ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

কারাগারেই গোল্ডেন মনিরের সাম্রাজ্য

প্রকাশ: ০৩:৩১ পিএম, ১৫ নভেম্বর, ২০২২


Thumbnail

২০২০ সালের ২১ নভেম্বর রাতভর অভিযান চালিয়ে সকালে গোল্ডেন মনির নামে পরিচিত মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। বিভিন্ন ধরণের জালিয়াতি, চোরাচালান এবং দুর্নীতির বিষয়ে প্রমাণ পাওয়ার পর গোল্ডেন মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে প্রায় ২ বছর ধরেই কারাগারেই আছেন তিনি। আর কারাগারে বসেই গোল্ডেন মনির রাজকীয়ভাবে তাঁর সাম্রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। কারান্তরীন অবস্থায়ও চলছে তাঁর দুর্বৃত্তায়ন, অপকর্ম। সেখানে বসেই তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কলকাঠি নাড়ছেন।

নব্বইয়ের দশকে মনির হোসেন গাউছিয়া মার্কেটে একটি কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। পরে তিনি রাজধানীর মৌচাকের একটি ক্রোকারিজের দোকানে কাজ শুরু করেন। তখন ‘লাগেজ পার্টি’র একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর মনিরও লাগেজ ব্যবসায় যুক্ত হন। ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে লাগেজে কাপড়, প্রসাধনী পণ্য, ইলেকট্রনিকস, মোবাইল ফোন, ঘড়ি, কম্পিউটার সামগ্রী ইত্যাদি আনা-নেওয়া শুরু করেন। র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, মূলত ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ভারত রুটে ছিল তার ব্যবসা। এই লাগেজ ব্যবসা করার সময় স্বর্ণ চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়েন। অবৈধভাবে দেশে নিয়ে আসেন বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ। বায়তুল মোকাররম মার্কেটে তিনি একটি স্বর্ণের গহনার দোকানও দেন। চোরাচালানের স্বর্ণ ওই দোকান থেকে বিক্রি হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে।

স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসার মধ্যেই ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মনির জমির ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। গোল্ডেন মনিরের উত্থান ঘটে লুৎফুজ্জামান বাবর যখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হয় তখন। তখন গণপূর্ত ও রাজউকের সঙ্গে তার সম্পর্ক গাঢ় হয়। সেই সময় লুৎফুজ্জামান বাবরের মুল ব্যবসা ছিল চোরাচালান। বাবর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর চোরাচালান সিন্ডিকেটের দায়িত্ব মনিরকে দেয়া হয়। এখান থেকেই গোল্ডেন মনির ফুলে-ফেঁপে ওঠেন এবং বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে তিনি বিপুল বিত্তের মালিক হন। গামছা বিক্রেতা থেকে জমির ব্যবসার ‘মাফিয়া’ হয়ে ওঠেন মনির। ২০০৭ সালে চোরাচালানের দায়ে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একাধিক মামলা হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন গোল্ডেন মনির, কিন্তু সে চেষ্টা সফল হয়নি। তবে বিএনপিকে অর্থায়ন করা, বিভিন্ন নাশকতা তৎপরতা করা এবং অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ করা, মাদক ব্যবসা ইত্যাদি নানা অভিযোগে অভিযুক্ত এই গোল্ডেন মনির।

এরপর আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা সূত্রে জানায়, তাদের কাছে খবর ছিল যে, বিভিন্ন নাশকতার ঘটনায় গোল্ডেন মনিরের হাত রয়েছে। আর সেই প্রেক্ষিতেই ২০২০ সালের ২১ নভেম্বরের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাবের অভিযানে গোল্ডেন মনির হিসেবে পরিচিত কথিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা নগদ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, চার লিটার মদ, ৮ কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল এবং কয়েক রাউন্ড গুলি। আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা সূত্রে জানা যায়, কার্যত সোনা চোরাচালানই ছিল মনিরের ব্যবসা। পরে তিনি জড়িত হন জমির ব্যবসায়। হুন্ডি ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালান, ভূমিদস্যুতার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। মনির ঢাকা ও আশপাশে গত ২ শতাধিক প্লটের মালিক হন। বাড্ডা, নিকেতন, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা, নিকুঞ্জ এলাকায় অবৈধভাবে নেওয়া ২ শতাধিক প্লট-ফ্ল্যাট তার আছে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনির ৩৫টি প্লটের কথা স্বীকার করেছে। জমির ব্যবসায় নেমে রাজউকের বর্ধিত ভবনে একটি অফিস খুলে বসে সে, সেখান থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ শুরু করে। রাজউকের বিভিন্ন ধরনের তদবির, জমির কাগজ তৈরি, নকল ফাইল তৈরি করাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে থাকে। রাজউকের বহু প্লট তার দখলে। রাজউকের ৭০টি ফ্ল্যাটের নথি নিয়ে গিয়ে আইনবহির্ভূতভাবে হেফাজতে রাখায় ২০১৯ সালে মনিরের বিরুদ্ধে রাজউক কর্তৃপক্ষ মামলা করে। এ ছাড়া দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করায় তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলাও চলমান।

বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সঙ্গে জড়িত এই গোল্ডেন মনির। তার মধ্যে রয়েছে- মনির বিল্ডার্স, গার্লস অটোকারস লিমিটেড, উত্তরার গ্র্যান্ড জমজম টাওয়ার। এসব প্রতিষ্ঠানের অন্যতম পরিচালক এই গোল্ডেন মনির। জমজম টাওয়ারে মনিরের মালিকানার মূল্যমান প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। বারিধারায় গোল্ডেন গিয়ার নামে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকান রয়েছে তার। বাড্ডার ১১ নম্বর সড়কে সাড়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের দুটি এবং দুই কোটি টাকা দামের প্লট রয়েছে। এমনকি বাড্ডায় ১০ নম্বর সড়কে একটি ছয়তলা শপিং সেন্টারও আছে। উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে মনিরসহ চারজনের অংশীদারিত্বে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের পাঁচ বিঘা জমি রয়েছে। এর বাইরে কেরানীগঞ্জে প্রচুর জমিজমা ও প্লট আছে।

সম্প্রতি স্বদেশ প্রোপার্টিজের শেয়ার মালিকদের তালিকায় দেখা যায় মনির হোসেনের নাম। সেখানে দেখা যায় তাঁর নামে রয়েছে ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকার শেয়ার। ফলে প্রশ্ন ওঠেছে, কারাগারে বসেই কি মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির এই স্বদেশ প্রোপার্টিজের মালিকানা কিনলেন নাকি কারাগারের বাইরে থেকে এই লেনদেন করলেন? এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে এখন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

তৃতীয় লিঙ্গের ক্ষমতায়ন: এলডিডিপি প্রকল্পের নীরব বিপ্লব (ভিডিও)

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ০৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

খায়রুন তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর একজন। তবে সে আর দশজনের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে না, মানুষের কাছে চাঁদা চায় না কিংবা কারো কারো মতো অশ্লীল আচরণ করে মানুষকে বিব্রতও করে না। সময় করে একটু ঘাস কাটে, বাচ্চাকে সময় দেয়। তার পরিবারের সদস্যের যত্ন করতেই তার বেশির ভাগ সময় যায়। এভাবেই ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত হয় তার। যত স্বপ্ন পুরো পরিবার নিয়েই। সেই স্বপ্ন পূরণে সে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ধাপে ধাপে। আর স্বপ্ন পূরণে সহযাত্রী হয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)।

বলছি, সিরাজগঞ্জ সদরের কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের খায়রুন হিজড়ার কথা। যিনি একজন তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মানুষ। তবে এখন তার বড় পরিচয় হলো তিনি একজন পুরোদমে খামারি এবং প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পিজি গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য। তার আইডি নম্বর ৬৮৮৭৮-এসসি-০৩-১১। শুরুতে ২০টি উন্নত জাতের মুরগি দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে গরুর সংখ্যা ৫টি, ছাগল রয়েছে ৮টি। এছাড়া বেশ কিছু মুরগিও রয়েছে তার খামারে। দু মাস আগে একটি ছাগল বাচ্চাও দিয়েছে।

শুরুটা ২০টি মুরগি দিয়ে শুরু করলেও তেমন সুবিধা করতে পারেননি খায়রুন হিজড়া। কোন অজ্ঞাত রোগে দু-একটি মুরগি মারা গেলে যোগাযোগ করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় তাকে পরামর্শ দেন সেগুলো বিক্রি করে যেন তিনি ছাগল বা অন্য কিছু কেনেন এবং সেগুলো দিয়ে খামার করেন। এরপর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পরামর্শে তিনি মুরগিগুলো প্রায় ১০ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করে পাঁচ হাজার টাকা দরে দুটি ছাগল কেনেন। এরপরই যেন ঘুরে যায় খায়রুন হিজড়ার ভাগ্যের চাকা। এখন তার খামারে ছাগলের সংখ্যা ৮টি। একইভাবে ছাগলের পাশাপাশি একটি গরু দিয়ে শুরু করলেও এখন তার গরুর সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫টি। এতে করে দৈনিক তিনি ৭ থেকে ৯ লিটার গরুর দুধ বিক্রি করতে পারেন তিনি।

খায়রুন হিজড়া বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, আমি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে ট্রেনিং করেছি। এরপর তারা আমাকে ২০টি মুরগি দেয়। কিন্তু সেগুলো দিয়ে বেশি সুবিধা করতে পারিনি। সেজন্য ‍মুরগি গুলো বিক্রি করে আমি ছাগল কিনেছি। পরে একটা সময় আমি একটি গরু কিনি। এখন আমার খামারের ৫টি গরু এবং ৮টি ছাগল এবং বেশ কিছু মুরগি রয়েছে।

এই খামার নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন থাকে একদিন সে ছোট থেকে বড় হবে। আমারও স্বপ্ন আছে একদিন আমি বড় খামারি হব। সেজন্য এখানে আমার বিনিয়োগ দরকার। যেটা আমার জন্য কঠিন বা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের। কারণ আমরা হিজড়া (তৃতীয় লিঙ্গ) হওয়ার কারণে কেউ আমাদের ঋণ দেয় না, দিতেও চায় না। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ পাওয়ার আমাদের জন্য দুষ্কর। সেজন্য সরকার থেকে যদি আমাদের বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে তাহলে আমি যেমন আরও এগিয়ে যেতে পারব তেমনি আমার মতো হাজারো হিজড়া স্বাবলম্বী হবে। তাদেরকে কারও কাছে আর হাত পাততে হবে না। এছাড়া সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ মুরগির পরিবর্তে যদি ছাগল বা গরু দেয়া হয় তাহলে বেশ ভালো হবে। 

জানা যায়, দেশব্যাপী প্রান্তিক খামারিদের নিয়ে প্রোডিউসার গ্রুপ (পিজি) গঠন করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। উদ্দেশ্য এসব পিজিগুলোর মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিদেরকে সংগঠিত করে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা। বিশেষ করে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ইত্যাদি পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সাধনে কাজ করা। 

সারাদেশে মোট ৬৫০০টি পিজি গ্রুপ রয়েছে। প্রতিটি গ্রুপে সদস্যের সংখ্যা প্রায় ২০ থেকে ৪০ জন। মোট ৬৫০০ পিজি গ্রুপের মধ্যে সিরাজগঞ্জের এটি একটি এবং একমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের পিজি গ্রুপ।

পিজি গ্রুপে শুধু খায়রুন হিজড়া একা নয়, তার সাথে আছে আরও ১৪ জন অর্থাৎ মোট ১৫ জন পিজি গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন সোহাগী হিজড়া (৬৮৮৭৮-এসসি-০৩-১২), মো: সবুজ ওরফে সংখিনী (৬৮৮৭৮-এসসি-০৩-১৩), সেতু হিজড়া (৬৮৮৭৮-এসসি-০৩-১৫) সহ আরও কয়েকজন। যারা প্রত্যেকে পিজি গ্রুপের সক্রিয় সদস্য।

সিরাজগঞ্জ জেলার হিজড়া (তৃতীয় লিঙ্গ) সমিতির সভাপতি মো: ওমর ফারুক রাব্বি বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্তৃক গঠিত ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়াদের নিয়ে গঠিত ১৫ সদস্যের পিজি দল নিয়ে আমরা কাজ করছি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর আমাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে। আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকি। গবাদি পশু থেকে শুরু করে লৈঙ্গিক বৈচিত্র্যের জনগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কে, পিজি দলের দায়িত্ব-কর্তব্য কি, দলের সভাপতি, ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব কর্তব্য সর্ম্পকে এবং পিজি দলের নীতিমালা সম্পর্কে জেনেছি। 

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যেক সদস্য প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে সঞ্চয় রাখি। রাজশাহী ‍কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে আমাদের পিজি দলের একটা একাউন্ট আছে। শুরুতে উপজেলা থেকে আমাদের ২০টি করে মুরগি দেয়া হয়। আমরা সেগুলো লালন পালন করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। পিজি দলের পক্ষ থেকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে আমাদের অনুরোধ আমাদের যেন গরু এবং ছাগল দেয়া হয় তাহলে আমরা আরও ভালো ভাবে স্বাবলম্বী হতে পারব। ফলে মানুষের কাছেও আমাদের আর হাত পাততে হবে না। আমরাও কর্ম করেই খেতে চাই। কারও মুখাপেক্ষী হতে চাই না। আমরা একটা দল গঠন করে দেখিয়েছি যে, হিজড়ারা সমাজের মূল স্রোতে এসে কাজ করে খেতে চায়। সমাজের সহযোগিতা পেলে আমরাও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবো।

সিরাজগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, আমরা যখন রাস্তা ঘাটে বের হয় তখন দেখা যায় যে, রেল স্টেশন বা বাজারগুলোতে তারা (হিজড়া) অন্যের কাছে হাত পাতে। যেহেতু এলডিডিপি প্রকল্প থেকে সুযোগ ছিলো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূল স্রোতে নিয়ে আসা। এরই অংশ হিসেবে তৎকালীন রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ডা. নজরুল ইসলাম ঝন্টু স্যারের মাথায় প্রথম এই ধারণা আসে। এদেরকে নিয়ে যদি একটা দল গঠন করা যায় তাহলে এরা মানুষের দ্বারে দ্বারে যে হাত পাতে এটা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে এবং আমাদের সমাজের মূল স্রোতে তারা চলতে পারবে। তারাও আমাদের সমাজে কন্ট্রিবিউট করতে পারবে। এই চিন্তা থেকেই আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে সেটা প্রস্তাব করি। কর্তৃপক্ষ সেটা গ্রহণ করে। এরপর আমরা তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে শুরুতে ২০টি করে মুরগি দিয়েছি। পাশাপাশি মুরগির খাদ্য এবং পাত্র দিয়েছি। সেখানে থেকে তারা এখন একটা ভালো অবস্থানে আছে। 

সিরাজগঞ্জের এই হিজড়া পিজি গ্রুপ একটা দৃষ্টান্ত উল্লেখ্য করে উপজেলা এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, হিজড়া নিয়ে আরও বৃহৎ পরিসরে কিভাবে কাজ করা যায় আমরা সেটা নিয়ে এগোচ্ছি। সিরাজগঞ্জ জেলায় ২০০৫ জন হিজড়া রয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে এই রকম দল আরও বাড়ানো যায় কিনা। এখন আমরা শুরুতে তাদের শুধুমাত্র মুরগি দিয়ে থাকি। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে তাদেরকে যেন আমরা গরু বা ছাগলও দিয়ে পারি সেটা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। তাদের নিয়ে যদি আমরা আরও বড় পরিসরে কাজ করতে পারি তাহলে সমাজে একটা বিপ্লব ঘটবে।


তৃতীয় লিঙ্গ   এলডিডিপি প্রকল্প   সিরাজগঞ্জ   প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

ফখরুলের রাজনীতি ছাড়ার বার্তা

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন—এমন বার্তা তিনি দিয়েছেন দলের একাধিক শীর্ষ নেতাকে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকেও তার অভিপ্রায়ের কথা জানিয়েছেন বলে একটি সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। তবে তারেক জিয়া তাকে এখনই রাজনীতি না ছাড়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন বলেও সেই সূত্রটি বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছে। 

উল্লেখ্য যে, এখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব। তার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। ২৮ অক্টোবরের বিএনপির তাণ্ডবের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই সময়ে তিনি সাড়ে তিন মাসেরও বেশি জেলে ছিলেন। জেলে থাকাকালীন সময় তার বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে বলে তার পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে তার হার্টের যে পুরনো সমস্যা তা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। সিঙ্গাপুরে যে চিকিৎসককে মির্জা ফখরুল দেখিয়েছেন বা যাকে তিনি নিয়মিত দেখান, তিনি তাকে এখন বেশি করে বিশ্রাম নেওয়া, চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করা এবং কোন রকম স্ট্রেস না নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে পারিবারিকভাবে তার ওপর চাপ এসেছে যে রাজনীতির চাপ কমিয়ে ফেলার জন্য।

বিএনপির মহাসচিব হিসেবে শুধু নয়, বিএনপির এখন তিনিই প্রধান সার্বক্ষণিক নেতা। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পেয়ে ফিরোজা অবস্থান করছেন। তিনি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে না। অন্যদিকে তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক। তিনিও একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা সহ একাধিক মামলায় দণ্ডিত। এরকম বাস্তবতায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর দল পরিচালনার দায়িত্ব এসেছে এবং তিনি সার্বক্ষণিকভাবে দলের জন্য কাজ করছেন। তাই তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে বলে তার বিভিন্ন ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে। বিশেষ করে সাড়ে তিন মাস কারা জীবনের সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শরীরে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে বলেও তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। এই সমস্ত শারীরিক সমস্যাগুলো ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করেছে। আর এ কারণে তার দীর্ঘমেয়াদি বিশ্রাম প্রয়োজন বলেও চিকিৎসকরা তাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। সবকিছু মিলিয়ে রাজনীতির মাঠে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে ভাবে সক্রিয় ছিল, তেমনটি তার পক্ষে সক্রিয় থাকা আর সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। 

চিকিৎসকের সাথে পরামর্শের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় বিএনপির অন্তত দু জন নেতাকে জানিয়েছেন যে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। ডাক্তার তাকে দীর্ঘ বিশ্রামের কথা বলেছেন। এই অবস্থায় মহাসচিবের দায়িত্ব তার পক্ষে পালন করা কতটুকু সম্ভব, সেই নিয়ে তিনি নিজেই সন্দিহান। তবে বিএনপি রাজনীতি থেকে তিনি দূরে যাবেন না। বিএনপির সঙ্গেই তার রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকবে। 

একজন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে টেলি আলাপকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। এই দলের জন্য তিনি জীবন উত্সর্গ করতে প্রস্তুত এমন বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হল যে তিনি দলের পূর্ণকালীন দায়িত্ব পালনের মতো শারীরিক অবস্থায় নেই। 

উল্লেখ্য যে, বিএনপির একাধিক নেতা এখন শারীরিক ভাবে অসুস্থ এবং দায়িত্ব পালনে অক্ষম। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে রোগ শোকের সঙ্গে লড়াই করছেন। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও তিনি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন না। বিএনপির আরেক নেতা জমির উদ্দিন সরকার বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন। তাকেও দলের কর্মকাণ্ডে খুব একটা দেখা যায় না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াও দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। এই অবস্থায় ফখরুলও যদি অসুস্থ হয়ে রাজনীতির থেকে দূরে যান তাহলে কিএনপির হাল ধরবে কে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বিএনপি   তারেক জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

গ্রামীণ কল্যাণ নিয়ে ইউনূসের ভয়ঙ্কর জালিয়াতি

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

জালিয়াতি করে অবশেষে গ্রামীণ কল্যাণেও ফেঁসে যাচ্ছেন ড. ইউনূস। রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করার ক্ষেত্রে ড. ইউনূস প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন, আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিজের কুক্ষিগত করেছেন। বাংলা ইনসাইডার এর অনুসন্ধানে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। 

সম্প্রতি গ্রামীণ ব্যাংক তার নিজস্ব সম্পত্তি হিসেবে গ্রামীণ কল্যাণ দখলে নিয়েছে। আর এটিকে জবরদখল হিসেবে অভিহিত করেছেন ড. ইউনূস। ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংক তাদের বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের আলোকে গ্রামীণ কল্যাণ এবং তার প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের নিজস্ব চেয়ারম্যান পদে নিয়োগদান করেন। আর ড. ইউনূস দাবি করেছেন যে গ্রামীণ কল্যাণের সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কোন সম্পর্ক নেই। 

আসলে কে সত্য? 

বাংলা ইনসাইডার এ বিষয়ে অনুসন্ধান করছে। বিশেষত গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূস ডয়েচ ভেলে-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন যে, এখন গ্রামীণ কল্যাণের সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কোন সম্পর্ক নেই। একই ভাবে ড. ইউনূসের পক্ষে ৩৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি গত রোববার এক বিবৃতি পাঠিয়েছেন। তাতে তারা অভিযোগ করেছেন যে ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করার প্রচেষ্টা সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ এর প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকম ভবনে অবস্থিত গ্রামীণ কল্যাণ এবং গ্রামীণ টেলিকম সহ এ সব প্রতিষ্ঠান জবর দখলের প্রচেষ্টা হিসাবে এতে অনধিকার এবং জোরপূর্বক প্রবেশ, ভবনটির সামনে রাজনৈতিক সমাবেশ করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করছেন। 

এই ৩৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ড. ইউনূসের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এসব অলাভজনক প্রতিষ্ঠান প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সংশোধিত আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আনার এখতিয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের নেই বলে ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোন আইনগত দাবি থাকলে তা আদালতের কাছে উপস্থাপন করার উদ্যোগ গ্রামীণ ব্যাংক গ্রহণ করতে পারত বলে তারা উল্লেখ করেছেন। একই বক্তব্য ড. ইউনূস দিয়েছেন। অর্থাৎ ড. ইউনূস গ্রামীণ কল্যাণের আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন পরিবর্তন করেছেন। 

আমরা অনুসন্ধান করার চেষ্টা করি গ্রামীণ কল্যাণ কীভাবে গঠিত হয়েছিল

১৯.১২.১৯৯৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের ৩৪ তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাতাগোষ্ঠীর প্রাপ্ত অনুদান ও ঋণের অর্থ দিয়ে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড এর অর্থ দিয়ে ২৫.০৪.১৯৯৬ তারিখে গ্রামীণ ব্যাংকের ৪২ তম বোর্ড সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ও কর্মীদের কল্যাণের কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর আওতায় গ্রামীণ কল্যাণ নামক একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদনটি দেয় গ্রামীণ ব্যাংক। তাহলে ওই গ্রামীণ কল্যাণ কার প্রতিষ্ঠান? উত্তর, আইনগত দিক থেকে যদি উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়, খুব সহজ সোজা সাপ্টা উত্তর গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠান। 

গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভায় গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং গ্রামীণ কল্যাণে গ্রামীণ ব্যাংকের সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড হতে মোট ৬৯ কোটি টাকা প্রদান করা হয়। অর্থাৎ যে প্রতিষ্ঠানটিকে টাকা দিয়ে তৈরি করা হল সেই গ্রামীণ কল্যাণ আসলে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কিছু নয়। 

শুধু তাই নয়, পাঠক লক্ষ করুন, মেমোরেন্ডাম এবং আর্টিকেল অনুযায়ী গ্রামীণ কল্যাণের নয় সদস্যের পরিচালনা পরিষদের দুইজন সদস্য গ্রামীণ ব্যাংক হতে মনোনয়ন দেওয়ার বিধান ছিল। এছাড়াও উল্লেখ ছিল যে, গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান হবেন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে মনোনীত প্রতিনিধি। 

এখন প্রশ্ন হল যে, এটি গ্রামীণ কল্যাণের আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন। ড. ইউনূস দাবি করেছেন যে, এই আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন তিনি পরিবর্তন করেছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভায় যে আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করা হচ্ছে সেই আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন গ্রামীণ ব্যাংকের অগোচরে রাতের অন্ধকারে ড. ইউনূস পরিবর্তন করেছেন কীভাবে? 

এবার আসুন আসল তথ্য অনুসন্ধান করে দেখি। যখন ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থেকে বয়সজনিত কারণে অপসারিত হন, তখনই তিনি জানতেন যে, গ্রামীণ কল্যাণ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশন লি:, গ্রামীণ শিক্ষা ইত্যাদি তার কর্তৃত্বে আর থাকবে না এই সময় তিনি প্রতারণামূলকভাবে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভুল প্রলোভন দেখিয়ে এই কোম্পানির সদস্যদের দিয়ে একটি বোর্ড সভা করেন। এই বোর্ড সভা করে আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন পরিবর্তন করেন। অথচ এই আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন পরিবর্তন করতে গেছে গ্রামীণ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের ৪২ তম বোর্ড সভায় এই আর্টিকল অফ অ্যাসোসিয়েশন অনুমোদিত হয়েছিল। গ্রামীণ ব্যাংক একমাত্র সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাখে আইন অনুযায়ী যে গ্রামীণ ব্যাংক তার প্রতিনিধি গ্রামীণ কল্যাণে থাকবে কিনা। গ্রামীণ কল্যাণকে যদি ছেড়ে দিতে হয় তাহলে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ড. ইউনূস এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কোন এখতিয়ার রাখে না। এটি হল এক অদ্ভুত জালিয়াতি এবং প্রতারণা। এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। ড. ইউনূসের নিয়ন্ত্রণে থাকা গ্রামীণ কল্যাণ কেবল অবৈধ ভাবেই ছিল না বরং ড. ইউনূস রাষ্ট্রীয় সম্পদ কুক্ষিগত করেছিলেন, প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং এজন্য তার বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে প্রতারণার মামলা হওয়া উচিত বলে মনে করেন আইনজ্ঞ বিশেষজ্ঞ।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

কোকোর সম্পত্তি তারেকের কুক্ষিগত: মামলা করবেন সিঁথি

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী যখন পালিত হচ্ছে, ঠিক সেই সময় জিয়া পরিবারের সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে চলছে তুমুল গণ্ডগোল। বিশেষ করে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সব সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এই অভিযোগে সিঁথি তার আইনজীবীর মাধ্যমে একটি আইনগত নোটিশ পাঠিয়েছেন তারেক জিয়ার কাছে। 

এর আগে সিঁথি ঢাকায় এসেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার কাছে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই সময় ছিলেন অসুস্থ। সে কারণে তিনি এ ব্যাপারে কোন সুরাহা দিতে পারেননি। তাছাড়া এই সম্পত্তির বিষয় সম্পর্কে বেগম খালেদা জিয়াও ততটা অবহিত নন।

একাধিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় যান আরাফাত রহমান কোকো এবং মালয়েশিয়া তার বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ ছিল। দেশে বিভিন্ন দুর্নীতি এবং অনিয়মের মাধ্যমে যে সম্পদ করেছিলেন তার একটি বড় অংশই প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো পাঠিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। সেখানে মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতির মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন ব্যবসায় সেই টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। মালয়েশিয়া ছাড়াও সিঙ্গাপুরে আরাফাত রহমান কোকোর বেশ কিছু বিনিয়োগ ছিল। এই বিনিয়োগের পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি বলে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মালয়েশিয়ায় আরাফাতের একটি ট্র্যাভেল এজেন্সি, দুটি অ্যাপার্টমেন্ট, পাঁচটি দোকান এবং আরও কিছু সম্পদ রয়েছে। এই সম্পদগুলো কোকো মারা যাওয়ার পর কিছুদিন বিএনপির মালয়েশিয়ায় থাকা ওই নেতার হেফাজতে ছিল। এই সময় কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি সম্পত্তিগুলো নিজের নামে নেওয়ার জন্য চেষ্টা তদবির করেন। কিন্তু এসময় তারেক জিয়া কোকোর সন্তানদের উচ্চশিক্ষার কথা বলে তাকে লন্ডনে নিয়ে আসেন এবং সিঁথি লন্ডনে আসার পর তারেক মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে ঐ সম্পদগুলো গ্রহণ করেন। এর বিনিময়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বিএনপির ওই নেতাকে ২০১৮ নির্বাচনে মনোনয়নও দিয়েছিলেন তারেক। এরপর সিঁথি যখন সম্পত্তিগুলোর অধিকার চান এবং সম্পত্তিগুলোর হালহকিকত জানতে চান তখন তারেক জিয়া বলেন, এগুলো সব বিক্রি করার প্রক্রিয়া চলছে। বিক্রি হলে সম্পত্তি বিক্রির টাকা সিঁথিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে এবং সিঁথি যেন বাকি জীবন সন্তানদের ভরণপোষণ এই টাকা দিয়ে করতে পারেন সেজন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিঁথি প্রথম এই বিষয়টি মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু বছরের পর বছর চলে গেলেও সিঁথিকে কোন টাকা দেওয়া হয়নি। বরং একটা পর্যায়ে তারেক সিঁথির জন্য যে ভরণপোষণের খরচ দিতেন সেই খরচও বন্ধ করে দেন।

লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তের পর বেগম খালেদা জিয়ার অনুরোধে ২০১৬ সাল থেকে সিঁথির যাবতীয় ভরণপোষণের ব্যবস্থা করছেন সৌদি আরবে পলাতক মোসাদ্দেক আলী ফালু। ফালু কোকোর ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলেন। সেই সূত্রে বিভিন্ন ব্যবসা থেকে যে লভ্যাংশের টাকা সিঁথিকে পাঠানো হয় এবং সেটি দিয়ে সিঁথি চলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে গত সিঁথি তার প্রয়াত স্বামীর সম্পত্তি পাওয়ার জন্য দেন দরবার করেন। এরপর তিনি লন্ডনে অবস্থানরত একজন আইনজীবীর মাধ্যমে তারেক জিয়াকে একটি উকিল নোটিশ পাঠান। কিন্তু তারেক জিয়া এই উকিল নোটিশের কোন জবাব দেননি। এরপর সিঁথি ঢাকায় আসেন, বিষয়টি বেগম খালেদা জিয়াকে জানানোর। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়াও বিষয়টির কোন সুরাহা করতে পারেনি।

জানা গেছে, সিঁথি এই বিষয়টি নিয়ে খুব শিগিগির আইনের আশ্রয় নিবেন এবং এই মালয়েশিয়া আদালতে তিনি আইনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবেন। এজন্য একজন আইনজীবীরও শরণাপন্ন হয়েছে সিঁথি এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

শর্মিলা রহমান সিঁথি   বিএনপি   খালেদা জিয়া   তারেক জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

দলের নেতৃত্ব ছেড়ে উপদেষ্টা পদ নিতে পারেন তারেক

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। দেশে বিদেশে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই ভাবে প্রশ্ন উঠেছে কিভাবে বিএনপিকে পুনর্গঠন করা যায়? বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য বিএনপির খোলনলচে পাল্টে ফেলার দাবি উঠেছে দলের ভিতর থেকেই। 

নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তারেক জিয়ার প্রশংসায় যারা পঞ্চমুখ ছিলেন তারাই এখন তারেক জিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিশেষ করে বিদেশে থেকে দল পরিচালনা করা যায় কিনা এই প্রসঙ্গটি উঠেছে। একই ভাবে বিদেশি কূটনীতিকরা বলছেন, একজন দণ্ডিত ব্যক্তি এবং যিনি দেশে অবস্থান করছেন না, তিনি যদি দলের নির্বাহী প্রধান হন তাহলে সেই দল পরিচালনা করা কতটুকু গণতান্ত্রিক এবং কতটুকু শোভন। আর এই সমস্ত প্রেক্ষাপটে তারেক জিয়ার বিএনপিতে অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে। তিনি এখন বিএনপির জন্য একটি দায়ে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে বিএনপির নীতি নির্ধারক মহলে কথাবার্তা হচ্ছে এবং আলাপ আলোচনা হচ্ছে। তারেক জিয়া নিজেও গতকাল বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে দলের স্বার্থে প্রয়োজনে সরে যাওয়ার কথা বলেছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

গতকাল রাতে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মিলিত হয়েছিলেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। তিনি সেখানে তার নিজের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন। বিদেশ থেকে তিনি বাংলাদেশের অনেক বাস্তবতা বোঝেননি। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের পরে যে আচরণ করছেন তাতেও তারেক জিয়া হতাশা প্রকাশ করেছেন বলে একাধিক বিএনপি নেতা জানিয়েছেন। আর এরকম বাস্তবতার সাময়িক সময়ের জন্য হলেও বা দেশে না ফেরা পর্যন্ত সময়ে তিনি নেতৃত্ব যিনি বাংলাদেশে আছেন এ রকম কারও হাতে তুলে দিতে চান।

উল্লেখ্য, এই বৈঠকে বিএনপি নেতারা বলেছেন, যেহেতু এখনও দলের শীর্ষ তিনজন নেতা কারা অন্তরীণ আছেন, কাজেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাদের মুক্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস এবং আমীর খসরু মাহমুদের জামিনের আবেদন গুলো এখন প্রক্রিয়াধীন আছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং আমীর খসরু মাহমুদের একটি মামলায় জামিন শুনানি বাকি আছে। সেখানেও তারা জামিন পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আর এই জামিন পেলে স্থায়ী কমিটির সকল সদস্যকে নিয়ে তারেক জিয়া এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নেবেন। 

তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ একজন তরুণ নেতা বলেছেন, তিনি আপাতত দায়িত্ব ছাড়তে চাচ্ছেন। বিএনপির তিনি কোন আলঙ্কারিক পদ উপদেষ্টা বা প্রধান উপদেষ্টা এ রকম কোন দায়িত্ব গ্রহণ করতে চাইছেন। 

মূল বিষয়টা হচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার গ্রহণযোগ্যতা সংকট রয়েছে। বিশেষ করে বিদেশি কূটনীতিকরা তার সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। নির্বাচনের পর তারেক জিয়া একাধিক কূটনীতিকের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ করতে চাইলেও তারা এড়িয়ে গেছেন। তাছাড়া লন্ডনে অবস্থানরত এই দণ্ডিত নেতা এখন বুঝতে পেরেছেন তিনি যে কৌশলগুলো প্রয়োগ করছেন সেই কৌশলগুলো কার্যত ব্যথ। এই সমস্ত কৌশল দিয়ে আন্দোলন করা যাবে না। আর বাস্তবতা হলো ভারত সহ প্রভাবশালী দেশগুলো বিএনপিকে গণতান্ত্রিক ধারায় সম্পৃক্ত হতে তারেক জিয়ার নেতৃত্বকে বাদ দেওয়া পরামর্শ দিচ্ছেন। এই প্রেক্ষিতে বিএনপিতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নাটকীয় ঘটনা ঘটেতে পারে। বিএনপির নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে তারেক জিয়া হয়তো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ থেকে বিএনপির উপদেষ্টা হবেন। আর আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের জন্য একজন কার্যকর নেতা নির্বাচন করা হবে। আর এটি যদি করা হয় তাহলে হবে বিএনপির জন্য একটি বড় চমক।

বিএনপি   তারেক জিয়া   রাজনীতির খবর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন