ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাইডেনের নজর এখন মধ্যপ্রাচ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:৫৫ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১


Thumbnail

সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে আটক বা হত্যা করতে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এরকম তথ্যই প্রকাশ করা হলো।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের দপ্তর ওই প্রতিবেদন নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ‘আমাদের মূল্যায়ন হলো, জামাল খাসোগিকে আটক বা হত্যা করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সৌদি আরবে যুবরাজ বিন সালমানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে আমরা এই মূল্যায়নে পৌঁছেছি।’

খাসোগি ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পরপরই খুন হন। তাঁর লাশ গুম করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে থেকে ওয়াশিংটন পোস্ট-এ কলাম লিখতেন তিনি। খাসোগি হত্যার দায়ে সৌদির একটি আদালত দেশটির পাঁচজন নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে তাঁদের সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড করা হয়।
  
সাংবাদিক খাসোগি সৌদি যুবরাজের কট্টর সমালোচক ছিলেন। শুরুতে খাসোগি খুন হওয়ার কথা অস্বীকার করে সৌদি আরব। পরে দেশটির সরকার স্বীকার করে, কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। সৌদি যুবরাজ এই হত্যায় তাঁর সম্পৃক্ততার কথা শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছেন।

প্রতিবেদন প্রকাশের আগের দিন বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফোনালাপে সৌদির বাদশাহর কাছে মানবাধিকার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাইডেন। 

সৌদির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, বাদশাহ সালমান ও প্রেসিডেন্ট বাইডেন দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এই অঞ্চলে ইরানের অস্থিতিশীলমূলক কার্যক্রম ও দেশটির সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েক জন সৌদি নাগরিকের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও এর বাইরে থেকেছেন যুবরাজ। এবার মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সরাসরি অভিযুক্ত হলেও সৌদি আরব ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে একে ‘নেতিবাচিক, মিথ্যা এবং অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়েছে।

সৌদি আরবের বর্তমান বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ আল-সৌদ এর ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমান ২০১৭ সাল থেকে দেশটির নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রেখে আসছেন। তাকেই দেশটির কার্যকর শাসক বলে মনে করা হচ্ছে।

ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বাইডেনের প্রচেষ্টা সবচেয়ে বেশি অসন্তুষ্ট সৌদি আরব। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সময় তাঁর জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ব্যক্তিগত সম্পর্কের সুবাদে সৌদি আরব তাদের প্রতিটি অন্যায় পদক্ষেপে যে রকম আমেরিকার সমর্থন পেয়ে আসছিল, বাইডেনের আমলে তা ঘটছে না, তা খাসোগির হত্যার তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের পর অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গেলো।

এদিকে, ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের ওপর হামলা বৃহস্পতিবার বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন জানায়, কাতাইব হিজবুল্লাহ ও কাতাইব সাইয়্যিদ আল-শুহাদা নামের দুটি ইরানপন্থী মিলিশিয়া গোষ্ঠীর ওপর পূর্ব সিরিয়ায় হামলা চালানো হয়। এই হামলাকে উপযুক্ত সামরিক পদক্ষেপ যা কঠোর কূটনৈতিক পন্থার সমন্বয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও বলা হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই অভিযান একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেবে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন ও জোট সদস্যদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় কাজ করবেন। একই সঙ্গে সিরিয়া ও ইরাক সীমান্তের উত্তেজনা নিরসনে দৃঢ়তার সঙ্গে উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশেই গণতন্ত্র নেই। তারপরও প্রতি চার বছর পর পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ভাগ্যও পরিবর্তিত হয়। ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন ক্ষমতায় বসার পর এখন অনেকটাই স্পষ্ট যে বাইডেন মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে অনেক সতর্কতার সঙ্গে কাজ শুরু করেছেন।

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বাইডেন বলেছিলেন, তিনি ইরানকে পুনরায় পারমাণবিক চুক্তির আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন। ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট ওবামার সময় করা পারমাণবিক চুক্তিটিকে ডেমোক্রেটরা তাদের অন্যতম অর্জন হিসেবে দেখে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ২০১৮ সালে সেই চুক্তি বাতিল করেন। ফলে ইরানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। ওবামার পথ ধরে জো বাইডেন তাই ইরানের সঙ্গে চলমান এই উত্তেজনা প্রশমিত করার চেষ্টা শুরু করেছেন। কিন্তু কাজটা মোটেও সহজ নয়, বোঝাই যাচ্ছে। 

বাইডেন তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসন বন্ধ করবেন এবং সৌদি আরবের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করবেন। সে বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন বাইডেন কিন্তু ওবামার শাসনামলের শেষের দিকে সম্পর্কের অবনতির মধ্য দিয়েও বাইডেন সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, যে অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে ইয়েমেনের ওপর বিমান হামলা করার কাজেই।
 
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা বদলে দেশটির পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে খুব একটা পরিবর্তন ঘটে না। বর্তমান প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যদের সঙ্গে ভঙ্গুর অবস্থার কতটা জোড়া লাগাবেন নাকি মধ্যপ্রাচ্যে আবারও আগ্রাসন চালাবেন সেটি নিয়েই একধরণের দোলাচল রয়েছে।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বন্দ্ব: বাংলাদেশে কী প্রভাব পড়বে?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রকাশ্য কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে ভারতের। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বিভিন্ন নীতি এবং অবস্থানের সমালোচনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের পর ভারতে নিযুক্ত মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করে নয়াদিল্লি। সেই তলবের প্রতিক্রিয়া নয়াদিল্লি আপত্তি অগ্রাহ্য করে আরও একবার ভারতের দমন নীতির সমালোচনা করে ওয়াশিংটন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ফের কড়া জবাব দেয় ভারত। সব মিলিয়ে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা এখন তুঙ্গে অবস্থান করছে। 

উল্লেখ্য যে, লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু করা হয়। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়েছে নয়াদিল্লি। এদিকে কেজরিওয়াল গ্রেপ্তারের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক বাকবিতণ্ডা তীব্র আকার ধারণ করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া আম আদমি পার্টির নেতা কেজরিওয়ালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সংশয় প্রকাশ করেছে এবং নয়াদিল্লিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার কাজ সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করে ভারত। সবকিছু মিলিয়ে এই অঞ্চলে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুপ্রতিম কৌশলগত সম্পর্কে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে একটি দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই দূরত্ব বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন প্রভাব ফেলবে কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। 

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নেতিবাচক অবস্থানে ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি করে আসছিল। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এটাও বলা হয়েছিল যে, যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হয় তাহলে বাংলাদেশের নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না। বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কঠোর অবস্থান নেবে। কিন্তু নির্বাচনের আগে আগে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটি অবস্থান গ্রহণ করে। ভারতের অবস্থান ছিল বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং কোন দল অংশগ্রহণ করল, না করল সেটা বড় বিষয় নয়। সাংবিধানিক ধারায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়াটাই ভারত প্রত্যাশা করে এবং ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব পাল্টানোর জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করে। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কথা বলেছিলেন অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে। সবকিছু মিলিয়ে এই অঞ্চলে ভারতের কথা যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুনে সে নিয়ে দু দেশের মধ্যে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। এই কূটনৈতিক তৎপরতার ফলশ্রুতিতেই বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত একটা নমনীয় অবস্থানে আসে। এই নমনীয় অবস্থান থেকেই নির্বাচনের পরপর বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। 

অনেকেই মনে করেন যে, ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এখন যখন ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে তখন তার প্রভাব কি বাংলাদেশে পড়বে?

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেটি পড়বে না। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এখন বাংলাদেশকে নিয়ে পৃথক এজেন্ডা তৈরি হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করে বাংলাদেশের বাজারে যেতে চায়। বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য বিস্তার করতে চায়। কাজেই ভারতের সঙ্গে যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব সেটির প্রভাব বাংলাদেশ সম্পর্কে পড়বে না। তাছাড়া ভারতের এই কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব দুদেশের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের ওপরও প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করে। বিশেষ করে ভারত একটি বড় দেশ। ভারতের সঙ্গে এর আগেও অনেক বিষয় নিয়ে মতদৈত্যতা ছিল। সেটি কাটিয়ে উঠে বৃহত্তর পরিসরে দু দেশ এক সাথে কাজ করেছে। এক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটবে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত   বাংলাদেশ   দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী   অরবিন্দ কেজরিওয়াল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

এবার কেজরিওয়াল বিতর্কে জাতিসংঘ

প্রকাশ: ০৩:৪৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের পর ভারতের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার দেশ জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র সংশয় প্রকাশ করার পর এবার বিতর্কে এলো জাতিসংঘ। 

বৃহস্পতিবার(২৯ মার্চ) রাতে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকও জানান, তাদের আশা, ভোটের সময় অন্য দেশের মতো ভারতেও রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রত্যেকের অধিকার রক্ষিত হবে, যাতে সবাই সুষ্ঠুভাবে, মুক্ত মনে ভোট দিতে পারেন।  

কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার এবং তাকে হেফাজতে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে, ভারতকে তা বিব্রত করলেও কূটনৈতিক পর্যায়ে তার জবাব দেয়া হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লিতে নিযুক্ত জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের শীর্ষ কূটনীতিকদের ডেকে এ ধরনের মন্তব্যে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র থেমে থাকেনি। দ্বিতীয়বারও তারা এ বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে, মন্তব্য করেছে। তাদের সঙ্গে এবার বিতর্কে যুক্ত হলো জাতিসংঘও। 

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে স্টিফেন ডুজারিককে কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রশ্নে কংগ্রেস দলের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার বিষয়টিও উত্থাপন করা হয়। সেখানে বলা হয়, ভোটের ঠিক আগে কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কংগ্রেসের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। নাগরিক অধিকার আন্দোলনকর্মীরা মনে করছেন, এভাবে বিরোধীদের দমন করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি জাতিসংঘ কীভাবে দেখছে?  

এমন প্রশ্নে, তিনি মুক্ত মনে ভোট দেওয়া এবং রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের অধিকার রক্ষিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কথাটি ভারতের পক্ষে অবশ্যই বিব্রতকর।   

প্রথম দফায় সাত দিন হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার কেজরিওয়ালকে দিল্লির নিম্ন আদালতে পেশ করা হয়। সেখানে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) হেফাজতের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়ানোর দাবি জানায়। বিচারক চার দিন মেয়াদ বৃদ্ধি করেন। তবে তার আগে কেজরিওয়ালকে অনুমতি দেন এজলাসে নিজের হয়ে সওয়াল করার। অনুমতি পেয়ে কেজরিওয়াল বলেন, তাকে ফাসানোই ইডির একমাত্র লক্ষ্য।


কেজরিওয়াল   বিতর্ক   জাতিসংঘ   পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়   ভারত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফিলিস্তিনিরা এখনো যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে

প্রকাশ: ০২:১৭ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসকে নির্মূলের জন্য কয়েক মাস ধরে টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তবে এমন আক্রমণের পরও হামাসের যুদ্ধ করার সক্ষমতা এখনো অটুট রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব দ্য ওয়ার (আইএসডব্লিউ)। 

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা আল শিফা হাসপাতালের কাছাকাছি এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে প্রায় ৭০টি হামলা চালিয়েছে। গত বছরে গাজার এ হাসপাতালটিতে তাণ্ডবের পর আবারও চলতি বছরের মার্চে সেখানে ফিরে আসে ইসরায়েলি সেনারা।

ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব দ্য ওয়ার (আইএসডব্লিউ) এবং ক্রিটিকাল থ্রেট প্রজেক্ট (সিটিপি) তাদের সর্বশেষ গাজার যুদ্ধাবস্থার মূল্যায়নে জানিয়েছে, হামলার তীব্রতা এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের যুদ্ধের সক্ষমতা এখনো অটুট রয়েছে। যদিও গাজায় ইসরায়েলের হামাসকে নির্মূলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক জানিয়েছে, আল শিফা হাসপাতাল এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের অন্তত ছয়টি যোদ্ধা দল সক্রিয় রয়েছে।

সবশেষ তথ্যে পর্যবেক্ষক সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ৩ মার্চ গাজার জেইতুন এলাকা থেকে হামাসকে পুরোপুরিভাবে নির্মূলের দাবি করে। তবে বুধবার এ এলাকায় আবারও ফিরে এসেছে ইসরায়েলি সেনারা। তাদের ফিরে আসা এটাই প্রমাণ করে যে গাজার অন্যান্য এলাকার মতো সেখানেও নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে হামাসের যোদ্ধারা।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দেশেটির এ হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের হামলার কারণে উপত্যকা এখন তাঁবুর বসতির জনপদে পরিণত হয়েছে।

ইসরায়েলের দাবি, গাজা থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা এ অভিযান চালিয়ে যাবে। অন্যদিকে অব্যাহত হামলার কারণে উপত্যকার ব্যপক আকারে খাদ্য ও মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।


ফিলিস্তিন   যুদ্ধ   ইসরায়েল   হামাস   গাজা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কাশ্মীরে গভীর খাদে যাত্রীবাহী ট্যাক্সি, নিহত ১০

প্রকাশ: ০১:৫৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি যাত্রীবাহী ট্যাক্সি গভীর খাদে গড়িয়ে পড়ে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) এবং কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে। 

দেশটির গণমাধ্যম বলছে, শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে একটি যাত্রীবাহী ট্যাক্সি শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছিল। পরে জম্মু ও কাশ্মীরের রমবান এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রী-সহ ট্যাক্সিটি আচমকা রাস্তার পাশে থাকা গভীর খাদের মধ্যে পড়ে যায়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসে বিপর্যয় মোকাবিলা দলও। তাদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে স্থানীয় বাসিন্দারাও যোগ দিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চলছে। তবে বৃষ্টির কারণে রাস্তা ভেজা থাকায় উদ্ধারকারীদের বেগ পেতে হচ্ছে।


কাশ্মীর   ট্যাক্সি   এসডিআরএফ   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নির্বাচনের আগেই ‘কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে’ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১২:৫০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের পর, ভারতে নিযুক্ত মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করে নয়াদিল্লি। সেই তলবের প্রতিক্রিয়ায় নয়াদিল্লির আপত্তি অগ্রাহ্য করে আরও একবার মুখ খোলে ওয়াশিংটন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ফের কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। সব মিলিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা এখন তুঙ্গে।

লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতে বির্তকিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু করে বিজেপি শাসিত দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করায় ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মতবিরোধ চলছিল। সেই আগুনে ঘি ঢালে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতার ইস্যু। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছে দেশ দুটি। 

গ্রেফতার হওয়া আম আদমি পার্টির নেতা কেজরিওয়ালের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ‘সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়ায়’ বিচারকাজ সম্পন্ন করতে নয়াদিল্লিকে আহ্বান জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। কিন্তু বিষয়টিকে মোটেও ভালো চোখে দেখেনি ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দেশটি। 

এমনকি দিল্লিতে মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার (২৭ মার্চ) ভারতে নিযুক্ত মার্কিন মিশনের ভারপ্রাপ্ত উপপ্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে তলব করা হয়। ওয়াশিংটনের মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ ও আপত্তি জানিয়ে নয়াদিল্লি বলে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি।

তবে নয়াদিল্লির এসব আপত্তি অগ্রাহ্য করে, বিষয়টি নিয়ে আরও একবার মুখ খোলে ওয়াশিংটন। মার্কিন কূটনীতিককে তলব এবং ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাংক একাউন্ট জব্দের অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। 

মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, কেজরিওয়াল ইস্যুতে ‘নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ’ করছে যুক্তরাষ্ট্র। দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন ডেপুটি রাষ্ট্রদূতকে তলবের বিষয়টিও তাদের নজরে আছে। এছাড়া কংগ্রেস পার্টির কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের বিষয়ে মিলার বলেন, 

মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। এতে আসন্ন নির্বাচনে প্রচারণা চালানো তাদের পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে বলে মনে করে ওয়াশিংটন। 

এর প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনের আচরণকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন,  মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের করা মন্তব্যের বিষয়ে দেশটির কূটনীতিকের কাছে আপত্তি ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। মন্তব্যগুলো একেবারেই অযৌক্তিক। আমাদের নির্বাচনী এবং আইনি প্রক্রিয়ার ওপর বহিরাগত যেকোনো অভিযোগ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। ভারতে আইনের শাসনেই সব আইনি প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। 

এমন ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ভারতীয় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলেও। অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নাক না গলানোর আহ্বান জানিয়েছেন কেউ কেউ।


ভারত   যুক্তরাষ্ট্র   কূটনৈতিক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন