্থ ও তার ভাবমূর্তি বলিদান দিতেও যা কিছু করা তাই করবে। সংবিধান অনুযায়ী এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে ২০০১ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমরা ২০০১ সালের সেই নির্বাচনের কথা ভুলে যাইনি। আরেকটা বিষয়, কাউকে ভিসা প্রত্যাখ্যান করার কারণগুলি প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয় না, তাই আমরা কখনও জানবো না কাকে এবং কী কারণে ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হবে। তাই এই ভিসার হুমকিকে যদি অস্ত্র হিসেবে না দেখা হয়, একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা বলা না হয় , আমি জানি না এটি অন্যথায় কীভাবে দেখা যেতে পারে!! গণতন্ত্র, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য সৎ ইচ্ছা আর একটি সৎ প্রচেষ্টা??!! অতীত ইতিহাস বিশ্লেষণ করে, আমরা দীর্ঘ দীর্ঘ সময়, ঘন্টার পর ঘন্টা তা নিয়ে কথা বলতে পারি!!
কিন্তু আমি লজ্জিত বোধ করি রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়া এই ভিসা বিধিনিষেধ নিয়ে নানা ভাবে ব্যবহার করে বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার এবং সম্মানকে ক্ষুণ্ন করছে দেখে। ক্ষমতাসীন দলের ব্যর্থতা বা বর্তমান সরকারকে অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য কিছু রাজনীতিবিদ, মিডিয়া এবং ব্যক্তিত্ব এই হুমকি উল্লসিতভাবে প্রচার করছেন। কিছু আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্যদের মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাড়িতে ছুটে যেতে দেখে আমিও লজ্জিত হয়েছি, কারণ তাদের জানা ছিল সেখানে নাস্তা বা রাতের খাবার বা গল্প করার জন্য ডাকা হয়নি, ভিসার সীমাবদ্ধতা ব্যাখ্যা করার বা হুমকির কথা বলার জন্য তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ চালান না, তিনি তার নিজ দেশের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাই সম্পূর্ণ সম্মানের সাথে রাষ্ট্রদূতের উচিত ছিল নিজে বা তার প্রতিনিধির প্রতিটি দলের সদর দফতরে ব্যাখ্যার জন্য যাওয়া। আমি একজন আওয়ামী লীগ সদস্য যিনি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তাকে একটি টিভি টকশোতে বলতে শুনেছি, তিনি বললেন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন কারণ তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে (যেন সাংস্কৃতিকভাবে আমরা কোনও আমন্ত্রণ অস্বীকার করার মত অভদ্র জাতী না)? বন্ধুত্বপূর্ণ ডিনারের জন্য? তিনি ভালো ভাবেই জানতেন কি আলোচনা করা হবে, তবুও কেন গেলেন সেখানে? মার্কিন রাষ্ট্রদূত গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন, মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। এটাই নিয়ম, যদি আমরা সত্যিই আমাদের নিজেদেরকে বিশ্বাস করি এবং সামান্যতম আত্মসম্মানবোধ করি। আমিও আরো অবাক হই ভিসার হুমকি নিয়ে এত কথা বলা শুনে বা তোলপার দেখে? আমরা যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবকিছু করি তাহলে আমাদের কেন মাথা ঘামাতে হবে। আমরা কি ভয় পাচ্ছি যে কেউ শাসন/শাসক পরিবর্তনের হুমকি দিচ্ছে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সুবিধার জন্য তারা যা করতে চায় তাকে তা করতে দিন। আসুন আমরা আমাদের বিষয়গুলি নিজেরাই মোকাবেলা করার সাহস করি।
আমি জানি বাংলাদেশের অর্থনীতি কয়েকটি ধনী দেশের ভালো ইচ্ছার উপর নির্ভর করে কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমাদের নতজানু হয়ে ভিক্ষা করতে হবে। স্বাধীনতার জন্য হাজার হাজার মানুষ তাদের জীবন দিয়েছিল, হাজার হাজার নাড়ীর লজ্জা হরন করা হয়েছিল। আমরা সাহসিকতার সাথে লড়াই করেছি স্বাধীনতার অর্জন করে, বুক উচু করে এবং সম্মানের সাথে বাঁচার জন্য। তাই বাংলাদেশকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে সার্বভৌম এবং সম্মানিত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ কেন আমরা দেখতে পাচ্ছি শক্তিশালী দেশগুলো, যারা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ বলেছিল বা ক্ষুধা, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বলেছিল তারা আজ বাংলাদেশে আসছে, বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলছে, সমর্থনের পাশাপাশি হুমকি প্রদান করছে, বাংলাদেশকে তাদের নিজ নিজ ক্ষমতার বৃত্তে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে? কারন আজ বাংলাদেশ আমাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে ভূ-রাজনৈতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে।? তাই তারা কি ভাবছে, প্রধানমন্ত্রী খুব স্বাধীনচেতা হয়ে গেছেন, অন্যের দ্বারা অযথা হস্তক্ষেপ এবং আধিপত্যের বিরুধে হুমকি বা বাধা হয়ে দাডিয়েছে? প্রধানমন্ত্রী একা বাংলাদেশ কে আরো এগিয়ে নিতে পারবেন না, তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে তার সম্মানিত দলীয় সদস্য, নেতা ও আমলাদের প্রয়োজন হবে। প্রয়োজন হবে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের। আসুন আত্মসম্মান বজায় রাখি এবং আমাদের নিজেদের শক্তিতে বিশ্বাস রাখি, আমেরিকান ভিসা পাই বা না পাই।
আমি স্বীকার করি অনেকেই বলবেন বিদেশে বসবাস করে অনেক কিছু বলা যায় কিন্তু ঘরে বসে তা সব সময় সহজ নয়। আমি শ্রদ্ধার সাথে বলতে চাই আমি আপনার সাথে শতভাগে একমত।
Prof Dr Quazi Monirul Islam, MBBS, MPH, FRCOG
Epidemiology Department, Prince of Songkla University, Hat Yai, Thailand
Senior Specialist, International Centre for Migration, Health and Development
Former Senior Specialist (Maternal and Newborn), Liverpool School of Tropical Medicine, UK
Former WHO Director and Country Representative to Thailand and Namibia
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আমেরিকা আমার 'খুউব' পছন্দের দেশ। পছন্দের অন্যতম কারণ হলো, সে দেশের পররাষ্ট্র অনুষদের কর্মকান্ড। দেশটি তাদের নাগরিকদের খুব ভালোবাসে। তাদের নিরাপত্তায় সর্বদা উদ্বিগ্ন। নাগরিক বিদেশে গেলে সে দেশে কোথায় যাবে না যাবে, কোথায় নিরাপদ, কোথায় ঝুঁকিপূর্ণ, কেমন সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, তার একটি দিক নির্দেশনা সময়ে সময়ে দিয়ে থাকে। এমন নির্দেশনা সরকার তাদের নাগরিকদের দিলে সে নাগরিকের গর্ববোধ করা উচিত। সে জন্যই দেশটিকে 'খুউব' পছন্দ করি।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস গত ২১ মে সে দেশের নাগরিকদের জন্য একটি ভ্রমণ সতর্কবার্তা জারি করেছে। সতর্কবার্তার নাম দিয়েছে ‘ডেমোনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’। বার্তায় বলা হয়েছে বাংলাদেশে নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। রাজনৈতিক সভা সমাবেশ বাড়তে পারে। বিক্ষোভ হতে পারে। বিক্ষোভের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে। সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। সে দেশের নাগরিকদের বড় সমাবেশ ও বিক্ষোভের স্থানগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করার উপদেশ দেয়া হয়েছে।
‘ডেমোনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’টি যখন দেয়া হয়, তখন দেশের রাজনীতির আকাশে সংঘাত, সহিংসতা বা বিক্ষোভের কোন ঘনঘটা ছিল না। কিন্তু তার দুদিন পর রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে যে তুলকালাম ঘটে গেল তাতে অনুমেয় যে দূতাবাস একেবারে মোক্ষম সময়ে সতর্ক বার্তা জারি করেছে। তাদের গোয়েন্দা সক্ষমতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ক্ষমতার তারিফ করতে হয়। দেশটির জনগণের প্রতি তাদের সরকার যে মায়া মমতা ও উদ্বিগ্নতা, সঠিক সময়ে সঠিক বার্তা, সেটি আজকের বিষয়বস্তু নয়। কোন দেশে এ ধরণের বা এর চেয়ে বেশি খারাপ পরিস্থিতি হলে আমাদের দূতাবাসগুলোর ভূমিকা বা নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে আলোকপাত করতে চাই। প্রায় সোয়া কোটি দেশি রেমিটেন্স যোদ্ধা রয়েছে বিদেশে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী যাচ্ছে বিদেশ ভ্রমণে। প্রতিনিয়ত সংঘাত, সহিংসতা, বিক্ষোভ চলছে দেশে দেশে। কখনো শুনি না যে দেশি দূতাবাস গুলো এ ধরনের সতর্কবার্তা দিয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো এ ব্যাপারে সর্বদাই নিষ্ক্রিয়।
ফিরে যাই মার্কিন মুলুকে। সেখানে বন্দুক সহিংসতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত ৩২ বছরে দেশটিতে বন্দুক সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১ লাখের বেশি মানুষ। ২০২১ সালে বন্দুকের গুলিতে মারা গেছে প্রায় ৪৯ হাজার, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সার্বোচ্চ। আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে ৫২টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় ৯৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে, আহত ২০৫। গত ফেব্রুয়ারিতে সেদেশে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৪০টি, নিহত ৪৬, আহত ১৫০। গত মার্চে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৩৯টি, নিহত ৫৬, আহত ১৩৬। গত এপ্রিলে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৫৬টি। এসব ঘটনায় নিহত ৬২, আহত ২৪৪। এপ্রিলের শেষ দিনে ১১টি ঘটনা ঘটেছে। ‘গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ’ নামের একটি গবেষণা সংস্থার ওয়েবসাইটে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত 'গান পলিসি' নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে বাংলাদেশে বন্দুক হামলায় মারা যায় দেড় হাজার জন। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রে মারা যায় সাড়ে ২৮ হাজার জন। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা বাংলাদেশের দ্বিগুন। জনসংখ্যা অনুপাতে সেদেশে বন্দুক হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে দশগুণ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে এসব বন্দুক হামলার সংঘাতের ঘটনাস্থল সর্বত্র। শপিংমল, পার্ক, স্কুল, হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার, রেল স্টেশন, ব্যাংক থেকে শুরু করে জন্মদিনের অনুষ্ঠান, মেমোরিয়াল ডে’র অনুষ্ঠানস্থল, স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান যেখানে প্রতিনিয়ত বন্দুক হামলা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বাংলাদেশী বাস করে, বেড়াতে যায়, কাজে যায়, সভা-সেমিনারে যায়। আমেরিকার ভিসা দপ্তরের তথ্যমতে, এ বছরের প্রথম তিন মাসে প্রায় ১২ হাজার বাংলাদেশী নন ইমিগ্রান্ট ভিসা পেয়েছে। তার মানে, গড়ে প্রতিমাসে প্রায় ৪ হাজার বাংলাদেশী যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে যায়। প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বাংলাদেশি ছাত্র ছাত্রী সেখানে পড়াশুনা করে । এসব প্রবাসী বাংলাদেশী ছাত্র বা টুরিস্টদের প্রতি বাংলাদেশী দূতাবাসের কি কোন দয়া মায়া নেই ? উদ্বিগ্নতা নেই ? তারাও তো পারে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান বন্দুক হামলার প্রেক্ষিতে সময়ে সময়ে আমাদেরকে সতর্কবার্তা দিতে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশী দূতাবাস যুগ যুগ ধরে এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়ে যাচ্ছে। নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক সংকেত দিচ্ছে না। শপিংমল, রেল স্টেশন, ব্যাংক, হাসপাতাল, স্কুল, পার্ক ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলার বা সাবধানে চলার পরামর্শ দিচ্ছে না। কিন্তু কেন ? দেশের নাগরিকদের প্রতি তাদের কি কোন দায়িত্ববোধ নেই?
এ বি এম কামরুল হাসান
প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, নিরাপত্তা আর প্রশাসনিক ক্যাডার, ব্যবসায়ী মালিক (বা তাদের পরিবারের সদস্যদের) যারা আগামী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার সাহস করবে বা করবে তাদের ভিসা প্রদান বা অস্বীকার করার জন্য কিছু ধারা আরোপ করেছে বা হুমকি দিয়েছে। বিশ্বের একটি সার্বভৌম ক্ষমতাধর দেশ হিসেবে আমেরিকার অধিকার আছে তারা কাকে ভিসা দিতে চায় বা না দিতে চায়। এতে কারো কোনো আপত্তি নেই বরং আমেরিকার এই শুভ ইচ্ছাকে স্বাগত জানানো উচিত। কিন্তু তবুও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে কূটনৈতিক রীতিনীতির বিরুদ্ধে তারা ক্রমাগত উচ্চস্বরে কথা বলে আসছে। তারা নির্বাচন কমিশনেও গেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে তার সফরের সময় বারবার বলেছেন যে তিনি নিশ্চিত করবেন ২০২৩/২৪ সালের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এবং তিনি ভোটের মাধ্যমে জনগণ যেন তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে তা নিশ্চিত করবেন। তাহলে নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো?
" মনোযোগ বলতে নির্দিষ্ট একটা বিষয়কে ফোকাস করাকে বুঝায় না, একই সাথে এটা অসংখ্য প্রতিযোগী তথ্য এবং উদ্দীপককে অগ্রাহ্য করাকেও বুঝায়। যা এ মুহূর্তে প্রাসঙ্গিক নয় সেটাকে এড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের প্রতি আকর্ষিত হওয়াই মনোযোগ ( Kendra Cherry, 2022)। কোন পণ্যকে ভোক্তা কিভাবে মূল্যায়ন করবে সেটা অনেকাংশেই তাঁর প্রত্যক্ষণের উপর নির্ভর করে। মনোযোগ হচ্ছে প্রত্যক্ষনের একটি পূর্বশর্ত। কোন নির্দিষ্ট উদ্দীপকের প্রতি ইন্দ্রিয় বা ইন্দ্রীয় সমূহকে নিবদ্ধ করার নামই হলো মনোযোগ। যে মানসিক ক্রিয়ার মাধ্যমে একাধিক বিষয় থেকে চেতনাকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নিয়ে একটি বিশেষ বিষয়ে চেতনাকে কেন্দ্রীভূত করা হয় তাকে মনোযোগ বলে।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস গত ২১ মে সে দেশের নাগরিকদের জন্য একটি ভ্রমণ সতর্কবার্তা জারি করেছে। সতর্কবার্তার নাম দিয়েছে ‘ডেমোনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’। বার্তায় বলা হয়েছে বাংলাদেশে নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। রাজনৈতিক সভা সমাবেশ বাড়তে পারে। বিক্ষোভ হতে পারে। বিক্ষোভের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে। সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। সে দেশের নাগরিকদের বড় সমাবেশ ও বিক্ষোভের স্থানগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করার উপদেশ দেয়া হয়েছে।
আমেরিকার South Asia Perspectives পত্রিকায় ২৮ মে(২০২৩) প্রকাশিত মিথ্যাচারে পূর্ণ Jon Danilowicz এর U.S. Visa Policy: What Next? শিরোনামে লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়লে দেখা যাবে এক সময়ে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের এই সাবেক কর্মকর্তা কী কৌশলে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মনগড়া তথ্য দিয়ে বিরোধী শিবিরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।তিনি যেভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিগুলো তুলে ধরেছেন এবং বিএনপি-জামায়াতের অপতৎপরতাকে এড়িয়ে গেছেন তা সৎ লেখকের কাজ নয়। তিনি যেন কোনো লবিস্ট কর্তৃক নিযুক্ত লেখক। যার নুন খান তার গুণগান করেন। এ ধারার জন ড্যানিলভিচ মার্কা লেখক ও বক্তারা পৃথিবীর অনেক জায়গায় বসে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চিত্রের কথা ব্যক্ত করার পরিবর্তে মিথ্যাভাষণে সরকার বিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত। এদের বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।