দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে আসছে। সেই দাবিকে কেন্দ্র করে সামান্য হলেও উত্তেজনা বাড়ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন ছিল বিধায় আমি এই রকম একটি ব্যবস্থা পক্ষে কথা বলেছি, দাবি তুলেছি এমনকি জনতার মঞ্চর গণজামায়োতে হাজির হয়েছি।কিন্তু একটি পর্যায়ে আমার উপলব্ধি হয়েছে এই পদ্ধতিও ত্রুটিপূর্ণ।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিনমাসের পরিবর্তে প্রায় ২ বছর ক্ষমতায় থেকেছে। এবং সেখানে পেছনের শক্তি হিসেবে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে সংসদে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সকল পক্ষ থেকে আক্রমণ করা হয়। সেই সুযোগে বাংলাদেশের ইতিহাসে ২৫ ফেব্রুয়ারী ৫৭ সামরিক অফিসারকে হত্যা করেদুর্বৃর্ত্তরা ।এতবড় একটি সর্বনাশী ঘটনার পর আমার পক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সমর্থন সম্ভব নয়।কারণ যারা হারবে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তারা আবার সর্বনাশী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে না সেই গ্যারান্টি কি আছে?
আজ পাকিস্তানে কি দেখছি? আজ বার্মাতে কি হচ্ছে? সেনাবাহিনী দেশের গর্ব ও আমাদের সম্পদ। সেই সেনাবাহিনীর একটি অফিসার এর জীবন আমাদের কতবড় তা বুঝতে ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধের দিন গুলোতে ফিরে যেতে হবে। সেদিন আমরা অপেক্ষায় থাকতাম বিজয়ের সুসংবাদের জন্য। সেনাবাহিনীকে দেশকে রক্ষার কথা শেখানোহয়। আর আমাদের রাজনীতিবিদরা দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চান। কিন্তু নির্বাচনে হেরে রাজনীতিবিদরা প্রথমে সেনাবাহিনীকে দোষী করেন।তারা নিজেদের ভুল বা দোষস্বীকারকরেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক সেনাবাহিনীর অনেক ক্ষতি করেছে।আমি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর কোন ক্ষতি চাইতে পারি না।
রাজনীতিবিদদের উপর মানুষের শ্রদ্ধাবোধ দিন দিন অধোগামী। আজ ডোনাল্ড ট্রাম্প এর বিচার হচ্ছে। তিনি ক্ষমতার জন্য যুক্তরাষ্টের পার্লামেন্টকে যেভাবে আক্রমণ করেছেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সেই দেশের সুনামকে অনেক নিচের নিয়ে গেছে। সেখানকার নির্বাচনে রিগিং হয়েছে সেই অভিযোগ আমরা পাচ্ছি।
নির্বাচন ও ভোটেরসঙ্গে মনের ইচ্ছার সম্পর্ক। এবং সেই ইচ্ছাটা ভোট দেয়ার সময় বদলে যেতে পারে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুগে যুগে যারা চালাক তারাই রাজনীতি করেছেন। সৎ মানুষের জন্য রাজনীতি নয়। সততা আজকের জামানায় একটি অযোগ্যতা।যিনি চুরি করতে পারবেন যেন তাকেই মানুষ নির্বাচন করে এরকম একটি শ্রুতি আছেবলে কথাটা লিখছি।
আমি বঙ্গবন্ধু বা দেশ রত্ন শেখ হাসিনার জন্য জীবন দিলেও আমি যদি সততার পথে থাকি কিংবা ঘুরাঘুরি না করি আমার অবদান বা সততার মূল্য নেই-মানে আমার জন্য কোনো পদ নেই বলে অনেকে রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন । তেমনি ভোটাররা সেই পর্যন্ত নিজের স্বার্থকে বিবেচনা করে। ভোট পরিচালনায় যারা থাকেন তারা তাদের স্বার্থ বিবেচনা করেন। আর এসব কারণে ভালো প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেন না কিংবা মনোনয়ন পাননা। অসংখ্য বিষয় এখানে কাজ করে। সেই অসংখ্য বিষয় এর মাঝে নিরপেক্ষ সরকার কি পারে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে ?
আমাদের চিন্তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্ষা করা। আমরা দেখছি সেই মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের সন্তানদের অধিকার কেড়ে নিতে একটি মহল ক্রিয়াশীল। সব দলেই ভালো মন্দ লোক আছে বলে আমরাজানি। আমরা চাইনা এমন একটি সরকার আসুক যারা আবার বাংলাদেশেকে মিনি পাকিস্তান বানাতে চায়। আমরা সকলকে নিয়ে চলতে চাই। সেজন্য আমি সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে দূরে রাখতে যেকোন উপায় অবলম্বন করতে চাই। আর সেটা করতে গেলে আমার পক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সমর্থন সম্ভব হয় না। আবার আমি এটাও মেনে নিতে পারছিনা যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার। সুতরাং , আমি একটি বিপদজনক অবস্থানে আছি। আমি চাইনা বিডিআর ঘটনার মতো সেনাবাহিনীকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে কেউ উপস্থাপন করুক। আমাদের দলগুলোর কি সাহস আছে দল থেকে সন্ত্রাসীদেরকে বের করে দেয়ার? তারা কি দুর্নীতিবাজদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে? তারা কি তাদের ভুলগুলো স্বীকার করছে?
জন-জীবন এখন এমন পর্যায়ে যে তারা বাঁচার জন্য আকু-পাকু করছে ২০১৮ সালে স্কুল শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের আন্দোলন করেছিল। পাঁচ বছর পর আমরা কি সেই আগের মতো অবস্থা দেখছি না ? তাহলে আমাদের উন্নয়ন কোথায় হলো ? আর এই প্রশ্ন করলে আমি হয়ে যাই উন্নয়নের শত্রু !
সচিবালয় , আদালত বা অন্য কোনো অফিসে যাবেন আপনাকে ফাইলের পেছনে ছুটতে হবে। সেখানে ফাইল থেকে কাগজ হারিয়ে যাবে। আবার ডিজিটাল আবেদন করবেন সেটা দেখার সময় নেই যারা পদে আছেন। আমি অনেক জায়গায় অনেক উচ্চপদের মানুষের কাছে আবেদন করি। একজন সিনিয়র অধ্যাপক দিনের পর দিন ঘুরে যেখানে বিচার পায় না সেখানে আমরা কি ভালো আশা করতে পারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে?
আসলে আমাদেরকে মানে জনগণকে দাসের মতো বিবেচনা করা হয়। দিনদিন আমরা নতুন নতুন দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হচ্ছি। আমাদের স্বাধীনতা বলতে আর কিছুই থাকছে না। আমাদেরকে গ্রাস করছে পুঁজিবাদ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি আমাদের সেই দাসত্বের বন্ধ মুক্ত করতে পারবে ? আজ সংবাদ পত্রে মালিক কে , আজ কারা সংসদে আছেন ? তারা কি করছেন এবং যারা বিরোধী রাজনীতি করছেন তাদের অতীত ইতিহাস কি? মানুষ যখন এসব দেখে তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ধারণা অর্থহীন হয়ে পড়ে।
আসল জায়গায় কেউই হাত দিতে চায় না। সামাজিক বৈষম্য , ন্যায় বিচারের অভাবকে আমরা গুরুত্বহীন মনে করি। আমরা নিপীড়ককে তোষামোদ করি বাগুরুত্ব দেই এবং মিথ্যে আফসোস করি নিপীড়িতর জন্য।
মানুষ পরিবর্তন চায় এটা সত্য। তারা স্বাধীনতাকে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে চায়, তারা প্রাণ খুলে হাসতে চায়। সেজন্য তাদের ধনী হওয়ার প্ৰয়োজন নেই। ওই যে কথায় আছে গরিবের ঘরের রানী হওয়া আর রাজ্ প্রাসাদের দাসী থেকে ভালো। অর্থাৎ স্বাধীনতা হচ্ছে মানুষের সর্বোচ্চ চাওয়া। সেটা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উভয় প্রকার হয়ে থাকে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এখনও শৃংখলিত। আর সেজন্য প্রয়োজন আমাদের ঐক্য।
আমরা উভয়দল যেভাবে বিদেশিদের সন্তুতি অর্জনে সময় ব্যয় করছি সেটা না করে আমাদের উচিত নিজেদের মধ্যে কথা বলা। আমরা আগে সিদ্ধান্ত নেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলে অতীতের মতো নির্বাচনে হেরে গেলে সেনাবাহিনীকে দায়ী করবো কি-না ? ১৯৭৫ সালে সেনাবাহিনীর একটি অংশ নির্বাচিত সরকার উৎখাত করেছিল এবং তারই ধারাবাহিকতায় আমরা অসংখ্য অভ্যুর্থান হতে দেখেছি। দেশের প্ৰয়োজনে ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে এসেছিলো। সেটাকে কাজে লাগিয়ে সরকার যে সাফল্য প্রদর্শন করেছে সেটার মর্যাদা দিতে একটি ভালো নির্বাচন দেয়া সরকারের দায়। সরকারকে আরও স্পেস বিরোধীদেরকে দিতে হবে। তাতে করে একটি সফল নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে।
যেকোনো ভুল আমাদের আগামী দিনগুলোকে অন্ধকারাছন্ন করে দিতে পারে। জনগণ এখন কষ্টে আছে। তারা আর ওই নির্বাচনী সরকার নিয়ে রাজনৈতিক বাহাস শুনতে চায় না। তারা চায় শান্তি। রাজনৌতিক বাহাসের সুবাদের দুষ্ট লোকেরা আমাদের শান্তি কেড়ে নিচ্ছে। দ্রবমূল্য বাড়ছে। বাড়ছে মানুষের হাহাকার। দৌরাত্ম বাড়ছে আমলাতন্ত্রের।
আমলারা নিজেদেরকে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি। অর্থাৎ তিনি সাক্ষাৎ ভগবান। এভাবে তারা জনগণকে দাসে পরিণত করছে এবং জনসেবা থেকে দূরত্ব বজায় রেখে পদলেহনকে সমাজ কালচারে পরিণত করছে।স্যার না বললে ইনারাকাজ করেন না বা ক্ষিপ্ত হন। আমি আবারো বলছি বিরোধীদলকে সুযোগ দিন জাতীয় স্বার্থে। তারাও এদেশের সন্তান। তাদের ভুল থাকতে পারে - সেটা সংশোধনের সুযোগ জনগণ দেবে কি না সেটা একটি সুষ্ঠু , অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়েহোক। সেজন্য যদি কিছুটা ছাড় সরকারকে দিতে হয় সেটা জাতির কল্যাণে করা যেতে পারে। তবে আমরা চাই না পেট্রোল বোমা কিংবা জঙ্গি আচরণ আবার আমাদের সমাজে ফিরে আসুক। সব শেষ কথা মানুষ কষ্টে আছে- রাজনীতিবিদরা সেদিকে মনোযোগ দিবেন কি?
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।