নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৬ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ফিলিস্তিনি শিবিরে শরণার্থীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের অর্থ সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ত্রাণ সংস্থায় গুরুতর `গলদ` রয়েছে। ইসরায়েলও বহুদিন ধরেই একই কথা বলে আসছে। ইসরায়েলের সেই অবস্থানের সঙ্গে এখন গলা মিলিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু কথিত এই `গলদ` আসলে কোথায়?
১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী হয়ে পড়ে। তখন তাদের দেখাশোনার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় ’ইউনাইটেড নেশন্স রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন ইন দ্য নিয়ার ইস্ট’ (ইউএনআরডাব্লিউএ) নামের এই সংস্থাটি। বর্তমানে গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবাননে প্রায় ৫০ লাখ ফিলিস্তিনি রয়েছে। তাদের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং আরও নানা ধরণের সামাজিক সেবামূলক কাজে সহায়তা দেয় জাতিসংঘের এই সংস্থাটি।
বহুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের এই সংস্থার প্রধান যোগানদাতা। ২০১৬ সালে বারাক ওবামার সময় যুক্তরাষ্ট্র একাই ইউএনআরডাব্লিউকে প্রায় ৩৭ কোটি ডলার সাহায্য দিয়েছিল। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি বদলে যেতে থাকে। ট্রাম্প প্রশাসন গত বছর এই সাহায্য প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। আর এবার যুক্তরাষ্ট্র সাহায্য পুরোপুরি বন্ধের ঘোষণা দিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র এত সাহায্য করে কিন্তু বদলে ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে কোনো `সম্মান` বা `প্রতিদান` পায়না। এ বছরের গোড়ার দিকে তিনি হুঁশিয়ার করেন, ইসরায়েলের সাথে মীমাংসায় রাজি না হলে, তিনি ফিলিস্তিনিদের সাহায্য বন্ধ করে দেবেন।
তবে বিশ্লেষকদের মতে - সমস্যা আরও গভীরে। জাতিসংঘের এই সংস্থাটি ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলে ফেলে আসা বাস্তু ভিটায় ফেরত যাওয়ার অধিকারকে সমর্থন করে, যেটি নিয়ে বরাবরই ক্ষুব্ধ ইসরায়েল ।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু অনেকবারই এই সংস্থায় অনুদান কমিয়ে দেওয়ার আহ্বান করেছেন। তার মতে- ইউএনআরডাব্লিউএ ফিলিস্তিনি সঙ্কটকে "আরো বাড়িয়ে তুলছে।" তিনি এমন প্রস্তাবও করেছেন ইউএনআরডাব্লিউএ`র ভূমিকা জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হাতে তুলে দেওয়া হোক।
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে জাতিসংঘের মার্কিন দূত নিকি হেলি বলেন, ইউএনআরডাব্লিউএ সবসময় ফিলিস্তিনি শরণার্থীর সংখ্যা বাড়িয়ে বলে। তিনি খোলাখুলি বলেন, এই সংস্থাটির সংস্কার প্রয়োজন। অসংখ্য শরণার্থী ক্রমাগত সাহায্য নিয়ে চলেছে, কিন্তু যেটা লক্ষণীয় তা হলো, এই ফিলিস্তিনিরাই আবার দিন-রাত যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এক মারাত্মক আঘাত। কট্টরপন্থী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস বলেছে, এটি ফিলিস্তিনি সংকটকে আরও গুরুতর করে তুলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুটেরেস এবং জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রী। মিস্টার গুটেরেস এই ত্রাণ সংস্থার তহবিলে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তা পূরণে অন্য দেশগুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেইকো মাস বলেছেন, তারা তাদের অনুদান বাড়িয়ে দেবেন।
ইউএনআরডাব্লিউ ‘কে যুক্তরাষ্ট্র যে সমালোচনা করেছে, তাকে তীব্র ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছে সংস্থাটি। সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস গানেস বলেছেন, "ইউএনআরডব্লিউএ`র স্কুল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং জরুরী সাহায্যের কর্মসূচিকে `শোধরানোর অতীত গলদপূর্ণ` বলে যে বর্ণনা করা হয়েছে আমরা তা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের এসব কর্মসূচি মধ্যপ্রাচ্যে মানব উন্নয়নে অন্যতম সফল কর্মসূচি হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ জন্য এই সংস্থার প্রশংসা করেছে।"
সূত্রঃ বিবিসি
বাংলা ইনসাইডার/জেডআই/জেডএ
মন্তব্য করুন
ইরান নিষেধাজ্ঞা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ইসরায়েল ইরানে আগামী ৩০ এপ্রিলের আগে হামলা চালাবে না। জ্যেষ্ঠ একজন মার্কিন কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন। এবিসি নিউজকে ওই কর্মকর্তা জানান, পাসওভার উৎসব শেষ হওয়ার আগে ইরানে হামলা চালাবে না ইসরায়েল। এই উৎসব শেষ হবে আগামী ৩০ এপ্রিল। তবে এই সিদ্ধান্ত যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পাসওভার মূলত ইহুদি ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা পেসেক বা নিস্তারপর্ব নামেও পরিচিত। প্রায় সপ্তাহজুড়ে চলা এই উৎসব ২২ এপ্রিল শুরু হয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। মিসরীয় শাসন থেকে ইহুদি জাতির মুক্তির সময়কে স্মরণীয় রাখতে এই উৎসব উদযাপন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েল পাসওভার উৎসবের আগে ইরানে হামলা চালাতে খুব একটা আগ্রহী নয়। তবে এই বিষয়টি যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে।
এদিকে ইসরায়েলি একাধিক সূত্র এবিসি নিউজকে জানিয়েছে, এই সপ্তাহে ইসরায়েল অন্তত দুইবার ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল। তবে দুইবারই সে মিশন বাতিল করা হয়। সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি সমরবিদেরা দেশটির যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সামনে একাধিক বিকল্প হাজির করলেও তারা এখনও খতিয়ে দেখছে কোন উপায়ে হামলা চালালে তা সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসূ হবে।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে এক বিমান হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আল-কুদস ফোর্সের দুই শীর্ষ জেনারেলসহ অন্তত ১১ জন নিহত হন। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও ইরান ইসরায়েলকেই এর জন্য দায়ী করে আসছে। এই হামলার জবাবে শনিবার ইসরায়েল লক্ষ্য করে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। সেই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে ইসরায়েল।
মন্তব্য করুন
গেল কয়েকদিনে ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাসে। দুর্যোগের দুঃসময়ে অনেকেই বাড়িয়েছেন সাহায্যের হাত। তেমনি এক খবর জানিয়েছে গালফ নিউজ। তারা জানায়, রাস্তায় প্লাবিত একটি গাড়ি ভেঙে ভেতর থেকে একজনকে উদ্ধার করে কয়েকজন যুবক।
খবরে ৫০ সেকেন্ডের ভিডিও সংযুক্ত করা হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পানির মাঝ দিয়ে একটি গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে। যখনই গাড়িটি সেই ঢেউ আকৃতির রাস্তার সবচেয়ে নিচে পৌঁছাল, তখন গাড়িটির স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। এক কথায় চালক সেখানে গাড়িটি নিয়ে আটকে পড়েন। এটি দেখে আশেপাশের কয়েকজন যুবক গাড়িটির ছাদের অংশের কাচ ভেঙে ভেতরে থাকা এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন।
উদ্ধারকারী যুবকদের মতো আমিরাতের প্লাবিত অনেক এলাকাতেই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করছেন অনেকে। তাদেরই একজন মুনির আল ওয়াফা। তিনি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন। যেটির মাধ্যেম বৈরী আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের নানা ধরনের সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারী বৃষ্টি, তীব্র বাতাস ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। দেশটিতে গত মঙ্গলবার ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে রেকর্ড করা হয় ২৫৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি।
আবুধাবি রাস্তা পানি তলালো গাড়ি
মন্তব্য করুন
ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচিত চুক্তি প্রজেক্ট নিম্বাস বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের দায়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে গুগলের ২৮ জন কর্মীকে। আটক করা হয়েছে কমপক্ষে নয়জনকে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এমনটা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম সিএনবিসি।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেয় ফিলিস্তিনপন্থী কর্মীরা। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টানা নয় ঘণ্টা চলে অবস্থান কর্মসূচি। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গে ধরপাকড় চালায় পুলিশ। গ্রেফতারের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিকমাধ্যমে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে গুগল কর্তৃপক্ষ। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ দিতে পারবেন না তারা।
গুগল ও অ্যামাজনের সঙ্গে ইসরায়েল সরকারের ১২০ কোটি ডলারের বিতর্কিত চুক্তিই হলো প্রজেক্ট নিম্বাস। এর মাধ্যমে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরকে ক্লাউড পরিষেবাসহ উন্নত প্রযুক্তি সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠান দুটি।
ইসরায়েল বিক্ষোভ বরখাস্ত ২৮ গুগল কর্মী
মন্তব্য করুন