নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২১ জুলাই, ২০১৮
গোটা বিশ্ব তাঁকে চিনতো একজন প্লেবয় হিসেবে, যিনি ১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। ১৯৫২ সালে লাহোরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া ইমরান খান অক্সফোর্ডে দর্শন, অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ১৮ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যেই পাকিস্তানের হয়ে প্রথম ক্রিকেট খেলেছিলেন তিনি।
ব্যাট ও বল হাতে সমান পারদর্শী ইমরানকেই ক্রিকেটে পাকিস্তানের পরাশক্তি হয়ে ওঠার অন্যতম কারিগর বলা হয়। ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়ার পর দেশের বির্পযস্ত অবস্থায় সেই ইমরানই রাজনীতির মাঠে আবির্ভূত হন। তবে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের মূল বাধা ছিল নিজের ব্যক্তিগত জীবন। বিয়ে করেছিলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য জেমিমা গোল্ডস্মিথকে। ধর্মান্তরিত হওয়া জেমিমার সঙ্গে তাঁর ৯ বছরের সংসারের ইতি ঘটে ২০০৪ সালে। ২০১৫ সালে তিনি বিয়ে করেন পাকিস্তানি সাংবাদিক রেহাম খানকে, যে বিয়ের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র কয়েক মাস। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একসময়কার এই হার্টথ্রব ক্রিকেটার বিয়ে করেন তাঁর আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু বুশরা মানেকাকে।
ইমরান খানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারের চেয়েও দীর্ঘ। জীবনের একটা সময়ে নাইটক্লাবে সুপারমডেলদের নিয়ে মত্ত থাকা ইমরান রাজনীতিতে এসে অনেক পরিণত হয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। পাকিস্তানে রাজনীতি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে রাজনীতি নিরাপদ নয়। যদিও ইংল্যান্ডে এটা এক টুকরো কেকের মতো, আর যুক্তরাষ্ট্রেও অনেক সহজ একটি বিষয়। তবে এখানে আপনাকে মাফিয়াদের সঙ্গে লড়তে হবে, আর প্রাণ হারানোর আশঙ্কা তো আছেই।’
২৫ জুলাইয়ের সাধারন নির্বাচনের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতায় আসবে নতুন সরকার। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে পাকিস্তানের দুই রাজনৈতিক পরাশক্তিকে হারিয়েই ইমরানের পিটিআই পার্টিকে ক্ষমতায় আসতে হবে। ২০ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানকে তিনি দুর্নীতিমুক্ত করে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হবার দারপ্রান্ত থেকে তুলে আনবেন বলে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
অনেকেই তাকে তালেবানের বিরুদ্ধে যথেষ্ট কঠোর না হবার জন্য সমালোচনা করে থাকেন। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের এক স্কুলে ১৪৯ জনকে হত্যা করা হয়, যার মধ্যে ১৩২ জনই ছিলো শিশু, এমনকি তালেবানরা নিজেরাই এর দায় স্বীকার করেছিলো। ২০১৬ সালে ইমরানকে ওসামা বিন লাদেন সন্ত্রাসী ছিলেন কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অনেকেই তাঁকে তালেবান খান বলে অভিহিত করে থাকেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের উদয় হয় রাজনীতি থেকেই, ধর্ম থেকে নয়।’
গত বছর সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দুর্নীতি প্রকাশ পাবার পর পাকিস্তানের অধিকাংশ জনগণ প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দলের ওপর রীতিমতো ক্ষুব্ধ। ইমরান এটাকেই তার শক্তি হিসেবে দেখছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জনসমর্থণের ওপর ভর করে, হাইকোর্টে পিটিশনের মাধ্যমে নওয়াজকে রাজনীতি থেকে আপাতত নির্বাসনে পাঠাতে সফলও হয়েছেন তিনি।
পারমানবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ পাকিস্তানে বর্তমানে অর্থনৈতিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বাণিজ্য ঘাটতি ৩৬ বিলিয়নের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সরকারি তথ্যমতে, দেশটির ২৯.৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে এবং শিক্ষার হার মাত্র ৫৮ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্র ১৬ বছর ধরে আফগানিস্তান যুদ্ধের সাপ্লাই রুট হিসেবে পাকিস্তানকেই ব্যবহার করে আসছে। পাক সামরিক বাহিনীও যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন দেয়। কিন্তু নিজেদের প্রয়োজনে তালেবানের মতো সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকেও লালনপালন করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ২০১৮ সালের প্রথম টুইটবার্তায় বলেছিলেন, পাকস্তানকে দেওয়া ৩৩ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা আর বেঈমানি ছাড়া আর কিছুই পায়নি। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা সহায়তা বাবদ দেশটিকে দেওয়া ২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান বাতিল করেছেন। পাকিস্তান বিনামূল্যে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে সেগুলোও প্রত্যাহার করতে চান বলে জানিয়েছেন।
ইমরান বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান যুদ্ধে পাকিস্তানকে ব্যবহার করেছে। বিনিময়ে যা পেয়েছে তা হলো, ৭০ হাজার পাকিস্তানির মৃত্যু, ১০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং দুর্বল হয়ে পড়া জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের দাসত্ব বরণ করার বিরুদ্ধে হাজার হাজার সমর্থক নিয়ে তিনি বিক্ষোভও করেছেন।
ট্রাম্প সম্পর্কে ইমরানের মন্তব্য হলো, তিনি একজন উম্মাদ এবং ইসলাম সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই। মুসলিমদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়ে এবং বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তিনি বিশ্বজুড়ে ইসলামভীতি জাগিয়ে তুলতে চাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে থাকলেও ইমরান নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বলে মনে করেন না। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তে প্রতিবেশী পরাশক্তি ও ইসলামাবাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার চীনের দিকেই তাঁর দৃষ্টি থাকবে। পাকিস্তান চীনা অস্ত্রের বৃহত্তম ক্রেতারাষ্ট্র। বেইজিংয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ককে ইমরান একটি আকর্ষণীয় সুযোগ হিসেবেই দেখছেন।
নির্বাচনে ইমরানের জয়লাভ করার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবুও তিনি ২০১৩ সালের নির্বাচনের চেয়ে বেশি সমর্থন পাচ্ছেন, সেবার তার দল পিটিআই তৃতীয় সর্বাধিক ভোট পেয়েছিল।
উইড্রো উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, এবারের নির্বাচনে পিটিআই যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে। এর কারণ ইতিমধ্যেই ইমরান একজন দুর্নীতিবিরোধী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিতি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
ইমরান অবশ্য কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক কিংবা কোনো জরিপকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁর মতে, মিডিয়া ও জরিপে জনমতের ভুল চিত্রও প্রকাশ পেতে পারে, যেটা ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে হয়েছিল। তবে তাঁর রক্ষণশীল নীতি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিজের অনুকূলে ব্যবহার করার কারণে অনেকেই তাকে ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা করছেন।
অনেকেই যে প্রশ্নটি করছেন সেটা হলো, ইমরান কি তবে ‘পাকিস্তানি ট্রাম্প’ হতে যাচ্ছেন? বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের এমন একটি প্রশ্নের উত্তরে এই কিংবদন্তি হেসে বলেন, আমি ট্রাম্পের ঠিক উল্টোটা। আমাকে বরং বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে তুলনা করা যায়।’
সূত্র: টাইম
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ
মন্তব্য করুন
ভারতে বিজেপির উত্থান হলেও দক্ষিণের রাজ্য কেরালার চিত্র একেবারেই বিপরীত। বামদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কেরালা একমাত্র রাজ্য, যেখানে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কখনো একটি আসনও জেতেনি। রাজ্যটি দখলে প্রাণপণ চেষ্টা করলেও গেরুয়া শিবির কেন তা পারছে না? রাজ্যটিতে বিজেপির পিছিয়ে থাকার কারণ কী?
স্বাধীনতার পর থেকে কেরালা রাজ্য বিধানসভায় ক্ষমতায় বসতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি। দেশটির দক্ষিণের এ রাজ্যে বরাবরই বাম-কংগ্রেসের প্রতি সমর্থন দিয়ে আসছে জনগণ। প্রগতিশীল মানুষের ঘনত্বের গড় বিচারে কেরালা রাজ্যটির অবস্থান সবার ওপরে।
শুধু তাই নয়, শিক্ষাতেও এগিয়ে রাজ্যটি। অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং আধুনিকতা ছাড়াও এ রাজ্যের মানুষ ভারতের অন্য রাজ্যের তুলনায় চিন্তাশীল, বন্ধুত্বপরায়ণ এবং গঠনমূলক বলেও মনে করা হয়। প্রশ্ন আসতে পারে, এসবের সঙ্গে বিজেপির জনপ্রিয়তা না বাড়া কিংবা ভোট না পাওয়ার সম্পর্ক কী?
বিজেপিকে এ রাজ্যে ভোট পেতে হলে রাজ্যটির ৪৫ শতাংশ অ-হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মত পেতে হবে। অর্থাৎ খ্রিষ্টান এবং মুসলমানদের ভোট পেতে হবে। নারী ভোটাররা এখানকার আরেকটি ট্রাম্প কার্ড। রাজ্যের মোট ভোটারের অর্ধেকের বেশি নারী; তারা রাজনৈতিকভাবে শুধু সচেতনই নন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ঘোর বিরোধী।
ধর্মীয় আবেগকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, বিহার, ঝাড়খন্ড, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবসহ বহু রাজ্যে বিজেপির রকেট গতিতে উত্থান হলেও কেরালায় বিজেপির সলতেতে আগুন তো দূরের কথা, তেলও দিতে পারছেন না শীর্ষ নেতারা।
গেলো লোকসভা নির্বাচনে ২০ আসনের রাজ্যটিতে বিজেপি শূন্য। একইভাবে ২০২১ সালের রাজ্যটির বিধানসভা ভোটেও বিজেপির ঝুলিতে যায়নি ১৪০ আসনের একটিও। পৌরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েতেও গেরুয়া শিবিরের উপস্থিতি টিমটিম করে জ্বলা বাতির মতোই।
যদিও এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি। তবে শেষ কথা বলবে কেরালার শিক্ষিত ও প্রগতিশীল ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বুধবার তেহরানে হাজার হাজার শ্রমিকের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের চাপ ও নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো ইরানকে তাদের সামনে নতজানু করা এবং তাদের পুরোপুরি অনুসরণে বাধ্য করা। কিন্তু ইতিহাস-ঐতিহ্যের অধিকারী মহান ইরানি জাতি ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র গুণ্ডামি ও বাড়াবাড়ির সামনে নত হবে না। ইরানি জাতি কখনই বৈশ্বিক অহংকার দ্বারা আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং নিষেধাজ্ঞাকে সুযোগে পরিণত করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, 'আমরা বহু বছর ধরে আমেরিকা এবং ইউরোপের কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন। তাদের নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য কী? তারা পারমাণবিক অস্ত্র এবং মানবাধিকারের কথা বলছে। এটা মিথ্যাচার। এগুলো কিছু নয়। সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা হচ্ছে এই অভিযোগে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। তাদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসবাদী কারা? গাজাবাসীরা সন্ত্রাসী!'
তিনি আরও বলেন, 'আমেরিকা ও ইউরোপের মতে গাজার জনগণ সন্ত্রাসী। একটি বদমাইশ, দখলদার ও অবৈধ সরকার মাত্র ছয় মাসে প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, এর মধ্যে শিশু রয়েছে কয়েক হাজার। এরপরও তারা সন্ত্রাসী নয়, কিন্তু যারা প্রতিনিয়ত বোমা হামলার মধ্যে রয়েছে তারা সন্ত্রাসী! ইহুদিবাদী ইসরায়েল (ফিলিস্তিনিদের) ক্ষেত-খামার ও ঘর-বাড়ি বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে যাতে উপশহর নির্মাণ করতে পারে। ফিলিস্তিনিরা তাদের কাছ থেকে জোর করে কেড়ে নেওয়া বাড়িটি রক্ষার চেষ্টা করছে। সে কীভাবে সন্ত্রাসী হতে পারে? তারাই সন্ত্রাসী যারা তাদের ওপর বোমাবর্ষণ করছে।'
মন্তব্য করুন
ইউক্রেনে গোপনে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ওইসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারওে শুরু করেছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ত্রগুলো গত মার্চ মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ৩০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্যাকেজের অংশ ছিল, যা চলতি মাসে কিয়েভে পৌঁছেছে।
মার্কিন মিডিয়ার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য ইতোমধ্যে অন্তত একবার ওই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
বুধবার ইউক্রেনের জন্য আরও ৬১ বিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা প্যাকেজ স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন।
এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) এর মধ্য-পাল্লার সংস্করণ সরবরাহ করেছিল। সে সময় আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা পাঠানো ব্যাপারে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছিল।
তবে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইউক্রেনে দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা- যা ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মাইল) পর্যন্ত দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম পাঠাতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, “আমি নিশ্চিত করতে পারি যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরাসরি নির্দেশে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র প্রদান করা হয়েছে।
ইউক্রেনের অপারেশনাল নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য তাদের অনুরোধে বিষয়টি এটি আগে ঘোষণা করা হয়নি বলে জানান তিনি।
ইতোমধ্যে কতগুলো ব্যালিস্টি অস্ত্র পাঠানো হয়েছে তা স্পষ্ট নয়, তবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, “ওয়াশিংটন আরও ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করছে, যা একটি পার্থক্য তৈরি করবে। কিন্তু আমি যেমন এই মঞ্চে আগেই বলেছি... কোনও রূপালী বুলেট নেই।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানতে গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে অধিকৃত বন্দর শহর বারডিয়ানস্কে রাশিয়ার সেনাদের ওপর হামলায় নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
