ইনসাইড থট

কেন শুধুমাত্র সক্রিয় চীন বিরোধী প্রচারনা

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ০৬ এপ্রিল, ২০২৩


Thumbnail

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাসান ফেরদৌসের লেখা গত পরশুর (মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল) প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি লেখা পড়ছিলাম। নিবন্ধটির শিরোনাম হল “বিশ্বরাজনীতি:

চীনের নেতৃত্বে ‘নয়া বিশ্বব্যবস্থা’ কতটা বাস্তবসম্মত”। আকর্ষণীয় নিবন্ধ, চীন বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি এবং অনুভূতি তৈরি করতে প্রায় একটি প্রদত্ত (paid) নিবন্ধ বলে মনে হল। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল শেষ অনুচ্ছেদের প্রথম লাইনটি, যেখানে তিনি বলেছেন “সন্দেহ নেই, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে অনেকেরই আপত্তি রয়েছে। তাকে এড়িয়ে যদি একটি বিকল্প বৈশ্বিক ব্যবস্থা গঠনে চীন সক্ষম হয়, তাহলে তাকে সমর্থন করে, এমন দেশ ও নেতার অভাব হবে না।” দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ক্ষমতা এবং প্রভাব বজায় রাখার ধ্বংসাত্মক মার্কিন আর এবং পশ্চিমা মিত্রদের নীতি, আধিপত্য সম্পর্কে তিনি একমাত্র দুই লাইনের ঐ কথাই বলেছেন। তিনি এই চীন বিরোধী বক্তব্যের উপর আরও জোর দিয়ে শেষ করেছেন এই বলে “তাহলে কিছু লোককে হয়তো কিছু সময়ের জন্য বোকা বানানো যাবে, কিন্তু সবাইকে সব সময়ের জন্য বোকা বানানো সম্ভব হবে বলে মনে হয় না”। কিছু কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের এই ধরনের সুসংগঠিত প্রচেষ্টা দেখে আমি অবাক হইনি। ক্রমবর্ধমানভাবে আমি লক্ষ্য করছি যে একটি সমন্বিত সংগঠিত চীন বিরোধী প্রচারাভিযান বিশ্বব্যাপী চালানো হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশর সংবাদ মাধ্যমও। এটি ঘটছে যখন বাংলাদেশ "সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারোর শত্রু নয়" পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করছে, এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন না দিয়ে বিদেশী আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বিনিয়োগের সর্বাধিক ব্যবহার করে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি করার আপ্রান চেষ্টা করছে। এটি তখন ঘটছে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা উচ্চস্বরে বলছে চীনই তাদের একমাএ নিরাপত্তার হুমকি। এটা ঘটছে যখন এশিয়া, আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার আরও বেশি সংখ্যক দেশ সচেতন হয়ে উঠছে এবং নাগরিকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার জন্য স্বাধীন সার্বভৌম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এটা ঘটছে যখন একক মেরুর শক্তিশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি হ্রাস পাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে চীন তার প্রভাব বিস্তার করছে। এটি প্রচার করা হচ্ছে যখন ডলারের আধিপত্য ক্রমবর্ধমান হুমকির মধ্যে রয়েছে এবং বিকল্প উপায়ের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তখন, যখন বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো তাদের কাছে দেওয়া পছন্দের একাধিক ঝুড়ি থেকে তাদের চাহিদার সর্বোচ্চ সুবিধার সমর্থন বেছে নিতে সক্ষম হচ্ছে।

আমি এখন হল্যান্ডে, বন্ধু এবং সহকর্মীদের সাথে দেখা করছি। আলোচনার সময় অবশ্যই ইউক্রেন যুদ্ধ বেরিয়ে আসছে। আমার এক ডাচ বন্ধু বললেন পুতিন এবং শি জিনপিংকে বিশ্বাস করা যায় না, তারা বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি, অপরাধী এবং তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। আরো বললেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপ শান্তিপূর্ণ ছিল, এখন রাশিয়া ইউরোপে যুদ্ধ ও সমস্যা নিয়ে এসেছে। আমি বল্লাম তিনি ঠিক বলেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপ শান্তিপূর্ণ ছিল এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে এবং শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা ও ইউরোপের পাশাপাশি ন্যাটো দেশগুলো কী করেছে তা কি তিনি কখনো ভেবে দেখেছেন? তিনি কি কখনো সেই নিপীড়িত দেশগুলোর শান্তির কথা ভেবেছেন? একবারও কি ভেবে দেখেছেন, কি করা হয়েছিল ঐ দেশগুলোর সাথে: যুদ্ধ, ধ্বংস, জাতীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, জাতীয় নেতাদের হত্যা এবং শাসন পরিবর্তন, ভিয়েতনাম থেকে আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক থেকে মালি, নাইজার, টোগো থেকে চিলি, পানামা, নিকারাগুয়া থেকে কিউবা পর্যন্ত? এ সময়ে ইউরোপে রাশিয়া প্রথম যুদ্ধ শুরু করেনি। তিনি কি ভুলে গেছেন যুগোস্লাভিয়ায় ন্যাটোর বোমা হামলার কথা? আমি বল্লাম ডাচরা অন্যান্য অনেক উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তির মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের উচ্চ প্রযুক্তির কম্পিউটার চিপ এবং সুপার কম্পিউটারের উপাদানগুলি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তারা চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অনেক দেশে এই উপাদানগুলি আমদানি করে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার চীনের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারছে না দেশটি। আমি জানতে চাইলাম ক্ষতি কার বেশী হচ্ছে আর লাভবান হচ্ছে কে?

এটা পরিষ্কার যে রাশিয়া উত্তর সাগরের পাইপলাইনে বোমা ফেলেনি এবং ধ্বংস করেনি।

আমরা যদি বিশ্বে বিখ্যাত সেমুর হার্শের প্রকাশনায় বিশ্বাস করি যে রাষ্ট্রপতি বাইডেন ইউরোপীয় মিত্রদের সাথে পরামর্শ না করেই পাইপলাইনটি ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, এবং আমেরিকা সেই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে, তবে জার্মানি এবং অন্যান্য সহযোগী দেশগুলোকে আমেরিকা কী সংকেত দিচ্ছে? এটা বলা কি ভুল যে আমেরিকা তার নিজের স্বার্থের জন্য কোনো, এমনকি তার নিজের মিত্রদের ক্ষতিকর পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। নরওয়ের (অন্য জ্বালানি ও গ্যাস রপ্তানিকারক দেশ) সহায়তায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কার সুবিধার জন্য এটি করেছে? ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে কে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে? রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের কারণে ইউরোপ এবং বিশেষ করে আজ পর্যন্ত জার্মানি বিপুল অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়েছে। আজ, সস্তা রাশিয়ান জ্বালানির অভাবে জার্মানির সবচেয়ে বড় রাসায়নিক কোম্পানি তার কর্মী ছাঁটাই করছে আর উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। এখন অনেক ডাচ কাচের ঘরে সবুজ শাকসবজি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে, উচ্চ বিদ্যুতের দামের কারণে। ইউরোপে জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক অনেক খারাপ অবস্থা এইদেশ গুলোতে। তেল ও অস্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো বিপুল মুনাফা করছে। তাই ভাবছি কখন ইউরোপীয় দেশগুলি তাদের নিজস্ব স্বাধীন নীতি প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে, এবং তারা তাদের দেশ এবং নাগরিকদের জন্য সবচেয়ে কি ভাল তা নির্ধারণ করতে সক্ষম হবে! আমার ডাচ বন্ধু কোন জবাব না দিয়ে, চুপ করে থাকলো। অন্য আর একজন ডাচ সহকর্মী বললেন, পুতিনকে তার রাস্তায় দেখলে সে তাকে গুলি করে হত্যা করবে। আমার এক সুইডিশ বন্ধু, যখন আমি তাকে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বিশেষ করে জ্বালানি, গ্যাস, সার এবং শস্যের উপর, যা উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য প্রচুর অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তা বিবেচনা করার জন্য। সে সরাসরি বললো কেন সুইডেন বা ইউরোপীয় দেশগুলির জন্য এটি একটি বিবেচনা বা উদ্বেগের বিষয় হবে? কেন তারা অ-ইউরোপীয় দেশগুলির বিষয়গুলি বিবেচনা করবে?

এখন তথাকথিত বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রচারক ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক রাশিয়ান মিডিয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে বা অন্য যে কোনও মিডিয়া যারা অন্য দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে তাকে নীরব করা হচ্ছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ এবং অস্ট্রেলিয়া টিক টোক নিষিদ্ধ করছে। পশ্চিমা মিডিয়া তাদের জনগণকে একতরফা দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামত দিয়ে বোমাবর্ষণ করছে। রাশিয়া এবং চীন সম্পর্কে একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করছে। আমি জানি আমার বাকস্বাধীনতা বন্ধ করতে অনেকে আমাকে বলবে আমি পুতিনের এবং শিজিনপিংকের বন্ধু। আমি জানি আমাকে পশ্চিম বিদ্বেষী হিসাবে চিত্রিত করা হবে। আমার একজন ব্রিটিশ বন্ধু আমাকে নৈতিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিযুক্ত করে কারণ আমি তাদের খোলা মন রাখতে এবং গল্পের অন্য দিকটি বিবেচনা করতে আর দ্বৈত নৈতিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কথা বলছি বলে।

আমি ঐ দুই নেতার বন্ধু না, পশ্চিম বিদ্বেষীও না। কিন্তু বাংলাদেশের মতো আমি চাই ইউরোপ আরও স্বাধীন হোক, তাদের জন্য এবং বাকি বিশ্বের জন্য যা ভালো হয় তাই করুক। ইউরোপের সমস্যাকে বিশ্বের সমস্যা আর অন্যদের সমস্যা তাদের সমস্যা নয় ভাবা বন্ধ করুক। আমি খুব বিশ্বাস করি, মানবতা ও মানব উন্নয়নের জন্য ইউরোপ আরো অনেক কিছু দিতে পারে। ইউরোপ স্বাধীনভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রজাতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক উভয় দলই একই। যারা ক্ষমতায় থাকবেন তারা যে কোনো উপায় ব্যবহার করে আধিপত্য বজায় রাখতে মৃত্যুর আগের শেষ লাথি দিতে কোন দ্বিধা করবেন না। তবুও আমি বিশ্বাস করি আমেরিকা বিশ্বনেতা হতে পারে এবং মানব উন্নয়নে একটি ভয়হীন হুমকি ছাড়া সমান অংশীদার হতে পারে। বিচনায় নিতে হবে , একে অপরের জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমর্থনের সময় এখন।। "হয় আপনি আমাদের সাথে আছেন বা আপনি তাদের সাথে আছেন" দ্বারা বিশ্বকে ভাগ করে মানবতার কল্যাণ হবে না।

তাই আমার মনে হল হাসান ফেরদৌস সাহেবের লেখাটি একটি পক্ষপাতমূলক প্রচারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন ও পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা, আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন, হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ হত্যা, দেশ ধ্বংস, নেতাদের হত্যা এবং শাসন পরিবর্তনের সাথে অভ্যুত্থান, ইচ্ছামতো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার মতো ঘটনাগুলো হাসান ফেরদৌস সাহেবের বলার মত খুব বেশি কিছু বিষয় নয়। তিনি শুধুমাত্র সাম্প্রতিক চীন রাশিয়া জোট এবং বন্ধুত্ব নিয়ে চিন্তিত। আমেরিকা এখনো সিরিয়ার কিছু জমি দখল করে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ চুরি করছে। হাসান ফেরদৌস সাহেবের কি এখনো মনে আছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট একবার বলেছিলেন আফ্রিকান সম্পদ ছাড়া ফ্রান্সের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়বে। ফরাসি ভাষী উপনিবেশের আফ্রিকান দেশগুলি স্বাধীনতা পেয়েছে বটে তবুও এখনও তাদের অর্জিত সমস্ত বৈদেশিক মুদ্রা ফ্রান্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা করতে বাধ্য হচ্ছে এবং ফ্রান্স সিদ্ধান্ত নেয় যে সেই আফ্রিকান দেশগুলির যখন প্রয়োজন তখন তারা কী পরিমান অর্থ নিতে পারবে। সেই আফ্রিকান দেশগুলি জানে না কীভাবে রিজার্ভ মুদ্রাগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তারা অর্জিত কোন সুদ পায় না। হাসান সাহেব স্পষ্টতই জানেন কোন দেশ তাদের হুকুম অমান্য করার সাহস করলে ফ্রান্স অস্ত্র ও অভ্যুত্থান সহ কত শাসন পরিবর্তন করেছে। রাশিয়ার জ্বালানি ও গ্যাস কেনার জন্য আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলো চীন, ভারত ও তুরস্ককে দোষারোপ করছে।বাংলাদেশের সাথে আফ্রিকার অনেক দেশকে সেই সিদ্ধান্ত না নেবার হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু জাপানকে তাদের আরোপিত মূল্যসীমার উপরে জ্বালানি ও গ্যাস কেনার অনুমতি দিয়েছে। হাসান ফেরদৌস সাহেব কি উল্লেখ করেছেন যে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন “ইউরোপ একটি বাগান, আমরা একটি সুন্দর বাগান তৈরি করেছি….…। ……..বাকি পৃথিবী একটি জঙ্গল এবং সেই জঙ্গল আমাদের বাগানকে আক্রমণ করতে পারে।" হাসান ফেরদৌস সাহেব অবশ্যই জানেন অনেক দেশকে আর্থিকভাবে তাদের উপর নির্ভরশীল করে তোলার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের অন্য কথায় পশ্চিমা শক্তির ভূমিকা সম্পর্কে, কিন্তু তিনি ঐ বিষয় নিয়ে কিছুই লেখেন নি। আইএমএফের নিয়ম অনুযায়ী তারা যুদ্ধরত কোনো দেশকে ঋণ প্রদান করে না। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা বা অন্যান্য আফ্রিকান দেশ তাদের অর্থনীতি ও জনগণকে কষ্ট থেকে বাঁচাতে আইএমএফ থেকে ঋণের অনুরোধ করছে, তখন আইএমএফ হাজার হাজার কঠোর নীতি আরোপ করে ঋণ প্রদানে বিলম্ব করছে। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার আমেরিকা এবং পশ্চিমা দেশগুলি রাতারাতি সেই নিয়ম পরিবর্তন করতে দ্বিধা করেনি এবং আইএমএফ ইউক্রেনকে ১৫ বিলিয়ন আমেরিকান ডলার ঋণ দিয়েছে। হ্যাঁ চীন অনেক এশিয়ান, আফ্রিকান এবং ল্যাটিন আমেরিকান দেশকে ঋণ দিচ্ছে। সম্প্রতি পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং কয়েকটি আফ্রিকান দেশকে একটি আইএমএফের বিকল্প সংস্থার মতো কাজ করে চীন কয়েকটি দেশকে ঋণ প্রদান করে তাদের ঋণ খেলাপিতে পরিণত না হতে সাহায্য করছে। সে সব বিষয় জেনেও অতীতের কথা না বলে হাসান সাহেব পরোক্ষভাবে বলছেন যে আমরা তাদের দ্বারা প্রতারিত হইনি। আমরা এখনও তাদেরকে বোকার মত অন্ধভাবে মেনে চলা উচিত।

আমার কোন সন্দেহ নেই যে চীন কিছুই বিনামূল্যে করছে না। আমেরিকা ও পশ্চিমাদের মতো চীনেরও সমান ভূ-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক কারণ এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে। চীন একটি নতুন বহুমুখী শক্তির সমীকরণের বিশ্বব্যবস্থা তৈরি করার চেষ্টা করছে। তাহলে কেন হাসান ফেরদৌস সাহেব চীনকে একমাত্র খারাপ দেশ হিসাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করছেন। কেন তিনি দেশগুলোকে শুধু চীনের ব্যাপারে সতর্ক করার চেষ্টা করছেন, যেন বাংলাদেশের মতো অন্য দেশগুলো কে কোন খেলা খেলছে তা দেখতে পায় না এবং বুঝতে সক্ষম না এবং তারা এই সবচেয়ে শক্তিশালী দুই খেলোয়াড়ের সাথে খেলে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে জানে না। হাসান সাহেব কি ভাবছেন যে তিনি আমাদের এখনও বোকা বানাতে পারবেন।

আজ এশিয়ান, আফ্রিকান এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং মনোযোগী। তারা জানে তাদের দেশ এবং তাদের জনগণের জন্য কোনটা ভালো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপ বা চীন তাদের আগের মত বল প্রয়গ করে আর বোকা বানাতে পারছে না। তারা তাদের নিজস্ব স্বাধীন মতামত ও সার্বভৌম নীতি গ্রহণ করতে শুরু করেছে। তারা শিখেছে কিভাবে ভূ-রাজনীতি খেলতে হয় এবং প্রতিটি দেশ থেকে সর্বাধিক লাভ নেওয়া যেতে পারে। অন্যদের উপর একক কোন দেশের আধিপত্য আগামি দিনের নতুন বিশ্বব্যবস্থা হতে যাচ্ছে না। দুঃখের বিষয় আমি দেখছি অনেক বাংলাদেশী মিডিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশের প্রভাব বা অর্থ লাভ করার জন্য তাদের খেলা খেলছে এবং চীন বিরোধী মনোভাব তৈরি করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ অনেক সংগ্রাম কাটিয়ে উঠতে পেরেছে (যদিও অনেক শক্তিশালী দেশ এখনও বাজে খেলা খেলছে), এর পররাষ্ট্র নীতি পরিপক্ক হয়েছে, নেতৃত্ব এখন জানে দেশের জন্য সবচেয়ে কী ভালো। কেউ এখনও চেষ্টা করতে পারে তবে চাপ দিয়ে বোকা বানানো বা মাথানত করা এখন আর সহজ নয়। শেষ পর্যন্ত আমি একমত জনাব হাসান ফেরদৌস সাহেবের সাথে, তিনি সঠিক বলেছেন, “কিছু লোককে কিছু দিনের জন্য বোকা বানানো হয়ত যায়, কিন্তু প্রতিদিন সব মানুষকে বোকা বানানো যায় না”। চীন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশ বা অন্য কোন দেশ আজ সবাইকে আর বোকা বানাতে পারবে না। বিশ্ব এবং দেশগুলি তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে এখন আরও সচেতন। বিশ্ব এক মেরু বিশ্ব থেকে বহু মেরু জগতে অগ্রসর হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের একক পরাশক্তি সেই সামনে এগিয়ে যাওয়া থামানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে এবং করবে। ভয় না পেয়ে, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

 

 

Prof Monir Islam, MBBS, FRCOG, MPH

Senior Specialist

International Centre for Migration, Health and Development

Former Senior Specialist, Maternal and Newborn Health 

Liverpool School of Tropical Medicine, Liverpool, UK

Former WHO Director and Country Representative to Thailand and Namibia



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন


Thumbnail

১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার।  জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?

১৯৯৫ সালে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেই, ১৭তম বিসিএস। জীবনে একবারই এই পরীক্ষা দেই। উত্তীর্ণ হই। সাড়ে আট বছর চাকুরী করেছি, ছেড়েও দিয়েছি । সে অন্য প্রসঙ্গ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ল্যাপটপ কি ? অপশন ছিল- ছোট কুকুর, পর্বতারোহন সামগ্রী, বাদ্যযন্ত্র ও ছোট কম্পিউটার। উত্তর কি দিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে যে, আমি উত্তরের জায়গায় ছোট কম্পিউটারে টিক দেইনি। জীবনে যে জিনিসের নামই শুনিনি তাতে টিক দেই কেমনে ? সেকালের কোন গাইড বইতে এ ধরণের কোন প্রশ্ন বা তার উত্তর নেই বলে শুনেছি। পরীক্ষার্থীদের প্রায় ৯৯ ভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। গাইড পড়ে এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যারা আধুনিক প্রযুক্তি বা অনাগত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যান ধারণা রাখে তারা সঠিক উত্তর দিয়েছিল।

ঘটনাটি মাথায় এলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখে। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী হুড়োহুড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঢুকছে। শুনলাম তারা আসন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিবে। ভিডিওটি আবার দেখার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করলাম- 'ঢাবি লাইব্রেরিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়'। সেখানে দেখি শত শত খবর। প্রতি বছর নাকি এমনটি হয়। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুড়োহুড়ি। পরীক্ষার আগে নাকি সেখানে এমন যুদ্ধ চলে। বিসিএস কি দু এক মাস বা দু এক বছরের প্রস্তুতির ব্যাপার ? একবার পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার মতে, এর জন্য সমগ্র শিক্ষা জীবন ধরে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। আমার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।

ছোট কাল থেকে নিয়মিত অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া প্রয়োজন। জগৎ সংসার, দেশ বিদেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, খেলাধুলা বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা দরকার। কোন একটি দেশি বা বিশ্ব ইভেন্ট চলছে। সেটি চলাকালে দৈনন্দিন খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি ওই ইভেন্টের অতীত জেনে নিলেন। কবে থেকে ইভেন্টটি চলছে, কোথায় সেটি শুরু হয়েছিল, সেটি জেনে নিলেন। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লে বা টিভি সংবাদ দেখলে সেগুলি আপনা আপনি জেনে যাবেন।

তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমি নিয়েছি এক সপ্তাহের। তাও ইন্টার্নি চলাকালে ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। আপনি এর জন্য সর্বোচ্চ এক মাস বরাদ্ধ রাখতে পারেন। বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস অংশে কিছু সাল মনের মধ্যে গেঁথে নেয়ার জন্য গাইড বইটি একটু চোখ বুলাতে পারেন। যে সব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো একটু দেখতে পারেন। অংকের ফর্মুলা গুলো একটু ঝালাই করে নিতে পারেন। সমসাময়িক বিশ্ব বিষয়ে অনেকের দুর্বলতা থাকে। সংবাদপত্রের এ অংশটুকু প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ অধ্যায়টিও দেখে নিতে পারেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে যদি এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার দুর্বলতা অনেক। বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকে আপনার প্রস্তুতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মতিউর রহমানই প্রথম আলো বিক্রির প্রধান বাঁধা?


Thumbnail

দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

শুধু কর্ণফুলী গ্রুপই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করতে স্কয়ার গ্রুপের সাথেও বেশ অগ্রসর হয়েছিলেন মতিউর রহমান। এর মধ্যে বসুন্ধারাসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমার জানা মতে সর্বশেষ এস আলম গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য বেশ অগ্রসর হয়েছে এবং তারাই এখন সবচেয়ে অগ্রগামী। কিন্তু এস আলম গ্রুপ কেনার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। কারণ উনি দেখছেন যে, একমাত্র কর্ণফুলী ছাড়া অন্য যে কোন গ্রুপে গেলে তার সম্পাদক পদের নিশ্চয়তা নেই।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, যারাই ‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করুক না কেন, তারা মতিউর রহমানকে প্রথম দিকে রাখলেও পরবর্তীতে তারা পরিবর্তন করবে। যদি প্রথম আলোতে কেউ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন, আমার ধারণা আনিসুল হক আসতে পারেন। কারণ আনিসুল হক সবার কাছে যেমন সম্মানিত তেমনি জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি যদি এস আলম গ্রুপ কিনে নেয় তাহলে প্রধান বাঁধা হবে মতিউর রহমান। কিন্তু তার বাঁধা টিকবে না। কারণ কোন প্রতিষ্ঠানের যদি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ‘প্রথম আলো’ নিজেদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। সাধারণত যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা দেখবে। সরাসরি না হলেও প্রথম আলোর মতিউর রহমান এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন। যদিও মতিউর রহমান বিভিন্নিভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে, এতে উনার কোন আগ্রহ নেই। 

তবে এর আগে থেকেই কিছু গণমাধ্যমে এসেছিল যে, মতিউর রহমন ও ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম এই দ্বন্দ্বে জড়িত রয়েছেন। যদিও বিষয়টি তাদের মধ্যকার বিষয়। কিন্তু এখন প্রথম আলো বিক্রিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মতিউর রহমান। অচিরেই এই বাঁধা অতিক্রম করে ‘প্রথম আলো’ বিক্রি হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি কিনবে এস আলম। কারণ এস আলম একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসাতেই যুক্ত হচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন না। বরং সফল হচ্ছেন।

‘প্রথম আলোর’ কেনার জন্য দেশে যেসব কর্পোরেট হাউজগুলো আছে তাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে এক একজনের আগ্রহ একেক কারণে। কেউ চান প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞ জনবলের কারণে, আবার কিছু কর্পোরেট হাউজের ইচ্ছে হলো ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে আনা। এসব বিভিন্ন কারণে আগ্রহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে আমার বিশ্বাস প্রথম আলো বিক্রিতে যে প্রধান বাঁধা মতিউর রহমান। তার বাঁধা টিকবে না। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি একটা কর্পোরেট হাউজের হাতেই যাবে। আমার ধারণা মতে, এস আলম গ্রুপই প্রথম আলোকে কিনতে সক্ষম হবে। আমরা হয়ত কয়েক মাসের মধ্যেই দেখব যে, প্রথম আলোর নতুন মালিক হিসেবে আরেকটি কর্পোরেট হাউজ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোতে বর্তমানে যারা অভিজ্ঞ সাংবাদিক আছেন যারা শিক্ষিত তাদেরকে ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ লোকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

আমার ধারণা, এ পর্যায়ে প্রথম আলো বিক্রি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এমনকি মতিউর রহমানের চেষ্টাও সফল হবে না। তবে আমার সবসময়ের আকাঙ্খা, সংবাদপত্রের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরি যেন অবশ্যই নিশ্চয়তা থাকে। কারণ এরা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিজেদেরকে একটা পর্যায়ে এনেছেন আর এদের চাকরি অবশ্যই থাকতে হবে এবং তাদের যে মেধা, সেই মেধা থেকে জাতি যেন বঞ্চিত না হয়।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন