ইনসাইড থট

দেশ ও জাতির স্বার্থে, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী প্রয়োজন

প্রকাশ: ১২:০২ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২১


Thumbnail দেশ ও জাতির স্বার্থে, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী প্রয়োজন

এ সপ্তাহের ‘টক অব দি টাউন‘ ছিল তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। সদ্য সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও জামালপুরের এই সাংসদের কর্মকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অঙ্গন, গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তর সমালোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সিনিয়র সাবেক নেতার সাথে দেখা হতেই ডাঃ মুরাদ হাসানের সমালোচনা করে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন। গায়ের ঘাম শুকিয়ে  সাদা লোনা ধরা মলিন পোশাক পরিহিত ১/১১ এর সময়ে কারা নির্যাতনভোগী ঐ সম্মুখ সারির ঐ তুখোড় ছাত্রনেতা সংস্কারবাদীদের প্রলোভন ও হুমকির কথা বর্ণনা করে বললো, আজ বিএনপি-জামায়াত এর লোকেরা সুকৌশলে টাকার পাহাড় তৈরি করেছে, দলীয় পদ দখল করেছে, এমপি-মন্ত্রী হয়েছে। আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। ১/১১ এর পর যে সকল সংস্কারবাদীরা ধমক দিয়েছে, তাদের সাথে মিশে যেতে প্রলোভন দেখিয়েছে, তারা এখন এমপি-মন্ত্রী-দলীয় উচ্চ পদে আসীন‘। আমি নিরুত্তর, কি উত্তর দিব। আমারওতো প্রশ্ন আছে? যারা সেদিন শেখ হাসিনাকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, তারা সরকার ও সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ে আসীন। যাদের বক্তব্য সেসময়ের পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছিল, তখন যারা বলেছিলেন শেখ হাসিনার রাজনীতি করা উচিত নয়, তারা আজ বড় মন্ত্রী, সংগঠনের বড় বড় পদবীধারী।

ডাঃ মুরাদের ভাইরাল হওয়া অডিও-ভিডিও দেখে প্রথমদিকে অবাক হয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী আওয়ামী লীগের একজন নেতা, যিনি জাতীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী, এহেন কর্মকাণ্ড করতে পারেন না। 

বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ও নেতাকর্মীদের ত্যাগ-তিতিক্ষায় টানা তৃতীয় বারের মতো দেশ পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে  সরকার পরিচালিত হচ্ছে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কপ-সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানরা আগ্রহী হয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, এক সাথে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশে বিরাজমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সুধীজনেরা শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করছেন। এমনি পরিস্থিতিতে সরকারের মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার  প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান এর কর্মকাণ্ড সত্যিই বিব্রতকর। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা দুঃখিত, লজ্জিত। 

কিন্তু ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার দ্বিতীয় সংস্করণে  ‘ছাত্রদল নেতা থেকে আওয়ামী লীগের (সরকারের) প্রতিমন্ত্রী‘ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে সম্বিৎ ফিরে পেয়েছি। মনে হয়েছে ডাঃ মুরাদের ঘটনাটা অস্বাভাবিক নয়। গত ১৪ অক্টোবর ২০২১, বাংলাইনসাইডার পোর্টালে প্রকাশিত  ‘অনুপ্রবেশকারীরা কখনই সংগঠনের শুভাকাঙ্ক্ষী নন, ক্ষতির কারণ‘ শিরোনামে আমি লিখেছিলাম, ‘যে কোন রাজনৈতিক দলের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নতুন কর্মীরা যোগদান বা প্রবেশ করবে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বুঝতে হবে কোনটি প্রবেশ, কোনটি অনুপ্রবেশ। এক্ষেত্রে অনুপ্রবেশ শব্দটি ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। ইংরেজি শব্দ Infiltrate এর সমার্থক শব্দ ‘Penetrate'। বাংলা অর্থ: 

 ‘অনুপ্রবেশ করা‘বা ‘গোপন এবং অবৈধ প্রবেশ‘। এই শব্দের ব্যাখ্যা: বিশেষ করে গোপন তথ্য অর্জন বা ক্ষতির কারণ হিসাবে কোনও সংস্থা বা স্থানটিতে গোপনীয়তার সাথে প্রবেশ বা প্রবেশের ক্রিয়া।

রাজনীতিতে ‘অনুপ্রবেশকারী’ শব্দটি বিতর্কিত টার্ম। কে কখন কীভাবে একটি দলে প্রবেশ করেন এবং কখন তার এই প্রবেশকে অনুপ্রবেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে—সেটি পারিপার্শ্বিক অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে। এটা চিহ্নিত করার সর্বজন গ্রহণযোগ্য কোনো মানদণ্ড নেই।

অনুপ্রবেশকারীরা নিজেদের আদর্শের কৌশলী জাল বিস্তারের জন্য দলে প্রবেশ করে। বিএনপি-জামায়াত থেকে আসা ঐ সকল নব্য আওয়ামী লীগাররা নিজেদের উদ্দেশ্য গোপন রেখে আওয়ামী লীগের তথ্য সংগ্রহ করে অথবা দলের রাজনীতি নিজেদের আদর্শিক পন্থায় প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। উনারা দলের নাম ভাঙিয়ে অঢেল সম্পদ বাগিয়ে নেন, দলের সংকটে পাশে থাকেন না, তারা দলের জন্য ক্ষতিকর বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ডাঃ মুরাদ হাসানের মত বিএনপি জামাতের আদর্শের অনুসারী আওয়ামী লীগ দলীয় অনেক সংসদ সদস্যই বিএনপি জামাতের অনুসারীদের ‘নৌকা‘র মনোনয়ন দিতে প্রভাবিত করছে, সংগঠনে গ্রুপিং সৃষ্টি করছে, বিভিন্ন অপকর্ম করছে, যাহা সরকারের ও সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। কারণ, ওরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক না। অপকর্ম করার সময় তাদের মানসপটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভেসে উঠে না। ওরা চিন্তা করে না, উনাদের অপকর্মের কারণে সরকারের ইমেজ বিনষ্ট হবে, সরকারের অর্জন ক্ষুণ্ণ হবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অবমাননা হবে।

প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট আদর্শ ও কিছু নীতিমালাসহ গঠনতন্ত্র থাকে। সেই আদর্শ ও নীতিমালা মেনে যে কোনো লোকই সংগঠনের সদস্য হতে পারেন বা প্রবেশ করতে পারেন। কিন্তু একসময় যিনি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সংগঠন জামাতের অনুসারী ছিলেন বা ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি জিয়ার আদর্শে গঠিত সংগঠন করতেন, বা জিয়ার আদর্শের অনুসারী ছিলেন, তিনি নিশ্চয়ই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারে না, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী হতে পারে না। 

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলে গলা ফাটানো ডাঃ মুরাদ হাসানের মত অনেকেই  ছাত্রজীবনে জিয়ার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছাত্রদলে নেতৃত্ব দিয়েছেন, পরবর্তীতে বিএনপি দলীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, তারা এখন ভোল পাল্টে  আওয়ামী লীগের উপরে পর্যায়ে স্থান করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, ওরা প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ-পদবীসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী পদ জাতীয় সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির পদও দখল করে নিয়েছেন। শ্রদ্ধেয় ওবায়দুল কাদের সাহেবের ভাষায় ‘কাউয়া’ নেতা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেছে।

এখন প্রশ্ন, ডাঃ মুরাদের মতো আরও কতশত বিএনপি-জামায়াত করা ‘কাউয়া নেতা‘আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেছে?

ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, স্বাধীনতা বিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বদানকারী নেতারা স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীদের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। 

কিন্তু এ কথাতো ঠিক যে, একজন মানুষ ছাত্র জীবন থেকে এক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনৈতিক চর্চা করে বিকশিত হয়ে নেতা হলো, ভোল পাল্টে অন্য আদর্শের অনুসারী হতে পারে না। তারা আসলে নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য ভিন্ন আদর্শের অন্য একটি সংগঠনে অনুপ্রবেশ করে।

রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে দলীয় আদর্শহীন একজন মানুষ বিশেষ যোগ্যতায় সরকারের মন্ত্রী হতে পারে, কিন্তু আদর্শভিত্তিক একটি সংগঠনের নীতিনির্ধারক হতে পারেন না, কেন্দ্রীয় নেতা হতে পারেন না। একজন চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় একজন রোগী মারা যায়, একজন নেতার ভুল সিদ্ধান্তে একটি দেশ, একটি জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসেই এমন উদাহরণ রয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, জামাত-বিএনপির লোক কি কারণে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগে যোগদান করেন? 

একটু পিছনে ফিরে তাকাই। আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে প্রায়শই বলে থাকেন, জিয়াউর রহমান দেশ স্বাধীন করার জন্য নয় অনুপ্রবেশকারী হিসেবে, পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি থেমে থাকেনি। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে স্বাধীনতা বিরোধীদের স্বার্থ উদ্ধারে জিয়াউর রহমান গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে যান। সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করেন। খন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষী ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুরদের সাথে সম্পৃক্ত হয়। জিয়াউর রহমানের সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে তৎকালীন সরকার জিয়াকে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব দিয়ে দেশের বাইরে পাঠানোর আদেশ জারি করে। কিন্তু কয়েকজন সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা বঙ্গবন্ধুকে ভুল বুঝিয়ে সেই আদেশ বাতিল করিয়েছিলেন। জিয়ার নেতৃত্বে অনুপ্রবেশকারীরা সুযোগ বুঝে খন্দকার মোশতাকদের সাথে নিয়ে উচ্চাভিলাসী কয়েকজন পথভ্রষ্ট সেনাকর্মকর্তাদের দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের মূল বেনিফিশিয়ারি জিয়াউর রহমান, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে। দল গঠন করে। জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত দল বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে স্বাধীনতা বিরোধীদের মূল নেতা গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনে এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ৫ শতাধিক মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। এসবই ছিল স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ। জিয়ার উত্তরসূরি বেগম খালেদা জিয়া ও তার পুত্র স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য ২০০৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা করে। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে শেখ হাসিনা আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এসবই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে নির্মুল করা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধকে নস্যাৎ করার জন্য।

তারপর দীর্ঘ ১৮ বৎসর আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় অগনিত শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী ও ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি বিএনপি- জামাতের ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। ওরা অতি সুকৌশলে ‘ক্ষমতা’র খুব কাছাকাছি থেকে পূর্বসূরিদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরনে সক্রিয় রয়েছে।

বিএনপি জামাত থেকে অনুপ্রবেশকৃতরা তাদের নিজস্ব লোকদের তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু কী পরিকল্পনায় বা কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য তারা বিএনপি সরকারের আমলেই বিএনপি ছেড়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করলেন এবং সুকৌশলে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হলেন, এটাই রহস্যজনক! এমনি অসংখ্য অনুপ্রবেশকারীর উদাহরণ রয়েছে। 

ডাঃ মুরাদ হাসান এর মত জিয়ার আদর্শের অনুসারী অন্যান্য যে সকল অনুপ্রবেশকারীরা এখনও আওয়ামী লীগ ও সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থেকে সংগঠন ও সরকারের অনিষ্ট করছেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সচেতন জনগোষ্ঠী।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

কতিপয় সাংবাদিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর


Thumbnail

বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।

ভিন্ন চিত্র দেখলাম শনিবার সকালে বরিশাল সদর হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে যেয়ে দেখেন দুজন টিভি সাংবাদিক ওয়ার্ডে ভিডিও করছেন। ভিডিও শেষ হবার পর চিকিৎসক তাঁর রাউন্ড শুরু করলেন। রাউন্ড শুরু করতেই দুজন সাংবাদিক আবার ক্যামেরা ধরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা শুরু করলেন। চিকিৎসক তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বিনয়ের সাথে নিচু স্বরে একে একে ২০ বার (গুনে নিশ্চিত হয়েই বলছি) সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করলেন, পরিচয় জানতে চাইলেন। উক্ত সাংবাদিক নাম বলেননি, পরিচয় দেননি। বরং উচ্চস্বরে উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উর্ধতন কাউকে ফোন দেয়ার পর সাংবাদিক সাহেব তার নাম বলেছেন। এখানে দুটি প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।  প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক দুজন কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সাংবাদিক দুজনকে কেন নাম বলতে হবে ? নাম, পদবি, পরিচয় থাকবে তাদের বুকে বা কোমরে প্রদর্শিত আই ডি কার্ডে। এখন দেখার বিষয়,  প্রদর্শিত স্থানে আই ডি ছিল কিনা ? না থাকলে থাকবে না কেন?

সাংবাদিক ও চিকিৎসকবৃন্দ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমূহ পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। সব গুলো ভিডিও কয়েকবার দেখেছি, পর্যালোচনা করেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলেননি। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সাংবাদিক দুজন বারবার উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তাদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি মগের মুল্লুক। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড রাউন্ড শুরু করার আগে প্রতি রোগীর সাথে একজন এটেন্ডেন্ট ব্যাতিরেকে সবাইকে বের হবার কথা বলেছেন। সবাই বেরিয়ে না গেলে তিনি চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেটাই নিয়ম।  সারা দুনিয়ায় সেটাই হয়ে থাকে। সাংবাদিকদ্বয় সেটি শুনতে নারাজ। এখানে তারা স্পষ্টতই সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।  

দিন শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখলাম সাংবাদিকদের হেনস্থা করেছে ডাক্তার। অথচ ভিডিও গুলি পর্যালোচনা করলে যে কেউ বলবেন, ডাক্তারকে হেনস্থা করেছে সাংবাদিকরা। আসলেই মগের মুল্লুক। ঘটনা কি ? আর সংবাদ শিরোনাম কি? এসব মগের মুল্লুকের রাজত্ব  থেকে জাতিকে পরিত্রান দেয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমএ, এফডিএসএর, বিডিএফ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেয়া দরকার। কমিটি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে ও তাদের দায়িত্ব নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সে নীতিমালায় যাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান না করা হয়, রোগীর অনুমতি ব্যাতিরেকে তাদের ছবি, ভিডিও বা রোগ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রচার না করা হয়, সেসব বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। তা না হলে হাসপাতাল সমূহে এ ধরণের অরাজকতা হতেই থাকবে, বাড়তেই থাকবে।  

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

প্রথম আলোর পর কী ডেইলি স্টারও বিক্রি হবে?


Thumbnail

এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।

প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে অনেকেরই  ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী লোক।

এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।

আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম। সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায় যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।

তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।

তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।


প্রথম আলো   ডেইলি স্টার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে বিএনপির রাজনীতি


Thumbnail

বিএনপির রাজনীতি এখন ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে। রাজনীতিতে একের পর এক ভুল করার কারণে তারা এখন হতাশায় নিমজ্জিত। কোন কী বলতে হবে সেটার খেই হারিয়ে ফেলেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। 

বিএনপি এখন দাবি করছে যে, তাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মী জেলে আছেন। এখানে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি হল যদি ৬০ লাখ কর্মী তাদের থাকত তাহলে এতদিনে তারা কেন আন্দোলনে ব্যর্থ হল? যদি এত সংখ্যক নেতাকর্মী থাকত তাহলে তো অনেক আগেই সরকারের পতন ঘটে যেত। কারণ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য এক লাখ নেতাকর্মী হলেই যথেষ্ট। কিন্তু এত সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়েও তারা ব্যর্থ কেন! এত বড় সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে তারা তাদের নেত্রীকে জেল থেকে মুক্ত করতে পারেনি। কোন আন্দোলনই তারা করতে পারল না! বরং তাদের নেত্রীকে সরকারের অনুকম্পায় ফিরোজায় থাকতে হচ্ছে। ফলে স্বভাবতই বিএনপির নেতাকর্মীর সংখ্যা কত সেটা একটা বড় প্রশ্ন। আর এত নেতাকর্মী থাকা সত্বেও তাদের নেতাকে লন্ডনে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে! 

দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় হল বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মী যদি জেলে থাকেন তাহলে দেশের জেলখানা গুলোর ধারণ ক্ষমতা কত। এবং সেখানে যদি বিএনপির নেতাকর্মীর সংখ্যাই হয় ৬০ লাখ তাহলে এর মধ্যে সাধারণ কয়েদি কোথায় আছেন। তাদেরকেই বা কোথায় রাখা হয়েছে।

কথায় আছে, পথের মাঝে পথ হারালে আর কি পথ ফিরে পাওয়া যায়! বিএনপির অবস্থায় এখন তাই। তারা রাজনীতির পথের মাঝে রাজনীতির পথ হারিয়ে ফেলেছেন। কোনটা রাজনীতি আর কোনটা রাজনীতি নয় সেটাও বিএনপির নেতাকর্মীরা বোধহয় ভুলে গেছেন কিংবা বুঝতে পারছেন না। অন্য আরেকটি কথায় আছে যে, স্বপ্নে যখন কেউ কিছু খাবে তখন পান্তা খাবে কেন? পোলাও কোরমা খাওয়াই ভালো। বিরিয়ানিও খাওয়া যেতে পারে। সুতরাং ৬০ লাখ না বলে তাদের বলা উচিত ছিল বাংলাদেশে তো প্রায় ১৮ কোটি লোক আছে এর মধ্যে ৬ কোটি লোকই বিএনপির নেতাকর্মী। তাহলে অত্যন্ত লোকে আরও ভালো ভাবে বুঝত যে, বিএনপি আসলেই অনেক বড় একটি শক্তিশালী দল এবং তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বিরা বুঝতে পারত যে, বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অত্যন্ত ভালো। 

তবে বাস্তবতা হল বিএনপি ৬০ লাখ নেতাকর্মী দাবি করলেও আসলে তাদের কোন জনসমর্থনই নাই। যদি তাই থাকত তাহলে তারা নির্বাচন বিষয়টিকে এত ভয় পেত না। নির্বাচন বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নিত না। শুধু তাই নয়, বিদেশিও তাদের কোন বন্ধু নাই। যারা আছে সেই বন্ধুদের কথায় দলটি বরং এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। দেশিয় বিএনপির যে সমস্ত বন্ধুরা ছিলেন, বিভিন্ন সময় বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে কিছু লেখালেখি করতেন, তাদেরকে রাষ্ট্রক্ষমতার স্বপ্ন দেখাতেন তারাও এখন হারিয়ে গেছেন। সব কিছু মিলিয়ে দলটি এখন অনেকেটা এতিম হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়ত সামনে দলটির নাম নিশানাও থাকবে না। যারা নিজের দলের নেতাকর্মীর সঠিক সংখ্যা জানেন না তাহলে বুঝতে হবে সেই দলটি এখন কোন পর্যায় গেছে। কতটা দেউলিয়া হলে একটি দলের নেতাকর্মীর সংখ্যা নিয়ে তারা নিজেরাই বিভ্রান্ত হন। সুতরাং দলটি যে অচিরেই হারিয়ে যেতে বসছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন