ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইদি আমিন: মৎস্যকূলেরও প্রভু ছিলেন যিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৪১ পিএম, ৩১ অগাস্ট, ২০১৮


Thumbnail

একটি দেশের নেতৃত্বে যিনি থাকেন, তিনি দায়িত্ববান এবং ন্যায়পরায়ণ হবেন এমনটাই ভেবে থাকেন সবাই। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে বিভিন্ন দেশ বা অঞ্চলের নেতৃত্বে এমন অনেকেই এসেছেন যারা ছিলেন উদ্ভট বা পাগলাটে স্বভাবের। কেউ কেউ আবার তাদের নিষ্ঠুরতা ও খামখেয়ালীপনার কারণে ইতিহাসে বিখ্যাত কিংবা কুখ্যাত হয়ে আছেন। এরকম কিছু ব্যতিক্রমী রাষ্ট্রপ্রধানের কথাই জানাবো আমরা। আজ থাকলো উগান্ডার কসাই হিসেবে খ্যাত ইদি আমিনের ইতিহাস...

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ইদি আমিন দাদা। শাসক হিসেবে তিনি পাগলাটে তো বটেই, একই সঙ্গে ছিলেন বর্বরও। উগান্ডার কসাই নামে পরিচিত ইদি আমিন অশিক্ষিত ও অজ্ঞ এক বাবুর্চি থেকে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় পৌঁছেছিলেন। আট বছরের শাসনামলে কয়েক লাখ মানুষকে নির্যাতন, নির্বাসন, গুম ও হত্যা করেন এই স্বৈরাচারী একনায়ক।

ইতিহাসের অন্যতম উদ্ভট রাষ্ট্রনায়ক ইদি আমিন নিজের পরিচয় দিতেন এভাবে, ‘মহামান্য আজীবনের রাষ্ট্রপতি, ফিল্ড মার্শাল আলহাজ ড. ইদি আমিন দাদা, পৃথিবীর সকল পশু ও সমুদ্রের মৎস্যকুলের প্রভু এবং আফ্রিকার ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, বিশেষ করে করে উগান্ডার বিজেতা।’

রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশদের অপমানজনক আচরণের বদলা নিতে অদ্ভুত সব কান্ড ঘটিয়েছিলেন আমিন। তিনি একবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর জন্য বিশাল মাপের জুতা সরবরাহের আদেশ দেন। বিভিন্ন সময় পালকিতে করে শ্বেতাঙ্গদের ঘাড়ে চড়তেও দেখা যেত তাকে। ইরাকের ওপর মার্কিন হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমিন দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সিনিয়র বুশকে বক্সিং রিংয়ে নামার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। 

কথিত আছে, ইদি আমিন বিশেষ এক অভিধান তৈরি করেছিলেন। ‘ভিআইপিকে সম্মান দাও’ বলতে বোঝানো হতো তাঁকে হত্যা কর। ‘চা পান করতে দাও’ বলতে বোঝাতো তাকে বেত্রাঘাত কর। ‘তাকে ঘুমাতে নিয়ে যাও’ এর অর্থ তাকে বন্দি করে রাখো। আমিন এই বিশেষ অভিধানের মাধ্যমেই তাঁর বাহিনীর সদস্যদের কমান্ড করতেন। কথিত আছে, তিনি নাকি মানুষের রক্তও পান করতেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বহুপত্নীক ছিলেন আমিন। ডজনখানেকের মতো বিয়ে করলেও ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় বিভিন্ন সময় পাঁচ জনকে দিয়েছিলেন ফার্স্টলেডির মর্যাদা। এদের মধ্যে তিন জনকে আবার বেতার ঘোষণার মাধ্যমে তালাকও দিয়েছিলেন আমিন। তাঁর অন্তত ৪৩ জন সন্তান ছিল বলে জানা যায়। এক সুন্দরীকে নেত্রীকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে বসিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সেই নেত্রী।

জার্মানির কুখ্যাত শাসক হিটলারের ভক্ত ছিলেন আমিন। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘অনেকে হিটলারকে খারাপ লোক মনে করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন বীর, এজন্যই মানুষ তাঁকে স্মরণ করে।’

১৯২৫ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত নীল নদের পশ্চিমাঞ্চলীয় কোবোকো অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন ইদি আমিন। ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ওই অঞ্চলটি উগান্ডা প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত হয়। কোবোকোর ‘কাকওয়া’ নামক আদিবাসী গোষ্ঠীতে জন্ম নেওয়া আমিনের পরিবার ছিল অত্যন্ত গরীব। শৈশবেই বাবাকে হারানো আমিন বড় হয়েছিলেন তাঁর মায়ের কাছে। তিনি প্রাথমিক শিক্ষার গন্ডিটুকুও পেরিয়েছিলেন কিনা তা নিয়ে বিতর্ক আছে। দুবেলা খাবার জোটাতে বাল্য বয়সেই কাজে নেমে পড়েন তিনি।

১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ কলোনিয়াল সেনাবাহিনী কিংস আফ্রিকান রাইফেলস (কেএআর) এ বাবুর্চি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন আমিন। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই যোদ্ধা হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। কেএআর এর সঙ্গে বার্মা, সোমালিয়া এবং কেনিয়াতেও কাজ করেছেন আমিন। কেনিয়ার ‘মাউ মাউ’ বিদ্রোহীদের ওপর চালানো ব্রিটিশদের বর্বর নির্যাতনে তিনি অংশ নেন। নিষ্ঠুর অফিসার হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আমিন খুব দ্রুতই সাধারণ বাবুর্চি থেকে ‘ইফেন্ডি’ পদ লাভ করেন। সেসময় ইফেন্ডি ছিল ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ সৈন্যদের জন্য সর্বোচ্চ পদ।

ইদি আমিন একজন দক্ষ বক্সার ছিলেন। পরপর ৯ বছর ‘উগান্ডা লাইট হেভিওয়েট বক্সিং’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। নিষ্ঠুরতার পাশাপাশি বক্সিং দক্ষতা তাকে সেনাবাহিনীতে পদোন্নতি পেতে সাহায্য করেছিল বলে মনে করা হয়। সাঁতারেও পারদর্শী ছিলেন আমিন।

১৯৬২ সালে উগান্ডা স্বাধীন হবার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী অ্যাপোলো মিল্টন ওবাত ইদি আমিনকে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদে মনোনীত করেন। সেসময় দুটি আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গবাদি পশু নিয়ে দাঙ্গার সৃষ্টি হলে, আমিন সেখানে আক্ষরিক অর্থেই নরবলি দেন। ব্রিটিশ সরকার তখন তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ তুলে বিচারের দাবি জানায়। কিন্তু ওবাতের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়তে থাকায় নিষ্ঠুরতার জন্য শাস্তির পরিবর্তে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন আমিন।

বন্ধুত্বের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওবাতকে হটিয়ে একসময় নিজেই ক্ষমতায় বসেন আমিন। মজার ব্যাপার হলো, শুরুর দিকে ইদি আমিনকে উগান্ডার শাসনব্যবস্থায় স্বাগত জানিয়েছিল দেশটির জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ক্ষমতা দখলের পর প্রথমেই তিনি রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনী ভেঙে দিয়ে নিজস্ব এক ‘কিলার’ বাহিনী গঠন করেন। সে সময় ইদি আমিনের সরাসরি নির্দেশে হত্যার শিকার হন দেশটির আর্চবিশপ, বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের গভর্নরসহ বহু বুদ্ধিজীবী।

ক্ষমতা দখলের পর ইদি আমিন সম্মানজনক সব সামরিক পদক সংগ্রহ করতে শুরু করেন। বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনী এবং সরকারকে ঘুষ দিয়ে বেশ কিছু পদক বাগিয়ে নিতে সক্ষমও হন তিনি। ব্রিটিশ আর্মির সর্বোচ্চ সামরিক পদক ভিক্টোরিয়া ক্রস পেতে বহু চেষ্টা চালান আমিন। এজন্য বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয়ও করেন তিনি। বারবার তিনি দাবী করতে থাকেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ আর্মির হয়ে বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ঐ পদকটি তার প্রাপ্য। কিন্তু ১৯৪৬ সালে, অর্থাৎ বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার বছরখানেক পর আর্মিতে যোগ দিয়ে তিনি কিভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, এর উত্তর কখনোই দিতে পারেননি আমিন। মজার ব্যাপার হলো, ব্রিটিশ `ভিক্টোরিয়া ক্রস` পেতে ব্যর্থ হয়ে তিনি নিজেই উগান্ডা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে `ভিক্টোরিয়াস ক্রস` নামে একটি বীরত্বসূচক পদক চালু করেন। প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তিনি নিজেই সেটি গ্রহণ করেন। অন্যান্য পদকের সঙ্গে সেটিও তার ইউনিফর্মে যুক্ত করতেন তিনি।

গুপ্তঘাতকের ভয়ে বারবার নিজের বাসস্থান পরিবর্তন করতেন ইদি আমিন। ১৯৭২ সালে তিনি বিভিন্ন বিদেশি জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেন। দেশটির সামরিক বাহিনীর অনেক উচ্চপদই ছিল ইসরায়েলিদের দখলে। অন্যদিকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সিভিল সার্ভিস উভয় ক্ষেত্রেই এশিয়ান ও ব্রিটিশদের দাপট ছিল। আমিন সেনাবাহিনী থেকে সব ইসরায়েলিদের ছাঁটাই করেন। এশিয়ান এবং ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের তিন মাসের মধ্যে উগান্ডা ছাড়ার নির্দেশও দেন তিনি। তাদের ছেড়ে যাওয়া পদগুলো এবং ব্যবসা-বাণিজ্য নিজের সমর্থকদের মধ্যে বণ্টন করেন আমিন।

দেশের অর্থনীতির দিকে কোন নজরই ছিল না স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট ইদি আমিনের। দেশের যেকোনো খাতের চেয়ে সামরিক বাহিনী এবং নিজের সুরক্ষার জন্য গঠিত বিশেষ বাহিনীর পেছনেই বেশি অর্থ বরাদ্দ করতে থাকেন তিনি। ১৯৭৫ সালে উগান্ডার মুদ্রাস্ফীতি এক হাজার শতাংশে পৌঁছায়।

কথিত আছে, আমিন ফ্রিজে মানুষের কাটা মাথা ও অন্যান্য অঙ্গ মজুদ রাখতেন। মানুষের মাংস খাওয়ার নেশা ছিল তাঁর। তিনি সুন্দরী মেয়েদের অপহরণ করে তাদের জীবিত কবর দিতেন কিংবা কুমিরকে খাওয়াতেন। এসব নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে ‘ম্যাড ম্যান অব আফ্রিকা’ বলা হতো।

১৯৭৯ সালে তাঞ্জানিয়া এবং আমিন বিরোধী উগান্ডার সেনারা ইদি আমিনকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এরপর আরেক উদ্ভট শাসক লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বাঁচেন তিনি। সেখানে দশ বছর কাটানোর পর ১৯৮৯ সালে সৌদি আরবে চলে যান আমিন। সেখানেই ২০০৩ সালের ১৬ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন ‘বুচার অব উগান্ডা’ নামে কুখ্যাত এই একনায়ক।


বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাশিয়ার ২৬ ড্রোন ধ্বংস; দাবি ইউক্রেনের

প্রকাশ: ১১:১১ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

রাশিয়ার ২৮টি অ্যাটাক ড্রোনের মধ্যে ২৬টি ড্রোন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইউক্রেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, ইরান নির্মিত ড্রোনগুলো ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে।

রয়টার্স সূত্র বলছে, জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের গভর্নর টেলিগ্রামে বলেছেন, সেখানকার আঞ্চলিক রাজধানীতে বিধ্বস্ত ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে দুই নারী আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ এলাকার প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, বিধ্বস্ত তিনটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে একটি রেস্তোরাঁ, একটি স্টোর এবং বেশ কয়েকটি অফিস ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী আরও জানিয়েছে, সারারাত ধরে করা হামলায় ড্রোনের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে রাশিয়ান বাহিনী।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিরিয়ায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, ৩৬ সেনা নিহত

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৩৬ সিরীয় সেনা নিহত হয়েছেন। একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি শুক্রবার (২৯ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে।

এএফপির ওই খবরে ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লার অধীনে থাকা একটি রকেট ডিপোর কাছে এই হামলা চালানো হয়।

সংস্থাটি জানায়, ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, ভোরের আগে চালানো হামলায় বেসামরিক মানুষ ও সামরিক কর্মী নিহত ও আহত হয়েছেন।

এর আগে সিরিয়ায় বিমান হামলায় ১৩ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ইরানপন্থি অন্তত ৯ জনসহ একজন কমান্ডার ছিলেন। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ওই হামলা চালানো হয়।

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছিল, একটি হামলায় ইরানপন্থি নয় যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন আইআরজিসির কমান্ডার রয়েছেন। একটি উপত্যকায় তাদের লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়।

গত কয়েক বছর ধরেই সিরিয়ায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। কিন্তু কখনই তারা এসব হামলার দায় স্বীকার করে না।


সিরিয়া   ইসরায়েল   বিমান হামলা   লেবানন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে নিহত রোজারিওর হলো না স্বপ্নপূরণ

প্রকাশ: ১০:২৮ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

প্রায় দশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ভ্রমণে পাড়ি জমান রোজারিও পরিবার। স্বপ্নপূরণে স্থায়ীভাবে থাকতে আবেদনও করেছিল আমেরিকায়। তাই দুই বছর আগে গ্রিনকার্ড অনুমোদন হয়। তবে আর দু-এক মাসের মধ্যেই উইন রোজারিও পেয়ে যেত স্বপ্নের গ্রিনকার্ড। তার স্বপ্ন ছিল গ্রিনকার্ড পেলে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে যোগ দেবেন। কিন্তু এর আগেই পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল উইনের। ধরে দেখা হলো না কাঙ্ক্ষিত গ্রিনকার্ড, আর অপূর্ণই থেকে গেল নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন।

বুধবার (২৭ মার্চ) স্থানীয় সময় নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় নিজ বাসায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১৯ বছরের উইন।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ওই তরুণ পুলিশ সদস্যদের দিকে এক জোড়া কাঁচি নিয়ে তেড়ে গেলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। ছেলে হারানোর শোকে ভালো করে কথাও বলতে পারছেন না বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও।

বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ছেলে আমার নিউইয়র্কের জন এডাম স্কুল থেকে থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছিল। তাকে নিয়ে আমাদের কত স্বপ্ন ছিল!’

ফ্রান্সিস রোজারিও বলেন, মানসিক সমস্যার কারণে দুবার জ্যামাইকা হসপিটালে ভর্তি হয়েছিল উইন। এ সমস্যার জন্যই আমাদের কাছে বেশি আদরের ছিল সে। আর সে ছেলেই হারিয়ে গেল মায়ের কোলে গুলিবিদ্ধ হয়ে।

উইনের ছোট ভাই উৎস রোজারিও বলেন, পুলিশ গুলি ছোড়ার আগে পুরোটা সময় তার মা ভাইকে জাপটে ধরে রেখেছিলেন। এমনকি ভাইকে ধরে রাখা অবস্থায়ই গুলি ছোড়ে পুলিশ। এই গুলি ছোড়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না।

মর্মন্তুদ ঘটনার সাক্ষী মা ইভা ডি কস্টার আর্তনাদ যেন থামার নয়। ক্রমাগত কেঁদেই চলেছেন ছেলের কথা বলতে বলতে। বাঙালি কমিউনিটির আইনি পরামর্শকেরা এসেছেন তাঁদের সান্ত্বনা দিতে এবং মামলার বিষয়ে পরামর্শ করতে। কমিউনিটির নেতাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সিস রোজারিও।

রোজারিও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান আইনজীবী মঈন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘পরিবারের অনুমতি নিয়ে আমরা পুলিশের কার্যক্রম তদন্ত করছি। তাদের কোনো ত্রুটি থাকলে আমরা নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধে শিগগিরই মামলা করব।’

নিহত উইনের দূর সম্পর্কের আত্মীয় সুখেন জোসেফ গোমেজ। তিনি বলেন, উইনের মায়ের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জ আর বাবার বাড়ি পুবাইলে। আমার মা এবং উইনের মা বাংলাদেশ থেকেই পরিচিত। এ ছাড়া রোজারিও পরিবারের সঙ্গে অন্য কারও খুব একটা যোগাযোগ ছিল না।’

সুখেন বলেন, রোজারিও পরিবার এখানে আসার পর গুটিকয় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে খুব একটা দেখা যেত না। তাঁদের বাসায় যতবার গিয়েছি, উইনকে দেখেছি পড়ালেখা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতে।

উইনের ভাই উৎস রোজারিও বলেন, ‘ভাই ছিলেন খুবই অন্তর্মুখী স্বভাবের। খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন সব সময়। আমেরিকার মেরিনে (নৌবাহিনী) যোগ দেওয়ার স্বপ্ন ছাড়াও তাঁর ইচ্ছা ছিল বড় অ্যাথলেট হওয়ার। বাসায় চর্চাও করতেন। খুব একটা বন্ধুবান্ধব ছিল না তাঁর। আমিই ছিলাম তাঁর বন্ধু।’


নিউইয়র্ক   গুলি করে হত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মমতার ‘মৃত্যু কামনা’ করে বিতর্কে বিজেপির প্রার্থী

প্রকাশ: ০৯:৪৪ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে ভারতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের। প্রচারের পাশাপাশি বিতর্কিত মন্তব্যে জড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। এসব বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে অনেকের প্রার্থিতাও বাতিল হচ্ছে। অনেকের প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগও উঠেছে।

পশ্চিমবঙ্গে দিলীপ ঘোষের পর এবার বিতর্কে জড়ালেন বিজেপির প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ‘বেফাঁস’ মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন তমলুকের এ বিজেপি প্রার্থী। তার একটি মন্তব্য তুলে ধরে তৃণমূল অভিযোগ করেছে, নেত্রী মমতার মৃত্যু কামনা করেছেন সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ। এ নিয়ে অভিজিতের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করারও প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে অভিজিৎকে বলতে শোনা যায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে হচ্ছে মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে। মনে হচ্ছে!’ যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। অভিজিতের বক্তব্যের যে অংশটি তুলে তৃণমূল কংগ্রেস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার শুরু করেছে, তা ছয় সেকেন্ডের। তার আগে পরে তিনি কী বলেছেন তার কোনো উল্লেখ নেই। এই মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কে কত নিম্নরুচির পরিচয় দিতে পারেন, সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছেন বিজেপির প্রার্থীরা। কী অবস্থা! এরা এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু কামনা করছেন।’

তৃণমূলের তরফে দাবি জানানো হয়েছে, অভিজিৎকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে বাংলার মানুষ এর জবাব দেবে। তৃণমূলপ্রধান মমতা ব্যানার্জিকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে অবশ্য বিপাকে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাকে তার দল বিজেপি শোকজ করেছে। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনও মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ তথা বর্ধমান-দুর্গাপুরের এবারের বিজেপি প্রার্থী দিলীপকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। দিলীপের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআরও দায়ের হয়েছে। দিলীপের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল। মমতার পিতৃপরিচয় তুলে মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ। এবার অভিজিতের বিরুদ্ধেও কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শাসকদল।


ভারত   বিজেপি   মমতা ব্যানার্জী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৪৫

প্রকাশ: ০৮:৫২ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। যাত্রীবাহী একটি বাস সেতু থেকে গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় কেবল একটি মেয়ে শিশু বেঁচে গেছে। জরুরী অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুক্রবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি বাস সেতু থেকে প্রায় ৫০ মিটার (১৬৫ ফুট) গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর পঁয়তাল্লিশ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অবশ্য এই ঘটনায় আট বছর বয়সী এক মেয়ে শিশুকে একমাত্র জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং গুরুতর আহত অবস্থায় পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিবিসি বলছে, উত্তর-পূর্ব লিম্পোপো প্রদেশে বাসটি একটি ব্যারিয়ারে ধাক্কা দেওয়ার পর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং পরে এটিতে আগুন ধরে যায়। যাত্রীরা সবাই ছিলেন তীর্থযাত্রী এবং তারা বতসোয়ানার রাজধানী গ্যাবোরোন থেকে মোরিয়া শহরে ইস্টার সার্ভিসে যাচ্ছিলেন।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পাবলিক ব্রডকাস্টার এসএবিসি জানিয়েছে, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জোহানেসবার্গের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার (১৯০ মাইল) উত্তরে মোকোপানে এবং মার্কেনের মধ্যে মামামতলাকালা পর্বত গিরিপথে একটি সেতু থেকে ছিটকে পড়ে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলেছে উদ্ধার তৎপরতা এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিহত কয়েকজনের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।

দেশটির পরিবহন মন্ত্রী সিন্দিসিওয়ে চিকুঙ্গা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং পরে তিনি ‘মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি আন্তরিক সমবেদনা’ জানান। তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার মৃতদেহ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে এবং দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে পূর্ণ তদন্ত করবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে আমাদের চিন্তাভাবনা এবং প্রার্থনা আপনার সাথে আছে। আমরা এই ইস্টার উইকএন্ডে আমাদের রাস্তায় আরও বেশি লোক থাকায় আরও বেশি সতর্কতার সাথে সবসময় দায়িত্বশীল ভাবে ড্রাইভিং করার জন্য অনুরোধ করছি।’

অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার খারাপ সড়ক নিরাপত্তার রেকর্ড রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।


সড়ক দুর্ঘটনা   দক্ষিণ আফ্রিকা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন