তখন ছিল স্বৈরাচারী জিয়ার শাসন আমল। আমি তখন মেডিকেল কলেজের ছাত্র। আমরা কলেজের অধ্যক্ষের অনৈতিক আচরণের কারনে তার অপসারণের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলাম। এক কলেজ ছাত্রের পরিবারের একজন সদস্য কলেজের অধ্যক্ষের বাসায় ফোন করে (যেহেতু হোস্টেলে কোনো টেলিফোনের সুবিধা ছিল না) তাকে অনুরোধ করে ছাত্রটিকে তার বাবার মৃত্যুর খবর জানাতে এবং তাকে অবিলম্বে বাড়িতে আসতে বলার অনুরোধ করার জন্য। অধ্যক্ষ গভীর রাতে তাকে ফোন করে বিরক্ত করার জন্য সেই পরিবারের লোকটির সাথে খুব খারাপ আচরণ করেন এবং তিনি ছাত্রকে কিছু জানাননি। ছাত্রটি কয়েকদিন পরে তার বাবার মৃত্যুর খবরের তথ্য পায় এবং তার বাবাকে শেষ বারের মত বিদায় জানাতে সময় মত বাড়ি যেতে পারেনি। ধর্মঘট চলতে থাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী আমাদের তার সাথ আলোচনা করার জন্য ঢাকায় আসতে বলেন। আমি প্রতিনিধিদলের একজন ছিলাম। ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরী তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ডাঃ মতিন উপমন্ত্রী ছিলেন। সচিবালয়ে আমরা মন্ত্রীর সাথে আলোচনা করার সময় আমাদের দাবি সম্পর্কে মন্ত্রীকে অবহিত করি। মন্ত্রী আমাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং আমাদের দাবিতে প্রায় একমত হন এবং আমাদের বললেন স্বাস্থ্য সচিবের সাথে দেখা করতে। এরপর আমরা স্বাস্থ্য সচিবের দপ্তরে যাই। অফিসের বাইরে আনেক সময় অপেক্ষা করার পর সচিব আমাদের ভিতরে ডাকলেন। তিনি আমাদের বসতে বললেন এবং ইংরেজিতে বললেন, "হ্যাঁ, তরুণরা, আমি তোমাদের জন্য কি করতে পারি (Young men what can I do for you all)"? আমরা তাকে মন্ত্রীর সাথে আমাদের আলোচনার বিষয়ে অবহিত করি এবং আমাদের চাহিদার তালিকা তাকে দেই। সচিব তখন জিজ্ঞাসা করলেন, “মন্ত্রী কি এ বিষয়ে তার মতামতের কোনো কাগজে স্বাক্ষর করেছেন?”। আমাদের কাছে এমন কোনো কাগজ ছিল না। তারপর সেক্রেটারি শান্তভাবে আমাদের মুখে উপর তার বুড়ো আঙুল নাড়তে নাড়তে বললেন: “তরুণরা, তোমরা তোমাদের কলেজে ফিরে যাও, লেখা পড়া করো, কারণ আমি কোনো স্বাক্ষরিত কাগজ ছাড়া কোনো ব্যবস্থা নেব না”। ওখানেই আমাদের আলোচনার সমাপ্তি এবং তিনি আমাদেরকে তার অফিস ছেড়ে যেতে বললেন। আমরা বুঝতে পারলাম রাজনীতিবিদ বা মন্ত্রীরা অনেক কিছু বলতে পারেন বা একমত হতে পারেন তবে কেবল প্রশাসনই তা বাস্তবে কার্যকর করতে পরেন। হাড়ে হাড়ে বুঝলাম, রাজনীতিবিদ বা মন্ত্রীদের কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই। আমি এখন তাই লক্ষ্য করছি, প্রধানমন্ত্রী দেশ বা জনগণের স্বার্থে অনেক ভালো কিছু করার নির্দেশ দেন, কিন্তু প্রশাসন বা আমলারা হয় প্রক্রিয়াটি নানাভাবে বিলম্বিত করে বা অনুসরণ করে না। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে একা সময়মতো তার নির্দেশাবলীর তত্ত্বাবধান বা পর্যবেক্ষণ করা মানবিকভাবে সম্ভব নয়। বিশ্বের প্রতিটি দেশে তাই হচ্ছে। অন্য কথায় সহজ ভাবে বলা যায় সত্যিকার অর্থে আমলারাই দেশ চালান। আমরা স্বাধীনতার পর আরো দেখেছি তিন তিনবার বন্দুকের নলের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে।
আমার নিবন্ধের আসল বিষয়ে ফিরে আসা যাক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, নিরাপত্তা আর প্রশাসনিক ক্যাডার, ব্যবসায়ী মালিক (বা তাদের পরিবারের সদস্যদের) যারা আগামী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার সাহস করবে বা করবে তাদের ভিসা প্রদান বা অস্বীকার করার জন্য কিছু ধারা আরোপ করেছে বা হুমকি দিয়েছে। বিশ্বের একটি সার্বভৌম ক্ষমতাধর দেশ হিসেবে আমেরিকার অধিকার আছে তারা কাকে ভিসা দিতে চায় বা না দিতে চায়। এতে কারো কোনো আপত্তি নেই বরং আমেরিকার এই শুভ ইচ্ছাকে স্বাগত জানানো উচিত। কিন্তু তবুও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে কূটনৈতিক রীতিনীতির বিরুদ্ধে তারা ক্রমাগত উচ্চস্বরে কথা বলে আসছে। তারা নির্বাচন কমিশনেও গেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে তার সফরের সময় বারবার বলেছেন যে তিনি নিশ্চিত করবেন ২০২৩/২৪ সালের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এবং তিনি ভোটের মাধ্যমে জনগণ যেন তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে তা নিশ্চিত করবেন। তাহলে নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো? কেন হঠাৎ করে বাংলাদেশ? বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য কেন এটি প্রযোজ্য করা নয়? মিশরের সামরিক শাসক দ্বারা নির্বাচনের সময়ের আগে তো আমরা সেই হুমকি দেখিনি? ১৯৭৫ সালের “হা” “না” নির্বাচন বা পরবর্তী নির্বাচনের আগে কেন তা আরোপ করা হলো না? কেউ কেউ হয়তো বলবেন, আমেরিকা বিশ্বাস করে যে গত দুটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, সেজন্য তারা এই হুমকি দিয়ে আমাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে? সত্যিই কি তাই??!! এর মানে কি বাংলাদেশের নাগরিকদের নিজেদের নির্বাচন পরিচালনার জন্য অন্যদের নির্দেশ বা হুমকির প্রয়োজন? নির্বাচনের সুষ্ঠুতা পর্যবেক্ষণে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে কোন বাঁধা নেই, তবে কেন ভিসাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে একটি সার্বভৌম দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে? আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং এখনও অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল তাই আমরা কি আজ এই হুমকির সম্মুখীন? আমরা একবার ঔপনিবেশিক ক্ষমতার অধীনে ছিলাম প্রতিবারই কি আমাদের তা স্মরণ করিয়ে দিতে হবে?
বাংলাদেশের কত শতাংশ এবং কাদের আমেরিকার ভিসা প্রয়োজন? সর্বোচ্চ ১-২% বাংলাদেশিদের? তাদের মধ্যে কত শতাংশ রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের কর্মকর্তা বা ব্যবসার মালিক? আমরা জানি অনেক উচ্চ বর্তমান বা অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জাতীয় বিভিন্ন নিরাপত্তার কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়িক ব্যক্তিদের বাড়ি, গ্রিন কার্ড, বিশাল ব্যাংক আমানত আমেরিকায় আছে এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা সেখানে শিক্ষার জন্য যান বা সেখানে বসবাস করছেন। বা যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করেন কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে বার বার যান বা থাকেন এবং সেখানে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করেন। ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক দলগুলোকে বিপুল পরিমাণ অর্থ অনুদান প্রদান করে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাদের ভবিষ্যতের জন্য আরও প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে যেতে চান। আমেরিকান ভিসা এই লোকদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, যারা আসলে দেশ চালান বা জাতীয় অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তা বজায় রাখেন। বা রাজনৈতিক এজেন্ডায় প্রভাব বিস্তার করেন। অনেক শাসক বা প্রাক্তন রাজনীতিবিদদেরও একই কারণে আমেরিকান ভিসা প্রয়োজন। ভিসা বিধিনিষেধের এই অস্ত্রের কারণে এই দলগুলো সবচেয়ে বেশি হুমকির সম্মুখীন। অন্যান্য অনেক বাংলাদেশিরা সেখানে উন্নত জীবন ও আয়ের জন্য আছেন। তারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত নন এবং তাদের এই হুমকির ভয় পাওয়ার কারণ নেই। অন্যদিকে ৯৬-৯৪% বাংলাদেশি মানুষ আমেরিকান ভিসা নিয়ে চিন্তা করেন না বা তাদের ভিসার অনুরোধ করার কোনো কারণ নেই (অনেকে এখনও উন্নত জীবন, শিক্ষা বা অর্থনৈতিক কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান এবং তাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো ক্ষমতা নেই)। তাই আমরা বলতে পারি ভিসার হুমকির কারণে ওই গুটি কিছু স্বার্থান্বেষী লোক আমেরিকার হুকুম মানতে এমনকি বাংলাদেশের স্বার্থ ও তার ভাবমূর্তি বলিদান দিতেও যা কিছু করা তাই করবে। সংবিধান অনুযায়ী এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে ২০০১ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমরা ২০০১ সালের সেই নির্বাচনের কথা ভুলে যাইনি। আরেকটা বিষয়, কাউকে ভিসা প্রত্যাখ্যান করার কারণগুলি প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয় না, তাই আমরা কখনও জানবো না কাকে এবং কী কারণে ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হবে। তাই এই ভিসার হুমকিকে যদি অস্ত্র হিসেবে না দেখা হয়, একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা বলা না হয় , আমি জানি না এটি অন্যথায় কীভাবে দেখা যেতে পারে!! গণতন্ত্র, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য সৎ ইচ্ছা আর একটি সৎ প্রচেষ্টা??!! অতীত ইতিহাস বিশ্লেষণ করে, আমরা দীর্ঘ দীর্ঘ সময়, ঘন্টার পর ঘন্টা তা নিয়ে কথা বলতে পারি!!
কিন্তু আমি লজ্জিত বোধ করি রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়া এই ভিসা বিধিনিষেধ নিয়ে নানা ভাবে ব্যবহার করে বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার এবং সম্মানকে ক্ষুণ্ন করছে দেখে। ক্ষমতাসীন দলের ব্যর্থতা বা বর্তমান সরকারকে অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য কিছু রাজনীতিবিদ, মিডিয়া এবং ব্যক্তিত্ব এই হুমকি উল্লসিতভাবে প্রচার করছেন। কিছু আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্যদের মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাড়িতে ছুটে যেতে দেখে আমিও লজ্জিত হয়েছি, কারণ তাদের জানা ছিল সেখানে নাস্তা বা রাতের খাবার বা গল্প করার জন্য ডাকা হয়নি, ভিসার সীমাবদ্ধতা ব্যাখ্যা করার বা হুমকির কথা বলার জন্য তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ চালান না, তিনি তার নিজ দেশের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাই সম্পূর্ণ সম্মানের সাথে রাষ্ট্রদূতের উচিত ছিল নিজে বা তার প্রতিনিধির প্রতিটি দলের সদর দফতরে ব্যাখ্যার জন্য যাওয়া। আমি একজন আওয়ামী লীগ সদস্য যিনি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তাকে একটি টিভি টকশোতে বলতে শুনেছি, তিনি বললেন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন কারণ তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে (যেন সাংস্কৃতিকভাবে আমরা কোনও আমন্ত্রণ অস্বীকার করার মত অভদ্র জাতী না)? বন্ধুত্বপূর্ণ ডিনারের জন্য? তিনি ভালো ভাবেই জানতেন কি আলোচনা করা হবে, তবুও কেন গেলেন সেখানে? মার্কিন রাষ্ট্রদূত গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন, মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। এটাই নিয়ম, যদি আমরা সত্যিই আমাদের নিজেদেরকে বিশ্বাস করি এবং সামান্যতম আত্মসম্মানবোধ করি। আমিও আরো অবাক হই ভিসার হুমকি নিয়ে এত কথা বলা শুনে বা তোলপার দেখে? আমরা যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবকিছু করি তাহলে আমাদের কেন মাথা ঘামাতে হবে। আমরা কি ভয় পাচ্ছি যে কেউ শাসন/শাসক পরিবর্তনের হুমকি দিচ্ছে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সুবিধার জন্য তারা যা করতে চায় তাকে তা করতে দিন। আসুন আমরা আমাদের বিষয়গুলি নিজেরাই মোকাবেলা করার সাহস করি।
আমি জানি বাংলাদেশের অর্থনীতি কয়েকটি ধনী দেশের ভালো ইচ্ছার উপর নির্ভর করে কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমাদের নতজানু হয়ে ভিক্ষা করতে হবে। স্বাধীনতার জন্য হাজার হাজার মানুষ তাদের জীবন দিয়েছিল, হাজার হাজার নাড়ীর লজ্জা হরন করা হয়েছিল। আমরা সাহসিকতার সাথে লড়াই করেছি স্বাধীনতার অর্জন করে, বুক উচু করে এবং সম্মানের সাথে বাঁচার জন্য। তাই বাংলাদেশকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে সার্বভৌম এবং সম্মানিত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ কেন আমরা দেখতে পাচ্ছি শক্তিশালী দেশগুলো, যারা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ বলেছিল বা ক্ষুধা, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বলেছিল তারা আজ বাংলাদেশে আসছে, বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলছে, সমর্থনের পাশাপাশি হুমকি প্রদান করছে, বাংলাদেশকে তাদের নিজ নিজ ক্ষমতার বৃত্তে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে? কারন আজ বাংলাদেশ আমাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে ভূ-রাজনৈতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে।? তাই তারা কি ভাবছে, প্রধানমন্ত্রী খুব স্বাধীনচেতা হয়ে গেছেন, অন্যের দ্বারা অযথা হস্তক্ষেপ এবং আধিপত্যের বিরুধে হুমকি বা বাধা হয়ে দাডিয়েছে? প্রধানমন্ত্রী একা বাংলাদেশ কে আরো এগিয়ে নিতে পারবেন না, তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে তার সম্মানিত দলীয় সদস্য, নেতা ও আমলাদের প্রয়োজন হবে। প্রয়োজন হবে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের। আসুন আত্মসম্মান বজায় রাখি এবং আমাদের নিজেদের শক্তিতে বিশ্বাস রাখি, আমেরিকান ভিসা পাই বা না পাই।
আমি স্বীকার করি অনেকেই বলবেন বিদেশে বসবাস করে অনেক কিছু বলা যায় কিন্তু ঘরে বসে তা সব সময় সহজ নয়। আমি শ্রদ্ধার সাথে বলতে চাই আমি আপনার সাথে শতভাগে একমত।
Prof Dr Quazi Monirul Islam, MBBS, MPH, FRCOG
Epidemiology Department, Prince of Songkla University, Hat Yai, Thailand
Senior Specialist, International Centre for Migration, Health and Development
Former Senior Specialist (Maternal and Newborn), Liverpool School of Tropical Medicine, UK
Former WHO Director and Country Representative to Thailand and Namibia
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর