নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১০ এএম, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
সম্প্রতি মার্কিন সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড ‘ফেয়ার: ট্রাম্প ইন দ্য হোয়াইট হাউস’ শিরোনামে একটি নতুন বই প্রকাশ করেছেন। বইটি প্রকাশের পর থেকে সারাবিশ্বে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, এই বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের ভেতরের বহু বিস্ফোরক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। উঠে এসেছে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত অনেক কিছুই।
বব উডওয়ার্ড একজন মার্কিন অনুসন্ধানী সাংবাদিক। তিনি ওয়াশিংটন পোস্ট এর হয়ে কাজ করেন। এর বিখ্যাত এ সাংবাদিক ওয়াটারগেট কেলেংকারি ফাঁস করে ১৯৭০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের পতন ডেকে এনেছিলেন। ওয়াশিংটনে ক্ষমতার কেন্দ্রে এমন সব লোকদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, যে কোথায় কি ঘটছে কিছুই তাঁর জানার বাইরে নয়। এজন্য তাঁর প্রকাশিত এ নতুন বইটি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। জানা যাক, ‘ফেয়ার: ট্রাম্প ইন দ্য হোয়াইট হাউস’ শীর্ষক বইয়ের তথ্যনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেমন?
ট্রাম্প নির্বোধ
বব উডওয়ার্ড প্রকাশিত বইয়ের তথ্যমতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ’নির্বোধ’ প্রকৃতির। হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ জন কেলি ট্রাম্পকে নিয়ে এমনটাই মন্তব্য করেছেন। হোয়াইট হাউসের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠককালে তিনি ট্রাম্পের মানসিক সুস্থতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন।
‘চলো আসাদকে মেরে ফেলি`
২০১৭ সালের এপ্রিলে সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা ঘটে। তখন ধরা হয়েছিল, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীই এ কাজ করেছে। সেসময় ট্রাম্প প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসকে বলেন, প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদকে হত্যা করার কথা। তিনি বলেছিলেন, ‘চলো আমরা সিরিয়ায় যাই, আসাদকে মেরে ফেলি, ওদের সবাইকে মেরে ফেলি।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ম্যাটিস প্রথমে তা মেনে নিলেও পরে বলেছিলেন, তিনি এমন কিছু করবেন না।
বদমেজাজি প্রেসিডেন্ট
উডওয়ার্ড লিখেছেন, ট্রাম্প বদমেজাজী। তিনি সব সময়ই হোয়া্ইট হাউসে তার কর্মকর্তাদের বকাঝকা করেন। ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কোহনের মতে তিনি একজন `পেশাদার মিথ্যেবাদী`। বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রসকে ট্রাম্প একবার বলেছিলেন, তিনি তাঁকে বিশ্বাস করেন না। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি চাই না আপনি আর কোনো আলোচনায় থাকুন। আপনার দিন শেষ হয়ে গেছে।’
তাছাড়া ট্রাম্প তাঁর প্রথম চিফ অব স্টাফ রেইন্স প্রাইবাসকে `ইঁদুরের সঙ্গে` তুলনা করে বলেছিলেন, `ও শুধু তিড়িংবিড়িং করে ছোটাছুটি করে।’ এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্সকে প্রকাশ্যেই অপমান করেছিলেন ট্রাম্প। আড়ালে বলেছিলেন, ‘এই লোকটা একটা মানসিক প্রতিবন্ধী, দক্ষিণ থেকে আসা একটা একটা নির্বোধ। শহুরে আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতাও তাঁর নেই।’
`হাজিরা দিলে আপনাকে জেলে যেতে হবে`
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে তদন্ত করছেন রবার্ট মুলারের বিশেষ কলাকুশলীরা। এই কলাকুশলীদের সামনে হাজিরা দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঠিক মতো জিজ্ঞাসাবাদের জবাব দিতে পারবেন কিনা তা দেখতে একটা `পরীক্ষামূলক মহড়ার` আয়োজন করেছিলেন তাঁর আইনজীবী জন ডাউড। সেই মহড়ায় দেখা গেল, চোখা চোখা প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে ট্রাম্প হয়রান হয়ে পড়ছেন, এক পর্যায়ে ক্ষুদ্ধভাবে সেই তদন্তকে ভুয়া বলে বর্ণনা করছেন।
তখন জন ডাউড বললেন, ‘আপনি সাক্ষ্য দিতে যাবেন না। এটা করলে আপনাকে জেলে যেতে হবে।’ ডাউড তখন মুলারের সাথে দেখা করে বললেন তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তদন্তকারীদের সাক্ষাৎকারের বিরোধী। কারণ তিনি চান না যে প্রেসিডেন্টকে `একটা নির্বোধের মত` দেখাক এবং বিশ্বের সামনে গোটা জাতিকে লজ্জা পেতে হয়। কিন্তু পরে ডাউড যখন জানলেন যে প্রেসিডেন্ট সাক্ষ্য দেবেন বলে মনস্থির করেছেন, তাঁর পরদিনই তিনি পদত্যাগ করেছিলেন।
প্রেসিডেন্টের ডেস্ক থেকে কাগজ চুরি
উডওয়ার্ড তাঁর প্রকাশিত বইয়ে বলছেন, ট্রাম্প একটি দলিলে স্বাক্ষর করতে চেয়েছিলেন। এর মাধ্যমে উত্তর আমেরিকান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। ট্রাম্প যাতে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে না পারে, সেজন্য তাঁর প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গ্যারি কোহন এবং হোয়াইট হাউসের স্টাফ সেক্রেটারি রব পোর্টার দলিলগুলো ডেস্ক থেকে সরিয়ে নিয়ে লুকিয়ে ফেলেন। উডওয়ার্ড এই ঘটনাটিকে `একটি প্রশাসনিক ক্যু দেতা-র চাইতে কম কিছু নয়` হিসেবে মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্প সম্পর্কে অন্যদের বক্তব্য
ট্রাম্প সবসময় অন্যদের নিয়ে খারাপ কথা বলেন। এর বিপরীতে তাঁর কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও পাল্টা বলতে ছাড়েননি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস একবার বলেছিলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে ট্রাম্পের জ্ঞানবুদ্ধি ক্লাস ফাইভ-সিক্সে পড়া একটা ছেলের মতো।’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেডরুমকে `শয়তানের কারখানা` বলে বর্ণনা করেছেন কেলির পূর্বসুরী রেইন্স প্রাইবাস। এখান থেকেই নিয়মিত টুইটার বার্তা ছাড়েন প্রেসিডেন্ট। উডওয়ার্ড তাঁর বইয়ে আরও লিখেছেন, ট্রাম্প মনে করন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর থেকে ভালো কাজ আর কেউ করতে পারেননি।
ওয়াশিংটন পোস্ট উডওয়ার্ডের সঙ্গে ট্রাম্পের একটি ফোনালাপের একটি রেকর্ডিং প্রকাশ করেছে। সেখানে ট্রাম্প বলছেন, উডওয়ার্ডের বইয়ের কথা তাঁকে বলা হয়নি। তাঁর কাছ থেকে এ বিষয়ে কখনো সাক্ষাৎকারও চাওয়া হয়নি। তবে উডওয়ার্ড দাবি করছেন, একথা মিথ্যা।
বাংলা ইনসাইডার/বিপি/জেডএ
মন্তব্য করুন
ইরান নিষেধাজ্ঞা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ইসরায়েল ইরানে আগামী ৩০ এপ্রিলের আগে হামলা চালাবে না। জ্যেষ্ঠ একজন মার্কিন কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন। এবিসি নিউজকে ওই কর্মকর্তা জানান, পাসওভার উৎসব শেষ হওয়ার আগে ইরানে হামলা চালাবে না ইসরায়েল। এই উৎসব শেষ হবে আগামী ৩০ এপ্রিল। তবে এই সিদ্ধান্ত যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পাসওভার মূলত ইহুদি ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা পেসেক বা নিস্তারপর্ব নামেও পরিচিত। প্রায় সপ্তাহজুড়ে চলা এই উৎসব ২২ এপ্রিল শুরু হয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। মিসরীয় শাসন থেকে ইহুদি জাতির মুক্তির সময়কে স্মরণীয় রাখতে এই উৎসব উদযাপন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েল পাসওভার উৎসবের আগে ইরানে হামলা চালাতে খুব একটা আগ্রহী নয়। তবে এই বিষয়টি যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে।
এদিকে ইসরায়েলি একাধিক সূত্র এবিসি নিউজকে জানিয়েছে, এই সপ্তাহে ইসরায়েল অন্তত দুইবার ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল। তবে দুইবারই সে মিশন বাতিল করা হয়। সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি সমরবিদেরা দেশটির যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সামনে একাধিক বিকল্প হাজির করলেও তারা এখনও খতিয়ে দেখছে কোন উপায়ে হামলা চালালে তা সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসূ হবে।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে এক বিমান হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আল-কুদস ফোর্সের দুই শীর্ষ জেনারেলসহ অন্তত ১১ জন নিহত হন। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও ইরান ইসরায়েলকেই এর জন্য দায়ী করে আসছে। এই হামলার জবাবে শনিবার ইসরায়েল লক্ষ্য করে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। সেই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে ইসরায়েল।
মন্তব্য করুন
গেল কয়েকদিনে ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাসে। দুর্যোগের দুঃসময়ে অনেকেই বাড়িয়েছেন সাহায্যের হাত। তেমনি এক খবর জানিয়েছে গালফ নিউজ। তারা জানায়, রাস্তায় প্লাবিত একটি গাড়ি ভেঙে ভেতর থেকে একজনকে উদ্ধার করে কয়েকজন যুবক।
খবরে ৫০ সেকেন্ডের ভিডিও সংযুক্ত করা হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পানির মাঝ দিয়ে একটি গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে। যখনই গাড়িটি সেই ঢেউ আকৃতির রাস্তার সবচেয়ে নিচে পৌঁছাল, তখন গাড়িটির স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। এক কথায় চালক সেখানে গাড়িটি নিয়ে আটকে পড়েন। এটি দেখে আশেপাশের কয়েকজন যুবক গাড়িটির ছাদের অংশের কাচ ভেঙে ভেতরে থাকা এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন।
উদ্ধারকারী যুবকদের মতো আমিরাতের প্লাবিত অনেক এলাকাতেই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করছেন অনেকে। তাদেরই একজন মুনির আল ওয়াফা। তিনি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন। যেটির মাধ্যেম বৈরী আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের নানা ধরনের সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারী বৃষ্টি, তীব্র বাতাস ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। দেশটিতে গত মঙ্গলবার ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে রেকর্ড করা হয় ২৫৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি।
আবুধাবি রাস্তা পানি তলালো গাড়ি
মন্তব্য করুন
ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচিত চুক্তি প্রজেক্ট নিম্বাস বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের দায়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে গুগলের ২৮ জন কর্মীকে। আটক করা হয়েছে কমপক্ষে নয়জনকে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এমনটা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম সিএনবিসি।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেয় ফিলিস্তিনপন্থী কর্মীরা। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টানা নয় ঘণ্টা চলে অবস্থান কর্মসূচি। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গে ধরপাকড় চালায় পুলিশ। গ্রেফতারের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিকমাধ্যমে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে গুগল কর্তৃপক্ষ। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ দিতে পারবেন না তারা।
গুগল ও অ্যামাজনের সঙ্গে ইসরায়েল সরকারের ১২০ কোটি ডলারের বিতর্কিত চুক্তিই হলো প্রজেক্ট নিম্বাস। এর মাধ্যমে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরকে ক্লাউড পরিষেবাসহ উন্নত প্রযুক্তি সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠান দুটি।
ইসরায়েল বিক্ষোভ বরখাস্ত ২৮ গুগল কর্মী
মন্তব্য করুন