সম্প্রতি পত্রিকান্তরে জানা গেল রাজধানীর ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে বিক্রি হচ্ছে বিশেষ ধরনের সোনার প্রলেপ দেওয়া জিলাপি। প্রতি কেজি জিলাপির দাম ২০ হাজার টাকা! বিশেষ এই জিলাপি ২৪ ক্যারেটের সোনা দিয়ে মোড়ানো। সেকারণেই এত দাম। রমজান উপলক্ষে এই জিলাপি তৈরি করেছে ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেল কর্তৃপক্ষ।
সাধারণ গ্রাহকদের জন্য প্রতি কেজি জিলাপিতে ২৪ ক্যারেটের খাবার উপযোগী সোনার ২০ থেকে ২২টি লিফ বা পাতলা পাত থাকবে। একজন গ্রাহক ন্যূনতম ২৫০ গ্রাম জিলাপি কিনতে পারবেন। সেক্ষেত্রে দাম পড়বে পাঁচ হাজার টাকা।
বিত্তবানদের জন্যে এই মিষ্টি খাবারের সংবাদে আমাদের বিচলিত হবার কিছু নেই বটে, কিন্তু একই সংবাদে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে যেসব বিষয় নিয়ে আমাদের বোধোদয় হওয়া দরকার। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার মহাব্যবস্থাপক অশ্বিনী নায়ার ওই পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, খাদ্য ও পানীয় এখন আর শুধু খাওয়ার বিষয় নয়। মানুষ এখন আর শুধু নামেই বিলাসিতা পেতে চায়না। তারা বিলাসী পণ্যের অনন্য স্বাদ ও অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে চায়। ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেল এ ধরনের অভিজ্ঞতা দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশি গ্রাহকদের সেই বিলাসিতা উপভোগের সুযোগ দিতে চায়। সেজন্যই বিশেষ এ জিলাপি বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’বাংলাদেশি গ্রাহকদের এই বিলাসিতা নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কারণ অবশ্যই আছে কারণ এই বিলাসিতা বাস্তব না হলে সেই হোটেলে এই বস্তু তৈরি হতোনা বা বিক্রি হতোনা। একই সংবাদে উল্লেখ আছে, ‘গত বছরের জুলাই মাসে দেশে সোনায় মোড়ানো আইসক্রিম বিক্রির খবর বেশ সাড়া ফেলেছিল। রাজধানীর বনানীর পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা তাদের ১৯তম বর্ষপূর্তিতে বিশেষ ওই আইসক্রিম বিক্রি করে। ২৪ ক্যারেটের খাওয়ার যোগ্য সোনা দিয়ে তৈরি ওই আইসক্রিমের দাম ছিল ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা।সেসময় মাত্র ২৪ ঘণ্টায় অভাবনীয় সাড়া পায় সারিনা হোটেল কর্তৃপক্ষ। অনেক ফরমাশ আসতে থাকায় তারা এক পর্যায়ে সেই লাখটাকার সোনার আইসক্রিম বিক্রির অর্ডার নেওয়া বন্ধ রাখে”।
আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ফলে ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে একথা যেমন সত্যি কিন্তু বিপরীত চিত্রটি কি? এই সমাজ ব্যবস্থায় এই বিষময় বৈষম্য কেমন করে তৈরি হলো? এই বিলাসিতা আমাদের কখন মানায়? আমাদের কি সেই যোগ্যতা আদৌ তৈরি হয়েছে? সাংস্কৃতিক ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ নিয়ে আমরা এখন বিতর্ক করছি কিন্তু কুড়ি হাজার টাকায় সোনার জিলাপি কেনা আমাদের আর একটি ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ কারণ কোন খাবার আমাদের রুচিতে‘বিলাসিতা’শব্দটি যুক্ত করে দেবেনা সেটা বুঝবার‘সাংস্কৃতিক শিক্ষা’আমাদের নেই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বিত্তবান সমাজের কাছে আহবান করেন যেন তাঁরা সমাজের নানা উপকারে এগিয়ে আসেন। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবায় যেন তাঁরা সহযোগিতা করেন। সতেরো কোটি মানুষের এই দেশে ক্যান্সার চিকিৎসার একটি মাত্র সরকারী হাসপাতাল আছে তা-ও ঢাকায়। সারাদেশ থেকে সরকারী সুবিধায় চিকিৎসা সেবা পেতে রোগীদের ঢাকায় ছুটে আসতে হয়। আর যে কয়েকটি বেসরকারী হাসপাতাল আছে সেগুলোর খরচ সাধারণের আওতার বাইরে। সরকার এখন চেষ্টা করছে প্রতিটি বিভাগে একটি করে ক্যান্সার ইউনিট প্রতিষ্ঠা করার। কিন্তু সবই কি সরকার করবে?
আজ থেকে সাত বছর আগে, তাঁরও আগের সাত বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে রামপালের গ্রামে ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসা সেবার আয়োজন শুরু করি। পরে সরকার আমাদের ৮০ভাগ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে কিন্তু মাত্র ২০ ভাগ টাকা আমরা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছি। দেশের যারা বিত্তবান বলে পরিচিত এমন কোন নামিদামি মানুষ/প্রতিষ্ঠান নেই যাদের কাছে হাত পাতিনি, এমন একটি কঠিন উদ্যোগের জন্যে শুধু বাহবা পাই, কিন্তু একটি টাকা দিয়ে কেউ সাহায্য করেনা। কিন্তু তারা কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে এক কেজি জিলাপি কিনে খেতে বা এক লাখ টাকা দিয়ে সোনার আইসক্রিম কিনে খেতে সামান্য লজ্জাবোধ করেন না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহসী উদ্যোগে এই দেশের মানুষ পদ্মাসেতু উপহার পেয়েছে, মুজিববর্ষে ২,৩৭,৮৩১জন ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবার নিজেদের ঘর ও জমির মালিকানা-সহ ঠিকানা পেয়েছে, ২১১ টি উপজেলা শতভাগ ভূমিহীন-গৃহহীন পুনর্বাসন নিশ্চিত হয়েছে কিন্তু আমরা শুনিনি কোন বিত্তবান তার বিলাসী টাকার সামান্য অর্থ পদ্মাসেতুর নির্মাণে বা আশ্রয়ণের প্রকল্পে খরচের জন্যে দান করেছেন। সবই হয়েছে সরকারের নিজস্ব উদ্যোগ, বুদ্ধি ও উপায়ে। এমনকি পদ্মা সেতুর অর্থসংগ্রহের জন্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোন সারচার্জ পর্যন্ত জনগণের প্রতি আরোপ করা হয়নি। কিন্তু ওই ২১১ উপজেলার যারা বিত্তবান, দেশে-বিদেশে ‘বিলাসী’ জীবনযাপন করেন তাদের কেউ কোন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যারা দিনরাত অবিরাম পরিশ্রম করে এই সাফল্য এনে দিয়েছেন বা ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্প যারা বাস্তবায়ন করেছেন কাউকে একলাইন চিঠি লিখে ধন্যবাদ দিয়েছেন এমন কোন সংবাদ আমরা পাইনি। ওইসব বিত্তবানদের প্রত্যেকের গ্রাম আছে, ফেলে আসা স্কুল আছে তাঁরা তাঁদের ওই গ্রামের স্কুলে মেয়েদের জন্যে টয়লেট আছে কী না সেই খবরটুকু পর্যন্ত রাখেননা। তাঁদের প্রত্যেকে যদি মাসে ১০০টাকা করেও উপজেলা পরিষদে দান করেন সেই টাকায় কত মানুষের উপকার হতে পারে সেটা বুঝবার ‘যোগ্যতার সংস্কৃতি’ তাঁদের নেই বা সেটা তাঁরা অর্জন করতে পারেননি।
সেই যোগ্যতা অর্জন না করে ‘বিলাসিতার জিলাপি’ খাওয়া অপরাধের সামিল। অনেক বিত্তবানের গ্রামে অনেক মানুষ আছেন যারা তাঁদের বৃদ্ধ বাবা-মায়েদের জটিল চিকিৎসার খরচ যোগান দিতে পারেননা। কোন বিত্তবান এইসব পরিবারের পাশে না দাঁড়িয়ে লাখ টাকা আইসক্রিমের দোকানে লাইন দিয়ে দাঁড়ান, এটা যে মানা যায়না বা ধিক্কারজনক সেটা তাদের বুঝতে হবে। আমাদের কাছে পরিবার, সমাজ বা নিজ গ্রামের জন্যে যথা কর্তব্য পালননা করবার ও এরকম দায়িত্বহীন আচরণের বহু উদাহরণ আছে যা উপ্সথাপন করলে ‘বিত্তবানেরা’ এই দেশে মুখ দেখাতে পারবেন না।
সব কাজ সরকারকেই করে দিতে হবে সে অবিবেচক চিন্তা ও ভুল প্রত্যাশা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। নাহয় কুড়ি হাজার টাকার জিলাপি নিয়ে আমাদের একদিন প্রহসন করবে এই সমাজই, তখন আমরা উন্নয়ন ও পরিবর্তনের মূল্য অনুধাবন করতে পারবোনা বা সে সক্ষমতা হারিয়ে ফেলবো। অনেক পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় এইরকম ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের মানুষকে সেসব সূত্র থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘আমি নিজের সমাজের জন্যে কী করেছি’ তার প্রমাণ দিতে হবে। নাহয় আমাদের জাগ্রত বিবেকের দংশনে আমরা ক্রমশঃ ভ্রষ্টজীবনের দিকে যেতে থাকবো।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।