প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ নভেম্বর, ২০২১
মেজর জিয়াউর রহমান বাংলা বলতেন অবাঙ্গালিদের মতো। তিনি বাংলা লিখতেও পারতেন না, পড়তেও পারতেন না। সুতরাং তিনি হচ্ছেন আসলে অবাঙ্গালি। তার প্রথম ষড়যন্ত্র সফল হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতাসহ তার পরিবার এবং নিকট আত্মীয়দের হত্যার মাধ্যমে। আর তার দ্বিতীয় ষড়যন্ত্রে সফলতা আসে সাত নভেম্বর, ১৯৭৫। এই দুটি ষড়যন্ত্রেই জাসদের সরাসরি ভূমিকা ছিল। অনেকে হয়ত ভুলে গেছেন জাসদ সংগঠিত হওয়ার প্রথম বক্তব্যেই তারা বলেন, তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে যে কোনো প্রকারেই হোক না কেন, বঙ্গবন্ধুর সরকারের পতন ঘটাবে এবং তারা এ কথা ভালোভাবেই জানতো যে, বঙ্গবন্ধুর সরকারকে পতন ঘটাতে হলে তাকে হত্যা করার কোনো বিকল্প নাই। কারণ, বঙ্গবন্ধুকে জীবিত রেখে তারা বহুদিন ধরে, অন্তত ষাটের দশকে জাসদের নেতা কর্মীদের সঙ্গে আমরা যারা ছাত্র রাজনীতি করেছি, সকলেই জানতাম যে, বঙ্গবন্ধু এমন একটি পর্যায়ে তখন পৌঁছেছেন যে শুধু দেশেই না, বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধুকে রেখে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হওয়া সম্ভব না। সুতরাং বলা চলে যে, তখন থেকেই জাসদ ইলেক্টেড এমপি থেকে শুরু করে যত রকম কাজ জাসদ করেছে সবই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরিবেশ সৃষ্টি করা।
এখানে আমি একটি কথা উল্লেখ করতে চাই, তখনকার দিনে সম্ভবত জাসদই একটি সাড়া জাগানো রাজনৈতিক দল, যার কোনো রকম সফলতার ইতিহাস নেই। রাজনৈতিকভাবে তারা কোনো দিনই সফল হয়নি। তারা সফল হয়েছে একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বদৌলতে এমপি থেকে মন্ত্রী হওয়া। এটা দয়ায় হয়েছে। ভিক্ষুকরা যেমন ভিক্ষা করে, এবং আমরা তাদেরকে ভিক্ষা দেই, তেমনি আমি বলতে চাই শেখ হাসিনাও তাদেরকে ভিক্ষা দিয়েছেন। তারা ভিক্ষা করে সফল হয়েছে, রাজনীতি করে নয়। তখন নেত্রীর প্রয়োজন ছিল, তাই তাদের ব্যবহার করেছে। আমি তাদের মূল্য দেই টিস্যুর মতো। যেমন আমরা প্রয়োজন হলে টিস্যু ব্যবহার করি, আবার প্রয়োজন শেষে ফেলে দেই, তাদের ক্ষেত্রেও তাই।
এখন যদিও তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে আছে, ভবিষ্যতে যে তারা ষড়যন্ত্র করবে না, তার গ্যারান্টি নেই। একবার যে ষড়যন্ত্রকারী, সে আজীবনের জন্য ষড়যন্ত্রকারী। তারা বঙ্গবন্ধুর যে কথা বলে, এটা সত্য বলে। কারণ মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত তাদের যে রুল, তা সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই ছিল। তারা আশা করেছিল, তাদের ষাটের দশক থেকে শুরু করা ষড়যন্ত্রের বীজ, যেটাকে তারা নিউক্লিয়াস বলে। তারা সেইভাবেই অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু অসুবিধা হচ্ছে এই, তারা তখন সেটিকে ভুলে যায়নি। কারণ যেহেতু তারা আগের থেকেই প্রস্তুত ছিল এবং এই কারণেই তারা রাতারাতি জাসদ ফ্রন্ট করতে পেরেছে। এই যে আজকের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, তার লেখা পড়ে দেখেন। তৎকালীন জণকণ্ঠে তার লেখাগুলো যে কেউ পড়লেই বুঝবেন যে তিনি কি লিখতেন। এই যে মান্নান, মন্ত্রী ছিলেন, কি লিখেছিল? এগুলোতো সব ইতিহাস।
এখন অনেকেই বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রী সামনের নির্বাচনের পর অবসরে যাবেন। কিন্তু আমি বলতে চাই এটা যারা বলছে তারা আসলে ষড়যন্ত্রকারী। অনবড়ত ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছেন। তারা চাচ্ছেন কোনোভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যদি রাজনীতি থেকে দূরে রাখা যায়, তাহলে পরে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু এখন তো এসব প্রশ্নের সময় নয়। এসব প্রশ্নের জন্য অনেক সময় পরে আছে। আমি যখন প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আপনি কেন অবসরে যেতে চান, তিনি বলেছিলেন, আমার আর ভালো লাগছে না। আমি জীবনের বাকীটা সময় টুঙ্গিপাড়ায় কাটাতে চাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের রেখে যেতে পারেন না। তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন জনগণের ইচ্ছায়। এতো বছর জনগণের রাজনীতি করেছেন। জনগণই ঠিক করে দেবে ওনি কবে বিদায় নিবেন। আরো অন্তত ১০ বছর দেশকে সেবা দেওয়ার সক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আছে বলেই আমি মনে করি। তার পর দেখা যাবে ওনি কি করবেন।
আমার জানা মতে, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের লোকজন এমনিতেই দীর্ঘায়ু পান। তাদের বংশের মোটামুটি সব লোকই সাধারণ বাঙ্গালির তুলনায় বেশি দিন বাঁচেন এবং কর্মক্ষমতাও তাদের তুলনামূলকভাবে বেশি। সুতরাং এত কর্মক্ষম একজন নেত্রীর অবসরের কথা যারা ইনিয়ে বিনিয়ে বাস্তবায়ন চাচ্ছেন, তারা শ্রেফ ষড়যন্ত্রকারী বৈকি কিছু নয়। এখন নেত্রীকে তার কাজ করার জন্য যে মনের জোর এবং তিনি যাতে উৎফুল্ল ভাবে আরো কাজ করে যেতে পারেন তার জন্য যে ফুয়েল এর প্রয়োজন সেই ফুয়েল তো দিতে হবে আমাদেরকে, জনগণকে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদেরকে। জনগণ তাদের কাজ ঠিকই করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, এমনকি ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে অনেকেই সেই ভাবে করেনা। আমি একটি জায়গায় আমি দায়িত্ব পালন করি, যেখানে প্রাক্তন ছাত্রলীগারদের নিয়ে আমার কাজ করতে হয়।
আমার খুব অবাক লাগে যে, এদের অনেকের ভিতরই ন্যূনতম নৈতিক বোধ নাই। তারা একসময় ছাত্রলীগ করেছেন। সুতরাং তাদের জন্য সব প্রাপ্য। আমি বলছি না যে আমি শতভাগ কাজ নিশ্চিত করতে পারি। বাট কমপক্ষে ৯০ শতাংশ সাকসেস রেট তো থাকতে হবে। অনেকেই না জেনে বলে থাকেন যে, প্রধানমন্ত্রী কাজে হস্তক্ষেপ করেন। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি, আপনি যদি আপনার কাজটি ঠিক করে করতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী কোনোদিনই আপনাকে বাধা দিবে না। বরঞ্চ যদি দরকার হয় সহযোগিতা করবে। এখন আপনাকে কাজ দেওয়া হল একটা, আপনি করলেন আরেকটা, তখন তো হস্তক্ষেপ করতেই হয়।
এই যে পরিবহন ধর্মঘট হলো, জনগণ ভোগান্তিতে পড়লো, শাহজাহান খান চাইলে এক মিনিটে এসব বন্ধ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নাই। করবেন কি করে? তিনি তো একসময় জাসদ করতেন। তার বিরুদ্ধে অন্তত এক হাজার নিরপরাধ মানুষকে মেরে ফেলার অভিযোগ আছে। আমার মামার বাড়িও মাদারিপুর। আমার দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ও তাদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি অন্তত ৭০ জনকে হত্যা করেছিলেন। পরবর্তীতে তাকেও মেরে ফেলা হয় অবশ্য। তো এই হচ্ছে জাসদ।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর