প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ নভেম্বর, ২০২১
আমার এই লেখা যখন বাংলা ইনসাইডারে যাচ্ছে সেদিনই আওয়ামী লীগের খুব গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী পরিষদের সভা হবে। এই সভাতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে সম্প্রতি তৃণমূল লেভেলের নির্বাচন, অর্থাৎ এই যে চেয়ারম্যান নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মত সংগঠনের যে ফল হয়েছে তাকে ভরাডুবি ই বলা চলে। নিশ্চয়ই এটার মূল্যায়ন করা হবে। যেহেতু আমি আওয়ামী লীগের নেতাও নয়, এমন বড় কোনো কর্মী ও নয় এবং সম্প্রতি কালে কোন আওয়ামী লীগের নেতা বা গুরুত্বপূর্ণ কর্মীর সাথে আমার এ বিষয়ে আলাপ হয় নি। কিন্তু বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে যে সকল খবর পড়েছি তাতে আমার নিজের মনেই কতগুলো প্রশ্ন জেগেছে। সেজন্যে ঐ প্রশ্ন গুলোর বিষয়ে আমি আজকে আলোকপাত করবো। কোন কোন পত্রিকার মতে ৪২% চেয়ারম্যান হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এবং বেশ কিছু জায়গায় আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল যে ক্যান্ডিডেট দেয়া হয়েছে চেয়ারম্যান হিসেবে তাদের জামানত বাজেয়াপ্রাপ্ত হয়েছে। যেখানে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিশ্বে শুধু উচ্চ পর্যায়ের একজন নন্দিত নেত্রীই নন, তাকে ভালোবাসার দিক থেকে তার নেতৃত্বের গুণাবলির দিক থেকে যে কোন বিশ্বের বাইলেট্রাল ইস্যু বা মাল্টিলেট্রাল ইস্যু গুলো নিয়ে যখন কোন গোলযোগ দেখা যায় সেসব জায়গায় ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই তারা মনে করেন তিনি এ বিষয়ে সমাধান দিতে সক্ষম।
অর্থাৎ নেত্রী এখন কোন পর্যায়ের নেতৃত্বে গিয়েছেন সেটা সকলেই বুঝে। বাংলাদেশের নির্বাচন যদি প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি হতো তাহলে নেত্রী পেতেন ৯৫% ভোট আর ৫% ভোট কেউ যদি দাঁড়াত বা কিছু হতো তারা পেতো। বিশ্বব্যাপী চেঁচামেচি হতো যে বাংলাদেশে কোন সঠিক নির্বাচন হয়নি। আসলে বাস্তব হচ্ছে যে, জননেত্রী শেখ হাসিনার তুলনা করার মতো এখন নেতা বা নেত্রীর সামগ্রিক ভাবে যদি বিবেচনা করা হয় তাহলে বিশ্বে খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে জার্মানির মিসেস মার্কেল সাথে নেত্রী সমপর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, কিন্তু তিনিও এখন অতীত হয়ে গেছেন। এই অবস্থা যেখানে সেখানে এমন অবস্থা কেনো ঘটলো, কালকে হয়তো নিশ্চয় আলাপ আলোচনা হবে এবং যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে তাদের ব্যাপারেও কোন না কোন কঠিন সিদ্ধান্ত আসতে পারে কারণ তারা সরাসরি নেত্রীর নির্দেশ অমান্য করেছেন। কিন্তু একটি গভীরে যেতে হবে, আমরা সাম্প্রতিক কালে বেশি গভীরে যাই না। যেমন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী শুধুমাত্র জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাক সহ কয়েকজনের মাঝে সীমাবদ্ধ রেখে এবং এর সাথে আমরা সাম্প্রতিককালে অনেকে আলাপ আলোচনা করার ফলে তাহেরও যে এর সাথে সম্পৃক্ত এই বিষয়টিও সামনে এসেছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড, মূল্যায়ন সেটি অনেক বলার পরেও হচ্ছে না, কেন হচ্ছে না সেটি বোধহয় আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কেও জানে না। ঠিক তেমনি ভাবে তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচনটি প্রায় দুই বছর পরে যে নির্বাচন হবে তাতে এরা ফ্যাক্টর হবে। তবে অনেক নেত্রী শেখ হাসিনাকে আন্ডার এস্টিমেট করে ভাবতে পারে যে এই নির্বাচনে এমন ভাব হয়েছে যে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের ভেতরে মত-পার্থক্য এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে এটাকে সমাধান করে তারপরে জাতীয় নির্বাচনে জয় কঠিন হয়ে যাবে। অনেকেই ভাবছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘাড়ে একটা চাপ আসবে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ৬০ বছরের উপরে চিনি, আমি জানি ঐসব কিছুই না। এটাকে কীভাবে ঠিক করতে হবে সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাথার মাঝে আছে।
তবে আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায় যে, এই যে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়ালো, এরা কেন দাঁড়ালো? বিদ্রোহী প্রার্থী সবসময়ই বেসিক লেভেল থেকে শুরু করে সব লেভেলেই দাঁড়ায়। তবে আওয়ামী লীগের এখন এমপি লেভেলে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় কমেই গেছে বা নাই বললেই চলে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওই পর্যন্ত একদম ব্যক্তিগতভাবে চিনেন। তারপরও যদি কেউ হারে সে তো নির্বাচনে হার-জিত আছেই। কিন্তু তৃণমূল নির্বাচনে কতগুলো ফ্যাক্টর নির্ভর করে। যেহেতু ১৯৯৬ থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকে অফিশিয়ালি আমি কোন দায়িত্বে থাকি আর না থাকি, আমি গ্রামে গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকের ঘুরেছি এবং নেত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী আমি বুঝেছি যে আমার কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্ব হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া, কমিউনিটি ক্লিনিক যাতে সঠিকভাবে চলে তার জন্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এই কমিউনিটি ক্লিনিক এর সাথে সম্পৃক্ত করা এবং তৃতীয় খুব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আমার উপর এসে পড়েছে সেটি হচ্ছে এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে যারা বঙ্গবন্ধুর লোক তারা, বা যারা বঙ্গবন্ধু কিংবা নেত্রীর পক্ষে সরাসরি না তারাও এই কমিউনিটি ক্লিনিকের কারণে ইমপ্রেস হয়ে তারা যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে তার কন্যা ফলপ্রসূ করেছেন এটি সঠিক ভাবে বুঝতে পারে। অর্থাৎ এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রান্তিক নেতৃবৃন্দ যারা, এরা কেউ ইউনিয়ন পর্যায়ের উপরে না অর্থাৎ ইউনিয়ন পর্যায়ের চেয়ারম্যানই হচ্ছে আমার সীমারেখা, তার উপরে কি হলো সেটা নিয়ে আমার কোন কোন কনসার্ন নেই। কিন্তু এই পর্যন্ত আমার নৈতিক দায়িত্ব। সুতরাং সেই ভাবে গত একবছর এটা ঠিক আমি যেতে পারিনি, কিন্তু আমি গেলেও যে বিরাট কিছু হতো তা না। সেই কারণের জন্যও আমার নিজেকেও অপরাধী মনে হচ্ছে যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছিলেন, ফরমালি কোন পোস্ট না থাকার পরও তিনি বিশ্বাস করতেন আমি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে আমি একটা যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করে চলেছি। তাহলে কি যোগাযোগ রাখলাম, সে জন্য আমাকে ব্যথা বেশি দিয়েছে। আমি যেটুকু জানতে পেরেছি, ইতিমধ্যে এসে কমিউনিটি ক্লিনিক দুই-একটা ভিজিট করে আনঅফিসিয়ালি তাতে দেখেছি যে প্রায় সব জায়গায় যারা বিদ্রোহী প্রার্থী, তাদের সাথে লোকাল এমপি, নেতা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পর্যন্ত ইনভলব হয়েছে। যার ফলে তারা সাহস করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী হতে। তাহলে যদি কাওকে সাজা দিতে হয় তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় যারা গুলি চালিয়েছিলো শুধু তাদের সাজা দিয়েছেন কিন্তু যে সমস্ত ব্যক্তিরা তাকে হত্যার পরিবেশ তৈরি করে দিলেন তারা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকবেন তাতো হতে পারে না। সুতরাং আওয়ামী লীগকে নেত্রী যেভাবে চালাতে চান সেভাবে চালান এবং যেকোনো প্রসেসে নির্বাচন হোক না কেন যদি সঠিক নির্বাচন হয় তবে নেত্রী জিতবেন এবং এই জেতার জন্য উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ধোলাই দিতে হবে। এখানে শুধু যে লোক টা বিদ্রোহীভাবে চেয়ারম্যান হলো সেই শাস্তি পাবে তাহলে তা হলো না।
আমি সে জন্য খুব জোর দিয়ে বলছি এবং আমার বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্রেইনের ভিতরে এসব থাকে এটা হবে। কিন্তু আমার লেখার উদ্দেশ্য হলো এটা যেনো বেশি করে হয় তাহলে ভবিষ্যতে এমন কিছু হবে না, আওয়ামী লীগ আরো সুসংগঠিত হবে এবং অতীতের নির্বাচনের মত একি ফলাফল পাবে। এই যে লোকে বলে এখন নির্বাচনে একটা গ্রুপ আছে যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে ভোট দিতে যায় না, বিদেশীরা অনেক বড় বড় কথা বলে। আমাদের দেশ তুলনামূলকভাবে গরীব হলেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা করছেন, দলকে পরিচালনা করছেন। আমি মনে করি অতিতে নেত্রী অনেক ছাড় দিয়েছেন, এবার কোন অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া চলবে না। উপর থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত কোন ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ শুরুতেই যেটা বলেছিলাম যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ। ওরা তো চেয়ারম্যান প্রার্থী, ওদের উপর থেকে যেভাবে বলছিলও ওরা তো ঐভাবেই নাচছে। ওদের মনে মনে তো ইচ্ছা ছিলোই কিন্তু তারা থেকে যেতো, তারা থামে নি কারণ তাদেরকে পেছন থেকে জোর দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তারা এখানে পুতুলের রোল প্লে করেছে, এখানে যদি শুধু মাত্র চেয়ারম্যানদের কে শাস্তি দেওয়া হয় তবে এখানে পুতুলকেই শাস্তি দেওয়া হবে কিন্তু সত্যিকারে আসল জায়গায় হাত দেওয়া হবে না। আমার বিবেক বলে সেটা একেবারেই অন্যায় হবে। আশা করি যতদিন নেত্রী দলের প্রধান আছেন, দেশ চালাচ্ছেন, দল চালাচ্ছেন ততদিন তিনি এরকম অন্যায় হতে দিবেন না। সুতরাং এবার আমরা উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ধোলাইয়ের রেজাল্ট দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর