ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

দেশে দেশে স্বৈরশাসকদের যত নির্মম পরিণতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:৩২ পিএম, ৩০ মে, ২০২০


Thumbnail

এশিয়া থেকে ইউরোপ কিংবা আফ্রিকা থেকে লাতিন আমেরিকা, সেনা শাসকদের আবির্ভাব ঘটেছে প্রায় সব অঞ্চলেই। আমাদের এই উপমহাদেশেই যেমন একাধিকবার সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু চোখে পড়ার মতো একটি বিষয় হলো, গত শতাব্দীর চেয়ে এই শতাব্দীতে সেনা অভ্যুত্থানের প্রবণতা অনেকটাই কম বলে মনে হচ্ছে। দেশে দেশে সেনা শাসকদের করুণ পরিণতিই কি এর মূল কারণ?

হাতে গোনা কয়েকটি দেশ বাদে প্রায় সব জায়গাতেই সেনা শাসকদের ভাগ্যে জুটেছে নির্মম মৃত্যু। বাংলাদেশের সেনা শাসক জিয়াউর রহমানকে তারই সৈন্যদের হাতে প্রাণ হারাতে হয়েছে। পাকিস্তানেও আমরা সেনাশাসকদের করুণ পরিণতি দেখেছি। শুধু আমাদের এই উপমহাদেশই নয়, বিভিন্ন দেশের অনেক দোর্দণ্ড প্রতাপশালী স্বৈরশাসকেরই নির্মম পরিনতি দেখেছে বিশ্ব। এখানে বিশ্বের নানা প্রান্তের ডাকাবুকো কিছু স্বৈরশাসকের শেষ পরিণতিটাই তুলে ধরা হলো-

অ্যাডলফ হিটলার

অ্যাডলফ হিটলারকে ভাবা হয় সর্বকালের সবচেয়ে নৃশংস স্বৈরশাসক। ফ্যাসিবাদের জনক হিটলারের রাজ্য জয় ও বর্ণবাদী আগ্রাসনের কারণে লাখ লাখ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়। ৬০ লাখ ইহুদিকে পরিকল্পনা মাফিক হত্যা করা হয়। ইহুদি নিধনের এই ঘটনা ইতিহাসে হলোকস্ট নামে সবাই জানে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে হিটলার বার্লিনেই ছিলেন। রেড আর্মি যখন বার্লিন প্রায় দখল করে নিচ্ছিল সেরকম একটা সময়ে তিনি ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তিনি ফিউরার বাংকারে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন।

বেনিতো মুসোলিনি

ইতালির মুসোলিনিও হিটলারের মতো নিষ্ঠুরতার পথ অনুসরণ করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিণতি তাকেও বরণ করতে হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সবদিক থেকে বিধ্বস্ত ইতালির ভিক্টর ইমানুয়েলের গণতান্ত্রিক সরকার ও জার্মানির হিন্ডেনবার্গ সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইতালিতে বেনিতো মুসোলিনিও সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর হিটলারের মতো তার চেহারাও পাল্টে যায়। পরবর্তীতে স্বৈরাচারী ও একনায়ক হিসাবে আবির্ভূত হন। মুসোলিনি সুইজারল্যান্ডে পালাবার সময় কমিউনিস্ট প্রতিরোধ বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন, পরে তাকে হত্যা করা হয়। হিটলার এবং মুসোলিনি দু’জনের রাজনৈতিক দলই আজ দুদেশে নিষিদ্ধ।

নেপোলিয়ান

ফ্রান্সের নেপোলিয়ানের বিশাল সাম্রাজ্যের বিস্তার ছিলো মাদ্রিদ থেকে মস্কো পর্যন্ত। ফ্রান্সসহ প্রায় অর্ধেক পৃথিবীর সম্রাট হয়েছিলেন তিনি। অনেকেই ভাবেন, ফরাসী জাতি আজ সারা বিশ্বে যে একটি সম্মানিত জাতি, আর ফ্রান্সের যে এত সফলতা, এর নেপথ্য নায়ক হলেন নেপোলিয়ান। নিজের দেশে তিনি ছিলেন মর্যাদাবান। কিন্তু বাইরের দেশে তার রূপ ছিলো ভিন্ন। সম্রাটের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি অন্য দেশের জন্য হুমকি বলে মনে করা হত। তাই তারা তাকে ভাল দৃষ্টিতে দেখতে পারেনি। তাই সম্রাটের বিরোধী দলগুলো জোট বাঁধে নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে। নিজ দেশের জনমতকে উপেক্ষা করে তার সম্রাজ্য সাম্প্রসারণের প্রধান শত্রু ব্রিটেন, ক্রোয়েশিয়া ও রাশিয়াকে ধ্বংস করে দেশ দখলের চেষ্টায় নেপোলিয়ান ৫ লাখ সৈন্য নিয়ে রাশিয়া আক্রমণ করেন। কিছু দেশ তার আয়ত্বে চলে আসে। রাশিয়া, ব্রিটেন ও ক্রোয়েশিয়া নেপোলিয়নের বেপরোয়া সম্রাজ্য সম্প্রসারণ ঠেকাতে চুক্তিবদ্ধ হয়। শক্র বাহিনীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আক্রমণে নেপোলিয়ান পরাজিত হয়ে পড়েন এবং এক সময় তিনি রাজত্ব হারান। ক্ষমতাধর নেপোলিয়নের একনায়কতন্ত্রের মসনদ তাকে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে অপদস্থ ও অপমানিত করে স্বৈরশাসকদের তালিকায় যুক্ত করেছে। ক্ষমতার নেশা তার অভূতপূর্ব জনকল্যাণকর কাজগুলোকে ম্লান করে দেয়।

সাদ্দাম হোসেন

ইরাকের স্বৈরাচারী একনায়ক সাদ্দাম হোসেনের শেষ পরিণতিটা আমাদের কারওরই অজানা নয়। বলা হয়ে থাকে একনায়তান্ত্রিক শাসন ও অন্যান্য দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে গুরুত্ব না দেয়ায় তার বিরুদ্ধে ক্ষেপে ওঠে পশ্চিমা বিশ্ব। আর তাই ২০০৩ সালে তাকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়। বিদেশী প্রভুদের যতই হস্তক্ষেপ থাকুক না কেন জনগণ যদি তার সাথে থাকত তাহলে হয়তবা এই পরিণতি হত না তার। সাদ্দামের কর্তৃত্বপরায়নতার কারণে মার্কিনীরা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করলেও জনবিচ্ছিন্ন বেপরোয়া শাসননীতির কারণে ইরাকী জনগণও তার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে। তার স্বৈরনীতির শেষ ফল হিসেবে মার্কিন সেনারা তাকে টেনেহিঁচড়ে গর্ত থেকে বের করে এবং ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলায়।

মুয়াম্মার গাদ্দাফি

লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি জনপ্রিয় ‘ব্রাদারলি লিডার হলেও তিনি মূলত একনায়ক, স্বৈরশাসক হিসেবেই পরিচিত। দীর্ঘ ৪২ বছর তিনি এক হাতে শাসন করেছেন উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া। দেশ-বিদেশে সুনামের পাশাপাশি তাকে নিয়ে বিতর্কেরও শেষ নেই। গাদ্দাফি ফিলিস্তিনের ‘প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন’র একজন ভক্ত হলেও পশ্চিমাবিরোধী নীতির কারণে গাদ্দাফিকে পশ্চিমারা সব সময়ই নেতিবাচক চোখে দেখেছে। কূটনৈতিক অঙ্গনেও তার প্রতি দৃষ্টি তেমনই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান নিজেই গাদ্দাফিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের পাগলা কুকুর’ বলে অভিহিত করেন। তারা একাধিকবার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চেষ্টা চালায়। সর্বশেষ বিদ্রোহীরা তার বাব আল আজিজিয়া প্রাসাদ দখল করে নেয়। সেখান থেকে তার আগেই পালিয়ে যান মুয়াম্মার গাদ্দাফি ও তার পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্য দিয়েই মূলত গাদ্দাফির পতন ঘটে। তারপরও তার অনুগতরা লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে। সর্বশেষ তারা তার জন্মশহর সির্তে অভিযান চালায়। সেই অভিযানেই গুলিবিদ্ধ হন গাদ্দাফি। জেনারেল গাদ্দাফির পতনের জন্য তার কাছের লোকরাই শত্রুদের সাথে হাত মিলিয়েছিল।

হোসনী মোবারক

মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলীর পর হোসনী মোবারক সে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাসক। আরব বিশ্বে লম্বা সময় দেশ শাসন করছেন অনেকে। হোসনী মোবারক তাদের অন্যতম। ১৯৮১ সালের ৬ অক্টোবর সেনাবাহিনী এক সদস্য কর্তৃক তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সা’দাত নিহত হওয়ার পর হোসনী মোবারক ক্ষমতায় আসেন। জাতীয় নির্বাচনে পার্লামেন্ট অনুমোদিত মাত্র একজন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন সেই প্রার্থী ছিলেন হোসনী মোবারক। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার দায়ে বিশ্বজুড়ে তিনি নিন্দিত। মিসরে গণজাগরণের মাধ্যমে তাকে লাঞ্ছিত হয়ে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়। বর্তমানে মিসরের রাজনৈতিক উত্তপ্ততার জন্য তাকেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দায়ী করেন। দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এই শাসক এ বছর ফেব্রুয়ারিতে অনেকটা নীরবে নিভৃতেই এক হাসপাতালে মারা যান।

পারভেজ মোশাররফ

২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। তাকে এখন পর্যন্ত নৃশংসভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়নি, এটা সত্য। কিন্তু রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেই দণ্ড বাতিল করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পারভেজ মোশাররফ এখনও নির্বাসনেই আছেন। নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি। দুরারোগ্য আসুখে আক্রান্ত সাবেক এই স্বৈরশাসক এখন পরবাসে বসেই মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা শোষণের শিকার: জাতিসংঘ

প্রকাশ: ০৬:৪৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের দুরবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।

 শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ।

সংস্থাটির জেনেভা থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরেই দেশটিতে বাংলাদেশি অভিবাসীরা অসম্মানজনক অবস্থায় বসবাস করছে। এজন্যে দেশটির সরকারের প্রতি ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে। একই সাথে বাংলাদেশি শ্রমিকের ওপর যেন কোন শোষণ, অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন না করা হয় সেজন্যে জরুরি পদক্ষেপ নিতে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বেশিরভাগ অভিবাসী মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেখেন যে তাদের প্রতিশ্রুত অনুযায়ী কর্মসংস্থান নেই। এমন অবস্থায় প্রায়শই তাদের ভিসা শেষ করতে বাধ্য করা হয়।

ফলস্বরূপ এই অভিবাসীরা গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছে।

মালয়েশিয়া   বাংলাদেশি শ্রমিক   জাতিসংঘ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানে ইসরায়েলের হামলায় সায় ছিল না যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশ: ০৬:১৭ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের ওপর ইসরায়েল হামলার খবর আগেই পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই হামলাকে সমর্থন বা হামলায় কোনো ধরনের ভূমিকা পালন করেনি দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমটি বলছে, ইরানের ভূখণ্ডে ইসরায়েল হামলা করেছে, তবে ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্য পারমাণবিক স্থাপনা ছিল না। 

একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ইসরায়েল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়, তারা সামনের দিনগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের এই প্রতিক্রিয়া সমর্থন করেনি বলেও জানান তিনি।

এদিনের হামলার পর হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। হোয়াইট হাউসের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এ মুহূর্তে দেয়ার মতো কোনো খবর নেই।’

শুক্রবার সকালে মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এবিসি নিউজ জানায়, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনেছে। তবে কোথায় আঘাত হেনেছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি তারা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়া অন্য কোনো যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা-ও জানাননি।

এদিকে আজ ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইস্পাহানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এরপর ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দেশটির কয়েকটি শহরে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।

এর আগে ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা হয়। এতে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আল-কুদস ফোর্সের দুই শীর্ষ জেনারেলসহ অন্তত ১১ জন নিহত হন। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও ইরান ইসরায়েলকেই এর জন্য দায়ী করে আসছে। জবাবে গত শনিবার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।

ইরান   ইসরায়েল   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   ক্ষেপনাস্ত্র হামলা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভোট দিতে গিয়ে শুনলেন, তিনি মারা গেছেন

প্রকাশ: ০৩:০৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভোট দিতে গিয়ে এক বৃদ্ধা শুনেছেন- তিনি মারা গেছেন, আর ভোট দিতে না পেরে নিরাশ তিনি। কাগজে-কলমে মৃত হওয়ায় বাস্তবে জীবিত এই ভোটারের ভোট দিতে ব্যর্থ হওয়ার এই ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিভি৯ বাংলা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার নাম বাসন্তী দাস। তিনি শুক্রবার সকাল সকাল চলে গিয়েছিলেন ভোট দিতে। কিন্তু, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে শুনলেন তিনি নাকি মারা গেছেন। তাই ভোট দিতে দেওয়া হবে না তাকে। কাগজে-কলমে তিনি মৃত। তাই ভোটাধিকার নেই।

পরে অশ্রুসজল চোখ নিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে ফিরে আসেন বাসন্তী দাস নামে ওই বৃদ্ধা। এদিন ভোটের সকালে এই ঘটনা ঘটেছে ধূপগুড়ি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ধূপগুড়ির বৈরাতীগুড়ি হাই স্কুলে ভোট কেন্দ্র বাসন্তী দেবীদের। এদিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তিনি।

ভোটের ডিউটিতে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার জানান, তার কিছু করার নেই, ভোটার তালিকায় ডিলিট রয়েছে তাই ভোট দিতে পারবেন না তিনি, তাই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই বৃদ্ধাকে।

ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার ছেলে উজ্জ্বল দাস বলছেন, 'মা একাই ভোট দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওখান থেকে বলেছে- তোমার নাম নেই, তুমি মৃত। মা বাইরে এসে আমাদের জানায়। ফের কথা বললে জানায়- নামের জায়গায় মৃত লেখা আছে। আমরা পরে বুঝে নেব।' 

তিনি আরও বলেন, মা প্রায় দেড় ঘণ্টা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। তারপরেও ভোট দিতে পারেনি। আমরা তো প্রতিবার তো এখানেই ভোট দিই। এবারে কী হলো জানি না।

অন্যদিকে অশ্রুসজল চোখে বাসন্তী দেবী বলেন, 'আমি তো সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সাড়ে সাতটার সময় ভোট দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু, দীর্ঘক্ষণ লাইনে থাকার পরেও ভোট দিতে পারিনি। সরকারের খাতায় নাম নেই বলছে। অনেকক্ষণ ওরা কোথায় কোথায় সব ফোন করল। জেলা প্রশাসকের অফিসেও ফোন করেছিলাম। তারপর বলল আপনি এখন যান। এই বছর আর হবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের এলাকার লোকজনও অনেক চেষ্টা করল। কিন্তু ভোট দিতে পারলাম না। খুবই খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে- আমি মরে গিয়েছি। আমি তো প্রতিবারই ভোট দিই। কিন্তু, এবার পারলাম না।' 

উল্লেখ্য, শুক্রবার থেকে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় দেশটির ২১ রাজ্যের ১০২ আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিন আসন- জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র।


ভোট   ভারত   পশ্চিমবঙ্গ   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: প্রথম দফায় ভোটে প্রার্থী যারা

প্রকাশ: ০১:৩৩ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলছে ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। আজ শুক্রবার সকাল সাতটায় শুরু হয় এ ভোট গ্রহণ। শেষ হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। নির্বাচন হচ্ছে সাত দফায়। 

আজ শুরু হয়েছে প্রথম দফার ভোট। লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ১০২টি আসনে ভোট হচ্ছে আজ। এর মধ্যে রয়েছে পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ৩ আসনও।

ভোট শুরু হয়েছে দেশের ২৮টি রাজ্য ও আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ১৭টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। আজ নির্বাচন হচ্ছে অরুণাচল প্রদেশ রাজ্য বিধানসভার ৬০টি ও সিকিমের ৩২টি বিধানসভা আসনে। 

পশ্চিমবঙ্গের যে তিন আসনে ভোট শুরু হয়েছে, সেগুলো হলো কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার। কোচবিহারে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক, কংগ্রেসের পিয়া রায় চৌধুরী ও বামফ্রন্টের শরিক ফরোয়ার্ড ব্লকের নীতীশ চন্দ্র রায়।

জলপাইগুড়ি আসনে লড়ছেন তৃণমূলের নির্মল চন্দ্র রায়, বিজেপির জয়ন্ত কুমার রায়, বাম ফ্রন্টের সিপিএম প্রার্থী দেবরাজ বর্মণ।

আলিপুরদুয়ারে লড়ছেন তৃণমূলের প্রকাশ চিক বরাইক, বিজেপির মনোজ টিগ্গা, বাম ফ্রন্টের মিলি ওঁরাও।

প্রথম পর্বের ভোটের দিন আজ নির্ধারিত হবে ভারতের আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ভাগ্যও। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রমাণিকের। নিশীথ দাঁড়িয়েছেন কোচবিহার আসনে। এ আসনেরই সংসদ সদস্য তিনি।

এবার পশ্চিমবঙ্গে ভোট দেবেন ৭ কোটি ৬৯ লাখ ভোটার। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। নারী ৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪ হাজারের বেশি। রাজ্যে আরও রয়েছেন ট্রান্সজেন্ডার ১ হাজার ৮৩৭ ভোটারও।

আজ পশ্চিমবঙ্গের তিন আসনে ভোট দিচ্ছেন ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ১০৮ ভোটার। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৫ হাজার ৮১৪টি। এর মধ্যে স্পর্শকাতর কেন্দ্র ৮৩৭টি।

এবারের ভোটকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ভোটকেন্দ্রগুলো। নিয়োগ করা হয়েছে ২৬৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য। প্রতিটি কেন্দ্রেই থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আরও থাকছেন ১২ হাজার ৩১০ রাজ্য পুলিশ সদস্য। নির্বাচন কমিশন স্পর্শকাতর কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

প্রথম পর্বের ভোটের দিন আজ নির্ধারিত হবে ভারতের আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ভাগ্যও। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রমাণিকের। নিশীথ দাঁড়িয়েছেন কোচবিহার আসনে। এ আসনেরই সংসদ সদস্য তিনি।

অন্য আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলেন নীতিন গড়করি, কিরেন রিজিজু, ভূপেন্দ্র যাদব, সর্বানন্দ সেনেওয়াল, জিতেন্দ্র সিং, অর্জুন রাম মেঘওয়াল, সঞ্জীব বালিওয়ান এবং এল মুরুগান।


লোকসভা নির্বাচন   ভোট   লোকসভা   পশ্চিমবঙ্গ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: প্রথম দিনেই তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ সকাল ৭ টায়। ভোটগ্রহণ শেষ হবে সন্ধ্যা ৬ টায়। 

চলমান এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের চাঁদমারি এলাকায় বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উভয় পক্ষ থেকে ইট-পাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এতে একজন আহত হয়েছে।

এবার পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন হচ্ছে সাত দফায়। আজ প্রথম দফা। এই দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনের ভোট নেওয়া শুরু হয়েছে। আসন তিনটি হলো কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার আসন।

সকাল নয়টা পর্যন্ত তিনটি আসনে গড়ে ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।

সকালেই কোচবিহারের দিনহাটার বিজেপি এজেন্ট বিশ্বনাথ পালকে ভোটকেন্দ্র  থেকে অপহরণ করার অভিযোগ তোলে বিজেপি। নির্বাচন কমিশনও এ ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে ভোটকেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। দিনহাটায় তৃণমূলের এক ব্লক সভাপতিকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আহত ব্যক্তিদের দেখতে হাসপাতালে যান তৃণমূল নেতা ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। 

এদিকে, কোচবিহারের চান্দামারিতে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ভোটদান নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের তুফানগঞ্জের হরিহরহাটে আজ সকালে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে বিজেপি-তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে। বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, তাদের অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। 

শীতলখুচির শালবাড়ি এলাকায় তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত তৃণমূল নির্বাচন কমিশনে ৩৭টি অভিযোগ দায়ের করেছে। জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় বিজেপির একটি বুথ অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার তুফানগঞ্জের তৃণমূলের নির্বাচন অফিসও পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। 

কোচবিহারে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক, কংগ্রেসের পিয়া রায় চৌধুরী এবং বাম ফ্রন্টের শরিক ফরোয়ার্ড ব্লকের নীতীশ চন্দ্র রায়। 

জলপাইগুড়ি আসনে লড়ছেন তৃণমূলের নির্মল চন্দ্র রায়, বিজেপির জয়ন্ত কুমার রায়, বাম ফ্রন্টের সিপিএম প্রার্থী দেবরাজ বর্মণ। আলিপুরদুয়ার আসনে লড়ছেন তৃণমূলের প্রকাশ চিক বরাইক, বিজেপির মনোজ টিগ্গা, বাম ফ্রন্টের মিলি ওঁরাও। এই তিনটি আসনে আরও লড়ছেন ছোটখাটো রাজনৈতিক দল ও নির্দলীয় প্রার্থীরা।

আর আজ পশ্চিমবঙ্গের তিন আসনে ভোট দেবেন ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ১০৮ জন ভোটার। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৫ হাজার ৮১৪টি। এর মধ্যে স্পর্শকাতর কেন্দ্র হচ্ছে ৮৩৭টি।

প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আরও থাকছে ১২ হাজার ৩১০ জন রাজ্য পুলিশ। নির্বাচন কমিশন স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।


তৃণমূল   বিজেপি   সংঘর্ষ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন