চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে বিশ্ববাজারে
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ইউরোপে।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় যুক্তরাজ্য এবং চতুর্থ অবস্থান রয়েছে কানাডা। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সবশেষ তথ্যে এই চিত্র উঠে এসেছে।
ইপিবির তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি অর্থাৎ গত ৭ মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৫.৪ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই সময়ে ইউরোপের বাজারে ১১.৯৪ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। সেখান থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ১৩.৭৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের ১ হাজার ৩৭৩ কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার পোশাক গত ৭ মাসে রপ্তানি হয়েছে। যা আগের বছরে ছিল ১ হাজার ১৯৪ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার ডলারে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে জার্মানিতে।
দেশটিতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ০.৮৩ শতাংশ বেড়ে পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪.০৬ বিলিয়ন ডলার। এরপর স্পেন এবং ফ্রান্সেও রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ১৮.১৮ শতাংশ এবং ১৮.৭৪ শতাংশ। অন্যান্য প্রধান ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশ, যেমন ইতালিতে সাড়ে ৫৭ শতাংশ, অস্ট্রিয়াতে ৩২.৯৩ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ৩২.৪১ শতাংশ এবং সুইডেনে পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৩.২৮ শতাংশ।
ইউরোপের পাশাপাশি রপ্তানি বেড়েছে যুক্তরাজ্য ও কানাডায়। তবে কমেছে যুক্তরাষ্ট্রে। পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি যথাক্রমে বেড়েছে ১৪.৪৭ শতাংশ এবং ১৯.২৫ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারে চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে রপ্তানি হয়েছে ২৯৩ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার ডলার পণ্য, যা আগের বছর ছিল ২৫৬ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর কানাডার বাজারে চলতি বছরে রপ্তানি হয়েছে ৮৬ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার পরিমাণ পণ্য, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭২ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার পরিমাণ পণ্য।
অপর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪.৯৮ বিলিয়ন ডলার বা ৪৯৮ কোটি ৭০ লাখ ১০ হাজার ডলারে, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৫.৮ বিলিয়ন বা ৫০৮ কোটি ৭৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ১.৯৮ শতাংশ রপ্তানি আয় কমেছে।
প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি ৩.৬৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩৩.৪৪ শতাংশ বেড়ে ৪.৮৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
এরমধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে জাপানে আমাদের রপ্তানি ৯২০.২৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫.৯২ শতাংশ বেড়েছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ অন্যান্য অপ্রচলিত বাজারগুলো হলো- মালয়েশিয়া ৯২.৭৭ শতাংশ, মেক্সিকো ৪২.৭০ শতাংশ, ভারত ৫৮ শতাংশ, ব্রাজিল ৬৪.১৪ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৩৭.৩৯ শতাংশ বেড়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজতর করার লক্ষ্যে ‘Agreement on the Movement of Traffic-in-Transit and Protocol’ স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভুটানের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী কর্মা দর্জি (Karma Dorji) ট্রানজিট চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
বুধবার (২২ মার্চ) ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ভুটানের শিল্প বাণিজ্য কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব দাশ তাশি ওমাং এবং শক্তি ও নবায়নযোগ্য সম্পদ বিষয়ক সচিব জনাব দাশ কর্মা শেরিং, ভুটান চেম্বার অব ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সভাপতি এবং ভুটানের বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকবৃন্দসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন যুগান্তকারী এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজতর হওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। স্বাক্ষরিত চুক্তি দেশের জন্য কুটনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংযোগ এবং কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে বলেও জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ আন্ত:যোগাযোগ বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক ভ্যালু চেইন সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে চায়। এর অংশ হিসেবে চারিদিকে স্থলভাগ বেষ্টিত ভুটানকে বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বিমান, রেল, স্থল, নৌবন্দর ও সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করছে।
এ চুক্তির ফলে উভয় দেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক যোগাযোগে ব্যাপক প্রসার ঘটবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে ভুটানের পণ্য রপ্তানি ও আমদানি করলে বাংলাদেশ বিভিন্ন ফি এবং চার্জ লাভ করবে। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটবে। ট্রানজিট এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সমুন্দ্র বন্দরসমূহ অধিকতর কর্মক্ষম হবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। অধিকন্ত কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বন্দরসমূহের সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন করবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে তিনি গর্বিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তির প্রাক্কালে ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে সর্বপ্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং বাংলাদেশ ভুটানের নিবিড় বন্ধুত্বকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দ্বিপাক্ষিক এই সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত ও শক্তিশালী করতে উভয় রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে অর্থ-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং যোগাযোগ ও অবকাঠামোসহ সকল খাতে অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি দেশে রুপান্তরিত হয়েছে, পরিচিতি পেয়েছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।
এ সময় বিগত বছরগুলির ন্যায় সমস্ত আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশকে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখা ছাড়াও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগীতার মাধ্যমে বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন ডলারের যাত্রায় ভুটানকে উন্নয়ন অংশীদার হওয়ার আহবান জানান তিনি ৷
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর ভুটানের মন্ত্রী, সচিব ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগনের সাথে বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী কৃষিখাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বিশেষ করে মাশরুমসহ কৃষিপণ্যের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ের গুরুত্ব আরোপ করেন।
উল্লেখ্য, তিন দফা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে উক্ত চুক্তি এবং এর আওতায় প্রোটোকল চুড়ান্ত করা হয়। গত ১৩ মার্চ ২০২৩ তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। ইতো:পূর্বে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (PTA)কে সম্পাদিত চুক্তি ও প্রোটোকল অধিকতর কার্যকর করবে। স্বাক্ষরিত চুক্তিটি উভয় দেশ কর্তৃক রেটিফিকেশনের পরে কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ ভুটান ট্রানজিট চুক্তি প্রোটোকল স্বাক্ষরিত বাণিজ্যমন্ত্রী থিম্পু
মন্তব্য করুন
বসুন্ধরা এলপি গ্যাস বসুন্ধরা গ্রুপ
মন্তব্য করুন
আগের
সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়লো রডের দাম। নির্মাণশিল্পে
ব্যবহৃত এই উপকরণটির দাম ছাড়িয়েছে লাখ টাকা। গত পাঁচ মাসের ব্যবধানে প্রতি টন রডের
দাম বেড়েছে ১৪-১৫ হাজার টাকা।
গতকাল বুধবার
রডের বাজারের শীর্ষ সারির কোম্পানিগুলো প্রতি টন রডের দাম ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে। তাতে
তিনটি (বিএসআরএম, একেএস, জিপিএইচ) কোম্পানির রডের দাম প্রতি টন এক লাখ টাকায় উন্নীত
হয়েছে। এর আগে কখনোই লাখ টাকায় রড বিক্রি হয়নি বলে উৎপাদকেরা জানিয়েছেন। তবে দেশীয়
ইস্পাত শিল্পের আরেক ব্র্যান্ড কেএসআরএমের লোহার রড পাওয়া যাচ্ছে লাখ টাকার কমে। সবশেষ
বৃহস্পতিবার সকালে এই ব্র্যান্ডের রড টনপ্রতি ৯৮ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
উৎপাদন
খরচ বেড়ে যাওয়ায় রডের
দাম বাড়ানো হয়েছে বলে উৎপাদকেরা জানিয়েছেন।
তাঁদের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারিতে গ্যাস–বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, বেশি দামে ডলার
কিনে আমদানি মূল্য পরিশোধ, তুরস্কের ভূমিকম্পের পর বিশ্ববাজারে কাঁচামালের
দাম আরেক দফা বৃদ্ধির
কারণে রডের উৎপাদন খরচ
বেড়েছে। তাতে গ্যাস–বিদ্যুৎ
ও ডলারের দাম বাড়ার প্রভাব
শেষ পর্যন্ত ভোক্তার কাঁধে এসে পড়েছে।
রড-সিমেন্টের খুচরা ব্যবসায়ী, ডিলার, মিল মালিক এবং
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এক
মাসের বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে,
এখন প্রতি টন এমএস রড
বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ৫০০
টাকায়। মাত্র এক মাস আগেও
এ রডের দাম ছিল
৯০ হাজার টাকার ঘরে, অর্থাৎ ৯৮
হাজার ৫০০ টাকা। আর
পাঁচ মাস আগেও এই
রডের দাম ছিল টনপ্রতি
৮৪-৮৫ হাজার টাকা।
বর্তমানে
নির্মাণকাজ আগের চেয়ে বেড়েছে।
১০-১৫ দিন আগেও
বুকিং দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে
না রড। সামনে রডের
দাম আরও বাড়তে পারে
বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নাম
প্রকাশ না করার শর্তে
দেশের শীর্ষ রড উৎপাদনকারী একটি
প্রতিষ্ঠানের বিপণন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে ডলারের সংকট রয়েছে। চাইলেই
স্ক্র্যাপ আমদানির জন্য এলসি খোলা
যাচ্ছে না। আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে স্ক্র্যাপ জাহাজের বুকিং রেট বেড়ে গেছে।
পাশাপাশি জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে বেড়েছে জাহাজভাড়াও। এতে স্ক্র্যাপের আমদানি
ব্যয় বেড়ে গেছে, যা
রড উৎপাদনে প্রভাব ফেলছে। ফলে বাজারে বাড়ছে
রডের দাম।
মন্তব্য করুন