ইউক্রেন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আমেরিকা
মন্তব্য করুন
নারী চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিলে রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যায়। একইসাথে নারী ডাক্তাদের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে পুনরায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবার সম্ভাবনাও অনেকাংশে কম।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে নারীদের সুনাম দীর্ঘদিনের। তবে এবার সামনে এসেছে নতুন তথ্য। গবেষণা বলছে, নারী চিকিৎসকের সেবা নেওয়া রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিকিৎসা ও গবেষণাবিষয়ক জার্নাল ‘অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন’ জানিয়েছে, নারী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মৃত্যুহার কম। এমনকি নারীদের কাছে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের পুনরায় হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনাও কম।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ১০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ে এ গবেষণা চালানো হয়েছে। এ সময়ে ৭ লাখ ৭৬ হাজার রোগীর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। এরমধ্যে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ১০০ নারী ও তিন লাখ ১৮ হাজার ৮০০ জন পুরুষ ছিলেন।
ওই গবেষণার ফলে বলা হয়েছে, নারী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মৃত্যু ও পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার কম ছিল।
এতে দেখা গেছে, নারী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া নারী রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। অন্যদিকে পুরুষ চিকিৎসকের কাছে নারী চিকিৎসা নেওয়া রোগীর মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
অন্যদিকে নারী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া পুরুষ রোগীদের মৃত্যুর হার ছিল ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর পুরুষ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া পুরুষ রোগীদের মৃত্যুর হার ছিল ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইয়োসুকে তুগাওয়া নামের এক গবেষক বলেন, নারী চিকিৎসকরা ভালো মানের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। সামাজিক দিক দিয়ে নারী চিকিসৎকদের দিয়ে চিকিৎসা করালে রোগীরা লাভবান হন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগীদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে নারী চিকিৎসকরা বেশি সময় ব্যয় করেন। তারা রোগীদের রোগ নিয়ে ভালোভাবে খোঁজ নেন। এছাড়া নারী রোগীরা নারী চিকিৎসকদের নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
এর আগে ২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, একজন নারী চিকিৎসক একজন রোগীর পেছনে গড়ে ২৩ মিনিট সময় ব্যয় করেন। অন্যদিকে একজন পুরুষ চিকিৎসক গড়ে একজন রোগীর পেছনে ২১ মিনিট সময় ব্যয় করেন।
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৪ হাজার হাজার ২৫০ জন।
এছাড়া গত অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে জানায়, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮৬ জন আহত হয়েছেন বলে বুধবার ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের একটি অস্থায়ী রায়কে লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চালানো বর্বর এই আগ্রাসনে অন্তত ৩৪ হাজার ২৬২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত এসব বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনির বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজার ২২৯ জন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক অন্তর্বর্তী রায়ে এই আদালত তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনির মতে, সাহায্যের ‘অর্থপূর্ণ ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের’ মাধ্যমেই শুধুমাত্র উত্তর গাজার দুর্ভিক্ষ এড়ানো যেতে পারে।
মন্তব্য করুন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বুধবার তেহরানে হাজার হাজার শ্রমিকের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের চাপ ও নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো ইরানকে তাদের সামনে নতজানু করা এবং তাদের পুরোপুরি অনুসরণে বাধ্য করা। কিন্তু ইতিহাস-ঐতিহ্যের অধিকারী মহান ইরানি জাতি ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র গুণ্ডামি ও বাড়াবাড়ির সামনে নত হবে না। ইরানি জাতি কখনই বৈশ্বিক অহংকার দ্বারা আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং নিষেধাজ্ঞাকে সুযোগে পরিণত করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে।
নারী চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিলে রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যায়। একইসাথে নারী ডাক্তাদের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে পুনরায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবার সম্ভাবনাও অনেকাংশে কম। চিকিৎসা ক্ষেত্রে নারীদের সুনাম দীর্ঘদিনের। তবে এবার সামনে এসেছে নতুন তথ্য। গবেষণা বলছে, নারী চিকিৎসকের সেবা নেওয়া রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৪ হাজার হাজার ২৫০ জন। এছাড়া গত অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।